Ajker Patrika

উপকূলীয় জেলা বরগুনা

সুপেয় পানির প্রকল্পে ধাপে ধাপে দুর্নীতি

  • আ.লীগের আমলের জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের যোগসাজশে দুর্নীতি।
  • সুপেয় পানির সংকট নেই, এমন বাড়িতেও ট্যাংক স্থাপন।
  • টাকা নিয়েও করা হয়নি তালিকাভুক্তি, অভিযোগ অনেকের।
  • অনেকে বাধ্য হয়ে লবণাক্ত পানি পান করে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
মনোতোষ হাওলাদার, বরগুনাতারিকুল ইসলাম, (পাথরঘাটা) বরগুনা
আপডেট : ১৯ মে ২০২৫, ০৭: ১২
ব্যক্তিগতভাবে স্থাপন করা ফিল্টার থেকে পানি সংগ্রহের অপেক্ষায় কয়েকজন। অথচ তাঁদের সুপেয় পানির সংকট নিরসনে নেওয়া হয়েছিল প্রকল্প। সম্প্রতি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার পদ্দা এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ব্যক্তিগতভাবে স্থাপন করা ফিল্টার থেকে পানি সংগ্রহের অপেক্ষায় কয়েকজন। অথচ তাঁদের সুপেয় পানির সংকট নিরসনে নেওয়া হয়েছিল প্রকল্প। সম্প্রতি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার পদ্দা এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সুপেয় পানির সংকট নেই, এমন বাড়িতেও বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য ট্যাংক রাখা হয়েছে। এমন ট্যাংক দেওয়ার জন্য নেওয়া হয়েছে ঘুষ। এদিকে যেসব ট্যাংক দেওয়া হয়েছে, সেগুলো নিম্নমানের। কিছুদিন পরই সেসব ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

এমন চিত্র উপকূলীয় জেলা বরগুনার। যেখানে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। এই সংকট নিরসনে অর্থ ব্যয় করা হলেও সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণে সুফল পায়নি ভুক্তভোগীরা।

শীত ও গ্রীষ্মে পানির চরম সংকটে ভোগে উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা। এই সংকট দূর করতে ‘উপকূলীয় জেলাসমূহে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে পানি সরবরাহ প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিল সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার। অনুসন্ধানে দেখা যায়, তালিকা প্রস্তুত থেকে ট্যাংক বিতরণ পর্যন্ত পাঁচটি ধাপে দুর্নীতি হয়েছে। ঠিকাদারের সঙ্গে সমন্বয় করে খোদ জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অনেকটা না দেখার ভান করে আছেন দৃশ্যমান এসব দুর্নীতির ক্ষেত্রে।

পাঁচটি ধাপে ভয়াবহ দুর্নীতি

বরগুনায় উপকূলে বসবাসরত অন্তত ছয় লাখ মানুষ সুপেয় পানির সংকটে রয়েছে। এ সংকট নিরসনে ২০২২-২৩ ও ২৩-২৪ অর্থবছরে পৃথকভাবে তিনটি প্যাকেজে ৭ হাজার ৫৬০ জনের নামের সুপারিশ করেন তৎকালীন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, বরগুনা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম, বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন, বামনা উপজেলা চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু ও প্রকল্পের আওতাধীন ইউপি চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, পাথরঘাটার চরদুয়ানী, কালমেঘা, পাথরঘাটা সদর ও কাঁঠালতলি ইউনিয়ন, বরগুনা সদরের নলটোনা ও এম বালিয়াতলী ও বামনার ডৌয়াতলা ইউনিয়নে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের তালিকায় নাম নিশ্চিত করতে ৩ থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে গ্রাহকের কাছ থেকে। যারা টাকা দিতে পারেনি, তাদের নাম আসেনি তালিকায়।

পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগীরা বলছেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম কবিরকে টাকা দিতে হয়েছে এই প্রকল্পের তালিকায় নাম ওঠাতে। তবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রাইসুল ইসলামের দাবি করেন, ‘প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। এখনো কাজ চলমান আছে।’

তথ্য অধিকার আইনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, গত দুই অর্থবছরে পৃথকভাবে তিনটি প্যাকেজে ৩৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকায় টেন্ডার পায় বরগুনার কামাল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী কামাল হোসেন বলেন, ‘কিছু প্ল্যাটফর্ম বৃষ্টির মৌসুমে নির্মাণ করা হয়েছে, তাই সমস্যা হয়েছে। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত সবাই ট্যাংকসহ সবকিছুই পাবেন, একটু সময় লাগবে।’

অনুসন্ধানে দেখা যায়, টেন্ডারের প্রথম বিল উত্তোলনের জন্য কিছু কিছু বাড়িতে ৩ হাজার লিটার পানি ধারণক্ষমতার ট্যাংক রাখার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন ঠিকাদার। তবে নিম্নমানের কাজ করায় ট্যাংক স্থাপনের আগেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সেসব প্ল্যাটফর্ম। যেমন পাথরঘাটার চরদুয়ানী এলাকার মোস্তফা হাওলাদার বাড়ির মসজিদের সামনে এবং মিল্টন সমাদ্দারের বাড়ির মন্দিরের পেছনে দুটি ট্যাংক এবং শেড পাওয়ার কথা থাকলেও মসজিদ ও মন্দির ঘুরে দেখা যায়, আড়াই বছর আগে ট্যাংক রাখার প্ল্যাটফর্ম করে চলে গেছে ঠিকাদার। এ ছাড়া কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

ঠিকাদারের কথার সঙ্গে কাজের মিল নেই আরও বেশ কিছু জায়গায়। বরগুনা সদরের ৯ নম্বর এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের মাইঠা এলাকা। এই এলাকায় সুপেয় পানির কোনো সংকট নেই। অধিকাংশ বাড়িতে রয়েছে গভীর নলকূপ। এই এলাকার সচ্ছল বাসিন্দা আবুল হোসেন, ফরহাদ হোসেন, মনির খান, শহিদুল ইসলামসহ অসংখ্য পরিবারের নাম রয়েছে ওই তালিকায়। অথচ তালিকাভুক্তদের অনেকের বাড়িতে গভীর নলকূপ ও সুপেয় পানির পুকুর রয়েছে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘আমি সদ্য দায়িত্ব নিয়েছি। বিষয়গুলো আমাকে জানতে হবে। না জেনে এ বিষয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না।’

ভুগছে জনসাধারণ

বরগুনার পাথরঘাটার পদ্দা বেড়িবাঁধ থেকে পাশের গ্রামের পদ্দা এলাকায় সুপেয় পানি আনতে যান ৬০ বছরের বৃদ্ধ ধলু মিয়া। এক শিক্ষকের উদ্যোগে ব্যক্তিগতভাবে স্থাপন করা ফিল্টার থেকে প্রতিদিন ৩৫ লিটার সুপেয় পানির জার কাঁধে নিয়ে হেঁটে বাড়ি ফেরেন তিনি। শুধু ধলুই নন, পদ্দা গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দার সুপেয় পানি সংগ্রহের চিত্র এটি। কখনো দিনের শুরুতে আবার কখনো দিনের শেষে লাইনে দাঁড়িয়ে সুপেয় পানি সংগ্রহ করতে হয় তাঁদের।

এলাকাবাসী জানান, পানিতে লবণাক্ততা ও নলকূপ স্থাপনের সুযোগ না থাকায় বৃষ্টি মৌসুম শেষ হলেই এভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাঁদের। পদ্দা এলাকার ধলু মিয়া বলেন, ‘আমরা গরিবেরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাই না। কারণ, টাকার বিনিময়ে তালিকা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার ও তার চ্যালারা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদপুরে নতুন ভোটারদের নিয়ে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চাঁদপুরে শতাধিক নতুন ভোটারের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের আয়োজনে এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চাঁদপুর জেলা কমিটির সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি হয়।

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও বেলুন উড়িয়ে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান মিয়া। নতুন ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সুশাসন ইত্যাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ হয়েছে। সুজনের সহযোগিতায় এই আয়োজন অবশ্যই অংশগ্রহণকারীদের অনেক সমৃদ্ধ করবে এবং সচেতন নাগরিক তৈরি হবে।’

পরে কলেজের অডিটরিয়ামে ৫০টি এমসিকিউ পদ্ধতির প্রশ্নের মাধ্যমে ৩০ মিনিটের পরীক্ষা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ১০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তাঁদের মধ্য থেকে প্রথম থেকে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী তিনজন জাতীয় নির্বাচনী অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হয়।

পরীক্ষা শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য ও বিজয়ীদের হাতে সনদ তুলে দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুজন চাঁদপুরের সভাপতি অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সুজনের আঞ্চলিক সমন্বয়ক নাছির উদ্দিন।

সুজন চাঁদপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রহিব বাদশা, শিক্ষক ওমর ফারুক, সংগঠক সালাউদ্দিন, কর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সাংবাদিক আলম পলাশ, জাকির হোসেন, শোভন আল-ইমরান, মোরশেদ আলম রোকন, মো. মাসুদ আলম, শরীফুল ইসলামসহ সুজন জেলা কমিটির সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত