Ajker Patrika

বিদ্যুতের লাইন গেছে ৫ বছর আগে, ‘ঘুষ না দেওয়ায়’ সংযোগ পাননি ১৫০ গ্রাহক

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ মে ২০২৩, ২১: ৫৮
বিদ্যুতের লাইন গেছে ৫ বছর আগে, ‘ঘুষ না দেওয়ায়’ সংযোগ পাননি ১৫০ গ্রাহক

কুড়িগ্রামের চিলমারী চরাঞ্চলে ‘ঘুষ না দেওয়ায়’ দেড় শতাধিক গ্রাহককে পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অথচ ২০১৮ সালে ওই এলাকা শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেওয়া হয়। গ্রাহকদের অভিযোগ–উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নে ৩৯ কিলোমিটার এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের লাইন নির্মাণ করা হয়। পরে ২৭ কিলোমিটার সংযোগ দেওয়া হলেও পরিদর্শককে টাকা না দেওয়ায় বাকি এলাকায় সংযোগ না দিয়ে চলে যান। 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পল্লী বিদ্যুতের (ওয়ারিং) পরিদর্শক মো. লুৎফর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি কারও কাছে টাকা-পয়সা চাননি। ওই এলাকায় বাড়ি ওয়ারিংয়ের কথা তাঁর জানা নেই বলে জানান তিনি। 

একই কথা জানান তৎকালীন সহকারী জুনিয়র প্রকৌশলী মোক্তারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমি কোনো টাকা নিইনি। আমি ওই এলাকার গ্রাহকের বিদ্যুৎ প্রদানের জন্য সহযোগিতা করেছি মাত্র।’ 

জানা গেছে, ২০১৮ সালের জুন মাসে চিলমারীকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন উপজেলা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। পরে উপজেলার চরাঞ্চল চিলমারী ইউনিয়নকে বিদ্যুতের আওতায় আনার জন্য ব্রহ্মপুত্র নদের নিচ দিয়ে পাঁচ কিলোমিটার সাবমেরিন কেব্‌ল স্থাপন করা হয়। 

কেব্‌ল স্থাপনের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন দুর্গম চরাঞ্চল চিলমারী ইউনিয়নের শাখাহাতী, বৈলমন্দিয়ার খাতা, কড়াই বরিশাল, ঢুষমারা, গাজীরপাড়া, বিশার পাড়া, আমতলা, ছালিপাড়া, যুগ্নিদহ, মানুষমারা ও আঠারো পাখি গ্রামের ৩৯ কিলোমিটার এলাকায় লাইন নির্মাণ করে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। পরে পল্লী বিদ্যুতের চিলমারী জোনাল অফিসের তৎকালীন ডিজিএমের সময়ে ২৭ কিলোমিটার এলাকায় ২ হাজার ২০০ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। 

এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আমতলা এলাকায় ২২টি বাড়ি, মানুষমারারচর এলাকায় ৩৮টি বাড়ি, আঠারো পাখি এলাকায় ৩৫টি বাড়ি ও যুগ্নিদহ এলাকায় ৪৫টি বাড়ি মিলে মোট ১৪০টি বাড়িতে বিদ্যুতের ওয়ারিং করা হয়েছে, কিন্তু মিটারে সংযোগ দেওয়া হয়নি। ওইসব বাড়িতে এক বছর আগে এসটি তার ও সার্ভিস তার প্রদান করা হয়েছে এবং বাড়িগুলো ওয়ারিং করে তাদের জন্য ছয়টি ট্রান্সফরমার বরাদ্দ করা হয়। টাকা-পয়সা খরচ করে এতসব কাজ করেও অজানা কারণে তাদের মিটারে সংযোগ দেওয়া হয়নি। 

মানুষমারারচর এলাকায় এহসানুল হক ও মোন্নাফ আলী ব্যাপারী নিজেদের নামে দুটি সেচের লাইসেন্স নিয়েছেন, কিন্তু বিদ্যুতের সংযোগ না পাওয়ায় তাঁরা কৃষি জমিতে চাষাবাদ করতে পারছেন না। 

বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় অতিরিক্ত গরমে গরু অসুস্থ হওয়া এবং চুরি-ডাকাতির ভয়ে কম দামে দুটি গরু বিক্রি করেছেন বলেন জানান নওশাদ আলী নামের এক খামারি। 

মানুষমারারচর এলাকার কামরুজ্জামান, আব্দুল্লাহ, হাফিজুর রহমান, আবু সায়েদসহ কয়েকজন জানান, ‘বিদ্যুতের লাইন নির্মাণ হওয়ায় আমরা গরু মোটা-তাজাকরণের প্রকল্প হাতে নিয়েছিলাম। সে মোতাবেক আমরা গরুও কিনেছি। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় আমরা গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছি।’ 

 একই এলাকার মো. এহসানুল হক, মমিনুল ইসলাম জানান, বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য তাঁরা কয়েক দফায় বর্তমান ডিজিএমের কাছে গেলে তিনি পরিদর্শক লুৎফর রহমানকে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে বলেন। 

পরে ওয়ারিং পরিদর্শক লুৎফর রহমান পরিদর্শনে এসে বিভিন্ন ত্রুটি বের করেন এবং তার সহযোগী সাহেব আলীর মাধ্যমে মিটারপ্রতি এক হাজার টাকা উৎকোচের দাবি করেন। টাকা দিলে দুই দিনেই মিটার সংযোগ দেওয়ার কথা বলেন তাঁরা। 

আমতলা এলাকার জাহাঙ্গীর আলম, সোহরাব আলী, মহেলা বেগম ও রোকেয়া খাতুন জানান, তাঁদের বাড়ি ওয়ারিংসহ মিটার নেওয়ার জন্য স্থানীয় তাজুল ইসলাম ও হাসানকে তাঁরা এক থেকে দেড় হাজার টাকা দিয়েছেন ছয় মাস আগে। অদ্যাবধি তাঁরা সংযোগ কিংবা টাকা কোনোটিই পাচ্ছেন না। 

একই এলাকার তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সহজে বিদ্যুতের সংযোগ পেতে টাকা উত্তোলন করে তৎকালীন সহকারী জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মোক্তারুলকে ১৬ হাজার টাকা দিয়েছি। তিনি বদলি হয়ে যাওয়ায় কাজ ও টাকা কোনোটিই পাচ্ছি না।’ 

কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চিলমারী জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী মো. মোস্তফা কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই এলাকায় ওয়ারিং সম্পন্ন না হওয়ায় সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার ঘরে আগুন: মামলা হয়নি, নাশকতার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ প্রমাণ মেলেনি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আগুনে জ্বলছে ঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুনে জ্বলছে ঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নে বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের ঘরে আগুন লাগার ঘটনায় নাশকতার কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পায়নি পুলিশ। আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলাও হয়নি।

আগুনে পুড়ে সাত বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু এবং পরিবারের তিন সদস্য দগ্ধ হলেও ঘটনাটি নাশকতা কিনা সে ব্যাপারে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি।

গতকাল শনিবার রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মিডিয়ায় দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ঘর পোড়ার যে তথ্য ছড়িয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে তার কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কোনো ‘মব’ বা সংগঠিত দুর্বৃত্তের সংযোগের আলামতও পুলিশ পায়নি।

লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রণজিৎ কুমার দাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল থেকে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছি। তবে বাইরে থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার কোনো আলামত আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল হোসেন দাবি করেছেন, ‘ঘরের দুই দরজাই বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ছিল। আগুনের তীব্রতায় আমি টিনের বেড়া ফাঁকা করে স্ত্রী ও বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বের হতে পারলেও ছোট মেয়ে আয়েশাকে বাঁচাতে পারিনি। ধোঁয়ায় কিছুই দেখা যাচ্ছিল না।’

গত শুক্রবার গভীর রাতে চরমনসা গ্রামের সূতারগোপ্তা এলাকায় এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে সাত বছরের আয়েশা আক্তার পুড়ে মারা যায়। দগ্ধ বেলাল হোসেন সদর হাসপাতালে এবং তাঁর দুই মেয়ে বীথি আক্তার (১৭) ও স্মৃতি আক্তার (১৪) জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদ পারভেজ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। বাইরে থেকে দরজায় তালা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের কাছে কোনো তথ্য বা প্রমাণ থাকলে তা সরবরাহের অনুরোধ জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অনুপ্রবেশের অভিযোগে বিএসএফ সদস্যকে আটক করল বিজিবি

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) এক সদস্যকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। রোববার (২১ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে সীমানা বেড়ার ১০০ গজ বাংলাদেশের ভেতর থেকে তাঁকে আটক করা হয়। পরে ওই বিএসএফ সদস্যকে দহগ্রাম আঙ্গোরপোতা বিজিবি ক্যাম্পে হেফাজতে রাখা হয়। এ ঘটনায় বিজিবি পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফকে আহ্বান জানিয়েছে।

বিজিবি ও স্থানীয়রা জানান, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ডিএএমপি প্রধান পিলার ১ নম্বরের উপপিলার ৭ নম্বর-সংলগ্ন দহগ্রাম ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকা। অপর পাশে রয়েছে ভারতের কোচবিহার রাজ্যের কচুলিবাড়ী থানার কারেঙ্গাতলি এলাকা। রোববার ভোরে ভারতের ১৭৪ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অর্জুন ক্যাম্পের টহল দলের সদস্য বেদ প্রকাশ ভারতীয় শূন্যরেখা অতিক্রম করে বাংলাদেশের প্রায় ১০০ গজ ভেতরে ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় প্রবেশ করেন। এ সময় ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের দহগ্রাম আঙ্গোরপোতা ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাঁকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যান। এ সময় বিএসএফ সদস্যের ব্যবহৃত একটি অস্ত্র (শটগান), দুটি গুলি, একটি ওয়্যারলেস সেট ও একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

আঙ্গোরপোতা বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েব সুবেদার রফিকুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এ ব্যাপারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রংপুর ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সেলিম আল দীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে বিএসএফ সদস্য কনস্টেবল বেদ প্রকাশ বলেছে কুয়াশায় গরু পাচারকারীদের পিছু ধাওয়া করতে গিয়ে ভুল করে বাংলাদেশে ঢুকেছে। আটককৃত বিএসএফ সদস্যের অস্ত্র-গোলাবারুদ ও অন্য সরঞ্জামাদিসহ আঙ্গোরপোতা ক্যাম্পে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করার কথা রয়েছে। বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করে ওই বিএসএফ সদস্যের পরিচয় নিশ্চিত করেছে এবং তাঁকে ফেরতের অনুরোধ করেছে। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ সীমান্ত চুক্তি ১৯৭৫ এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ওই বিএসএফ সদস্যের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কর্ণফুলীতে ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলা, আটক ১০

কর্ণফুলী(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার কর্ণফুলীতে ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ১০ জন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালককে আটক করেছে পুলিশ।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার মইজ্জ্যেরটেক এলাকায় সড়কে ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশ অভিযানে গেলে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন কর্ণফুলী ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ (টিআই) আবু সাঈদ বাকার।

আবু সাঈদ জানান, রোববার সকাল থেকে সড়কে ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় কাগজপত্র না থাকায় কয়েকটি অটোরিকশা জব্দ করে ট্রাফিক পুলিশ। এই ঘটনার জের ধরে অটোরিকশাচালকেরা ট্রাফিক পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। চালকদের এলোপাতাড়ি মারধরে ট্রাফিক পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. ইমতিয়াজসহ দায়িত্বে থাকা কনস্টেবলরা আহত হন। পরে থানা-পুলিশের সহায়তায় তাঁদের উদ্ধার করা হয় এবং ১০ হামলাকারীকে আটক করে পুলিশ। এই ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সরকারি সহায়তা নয়, গণচাঁদাতেই কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংস্কার করবে উদীচী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৪
রাজধানীর তোপখানায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর তোপখানায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

দুর্বৃত্তদের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কেন্দ্রীয় কার্যালয় নিজস্ব উদ্যোগে এবং গণচাঁদা সংগ্রহ করে সংস্কার করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। সংগঠনটি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, কার্যালয় সংস্কারের জন্য তারা সরকার বা কোনো করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোনো আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করবে না।

উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে এক যৌথ বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন, ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে উদীচী কখনোই সরকারি অনুদানের ওপর নির্ভরশীল ছিল না। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করা গণচাঁদাই সংগঠনের মূল চালিকাশক্তি। এবারও ক্ষতিগ্রস্ত কার্যালয়টিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে উদীচীর দেশ-বিদেশের হাজারো শিল্পী ও কর্মী তাদের পরিশ্রমের উপার্জনের টাকা দিয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন।

বিবৃতিতে আরও সতর্ক করে বলা হয়, উদীচীর নাম করে অন্য কেউ যদি আর্থিক সহায়তা চায় এবং এর ফলে কেউ প্রতারিত হন, তবে তার দায়ভার কেন্দ্রীয় সংসদ নেবে না।

উদীচী নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার এবং ছায়ানট ভবনে হামলার পর থেকেই উদীচীর ওপর হামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উসকানি দেওয়া হলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা প্রশাসন নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

ফলে গত ১৯ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যায় মৌলবাদী অপশক্তি বিনা বাধায় উদীচী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করে। এতে সংগঠনের ৫৭ বছরের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, দুষ্প্রাপ্য বাদ্যযন্ত্র ও আসবাবপত্র ভস্মীভূত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

হামলা ঠেকাতে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়, উদীচীর এখন একটাই প্রত্যাশা—এই ন্যক্কারজনক হামলার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। বিচারের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, যারা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানাতে চায় এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তির হস্তক্ষেপ চায়, এ দেশের মানুষ তাদের ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে জুলাই অভ্যুত্থান পর্যন্ত সাধারণ মানুষের যে ত্যাগের ইতিহাস, তা কোনো ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হতে দেওয়া হবে না বলেও তারা অঙ্গীকার করেন। একই সঙ্গে দেশের সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে এই অন্ধকারের অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানায় উদীচী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত