Ajker Patrika

‘হুমায়ূন কখনো কারও পরামর্শ নিয়ে চলত না’

নওশাদ জামিল
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২২, ০৮: ৫৬
‘হুমায়ূন কখনো কারও পরামর্শ নিয়ে চলত না’

আপনার বড় ভাই হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় লিখেছেন। বিভিন্ন আলোচনা-বক্তব্যে বলেছেন তাঁর কথা। হুমায়ূন সম্পর্ক এমন কিছু জানতে চাই, যা আগে কখনো বলেননি, কিংবা কোথাও লেখেননি।

আপনি একদম শুরুতেই কঠিন প্রশ্ন করেছেন। হা হা হা! নতুন কথা কী আর বলব! অবশ্য একটা মজার কথা বলতে পারি। সেটা অনেকের কাছেই নতুন কথা হতে পারে। সম্ভবত আগে তা কখনো বলিনি। সেটা হলো—হুমায়ূন আহমেদ ভালো অভিনেতা ছিল। ছোটবেলায় স্কুলে পড়ার সময় নিয়মিত অভিনয় করত। স্কুলের নাটক দলে, পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পারফর্ম করত।

তারপর অবশ্য অভিনয় ছেড়ে দেয়। আমার মনে হয়, জীবনের একটা পর্যায়ে সে অনেক নাটক-সিনেমা বানিয়েছে, স্ক্রিপ্ট লিখেছে—এটার পেছনে তার শৈশব-কৈশোরের অভিনয় প্রতিভার ভূমিকা ছিল। নাটক-সিনেমা নিয়ে তার বাড়াবাড়ি রকমের আগ্রহ ছিল, আকর্ষণ ছিল, হয়তো কৈশোরের স্মৃতি তাকে অনুপ্রাণিত করত, ভেতর থেকে উৎসাহ জোগাত। আমাদের বাবা ছিলেন বইপাগল মানুষ। প্রচুর বই পড়তেন। আমাদের বই পড়ায় উৎসাহ দিতেন। গানবাজনা, নাটক-সিনেমা-যাত্রা পছন্দ করতেন। আমাদের ভেতর যে সংস্কৃতিবোধ বেড়ে উঠেছে, আমার তো মনে হয়, সেটা উত্তরাধিকারসূত্রেই এসেছে।

হুমায়ূন আহমেদ মূলত কথাসাহিত্যিক। অন্যান্য সেক্টরেও প্রচুর কাজ করেছেন। নাটক-সিনেমার কথা বলছিলেন। আপনার কী মনে হয়, নাটক-সিনেমায় প্রচুর সময় ব্যয় দিতে গিয়ে তাঁর মৌলিক লেখালেখি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল?

সে আসলেই ভীষণ প্রতিভাবান ছিল। বিভিন্ন বিষয়ে তার আগ্রহ-কৌতূহল ছিল, ব্যাপক পড়াশোনা ও জানাশোনা ছিল। নাটক-সিনেমার পেছনে অনেক সময় দিয়েছে। প্রচুর কাজ করেছে। তাঁর নাটক-সিনেমা তো ভীষণ জনপ্রিয়, দর্শকনন্দিত। তবে আমার এটা মনে হয়, সে যদি শুধুই লেখালেখিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে সময় দিতে পারত, তাহলে আমরা আরও অসাধারণ লেখা পেতাম।

হুমায়ূন এবং আপনি প্রায় সমসাময়িক লেখক। আপনারা দুজনই বিপুল পাঠকনন্দিত, জনপ্রিয়। একজন লেখক হিসেবে লেখক হুমায়ূন আহমেদকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন? তাঁর কোন ধরনের লেখা আপনার বেশি প্রিয়?

এটাও অনেক কঠিন প্রশ্ন হয়ে গেল। আমি সমালোচক নই, সাহিত্যতাত্ত্বিক নই। আমার পক্ষে হুমায়ূনকে মূল্যায়ন করা কঠিন হবে। নিরপেক্ষ ও নির্মোহভাবে বলা আরও কঠিন হবে। অবশ্য পাঠক হিসেবে কিছু কথা বলতে পারব। ব্যক্তিগতভাবে বলব, হুমায়ূনের ছোটগল্পগুলো অসাধারণ। ওর অধিকাংশ গল্পই দুর্দান্ত। আমার একটা আফসোস আছে, সেটা হলো ওর গল্পগুলোর ভালো অনুবাদ হয়নি। পৃথিবীখ্যাত বড় কোনো প্রকাশনী থেকেও বের হয়নি। যেসব গল্প ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে, সেসব খুবই ম্যাড়মেড়ে ভাষার। ইংরেজি মান তত উন্নত নয়। ওর গল্পগুলো স্মার্ট ইংরেজিতে অনুবাদ করা জরুরি। আমার বিশ্বাস, ওর গল্প সারা বিশ্বেই সমাদৃত হতে পারে।

সাহিত্য ক্ষেত্রে কিংবা ব্যক্তি ক্ষেত্রে হুমায়ূন কি কখনো আপনাদের পরামর্শ শুনতেন? আপনার মতামত অনুসারে কখনো কি কোনো লেখা সংশোধন কিংবা পরিমার্জন করেছেন?

হুমায়ূন কখনো কারও পরামর্শ নিয়ে চলত না। সে চলত নিজের মতো। যখন যা ভালো মনে করত, সেটা সে করত; বিশেষ করে লেখালেখির ক্ষেত্রে সে কারও কোনো পরামর্শ শুনত না।

আপনাকে একটা মজার কথা বলি। সে তার ‘জোছনা ও জননীর গল্প’ বইটি আমাকে পড়তে দিয়েছিল। উদ্দেশ্য বইটির প্রকাশনা উৎসবে আমার কিছু বলতে হবে। বেশ ঘটা করে প্রকাশনা উৎসব হয়েছিল। সেটা আবার লাইভ টেলিকাস্টও হয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানে আনিসুজ্জামান, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ছাড়াও অন্য অতিথিদের সঙ্গে আমিও ছিলাম। সবার নাম মনে পড়ছে না এখন। ‘জোছনা ও জননীর গল্প’ উপন্যাসে একটা জায়গায় লেখা ছিল এপ্রিল মাসে আকাশে কালপুরুষ থাকে। এটা বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল তথ্য। আমি প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তা সরাসরি বলেছিলাম। সে বইটির পরের সংস্করণে তা ঠিক করেনি। সে বরং নতুন সংস্করণের ভূমিকায় লিখেছে, ‘আমার ছোট ভাই ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বইটিতে বৈজ্ঞানিক তথ্যের একটি ভুল বের করেছে। যে সময়ের কথা বইটিতে আছে, সেই সময়ে আকাশে কালপুরুষ থাকে না। এ ভুলটি শুদ্ধ করলাম না।’ এবার বোঝেন, সে কেমন ত্যাড়া ছিল।

বাইরের দেশগুলোয় বড় প্রকাশনীতে অনিবার্যভাবে থাকে সংস্থার সম্পাদনা পর্ষদ। তাঁরা লেখা সংশোধন ও পরিমার্জনে ভূমিকা রাখেন। বাংলাদেশে অধিকাংশ প্রকাশনীর সম্পাদনা বিভাগ নেই।

বাংলাদেশে কেউ তো হুমায়ূনের লেখা কাটাছেঁড়া করতে পারত না।

বাংলাদেশের প্রকাশনীতে সম্পাদনা বিভাগ থাকলে হুমায়ূনের সঙ্গে মারামারি হয়ে যেত। কারণ সে যা লিখত, সেটাই সঠিক মনে করত। ভুলের পক্ষেও চমৎকার যুক্তি দাঁড় করাত। প্রকাশকেরা তার লেখার জন্য মুখিয়ে থাকত, একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকত। সম্পাদনা কখন করাবে? হা হা হা।

অনেকে অভিযোগ করেন, প্রকাশক ও পাঠকের চাপে পড়ে হুমায়ূন আহমেদ মানহীন অনেক লেখাই লিখেছেন। এ সম্পর্কে আপনার অভিমত জানতে চাই।

প্রকাশকের চাপ তো ভয়ংকর চাপ। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। বাইরের দেশে একজন লেখক পাঁচ বছরে একটা বই লেখেন। রীতিমতো ভেবেচিন্তে লেখেন, গবেষণা করে বই লেখেন।

আমাদের দেশে একজন লেখক প্রতিবছর পাঁচ-সাতটি বই লেখেন। হুমায়ূনের ক্ষেত্রে শুধু প্রকাশক, পাঠক নয়, পত্রিকাওয়ালা ও টিভিওয়ালাদেরও ভীষণ চাপ ছিল। সেই চাপে পড়ে কিছু খারাপ লেখা লিখতে পারে। এটা মিথ্যা নয়। আমার কাছেও তার কিছু লেখা অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে। পড়ার পর মনে হয়েছে, লেখাটা আরও বিস্তৃত হতে পারত, আরও বিস্তারিত হতে পারত।

আপনার নিজের লেখালেখির ক্ষেত্রে হুমায়ূনের কী কোনো প্রভাব ও অনুপ্রেরণা আছে? অনেকে বলেন, সায়েন্স ফিকশন লেখার ক্ষেত্রে আপনার বড় অনুপ্রেরণা ছিল হুমায়ূন আহমেদ।

আপনাকে একটা মজার কথা বলি। আমাদের পরিবারে লেখালেখিটা খুবই সাধারণ ব্যাপার, সহজ ব্যাপার। ডাল-ভাতের মতো বিষয় আরকি। আমরা সব ভাই-বোন লিখতে পারি। হাতে কাগজ-কলম থাকলেই হলো, আমরা চাইলেই মুহূর্তেই লিখতে পারি। এটার পেছনে আমাদের বাবার একটা বড় ভূমিকা ছিল। তিনি খুব পড়ুয়া ছিলেন। আমাদেরও সবাইকে বিভিন্ন বই পড়তে দিতেন।

হুমায়ূন যে লেখক হবে, এটা আমরা অনেক আগেই বুঝতে পেরেছিলাম। সে তার ‘নন্দিত নরকে’ লিখে আমাকেই প্রথমে পড়তে দিয়েছিল। আমি ছিলাম এটার প্রথম পাঠক, পাণ্ডুলিপি পড়েই 
আমি বুঝে গিয়েছিলাম, সে লেখক হয়ে গেছে। আমার ‘কপোট্রনিক সুখদুঃখ’ বেরোনোর আগে সে পাণ্ডুলিপির খাতাটা টেবিল থেকে নিয়ে পড়েছিল। আমাকে বলেছিল, ‘তুই কি এটা নিজে 
লিখছিস? নাকি অনুবাদ করছিস?’ আমি বলেছিলাম, ‘নিজেই লিখছি।’ সে ছোট করে বলেছিল, ‘তোকে দিয়ে হবে।’

হা হা হা।

একজন লেখক হিসেবে লেখক হুমায়ূন আহমেদকে কি কখনো ঈর্ষা করেছেন?

হুমায়ূনের জনপ্রিয়তা ও লেখালেখি নিয়ে আমার ভেতর কখনো কোনো ঈর্ষা কাজ করেনি। আমি ওর ছোট ভাই, এটাই আমার গর্বের পরিচয়। ওর জনপ্রিয়তার ধারে-কাছেও আমি নেই। তার জনপ্রিয়তার একটা উদাহরণ দিই। একবার এক লোক এলেন আমার সঙ্গে দেখা করতে, সিলেটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। তিনি আবেগতাড়িত হয়ে বললেন, ‘আমি বহু দূর থেকে এসেছি। কষ্ট করে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে এসেছি। আমি কি আপনার হাত ধরতে পারি?’ আমি তাঁকে বললাম, ‘জি, পারেন।’

তারপর ওই দর্শনার্থী বললেন, ‘এটা কি সত্যি যে আপনি হুমায়ূন আহমেদের ভাই?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ, সত্য।’

আনন্দে আত্মহারা হয়ে তিনি বললেন, ‘আমার জীবন আজ সার্থক। আমি হুমায়ূন আহমেদের ভাইয়ের হাত স্পর্শ করতে পেরেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তৌহিদুল হকের গুচ্ছ কবিতা

তৌহিদুল হক
তৌহিদুল হকের গুচ্ছ কবিতা

রক্ত লাল

আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে

গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায়

ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের

জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।

যা স্বভাববিদ্ধ, তবে কতটা উপকারী বা বাঁচিয়ে

রাখার নিরলস অভিপ্রায়। মানুষের তরে

প্রাণীর অফুরন্ত প্রাচুর্য বিস্তৃতকরণে, কিংবা

উদ্ভিদের অন্তিম প্রেমে বসন্তের অভিষেকে।

কতটা জ্বলতে হয় পরের জন্য, কতটা ফুটন্ত

শরীর নিয়ে চালিয়ে যায় সেবার পরিধি।

এক চিরন্তন শিক্ষা, আবার উদিত হয়

দিনের শুরুতে, বিদায় প্রান্তিক অপূর্ব

মায়ায়-দিনের শেষ প্রান্তে।

এতটুকু কার্পণ্য রেখে যায়নি, হয়তো মুখ

ফিরিয়ে নিবে না কোনো দিন। তবে ভাবনার

অন্তিমে শেষ দৃশ্যের সংলাপে ভেসে

ওঠে জনদরদি রাজার মুখ। যেখানে রক্ত ঝরে

বন্যার বেগে সেখানেও প্রতিদিন ফুল ফোটে ফুল হয়ে।

যত দেখি

যত দেখি তৃপ্ত হই, শীতল হয়ে

জড়িয়ে পড়ি তোমার সমস্ত শরীরে। এক অজানা

শিহরণ ছুঁয়ে যায় হৃদয়ের সমস্ত পৃষ্ঠা জুড়ে।

যেন দীর্ঘদিনের শুষ্কতা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে দূরে।

হারিয়ে যাওয়া রস ফিরছে মূলে, নিয়ে যাচ্ছে আদিপর্বে।

যেমন নেয় নদীর কূল, জোয়ারের ফেনা।

ভাবনার অতলে অদ্ভুত মায়া, দীর্ঘক্ষণ মোহগ্রস্ত

করে রাখে চোখের পলক, তাকিয়ে থাকি মায়ার মায়ায়। কী অপরূপ মায়া!

সেখানেও দেখি তৃষ্ণার ব্যাকুলতা নিয়ে অপেক্ষারত কান্না।

জীবনের তল্লাটে হারিয়ে খুঁজি আজ

আমারও জীবন ছিল। মায়ায় ভরা নির্বিঘ্ন আয়োজন, কলমিলতার মতো নিষ্পাপ।

তৃপ্ত হই ঘাসে, বাতাসের বেহায়া আঘাতে

অভিমানের মোড়ক ছুড়ে ফেলে হাতে তুলে নেই

কচু পাতায় টলোমলো জলের লজ্জা। এ জীবনের চাহিদা তোমায় দেখার

প্রয়োজনে তপ্ত, হয় উত্তপ্ত অথবা সহ্যের অতীত শীতল।

এ যেন কেমন

গহিন অরণ্যে সবুজ পাতার মতো, মগজে

চিন্তার রাজ্যে ভাবের উদয়, আকুল বিন্যাসে

একটু একটু করে এগিয়ে নেয়, আবার ভরা কলসির

মতো বসিয়ে রাখে-ভবের রাজ্যে। একদিন সমস্ত ভাবনা থেকে মুক্ত হয়ে

এদিক-ওদিক চলন, জীবন্ত মরণ! মানুষ

কেন বাঁচে, কীভাবে বাঁচে-প্রশ্নের সমাধা

আজ তর্কপ্রিয় সন্ধানে, মূর্ত প্রার্থনা।

সকল প্রিয়জন পরিত্যাগে, নিগূঢ় যত্নে হৃদয়ে প্রবেশ করে

নিজের অপরিচিত চেহারা, সব জিজ্ঞাসার

অন্ত-ক্রিয়ার এক উচ্চতম বিলাস।

জীবনের মানে অর্থশুন্য ভবিতব্য! এ কী হয়?

চোখের পলকে নিষ্পাপ দৃশ্যলোক-পেছন ডাকে বারবার

যেখানে থাকে আবার দেখার ইচ্ছা, নামে যে মুক্তকরণ। মিলনকান্তির আবাস।

চতুর্মুখ সমীকরণে খেলে যায় সময়ের ঝাঁজালো সিদ্ধান্ত। কেউ কী অপ্রিয় হয় কারও?

যেখানে ভেসে ওঠে নীলপদ্ম, অতীতের নিটোল কিতাব। সে-তো মানুষের ছবি!

চলে আসুন সবজি বাজারে

মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছি অনেক কিছু

যা মানুষের নয়। অ-মানুষের জন্ম-উত্তর বাঁচার

উপায় হতে পারে। পোশাকে সজ্জিত দেহ কতভাবে

হিংস্র হয়, গোপনে, অন্ধের গহনে।

প্রবেশের আগেই পেয়েছি সংকেত। কত নোংরা, পচা, আবর্জনায় ভরা একটি থালার মতো

পড়ে আছে সম্মুখে। কেউ কি দেখেছে?

হয়তো মেনে নিয়েছে সবাই, সবার আগে সে

যে ভেবেছে, কী বা আছে উপায়!

চারপাশে কত কিছুর ঘ্রাণ, চোখ যা বলে তা কি মেনে নেয় স্বাস্থ্যবার্তা

ফুটে আছে ফুলের মতো দোকানের পসরা। খেতে বা কেনায় বারণ বালাই নেই।

যা পাচ্ছে নিচ্ছে, অনেকে। কেউ গায়ে কেউ পেটে।

আহা! দেখার কেউ নেই!

এক অন্ধকারে হাঁটছে আমাদের পা।

কেউ কি আছে কোথাও, আলো নিয়ে হাতে? ভেবেছে কি কেউ

কেন আমাদের আয়োজনে সবাই নেই?

কেউ এসে শুধু একবার বলুক, এই নিন-আপনাদের জীবন টিকিট যা উত্তরণ।

চলে আসুন সবজির বাজারে, সবুজের খোঁজে।

ইতিহাস

আজ স্পষ্ট ঘোষণা, আমার চোখের সামনে কেউ নেই

নেই কেউ ভাবের অন্তিম ঘরে। এক অস্পৃশ্য অনুভব

ছুঁয়ে চলে, ভাসিয়ে দেয় অগণিত স্রোতের তুমুল আলিঙ্গনে।

আজ কিছু ভেবে বলছি না, সরাসরি জবাব---

আমি নই কারও!

সব বাতাসের সাথে মিশে থাকা চোখের প্রেম

ভাবনার বিলাসে জড়িয়ে পড়ার বাসনা----সকলের অগোচরে

অথবা সকলের মাঝে। জীবনের অর্থে হৃদয়ের গুড়গুড় আলাপ

ঘুটঘুটে অন্ধকারে হৃদয়ে খোলা আকাশ, শুধু

এক মুখচ্ছবি।

আজ কোনো ক্ষমা নেই---নিজের প্রতি! নিজের পাপে

হাঁটি আমি, সবার মাঝে একলা হয়ে। বেদনার

কালো রং নিয়ে। শুধু দেখে যাই, শুধু দেখতে যাই।

কত রং বিরাজ করে ভাবনার গরমিলে, স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রই।

দাঁড়িয়ে থেকেও হেঁটে যাই!

আজকের না বলা কথা, কোনো দিন বলা হবে না

হবে না দাঁড়িয়ে আবার ভাবা আর একটু বসলে

ভালো হতো। যে বসিয়ে রাখে যে আশায় বসে থাকে

সবকিছুর-ই সময় থাকে---

এরপর---ইতিহাস!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি

বিদায় নেওয়া হুমায়ূন এখনো আছেন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪২
হুমায়ূন আহমেদ
হুমায়ূন আহমেদ

হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’ জবাবে ফারুক বললেন, ‘কী আশ্চর্য ভাই?’ হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘এই যে প্রকৃতি, জোছনা, বৃষ্টি, নদী— কী সুন্দর! একদিন হয়তো আমি এসব আর দেখতে পারব না। একুশের বইমেলা হবে। লোকেদের ভিড়, আড্ডা; আমি সেখানে থাকব না। এটা কি মেনে নেওয়া যায়! হায় রে জীবন!’

‘আমার না বলা কথা’ বইয়ে ফারুক আহমেদ এই স্মৃতিচারণ করেছেন। লিখেছেন, ‘আমি কিছু না বলে মূর্তির মতো বসে রইলাম। একসময় তাকিয়ে দেখলাম, হুমায়ূন ভাইয়ের দুচোখের কোনায় পানি।’

হুমায়ূন আহমেদ নেই। তবে তিনি রয়েছেন দেশের তরুণদের মনে। যে বইমেলায় তিনি থাকবেন না বলে আক্ষেপ, সেই বইমেলায় তাঁর বইয়ের স্টলে তরুণদের ঢলের মধ্যে আছেন।

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে হুমায়ূন আহমেদের জন্ম এই দিনে (১৩ নভেম্বর); ভারত ভাগের এক বছর পরে ১৯৪৮ সালে। ছোট সময়ে তাঁর নাম ছিল শামসুর রহমান। তাঁর বাবা ছেলেমেয়েদের নাম পাল্টে ফেলতেন। তাঁর নাম পাল্টে রাখেন হুমায়ূন আহমেদ। হিমু, মিসির আলি, শুভ্রর মতো চরিত্রের স্রষ্টা তিনি। শুধু কথাসাহিত্যেই নয়; ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’,

‘আজ রবিবার’-এর মতো নাটক বানিয়েছেন, তৈরি করেছেন ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’র মতো চলচ্চিত্র।

হুমায়ূন আহমেদ বৃষ্টি, জোছনা ভালোবাসতেন। তাঁর লেখায় সেসব উঠে এসেছে বারবার। ২০১২ সালের জুলাইয়ে বর্ষাতেই তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন ওপারে।

তিনি নেই। কিন্তু তাঁর লেখায় উঠে আসা চান্নিপসর, বৃষ্টি বিলাস আজও আছে তরুণদের মনে। ফারুক আহমেদ তাঁর ওই বইয়ে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে আরেকটি স্মৃতিচারণ করেছিলেন এভাবে—‘এক বিকেলে শুটিং শেষে তাঁর প্রিয় লিচুগাছের দিকে তাকিয়ে আছেন হুমায়ূন। সেখানে ঝুলছে পাকা লিচু। তিনি তাঁর কেয়ারটেকার মুশাররফকে ডেকে গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েদের ডেকে নিয়ে এলেন। তাদের বললেন, গাছে উঠে যে যত পারে লিচু খেতে। বাচ্চারা কেউ গাছে উঠে লিচু খাচ্ছে, হইচই করছে। কেউ পকেটে ভরছে। হুমায়ূন আহমেদ অবাক হয়ে সেই লিচু খাওয়া দেখতে লাগলেন।’

ফারুক আহমেদ লিখেছেন, ‘হুমায়ূন ভাই একসময় আমাকে বললেন, এমন সুন্দর দৃশ্য তুমি কখনো দেখেছো? এমন ভালো লাগার অনুভূতি কি অন্য কোনোভাবে পাওয়া যায়? আমি কী বলব বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ বললাম, না ভাই এমন ভালো লাগার অনুভূতি কোনোভাবেই পাওয়া যায় না।’

হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন ঘিরে রাজধানীসহ জন্মস্থান নেত্রকোনাতে রয়েছে নানা আয়োজন। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের কুতুবপুরে হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে। সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোরআন খতম করবেন। এরপর শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ প্রাঙ্গণ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী এবং হুমায়ূনভক্তদের আনন্দ শোভাযাত্রা বের হবে। পরে লেখকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, জন্মদিনের কেক কাটা, বৃক্ষরোপণ, কুইজ, হুমায়ূন আহমেদের রচিত নাটক ও সিনেমার অংশবিশেষ নিয়ে অভিনয়, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া রাজধানীতে হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র নিয়ে চলচ্চিত্র সপ্তাহ, হুমায়ূন প্রতিযোগিতা, হুমায়ূন জন্মোৎসব, টেলিভিশন চ্যানেলে নাটক ও অনুষ্ঠান প্রচারসহ নানা আয়োজনে মুখর থাকছে দিনটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘হীরক রাজার দেশে’ মঞ্চস্থ করল স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
গতকাল শুক্রবার প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল শুক্রবার প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।

মঞ্চনাট্যটি স্কলাস্টিকার প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসমিন মুরশেদকে উৎসর্গ করা হয়।

গতকাল শুক্রবার প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল শুক্রবার প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্কুলের এসটিএম মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্‌যাপনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ নাট্যানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার অধ্যক্ষ ফারাহ্ সোফিয়া আহমেদ।

হীরক রাজার দেশে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। প্রোডাকশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন শৈলী পারমিতা নীলপদ্ম। সংগীত পরিচালনা করেন গাজী মুন্নোফ, ইলিয়াস খান ও পলাশ নাথ লোচন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শাম্মী ইয়াসমিন ঝিনুক ও ফরহাদ আহমেদ শামিম।

নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাজিফা ওয়াযিহা আহমেদ, আরিয়াদ রহমান, আজিয়াদ রহমান, বাজনীন রহমান, মোহম্মদ সফির চৌধুরী, ফাহিম আহম্মেদ, সৈয়দ কাফশাত তাইয়ুশ হামদ ও তাজরীবা নওফাত প্রমুখ।

শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত অভিনয়, গান ও নাচ উপভোগ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গবেষণায় বেরিয়ে এল আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’র গল্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।

কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।

জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’

গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।

ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলারের ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। ছবি: দ্য ন্যাশনাল
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলারের ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। ছবি: দ্য ন্যাশনাল

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’

মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’

মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত