নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এক গৃহবধূকে হত্যার সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ। সেই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত গাড়িটি উদ্ধারের পর জব্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে ডিবি পুলিশ জানিয়েছে স্বামীর পরিকল্পনায় ওই গৃহবধূকে হত্যা করা হয় এবং পরে ডাকাতির নাটক সাজানো হয়।
আজ মঙ্গলবার এসব তথ্য জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল। গতকাল সোমবার রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে নিহত গৃহবধূর স্বামী শরিফুল ইসলাম রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি গোলাকান্দাইল এলাকার নেওয়াজ আহমেদের ছেলে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—গোলাকান্দাইল এলাকার মৃত সামসুল ইসলামের ছেলে আরজু মিয়া (৩৫) ও একই এলাকার মৃত নায়েব আলীর ছেলে গাড়িচালক রাকিব হোসেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, ১০ বছর আগে নিহত গৃহবধূ মৌসুমীর সঙ্গে রাসেলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁদের পরিবারে একটি ছেলে সন্তানে জন্ম হয়। দাম্পত্য জীবনেও রাসেলের বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক হয়। এর প্রতিবাদ করায় রাসেল তাঁর স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে গত ১৯ এপ্রিল রাতে রূপগঞ্জের গাউছিয়া মার্কেটে কেনাকাটা শেষে তাঁর বন্ধু গাড়িচালক মো. রাজিব হোসেন ও আরজুর সহযোগিতায় হায়েস গাড়িতে তুলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় মৌসুমীকে। পরে সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের সিংলাবো এলাকায় লাশ ফেলে রাখেন তাঁরা।
এসপি আরও জানান, পরবর্তীতে ঘটনাটিকে ডাকাতির নাটক সাজানোর জন্য রাসেল ও তাঁর সহযোগী আরজুকে দিয়ে রাসেল তাঁর পিঠে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করিয়ে গুরুতর জখম করান এবং ডাকাতির নাটক সাজান। জখম হওয়ার পর তিনি ভূলতা এলাকায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তিও হন।
এদিকে ঘটনাকে ‘ডাকাতি’ উল্লেখ করে নিহত মৌসুমীর ভাই মো. শাহ জালাল বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানার মামলা দায়ের করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পলাশ কান্তি দে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মৌসুমী আক্তার হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদ্ঘাটন করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর গত সোমবার রাতে গোলাকান্দাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে