Ajker Patrika

তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষ, বছর জুড়েই আলোচনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষ, বছর জুড়েই আলোচনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে ২০২১। দরজায় কড়া নাড়ছে ২০২২। ২০২১ সালে বেশ কয়েকবার গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে আলোচনায় এসেছে জেলাটি। এমনকি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাম।

বিশ্ব গণমাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া
গত ৬ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের দামচাইল বাজারে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা সমর্থকদের মধ্যে দু'দফা মারামারি হয়। ওই ঘটনায় চারজন আহত হন। এ ঘটনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও স্থান পায়।

গত ৯ জুলাই কোপা আমেরিকার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়ামে। যেখান থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দূরত্ব প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার। অথচ ওই দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে থাকতে হয় সতর্ক অবস্থানে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করার পাশাপাশি ফাইনাল খেলার দিনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে।

গরু রাখা নিয়ে মারামারি
গত ১৭ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় পশুর হাটে গরু রাখার জায়গা নিয়ে দুই পক্ষের মারামারিতে এক ব্যক্তি নিহত হন। কসবা উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামে অস্থায়ী পশুর হাট বসে। ওই হাটে গরু রাখার জায়গা নিয়ে শ্যামবাড়ি গ্রামের শাহ আলম ও আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী মান্দারপুর গ্রামের মাহবুব ও বায়েজিদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এই নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়।

পারিবারিক বিরোধের জেরে খুন
গত ২০ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ছোট দুই ভাইয়ের বল্লমের আঘাতে নিহত হন বড় ভাই। ছোট দুই ভাই সহেদ মিয়া ও আবদুল্লাহ মিয়া আজ ঈদ করতে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসে। বড় ভাই আবদুর রহমানের সঙ্গে বসতভিটা নিয়ে মারামারি শুরু হয়। একপর্যায়ে আবদুর রহমানকে বল্লম দিয়ে আঘাত করেন সহেদ ও আবদুল্লাহ।

পানিপথে টেটা যুদ্ধ
গত ২১ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর এবং ফতেপুর গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নৌকা থেকে একে অপরের দিকে বর্শা, বল্লম ও ঢিল ছোড়েন। ঘটনাটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়।

‘ঘরজামাই’ ডাকা নিয়ে সংঘর্ষ
গত ১ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের আটলা গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ২০ জন আহত হন।

জেলার সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের আটলা গ্রামের আমির হকের ছেলে সোহাগ মিয়া ওই এলাকার ফজলুর রহমানে মেয়ের জামাই খুরশিদ মিয়াকে ‘ঘরজামাই’ বলে ডাকেন। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে খুরশিদকে মারধর করেন সোহাগ মিয়া। পরে বাজারের সালিস বৈঠকে সোহাগ ও খুরশিদ মিয়াকে মিলিয়ে দেওয়া হয়। পরে দুই গ্রুপ এলাকায় গিয়ে মারামারিতে জড়ায়।

ফেসবুক পোস্ট নিয়ে সংঘর্ষ
গত ৮ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় ফেসবুকের এক পোস্টকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হন।

চুলার ধোঁয়া নিয়ে সংঘর্ষ
গত ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের কুণ্ডা ইউনিয়নে চুলার ধোঁয়া নিয়ে দু'দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ২০ জন আহত হন। 

গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে রুপালী বেগম চুলায় রান্না করছিল। সে সময় চুলার ধোঁয়া যেন পার্শ্ববর্তী বাবর আলীর বাড়িতে না যায় সে বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরের দিন ৯ সেপ্টেম্বর সকালে রুপালীর বাবার বাড়িতেও অতর্কিত হামলা করা হয়। এ সময় গ্রামের লোকজন দুই পক্ষকে সমর্থন করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।    

কিশোর গ্যাংয়ের সংঘর্ষ
গত ৩১ অক্টোবর স্থানীয় বড় ভাইদের ছত্রচ্ছায়া আর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জেলা শহরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় গেটের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সকাল ৯টার দিকে রুপালীর বাবার বাড়িতেও অতর্কিত হামলা করেন বাবর আলীর লোকজন। এ সময় গ্রামের লোকজন দুই পক্ষকে সমর্থন করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

দরুদ পড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ
গত ৩ ডিসেম্বর মুয়াজ্জিন আজান দেওয়ার আগে মাইকে দরুদ শরিফ পাঠ করাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৌর এলাকার ভাদুঘর খাদেম বাড়ি এলাকার খাদেমপাড়া নুর জামে মসজিদে দু'পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহেলাতুল সুন্নাতুল জামাত (সুন্নি) ও হেফাজতে ইসলাম (ওয়াহাবি) পন্থীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হন ১০ জন।

পৌর এলাকার ভাদুঘর খাদেম বাড়ির জামে মসজিদে ওয়াহাবি পন্থী সোহেল, জুম্মার নামাজের আজানের আগে মুয়াজ্জিনকে দরুদ শরিফ পাঠ করতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটি শুরু হয় এবং একপর্যায়ে মারামারি শুরু হয়।

নবীনগরে জোড়া খুন
গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নের কুড়িঘর গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী এরশাদুল হক ও তাকে বহনকারী মোটরসাইকেলচালক বাদল সরকারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় অপর ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১৫ জনকে আসামি করে নবীনগর থানায় মামলা করেন নিহতের ভাই মো. আখতারুজ্জামান। 

পুলিশ ওই ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আশরাফুল ইসলাম রাব্বিসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ ও আদালতের কাছে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে বিস্তারিত জবানবন্দি দেন রাব্বি। 

জানা গেছে, টাকা নিয়ে আপস না করার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটনা হয়েছে।

তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষ ছাড়াও আরও বেশ কিছু ঘটনা আলোচনায় ছিল। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য, হেফাজতের ভাঙচুর ও বিজয়নগরে নৌকাডুবি।

হেফাজতের ভাঙচুর
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ভাঙচুর চালায় হেফাজত। সরকারি-বেসরকারি অন্তত ৫৮ স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। হেফাজতে হামলায় স্টেশনের সিগন্যাল সিস্টেম পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। গত ২৭ মার্চ থেকে এই স্টেশনে সব ট্রেনের যাত্রাবিরতি স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ প্রায় ৭ মাস বন্ধ থাকার পর স্টেশনটি নতুন করে মেরামত শেষে গত ১৪ নভেম্বর থেকে পুরোপুরি সচল হয়।

বিজয়নগরে নৌকাডুবি
গত ২৭ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইসকা বিলে শতাধিক যাত্রীবোঝাই ইঞ্জিনচালিত নৌকার সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা দুটি বালুবোঝাই বাল্কহেডের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে প্রাণ হারান ২৩ জন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত