Ajker Patrika

বরিশাল নগরে গৃহকর: ঘুষ দিলে মাপা হয় না ঘর

  • বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঘুষ চাওয়ায় নুর আলম নামের এক কর্মচারীকে প্রত্যাহার।
  • ৩০টি ওয়ার্ডে অনিয়মের তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ৩০ কর্তাকে।
খান রফিক, বরিশাল 
নগর ভবন, বরিশাল। ছবি: সংগৃহীত
নগর ভবন, বরিশাল। ছবি: সংগৃহীত

নগরীতে নতুন করে গৃহকর নির্ধারণে যে মাপজোক হয়েছে তাতে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) এলাকায়। এরপর ৩০ জন কর্মকর্তাকে ৩০টি ওয়ার্ডে কর নির্ধারণে তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরপরও আতঙ্কে রয়েছেন ভবনমালিকেরা।

বিসিসি এলাকায় ৬ হাজারের বেশি ভবন রয়েছে। এ ভবনের কর নির্ধারণে ভবন পরিমাপ শুরু হয় দেড় মাস আগে। এ কাজ করতে গিয়ে নগরের ৩০টি ওয়ার্ডেই করপোরেশনের কর শাখার কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘুষ চাওয়ায় ইতিমধ্যে কর ধার্য শাখার নুর আলম নামের এক কর্মচারীকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি করপোরেশনের ধার্য শাখার কয়েকজন কর্মচারী নগর ভবনে এক কর্মকর্তার ওপর চড়াও হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ওই কর্মকর্তা কর নির্ধারণে অনিয়ম নিয়ে বিসিসির শীর্ষ কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন। এরপরই এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।

এ পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ৩০টি ওয়ার্ডের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের নিয়ে নগর ভবনে এক জরুরি সভা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাধারণ মানুষের হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণে উল্টাপাল্টা কিছু করা হচ্ছে কি না, তা তদারকির জনই কর্মকর্তারা কাজ করবেন।’

ঘুষ দিলে মাপা হয় না ভবন

অভিযোগ উঠেছে, গৃহকর নির্ধারণে ভবন মাপা শুরু হওয়ার পর অনেক এলাকায় যাননি করপোরেশনের কর্মচারীরা। সে ক্ষেত্রে ভবনমালিকদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়া হয়েছে। আবার যাঁরা ঘুষ দেননি, তাঁরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিসিসির দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, সরকারনির্ধারিত কর ধার্য না করায় সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের আমলে গৃহকর নির্ধারণের উদ্যোগ ভেস্তে গেছে। এ ছাড়া সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর আমলেও গৃহকর নির্ধারণ করতে গিয়ে জন-অসন্তোষে পড়তে হয়। দায়ের করা হয় একাধিক মামলা।

যিনি ঘুষ দিতে চান না, তাঁকে হয়রানি করা হয়। মাপজোক নিয়ে নগর ভবনে ডেকে ডেকে কর নির্ধারকেরা ভবনমালিকদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। মহসীন-উল-ইসলাম হাবুল, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা

২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মহসীন-উল-ইসলাম হাবুল বলেন, ‘যাঁরা ঘুষ দেন তাঁদের বিল্ডিং পরিমাপ করা লাগে না। আর যিনি ঘুষ দিতে চান না, তাঁকে হয়রানি করা হয়। মাপজোক নিয়ে নগর ভবনে ডেকে ডেকে কর নির্ধারকেরা ভবনমালিকদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে হয়রানি বন্ধ না হলে সাবেক মেয়র সাদিক কিংবা কামালের মতো তোপের মুখে পড়তে হবে।’

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিমাপ শুরু হওয়ার পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঘুষ চান নুর আলম নামের এক কর ধার্য সহকারী। পরে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে বিসিসির প্রধান কর নির্ধারক (চলতি দায়িত্ব) মোস্তা গাওসুল হক খুসবু বলেন, ‘অনিয়ম পাওয়ায় ওনাকে পরিমাপের কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছে।’ কর নির্ধারণে ভবনের পরিমাপে অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যেসব অভিযোগ তাঁর শাখার বিষয়ে উঠেছে, তা সব যে সত্য, তা নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘কর নির্ধারণে বাড়ি বাড়ি ৭০ ভাগ ভবনের পরিমাপ হয়েছে। আমরা ভবনের পরিমাপে কাজ করছি, তাতে কর ধার্য সহকারীরা অনিয়ম করেছেন কি না, তা তদারকি করার জন্য ৩০টি ওয়ার্ডে ৩০ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

হয়রানি বাড়ছে

নগরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ফিশারি রোডে এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার বাসা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘ভবনের পরিমাপ করে এসেছেন সিটি করপোরেশনের কর শাখার কর্মচারীরা। কয়েকবার নগর ভবনে গেছি। কিন্তু তাঁরা কিছু বলছেন না, লুকোচুরি খেলছেন।’ ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাজীপাড়ার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মাপজোক করে তো নিয়ে গেল ১৫ দিন আগে। এখন আর কিছুই বলছে না করপোরেশন।’

বরিশাল নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ বলেন, ‘আমাদের দাবি হচ্ছে, অযৌক্তিকভাবে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো যাবে না। তাঁরা প্ল্যান পাস করতে পারেন না অথচ হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে মাপামাপি শুরু করে জনগণকে হয়রানি করছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত