রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে গেলেই চোখে পড়বে নারী-পুরুষসহ তরুণ-তরুণীরা পাহাড়ি আনারসের পসরা সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রির জন্য। পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত পর্যটন কেন্দ্রে পড়ে যায় আনারস বিক্রির ধুম। একদিকে আনারস বিক্রি করে সচ্ছলতা এসেছে এই এলাকার অনেকেই। অন্য দিকে সুস্বাদু আনারসের প্রতি তীব্র আগ্রহ দেখা গেছে পর্যটকদের মধ্যে।
কাপ্তাইয়ে লেক প্যারাডাইস পর্যটনকেন্দ্রের সামনে সরেজমিনে দেখা যায়, বিক্রেতারা সারি সারি আনারস বিক্রির জন্য সাজিয়ে রেখেছেন। যেখানে পর্যটকেরা আনারস কিনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সেখানে আজকের পত্রিকার কথা হয় দীর্ঘ বছর ধরে কাপ্তাইয়ে বিভিন্ন মৌসুমি ফল বিক্রেতা শান্তি চাকমার সঙ্গে। তিনি জানান, মৌসুমি ফল বিক্রি করেই সংসার চলে তাঁর। তবে আনারসের প্রতি পর্যটকদের আগ্রহের জায়গা টা বেশি।
শান্তি চাকমা আরও জানান, প্রতিবছরই পাহাড়ে প্রচুর পরিমাণ আনারস উৎপন্ন হয়ে থাকে। কিন্তু পাহাড়ের বসবাসকারীরা এসব আনারস খুব বেশি খায় না। তবে পর্যটকদের এই আনারস এর প্রতি অনেক আগ্রহ রয়েছে। যার ফলে প্রতি সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিক্রির জন্য আনারসসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল পর্যটন কেন্দ্রে নিয়ে আসেন তিনি। অন্য ফলের তুলনায় আনারসে ভালো আয় হয়।
পাশেই মো. রহিম মিয়া নামে একজন আনারস বিক্রেতার সঙ্গে আজকের পত্রিকার কথা হলে তিনি বলেন, ‘আনারস বিক্রি করে দৈনিক প্রায় ৫০০ টাকা আয় হয়। এই টাকায় সংসার এবং ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালাই।’
এ ছাড়া রাণী তনচংগা, দীপন চাকমাসহ বেশ কয়েকজন আনারস ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে অন্যান্য কাজ করে সংসার চালাতে তাদের খুব কষ্ট হতো। বর্তমানে সব কাজ বাদ দিয়ে এখন প্রতিনিয়ত আনারসসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল বিক্রি করেন তারা। এতে তাদের অনেক ভালো আয় হয়। বিশেষ করে ছুটির দিনে পর্যটকদের ভিড় হওয়ায় বিক্রি ও আয় বেশি হয়।
চট্টগ্রাম থেকে কাপ্তাইয়ে ভ্রমণে এসেছেন জেরিন, সুমিসহ বেশ কয়েকজন পর্যটক। তাদের বেশ কয়েক জোড়া আনারস কিনতে দেখা যায়। তাদের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার। তাঁরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় থাকেন তারা। ঢাকায় সচরাচর এ রকম আনারস পাওয়া যায় না। এই আনারসগুলো দেখতে বেশ তরতাজা। খেতেও যথেষ্ট স্বাদ রয়েছে। আর দামও খুব বেশি নয়। তাই কাপ্তাই থেকে এসব আনারস কিনে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে ৪ নম্বর কাপ্তাই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাহাড়ে আনারসের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ আম, জাম, কলা, কাঁঠাল, জাম্বুরা, পেঁপে, পেয়ারা, বরইসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল ভালো উৎপন্ন হয়ে থাকে। দুর্গম পাহাড়ের উৎপাদিত অনেক ফল কাপ্তাই হ্রদ দিয়ে বাজারে নিয়ে আসা হয়। আর এসব ফলের বেশির ভাগ ক্রেতা থাকেন পর্যটকেরা। তবে অনেক ব্যবসায়ী ট্রাক ভর্তি করে এসব মৌসুমি ফল কিনে শহরে নিয়ে যান। এতে এখানকার ফল চাষি এবং ব্যবসায়ীরা ভালো আয় রোজগার করতে পারেন।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে