Ajker Patrika

পটিয়ার ওসি প্রত্যাহারে বৈষম্যবিরোধীদের আলটিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৫, ২২: ৩৯
অবরোধ প্রত্যাহারের আগে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ের জাকির হোসেন সড়কে অবস্থান বৈষম্যবিরোধীদের। ছবি: আজকের পত্রিকা
অবরোধ প্রত্যাহারের আগে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ের জাকির হোসেন সড়কে অবস্থান বৈষম্যবিরোধীদের। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের পটিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও থানা-পুলিশের মধ্যে সংঘটিত হাঙ্গামার ঘটনায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে আট ঘণ্টা এবং নগরের খুলশী এলাকার ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে জাকির হোসেন সড়কে আড়াই ঘণ্টা অবরোধ করে বৈষম্যবিরোধীরা। দুই জায়গায় অবরোধের কারণে মানুষকে বেশ ভোগান্তিতে পরতে হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাঁরা রাস্তা থেকে সরে যান। এরপর যান চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

ছাত্রদের লাঠিপেটার অভিযোগে পটিয়া থানার ওসিকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবিতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক আট ঘণ্টা অবরোধ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে পটিয়া থানার গেটে অবস্থান নিলেও বেলা ১২টার দিকে তাঁরা ইন্দ্রপুল এলাকায় মহাসড়কে নেমে যান চলাচল বন্ধ করে দেন।

এতে যোগ দেন কেন্দ্রীয় নেতা খান তালাত মাহমুদ রাফিসহ চট্টগ্রাম জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতারা। সড়কে প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। শত শত যানবাহন আটকা পড়ে, যাত্রীদের—বিশেষ করে নারী, শিশু, বয়স্ক ও শিক্ষার্থীদের—চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

বিকেল সোয়া ৬টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য ও চট্টগ্রাম সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি ঘোষণা দেন—দাবি পূরণ না হলে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল থেকে চট্টগ্রামজুড়ে ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হবে। এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা যান চলাচল স্বাভাবিক করতে সহযোগিতা করেন।

এর আগে বিকেল আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।

ছাত্রদের ভাষ্য, পটিয়া থানা চত্বরে পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করেছে। এতে অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিরা হলেন আশরাফুল ইসলাম তৌকির (২১), মো. নাদিম (২১), মো. আয়াস (১৬), মো. আকিল (১৮), মো. ইরফান উদ্দিন (১৮), তাসরিয়ান হাসান (১৮), মো. রায়হান উদ্দিন (২০), সাইফুল ইসলাম (১৭), জাহেদুল করিম শাহী (১৮), মুনতাসির আহমদ (১৭) ও সাইফুল ইসলাম (১৮)। এদের মধ্যে কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ভিডিও ফুটেজ, স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঘটনার সূত্রপাত হয়। দীপঙ্কর দে নামের রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের এক নেতাকে পটিয়ায় আটক করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা থানায় নিয়ে গিয়ে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। তাঁরা দীপঙ্করকে মারতে মারতে থানার ভেতরে নিয়ে যান। এ সময় থানার লকআপে সাতজন রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। তবে দীপঙ্করের নামে কোনো মামলা না থাকায় পুলিশ গ্রেপ্তার করতে অস্বীকৃতি জানায়। পুলিশের ভাষ্য, রাঙামাটিতে মামলা থাকলে তা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই অবস্থায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডা হয়, যা একপর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। পুলিশ জানায়, থানা চত্বরে, গেট ও অভ্যর্থনা কক্ষে হামলা চালানো হয়।

এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে রাত ১২টার দিকে আরও আন্দোলনকারী থানার সামনে জড়ো হয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। একপর্যায়ে ডিবি পুলিশের একটি দল গিয়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা তালহা রহমান বলেন, “আমরা বারবার তথ্য দিয়েও পুলিশকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখিনি। এবার যখন এক ছাত্রলীগ নেতাকে ধরে থানায় নিয়ে যাই, তখন পুলিশ উল্টো আমাদের ওপরই চড়াও হয়। ”

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জায়েদ নূর বলেন, “একজন ছেলেকে মারতে মারতে থানার ভেতরে ঢোকার পর আমাদের একজন অফিসার তাঁদের থামাতে গেলে তাঁরা কিছুই শুনছিলেন না। স্লোগান দিতে দিতে ফোর্সের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। সিকিউরিটি ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছিল। পরে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।’’

ওসি জানান, রাত ১২টার দিকে তাঁরা আবার থানায় ঢোকার চেষ্টা করলে অতিরিক্ত ফোর্স আনতে হয়। দীপঙ্কর দে-কে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। গেটে দায়িত্বরত সেন্ট্রিকে থামাতে গেলে ধাক্কাধাক্কি হয়। সেখানে একটি গ্লাস ভাঙচুর হয়।

ওসি বলেন, ‘‘ওই সময় হাজতে থাকা সাতজন রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামির কেউ পালিয়ে গেলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। ছাত্ররা মব তৈরি করে থানায় ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছেন। এতে চারজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। ”

ছাত্রলীগ দাবি করা ওই ব্যক্তির বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে ওসি বলেন, “তাকে আটক করে হাজতে রাখা হয়েছে।”

এদিকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর নগরের জাকির হোসেন সড়ক ছেড়ে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা-কর্মীরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবীব পলাশ কার্যালয় থেকে নেমে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। নেতা-কর্মীরা পটিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ও থানার ওসির অপসারণসহ কয়েকটি দাবি জানান। ডিআইজি ওসিকে সরানোর আশ্বাস দিলে তাঁরা সড়ক ছেড়ে যান।

পটিয়ার সড়ক অবরোধ প্রত্যাহারের সময় ছাত্র নেতারা ঘোষণা দেন, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল ১০টার মধ্যে ওসিকে প্রত্যাহার করা না হলে চট্টগ্রাম মহানগরজুড়ে ব্লকেড কর্মসূচি দেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি সঞ্জয় সরকার বলেন, “ছাত্রদের দাবিগুলো শোনা হয়েছে। পটিয়া থানার ওসি প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এএসপি ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার।”

এর আগে বুধবার (২ জুলাই) দুপুরে ডিআইজি কার্যালয়ে আসেন দলটির নেতা-কর্মীরা। তাঁরা ডিআইজিকে নিচে নেমে কথা বলার আহ্বান জানান। তবে ডিআইজি পাঁচজন প্রতিনিধিকে কার্যালয়ে ডেকে নেন।

পরে আন্দোলনকারীরা খুলশী ৪ নম্বর সড়ক থেকে জাকির হোসেন সড়কে অবস্থান নেন। এতে একেখান–জিইসি মুখী শত শত গাড়ি খুলশী থানার সামনে আটকা পড়ে। জিইসি থেকে একেখানমুখী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অফিস ছুটির আগমুহূর্তে এমন কর্মসূচিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন কর্মজীবী মানুষ।

এ বিষয়ে এনসিপি চট্টগ্রামের সংগঠক জোবাইরুল হাসান আরিফ বলেন, “পটিয়া থানার ওসি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও এএসপির প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি। ডিআইজি মহোদয় আমাদের দাবি শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।”

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে রত্না বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাক আটকা, দুর্ভোগে যাত্রীরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ওই পথে সব ধরনের যান চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক যাত্রী ও ওই পথে চলাচলকারীরা। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জাফলং থেকে ছেড়ে আসা বানিয়াচংগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক ব্রিজের ওপর ওঠামাত্রই ব্রিজের দুটি পাটাতন ভেঙে যায়। মুহূর্তেই ট্রাকের পেছনের দুটি চাকা ধসে পড়ে এবং পুরো ট্রাকটি ব্রিজে আটকে যায়।

এতে দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটম, প্রাইভেট কারসহ অসংখ্য যানবাহন। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবসায়ীরা।

দুর্ঘটনার পর ব্রিজের একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে ভাঙা অংশ অতিক্রম করছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ট্রাকটি ব্রিজে উঠতেই জোরে শব্দ হয়। একটু পরই দেখি পাটাতন নিচে ধসে গেছে। ভাগ্য ভালো যে ট্রাকটি পুরোপুরি নিচে পড়ে যায়নি। তবে এখন তো ও পথে চলাচলকারীরা আটকা পড়ে আছে।’

যাত্রীরা জানান, রত্না বেইলি ব্রিজটি বহুদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারী যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—এমন আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। এদিকে যাত্রীদের দাবি, এখানে যেন বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে দ্রুত স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়, যাতে প্রতিদিনের এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করার কাজ চলছে। পাথরবোঝাই ট্রাকটিতে বেশি লোড থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত