কুড়িগ্রাম সদরের হলোখানা ইউনিয়নে জমির মালিকানা নিয়ে সংঘর্ষে খাতেম আলী (৭৫) নামে এক বৃদ্ধ মৃত্যু হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সেই সঙ্গে এ ঘটনায় নারী-পুরুষসহ ১২ জন আহত হয়েছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
আজ সোমবার সকালে ইউনিয়নের খামার হলোখানা গ্রামে খাতেম আলী ও নুরনবী গংয়ের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার।
নিহত খাতেম আলী খামার হলোখানা গ্রামের মৃত খরু মামুদের ছেলে। তাঁর পক্ষের আহতেরা হলেন—খাতেম আলীর ছেলে মেহের আলী, ইয়াকুব এরশাদ এবং ভাই হোসেন।
অপরপক্ষের আহতেরা হলেন—নুরনবী (৭০), তার দুই স্ত্রী শাহিদা (৫০) ও খতেজা (৬০), ছেলে সফিকুল ও আবু সুফিয়ান, ভাতিজা জলিল, খলিল মিয়া, জসিম উদ্দিন। এদের মধ্যে খাতেম আলীর ছেলে মেহের আলী এবং নুরনবীর ছেলে আবু সুফিয়ানকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খাতেম আলীর ছেলে এরশাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সোমবার সকালে আমার বাবা ও ভাইসহ সাত-আটজন নিজেদের জমিতে ধান লাগাতে যাই। ওই সময় নুরনবী আর তাঁর ছেলেরাসহ অন্তত ১৮-২০ জন আমাদের ওপর দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। সে সময় দুই পক্ষের কয়েকজন আহত হয়। পরে আমার বাবা খাতেম আলী ও ভাই মেহের আলীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে আমার বাবা মারা যান।’
এরশাদ আরও বলেন, ‘নুরনবী আমাদের জমিকে নিজেদের দাবি করে আসছিল। এ নিয়ে আদালতে মামলাও চলছিল। মামলার রায়ে জমির মালিকানা আমার বাবার (খাতেম আলী) পক্ষে যায়। কিন্তু নুরনবী তা না মেনে ওই জমির মালিকানা দাবি করে। আজ (সোমবার) আমরা ওই জমিতে ধান লাগাতে গেলে তাঁরা আমাদের ওপর হামলা করে।’
এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুরনবী ওই বিরোধপূর্ণ জমিটি নিজের বলে দাবি করেছেন। আহত নুরনবী বলেন, ‘রেকর্ড মূলে জমিটি আমার। বিগত সময় আমি জমিটা আবাদ করেছি। এখন তারা জমিটা নিজেদের দাবি করে মামলা করেছে। আজ ওই জমিতে ধান লাগাইতে গেলে আমরা বাধা দিছি।’
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুরনবী ও তাঁর ভাতিজা জলিল জানান, গত মৌসুমেও তাঁরা ওই জমিতে ধান লাগিয়েছিলেন। কিন্তু খাতেম আলী ও তাঁর ছেলেরা সে ধান কেটে নেন। আজ খাতেম আলী জমিতে ধান লাগাতে যান। এ সময় তাদের বাধা দিতে গেলে উভয় পক্ষের সংঘর্ষ হয়।
এ ঘটনায় হলোখানা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জমিটি নিয়ে মামলা চলছিল বলে জানি। আজ ওই জমি নিয়ে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। আহতেরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’
সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন খাতেম আলীর ছেলে ইয়াকুব। এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। যেসব আসামি চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তাঁদের পুলিশি নজরদারিতে রাখা হয়েছে।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে