Ajker Patrika

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৯
হেলাল উদ্দিন হত্যারকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: ফাইল ফটো
হেলাল উদ্দিন হত্যারকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: ফাইল ফটো

কয়েকজনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন বেদেনা আক্তার (৪০)। টাকা পরিশোধ করতে পাওনাদাররা তাঁকে চাপ দিচ্ছিলেন। তাই নিজের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে একটি ষাঁড় স্বামীকে না জানিয়ে বিক্রির পরিকল্পনা করেন তিনি। এ জন্য বাবার বাড়ির এলাকা থেকে চোর ভাড়া করেন বেদেনা আক্তার। গত শনিবার রাতে ভাড়া করা চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন তিনি। কিন্তু চুরির ঘটনা টের পেয়ে যান বেদেনার স্বামী হেলাল উদ্দিন। তিনি ষাঁড় চুরিতে বাধা দিতে গেলে স্ত্রীসহ পাঁচজন মিলে হেলালকে মুখ ও হাত-পা বেঁধে গলা কেটে হত্যা করেন। নেত্রকোনা সদর উপজেলার কৃষক হেলাল উদ্দিনকে (৫৮) হত্যায় আদালতে জবানবন্দিতে তাঁর স্ত্রী বেদেনা আক্তার এসব কথা জানিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নেত্রকোনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) চম্পক দাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে গত রোববার ভোরে সদর উপজেলার নাড়িয়াপাড়া গ্রামে নিজ ঘর থেকে কৃষক হেলাল উদ্দিনের হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত হেলাল উদ্দিন সদর উপজেলার নাড়িয়াপাড়া গ্রামের মৃত আশ্রাব আলীর ছেলে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার দুপুরে নিহত হেলালের ছোট ভাই রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী বেদেনা আক্তারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন সদর উপজেলার নাড়িয়াপাড়া এলাকার রিয়েল মিয়া (৪০) ও বারহাট্টা উপজেলার সেমিয়া দুধকুড়া গ্রামের লিটন মিয়া (৫০)।

পুলিশ জানায়, গতকাল বিকেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর স্ত্রী বেদেনা আক্তারকে আটক করার পর তিনি হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নেত্রকোনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) চম্পক দাম জানান, আদালতে বেদেনা আক্তার জবানবন্দিতে বলেছেন, তিনি বিভিন্ন সময়ে কয়েকজনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। পাওনাদারেরা এখন টাকার জন্য তাঁকে তাগাদা দিচ্ছেন। তাই তাঁর বাবার বাড়ি বারহাট্টা উপজেলার সেমিয়া দুধকুড়া গ্রামের লিটন মিয়ার সঙ্গে চুরি করে তাঁর স্বামী হেলাল উদ্দিনের ষাঁড় নিয়ে বিক্রি করার জন্য চুক্তি করেন। গত শনিবার রাতে লিটন মিয়া, নাড়িয়াপাড়া গ্রামের রিয়েল মিয়াসহ চারজন মিলে গরু চুরি করতে গেলে হেলাল উদ্দিন টের পেয়ে যান। তিনি ষাঁড় চুরিতে বাধা দিতে গেলে স্ত্রীসহ পাঁচজন মিলে হেলালকে মুখ ও হাত-পা বেঁধে গলা কেটে হত্যা করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা চম্পক দাম বলেন, বেদেনা আক্তারের তথ্য অনুযায়ী গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে লিটন মিয়া ও রিয়েল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। লিটন মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় পাঁচটি চুরির মামলা রয়েছে।

নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল মামুন সরকার বলেন, ‘অল্প সময়ে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটনসহ জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। নিহত ব্যক্তির স্ত্রী বেদেনা আক্তারসহ তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত অন্য দুজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ