Ajker Patrika

ট্রেনে নারী ধর্ষণ: পাঁচ বছরে ১০টি ঘটনার আটটিতেই জড়িত রেলের কর্মচারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৭ জুন ২০২৪, ১৭: ০১
ট্রেনে নারী ধর্ষণ: পাঁচ বছরে ১০টি ঘটনার আটটিতেই জড়িত রেলের কর্মচারীরা

চলন্ত ট্রেনে রেল কর্মচারীদের দ্বারা ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে। ট্রেনে ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন প্রতিবন্ধীও। ট্রেনে গত ৫ বছরে এমন ১০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যার ৮টিতেই রেল কর্মচারীরা জড়িত। সর্বশেষ উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে এক তরুণী ধর্ষণের শিকার হন। 

এসব ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় এ ধরনের ঘটনা বেড়েই চলছে বলে মনে করেন নাগরিক সমাজ। 

সর্বশেষ গতকাল বুধবার ১৯ বছর বয়সী তরুণী উদয়ন এক্সপ্রেসে করে চট্টগ্রামে আসছিলেন। তিনি সিলেট থেকে উঠে খাবার বগিতে অবস্থান করেন। ওই সময় খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন কর্মী তরুণীকে প্রথমে উত্ত্যক্ত এবং পরে ধর্ষণ করেন। ওই তরুণী আত্মীয়দের সঙ্গে ভৈরবে থাকেন। তবে সিলেট গিয়েছিলেন ভাইয়ের বাসায়। তাঁর বাড়ি বান্দরবানে। তিনি বাড়ি যাওয়ার জন্যই চট্টগ্রামে আসছিলেন। 

রেলওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে অন্তত ১০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এসবের পেছনে জড়িতরা বেশির ভাগই রেল কর্মচারী। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা লালমনিরহাট-ঢাকা রুটে চলাচলকারী আন্তনগর ট্রেন লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশনে এলে ১৩ বছর বয়সী শারীরিক প্রতিবন্ধী এক কিশোরী ভুল করে ওই ট্রেনে চড়েন। 

চেকিংয়ের সময় তার কাছে টিকিট না পাওয়ায় অ্যাটেন্ডেন্ট আক্কাস আলী মেয়েটিকে তাঁর কক্ষে নিয়ে যান। পরে একটি ফাঁকা কেবিনে নিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন ওই অ্যাটেন্ডেন্ট। পরে মেয়েটির চিৎকারে ট্রেনের যাত্রীরা কেবিন থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করেন। অ্যাটেন্ডেন্টকে পিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। 

২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি রাজশাহী রেলস্টেশন মাস্টার মঈন উদ্দীন ধর্ষণ করেন দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে। ওই ঘটনায় রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ স্টেশন মাস্টারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেন। 

একই বছর ২২ জুন সিরাজগঞ্জের শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী রেলস্টেশন থেকে রাজশাহীতে যাওয়ার পথে আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের টয়লেটে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মো. মমিনুল ইসলাম (২৬) নামের এক যুবক ধর্ষণের চেষ্টা করে। 

২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি সিলেট স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা সুরমা মেইল ট্রেনে ট্রেনের সহকারী জেনারেটর অপারেটর জাহিদ চলন্ত ট্রেনে ১৮ বছর বয়সের এক তরুণীকে ধর্ষণ করেন। 

২০২২ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনে এক ছাত্রীকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেছিল বাবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। 

২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সীমান্ত এক্সপ্রেসে বাড়ি ফেরার পথে ধর্ষণের কথা ধামাচাপা দিতে চলন্ত ট্রেনেই কিশোরীর গলায় চাপ দিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন মিন্টু নামে এক সৎবাবা। 

কিশোরীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পরিচয় শনাক্তের পর তার সৎবাবাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ওই সময় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি তাঁর সৎমেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণের কথা গোপন রাখতেই, শ্বাসরোধে হত্যা করে মেয়েকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। যশোর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন ওই সময় সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান। 

২০১৯ সালের ২১ আগস্ট ঢাকা রেলস্টেশনের (কমলাপুর) বলাকা কমিউটার ট্রেনের পরিত্যক্ত বগির টয়লেটের ভেতর থেকে মাদ্রাসাছাত্রী আসমার লাশ উদ্ধার করা হয়। আসমা আক্তারকে ধর্ষণের পর শ্বাস রোধ করে হত্যা করেছিল দুর্বৃত্তরা। 

আসমা আক্তার পঞ্চগড় থেকে প্রেমিক মারুফ হাসান বাঁধনের সঙ্গে ঢাকায় এসেছিলেন। এ ঘটনায় আসমা আক্তারের বাবা বাঁধনকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে বাঁধন পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। 

২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি নাটোরে চলন্ত ট্রেন থেকে নামিয়ে নিলিমা আকতার নামের এক নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে সাবেক স্বামী জালাল উদ্দিন। এ ঘটনায় ওই স্বামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

রেল সংশ্লিষ্টজন বলছে, ট্রেনের টয়লেটে ধর্ষণের ঘটনা বেশি ঘটে। এরপর খাবার বগিতে। সর্বশেষ ধর্ষণের ঘটনাটি খাবার বগিতে ঘটেছে। ওই নারীকে একা পেয়ে জোর করে ধর্ষণ করে প্রায় সাতজন কর্মচারী। এরা সবাই খাবার সরবরাহে জড়িত ছিল। মূলত ধর্ষণের ঘটনায় রেলওয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাই বেশির ভাগ জড়িয়ে পড়ছেন। অনেক নারী মান সম্মানের ভয়ে যৌন হয়রানির বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে, অনেকে পুলিশকে অভিযোগ করেন। সেগুলোই মূলত সামনে আসছে।

ট্রেনে বারবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও রেল কর্তৃপক্ষ নারী যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। 

তবে চট্টগ্রাম রেলওয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কিন্তু যে কোনো অপরাধে জিরো টলারেন্স। গতকাল ধর্ষণের ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে চারজনকে গ্রেপ্তার করি। আমরা ট্রেনে আরও বিশেষ নজরদারি বাড়িয়েছি।’ 

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনা এড়াতে প্রত্যেক জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে হবে। তবেই এই সব ঘটনা ঘটবে না। রেলওয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে, যাত্রীর নিরাপত্তায় মাত্র কয়েক লাখ টাকা খরচ করে নিরাপত্তা বাড়ায় না। এটি আসলে খুব দুঃখজনক।’ 

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজমুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকালের (বুধবার) ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে জড়িতদের বরখাস্ত ও প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্থগিত করেছি। নতুন যেসব বগি আসছে ওইসব বগিতে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। আমরা বাকি ট্রেনগুলোতেও সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসব। আমাদের কাছে যাত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি প্রাধান্য দিতে হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ট্রেনে অথবা স্টেশনে কোনো নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে বা শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে, তাহলে তাদের শাস্তি দেওয়ার বিধান রয়েছে আদালতের। আমরা শুধু তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পারি। চলন্ত ট্রেনে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটলে, সেটা দেখভাল করবে রেলওয়ে পুলিশ। আমরা এমন ঘটনায় তদন্ত করে শুধু চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করতে পারি। এরপর আদালত তাদের যে শাস্তি দেয় সেটাই হয়, আদালতের বাইরে আমরা কিছুই করতে পারি না। কোর্ট শাস্তি দিলে আমাদের দ্বিতীয়বার বিচার করার এখতিয়ার নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চোর সন্দেহে নির্যাতন: মবের ভুক্তভোগীকে জেল, হাসপাতালে মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ওমর ফারুক
ওমর ফারুক

দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের (৩৮) ওপর। পেরেক ঢোকানো হয় হাত-পায়ে। পানি চাইলে শীতের রাতে নগ্ন করে চুবানো হয় নদীতে। তারপর দফায় দফায় নির্যাতন। পায়ুপথে ঢোকানো হয় মরিচের গুঁড়া। এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। ওই অবস্থায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে কারাগার থেকে হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত ফারুকের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা সদরের চাঁনপাড়া মহল্লায়। বাবার নাম মসলেম সরদার। গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের সিএনজি সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে সমিতির সদস্যরা তাঁকে নির্মম নির্যাতন করেন। স্থানীয়রা জানান, চুরির অভিযোগে নির্যাতন করা হলেও পরে মাদক উদ্ধারের নাটক সাজানো হয়। এক পুরিয়া গাঁজার জন্য ফারুককে সাত দিনের কারাদণ্ড এবং ১০০ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা। পরে ওই রাতেই তাঁকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রেখে যায় বাগমারা থানা-পুলিশ। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় পরদিন সকালে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।

গত বুধবার উপজেলা সদরে গেলে ব্যাটারি চুরির অপবাদ দিয়ে ওমর ফারুককে আটকে রাখেন সিএনজি সমিতির সদস্যরা। সমিতির সভাপতি রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে সমিতির ২০-২৫ জন সদস্য মব সৃষ্টি করে তাঁকে নির্মম নির্যাতন করেন। চুরির কথা স্বীকার করাতে চার হাত-পায়ে পেরেক ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। নগ্ন করে ফেলে রাখা হয় রাস্তায়। পানি খেতে চাইলে পাশের নদীতে চুবানো হয়। পায়ুপথে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় মরিচের গুঁড়া। একপর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে এক পুরিয়া গাঁজা এনে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থা দেখে পুলিশ সদস্যরা আর তাঁকে নিয়ে যেতে চাননি। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা। তিনি নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে মুমূর্ষু ভ্যানচালক ফারুককে সাত দিন কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা অর্থদণ্ড দেন।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহ আলম খান জানান, ওই রাতেই পুলিশ ওমর ফারুককে আহত অবস্থায় কারাগারে দিয়ে যায়। তাঁর অবস্থা খারাপ দেখে পরদিন সকালে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ফারুক মারা যান। এরপর ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ফারুকের বাবা মসলেম সরদারও ভ্যানচালক। তিনি বলেন, মিথ্যা অভিযোগে ছেলেকে নির্যাতন করা হয়েছে। চুরি না করলেও স্বীকার করাতে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।

ফারুকের মা পারুল বেগম বলেন, ‘গরিব বলে আমার ছেলেকে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসা না করিয়ে প্রশাসন তাকে কারাগারে পাঠায়। সিএনজির লোকজন দেখায়, তার কাছে গাঁজা পাওয়া গেছে। কিন্তু সে মাদক সেবন করত না। প্রশাসন নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমার মৃতপ্রায় ছেলেকে জেলে দিয়ে খুব খারাপ কাজ করেছে। তখনো সঠিক চিকিৎসা হলে বেঁচে যেত। আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত সবার বিচার চাই।’

এ বিষয়ে কথা বলতে ভবানীগঞ্জ সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিমের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। সামনাসামনি না গেলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলবেন না বলে জানান।

মুমূর্ষু ব্যক্তিকে কারাগারে নেওয়ার বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি না। আদেশ হলে আমাদের কাজ কারাগারে পৌঁছে দেওয়া। সেটাই করেছি।’ নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরিবার চাইলে মামলা করতে পারে। তারপর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মুমূর্ষু ব্যক্তির চিকিৎসা না করিয়ে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা বলেন, তিনি একটি সভায় ব্যস্ত আছেন। সভা শেষে ফোন করবেন। পরে আর ফোন করেননি। আবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

বিভাগীয় কমিশনার ড. আ ন ম বজলুর রশীদ বলেন, এ বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

খুলনা প্রতিনিধি
তনিমা তন্বী। ছবি: আজকের পত্রিকা
তনিমা তন্বী। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আলোচিত তনিমা তন্বীকে আটক করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে মহানগরীর টুটপাড়া থেকে তন্বীকে আটক করা হয়। খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি তৈমুর ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে সোমবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে মহানগরীর সোনাডাঙ্গার আল আকসা মসজিদ রোডে অবস্থিত ১০৯ মুক্তা হাউসের নিচতলার তন্বীর বাসায় মোতালেব গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পর স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি খুলনাসহ দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলে।

এ ঘটনায় পুলিশ ওই কক্ষ থেকে মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।

এর আগে মুক্তা হাউসের মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার জানিয়েছিলেন, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তন্বী গত ১ ডিসেম্বর নিচতলাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। তিনি নিজেকে এনজিও কর্মী হিসেবে দাবি করে প্রায় সময় বাড়ির বাইরে থাকতেন। তাঁর কক্ষে একাধিক পুরুষের আসা-যাওয়া ছিল। পরে অন্যদের মাধ্যমে তাঁর অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি জানতে পেরে চলতি মাসেই বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়। তবে বাড়ির ছাড়ার আগেই গুলিবিদ্ধের ঘটনাটি ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডেইলি স্টারে লুটপাট-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৩৫০-৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৩৫০-৪০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) তেজগাঁও থানায় মামলাটি করা হয়। দ্য ডেইলি স্টারের হেড অব অপারেশনস মিজানুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি, ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ২০২৫ সালের সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের অধীনে এ মামলা দাখিল করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টা ২৫ মিনিট থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দ্য ডেইলি স্টার ভবনের সামনে বিপুলসংখ্যক লোক দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা ও দাহ্য পদার্থ নিয়ে সমবেত হয়। তারা পত্রিকাটির বিরুদ্ধে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী স্লোগান দিতে থাকে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্টের মাধ্যমে হামলার আহ্বান জানায়।

রাত আনুমানিক ১২টা ৩৫ মিনিটে হামলাকারীরা সাংবাদিক ও কর্মচারীদের মারধর ও হত্যাচেষ্টার উদ্দেশ্যে ভবনের মূল গেট ও কাচের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। ভবনের বিভিন্ন তলা পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং বহু আসবাব নিচে ফেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

এজাহারে বলা হয়, হামলায় ভবনের ভেতরে থাকা দুই শতাধিক কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ক্যামেরা, সার্ভার, প্রিন্টার, স্টুডিও সরঞ্জামসহ বিপুল পরিমাণ ইলেকট্রনিক ডিভাইস নষ্ট হয়, যার আনুমানিক মূল্য পাঁচ কোটি টাকা। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের লকারে থাকা প্রায় ৩৫ লাখ টাকা লুট করা হয়। ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, লিফট, সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম ও বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনেও ক্ষতি করা হয়।

আসামিদের ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ফলে ‘দ্য ডেইলি স্টার ভবনে’ সর্বমোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের আনুমানিক মূল্য ৪০,০০,০০,০০০ (চল্লিশ কোটি টাকা)। যাচাই-বাছাই শেষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের হিসাব আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

সন্ত্রাসীদের হামলা ও অগ্নিসংযোগে দ্য ডেইলি স্টারের তৃতীয় তলায় স্টোরে সংরক্ষিত হিসাব বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ নথি, জাতীয় রাজস্ব বিভাগের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর-সম্পর্কিত যাবতীয় নথি এবং নিউজ পেপার আর্কাইভস পুড়িয়ে ভস্মীভূত করা হয় বলেও এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

হামলার সময় প্রমাণ নষ্টের উদ্দেশ্যে সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয় এবং ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজে বাধা দেওয়া হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ অভিযানে ভবনের ভেতর থেকে অন্তত ৩০ জন কর্মীকে উদ্ধার করা হয়।

সন্ত্রাসীদের হামলার কারণে দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায় এবং ১৯ ডিসেম্বর পত্রিকা প্রকাশিত হয়নি। অনলাইন কার্যক্রম ১৭ ঘণ্টা বন্ধ ছিল।

মামলার এজাহারে ডেইলি স্টার জানিয়েছে, এই হামলার সিসিটিভি ফুটেজ এবং বিভিন্ন মিডিয়ার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈনু মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হেডফোন কানে রেললাইনে যুবক, ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত

ফেনী প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ফেনীতে ট্রেনে কাটা পড়ে আবদুল্লাহ আল নাহিদ (২২) নামের এক যুবক মারা গেছেন। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের সদর উপজেলার উত্তর শিবপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নাহিদ সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের দেওয়ানগঞ্জ এলাকার দেবীপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে।  

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামগামী সাগরিকা ট্রেনটি উত্তর শিবপুর এলাকা অতিক্রম করার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে ফেনী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ দীপক দেওয়ান বলেন, নিহত যুবক হেডফোন কানে রেললাইনে হাঁটছিলেন। পরে চট্টগ্রামগামী ট্রেনটি তাঁকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে রেললাইনের এক পাশে ছিটকে পড়েন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত