Ajker Patrika

গুলি থেকে বাঁচতে জঙ্গলে আশ্রয় নেয় থানচির ৫০০ পরিবার

সোহেল মারমা, জমির উদ্দিন চট্টগ্রাম ও মংবোওয়াংচিং মারমা অনুপম, থানচি প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫: ৪৪
গুলি থেকে বাঁচতে জঙ্গলে আশ্রয় নেয় থানচির ৫০০ পরিবার

‘চারদিক থেকে গোলাগুলির শব্দ। ভয়ে ছোট বাচ্চাকে নিয়ে প্রথমে খাটের নিচে অবস্থান নিই। বেশ কিছুক্ষণ চলে গোলাগুলি। বাইরে হইচই আওয়াজ। সবাই পাশের জঙ্গলে চলে যাচ্ছে। এরই মধ্যে বাচ্চাকে নিয়ে বের হয়ে পড়ি। গোলাগুলি থেকে বাঁচতে গ্রামের অন্য মানুষের সঙ্গে জঙ্গলে আশ্রয় নিই।’

বান্দরবানের থানচি উপজেলার ফজলপাড়া বাজারসংলগ্ন বাড়ির বাসিন্দা নুরবানু বেগম বলছিলেন এসব কথা। এমন আতঙ্কের মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পার করে তাঁর মতো ওই পাড়ার আরও দেড় শ পরিবার। সবাই পাশের জঙ্গলে অবস্থান নিয়ে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করে। 

থানচি উপজেলাটি বান্দরবান সদর থেকে প্রায় ৭৮ কিলোমিটার দূরে। থানচির পাশ্ববর্তী উপজেলা রুমা ৩০ কিলোমিটার দূরে। এ দুটি উপজেলায় সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফ গত মঙ্গলবার থেকে চার দফা হামলা করেছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে থানচি থানা ঘেরাও করে হামলা করার চেষ্টা করে। তবে, এই হামলা ঠেকিয়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
 
স্থানীয়রা জানান, থানচি থানার পাশে ফজলপাড়া, হেডমেনপাড়া ও বাঙালিপাড়া। এই তিন পাড়া মিলে প্রায় ৫০০ পরিবারের বাস। কেএনএফ যখন গোলাগুলি শুরু করে, তখন আতঙ্কে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে থানচি থানার আশপাশের পুরো এলাকার মানুষ। এরই মধ্যে ফজলপাড়া, হেডমেনপাড়া ও বাঙালিপাড়ার ৫০০ পরিবার পাশের জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় ১০টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে তারা। পরে যখন শোনে কেএনএফ চলে গেছে, তখন বাড়িতে ফিরে আসে। কিন্তু বাড়িতে এলেও কারও রাতে ঘুম হয়নি। আতঙ্কে রাত কেটেছে সবার।

থানচির ফজলপাড়ার বাসিন্দা আরিফ ওরফে কানাইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৮টা ২০ মিনিটে আমরা গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাই। হেডমেন, ফজল ও বাঙালিপাড়ার মানুষ ভয়ে জঙ্গলে পালিয়ে যায়। দুই ঘণ্টা আমরা সবাই জঙ্গলেই অবস্থান করি। ছোট বাচ্চা, বৃদ্ধকেও নিয়ে গেছে জঙ্গলে।’

থানচি হেডমেনপাড়ার বাজারসংলগ্ন বাসিন্দা চাই হুং প্রো মাস্টার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গুলি থেকে বাঁচতে আমরা পরিবারের প্রায় আটজন জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছি। এরকম পরিস্থিতি কোনো দিন দেখিনি।’

এদিকে ওই দিন রাতে যাঁরা ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন, তাঁরা গুলির শব্দে ভয়ে কেউ খাদ্যগুদামে আর কেউ দোকান বন্ধ করে ভেতরে অবস্থান নেন।

থানচির জান্নাত রেস্টুরেন্টের কর্মচারী মো. মহসীন বলেন, ‘এমন গোলাগুলি মুভিতেও দেখিনি। টানা দুই ঘণ্টা গোলাগুলির শব্দ। ভয়ে আমরা রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে খাদ্যগুদামে আশ্রয় নিয়েছি।’

থানচি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অংপ্রু ম্রো আজকের পত্রিকাকে বলেন, পুরো রাত এলাকার মানুষ আতঙ্কে কেটেছে। কেউ কেউ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য জঙ্গলেও অবস্থান নেয়। চারদিকে শুধু গোলাগুলি চলে।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে থানচি থানা আক্রমণের চেষ্টার আগে কেএনএফের একটি দল রেকি করে চলে যায়। তারপর থানচি উপজেলার নাইক্ষ্যানপাড়া থেকে থানার দিকে আসার চেষ্টা করে ৮০-৯০ জনের সশস্ত্র দল। উপজেলার হাসপাতাল রোড দিয়ে আরও ৩০ জনের একটি দল থানা আক্রমণের চেষ্টা করে। তখন আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি করে আক্রমণ ঠেকিয়ে দেয়।

ওই দিনের থানা আক্রমণ করার বর্ণনা দেন থানচির থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন। নিজেরা এখনো আতঙ্ক ও ঝুঁকির মধ্যে আছেন বলে জানান তিনি। কারণ এখনো সশস্ত্র ওই গোষ্ঠি থানার এক কিলোমিটার এলাকায় অবস্থান করছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

আতঙ্কের বর্ণনা দিচ্ছেন থানচি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অংপ্রু ম্রো। ছবি: আজকের পত্রিকাসশস্ত্র ওই দলের সঙ্গে পুলিশের এক ঘণ্টা গুলিবিনিময় হয়। ৪০০-৫০০ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয় বলে থানা সূত্রে জানা গেছে। করে।  থানচির সোনালি ব্যাংক শাখায় নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যের ওপরও গুলি করে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করে তারা।  

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে থানার সামনে ওসি জসিম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখনো এক কিলোমিটারের মধ্যে ওই সশস্ত্র দল অবস্থান করছে।

এদিকে থানচিতে কেএনএফের আক্রমণের ঘটনায় বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সরেজমিন থানচি সদর উপজেলার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। যাঁরা খোলা রেখেছেন, তাঁরা আতঙ্কের মধ্যে আছেন। 

মুদি দোকানদার আরমান হোসেন বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি শান্ত চাই। আমাদের নিরাপত্তা চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মায়ের আকুতি—‘আল্লাহ তুমি আমার ছাওয়ালেক কাড়া নিয়ো না’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
গর্তের অদূরে বিলাপ করছেন শিশুটির মা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গর্তের অদূরে বিলাপ করছেন শিশুটির মা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর তানোরে নলকূপের জন্য খনন করা সরু গভীর গর্তে পড়ে যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধারে নির্ঘুম রাত কেটেছে উদ্ধারকর্মীদের। সঙ্গে উৎকণ্ঠায় রাত কেটেছে স্বজনদেরও। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত, রাত গড়িয়ে সকাল—তবু উদ্ধার করা যায়নি শিশুটিকে।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাস্থলের অদূরে সন্তানকে ফিরে পেতে মা রুনা খাতুন আহাজারি করছেন। তাঁর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে চারপাশ। এ সময় তিনি বিলাপ করতে থাকেন—‘আল্লাহ তুমি কাড়া (কেড়ে) নিয়ো না, আল্লাহ।’ 

আহাজারি করতে করতে মা রুনা খাতুন বলেন, ‘আল্লাহ আমার ছাওয়ালেক (ছেলে) কত কষ্ট করে মানুষ (বড়) করেছি। আল্লাহ তুমি কাড়া (কেড়ে) নিয়ো না। আল্লাহ আমি কষ্ট করে মানুষ করব। তুমি কাড়া নিয়ো না আল্লাহ। আল্লাহ তুমি আমার ছাওয়ালেক (ছেলে) আমার বুকে আইনা দাও আল্লাহ। আল্লাহ তুমি কাড়া নিয়ো না, আল্লাহ।’

এর আগে গতকাল বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে গভীর নলকূপ বসানোর জন্য খনন করা আট ফুট ব্যাসার্ধের একটি গর্তে পড়ে যায় দুই বছর বয়সী শিশু সাজিদ। সে কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিবুল ইসলামের ছেলে।

আজ সকাল সাড়ে ১০টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে সকাল হতে না হতে উদ্ধার অভিযানস্থলে শত শত উৎসুক মানুষ ভিড় জমিয়েছেন। তাঁদের সরাতে বেগ পেতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সরু গর্তটির পাশে প্রায় ৪০ ফুট গভীর করে খনন করেছেন। এরপর পাশের সরু গর্ত পর্যন্ত সুড়ঙ্গ করা হচ্ছে। তবে শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শুক্রবার থেকে মেট্রোরেলে সর্বাত্মক কর্মবিরতি, কর্মচারীদের আলটিমেটাম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে সার্ভিস রুল (চাকরি বিধিমালা) প্রণয়ন করতে ব্যর্থ হওয়ায় সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির নিয়মিত কর্মচারীরা।

কর্মচারীরা জানান, আজ বৃহস্পতিবারের (১১ ডিসেম্বর) মধ্যেও সার্ভিস রুল প্রকাশ না হলে আগামীকাল শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৭টা থেকে তাঁরা সব যাত্রীসেবা বন্ধ রেখে পূর্ণ কর্মবিরতিতে যাবেন।

আজ ডিএমটিসিএলে নিয়মিত কর্মকর্তা ও কর্মচারী ব্যানারে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কর্মবিরতির পাশাপাশি প্রতিদিন ডিএমটিসিএল প্রধান কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলবে। ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই কর্মচারীরা এই কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছেন এবং কর্মসূচির ফলে যেকোনো জনদুর্ভোগের দায়ভার সম্পূর্ণভাবে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০১৩ সালে ডিএমটিসিএল প্রতিষ্ঠার পর এক যুগ পার হলেও ৯০০-এর বেশি নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য এখনো স্বতন্ত্র চাকরি বিধিমালা প্রণয়ন হয়নি। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল চালুর পর থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীরা দক্ষতা ও নিরাপত্তার সঙ্গে পরিচালনা, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করলেও চাকরি বিধিমালা না থাকায় ছুটি, সিপিএফ, গ্র্যাচুইটি, শিফট-অ্যালাউন্স/ওভারটাইম, গ্রুপ ইনস্যুরেন্সসহ ন্যায্য সুবিধা ও পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে তাঁদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে সার্ভিস রুল প্রণয়ন হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। ফলে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি কর্মচারীরা আন্দোলনে নামেন। পরে ২০ ফেব্রুয়ারি এক মাসের মধ্যে (২০ মার্চ) বিধিমালা করার আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত হয়, কিন্তু ৯ মাসেও কোনো অগ্রগতি হয়নি।

এরপর ৪ ডিসেম্বরের অবস্থান কর্মসূচিতে পরিচালক (প্রশাসন) জানান, তিনি ৯ ডিসেম্বরের বোর্ড সভায় সরকারি বিধিবিধান ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ‘বিশেষ বিধান’ অপসারণ করে সার্ভিস রুল উত্থাপন করবেন। কর্মচারীরা ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে তা প্রকাশের দাবি জানান এবং সময়মতো না হলে ১০ ডিসেম্বর থেকে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

গতকাল ১০ ডিসেম্বর ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাঁদের জানান, খসড়া সার্ভিস রুলের সব ধারা নিয়ে বোর্ড একমত হলেও প্রকল্পের জনবলকে ডিএমটিসিএলে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একাদশ অধ্যায়ের ‘বিশেষ বিধান’ থাকার কারণে রুল পাস আটকে আছে। তিনি কোনো সময়সীমাও দিতে পারেননি এবং এই বিধান অপরিবর্তিত রেখেই রুল প্রণয়নের কথা উল্লেখ করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডিএমটিসিএল পরিচালনা পর্ষদ ‘বিশেষ বিধান’ ছাড়া রুল পাসে আগ্রহী হলেও কর্তৃপক্ষের চাপের কারণেই বিলম্ব হচ্ছে। প্রকল্পের জনবলকে অবৈধ সুবিধা দিতে গিয়ে নিয়মিত ৯০০-এর বেশি কর্মচারী প্রতিনিয়ত তাঁদের বৈধ সুবিধা পাচ্ছেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে সালিসি বৈঠকে শ্বশুরকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়িতে পারিবারিক বিরোধ মেটাতে বসা সালিসি বৈঠকে হারান আলী শেখ (৫৫) নামের এক ভ্যানচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার রাতে নিহত হারান আলীর ছেলে ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন। নিহত হারান আলী শেখ সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে।

বহুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন জানান, ১৫ দিন আগে দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। সে বিষয় নিয়ে গতকাল বিকেলে বৈঠক চলছিল। বৈঠকের শেষ দিকে মেয়ের স্বামীর পরিবারের লোকজন হামলা করেন। আহত হারান আলী শেখকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত হারান আলীর ছেলে ইকবাল হোসেন জানান, তাঁর বোন শাপলা খাতুন ও বোনজামাই আবুল কালামের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। সে বিষয়ে গতকাল বিকেলে খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগাতী গ্রামে সালিস বসে। বৈঠকের শেষ দিকে আবুল কালামের পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হামলা চালান।

ইকবাল হোসেন বলেন, ‘হামলায় আমার বাবা হারান আলী শেখ, মা মরিয়ম বেগম, আমার ভাগনে আলামিন, বোন শাপলা খাতুন ও আমি আহত হই। গুরুতর আহত বাবাকে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

সিরাজগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহাগ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার আইনিপ্রক্রিয়া শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিশু উদ্ধারে ৪০ ফুট গর্ত করে চলছে সুড়ঙ্গ করার কাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ১৪
আজ ভোরের দিকে ৪০ ফুট গভীর পর্যন্ত গর্ত করা হয়েছে। এরপর সুড়ঙ্গ কাটার কাজ শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ ভোরের দিকে ৪০ ফুট গভীর পর্যন্ত গর্ত করা হয়েছে। এরপর সুড়ঙ্গ কাটার কাজ শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের জন্য খনন করা আট ফুট ব্যাসার্ধের গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদকে উদ্ধারে পাশে ৪০ ফুট গভীর গর্ত খনন করা হয়েছে। এরপর মূল সরু গর্তে পৌঁছাতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এখন সুড়ঙ্গ করার কাজ করছেন। তবে আজ বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৯টা পর্যন্ত শিশু সাজিদের দেখা মেলেনি।

এর আগে গতকাল বুধবার বেলা ১টার দিকে মায়ের পেছন পেছন হাঁটার সময় ওই গর্তে পড়ে যায় শিশু সাজিদ। এর পর থেকে তাকে উদ্ধারের জন্য কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট। গতকাল থেকে ওই গর্তে পাইপের মাধ্যমে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য।

তানোরের এই এলাকা উচ্চ খরাপ্রবণ। এখানে মাটির ১২০ থেকে ১৩০ ফুট গভীরেও ভূগর্ভস্থ পানির সন্ধান মেলে না। এ জমির মালিক কছির উদ্দিন একটি গভীর নলকূপ বসাতে চেয়েছিলেন। তাই বছরখানেক আগে আট ফুট ব্যাসার্ধে খনন করেছিলেন। কিন্তু পানি না পেয়ে গভীর নলকূপ বসানো হয়নি। সেই গর্তে পড়ে গেছে গ্রামের রাকিবুল ইসলামের দুই বছর বয়সী ছেলে সাজিদ।

ফায়ার সার্ভিস ধারণা করেছিল, শিশুটি প্রায় ৩৫ ফুট নিচে পড়ে গেছে।

ক্যামেরা নামিয়ে তারা শিশুটিকে দেখতে পায়নি। বিকেল থেকে ওই সরু গর্তের পাশে এক্সকাভেটর দিয়ে খনন শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। পরপর তিনটি এক্সকাভেটর যন্ত্র আনা হয়। এগুলোর মাধ্যমে আজ ভোরের দিকে ৪০ ফুট গভীর পর্যন্ত গর্ত করা সম্ভব হয়। এরপর সুড়ঙ্গ কাটার কাজ শুরু হয়।

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী স্টেশনের সহকারী পরিচালক দিদারুল ইসলাম বলেন, ‘উদ্ধারকাজ এখনো চলছে। গর্ত কাটা শেষে এখন সুড়ঙ্গ কাটা হচ্ছে। আমরা শিশুটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে চাই।’

এদিকে অসংখ্য মানুষ উৎকণ্ঠা নিয়ে উদ্ধার তৎপরতা দেখছেন। ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত