Ajker Patrika

সরকারের পতনের আন্দোলনে জনসাধারণকে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২৪, ১৩: ২২
সরকারের পতনের আন্দোলনে জনসাধারণকে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি: ফখরুল

ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারপতনের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। আজ রোববার রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই আহ্বান জানান। 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে ছাত্রদের এই যৌক্তিক, ন্যায়সংগত, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছি। আজ আমরা তাদের নতুন ঘোষণাকে সমর্থন জানাচ্ছি এবং এই ভয়াবহ দানবীয় খুনি শাসকগোষ্ঠীর পতনের লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি, পেশাজীবী, শ্রমিক, কৃষকসহ আপামর জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে এই অবৈধ খুনি হাসিনা সরকারের পতন নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’ 
 
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জাতির এক চরম ক্রান্তিলগ্নে আপনাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তথা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন দমন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার যে নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা আশ্রয় নিয়েছে, তা উপমহাদেশের ইতিহাসে বিরল ঘটনা।’ 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডারেরা পাখি শিকারের মতো নির্বিচারে গুলি করে লাশের পর লাশের স্তূপ সৃষ্টি করেছে, ব্যাপক রক্তপাত ঘটিয়েছে, হাজার হাজার মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন। সরকার তাদের এই বর্বরতা আড়াল করতে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে কিছু স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে এর দায় বিরোধী দলের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করছে।’ 

মিথ্যা অভিযোগে নিরীহ ছাত্র-জনতার সঙ্গে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনসহ অন্যান্য বিরোধী দলের সিনিয়র নেতা, কেন্দ্রীয়, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, গ্রাম পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের আটক করা হচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আটকাভিযান এখনো চলছে। আন্দোলন দমাতে সান্ধ্য আইন দিয়ে, সেনাবাহিনী নামিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। সান্ধ্য আইনের মধ্যে রাতে বিভিন্ন এলাকায় ব্লক রেইড দিয়ে নিরীহ ছাত্রসহ বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা করেছে। আটক করতে গিয়ে বাসা-বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী, ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা ছাত্র ও নেতা-কর্মীদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছে। আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের না পেয়ে তাদের বাবা, ভাই ও অন্যান্যদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছে। চলছে গ্রেপ্তার বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি। মূলত সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকারের হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসযজ্ঞ আড়াল করতেই তথাকথিত তৃতীয় পক্ষ আবিষ্কারের জন্য সরকারের বিরামহীন এই প্রচেষ্টা চলছে, যা জনসাধারণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।’ 

সরকার প্রথম থেকেই ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবি অস্বীকার করে নিষ্ঠুরভাবে দমন করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে দেশকে ধ্বংস ও নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে গেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলন বলপূর্বক দমন করতে রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করে চলছে নজিরবিহীন তৎপরতা। দেশে আজ অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জনগণের ওপর যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। চারদিকে শুধু অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা। এর সম্পূর্ণ দায় রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ আওয়ামী লীগ সরকারের।’ 

শিক্ষার্থীদের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন দমনে গণহত্যা, নৈরাজ্য, ধ্বংস, দমন, নিপীড়ন দেখে সারা বিশ্ব স্তম্ভিত জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার ছাত্র, যুবক, শিশু, নারীসহ জনতাকে নির্বিচারে নির্দয়ভাবে হত্যা করে মানবতাকে হত্যা করেছে। সরকারের মানবতাবিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিশ্ব বিবেক জাগ্রত হয়েছে। দেশ-বিদেশে সরকার ধিক্কৃত ও ঘৃণিত। দেশের সকল মানুষ ও গণতন্ত্রকামী বিশ্ব গণহত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং আটককৃত নেতা-কর্মীসহ নিরীহ ছাত্র-জনতাকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানালেও সরকার কূটকৌশল করে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।’ 

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এসব দাবিতে ছাত্র-জনতার কর্মসূচি বানচাল করতে সরকার আবারও নিরাপত্তা বাহিনীসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের ছাত্র-জনতার ওপর লেলিয়ে দিয়ে আরও হত্যা, নির্যাতন, দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে। যার ফলশ্রুতিতে সমগ্র দেশ আজ অগ্নিগর্ভ। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সকল জনপদ ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ বিদ্রোহে মুখরিত। সমগ্র দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ, সুশীল সমাজ, শিক্ষক, অভিভাবক, সাংবাদিক, আইনজীবী, লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক, শ্রমজীবী মানুষসহ ধর্ম-বর্ণ, দল-মত নির্বিশেষে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে শামিল হয়ে গণজাগরণের সৃষ্টি করেছে। গড়ে উঠেছে অভাবনীয় জাতীয় ঐক্য, জনগণের ঐক্য। সমগ্র দেশ আজ গণহত্যাকারী সরকারের বিরুদ্ধে এক এককাট্টা। গ্রাম ও শহরের ঘরে ঘরে আর্তনাদের সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে খুনি সরকারের পদত্যাগের দাবি।’ 

ছাত্র-জনতার এক দাবি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন গতকাল (শনিবার) এক দফা দাবি অর্থাৎ স্বৈরাচার সরকারের পদত্যাগের দাবি সংবলিত এক দফা ঘোষণাপত্র উত্থাপন করে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল আগে থেকেই গণতন্ত্র হত্যাকারী, ভোটাধিকারসহ জনগণের মৌলিক অধিকার হরণকারী, জাতীয় স্বার্থ বিপন্নকারী, জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী লুটেরা দুর্নীতিবাজ আওয়ামী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। সেই আন্দোলনও দমন করতে সরকার হত্যা, গুম, দমন, নিপীড়নের স্টিমরোলার চালিয়ে ফ্যাসিবাদী ও কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসন কায়েম করেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তথা আপামর জনসাধারণের উত্থাপিত এক দফা ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সম্পূর্ণ একাত্মতা ঘোষণা করছে। বিএনপি জাতির এই চরম ক্রান্তিলগ্নে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে গণতন্ত্র প্রিয় আপামর জনসাধারণ এবং বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি রাজপথে নেমে এসে ছাত্র জনতার সঙ্গে একাত্ম হয়ে গণহত্যাকারী স্বৈরাচারী সরকারের পতন ত্বরান্বিত করতে অসহযোগ আন্দোলন সফল করার আহ্বান জানাচ্ছে। শত শত শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। ইনশা আল্লাহ ছাত্র জনতার বিজয় অবশ্যম্ভাবী।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘তীব্র গণ-আন্দোলনে পতন অবশ্যম্ভাবী জেনে আওয়ামী লীগ আবার সংঘাত, সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। গত রাতে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তারা সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে কারাগারে আটক বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, বর্তমান আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর চট্টগ্রামের বাড়িতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে গুলিবর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ করে। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়কসহ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের বাসায়, মিরপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হকের পারিবারিক রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আক্রমণ চালিয়ে ভাঙচুর করে। সন্ত্রাসীরা রুমিন ফারহানাকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তার বাড়ির আশে-পাশে অন্যান্য বাড়িতেও সন্ত্রাসীরা আক্রমণ চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। আমিনুল হকের রেস্টুরেন্টে লুটপাট করে। এ সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।’ 

এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ গতরাতে সন্ত্রাস চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। আমরা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী তৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলতে চাই, এসব করে তারা সরকারের পতন ঠেকাতে পারবে না বলেও জানান তিনি। 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে আজ এক গণ-অভ্যুত্থানের সূচনা হয়েছে। ছাত্রদের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে সাঈদ, মুগ্ধসহ শত নিরীহ ছাত্র শিশু ও জনতার রক্তে অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর হাত রঞ্জিত হয়েছে। জনগণ এই ভয়াবহ গণহত্যার প্রতিবাদে রাস্তায় বেরিয়ে আসছে। ছাত্র, শ্রমিক, পেশাজীবী, চাকরিজীবী, মা বোন, পিতা-মাতা, শিক্ষক, সাংবাদিক, শিল্পী, লেখক আজ এক কাতারে। দলমত, বয়স, ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষ ফুলে উঠেছে ক্রোধে। দ্রোহের মিছিলে শরিক হচ্ছে সকল স্তরের সকল শ্রেণির সকল বয়সের মানুষ। আমি তাদের অভিবাদন জানাই।’ 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গতকাল শহীদ মিনারে জনতার উত্তাল সমুদ্রে সামনে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কারীর এই অবৈধ খুনি সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করেছে এবং অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছে। দেশের সকল মানুষ এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। আমরা ২০১২ সাল থেকে এই সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবি করে আসছি। অবৈধ সরকার ক্ষমতায় চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা বাতিল করে চিরস্থায়ীভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। দেশের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো ধ্বংস করেছে নজির বিহীন দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থনীতি ধ্বংস করেছে। এখন ছাত্রদের ন্যায় সংগত দাবি কোটা ব্যবস্থায় ব্যক্তিক সংস্কারের আন্দোলনকে নির্মম নিষ্ঠুর ভাবে দমন করতে গিয়ে শত শত তাজা প্রাণের রক্ত ঝরিয়েছে, শত শত মায়ের বুক খালি করেছে, শত সন্তানরা পিতাকে হারিয়েছে। এমনকি ৪ বছরের শিশুও রেহাই পায়নি। গণহত্যার মাধ্যমে ছাত্রদের আক্রমণকে দমন করতে ব্যর্থ হয়ে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। ছাত্র জনতার ঐক্যের মধ্য দিয়ে যে চূড়ান্ত আন্দোলন সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত, তাকে স্তব্ধ করার ক্ষমতা কারও নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির মৃত্যুতে তারেক রহমানের গভীর শোক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৩৬
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এই শোক জানান।

ওই পোস্টে তারেক রহমান বলেন, ‘আমি শরীফ ওসমান হাদীর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে গভীরভাবে শোকাহত। আল্লাহ যেন তাঁর রুহের মাগফিরাত করে তাঁকে বেহেশত নসীব করেন। তাঁর এই অকাল শহীদি মৃত্যু আবারও মনে করিয়ে দিল— রাজনৈতিক সহিংসতা কত বড় মানবিক মূল্য দাবি করে।’

হাদি ছিলেন এক সাহসী রাজনৈতিক কর্মী এবং নির্ভীক কণ্ঠস্বর, যিনি সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে তিনি জুলাইয়ের যোদ্ধাদের অধিকার রক্ষা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধরে রাখা এবং জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় অসাধারণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

তারেক রহমান আরও বলেন, আমি তাঁর শোকাহত পরিবার, স্বজন ও সহযোদ্ধাদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। একই সঙ্গে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, দ্রুত তদন্ত করে অপরাধীদের গ্রেপ্তার, শাস্তি এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে আর কোনো ঘটনা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে বা আমাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে আঘাত না করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাতি একজন নির্ভীক কণ্ঠস্বর ও আদর্শবাদী যোদ্ধাকে হারাল: জামায়াত আমির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শফিকুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
শফিকুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এমন প্রতিক্রিয়া জানান তিনি৷

বিবৃতিতে জামায়াত আমির বলেন, ওসমান হাদি মানবিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। ন্যায়, সত্য ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর শাহাদাতে জাতি একজন নির্ভীক কণ্ঠস্বর ও আদর্শবাদী যোদ্ধাকে হারাল।

শফিকুর রহমান যোগ করেন, তাঁর (ওসমান হাদি) শাহাদাতে যে শূন্যতার সৃষ্টি হলো, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। তাঁর বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর নতুন প্রজন্মকে ধারণ করতে হবে এবং দলমত-নির্বিশেষে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে। তাঁর অবদান জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।

শফিকুর রহমান আরও বলেন, শরিফ ওসমান হাদি ছিলেন একজন সাহসী জুলাই যোদ্ধা ও সাচ্চা দেশপ্রেমিক। তিনি অন্যায়ের কাছে কখনো মাথা নত করেননি। তাঁর কণ্ঠ ছিল সব আধিপত্যবাদী শক্তি ও অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে। তিনি ছিলেন আপসহীন এক যোদ্ধা। দুনিয়ার কোনো লোভ-লালসা তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি।

জামায়াত আমির বলেন, ‘আমি মহান আল্লাহর দরবারে তাঁর রূহের মাগফিরাত কামনা করছি। তাঁর মাসুম বাচ্চাসহ স্ত্রী, শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, সহযোদ্ধা ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি আল্লাহ তাআলা যেন তাঁদের সবাইকে এই বিরাট শোক সওয়ার তাওফিক দান করেন, সেই দোয়া করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির মৃত্যুতে জাপার আনিসুল ও রুহুল আমিনের গভীর শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৪৪
চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম ও মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার। ছবি: সংগৃহীত
চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম ও মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র, ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও প্রতিবাদী যুবক ওসমান হাদির মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।

আজ বৃহস্পতিবার রাতে এক শোকবার্তায় জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা বলেন, ওসমান হাদি ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক ও সাহসী যুবক। নিজ আদর্শে অবিচল থেকে তিনি আজীবন অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। সন্ত্রাসী হামলায় তাঁর এ নির্মম মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

শোকবার্তায় নেতারা আরও বলেন, যারা ওসমান হাদিকে হত্যা করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এ ছাড়া রাজধানীর বুকে প্রকাশ্য দিবালোকে ওসমান হাদির মতো একজন তরুণকে গুলি করে হত্যার পরও জড়িত সন্ত্রাসীদের এখনো গ্রেপ্তার করতে না পারায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির মৃত্যুতে এনসিপির শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ওসমান হাদির মৃত্যুতে এনসিপির শোক

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ বৃহস্পতিবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই শোক জানায় দলটি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটির অন্যতম সদস্য ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি আজ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

এতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের এই সহযোদ্ধার প্রয়াণে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা গভীরভাবে শোকাহত। আমরা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত