Ajker Patrika

কোস্ট গার্ডের নামে চাঁদাবাজি, স্থানীয়দের সতর্ক করতে পাথরঘাটায় মাইকিং

বরগুনা ও পাথরঘাটা প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ড সদস্যদের মাইকিং। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ড সদস্যদের মাইকিং। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় কোস্ট গার্ডের নাম ব্যবহার করে একটি অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন করতে আজ রোববার (২২ জুন) বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করা হয়।

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড মাইকিংয়ের মাধ্যমে স্পষ্ট জানিয়েছে, তারা কখনোই কোনো সাধারণ নাগরিকের কাছ থেকে চাঁদা দাবি বা আদায় করে না। এতে আরও বলা হয়, কোস্ট গার্ডের নাম ব্যবহার করে কেউ চাঁদা দাবি করলে তা একটি গুরুতর প্রতারণামূলক অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

কোস্ট গার্ড সাধারণ জনগণকে আহ্বান জানিয়েছে, কেউ যদি এ ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হন বা চক্রের সন্ধান পান, তাহলে দ্রুত ১৬১১১ নম্বরে ফোন করে অথবা সরাসরি পাথরঘাটা কোস্ট গার্ড স্টেশনে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেন।

জানা গেছে, কোস্ট গার্ডের সোর্স পরিচয়ে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে বরগুনার পাথরঘাটায় মাছ ধরার ট্রলার, নদীপথে মালবাহী নৌযান ও উপকূলবর্তী এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ‘কোস্ট গার্ডের অনুমোদন’ বা ‘রক্ষার’ নামে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করছে। এমন অভিযোগ উপকূলীয় মৎস্য ব্যবসায়ীদের। মূলত এমন অভিযোগের বিষয়ে কোস্ট গার্ডের অবস্থান স্পষ্ট করতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাইকিংয়ের মাধ্যমে সতর্ক করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে কোস্ট গার্ডের একজন কর্মকর্তা জানান, কোস্ট গার্ডের সঙ্গে এই অপরাধীদের কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁরা জনগণকে আহ্বান জানান, কেউ এমন চাঁদাবাজির মুখোমুখি হলে যেন তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসনকে জানানো হয়।

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মেহেদী হাসান জানান, কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে এলাকায় সতর্কতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, ১৭ জুন বেলা ১টার দিকে কোস্ট গার্ড স্টেশন পাথরঘাটা কর্তৃক বরগুনার পাথরঘাটা থানায় একটি অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দুটি অবৈধ আর্টিসানাল ট্রলিং বোট জব্দ করা হয় এবং তল্লাশি করে ২০০ কেজি সামুদ্রিক মাছ উদ্ধার করা হয়। বোটে থাকা অভিযুক্ত ২৪ জন জেলেকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জব্দ মাছ গরিব ও অসহায় পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

ওই অভিযানকে কেন্দ্র করে ১৭ জুন রাত ৯টার দিকে আনুমানিক ৩০০ জন স্থানীয় দুষ্কৃতকারী কোস্ট গার্ডের স্থাপনায় হামলা চালায়। দুষ্কৃতকারীরা কোস্ট গার্ড সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা করে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং কোস্ট গার্ডের একটি পিকআপ ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এ ছাড়া টহলকার্যে ব্যবহৃত একটি কাঠের বোট নদীতে ডুবিয়ে দেয়। পরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী ও পুলিশের সমন্বিত প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানা গেছে, আটক জেলেরা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ট্রলিংবোটের মাধ্যমে অগভীর পানিতে কাদা নিংড়ে মাছের পোনা ধ্বংস করে আসছেন। এর ফলে সাগরে মাছ বড় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। ছোট মাছ ধরার পাশাপাশি ট্রলিং গিয়ারের আঘাতে প্রতিবছর কোটি কোটি মাছের পোনা ধ্বংস হচ্ছে। এতে অগভীর পানি বিষাক্ত হয়ে ডিম ও মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে তাঁদের এই ধ্বংসাত্মক কাজের ফলে সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আজ হুমকির মুখে পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে সাগর মৎস্যশূন্য হয়ে পড়বে।

কোস্ট গার্ডের স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ১৯ জুন কোস্ট গার্ড পাথরঘাটা স্টেশন কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. মাইনুদ্দিন খান বাদী হয়ে ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ ৭০০ থেকে ৮০০ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে পাথরঘাটা থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় পাথরঘাটা থানা-পুলিশ ইতিমধ্যে সাত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তার এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্য রয়েছেন মো. নাসির মেম্বার (৫০)। তিনি বাদুরতলা এলাকার বাসিন্দা। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছেন স্থানীয় শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মো. কামাল হোসেন (৬০), মো. সালাম (৪২), খলিল (৩২), সোহাগ (৩৫), আল-আমিন ও রুবেল নামের ছয়জন। তাঁরা সবাই পাথরঘাটার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দা। এ ঘটনার পরে জেলেরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছেন।

পাথরঘাটা ঘাটে রাখা মাছ ধরার ট্রলার। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাথরঘাটা ঘাটে রাখা মাছ ধরার ট্রলার। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ সকালে পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, ঘাটে তেমন কোনো ট্রলার ভিড়ছে না। ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গভীর সাগরে জাল ফেলে মাছ নিয়ে জেলেদের ফেরার কথা থাকলেও বিএফডিসি ঘাটে নেই আগের মতো গভীর সমুদ্র থেকে ফিরে আসা ইলিশবোঝাই ট্রলার।

গভীর সমুদ্র থেকে ইলিশ নিয়ে কেন ঘাটে ট্রলার ভিড়ছে না—জানতে চাইলে বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দুলাল মাস্টার আজকের পত্রিকাকে জানান, পাথরঘাটায় অবৈধ ট্রলিং বোটের মালিক ও জেলেদের সঙ্গে কোস্ট গার্ডর সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে আসামি করেছে কোস্ট গার্ড। ফলে গ্রেপ্তার আতঙ্কে বিএফডিসি ঘাটে সাগর থেকে ইলিশ নিয়ে ট্রলার এ ঘাটে আসছে না। অনেক ট্রলার পটুয়াখালীর মহিপুর, কলাপাড়া, কিছু ট্রলার বাগেরহাটের পাড়েরহাট ও শরণখোলা, আর কিছু ট্রলার বরগুনার তালতলী ঘাটে মাছ বিক্রি করছে। ফলে বিএফডিসিতে এখন নেই কেনাবেচা। অবৈধ ট্রলিং বোটের কারণে পাথরঘাটা মৎস্য সেক্টর ধ্বংসের পথে।

দুলাল মাস্টার বলেন, ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড আমাদের জেলেদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। তবে কিছু অসাধু জেলে অবৈধ ট্রলিং ট্রলারে মাছ শিকার করেন। তাঁদের সঙ্গে মূলত এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কোস্ট গার্ড কোনো বৈধ জেলেদের হয়রানি করছে না।’

এ ব্যাপারে পাথরঘাটা কোস্ট গার্ডের স্টেশন কমান্ডার (মিডিয়া সেল) মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘কোস্ট গার্ডের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও নাশকতার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আমরা ঘটনার সময় বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আসামিদের শনাক্ত করে মামলা দিয়েছি। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়—এমন কোনো নিরীহ জেলেদের নামে মামলা দেওয়া হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ ট্রলিং বোট জব্দে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যেখানেই এসব নৌকা পাওয়া যাবে, সেগুলো আটক করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে রাজশাহী

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীতে কনকনে শীতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টায় কয়েকজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীতে কনকনে শীতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টায় কয়েকজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুয়াশার চাদরে মোড়া রাজশাহী কাঁপছে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায়। দিনের তাপমাত্রা ক্রমেই নেমে যাওয়ায় জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তবে কনকনে শীতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

বুধবার সকাল সাড়ে ৬টায় রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে সময় বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ছিল শতভাগ। ফলে শীতের অনুভূতি আরও তীব্র হয়ে ওঠে।

এদিকে তিন দিন ধরে পদ্মার তীরের এই জেলায় সূর্যের দেখা নেই বললে চলে। ভোর থেকে সকাল, এরপর দুপুর পেরিয়েও কুয়াশার আস্তরণ কাটছে না। হিমেল বাতাস শরীর ছুঁয়ে গেলেই কাঁপুনি ধরছে। প্রতিদিন যেন শীত নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে জনজীবনে।

সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে রাজশাহীর দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষ। কাজ কমে যাওয়ায় আয় নেই। আবার শীত নিবারণের পর্যাপ্ত গরম কাপড়ও নেই। শীতবস্ত্রের অভাবে ছিন্নমূল মানুষকে কনকনে ঠান্ডার সঙ্গে লড়াই করে রাত কাটাতে হচ্ছে। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে খড়কুটো জ্বালিয়ে শরীর গরম রাখার চেষ্টা করছেন।

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা থেকে ভোরে কাজের আশায় রাজশাহী নগরের তালাইমারী এলাকায় আসেন দিনমজুর নাজমুল। কিন্তু শীতের কারণে কাজের দেখা মেলেনি। তিনি বলেন, ‘আজ খুব বেশি ঠান্ডা। মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না, তাই কাজও পাওয়া যায়নি। আগে যেখানে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন কাজ মিলত, এখন এই শীতে সপ্তাহের বেশির ভাগ দিনই কাজ পাওয়া যায় না।’

রিকশাচালক জাকির আলী বলেন, ‘হুহু করে ঠান্ডা বাতাস বইছে। রিকশা চালাতে গেলে শরীর জমে আসে। যাত্রী কম, আয়ও কম। খুব কষ্টে দিন কাটছে। কয়দিন এই অবস্থা থাকবে কে জানে!’

এদিকে তীব্র শীতের প্রভাব পড়েছে নগরজীবনেও। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। কুয়াশা আর ঠান্ডার ভয়ে মানুষ দ্রুত ঘরে ফিরছে। আর সন্ধ্যা নামলেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অধিকাংশ দোকানপাট। যেন পুরো শহর আগেভাগেই নিস্তব্ধ হয়ে পড়ছে।

গ্রামাঞ্চলে শীতের দাপট আরও বেশি। রাজশাহীর বানেশ্বর এলাকার বাসিন্দা তুষার আলম জানান, শহরের তুলনায় গ্রামে শীত অনেক বেশি অনুভূত হচ্ছে। খোলা মাঠ, নদী আর কুয়াশার কারণে ঠান্ডা যেন হাড়ে হাড়ে ঢুকে পড়ছে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিক থেকে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। বুধবার ভোরের পর থেকে কুয়াশার আধিক্য দেখা যায়। কুয়াশার কারণে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টির মতো অনুভূতি হচ্ছে। রাজশাহীসহ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এই পরিস্থিতি আরও কয়েক দিন বিরাজ করতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে বিপর্যস্ত মেহেরপুরের জনজীবন, তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
গাংনীতে ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে সড়ক ও আশপাশের এলাকা। হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনীতে ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে সড়ক ও আশপাশের এলাকা। হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুর জেলায় ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এর সঙ্গে বইছে ঝিরি ঝিরি বাতাস। সকাল থেকে সূর্যের দেখা নেই। ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে সড়ক ও আশপাশের এলাকা। কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু অবস্থায় পড়েছে মানুষ।

কুয়াশা উপেক্ষা করেই মানুষ নিজ নিজ কাজে বের হচ্ছে। যানবাহনগুলো ধীরগতিতে কুয়াশা ভেদ করে চলাচল করছে। দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ জীবিকার তাগিদে কাজে ছুটছেন। তবে ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ সকালে তাপমাত্রা নেমে এসেছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চারদিক এত কুয়াশায় ঢাকা যে অনেক সময় রাস্তা স্পষ্ট দেখা যায় না। এমন পরিস্থিতিতে রাস্তায় বের হতে ভয় লাগছে। এর সঙ্গে তীব্র শীত ও ঠান্ডা বাতাসে হাত-পা ঝিনঝিন করছে।

মাঠে কাজ করতে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন, চরম শীত আর কুয়াশার মধ্যেই কাজ করতে হচ্ছে। সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস বইছে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে শিশু ও বয়স্কদের।

আরেক শ্রমিক শিপন আলী বলেন, ‘আমরা দিনমজুর। কাজ না করলে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। আজ শীত খুব বেশি। হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে, কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে।’

অটোচালক বকুল হোসেন জানান, ভোর থেকেই ঘন কুয়াশায় মাঠ ও রাস্তা ঢেকে গেছে। পেটের তাগিদে বের হতে হলেও ধীরে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। দুই দিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি।

ঝিরি ঝিরি বাতাস আর ঘন কুয়াশার মধ্যেই জমিতে কাজ করছেন এক কৃষক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝিরি ঝিরি বাতাস আর ঘন কুয়াশার মধ্যেই জমিতে কাজ করছেন এক কৃষক। ছবি: আজকের পত্রিকা

নছিমনচালক হিরোক ইসলাম বলেন, ‘ভোরে মাছ আনতে বের হতে হয়। কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনার ভয় বেশি। ধীরে চালালেও ভয় কাটে না। শীত আর বাতাসে হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে।’

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জামিনুর রহমান জানান, আজ সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। এমন আবহাওয়া আরও দু-এক দিন থাকতে পারে। তবে দুপুরের পর আকাশ কিছুটা পরিষ্কার হতে পারে।

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশা ও শীত থাকলেও এখন পর্যন্ত মাঠের ফসলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা নেই। কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, মেহেরপুর জেলায় আবহাওয়া অফিস না থাকায় পাশের জেলা চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়া অফিসের তথ্যই মেহেরপুর জেলার তাপমাত্রা হিসেবে ধরা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে গোপালগঞ্জ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকা আজ বুধবার সকালে সূর্য উঁকি দিলেও সারা দেশে শীতের দাপট চলছেই। তাপমাত্রাও গতকালের তুলনায় বেশ কমেছে। এর মধ্যে আজ সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল গোপালগঞ্জ জেলায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল ৯টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলাসহ খুলনা, বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধানের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই শৈত্যপ্রবাহ কোথাও কোথাও অব্যাহত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, আজ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের অনেক জায়গায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। সারা দেশে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে শীতের অনুভূতি বেশি হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে রাজশাহীতে ৮ দশমিক ৪, রংপুর ও ময়মনসিংহ, সিলেটে ১২ দশমিক ৫, চট্টগ্রামে ১৩ দশমিক ২, খুলনায় ৮ দশমিক ৫ এবং বরিশালে ৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফার্মগেট নামার র‍্যাম্প বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৪৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজা আজ বাদ জোহর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হওয়ায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ইন্দিরা রোডের ফার্মগেট নামার র‍্যাম্প সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ বুধবার সকাল থেকে র‍্যাম্পটি বন্ধ রাখা হয়েছে এবং বেলা আনুমানিক ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বন্ধ থাকতে পারে। জানাজা উপলক্ষে ওই এলাকায় যানবাহন ও মানুষের চাপ বাড়বে; তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেডের অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স বিভাগের ব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন (অব.) হাসিব হাসান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই এই এলাকায় ভিড় বেড়েছে। র‍্যাম্পের নিচে যানবাহন চলাচলের পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় এবং তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ায় আমরা সকাল থেকেই ফার্মগেট নামার র‍্যাম্পটি বন্ধ করে দিয়েছি।’

হাসিব হাসান আরও বলেন, বিকল্প হিসেবে যাত্রীদের এফডিসি নামার র‍্যাম্প ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপরেও চালকদের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে গতকাল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এক বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ফার্মগেট নামার র‍্যাম্প বন্ধ থাকার তথ্য জানিয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত