Ajker Patrika

টিকার রাজনীতি তো হলো, ব্যবসাটা কত বড়

ফজলুল কবির
টিকার রাজনীতি তো হলো, ব্যবসাটা কত বড়

করোনাভাইরাস মহামারির এই দুঃসময়ে গোটা বিশ্বকে আশার আলো দেখিয়েছে টিকা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে রেকর্ড সময়ের মধ্যে কোভিডের টিকা হাজির করেছেন। তাও এক-দুটি নয়। বেশ কয়েকটি। এর মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকেই জরুরি ব্যবহারের অনুমতি মিলেছে সাতটি টিকার। এই টিকাগুলো বহু মানুষকে আশা দেখাচ্ছে। মজার বিষয় হলো কোভিড থেকে মুক্তির যে আশা সে দেখাচ্ছে, তা পূরণ হওয়া নিয়ে এখনো কিছুটা সংশয় থাকলেও এ নিয়ে করপোরেট আশাটি যে এরই মধ্যে পূরণ হয়ে গেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। 

কোভিডের এই সময়ে এই টিকাগুলোর বেশ কয়েকটির নাম মানুষের মুখস্থ হয়ে গেছে। ফাইজার-বায়োএনটেক, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম, মডার্না বা স্পুতনিকের নাম এখন মানুষের মুখে মুখে। এই টিকাগুলোরও আবার দেশ আছে। কোনোটি মার্কিন, কোনোটি চীনা আবার কোনোটি রুশ। ফলে অবধারিতভাবেই এই টিকার সঙ্গে জুড়িগাড়ি হয়ে ‘টিকা রাজনীতি’, ‘টিকা কূটনীতি’র মতো শব্দগুলো বেশ আলোচনা তৈরি করেছে। কিন্তু যার জন্য এই কূটনীতি বা রাজনীতি, সেই ব্যবসা সম্পর্কিত আলোচনাটি একটু আড়ালেই পড়ে গেছে। 

বলা হচ্ছে, যে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো কোভিড টিকা তৈরি ও সরবরাহ করছে, তারা অতি মুনাফা না করলে মানুষ হয়তো পাঁচ ভাগের একভাগ দামে টিকা পেত। কিন্তু এত বড় একটি গ্রাহকগোষ্ঠীকে সামনে রেখে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফা ছাড়তে তো চায়ইনি, বরং তা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এর ফল হয়েছে ভয়াবহ। বিশ্বের ধনী দেশগুলোর অধিবাসীরা টিকা পেলেও বহু দরিদ্র দেশের মানুষ এখনো কোনো টিকাই পায়নি। বাংলাদেশেই কিছুদিন আগে টিকার সরবরাহ না থাকায় টিকাদান কর্মসূচি থেমে গিয়েছিল। এ অবস্থায় বিশ্বের নানা প্রান্তের মানবাধিকার সংস্থাগুলো মিলে দ্য পিপলস ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (পিভিএ) নামের একটি জোট করেছে, যেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও রয়েছে। 

পিভিএ বলছে, ওষুধ কোম্পানিগুলো যদি শুধু একচেটিয়া ব্যবসা করতে না চাইত, তাহলেই টিকার দাম অনেক কম পড়ত। কতটা? আগেই বলা হয়েছে পাঁচ-ভাগের এক ভাগ দাম। 

বিশ্বের ধনী দেশগুলোর অধিবাসীরা টিকা পেলেও বহু দরিদ্র দেশের মানুষ এখনো কোনো টিকাই পায়নিএই টিকার দাম আসলে কত বেশি? কোভিড-১৯ বাদেও বহু টিকা আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, কোভিড-১৯ এর আগে বিভিন্ন টিকার প্রতি ডোজের জন্য গরিব দেশগুলোর ব্যয় হতো দশমিক ৮ ডলার। করোনার সবচেয়ে কম দামি টিকা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দাম এই গড় দামের চারগুণ। জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের টিকার দাম ১৩ গুণ, আর ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না ও সিনোফার্মের টিকার দাম এই গড় দামের ৫০ গুণ বেশি। হ্যাঁ, সব টিকাই এক নয়। একেক টিকার উৎপাদন ব্যয় একেক রকম। কিন্তু এও তো মনে রাখা দরকার যে, এই টিকা জনগণের অর্থে তৈরি। সাধারণ মানুষের করের টাকার সরাসরি অর্থায়নে বিশ্বের আর কোন টিকা তৈরি হয়েছে? তাই এর দাম স্বাভাবিকভাবেই কম হওয়াটাই ছিল দস্তুর। কিন্তু তা হয়নি। বরং সারা বিশ্ব এক ভীষণ লোভী টিকার ব্যবসা দেখছে। 

লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের একদল গবেষক এমআরএনএ টিকার সম্ভাব্য উৎপাদন ব্যয়ের একটি হিসাব করেছে। তারা বলছে, ফাইজারের প্রতি ৮০০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদনের জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ৯৪০ কোটি ডলার হতে পারে। এই হিসাবে প্রতি ডোজ টিকার দাম ১ ডলার ১৮ সেন্টের আশপাশে হওয়ার কথা। একইভাবে মডার্নার টিকার সম্ভাব্য উৎপাদন ব্যয়ের একটি হিসাব করা হয়েছে, যেখানে এর পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ ডলার ৮৫ সেন্টের আশপাশে। অথচ দরিদ্র দেশগুলোর জন্য নেওয়া উদ্যোগ কোভ্যাক্সই এই টিকা কিনেছে ৫ ডলারের বেশি দামে। 

সম্ভাব্য উৎপাদন ব্যয়ের বিপরীতে বাজার থেকে কোম্পানিগুলো কত অর্থ তুলে নিচ্ছে, তা একটি হিসাব দেখলেই বিষয়টি বোঝা যাবে। আফ্রিকা অঞ্চলে প্রতি ডোজ টিকার দাম সবচেয়ে কম নেয় ফাইজার-বায়োএনটেক। সেখানে প্রতি ডোজ টিকার দাম পড়ে ৬ ডলার ৭৫ সেন্ট, যা ওই অঞ্চলের কোনো কোনো দেশের মাথাপিছু বার্ষিক স্বাস্থ্য ব্যয়ের সমান। কোম্পানিটি সবচেয়ে বেশি দাম নেয় ইসরায়েলে। সেখানে প্রতি ডোজ টিকা তারা বিক্রি করছে ২৮ ডলারে, যা সম্ভাব্য উৎপাদন ব্যয়ের ২৪ গুণ। মডার্নার ক্ষেত্রেও টিকার দামে এই বিরাট তারতম্য দেখা যায়। একই কথা সিনোফার্মের ক্ষেত্রেও সত্য। 

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক হিসাবে বলা হয়েছে, বিশ্বের ১৮৩টি দেশে এখন পর্যন্ত ৪৯৮ কোটি ডোজ করোনা টিকা দেওয়া হয়েছে। প্রতি দিন গড়ে ৩ কোটি ৬১ লাখ ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে। পরিসংখ্যানটি বেশ সুন্দর হলেও বাস্তবতাটি সুন্দর নয়। এই টিকার অধিকাংশই পেয়েছে ধনী দেশগুলোর নাগরিকেরা। দরিদ্র ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর তুলনায় ধনী দেশগুলোতে টিকা কার্যক্রম চলছে ২০ গুণ বেশি গতিতে। 

উৎপাদন ব্যয়ের তুলনায় অনেক বেশি দাম নিচ্ছে ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না ও সিনোফার্মগেল মাসে প্রকাশিত পিভিএর সর্বশেষ বিশ্লেষণে বলা হয়, ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডার্না তাদের উৎপাদিত টিকার ৯০ শতাংশই সরবরাহ করেছে ধনী দেশগুলোতে। টিকার বৈশ্বিক জোট হলেও সেখানে তাদের অংশগ্রহণ তেমন নেই। ধনী দেশগুলোর কাছে তারা টিকার সম্ভাব্য উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে ২৪ গুণ বেশি দামে টিকা বিক্রি করেছে। সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর কাছ থেকে তারা উৎপাদন খরচের চেয়ে বাড়তি অন্তত ৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার বেশি নিয়েছে। 

এ নিয়ে বিস্তর সমালোচনার পর ফাইজারের পক্ষ থেকে গেল মাসে জানানো হয়, তারা আফ্রিকায় ১০ কোটি ডোজ টিকা পাঠাচ্ছে। কিন্তু আফ্রিকার চাহিদার তুলনায় এই পরিমাণ অত্যন্ত নগণ্য। 

এটা ঠিক যে, সারা বিশ্বে কোভিড টিকার যে চাহিদা তার জোগান দেওয়া কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয়। এই বাস্তবতা জগতের সবাই বুঝলেও টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বোঝেনি। টিকার প্রযুক্তি তারা কাউকে দেয়নি। এমনকি টিকা উৎপাদনের কোনো একটি ধাপও তারা কারও হাতে ছাড়তে নারাজ। অথচ শুধু এই কাজটি করলে উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোর মানুষ টিকা পেত অনেক সহজে ও কম খরচে। কিন্তু এমন ভয়াবহ দুর্যোগেও প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু নিজের মুনাফা নিয়েই ভেবেছে। 

অথচ এই টিকা তৈরিতে ছিল সাধারণ মানুষের বিনিয়োগ। সাধারণ মানুষের করের টাকায় হওয়া গবেষণার মাধ্যমেই টিকা আবিষ্কার ও এর উৎপাদন কৌশল হাতে এসেছিল ফাইজার ও মডার্নার মতো কোম্পানিগুলোর। মার্কিন জনগণের করের টাকা থেকে এ গবেষণায় বিনিয়োগ করা হয়েছিল ৮৩০ কোটি ডলার। অথচ যখন টিকা হাতে এল তাদের, তখন তারা একে বিরাট মুনাফার সম্ভাবনা হিসেবে দেখল। ভুলে গেল, এই সোনার ডিম পাড়া হাঁসটি তাদের হাতে আসলে সাধারণ মানুষই তুলে দিয়েছিল। এটা এতটাই যে, গোটা বিশ্বের সব দেশ যেন কোভিড টিকা পায়, সে জন্য গঠিত উদ্যোগ কোভ্যাক্সের কাছেও উৎপাদন ব্যয়ের পাঁচগুণ দামে তারা টিকা বিক্রি করল। 

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দাম কম হলেও তা সম্ভাব্য উৎপাদন ব্যয়ের প্রায় পাঁচগুণটিকার সরবরাহ বা সোজা বাংলায় বললে বাজার ধরতে একেক দেশ রীতিমতো মরিয়া হয়ে লড়াইয়ে নামল। লড়াকুর দলে পাওয়া গেল চিরপরিচিত কয়েকটি দেশের নাম—চীন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ইত্যাদি। এই দেশগুলোর করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো রীতিমতো নির্লজ্জভাবে বাজার দখলের লড়াইয়ে নামল। কতটা? বাংলাদেশের টিকা সংকটের কথাই ধরা যাক। চীন বলল, তারা টিকা দেবে। কিন্তু যখন মুখ ফসকে চীনের টিকার দাম প্রকাশ হয়ে গেল বাংলাদেশের প্রশাসনের দায়িত্বশীল এক ব্যক্তির অসতর্কতার কারণে, তখনই চীন পিঠটান দিল। তারা গোস্বা করল। বোঝা গেল, টিকার দাম প্রকাশ হলে বাজারের অন্য প্রতিযোগীরা বাজার দখলের অন্য কৌশল অনুসরণ করতে পারে বলেই চীন চটেছে। 

আছে আরও নানা কৌশল। টিকা পাসপোর্ট বা ভ্যাকসিন পাসপোর্ট বলে একটি নয়া টার্ম সামনে এল। এর মোদ্দা কথা হলো—করোনা সতর্কতা হিসেবে যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, তা একটি ভ্যাকসিন পাসপোর্ট থাকলেই উঠে যাবে। পাসপোর্ট বলতে টিকা গ্রহণের প্রমাণপত্র। শুরুতে বিষয়টি সরল-সোজাই ছিল। মুশকিল হলো যখন এই ভ্যাকসিন পাসপোর্টের পরিসরটি সংকুচিত হয়ে এল। পশ্চিমা দেশগুলো বলল, ফাইজারের টিকা না নেওয়া হলে সীমান্ত খুলবে না। গতকাল যখন মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকাকে পূর্ণ অনুমোদন দিল, তখন বুঝতে বাকি নেই যে, বাজারে এই টিকার দাম আরও বাড়বে। বাজার দখল বা বাজারে এলিট পণ্য হিসেবে নিজের জায়গা দখলের মাধ্যমে ফাইজার বা মডার্নার টিকা যে অবস্থান তৈরি করল, তা শুধু ধনী দেশগুলোরই নাগালে থাকল। 

অথচ এই একচেটিয়া ব্যবসার প্রবণতা না থাকলে, গণমানুষের টাকায় তৈরি টিকা এত দিনে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশসহ সব দেশের মানুষের কাছে ঠিকই পৌঁছে যেত। কিন্তু শুধু অতি মুনাফার জেরে তা এখনো হয়নি। সবচেয়ে ভালোভাবেও যদি কর্মসূচিটি চালানো যায়, তাহলেও চলতি বছরের শেষ নাগাদ বিশ্বের মাত্র ২৩ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় আসবে। বাংলাদেশ তো এখন তবু টিকা পাচ্ছে। আফ্রিকার বহু দেশ এখনো টিকার ভয়াবহ সংকটের মধ্যে রয়েছে। দরিদ্র দেশগুলোর মানুষের ১ শতাংশেরও কম এখন পর্যন্ত টিকার আওতায় এসেছে। বিপরীতে মডার্না বা বায়োএনটেকের মতো কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীরা রাতারাতি হয়ে উঠেছেন শতকোটিপতি। 

করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো যখন ব্যবসার একচেটিয়াকরণ করছে, তখন ধনী দেশগুলো কী করছে? তারা এই টিকা ব্যবসাকে গোটা বিশ্বে ছড়ি ঘোরানোর হাতিয়ার হিসেবে নিয়েছে। ভূ-রাজনৈতিক নানা সমীকরণ এর ভেতরে ঢুকে পড়ছে। এ ক্ষেত্রেও শত্রু-মিত্র প্রভেদ ঢুকে পড়েছে। নানা কৌশল খাটিয়ে বাধাগ্রস্ত করছে টিকা সরবরাহ ব্যবস্থা। 

দরিদ্র দেশগুলোর মাত্র ১ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় এলেও ওষুধ কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীরা ঠিকই শতকোটিপতি হয়েছেন মাত্র দেড় বছরেআফ্রিকান অ্যালায়েন্স, অক্সফাম, ইউএসএইডসহ বিশ্বের ৭০টি প্রতিষ্ঠানের জোট পিভিএ বলছে, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর একচেটিয়াকরণ মানসিকতা রোধে ধনী রাষ্ট্রগুলোর ব্যর্থ হওয়া বা তা করতে না চাওয়ার কারণে ভয়াবহ সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে দরিদ্র দেশগুলোকে। ধনী রাষ্ট্রগুলোর প্রত্যক্ষ মদদে করপোরেশনগুলো মৃত্যুকেই ব্যবসায় পরিণত করেছে এখন। দরিদ্র দেশগুলোর স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের জন্য যে মহামূল্যবান বাজেট বরাদ্দ হতে পারত, তা এখন ঢুকে পড়ছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধান নির্বাহীদের পকেটে। 

এখন অবশ্য ধনী দেশগুলো টিকা উপহার, অনুদান ইত্যাদি দিতে শুরু করেছে। তারা একে অন্যকে অনুরূপ পদক্ষেপ নিতে উজ্জীবিত করছে। কিন্তু এটা শুধু মুদ্রার একটি মাত্র দিক। সব উপহার উপহার নয়। এর অনেক কিছুই টাকার অঙ্কে বিনিময় হয়, হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অর্থনীতি, রাজনীতি ও কূটনীতির জটিল-কুটিল সব সমীকরণ। কোন দরিদ্র দেশের বাজার কার ভাগে যাবে বা কত ভাগ কে নিয়ন্ত্রণ করবে, তার এক দারুণ হিসাব চলছে সবার অজ্ঞাতে। কম মূল্যে টিকা দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দিয়েছিলেন, তার প্রতিবাদ কতগুলো স্থান থেকে কে কে করেছে তার উল্লেখ এখানে না করলেও চলে। বোঝাই যাচ্ছে, ভবিষ্যতে এই টিকা ব্যবসা আরও প্রকট ও ন্যাংটো হয়ে সামনে আসবে। 

মজার বিষয় হলো, আগে থেকেই চাহিদা তৈরি হয়ে আছে এমন বাজারে কোনো একটি নতুন পণ্য এলে সাধারণত এর দাম বেশি থাকে। পরে অন্য প্রতিযোগী পণ্য এসে হাজির হলে বাজারের সাধারণ নিয়ম মেনেই এ দাম কমতে থাকে। কিন্তু কোভিড টিকার ক্ষেত্রে এমনটি দেখা যাচ্ছে না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দ্বিতীয় কিস্তিতে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা কেনার সময় প্রথমবারের চেয়ে বেশি দাম পরিশোধ করেছে। আরও মজার বিষয় হলো, বুস্টার ডোজ নিয়ে। বলা হচ্ছে, টিকাকে শরীরে কার্যকর রাখতে হলে বুস্টার নিতে হবে। কত দিন? এখনো অজানা এর উত্তর। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে ফাইজার এখনই জানিয়ে দিয়েছে, ভবিষ্যতে তাদের টিকার দাম আরও বাড়তে পারে। কতটা? প্রতি ডোজ ১৭৫ ডলার পর্যন্ত পড়তে পারে। অর্থাৎ, সম্ভাব্য উৎপাদন ব্যয়ের ১৪৮ গুণ বেশি দামে এই টিকা কিনতে হতে পারে। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা ভেবে ধনী দেশগুলোর সরকার এই টিকায় ভর্তুকি দিতে পারে। কিন্তু দরিদ্র দেশগুলোর কী হবে? সেখানে কি মানুষ বাঁচবে না বা বাঁচতে চায় না?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

খালেদা জিয়ার জানাজা: যেসব পথে নিয়ন্ত্রিত থাকবে যান চলাচল

খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩০
হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূ-রাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূ-রাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।

সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।

২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।

ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।

হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।

এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।

অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।

সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।

ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।

তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।

সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।

পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।

সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।

তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

খালেদা জিয়ার জানাজা: যেসব পথে নিয়ন্ত্রিত থাকবে যান চলাচল

খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাইজেরিয়ায় কোন আইএসকে আঘাত করল মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে আইএস আস্তানা লক্ষ্য করে মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে আইএস আস্তানা লক্ষ্য করে মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।

ইসলামিক স্টেট কী

ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।

পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।

বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়

মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।

এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।

লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল

আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।

মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।

আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা

কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।

নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

খালেদা জিয়ার জানাজা: যেসব পথে নিয়ন্ত্রিত থাকবে যান চলাচল

খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাইজেরিয়ায় কেন হামলা চালাল মার্কিন বাহিনী, খ্রিষ্টান নিপীড়নের সঙ্গে এর সম্পর্ক কী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।

ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’

গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।

কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন

অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।

তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।

নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে

নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।

উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।

নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান

ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।

এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।

নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।

এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’

এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।

দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

খালেদা জিয়ার জানাজা: যেসব পথে নিয়ন্ত্রিত থাকবে যান চলাচল

খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘ভেনেজুয়েলা সংকট’ কীভাবে আন্তর্জাতিক সংঘাতের রূপ নিচ্ছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।

ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।

ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।

ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।

এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।

‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।

সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

খালেদা জিয়ার জানাজা: যেসব পথে নিয়ন্ত্রিত থাকবে যান চলাচল

খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত