
গাজার হাজার হাজার মানুষের মতোই ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন হামাসের প্রধান ইয়াহইয়া সিনওয়ার। গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বাহিনী ধাওয়া দিয়ে তাঁকে হত্যা করে। ইয়াহইয়া সিনওয়ারকে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে দাবি করা হচ্ছে। তাঁর হত্যাকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতির গতিপথ বদলে দেবে। তবে অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত পথে নয়।
সিনওয়ার হত্যা এই অঞ্চলের ভাগ্যে নতুন মোড় দেবে। হামাসকে নেতৃত্বশূন্য করার পাশাপাশি তাঁর মৃত্যু গাজাকে অভিভাবকহীন করেছে। এই অবস্থায় অঞ্চলটিতে ইসরায়েল বহুপ্রতীক্ষিত বিজয় দাবি করতে পারে, যার জন্য ৪২ হাজারের বেশি মানুষকে এরই মধ্যে প্রাণ দিতে হয়েছে।
এসব ঘটনা হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি ও গাজায় যুদ্ধবিরতির ক্ষীণ সম্ভাবনাকে কিঞ্চিৎ বাড়িয়ে তুলেছে। তা ঘটলে এই অঞ্চলে উত্তেজনা থিতিয়ে আনার সংকীর্ণ পথ কিছুটা প্রশস্ত হতে পারে। এমনকি লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ এবং ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার পরও এ ক্ষেত্রে সম্ভাবনা আছে ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করেছেন ৬১ বছর বয়সী সিনওয়ার। সেদিনের হামলায় ইসরায়েলের প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে হামাস। তারপর থেকেই সিনওয়ার গাজায় হামাসের গোলকধাঁধার টানেলের ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন। সেখান থেকেই তাঁর সহযোদ্ধাদের সঙ্গে হাতে লিখিত নির্দেশাবলির মাধ্যমে যোগাযোগ করতেন দূত মারফত।
লুকিয়ে থাকলেও দলের ওপর সিনওয়ারের দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ বজায় ছিল, যেমনটা বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা রাখেন। টানেলে বসেই জিম্মিদের দেখভাল করেছেন, প্রক্সির মাধ্যমে সিআইএ ও অন্য পক্ষের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনা চালিয়েছেন এবং গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে হামাসের অভিযানের কৌশল নির্ধারণ করেছেন।
ইসরায়েলি বিমানবাহিনী ও ট্যাংকের হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজায় তিনি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনীর (আইডিএফ) ‘হিট লিস্টের’ প্রথম ব্যক্তি ছিলেন। তাঁকে যেদিন হত্যা করা হয়, সেই অভিযান কোনো পরিকল্পিত অভিযান ছিল না। বরং ভাগ্যবশত সিনওয়ার ইসরায়েলি বাহিনীর সম্মুখে পড়ে যান।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাফাহে আরও দুই সহযোদ্ধার সঙ্গে ছিলেন তিনি। দুর্ভাগ্যক্রমে আইডিএফের পদাতিক দল তাঁকে শনাক্ত করে। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে তিনি নিহত হন। কিন্তু তার পরও ইসরায়েলি বাহিনীর টহল দলটি তাঁর মরদেহের কাছে যায়নি। কিন্তু তাদের একটি ড্রোন যখন সিনওয়ার যে নির্মাণাধীন ভবনে আশ্রয় নিয়েছিলেন সেখানে নজরদারি করে, তখন তাঁকে শনাক্ত করা হয়।
সিনওয়ার বিশ্বাস করতেন, তিনি ইসরায়েলে যে আক্রমণ করেছিলেন তা ইহুদি রাষ্ট্রটির ধ্বংসের সূত্রপাত করে দেবে। তিনি ১৯৮০-র দশকে হামাসের প্রতিষ্ঠার সময়কার সদস্য। দীর্ঘ ২৩ বছর ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী ছিলেন তিনি। ইসরায়েলকে ‘সহযোগিতায়’ চার ফিলিস্তিনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার অপরাধে তাঁকে এই কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে ২০১১ সালে বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতায় তিনি মুক্তি পান। এর পরই তিনি ইসরায়েল আক্রমণের পরিকল্পনা শুরু করেন বলে দাবি দেশটির গোয়েন্দা সংস্থার।
ইসরায়েলের দাবি, সিনওয়ার এই আক্রমণের জন্য লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে সমন্বয় করেছিলেন। যাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একাধিক ফ্রন্টে আক্রমণ চালানো যায়। ৭ অক্টোবর হামাস প্রাথমিক লক্ষ্য অর্জনের পরপরই হিজবুল্লাহও ইসরায়েলে রকেট হামলা শুরু করে ছোট পরিসরে। জবাবে ইসরায়েল সীমান্ত অঞ্চলে সেনাসংখ্যা বাড়িয়ে দেয়, স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয় এবং এই হামলার পরদিন গাজায় আগ্রাসন শুরু করে।
সিনওয়ারের ইসরায়েলে আক্রমণের মূল্যায়ন নিয়ে গোয়েন্দারা বিভক্ত। একদল মনে করে, গাজায় সেনা পাঠিয়ে অভিযান চালানোর মতো ঝুঁকি ইসরায়েল নেবে না ভেবে সিনওয়ার হামলা চালিয়েছিল, যেটা ছিল মারাত্মক ভুল। এক বিশ্লেষক বলেন, ‘সিনওয়ার ভেবেছিলেন, তিনি ইসরায়েলি সমাজের গতি-প্রকৃতি বুঝতে পেরেছেন; তারা নরম হয়ে গেছে।’
আরেক দল মনে করে, সিনওয়ার ধর্মীয় উগ্রবাদে অনুপ্রাণিত হয়ে এই হামলা করেছিলেন। সিনওয়ারের বিষয়ে অভিজ্ঞ এক প্রবীণ আইডিএফ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘গাজা এবং গাজার লোকদের জীবন উৎসর্গ করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলেন সিনওয়ার।’ যাই হোক না কেন, তিনি ইসরায়েলে যে আক্রমণ করেছিলেন সেটি এবং তাঁর হত্যাকাণ্ড, কোনোটার ফলেই কোনো পক্ষের বিজয় অর্জিত হয়নি।
ইসরায়েলের দাবি, তারা হামাসের সামরিক শাখাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তাদের দাবির সত্যতা থাক বা না থাক, এই অভিযানের জন্য ৪২ হাজার মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ক্ষোভ বেড়েছে। হামাসের পাশাপাশি ইসরায়েল হিজবুল্লাহরও শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যা করেছে।
এদিকে ইরানও ইসরায়েলের ওপর একাধিকবার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। সর্বশেষ হামলা চালিয়েছে গত ১ অক্টোবর। প্রতিক্রিয়ায় নিজের শক্তি দেখানোর লক্ষ্যে ইসরায়েল এই অঞ্চলে ইরানি প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর ওপর হামলা বাড়িয়েছে। গোয়েন্দাদের ধারণা, আগামী দিনে ইসরায়েল ইরানে সরাসরি হামলা চালাবে।
এ অবস্থায় তিনটি বড় প্রশ্ন হাজির হয়েছে। প্রথমত, হামাসের কী হবে? হামাস বর্তমানে নেতৃত্বহীনতায় ভুগছে। এর ফলে গাজায় গোষ্ঠীটির যে শক্তিমত্তা আছে, তা-ও হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। হামাসের সামরিক শাখার তিন নেতা সিনওয়ার, মোহাম্মদ দায়েফ ও মারওয়ান ঈসাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি কো হয়েছে। এ ছাড়া গাজায় গোষ্ঠীটির শীর্ষস্থানীয় আরও ছয় নেতাকেও হত্যার দাবি করেছে। সিনওয়ার ২০১৭ সাল থেকে গাজায় হামাসের প্রধান ছিলেন। পরে চলতি বছরের জুলাইয়ে হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়া তেহরানে গুপ্তহত্যার শিকার হয়ে মারা যাওয়ার পর তিনি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন।
গাজায় হামাসের এখনো হাজারো যোদ্ধা রয়ে গেছে। আইডিএফ বলছে, হামাসের যোদ্ধারা এখন গেরিলা স্টাইলে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সবগুলো দলই এখন প্রায় শীর্ষ নেতৃত্বহীন। ইয়াহইয়া সিনওয়ারের ভাই ও তাঁর ডান হাত বলে খ্যাত মোহাম্মদ সিনওয়ারকে গাজায় হামাসের পরবর্তী প্রধান হিসেবে অনুমান করা হচ্ছে। তবে সামগ্রিকভাবে হামাস নেতৃত্বহীন হয়ে পড়েছে।
কিছু ইসরায়েলি বিশ্লেষক মনে করেন, গাজায় হামাসের নেতৃত্বে একটি শূন্যতা তৈরি হবে। কারণ গোষ্ঠীটির অনেকেই গাজা থেকে তাঁদের কেন্দ্রীয় নেতা নির্বাচনের বিরোধী। কাতার, তুরস্ক ও লেবাননে হামাসের বিপুলসংখ্যক নেতা আছেন। এই নেতাদের অন্যতম খালিদ মেশাল, যিনি সিনওয়ারের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। তিনিও গোষ্ঠীটির হাল ধরতে পারেন। তিনি হামাসের বাস্তববাদী নেতাদের একজন। তিনি ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের বিরোধী। তবে ইসমাইল হানিয়া ও সিনওয়ারের আমলে দেশটির সঙ্গে হামাসের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়েছে।
দ্বিতীয় যে প্রশ্নটি সামনে এসেছে তা হলো, এখন কি গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি আনার উপযুক্ত সময়? হামাসের অবশিষ্ট সদস্যরা তাদের হাতে থাকা ১০১ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে (যাদের প্রায় অর্ধেককে মৃত বলে অনুমান করা হচ্ছে) ব্যবহার করে কোনো একটি চুক্তি করার চেষ্টা করতে পারে, যাতে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় এবং তারা গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারে এবং নেতারা নিরাপদে পালিয়ে যেতে পারেন।
ইয়াহইয়া সিনওয়ারের মৃত্যুর ঘোষণা দেওয়ার সময় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিজেও এই সম্ভাবনা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যারা অস্ত্র ত্যাগ করবে, আমরা তাদের চলে যেতে এবং বেঁচে থাকার সুযোগ দেব।’ এরই মধ্যে ইসরায়েল সরকার আগে যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে জানা গেছে।
ইয়াহইয়া সিনওয়ার যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত হিসেবে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ ও স্থায়ী প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলেন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বিভাগের শীর্ষ নেতাদের অনুরোধ থাকার পরও নেতানিয়াহু এই পদক্ষেপের বিপক্ষে কঠোর অবস্থান নেন। তবে এখন হয়তো এই চুক্তি গ্রহণের জন্য ‘প্রণোদনা’ থাকতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনও তাঁকে এ ধরনের চুক্তি মেনে নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছে। তবে শর্ত হলো, হামাসকে সত্যিই তাদের দাবি কমাতে প্রস্তুত হতে হবে।
হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার পর নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছিল। কিন্তু তিনি হয়তো ভাবছেন, তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে আবারও একটি ‘অসম্ভব প্রত্যাবর্তন’ করার চেষ্টা তিনি করতে পারবেন। ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় একদল ধর্মীয় চরমপন্থী ছাড়া ইসরায়েলের গাজার দায়িত্ব নেওয়ার বা এটিকে পুনর্নির্মাণের তেমন কোনো আগ্রহ নেই। এ অবস্থায় একটি বিকল্প শাসন কর্তৃপক্ষ যুদ্ধবিরতির পরে যদি গাজার দায়িত্ব গ্রহণ করে, তাহলে অন্তত এটি সম্ভব যে গাজার ভবিষ্যৎ স্থায়ী দারিদ্র্য ও বিশৃঙ্খলায় পূর্ণ অঞ্চলে পরিণত হওয়া কিংবা ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া ছাড়াও অন্য কোনো পরিণতির দিকে যেতে পারে।
তৃতীয় ও শেষ প্রশ্নটি হলো—গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির সম্ভাবনা কি এই অঞ্চলে বিস্তৃত উত্তেজনা প্রশমনের দিকে নিয়ে যেতে পারবে? ইরানের নেতারা অন্তত অস্থায়ীভাবে হলেও এটি চাইতে পারেন। যদিও তাঁরা এবং তাঁদের সহযোগী গোষ্ঠীগুলো, যেমন হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতি, যারা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে লড়াইয়ের দাবি করছে, তারা ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান প্রক্সি যুদ্ধের অংশীদার। হামাস ও হিজবুল্লাহর ওপর ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞের পরও তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আগ্রহ কমে যেতে পারে। হামাস নেতা ইয়াহইয়া সিনওয়ার এবং হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে ইসরায়েল হত্যা করেছে। আরও ক্ষতির আশঙ্কা আছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আমেরিকা ইয়েমেনে হুতিদের অবস্থানে বোমা হামলা চালিয়েছে। ইরান তার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে ইসরায়েলের পাল্টা আঘাতের অপেক্ষায় রয়েছে। যদিও আমেরিকা ইরানের পারমাণবিক বা তেল স্থাপনায় আঘাতের ওপর আপত্তি করেছে। তার পরও ইসরায়েল সম্ভবত ইরানের সামরিক অবস্থানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা করবে।
উল্লিখিত ৩টি প্রশ্নের বাইরেও এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো—ইসরায়েল কি বিশ্বাস করে, তারা নিরাপদে যুদ্ধ বন্ধ করতে সক্ষম? এখন পর্যন্ত ইহুদি রাষ্ট্রটির ওপর ইতিহাসের ‘সবচেয়ে গুরুতর’ আঘাত হানতে সফল হয়েছেন সিনওয়ার। তবে ইসরায়েল সেই আঘাতের জবাবে তার ‘মিলিটারি ডিটারেন্স’ বা ‘সামরিক প্রতিরোধ’ সক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। যদিও এর ফলে দেশটি বিশ্বজুড়ে বড় রকমের সুনামহানির শিকার হয়েছে এবং গাজা বিশাল মানবিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি এবং রাষ্ট্রহীন ফিলিস্তিনিদের ট্র্যাজেডিও অব্যাহত। তবুও এই অঞ্চলে বিস্তৃত উত্তেজনা প্রশমনের দিশা পাওয়া যাচ্ছে। ইরানের ওপর সুনির্দিষ্ট ইসরায়েলি পাল্টা আক্রমণ, গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনার মাধ্যমে সমাপ্তি এবং লেবাননে উত্তেজনা প্রশমিত করার মাধ্যমে এটি হতে পারে। প্রয়াত ইয়াহইয়া সিনওয়ার হয়তো এটি অপছন্দ করবেন, কিন্তু তাঁর মৃত্যু ইসরায়েলের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করেছে, যাতে সম্ভবত এই যুদ্ধ অবসানের পথ খুঁজে পাওয়া যাবে।
দ্য ইকোনমিস্ট থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

গাজার হাজার হাজার মানুষের মতোই ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন হামাসের প্রধান ইয়াহইয়া সিনওয়ার। গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বাহিনী ধাওয়া দিয়ে তাঁকে হত্যা করে। ইয়াহইয়া সিনওয়ারকে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে দাবি করা হচ্ছে। তাঁর হত্যাকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতির গতিপথ বদলে দেবে। তবে অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত পথে নয়।
সিনওয়ার হত্যা এই অঞ্চলের ভাগ্যে নতুন মোড় দেবে। হামাসকে নেতৃত্বশূন্য করার পাশাপাশি তাঁর মৃত্যু গাজাকে অভিভাবকহীন করেছে। এই অবস্থায় অঞ্চলটিতে ইসরায়েল বহুপ্রতীক্ষিত বিজয় দাবি করতে পারে, যার জন্য ৪২ হাজারের বেশি মানুষকে এরই মধ্যে প্রাণ দিতে হয়েছে।
এসব ঘটনা হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি ও গাজায় যুদ্ধবিরতির ক্ষীণ সম্ভাবনাকে কিঞ্চিৎ বাড়িয়ে তুলেছে। তা ঘটলে এই অঞ্চলে উত্তেজনা থিতিয়ে আনার সংকীর্ণ পথ কিছুটা প্রশস্ত হতে পারে। এমনকি লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ এবং ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার পরও এ ক্ষেত্রে সম্ভাবনা আছে ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করেছেন ৬১ বছর বয়সী সিনওয়ার। সেদিনের হামলায় ইসরায়েলের প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে হামাস। তারপর থেকেই সিনওয়ার গাজায় হামাসের গোলকধাঁধার টানেলের ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন। সেখান থেকেই তাঁর সহযোদ্ধাদের সঙ্গে হাতে লিখিত নির্দেশাবলির মাধ্যমে যোগাযোগ করতেন দূত মারফত।
লুকিয়ে থাকলেও দলের ওপর সিনওয়ারের দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ বজায় ছিল, যেমনটা বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা রাখেন। টানেলে বসেই জিম্মিদের দেখভাল করেছেন, প্রক্সির মাধ্যমে সিআইএ ও অন্য পক্ষের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনা চালিয়েছেন এবং গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে হামাসের অভিযানের কৌশল নির্ধারণ করেছেন।
ইসরায়েলি বিমানবাহিনী ও ট্যাংকের হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজায় তিনি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনীর (আইডিএফ) ‘হিট লিস্টের’ প্রথম ব্যক্তি ছিলেন। তাঁকে যেদিন হত্যা করা হয়, সেই অভিযান কোনো পরিকল্পিত অভিযান ছিল না। বরং ভাগ্যবশত সিনওয়ার ইসরায়েলি বাহিনীর সম্মুখে পড়ে যান।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাফাহে আরও দুই সহযোদ্ধার সঙ্গে ছিলেন তিনি। দুর্ভাগ্যক্রমে আইডিএফের পদাতিক দল তাঁকে শনাক্ত করে। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে তিনি নিহত হন। কিন্তু তার পরও ইসরায়েলি বাহিনীর টহল দলটি তাঁর মরদেহের কাছে যায়নি। কিন্তু তাদের একটি ড্রোন যখন সিনওয়ার যে নির্মাণাধীন ভবনে আশ্রয় নিয়েছিলেন সেখানে নজরদারি করে, তখন তাঁকে শনাক্ত করা হয়।
সিনওয়ার বিশ্বাস করতেন, তিনি ইসরায়েলে যে আক্রমণ করেছিলেন তা ইহুদি রাষ্ট্রটির ধ্বংসের সূত্রপাত করে দেবে। তিনি ১৯৮০-র দশকে হামাসের প্রতিষ্ঠার সময়কার সদস্য। দীর্ঘ ২৩ বছর ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী ছিলেন তিনি। ইসরায়েলকে ‘সহযোগিতায়’ চার ফিলিস্তিনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার অপরাধে তাঁকে এই কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে ২০১১ সালে বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতায় তিনি মুক্তি পান। এর পরই তিনি ইসরায়েল আক্রমণের পরিকল্পনা শুরু করেন বলে দাবি দেশটির গোয়েন্দা সংস্থার।
ইসরায়েলের দাবি, সিনওয়ার এই আক্রমণের জন্য লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে সমন্বয় করেছিলেন। যাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একাধিক ফ্রন্টে আক্রমণ চালানো যায়। ৭ অক্টোবর হামাস প্রাথমিক লক্ষ্য অর্জনের পরপরই হিজবুল্লাহও ইসরায়েলে রকেট হামলা শুরু করে ছোট পরিসরে। জবাবে ইসরায়েল সীমান্ত অঞ্চলে সেনাসংখ্যা বাড়িয়ে দেয়, স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয় এবং এই হামলার পরদিন গাজায় আগ্রাসন শুরু করে।
সিনওয়ারের ইসরায়েলে আক্রমণের মূল্যায়ন নিয়ে গোয়েন্দারা বিভক্ত। একদল মনে করে, গাজায় সেনা পাঠিয়ে অভিযান চালানোর মতো ঝুঁকি ইসরায়েল নেবে না ভেবে সিনওয়ার হামলা চালিয়েছিল, যেটা ছিল মারাত্মক ভুল। এক বিশ্লেষক বলেন, ‘সিনওয়ার ভেবেছিলেন, তিনি ইসরায়েলি সমাজের গতি-প্রকৃতি বুঝতে পেরেছেন; তারা নরম হয়ে গেছে।’
আরেক দল মনে করে, সিনওয়ার ধর্মীয় উগ্রবাদে অনুপ্রাণিত হয়ে এই হামলা করেছিলেন। সিনওয়ারের বিষয়ে অভিজ্ঞ এক প্রবীণ আইডিএফ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘গাজা এবং গাজার লোকদের জীবন উৎসর্গ করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলেন সিনওয়ার।’ যাই হোক না কেন, তিনি ইসরায়েলে যে আক্রমণ করেছিলেন সেটি এবং তাঁর হত্যাকাণ্ড, কোনোটার ফলেই কোনো পক্ষের বিজয় অর্জিত হয়নি।
ইসরায়েলের দাবি, তারা হামাসের সামরিক শাখাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তাদের দাবির সত্যতা থাক বা না থাক, এই অভিযানের জন্য ৪২ হাজার মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ক্ষোভ বেড়েছে। হামাসের পাশাপাশি ইসরায়েল হিজবুল্লাহরও শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যা করেছে।
এদিকে ইরানও ইসরায়েলের ওপর একাধিকবার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। সর্বশেষ হামলা চালিয়েছে গত ১ অক্টোবর। প্রতিক্রিয়ায় নিজের শক্তি দেখানোর লক্ষ্যে ইসরায়েল এই অঞ্চলে ইরানি প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর ওপর হামলা বাড়িয়েছে। গোয়েন্দাদের ধারণা, আগামী দিনে ইসরায়েল ইরানে সরাসরি হামলা চালাবে।
এ অবস্থায় তিনটি বড় প্রশ্ন হাজির হয়েছে। প্রথমত, হামাসের কী হবে? হামাস বর্তমানে নেতৃত্বহীনতায় ভুগছে। এর ফলে গাজায় গোষ্ঠীটির যে শক্তিমত্তা আছে, তা-ও হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। হামাসের সামরিক শাখার তিন নেতা সিনওয়ার, মোহাম্মদ দায়েফ ও মারওয়ান ঈসাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি কো হয়েছে। এ ছাড়া গাজায় গোষ্ঠীটির শীর্ষস্থানীয় আরও ছয় নেতাকেও হত্যার দাবি করেছে। সিনওয়ার ২০১৭ সাল থেকে গাজায় হামাসের প্রধান ছিলেন। পরে চলতি বছরের জুলাইয়ে হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়া তেহরানে গুপ্তহত্যার শিকার হয়ে মারা যাওয়ার পর তিনি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন।
গাজায় হামাসের এখনো হাজারো যোদ্ধা রয়ে গেছে। আইডিএফ বলছে, হামাসের যোদ্ধারা এখন গেরিলা স্টাইলে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সবগুলো দলই এখন প্রায় শীর্ষ নেতৃত্বহীন। ইয়াহইয়া সিনওয়ারের ভাই ও তাঁর ডান হাত বলে খ্যাত মোহাম্মদ সিনওয়ারকে গাজায় হামাসের পরবর্তী প্রধান হিসেবে অনুমান করা হচ্ছে। তবে সামগ্রিকভাবে হামাস নেতৃত্বহীন হয়ে পড়েছে।
কিছু ইসরায়েলি বিশ্লেষক মনে করেন, গাজায় হামাসের নেতৃত্বে একটি শূন্যতা তৈরি হবে। কারণ গোষ্ঠীটির অনেকেই গাজা থেকে তাঁদের কেন্দ্রীয় নেতা নির্বাচনের বিরোধী। কাতার, তুরস্ক ও লেবাননে হামাসের বিপুলসংখ্যক নেতা আছেন। এই নেতাদের অন্যতম খালিদ মেশাল, যিনি সিনওয়ারের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। তিনিও গোষ্ঠীটির হাল ধরতে পারেন। তিনি হামাসের বাস্তববাদী নেতাদের একজন। তিনি ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের বিরোধী। তবে ইসমাইল হানিয়া ও সিনওয়ারের আমলে দেশটির সঙ্গে হামাসের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়েছে।
দ্বিতীয় যে প্রশ্নটি সামনে এসেছে তা হলো, এখন কি গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি আনার উপযুক্ত সময়? হামাসের অবশিষ্ট সদস্যরা তাদের হাতে থাকা ১০১ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে (যাদের প্রায় অর্ধেককে মৃত বলে অনুমান করা হচ্ছে) ব্যবহার করে কোনো একটি চুক্তি করার চেষ্টা করতে পারে, যাতে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় এবং তারা গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারে এবং নেতারা নিরাপদে পালিয়ে যেতে পারেন।
ইয়াহইয়া সিনওয়ারের মৃত্যুর ঘোষণা দেওয়ার সময় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিজেও এই সম্ভাবনা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যারা অস্ত্র ত্যাগ করবে, আমরা তাদের চলে যেতে এবং বেঁচে থাকার সুযোগ দেব।’ এরই মধ্যে ইসরায়েল সরকার আগে যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে জানা গেছে।
ইয়াহইয়া সিনওয়ার যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত হিসেবে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ ও স্থায়ী প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলেন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বিভাগের শীর্ষ নেতাদের অনুরোধ থাকার পরও নেতানিয়াহু এই পদক্ষেপের বিপক্ষে কঠোর অবস্থান নেন। তবে এখন হয়তো এই চুক্তি গ্রহণের জন্য ‘প্রণোদনা’ থাকতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনও তাঁকে এ ধরনের চুক্তি মেনে নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছে। তবে শর্ত হলো, হামাসকে সত্যিই তাদের দাবি কমাতে প্রস্তুত হতে হবে।
হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার পর নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছিল। কিন্তু তিনি হয়তো ভাবছেন, তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে আবারও একটি ‘অসম্ভব প্রত্যাবর্তন’ করার চেষ্টা তিনি করতে পারবেন। ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় একদল ধর্মীয় চরমপন্থী ছাড়া ইসরায়েলের গাজার দায়িত্ব নেওয়ার বা এটিকে পুনর্নির্মাণের তেমন কোনো আগ্রহ নেই। এ অবস্থায় একটি বিকল্প শাসন কর্তৃপক্ষ যুদ্ধবিরতির পরে যদি গাজার দায়িত্ব গ্রহণ করে, তাহলে অন্তত এটি সম্ভব যে গাজার ভবিষ্যৎ স্থায়ী দারিদ্র্য ও বিশৃঙ্খলায় পূর্ণ অঞ্চলে পরিণত হওয়া কিংবা ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া ছাড়াও অন্য কোনো পরিণতির দিকে যেতে পারে।
তৃতীয় ও শেষ প্রশ্নটি হলো—গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির সম্ভাবনা কি এই অঞ্চলে বিস্তৃত উত্তেজনা প্রশমনের দিকে নিয়ে যেতে পারবে? ইরানের নেতারা অন্তত অস্থায়ীভাবে হলেও এটি চাইতে পারেন। যদিও তাঁরা এবং তাঁদের সহযোগী গোষ্ঠীগুলো, যেমন হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতি, যারা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে লড়াইয়ের দাবি করছে, তারা ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান প্রক্সি যুদ্ধের অংশীদার। হামাস ও হিজবুল্লাহর ওপর ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞের পরও তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আগ্রহ কমে যেতে পারে। হামাস নেতা ইয়াহইয়া সিনওয়ার এবং হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে ইসরায়েল হত্যা করেছে। আরও ক্ষতির আশঙ্কা আছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আমেরিকা ইয়েমেনে হুতিদের অবস্থানে বোমা হামলা চালিয়েছে। ইরান তার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে ইসরায়েলের পাল্টা আঘাতের অপেক্ষায় রয়েছে। যদিও আমেরিকা ইরানের পারমাণবিক বা তেল স্থাপনায় আঘাতের ওপর আপত্তি করেছে। তার পরও ইসরায়েল সম্ভবত ইরানের সামরিক অবস্থানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা করবে।
উল্লিখিত ৩টি প্রশ্নের বাইরেও এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো—ইসরায়েল কি বিশ্বাস করে, তারা নিরাপদে যুদ্ধ বন্ধ করতে সক্ষম? এখন পর্যন্ত ইহুদি রাষ্ট্রটির ওপর ইতিহাসের ‘সবচেয়ে গুরুতর’ আঘাত হানতে সফল হয়েছেন সিনওয়ার। তবে ইসরায়েল সেই আঘাতের জবাবে তার ‘মিলিটারি ডিটারেন্স’ বা ‘সামরিক প্রতিরোধ’ সক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। যদিও এর ফলে দেশটি বিশ্বজুড়ে বড় রকমের সুনামহানির শিকার হয়েছে এবং গাজা বিশাল মানবিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি এবং রাষ্ট্রহীন ফিলিস্তিনিদের ট্র্যাজেডিও অব্যাহত। তবুও এই অঞ্চলে বিস্তৃত উত্তেজনা প্রশমনের দিশা পাওয়া যাচ্ছে। ইরানের ওপর সুনির্দিষ্ট ইসরায়েলি পাল্টা আক্রমণ, গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনার মাধ্যমে সমাপ্তি এবং লেবাননে উত্তেজনা প্রশমিত করার মাধ্যমে এটি হতে পারে। প্রয়াত ইয়াহইয়া সিনওয়ার হয়তো এটি অপছন্দ করবেন, কিন্তু তাঁর মৃত্যু ইসরায়েলের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করেছে, যাতে সম্ভবত এই যুদ্ধ অবসানের পথ খুঁজে পাওয়া যাবে।
দ্য ইকোনমিস্ট থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

গাজার হাজার হাজার মানুষের মতোই ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন হামাসের প্রধান ইয়াহইয়া সিনওয়ার। গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বাহিনী ধাওয়া দিয়ে তাঁকে হত্যা করে। ইয়াহইয়া সিনওয়ারকে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে দাবি করা হচ্ছে। তাঁর হত্যাকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যের ভ
১৯ অক্টোবর ২০২৪
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

গাজার হাজার হাজার মানুষের মতোই ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন হামাসের প্রধান ইয়াহইয়া সিনওয়ার। গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বাহিনী ধাওয়া দিয়ে তাঁকে হত্যা করে। ইয়াহইয়া সিনওয়ারকে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে দাবি করা হচ্ছে। তাঁর হত্যাকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যের ভ
১৯ অক্টোবর ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

গাজার হাজার হাজার মানুষের মতোই ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন হামাসের প্রধান ইয়াহইয়া সিনওয়ার। গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বাহিনী ধাওয়া দিয়ে তাঁকে হত্যা করে। ইয়াহইয়া সিনওয়ারকে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে দাবি করা হচ্ছে। তাঁর হত্যাকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যের ভ
১৯ অক্টোবর ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

গাজার হাজার হাজার মানুষের মতোই ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন হামাসের প্রধান ইয়াহইয়া সিনওয়ার। গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বাহিনী ধাওয়া দিয়ে তাঁকে হত্যা করে। ইয়াহইয়া সিনওয়ারকে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে দাবি করা হচ্ছে। তাঁর হত্যাকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যের ভ
১৯ অক্টোবর ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে