Ajker Patrika

কলাবাগানে গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার: এখনো মেলেনি পরিচয়, ময়নাতদন্ত সম্পন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২৩, ২১: ২৬
কলাবাগানে গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার: এখনো মেলেনি পরিচয়, ময়নাতদন্ত সম্পন্ন

রাজধানীর কলাবাগানের ভূতের গলি এলাকার একটি বাসা থেকে গতকাল শনিবার এক গৃহকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার ৩৫ ঘণ্টা পেরোলেও আজ রোববার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ওই গৃহকর্মীর নাম, বাবা-মায়ের নাম, ঠিকানা, পরিচয় নিশ্চিত হতে পারেনি কলাবাগান থানা-পুলিশ। ফলে এখনো এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। এমনকি ঘটনার পর থেকে লাপাত্তা গৃহকর্ত্রী সাথীরও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ‍ 

তবে আজ দুপুরে গৃহকর্মীর মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. তৌহিদা বেগম ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন। 

গতকাল ঘটনার পর সরেজমিন দেখা যায়, বেডরুমের খাটে আড়াআড়িভাবে চিত হয়ে পড়ে আছে আনুমানিক সাত-আট বছর বয়সী অজ্ঞাত গৃহকর্মীর মরদেহ। বাসার সবকিছু স্বাভাবিক। রান্না ঘরে পানিতে ভেজানো মাছ, পাত্রে ডিম, পাতিলে ভেজানো ছিল রান্নার চালও। কিন্তু কেউ নেই রান্না করার। বাসার গৃহকর্ত্রী সাথী আক্তার পারভীন নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও নিয়ে যাননি। শুধু নিজের তিন বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে বেরিয়ে যান। এরপর পাঁচ মিনিট পর ফিরে আসেন। তবে এরপর আবার তিনি বেরিয়ে যান।

পুলিশের ধারণা, কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডের ওই বাসায় প্রায়ই শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতন করা হতো। গত বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) সকালেও হয়তো ওই শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতন করা হয়েছিল। শিশুটি মারা যাওয়ার পর রান্নার সবকিছু আর মোবাইল ফোন ফেলে লাপাত্তা হয়ে যান গৃহকর্ত্রী সাথী। 

কলাবাগান থানা-পুলিশের দাবি, শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাতে অজ্ঞাত ফোনে গৃহকর্মী মৃত্যুর প্রাথমিক তথ্য পায় তারা। এরপর রাত দেড়টার দিকে কলাবাগান থানাধীন সেন্ট্রাল রোডের ৭৭ নম্বর ভবনে গিয়ে বেশ কটি বাসায় খোঁজও নেয়। ওই ভবনটিতে ৪৪টি ফ্ল্যাট। মধ্যরাতে সব ফ্ল্যাটে খোঁজ নেওয়া বেগতিক বুঝে ফিরে আসে পুলিশ। পরদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ি মালিক সমিতির লোকজন নিয়ে ভবনটির দ্বিতীয় তলা ই-১ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতর থেকে অজ্ঞাত গৃহকর্মী শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

মৃত্যুর আনুমানিক ৪৮ ঘণ্টা পর গতকাল (২৬ আগস্ট) সকালে মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহালে পুলিশ দেখতে পায়, শরীরে অনেক নতুন ও পুরোনো আঘাতের চিহ্ন। মুখে ফেনা, শরীর ফোলা। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

এর আগে ওই শিশু গৃহকর্মীর সুরতহাল রিপোর্ট করেন কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নার্গিস আক্তার। সুরতহাল রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেন, কপালে দাগ আছে, বাঁ ও ডান চোখে আঘাতের চিহ্ন, মুখমণ্ডল ফোলা, বুকে কয়েক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে। বাঁ হাতে দাগ আছে এবং ডান হাতের আঙুলে আঘাতের চিহ্ন আছে। বাঁ ও ডান পায়ে হাঁটুতে আঘাতের চিহ্ন আছে। 

পুলিশ বলছে, নিহতের পরিচয় শনাক্তে সব ধরনের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আজ দুপুরে কলাবাগান থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভবনের অন্য বাসিন্দাদের সঙ্গে বিশেষ যোগাযোগ ছিল না অভিযুক্ত নারীর। ওই বাসায় যে গৃহকর্মী আছে, তা অনেকে জানলেও দেখেছেন খুব কমই। গৃহকর্মীর মৃত্যুর পর ওই নারীও লাপাত্তা হয়ে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা সব ধরনের চেষ্টা করছি। ওই নারীর গ্রামের বাড়ি পাবনা সদরে। আমরা সেখানকার লোকাল থানাতেও নিহতের সুরতহালকালীন তোলা ছবি পাঠিয়েছি। এখনো পরিচয় শনাক্ত হয়নি।’ 

কলাবাগান থানার ওসি (তদন্ত) আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবির বলেন, ‘নানাভাবেই পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে; কিন্তু পাইনি। অভিযুক্ত নারীর নিকটাত্মীয় ও পরিচিতদের মাধ্যমে শুনেছি নিহত গৃহকর্মী এতিম। তবে সেটিও নিশ্চিত নয়। পরিচয় না মিললে আজই পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’ 

কলাবাগান থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সেন্ট্রাল রোডের ৭৭ নম্বর ভবনের দ্বিতীয় তলায় ফ্ল্যাট ই-১-এর বাসিন্দা সাথী আক্তার পারভীন তাঁর শিশুসন্তান আর ওই গৃহকর্মী নিয়ে বসবাস করতেন। সাথী ২০১৬ সালে এই বাসায় ওঠেন। স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যাওয়ায় একাই থাকতেন। তিন বছর ধরে নিহত গৃহকর্মী ওই বাসায় কাজ করছিল। 

দুই বছর ধরে ভবনটির কেয়ারটেকারের দায়িত্ব পালন করছেন মফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে সাথী ও তাঁর স্বামী ডাক্তার শহীদুল হক রাহাত এখানে বসবাস করতেন। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব হওয়ায় তাঁকে ডিভোর্স দিয়ে দেন। নিজেকে এলজিইডির ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচয় দিলেও আদতে তিনি কী করেন, কেউ জানি না। সাথী আক্তার প্রভাব খাটিয়ে ফ্ল্যাটটিতে থাকতেন। আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন। এমনকি মারধরও করেছেন। স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্সের পর থেকে (২০২০ সাল থেকে) তিনি বাসার কোনো সার্ভিস চার্জও পরিশোধ করেননি। এই ভবনের দায়িত্বে আসার আমার দুই বছর হলো। কিন্তু দূরত্ব বজায় রাখতেন। কারও সঙ্গে মিশতেন না। সার্ভিস চার্জ ১ লাখ ৭৪ হাজার টাকা বকেয়া পড়েছে। চাইতে গেলে তিনি খারাপ আচরণ করেন। বলেন যা দেওয়ার স্বামী দেবে। ডিভোর্স সংক্রান্ত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মামলাও চলছে বলে শুনেছি।’ 

ওসি সাইফুল বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, অভিযুক্ত সাথী আক্তার পারভীনের দুই স্বামী। প্রথম স্বামীর নাম মামুন। তিনি পেশায় গাড়িচালক। তাঁর ঘরে কন্যাসন্তানও রয়েছে। তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর একজন চিকিৎসকের সঙ্গে বিবাহ হয়। তাঁর সঙ্গে ডিভোর্স হয় ২০২০ সালে। ওই স্বামীর পরিচয়েই তিনি ফ্ল্যাটটিতে ২০১৬ সাল থেকে থাকেন। ডিভোর্সের পর সাথীর স্বামী ঢাকা থেকে চলে যান এবং তিনি এখন যশোরে থাকেন। সাথীর চিকিৎসক স্বামীর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করে জানতে পারি, ডিভোর্স হওয়ার পর থেকে তিনি আর এ বাসায় আসেন না। তাঁর সঙ্গে ডিভোর্স হওয়ার পর ওই গৃহকর্মীকে বাসায় এনেছিলেন সাথী। এমনকি স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হওয়ায় এই ফ্ল্যাটও বিক্রি করে দেন।’ 

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গত বৃহস্পতিবারের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ৯টা ৪ মিনিটে নিজের শিশুসন্তানকে নিয়ে বেরিয়ে যান সাথী আক্তার। এর ৫ মিনিট পর ৯টা ৯ মিনিটে আবারও ফিরে আসেন। পরবর্তীকালে ৮ মিনিট পরে আবার বেরিয়ে যান। পরে তিনি আর ফেরেননি। ওই গৃহকর্মীকে নির্যাতন করে হত্যার পর সেদিন ওই সময়ই তিনি বাসা থেকে লাপাত্তা হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যমুনার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে আব্দুল রাজ্জাক দম্পতি

আব্দুল্লাহ আল মারুফ, সিরাজগঞ্জ
যমুনার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে অন্যের দেওয়া এই ডেরাঘরে আশ্রয় নিয়েছেন আব্দুল রাজ্জাক দম্পতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
যমুনার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে অন্যের দেওয়া এই ডেরাঘরে আশ্রয় নিয়েছেন আব্দুল রাজ্জাক দম্পতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাদা দাড়িতে অর্ধেক মেহেদি, কপালে গভীর চিন্তার ভাঁজ। ডান পায়ে ফোঁড়ার// কারণে বাঁধা ব্যান্ডেজ। কাঠের টুলে বসে থাকা মানুষটির দিকে তাকালে বোঝার উপায় নেই—মাত্র এক বছর আগেও তিনি ছিলেন সাড়ে চার বিঘা আবাদি জমির মালিক।

৬৬ বছর বয়সী এই বৃদ্ধের নাম আব্দুল রাজ্জাক। স্ত্রী মর্জিনা বেগমের বয়স ৫৫। চার ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে একসময় ভালোই চলছিল তাঁদের সংসার। জমিতে বছরে বিভিন্ন সময়ে গম, ভুট্টা, খেসারি, কালাই ও বাদামের চাষ হতো। পরিশ্রম করেই চলত জীবন। তবে হঠাৎ করেই সবকিছু বদলে দেয় যমুনা নদীর ভাঙন।

ভিটেবাড়ি ও ফসলি জমি একে একে নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় এখন আব্দুল রাজ্জাক দম্পতি কার্যত আশ্রয়হীন। একসময় যাঁর নিজের জমি ছিল, আজ তিনি অন্যের দেওয়া সামান্য জমিতে মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজছেন। বন, বস্তার চাটাই আর পলিথিনে মোড়ানো ছোট একটি ঘরই তাঁদের বর্তমান ঠিকানা। আব্দুল রাজ্জাক সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াখোলা ইউনিয়নের দোরতা এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওই এলাকার মৃত রহিজ তালুকদারের ছেলে।

শনিবার দুপুর গড়িয়ে বিকেলে সিরাজগঞ্জ ক্রসবার এলাকায় প্লাস্টিকের টুলে বসে কথা বলছিলেন আব্দুল রাজ্জাক। তিনি জানান, তাঁর দাদার প্রায় ২৪ বিঘা জমি ছিল। উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি পান সাড়ে চার বিঘা। গত বছরেও সেই জমিতে গম, ভুট্টা, কালাইসহ নানা ফসল আবাদ করেছিলেন। ‘বুড়া-বুড়ির ভালোই চলছিল,’ বলেন তিনি।

সন্তানদের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কিছুক্ষণ নীরব থাকেন আব্দুল রাজ্জাক। এরপর ধীর কণ্ঠে বলেন, ‘ওদের নিজেদেরই খুব কষ্ট। আমাদের দেখবে কীভাবে?’

বর্তমানে ফুফাতো ভাইয়ের জমির ওপর কোনোমতে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। শীত এলে দুর্ভোগ আরও বাড়ে। আয়ের একমাত্র সম্বল পাঁচটি গরু। তবে বয়স ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে এখন বাইরে গিয়ে কাজ করতে পারেন না তিনি।

আব্দুল রাজ্জাক বলেন, ‘তোমার চাচি যমুনার চরে গিয়ে গরুর জন্য ঘাস কেটে আনে। আর অন্যদের সামান্য সহযোগিতা আর মেয়েরা মাঝে মাঝে যা দেয়, তা দিয়েই কোনোমতে সংসার চলে।’

কথার একপর্যায়ে তাঁর কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে। শেষবারের মতো বলেন, ‘আমাকে যদি কেউ একটা ঘর আর মাসে মাসে একটু খাবার বা কিছু টাকার ব্যবস্থা করে দিত, তাহলে সারা জীবন দোয়া করতাম।’

যমুনার ভাঙনে হারিয়ে যাওয়া অসংখ্য জীবনের ভিড়ে আব্দুল রাজ্জাক ও মর্জিনা বেগমের গল্পটি শুধু একটি উদাহরণ—নদীভাঙনে সর্বস্ব হারানো মানুষের নীরব দীর্ঘশ্বাসের গল্প।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুলনার পূর্ব রূপসায় যুবককে গুলি করে হত্যা

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনার পূর্ব রূপসায় দুর্বৃত্তের গুলিতে সাগর শেখ (৩৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাত ১১টার দিকে রূপসা সেতুর পূর্বপাশে জাপুসা চৌরাস্তা সিএনজি স্টেশনের পাশে এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক গ্রিন বাংলা আবাসিকের পেছনের বাসিন্দা ফয়েক শেখের ছেলে। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপসা থানার এসআই সৌরভ দাশ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সাগর বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে রাত ১১টায় কয়েকজন যুবক তার গতি রোধ করে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। একটি গুলি তার মাথায় এবং অপরটি তার হাঁটুতে লাগে। গুলির শব্দে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তী সময়ে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রূপসা থানার এএসআই গৌতম বলেন, গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়ে ওই এলাকার বাসিন্দা আ. রহমান রাতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানায়। পরে ৯৯৯ থেকে আমাদের ফোন দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়।

রূপসা থানার এসআই সৌরভ দাশ বলেন, ‘রাতে জাপুসা এলাকায় ডিউটি করছিলাম। থানা থেকে ফোন আসলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিষয়টি জানার চেষ্টা করি। পরে জানতে পারলাম তারা এখানে জায়গা কিনে নতুন বাড়ি করেছে।’ তবে কারা এবং কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তার প্রকৃত কারণ তিনি বলতে পারেনি।

রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ. রাজ্জাক মীর বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। খুনিদের গ্রেপ্তারে আশপাশের এলাকায় অভিযান শুরু হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

১৫ দিনেও পরিচয় মেলেনি সীতাকুণ্ডে উদ্ধার হওয়া পোড়া নারীর মরদেহের

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মহাসড়কের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া এক নারীর পোড়া মরদেহের পরিচয় ১৫ দিনেও শনাক্ত করা যায়নি। আঙুল আগুনে পুড়ে যাওয়ায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ সম্ভব না হওয়ায় পরিচয় শনাক্তে জটিলতা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে মরদেহটি আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাদের তত্ত্বাবধানে অজ্ঞাত ওই নারীর দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, গত ২৯ নভেম্বর গভীর রাতে সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের আব্দুল্লাহ ঘাটা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসংলগ্ন একটি ডিপোর সামনে থেকে আনুমানিক ৪৫ বছর বয়সী এক নারীর আগুনে পোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, আগুনে পুড়ে নারীর মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যজনক। তাঁদের ভাষ্য, ওই নারী কীভাবে ঘটনাস্থলে এলেন এবং কেন নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরালেন—তা বোধগম্য নয়। তাঁদের ধারণা, পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে মরদেহে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হতে পারে।

স্থানীয়রা আরও জানান, প্রযুক্তির আধুনিকতার এই সময়ে ১৫ দিনেও পরিচয় শনাক্ত না হওয়া কিংবা মৃত্যুর কারণ উদ্‌ঘাটন না হওয়ায় তাঁরা উদ্বিগ্ন। প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে নারীর পরিচয় ও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করার দাবি জানান তাঁরা।

ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. সোহেল রানা বলেন, আগুনে পুড়ে আঙুল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে মরদেহটি আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলমগীর জানান, মরদেহের পরিচয় ও মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে। কোনো স্বজন সামনে এলে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা হবে। এরপর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় পল্টন থানায় মামলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল সোয়া ৭টায় আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পল্টন থানার ডিউটি অফিসার উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) রকিবুল হাসান।

তিনি জানান, ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় তার এক আত্মীয় বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলা করেছেন। মামলাটি তদন্ত করছেন পল্টন থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইয়াসিন মিয়া।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর সন্ধ্যার দিকে হাদিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।

হামলার এ ঘটনার পর থেকে র‍্যাব ও ঢাকা মহানগর পুলিশ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করলেও তাঁরা কেউ সরাসরি হামলাকারী নন।

গতকাল রোববার রাত পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক, মানব পাচারে জড়িত চক্রের দুই সহযোগী, সন্দেহভাজন শুটার ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবী। তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে।

হাদির হত্যাচেষ্টাকে কেন্দ্র করে অভিযানে সর্বশেষ গতকাল রাতে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সামিয়া, শ্যালক শিপু ও বান্ধবী মারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক বার্তায় জানিয়েছে র‍্যাব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত