আনিকা জীনাত, ঢাকা

করোনা মহামারির প্রভাবে বদলে গেছে প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন। ২০২০ সালে অনলাইনে কেনাকাটার হার বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স, অনলাইন কোর্স, ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ জুমের দাপট দেখেছে বিশ্ব। ২০২১ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। নতুন বছরে পা ফেলার আগে চলতি বছর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া কিছু প্রযুক্তিপণ্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
জুম
আমেরিকান ভিডিও কমিউনিকেশন কোম্পানি জুম যত দ্রুত উত্থান দেখেছে, তার তুলনা হয়তো চলে শুধু রকেটের সঙ্গেই! ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত জুম (অ্যাপটি চালু হয় ২০১৩ সালে) ছিল অচেনা এক সফটওয়্যার কোম্পানি। করোনা মহামারিতে আচমকা সব অফিস-আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জুমের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে অস্বাভাবিক গতিতে। সহজ ইউজার ইন্টারফেসই ছিল এর মূল কারণ। গত বছরের এপ্রিলে জুম জানায়, প্রতিদিন গড়ে ৩০ কোটি মানুষ তাদের সফটওয়্যার ব্যবহার করে সভা করেছে।
২০২০ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে জুমের আয় ছিল ৭০ কোটি ডলার। এ বছর একই প্রান্তিকে তাদের আয় ৮২ কোটি ডলার। তবে আয় বাড়লেও কমেছে শেয়ারের মূল্য। গত বছর নভেম্বরে প্রতিটি শেয়ারের মূল্য ছিল ৫০০ ডলার। কমতে কমতে তা এখন দাঁড়িয়েছে ১৮২ ডলারে। তবু জুমের বার্ষিক মিটিং মিনিট দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়নে। শেয়ারবাজারের কল্যাণে কোম্পানিটির মূলধন এখন ৭৫ বিলিয়ন ডলার। আগামী বছর অনেক প্রতিষ্ঠানই হয়তো হোম অফিসের বদলে কর্মীদের অফিসে এনে ফেলবে। তখন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ও শেয়ারমূল্য দুটোই আরও কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অনলাইনে ব্যবসা
দিন দিন অনলাইনে আমাদের সময় দেওয়ার মাত্রা বেড়েই চলছে। এই পরিবর্তনের ভালো-খারাপ সব দিকই আছে। অনলাইনে সময় কাটানোর প্রবণতাকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই নতুন আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন। অনলাইন থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং ট্রেইনারদের আয়ও বেড়েছে। দক্ষ ট্রেইনাররা তাদের কোর্সে বিদেশি শিক্ষার্থীও পাচ্ছেন। টেকেবল, ইউডেমি, স্কিলশেয়ার ও কোর্সেরার ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠছে। টেকেবল থেকে ৪০ হাজার ট্রেইনার আয় করেছেন ১ বিলিয়ন ডলার। কোর্সেরার মূলধন এখন ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। প্ল্যাটফর্মটিতে ৩ হাজারের বেশি কোর্স আছে। শেয়ার মার্কেটের কল্যাণে ইউডেমির মূলধন এখন সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার।
এ ছাড়া সামনের দিনে ই-কমার্স ব্যবসার বাজারও আরও ফুলে-ফেঁপে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২২ সালে ই-কমার্স ব্যবসা থেকে আয় হবে ৫ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ব্যবসা বাড়ানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা সক্রিয় থাকবেন, তাঁদের বিক্রি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ৩২ শতাংশ বেশি।
প্রযুক্তিবিদদের অনুমান, ক্রেতাদের আচরণ ও কেনাকাটার তথ্য বিশ্লেষণে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বাড়বে আগামী দিনে। দাম ঠিক করা ও পণ্য দেখানোর ক্ষেত্রে বিক্রেতারা এআইয়ের সহায়তা পাবে। অন্যদিকে ক্রেতারা নিজস্ব চাহিদা আরও সহজে বোঝাতে পারবেন বিক্রেতাদের। পূর্বাভাস আছে, ২০২২ সালে মোবাইলের মাধ্যমে ৫০ শতাংশের বেশি অনলাইন কেনাকাটা হবে। ভিআর ও এআর প্রযুক্তির সাহায্যে যেকোনো পণ্য ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল থেকে দেখা যাবে। ফলে পণ্যটি কাজে লাগবে কি না, তা সহজেই বোঝা যাবে। আর ২০২৫ সাল নাগাদ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির হার্ডওয়্যারের বাজার হবে ১০৫ বিলিয়ন ডলারের।
নেটফ্লিক্স
২৪ বছর আগে যাত্রা শুরু করেছিল নেটফ্লিক্স। প্রথম দিকে তারা ডিভিডি ভাড়া দিত। ২০১৩ সালে নেটফ্লিক্স কনটেন্ট বানানোর ব্যবসায় নামে। তাদের প্রথম অরিজিনাল সিরিজ হলো আমেরিকান পলিটিক্যাল ড্রামা ‘হাউস অব কার্ডস’।
আমেরিকান এই সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিসটি বর্তমানে ১৯০টি দেশে দেখা যায়। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত নেটফ্লিক্সের গ্রাহকসংখ্যা ছিল ২১ কোটি ৪০ লাখ।
মহামারিকালীন লকডাউনের প্রভাবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ কোটি ৪০ লাখ নতুন গ্রাহক জুটেছিল নেটফ্লিক্সের। গ্রাহক বাড়ার এই হার কমার আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে নতুন সাবস্ক্রাইবার যুক্ত হয় আরও ৪৪ লাখ।
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স স্মার্টফোনের জন্য গেমস নিয়ে আসে এ বছরের নভেম্বরে। ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস: ১৯৮৪ ’, ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস ৩: দ্য গেম’, কার্ড ব্লাস্ট, টিটার আপ, শুটিং হোপসসহ ৫টি গেম এনেছে তারা। নেটফ্লিক্স গ্রাহকেরা বিজ্ঞাপন ছাড়াই গেমগুলো খেলতে পারবে।
ডলারের বিপরীতে অনেক দেশের মুদ্রার মান কম হওয়ায় মার্কিনরাই এখন পর্যন্ত নেটফ্লিক্সের সবচেয়ে বিশ্বস্ত গ্রাহক। নেটফ্লিক্সে মার্কিন গ্রাহকের সংখ্যা বর্তমানে ৭ কোটি ৪০ লাখ। সে তুলনায় ভারতীয় গ্রাহকের সংখ্যা ৪৪ লাখ। অবশ্য এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রাহক ধরতে নিত্যনতুন বাণিজ্যিক কৌশল নিচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মটি। ভারতের বাজার দখলে নিতে সাবস্ক্রিপশন ফি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে নেটফ্লিক্স।
এ বছর নেটফ্লিক্সের অরিজিনাল কনটেন্টের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার সিরিজ ‘স্কুইড গেম’। প্রথম ৪ সপ্তাহে সিরিজটি দেখেন ১৪ কোটি ২০ লাখ গ্রাহক। সিরিজটি বানাতে খরচ হয় ১৬৮ কোটি টাকা। আর মুনাফা হয় ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
মেটাভার্স
মার্কিন সায়েন্সফিকশন লেখক নিল স্টিফেনসনের একটি উপন্যাসে প্রথমবার মেটাভার্সের কথা লেখা হয়েছিল। ১৯৯২ সালে কল্পিত সেই জগতের দরজা খুলেছিল ‘স্নো ক্র্যাশ’ নামের বইয়ের মাধ্যমে। ৩০ বছর পর এসে মানুষের থ্রিডি অবতারের ধারণা বাস্তব রূপ লাভ করছে। আর সেই সুযোগ আনার ঘোষণা দিয়ে এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় তুলেছেন মার্ক জাকারবার্গ।
বলা হচ্ছে, মেটাভার্সে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটি ও ভিডিওর মাধ্যমে ডিজিটাল জীবনযাপন করা যাবে। কেনাকাটা, অফিসের কাজ, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ও খেলাধুলা করা যাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। বিশ্বের অপর প্রান্তে চলতে থাকা যেকোনো সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দেওয়া যাবে। অর্থাৎ সশরীরে উপস্থিত থাকার প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে।
মেটাভার্স প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রধান শর্ত হলো দ্রুতগতির ইন্টারনেট। মেটার (ফেসবুক) সব ব্যবহারকারীর হাতে দ্রুত গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট পৌঁছালে এই প্রযুক্তির পূর্ণাঙ্গ রূপ সম্পর্কে ধারণা মিলবে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা। মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছেন, সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য মেটাভার্সের মূল বিষয়গুলোর উন্নয়ন ঘটাতে আরও ৫ থেকে ১০ বছর সময় লাগবে।
মেটাভার্স প্রযুক্তি নিয়ে শুধু ফেসবুক নয়, সফটওয়্যার নির্মাতা কোম্পানি মাইক্রোসফট, ভিডিও গেম নির্মাতা কোম্পানি এপিক গেমস ও অনলাইন গেইম প্ল্যাটফর্ম রোবোলক্স’ও কাজ করছে।
মাইক্রোসফটের প্রযুক্তির নাম হবে ম্যাশ। তাদের নিজস্ব হলোলেন্স (মিক্সড রিয়েলিটি স্মার্টগ্লাস) ব্যবহারকারীকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও অগমেন্টেড রিয়েলিটিতে নিয়ে যাবে। হেডসেট ছাড়াও সাধারণ টু-ডি মনিটর দিয়ে ভার্চুয়াল কর্মক্ষেত্রে সভা করা যাবে। ক্লাউডভিত্তিক ডাইনামিক ৩৬৫ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ড বিভাগ ও মহাকাশে থাকা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনেও ভার্চুয়ালি যাওয়া যাবে।
মাইক্রোসফট জানিয়েছে, তাদের অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে করপোরেট অফিসের কর্মীরা নিজেদের ডিজিটাল অবতার তৈরি করতে পারবেন। অফিসের জন্য তৈরি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল যেমন স্প্রেডশিট আদান-প্রদান করা যাবে। এই প্রযুক্তির প্রাথমিক রূপ কেমন হবে, তা আগামী বছরের শেষ ভাগে জানা যাবে।
এদিকে ফোর্টনাইট গেম নির্মাতা কোম্পানি এপিক গেমস ইনকরপোরেশনও মেটাভার্স প্রযুক্তির দখল নিতে মরিয়া। কোম্পানিটির সিইও টিম সুইনি জানিয়েছেন, আগামী দশকে মেটাভার্স প্রযুক্তির বাজারমূল্য হবে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে শক্ত অবস্থান তৈরিতে এপিক, রোবোলক্স, মাইক্রোসফট ও ফেসবুকের জন্য আগামী তিন বছর খুব গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক শ কোটি ব্যবহারকারীকে সবাই নিজেদের ছাতার তলে আনতে চাইবে। প্রথম যারা কাজটি করতে পারবে তাদের হাতেই মান নির্ধারণের ভার চলে যাবে। পরিসংখ্যানগত পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে ৫০ কোটি ভিআর সেট বিক্রি হতে পারে।
মেসেজিং অ্যাপের বাজার
এককালে মেসেজিং অ্যাপে শুধু টেক্সট পাঠানো যেত। এখন ভয়েস মেসেজ পাঠানো যায়, চলে ভিডিও চ্যাট। এ ছাড়া গ্রুপ চ্যাটের সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। সারা বিশ্বে ২৭৭ কোটি মানুষ বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করছেন। আর ২০২২ সালে এসব অ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৩০০ কোটিতে।
মেসেজিং অ্যাপ ওয়াটসঅ্যাপের ব্যবহারকারী সংখ্যা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। তাদের অ্যাপ ব্যবহার করেন বিশ্বের ২০০ কোটি মানুষ। এর মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যা ৩৯ কোটি। ২০০৯ সালে চালু হওয়া অ্যাপটি এখন পর্যন্ত ৫০০ কোটি বার ডাউনলোড হয়েছে। বিশ্বের ১০০টি দেশে হোয়াটসঅ্যাপ সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপ। হোয়াটসঅ্যাপ কোনো বিজ্ঞাপন দেখায় না। তাদের মূল আয়ের উৎস হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস, বিভিন্ন কোম্পানিগুলো এর মূল গ্রাহক। বহুল ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ এনক্রিপ্টেড থাকে। ফলে নিরাপদ থাকতে হোয়াটসঅ্যাপে ভরসা রাখেন অনেকে।
ফেসবুক মেসেঞ্জারের ব্যবহারকারী সংখ্যা এখন প্রায় ১৩০ কোটি। তবে ফেসবুক মেসেঞ্জার বা ইনস্টাগ্রামের ডাইরেক্ট মেসেজে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন সুবিধা নেই। ২০২২ সালে এই সুবিধা যুক্ত করার কথা দিয়েছিল ফেসবুক। কিন্তু তারা জানিয়েছে, ২০২৩ সালের আগে এই সুবিধা পাওয়া যাবে না অ্যাপ দুটিতে।
ব্যবহারকারীর সংখ্যার দিক দিয়ে চীনের মেসেজিং অ্যাপ উইচ্যাট আছে তৃতীয় অবস্থানে। তাদের ব্যবহারকারী সংখ্যা ১২৫ কোটি।
পরিশেষে
প্রযুক্তি বিশ্ব খুব দ্রুত বদলায়। কোনো কিছুই দীর্ঘদিন টেকে না। গুটিকয়েক প্রযুক্তি কোম্পানি বাজার নিয়ন্ত্রণ করলেও প্রতিনিয়ত পণ্য ও সেবায় তারা নতুনত্ব এনে চলেছে। আগামী বছরেও নতুন অনেক পণ্য দেখা যাবে। সেবায়ও আসবে পরিবর্তন। বিশ্লেষকদের মতে, মানুষ কী ভাবছে তা নির্ভুলভাবে অনুমান করতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির দাপট বাড়বে সামনের দিনগুলোতে। হয়তো এই পথ ধরেই প্রযুক্তি দুনিয়ায় আসবে নয়া বিপ্লব!
তথ্যসূত্র: ব্যাকলিংকো ডটকম, রয়টার্স, আইজিএন ডটকম, বিজনেস অব অ্যাপস, স্ট্যাটিস্টা ডটকম ও উইডেভস ডটকম
সালতামামির অন্যান্য আয়োজন:

করোনা মহামারির প্রভাবে বদলে গেছে প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন। ২০২০ সালে অনলাইনে কেনাকাটার হার বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স, অনলাইন কোর্স, ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ জুমের দাপট দেখেছে বিশ্ব। ২০২১ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। নতুন বছরে পা ফেলার আগে চলতি বছর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া কিছু প্রযুক্তিপণ্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
জুম
আমেরিকান ভিডিও কমিউনিকেশন কোম্পানি জুম যত দ্রুত উত্থান দেখেছে, তার তুলনা হয়তো চলে শুধু রকেটের সঙ্গেই! ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত জুম (অ্যাপটি চালু হয় ২০১৩ সালে) ছিল অচেনা এক সফটওয়্যার কোম্পানি। করোনা মহামারিতে আচমকা সব অফিস-আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জুমের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে অস্বাভাবিক গতিতে। সহজ ইউজার ইন্টারফেসই ছিল এর মূল কারণ। গত বছরের এপ্রিলে জুম জানায়, প্রতিদিন গড়ে ৩০ কোটি মানুষ তাদের সফটওয়্যার ব্যবহার করে সভা করেছে।
২০২০ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে জুমের আয় ছিল ৭০ কোটি ডলার। এ বছর একই প্রান্তিকে তাদের আয় ৮২ কোটি ডলার। তবে আয় বাড়লেও কমেছে শেয়ারের মূল্য। গত বছর নভেম্বরে প্রতিটি শেয়ারের মূল্য ছিল ৫০০ ডলার। কমতে কমতে তা এখন দাঁড়িয়েছে ১৮২ ডলারে। তবু জুমের বার্ষিক মিটিং মিনিট দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়নে। শেয়ারবাজারের কল্যাণে কোম্পানিটির মূলধন এখন ৭৫ বিলিয়ন ডলার। আগামী বছর অনেক প্রতিষ্ঠানই হয়তো হোম অফিসের বদলে কর্মীদের অফিসে এনে ফেলবে। তখন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ও শেয়ারমূল্য দুটোই আরও কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অনলাইনে ব্যবসা
দিন দিন অনলাইনে আমাদের সময় দেওয়ার মাত্রা বেড়েই চলছে। এই পরিবর্তনের ভালো-খারাপ সব দিকই আছে। অনলাইনে সময় কাটানোর প্রবণতাকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই নতুন আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন। অনলাইন থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং ট্রেইনারদের আয়ও বেড়েছে। দক্ষ ট্রেইনাররা তাদের কোর্সে বিদেশি শিক্ষার্থীও পাচ্ছেন। টেকেবল, ইউডেমি, স্কিলশেয়ার ও কোর্সেরার ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠছে। টেকেবল থেকে ৪০ হাজার ট্রেইনার আয় করেছেন ১ বিলিয়ন ডলার। কোর্সেরার মূলধন এখন ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। প্ল্যাটফর্মটিতে ৩ হাজারের বেশি কোর্স আছে। শেয়ার মার্কেটের কল্যাণে ইউডেমির মূলধন এখন সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার।
এ ছাড়া সামনের দিনে ই-কমার্স ব্যবসার বাজারও আরও ফুলে-ফেঁপে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২২ সালে ই-কমার্স ব্যবসা থেকে আয় হবে ৫ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ব্যবসা বাড়ানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা সক্রিয় থাকবেন, তাঁদের বিক্রি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ৩২ শতাংশ বেশি।
প্রযুক্তিবিদদের অনুমান, ক্রেতাদের আচরণ ও কেনাকাটার তথ্য বিশ্লেষণে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বাড়বে আগামী দিনে। দাম ঠিক করা ও পণ্য দেখানোর ক্ষেত্রে বিক্রেতারা এআইয়ের সহায়তা পাবে। অন্যদিকে ক্রেতারা নিজস্ব চাহিদা আরও সহজে বোঝাতে পারবেন বিক্রেতাদের। পূর্বাভাস আছে, ২০২২ সালে মোবাইলের মাধ্যমে ৫০ শতাংশের বেশি অনলাইন কেনাকাটা হবে। ভিআর ও এআর প্রযুক্তির সাহায্যে যেকোনো পণ্য ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল থেকে দেখা যাবে। ফলে পণ্যটি কাজে লাগবে কি না, তা সহজেই বোঝা যাবে। আর ২০২৫ সাল নাগাদ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির হার্ডওয়্যারের বাজার হবে ১০৫ বিলিয়ন ডলারের।
নেটফ্লিক্স
২৪ বছর আগে যাত্রা শুরু করেছিল নেটফ্লিক্স। প্রথম দিকে তারা ডিভিডি ভাড়া দিত। ২০১৩ সালে নেটফ্লিক্স কনটেন্ট বানানোর ব্যবসায় নামে। তাদের প্রথম অরিজিনাল সিরিজ হলো আমেরিকান পলিটিক্যাল ড্রামা ‘হাউস অব কার্ডস’।
আমেরিকান এই সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিসটি বর্তমানে ১৯০টি দেশে দেখা যায়। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত নেটফ্লিক্সের গ্রাহকসংখ্যা ছিল ২১ কোটি ৪০ লাখ।
মহামারিকালীন লকডাউনের প্রভাবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ কোটি ৪০ লাখ নতুন গ্রাহক জুটেছিল নেটফ্লিক্সের। গ্রাহক বাড়ার এই হার কমার আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে নতুন সাবস্ক্রাইবার যুক্ত হয় আরও ৪৪ লাখ।
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স স্মার্টফোনের জন্য গেমস নিয়ে আসে এ বছরের নভেম্বরে। ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস: ১৯৮৪ ’, ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস ৩: দ্য গেম’, কার্ড ব্লাস্ট, টিটার আপ, শুটিং হোপসসহ ৫টি গেম এনেছে তারা। নেটফ্লিক্স গ্রাহকেরা বিজ্ঞাপন ছাড়াই গেমগুলো খেলতে পারবে।
ডলারের বিপরীতে অনেক দেশের মুদ্রার মান কম হওয়ায় মার্কিনরাই এখন পর্যন্ত নেটফ্লিক্সের সবচেয়ে বিশ্বস্ত গ্রাহক। নেটফ্লিক্সে মার্কিন গ্রাহকের সংখ্যা বর্তমানে ৭ কোটি ৪০ লাখ। সে তুলনায় ভারতীয় গ্রাহকের সংখ্যা ৪৪ লাখ। অবশ্য এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রাহক ধরতে নিত্যনতুন বাণিজ্যিক কৌশল নিচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মটি। ভারতের বাজার দখলে নিতে সাবস্ক্রিপশন ফি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে নেটফ্লিক্স।
এ বছর নেটফ্লিক্সের অরিজিনাল কনটেন্টের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার সিরিজ ‘স্কুইড গেম’। প্রথম ৪ সপ্তাহে সিরিজটি দেখেন ১৪ কোটি ২০ লাখ গ্রাহক। সিরিজটি বানাতে খরচ হয় ১৬৮ কোটি টাকা। আর মুনাফা হয় ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
মেটাভার্স
মার্কিন সায়েন্সফিকশন লেখক নিল স্টিফেনসনের একটি উপন্যাসে প্রথমবার মেটাভার্সের কথা লেখা হয়েছিল। ১৯৯২ সালে কল্পিত সেই জগতের দরজা খুলেছিল ‘স্নো ক্র্যাশ’ নামের বইয়ের মাধ্যমে। ৩০ বছর পর এসে মানুষের থ্রিডি অবতারের ধারণা বাস্তব রূপ লাভ করছে। আর সেই সুযোগ আনার ঘোষণা দিয়ে এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় তুলেছেন মার্ক জাকারবার্গ।
বলা হচ্ছে, মেটাভার্সে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটি ও ভিডিওর মাধ্যমে ডিজিটাল জীবনযাপন করা যাবে। কেনাকাটা, অফিসের কাজ, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ও খেলাধুলা করা যাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। বিশ্বের অপর প্রান্তে চলতে থাকা যেকোনো সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দেওয়া যাবে। অর্থাৎ সশরীরে উপস্থিত থাকার প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে।
মেটাভার্স প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রধান শর্ত হলো দ্রুতগতির ইন্টারনেট। মেটার (ফেসবুক) সব ব্যবহারকারীর হাতে দ্রুত গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট পৌঁছালে এই প্রযুক্তির পূর্ণাঙ্গ রূপ সম্পর্কে ধারণা মিলবে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা। মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছেন, সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য মেটাভার্সের মূল বিষয়গুলোর উন্নয়ন ঘটাতে আরও ৫ থেকে ১০ বছর সময় লাগবে।
মেটাভার্স প্রযুক্তি নিয়ে শুধু ফেসবুক নয়, সফটওয়্যার নির্মাতা কোম্পানি মাইক্রোসফট, ভিডিও গেম নির্মাতা কোম্পানি এপিক গেমস ও অনলাইন গেইম প্ল্যাটফর্ম রোবোলক্স’ও কাজ করছে।
মাইক্রোসফটের প্রযুক্তির নাম হবে ম্যাশ। তাদের নিজস্ব হলোলেন্স (মিক্সড রিয়েলিটি স্মার্টগ্লাস) ব্যবহারকারীকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও অগমেন্টেড রিয়েলিটিতে নিয়ে যাবে। হেডসেট ছাড়াও সাধারণ টু-ডি মনিটর দিয়ে ভার্চুয়াল কর্মক্ষেত্রে সভা করা যাবে। ক্লাউডভিত্তিক ডাইনামিক ৩৬৫ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ড বিভাগ ও মহাকাশে থাকা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনেও ভার্চুয়ালি যাওয়া যাবে।
মাইক্রোসফট জানিয়েছে, তাদের অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে করপোরেট অফিসের কর্মীরা নিজেদের ডিজিটাল অবতার তৈরি করতে পারবেন। অফিসের জন্য তৈরি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল যেমন স্প্রেডশিট আদান-প্রদান করা যাবে। এই প্রযুক্তির প্রাথমিক রূপ কেমন হবে, তা আগামী বছরের শেষ ভাগে জানা যাবে।
এদিকে ফোর্টনাইট গেম নির্মাতা কোম্পানি এপিক গেমস ইনকরপোরেশনও মেটাভার্স প্রযুক্তির দখল নিতে মরিয়া। কোম্পানিটির সিইও টিম সুইনি জানিয়েছেন, আগামী দশকে মেটাভার্স প্রযুক্তির বাজারমূল্য হবে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে শক্ত অবস্থান তৈরিতে এপিক, রোবোলক্স, মাইক্রোসফট ও ফেসবুকের জন্য আগামী তিন বছর খুব গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক শ কোটি ব্যবহারকারীকে সবাই নিজেদের ছাতার তলে আনতে চাইবে। প্রথম যারা কাজটি করতে পারবে তাদের হাতেই মান নির্ধারণের ভার চলে যাবে। পরিসংখ্যানগত পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে ৫০ কোটি ভিআর সেট বিক্রি হতে পারে।
মেসেজিং অ্যাপের বাজার
এককালে মেসেজিং অ্যাপে শুধু টেক্সট পাঠানো যেত। এখন ভয়েস মেসেজ পাঠানো যায়, চলে ভিডিও চ্যাট। এ ছাড়া গ্রুপ চ্যাটের সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। সারা বিশ্বে ২৭৭ কোটি মানুষ বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করছেন। আর ২০২২ সালে এসব অ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৩০০ কোটিতে।
মেসেজিং অ্যাপ ওয়াটসঅ্যাপের ব্যবহারকারী সংখ্যা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। তাদের অ্যাপ ব্যবহার করেন বিশ্বের ২০০ কোটি মানুষ। এর মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যা ৩৯ কোটি। ২০০৯ সালে চালু হওয়া অ্যাপটি এখন পর্যন্ত ৫০০ কোটি বার ডাউনলোড হয়েছে। বিশ্বের ১০০টি দেশে হোয়াটসঅ্যাপ সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপ। হোয়াটসঅ্যাপ কোনো বিজ্ঞাপন দেখায় না। তাদের মূল আয়ের উৎস হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস, বিভিন্ন কোম্পানিগুলো এর মূল গ্রাহক। বহুল ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ এনক্রিপ্টেড থাকে। ফলে নিরাপদ থাকতে হোয়াটসঅ্যাপে ভরসা রাখেন অনেকে।
ফেসবুক মেসেঞ্জারের ব্যবহারকারী সংখ্যা এখন প্রায় ১৩০ কোটি। তবে ফেসবুক মেসেঞ্জার বা ইনস্টাগ্রামের ডাইরেক্ট মেসেজে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন সুবিধা নেই। ২০২২ সালে এই সুবিধা যুক্ত করার কথা দিয়েছিল ফেসবুক। কিন্তু তারা জানিয়েছে, ২০২৩ সালের আগে এই সুবিধা পাওয়া যাবে না অ্যাপ দুটিতে।
ব্যবহারকারীর সংখ্যার দিক দিয়ে চীনের মেসেজিং অ্যাপ উইচ্যাট আছে তৃতীয় অবস্থানে। তাদের ব্যবহারকারী সংখ্যা ১২৫ কোটি।
পরিশেষে
প্রযুক্তি বিশ্ব খুব দ্রুত বদলায়। কোনো কিছুই দীর্ঘদিন টেকে না। গুটিকয়েক প্রযুক্তি কোম্পানি বাজার নিয়ন্ত্রণ করলেও প্রতিনিয়ত পণ্য ও সেবায় তারা নতুনত্ব এনে চলেছে। আগামী বছরেও নতুন অনেক পণ্য দেখা যাবে। সেবায়ও আসবে পরিবর্তন। বিশ্লেষকদের মতে, মানুষ কী ভাবছে তা নির্ভুলভাবে অনুমান করতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির দাপট বাড়বে সামনের দিনগুলোতে। হয়তো এই পথ ধরেই প্রযুক্তি দুনিয়ায় আসবে নয়া বিপ্লব!
তথ্যসূত্র: ব্যাকলিংকো ডটকম, রয়টার্স, আইজিএন ডটকম, বিজনেস অব অ্যাপস, স্ট্যাটিস্টা ডটকম ও উইডেভস ডটকম
সালতামামির অন্যান্য আয়োজন:

একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ।
১০ ঘণ্টা আগে
গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা।
১১ ঘণ্টা আগে
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে।
১১ ঘণ্টা আগে
এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে।
১২ ঘণ্টা আগেপল্লব শাহরিয়ার

একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ। এই প্রযুক্তির ময়দানেই মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে দুই পরাশক্তি—যুক্তরাষ্ট্র ও চীন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের প্রতীক হয়ে উঠেছে বহু দশক ধরে। অন্যদিকে চীন দেখিয়ে দিয়েছে পরিকল্পনা আর গতির সমন্বয়ে কত দ্রুত প্রযুক্তিকে বাস্তব শক্তিতে রূপ দেওয়া যায়। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে এই দুই দেশের প্রযুক্তি ব্যবসা আর উদ্ভাবনের চিত্র দেখলে পরিষ্কার বোঝা যায়, এটা কোনো একতরফা লড়াই নয়। যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে মৌলিক গবেষণা, এআই সফটওয়্যার ও স্টার্টআপ সংস্কৃতিতে। আবার চীন এগিয়ে রয়েছে উৎপাদন, বাস্তব প্রয়োগ এবং প্রযুক্তিকে জাতীয় কৌশলের অংশ বানানোয়।
এআই প্রযুক্তিতে এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, পিছিয়ে থেকেও বিপজ্জনক চীন
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন প্রযুক্তির বড় যুদ্ধক্ষেত্র। কে আগে ভালো এআই বানাবে, সেটা এখন আর শুধু ব্যবসার প্রশ্ন নয়; এটা ক্ষমতা, নিরাপত্তা আর ভবিষ্যৎ প্রভাবেরও প্রশ্ন। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে যদি যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের দিকে তাকাই, তাহলে একটা অদ্ভুত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতা চোখে পড়ে। আর তা হলো, যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টভাবে এআই প্রযুক্তিতে এগিয়ে রয়েছে।
এ ছাড়া চীন পিছিয়েও ভীষণভাবে বিপজ্জনক!এআই উদ্ভাবনের মূল শিকড় এখনো মূলত যুক্তরাষ্ট্রে। বড় ভাষা মডেল, জেনারেটিভ এআই, মাল্টিমোডাল সিস্টেম—এই ধারণাগুলোর জন্ম, বিকাশ আর পরিপক্বতা বেশির ভাগই যুক্তরাষ্ট্রে হয়েছে। শুধু প্রযুক্তি নয়, এর পেছনে আরও আছে গবেষণা, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পের সংযোগ, ঝুঁকি নেওয়ার সাহস এবং বিশাল বিনিয়োগ। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে এআই দ্রুত গবেষণা থেকে পণ্যে রূপ নেয়। নতুন কোনো ধারণা জন্মানোর পর সেটাকে স্টার্টআপ, সফটওয়্যার বা প্ল্যাটফর্মে পরিণত করতে খুব বেশি সময় লাগে না।
এআই সফটওয়্যারগুলোর নিয়ন্ত্রণ, বিশ্বের প্রভাবশালী এআই প্ল্যাটফর্ম, ডেভেলপার টুলস আর ক্লাউড অবকাঠামোর বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। এর মানে শুধু ভালো এআই বানানো নয়, বরং বিশ্ব কীভাবে এআই ব্যবহার করবে, সেটার মানদণ্ডও তারা ঠিক করছে। কিন্তু চীনের এআই যাত্রা একেবারে ভিন্ন পথে। চীন হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের মতো সবচেয়ে উন্নত কিংবা সৃজনশীল এআই এখনো বানাতে পারেনি। কিন্তু তারা যেটা করেছে, সেটাই তাদের সবচেয়ে বিপজ্জনক করে তুলেছে। এআই প্রযুক্তিকে তারা দ্রুত, ব্যাপক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাস্তবে নামিয়েছে।
চীনে এআই কোনো পরীক্ষাগারের বিষয় নয়; এটা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থায়, কারখানায় উৎপাদনে, সরকারি প্রশাসনে, নজরদারি ব্যবস্থায় আর সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ঢুকে গেছে। বিশাল জনসংখ্যা আর ডেটার সুবিধা নিয়ে চীন এআই প্রশিক্ষণ ও প্রয়োগে এমন স্কেল তৈরি করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অনেক সময় সম্ভব হয় না।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, চীনে এআই প্রযুক্তির উন্নয়ন শুধু ব্যবসার হাতে নেই। রাষ্ট্র সরাসরি এই খেলায় আছে। এতে গতি বেড়েছে, সিদ্ধান্ত দ্রুত হয়েছে, আর প্রযুক্তি সরাসরি জাতীয় কৌশলের অংশ হয়ে উঠেছে। ঠিক এখানেই চীন পিছিয়ে থেকেও হয়ে গেছে বিপজ্জনক।
চিপ যুদ্ধ: এই লড়াই এআইয়ের ভবিষ্যৎ কেন ঠিক করবে
এআই নিয়ে সব কথা এসে ঠেকে যায় যে বিষয়ে, তার নাম চিপ। যত বুদ্ধিমান অ্যালগরিদমই বানানো হোক, শক্তিশালী চিপ ছাড়া এআই আসলে অচল। তাই যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল যুদ্ধটা হচ্ছে এই সেমিকন্ডাক্টর কিংবা চিপ নিয়ে।
এ মুহূর্তে বাস্তবতা হলো, চিপের দুনিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে আছে; বিশেষ করে এআইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর, ডিজাইন সফটওয়্যার আর আর্কিটেকচারের বড় অংশ এখনো আমেরিকান প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে। ফলে বিশ্বজুড়ে যত আধুনিক এআই তৈরি হচ্ছে, তার মস্তিষ্কের বড় অংশই কোনো না কোনোভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল।
এই এগিয়ে থাকার কারণ শুধু প্রযুক্তি নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ ইকোসিস্টেম। গবেষণা, ডিজাইন, সফটওয়্যার টুল, ক্লাউড অবকাঠামো—দেশটিতে সব একসঙ্গে কাজ করছে। ফলে নতুন এআই মডেল তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আছে দ্রুততা ও স্থায়িত্ব—দুটোই।
চীনের সমস্যা শুরু এখানেই, আর তাই এখান থেকে তাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। কারণ, চীন খুব ভালোভাবে বুঝে গেছে যে তারা যদি চিপের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকে, তাহলে এআইতে সত্যিকারের স্বাধীনতা কখনোই আসবে না। তাই ২০২৫ সালে চীন যা করছে, সেটা হলো সরাসরি প্রযুক্তিগত বাধা ভাঙার চেষ্টা না করে; বরং বিকল্প পথ তৈরি করা।
চীন এখন চিপের ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে স্বনির্ভর হওয়ার কৌশল নিয়েছে। উন্নত চিপে সীমাবদ্ধতা থাকলেও তারা মাঝারি ক্ষমতার চিপকে বড় পরিসরে ব্যবহার করে এআই চালানোর পদ্ধতি তৈরি করছে। এটা আপাতদৃষ্টে দুর্বলতা মনে হলেও আসলে এটা ভিন্নধর্মী শক্তি। এতে চীন এমন এআই সিস্টেম বানাতে শিখছে, যেগুলো কম খরচে, কম রিসোর্সে কাজ করতে পারে। ভবিষ্যতে এই দক্ষতাই বড় সুবিধা হয়ে উঠতে পারে; বিশেষ করে উন্নয়নশীল বাজারে।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ। চীনে চিপ উন্নয়ন শুধু বেসরকারি খাতের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। সরাসরি অর্থ, নীতি আর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছে রাষ্ট্র। এতে ফল আসতে সময় লাগলেও ধারাবাহিকতা নষ্ট হচ্ছে না। এই চিপ যুদ্ধের প্রভাব সরাসরি এআইয়ের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেবে। কারণ, যে দেশ বেশি শক্তিশালী ও সহজলভ্য চিপ বানাতে পারবে, সে দেশই বেশি এআই প্রশিক্ষণ চালাতে পারবে, দ্রুত নতুন মডেল আনতে পারবে এবং বিশ্ববাজারে নিজের মানদণ্ড চাপিয়ে দিতে পারবে।
ডিফেন্স টেক ও সাইবার নিরাপত্তা
প্রযুক্তির আরও একটি ক্ষেত্র আছে, যা সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক প্রভাবকে আঘাত বা শক্তি দিতে পারে। এটি হলো ডিফেন্স টেক ও সাইবার নিরাপত্তা। ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিযোগিতা এখানেও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি এখানে এসেছে দুটো দিক থেকে। প্রথমত, উচ্চমানের গবেষণা এবং উদ্ভাবনের ওপর ভিত্তি করে। এআই-চালিত ড্রোন, নজরদারি প্রযুক্তি, আধুনিক স্যাটেলাইট সিস্টেম এবং প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত সেন্সর—এসব ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিশ্বনেতা। দ্বিতীয়ত হলো, অভিজ্ঞতা। দীর্ঘমেয়াদি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ইতিহাস এবং বহুজাতিক সহযোগিতা যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে রেখেছে; বিশেষ করে জটিল সাইবার ডিফেন্স এবং মহাকাশভিত্তিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে।
অন্যদিকে চীনের কৌশল আলাদা। তারা এখানে দ্রুততা ও পরিসরকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে চীন দ্রুত নতুন প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তায় চীন এখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকর কার্যক্রম চালাচ্ছে। এটি শুধু আক্রমণাত্মক নয়, প্রতিরক্ষা ও নজরদারিতেও সমানভাবে শক্তিশালী।
ভবিষ্যতের প্রযুক্তি দৌড়ে কারা এগিয়ে
২০২৫ সালে প্রযুক্তি লড়াই শুধু উদ্ভাবনের নয়; এটি ক্ষমতা, বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং জাতীয় কৌশলের প্রতিফলন। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিযোগিতা অনেকটা দুই ভিন্ন পথের গল্প—একটি দেশ স্বাধীন উদ্ভাবন ও স্টার্টআপের ওপর নির্ভরশীল, অন্যটি রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ও দ্রুত বাস্তবায়নের কৌশলে এগিয়ে।
এই দ্বন্দ্ব একে অপরকে বাতিল করে না; বরং দুই দেশের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা আরও ধারালো ও বৈচিত্র্যপূর্ণ করে। ভবিষ্যতের প্রযুক্তিতে উদ্ভাবন + বাস্তবায়ন + নিরাপত্তা—এই তিনের সমন্বয় যে দেশ ভালো করতে পারবে, সেই দেশ আগামী দশকের প্রযুক্তিগত প্রভাব নির্ধারণ করবে। সংক্ষেপে, ২০২৫ সালের প্রযুক্তি মানচিত্র বলছে, উদ্ভাবনের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র, বাস্তব প্রয়োগের দিক থেকে চীন, আর বিশ্ব এই দুই শক্তির প্রতিযোগিতার মধ্যে টেকসই প্রযুক্তি ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে।

একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ। এই প্রযুক্তির ময়দানেই মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে দুই পরাশক্তি—যুক্তরাষ্ট্র ও চীন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের প্রতীক হয়ে উঠেছে বহু দশক ধরে। অন্যদিকে চীন দেখিয়ে দিয়েছে পরিকল্পনা আর গতির সমন্বয়ে কত দ্রুত প্রযুক্তিকে বাস্তব শক্তিতে রূপ দেওয়া যায়। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে এই দুই দেশের প্রযুক্তি ব্যবসা আর উদ্ভাবনের চিত্র দেখলে পরিষ্কার বোঝা যায়, এটা কোনো একতরফা লড়াই নয়। যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে মৌলিক গবেষণা, এআই সফটওয়্যার ও স্টার্টআপ সংস্কৃতিতে। আবার চীন এগিয়ে রয়েছে উৎপাদন, বাস্তব প্রয়োগ এবং প্রযুক্তিকে জাতীয় কৌশলের অংশ বানানোয়।
এআই প্রযুক্তিতে এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, পিছিয়ে থেকেও বিপজ্জনক চীন
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন প্রযুক্তির বড় যুদ্ধক্ষেত্র। কে আগে ভালো এআই বানাবে, সেটা এখন আর শুধু ব্যবসার প্রশ্ন নয়; এটা ক্ষমতা, নিরাপত্তা আর ভবিষ্যৎ প্রভাবেরও প্রশ্ন। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে যদি যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের দিকে তাকাই, তাহলে একটা অদ্ভুত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতা চোখে পড়ে। আর তা হলো, যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টভাবে এআই প্রযুক্তিতে এগিয়ে রয়েছে।
এ ছাড়া চীন পিছিয়েও ভীষণভাবে বিপজ্জনক!এআই উদ্ভাবনের মূল শিকড় এখনো মূলত যুক্তরাষ্ট্রে। বড় ভাষা মডেল, জেনারেটিভ এআই, মাল্টিমোডাল সিস্টেম—এই ধারণাগুলোর জন্ম, বিকাশ আর পরিপক্বতা বেশির ভাগই যুক্তরাষ্ট্রে হয়েছে। শুধু প্রযুক্তি নয়, এর পেছনে আরও আছে গবেষণা, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পের সংযোগ, ঝুঁকি নেওয়ার সাহস এবং বিশাল বিনিয়োগ। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে এআই দ্রুত গবেষণা থেকে পণ্যে রূপ নেয়। নতুন কোনো ধারণা জন্মানোর পর সেটাকে স্টার্টআপ, সফটওয়্যার বা প্ল্যাটফর্মে পরিণত করতে খুব বেশি সময় লাগে না।
এআই সফটওয়্যারগুলোর নিয়ন্ত্রণ, বিশ্বের প্রভাবশালী এআই প্ল্যাটফর্ম, ডেভেলপার টুলস আর ক্লাউড অবকাঠামোর বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। এর মানে শুধু ভালো এআই বানানো নয়, বরং বিশ্ব কীভাবে এআই ব্যবহার করবে, সেটার মানদণ্ডও তারা ঠিক করছে। কিন্তু চীনের এআই যাত্রা একেবারে ভিন্ন পথে। চীন হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের মতো সবচেয়ে উন্নত কিংবা সৃজনশীল এআই এখনো বানাতে পারেনি। কিন্তু তারা যেটা করেছে, সেটাই তাদের সবচেয়ে বিপজ্জনক করে তুলেছে। এআই প্রযুক্তিকে তারা দ্রুত, ব্যাপক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাস্তবে নামিয়েছে।
চীনে এআই কোনো পরীক্ষাগারের বিষয় নয়; এটা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থায়, কারখানায় উৎপাদনে, সরকারি প্রশাসনে, নজরদারি ব্যবস্থায় আর সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ঢুকে গেছে। বিশাল জনসংখ্যা আর ডেটার সুবিধা নিয়ে চীন এআই প্রশিক্ষণ ও প্রয়োগে এমন স্কেল তৈরি করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অনেক সময় সম্ভব হয় না।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, চীনে এআই প্রযুক্তির উন্নয়ন শুধু ব্যবসার হাতে নেই। রাষ্ট্র সরাসরি এই খেলায় আছে। এতে গতি বেড়েছে, সিদ্ধান্ত দ্রুত হয়েছে, আর প্রযুক্তি সরাসরি জাতীয় কৌশলের অংশ হয়ে উঠেছে। ঠিক এখানেই চীন পিছিয়ে থেকেও হয়ে গেছে বিপজ্জনক।
চিপ যুদ্ধ: এই লড়াই এআইয়ের ভবিষ্যৎ কেন ঠিক করবে
এআই নিয়ে সব কথা এসে ঠেকে যায় যে বিষয়ে, তার নাম চিপ। যত বুদ্ধিমান অ্যালগরিদমই বানানো হোক, শক্তিশালী চিপ ছাড়া এআই আসলে অচল। তাই যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল যুদ্ধটা হচ্ছে এই সেমিকন্ডাক্টর কিংবা চিপ নিয়ে।
এ মুহূর্তে বাস্তবতা হলো, চিপের দুনিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে আছে; বিশেষ করে এআইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর, ডিজাইন সফটওয়্যার আর আর্কিটেকচারের বড় অংশ এখনো আমেরিকান প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে। ফলে বিশ্বজুড়ে যত আধুনিক এআই তৈরি হচ্ছে, তার মস্তিষ্কের বড় অংশই কোনো না কোনোভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল।
এই এগিয়ে থাকার কারণ শুধু প্রযুক্তি নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ ইকোসিস্টেম। গবেষণা, ডিজাইন, সফটওয়্যার টুল, ক্লাউড অবকাঠামো—দেশটিতে সব একসঙ্গে কাজ করছে। ফলে নতুন এআই মডেল তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আছে দ্রুততা ও স্থায়িত্ব—দুটোই।
চীনের সমস্যা শুরু এখানেই, আর তাই এখান থেকে তাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। কারণ, চীন খুব ভালোভাবে বুঝে গেছে যে তারা যদি চিপের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকে, তাহলে এআইতে সত্যিকারের স্বাধীনতা কখনোই আসবে না। তাই ২০২৫ সালে চীন যা করছে, সেটা হলো সরাসরি প্রযুক্তিগত বাধা ভাঙার চেষ্টা না করে; বরং বিকল্প পথ তৈরি করা।
চীন এখন চিপের ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে স্বনির্ভর হওয়ার কৌশল নিয়েছে। উন্নত চিপে সীমাবদ্ধতা থাকলেও তারা মাঝারি ক্ষমতার চিপকে বড় পরিসরে ব্যবহার করে এআই চালানোর পদ্ধতি তৈরি করছে। এটা আপাতদৃষ্টে দুর্বলতা মনে হলেও আসলে এটা ভিন্নধর্মী শক্তি। এতে চীন এমন এআই সিস্টেম বানাতে শিখছে, যেগুলো কম খরচে, কম রিসোর্সে কাজ করতে পারে। ভবিষ্যতে এই দক্ষতাই বড় সুবিধা হয়ে উঠতে পারে; বিশেষ করে উন্নয়নশীল বাজারে।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ। চীনে চিপ উন্নয়ন শুধু বেসরকারি খাতের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। সরাসরি অর্থ, নীতি আর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছে রাষ্ট্র। এতে ফল আসতে সময় লাগলেও ধারাবাহিকতা নষ্ট হচ্ছে না। এই চিপ যুদ্ধের প্রভাব সরাসরি এআইয়ের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেবে। কারণ, যে দেশ বেশি শক্তিশালী ও সহজলভ্য চিপ বানাতে পারবে, সে দেশই বেশি এআই প্রশিক্ষণ চালাতে পারবে, দ্রুত নতুন মডেল আনতে পারবে এবং বিশ্ববাজারে নিজের মানদণ্ড চাপিয়ে দিতে পারবে।
ডিফেন্স টেক ও সাইবার নিরাপত্তা
প্রযুক্তির আরও একটি ক্ষেত্র আছে, যা সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক প্রভাবকে আঘাত বা শক্তি দিতে পারে। এটি হলো ডিফেন্স টেক ও সাইবার নিরাপত্তা। ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিযোগিতা এখানেও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি এখানে এসেছে দুটো দিক থেকে। প্রথমত, উচ্চমানের গবেষণা এবং উদ্ভাবনের ওপর ভিত্তি করে। এআই-চালিত ড্রোন, নজরদারি প্রযুক্তি, আধুনিক স্যাটেলাইট সিস্টেম এবং প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত সেন্সর—এসব ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিশ্বনেতা। দ্বিতীয়ত হলো, অভিজ্ঞতা। দীর্ঘমেয়াদি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ইতিহাস এবং বহুজাতিক সহযোগিতা যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে রেখেছে; বিশেষ করে জটিল সাইবার ডিফেন্স এবং মহাকাশভিত্তিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে।
অন্যদিকে চীনের কৌশল আলাদা। তারা এখানে দ্রুততা ও পরিসরকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে চীন দ্রুত নতুন প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তায় চীন এখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকর কার্যক্রম চালাচ্ছে। এটি শুধু আক্রমণাত্মক নয়, প্রতিরক্ষা ও নজরদারিতেও সমানভাবে শক্তিশালী।
ভবিষ্যতের প্রযুক্তি দৌড়ে কারা এগিয়ে
২০২৫ সালে প্রযুক্তি লড়াই শুধু উদ্ভাবনের নয়; এটি ক্ষমতা, বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং জাতীয় কৌশলের প্রতিফলন। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিযোগিতা অনেকটা দুই ভিন্ন পথের গল্প—একটি দেশ স্বাধীন উদ্ভাবন ও স্টার্টআপের ওপর নির্ভরশীল, অন্যটি রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ও দ্রুত বাস্তবায়নের কৌশলে এগিয়ে।
এই দ্বন্দ্ব একে অপরকে বাতিল করে না; বরং দুই দেশের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা আরও ধারালো ও বৈচিত্র্যপূর্ণ করে। ভবিষ্যতের প্রযুক্তিতে উদ্ভাবন + বাস্তবায়ন + নিরাপত্তা—এই তিনের সমন্বয় যে দেশ ভালো করতে পারবে, সেই দেশ আগামী দশকের প্রযুক্তিগত প্রভাব নির্ধারণ করবে। সংক্ষেপে, ২০২৫ সালের প্রযুক্তি মানচিত্র বলছে, উদ্ভাবনের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র, বাস্তব প্রয়োগের দিক থেকে চীন, আর বিশ্ব এই দুই শক্তির প্রতিযোগিতার মধ্যে টেকসই প্রযুক্তি ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে।

করোনা মহামারির প্রভাবে বদলে গেছে প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন। ২০২০ সালে অনলাইনে কেনাকাটার হার বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স, অনলাইন কোর্স, ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ জুমের দাপট দেখেছে বিশ্ব। ২০২১ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। নতুন বছরে পা ফেলার আগে চলতি বছর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া কিছু
২৭ ডিসেম্বর ২০২১
গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা।
১১ ঘণ্টা আগে
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে।
১১ ঘণ্টা আগে
এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে।
১২ ঘণ্টা আগেটি এইচ মাহির

গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা। সম্প্রতি গুগল পরীক্ষামূলকভাবে কিছু নতুন এআই টুল চালু করেছে, যেগুলো এখনো সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত করা হয়নি।

ডিসকো
ওয়েব ব্রাউজারের জন্য গুগল সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে নতুন এআই টুল ডিসকো। এই টুল মূলত ইন্টারনেট ব্রাউজিং সহজ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। সাধারণত ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় একসঙ্গে অনেক ট্যাব খুলতে হয়। এতে কাজ এলোমেলো হয়ে যায়। ডিসকো এই সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে। এটি একাধিক খোলা ট্যাবকে একসঙ্গে গুছিয়ে কাজ করার সুযোগ দেবে। এমনকি খোলা ট্যাবগুলো থেকে আলাদা ওয়েব অ্যাপও তৈরি করতে পারবে। ডিসকো গুগলের জেমিনি থ্রি এআই দিয়ে পরিচালিত।
এই টুল ট্যাবগুলোকে জেনট্যাবস নামে আলাদা ওয়েব অ্যাপে রূপান্তর করবে। গুগলের মতে, এতে ব্রাউজার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আরও সহজ ও কার্যকর হবে; বিশেষ করে শিক্ষার্থী, গবেষক ও পেশাজীবীদের জন্য এটি বেশ উপকারী হতে পারে। তবে টুলটি এখনো সবার জন্য উন্মুক্ত হয়নি।
ভাইব কোডিং
গুগল তাদের এআই স্টুডিওতে ভাইব কোডিং নামে নতুন একটি সুবিধা যুক্ত করেছে। এই টুলের মাধ্যমে কোডিং না জেনেও অ্যাপ তৈরি করা যাবে। ব্যবহারকারীকে শুধু সাধারণ ভাষায় বলতে হবে, তিনি কোন ধরনের অ্যাপ তৈরি করতে চান। এরপর গুগল এআই স্টুডিও নিজেই সেই ধারণা অনুযায়ী একটি সম্পূর্ণ অ্যাপ তৈরি করে দেবে। এই অ্যাপে থাকবে ডিজাইন, প্রয়োজনীয় ফিচার এবং কোড। ব্যবহারকারী চাইলে পরে কোড পরিবর্তন করতে পারবেন। অ্যাপ তৈরির সময় এআই থেকে বিভিন্ন পরামর্শও পাওয়া যাবে। কোডিং বা প্রযুক্তিগত জটিলতা ছাড়া সহজে অ্যাপ বানানো সম্ভব হবে। এতে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট আরও সহজ হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

মিক্সবোর্ড
গুগলের জনপ্রিয় এআই টুলগুলোর একটি হলো ন্যানো বানানা। এই টুল ব্যবহার করে প্রতিদিন অনেক এআই ছবি তৈরি করা হচ্ছে। ছবি তৈরির ক্ষেত্রে এটি বেশ কার্যকর একটি টুল। ন্যানো বানানার ওপর ভিত্তি করেই গুগল চালু করেছে নতুন টুল মিক্সবোর্ড। এটি একটি পরীক্ষামূলক এআই-চালিত আইডিয়া প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে চিন্তা, পরিকল্পনা
ও ধারণাগুলো সহজে সাজিয়ে উপস্থাপন করা যায়। মিক্সবোর্ডে পিডিএফ, ছবি ও ভিডিও আপলোড করা যাবে। এরপর একটি ছোট নির্দেশনা লিখতে হবে। এরপর এআই সেই বিষয় অনুযায়ী একটি ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন কিংবা সাজানো রিপোর্ট তৈরি করে দেবে।
গবেষণা, পরিকল্পনা তৈরি অথবা উপস্থাপনার কাজে এই টুল ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে গুগলের এই নতুন এআই টুল যুক্তরাষ্ট্রে বেটা সংস্করণে চালু রয়েছে।
সূত্র: গুগল ব্লগ

গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা। সম্প্রতি গুগল পরীক্ষামূলকভাবে কিছু নতুন এআই টুল চালু করেছে, যেগুলো এখনো সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত করা হয়নি।

ডিসকো
ওয়েব ব্রাউজারের জন্য গুগল সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে নতুন এআই টুল ডিসকো। এই টুল মূলত ইন্টারনেট ব্রাউজিং সহজ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। সাধারণত ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় একসঙ্গে অনেক ট্যাব খুলতে হয়। এতে কাজ এলোমেলো হয়ে যায়। ডিসকো এই সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে। এটি একাধিক খোলা ট্যাবকে একসঙ্গে গুছিয়ে কাজ করার সুযোগ দেবে। এমনকি খোলা ট্যাবগুলো থেকে আলাদা ওয়েব অ্যাপও তৈরি করতে পারবে। ডিসকো গুগলের জেমিনি থ্রি এআই দিয়ে পরিচালিত।
এই টুল ট্যাবগুলোকে জেনট্যাবস নামে আলাদা ওয়েব অ্যাপে রূপান্তর করবে। গুগলের মতে, এতে ব্রাউজার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আরও সহজ ও কার্যকর হবে; বিশেষ করে শিক্ষার্থী, গবেষক ও পেশাজীবীদের জন্য এটি বেশ উপকারী হতে পারে। তবে টুলটি এখনো সবার জন্য উন্মুক্ত হয়নি।
ভাইব কোডিং
গুগল তাদের এআই স্টুডিওতে ভাইব কোডিং নামে নতুন একটি সুবিধা যুক্ত করেছে। এই টুলের মাধ্যমে কোডিং না জেনেও অ্যাপ তৈরি করা যাবে। ব্যবহারকারীকে শুধু সাধারণ ভাষায় বলতে হবে, তিনি কোন ধরনের অ্যাপ তৈরি করতে চান। এরপর গুগল এআই স্টুডিও নিজেই সেই ধারণা অনুযায়ী একটি সম্পূর্ণ অ্যাপ তৈরি করে দেবে। এই অ্যাপে থাকবে ডিজাইন, প্রয়োজনীয় ফিচার এবং কোড। ব্যবহারকারী চাইলে পরে কোড পরিবর্তন করতে পারবেন। অ্যাপ তৈরির সময় এআই থেকে বিভিন্ন পরামর্শও পাওয়া যাবে। কোডিং বা প্রযুক্তিগত জটিলতা ছাড়া সহজে অ্যাপ বানানো সম্ভব হবে। এতে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট আরও সহজ হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

মিক্সবোর্ড
গুগলের জনপ্রিয় এআই টুলগুলোর একটি হলো ন্যানো বানানা। এই টুল ব্যবহার করে প্রতিদিন অনেক এআই ছবি তৈরি করা হচ্ছে। ছবি তৈরির ক্ষেত্রে এটি বেশ কার্যকর একটি টুল। ন্যানো বানানার ওপর ভিত্তি করেই গুগল চালু করেছে নতুন টুল মিক্সবোর্ড। এটি একটি পরীক্ষামূলক এআই-চালিত আইডিয়া প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে চিন্তা, পরিকল্পনা
ও ধারণাগুলো সহজে সাজিয়ে উপস্থাপন করা যায়। মিক্সবোর্ডে পিডিএফ, ছবি ও ভিডিও আপলোড করা যাবে। এরপর একটি ছোট নির্দেশনা লিখতে হবে। এরপর এআই সেই বিষয় অনুযায়ী একটি ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন কিংবা সাজানো রিপোর্ট তৈরি করে দেবে।
গবেষণা, পরিকল্পনা তৈরি অথবা উপস্থাপনার কাজে এই টুল ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে গুগলের এই নতুন এআই টুল যুক্তরাষ্ট্রে বেটা সংস্করণে চালু রয়েছে।
সূত্র: গুগল ব্লগ

করোনা মহামারির প্রভাবে বদলে গেছে প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন। ২০২০ সালে অনলাইনে কেনাকাটার হার বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স, অনলাইন কোর্স, ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ জুমের দাপট দেখেছে বিশ্ব। ২০২১ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। নতুন বছরে পা ফেলার আগে চলতি বছর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া কিছু
২৭ ডিসেম্বর ২০২১
একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ।
১০ ঘণ্টা আগে
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে।
১১ ঘণ্টা আগে
এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে।
১২ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে। ফলে সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ও নতুন শক্তিচালিত জাহাজে বিনিয়োগ বাড়িয়ে চীন বৈশ্বিক জাহাজনির্মাণ শিল্পে নিজেদের আধিপত্য আরও শক্ত করছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগ জোরদার হওয়ার কারণে সমুদ্রের জাহাজেও এখন পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এই পরিবর্তনের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে চীনের ব্যাটারি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।
আগামী তিন বছরে সমুদ্রে নামবে বৈদ্যুতিক জাহাজ
বিশ্বের বড় ইভি ব্যাটারি নির্মাতা সিএটিএল জানিয়েছে, তাদের তৈরি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ আগামী তিন বছরের মধ্যে সমুদ্রে চলাচল শুরু করবে। বর্তমানে বৈশ্বিক ইভি ব্যাটারি বাজারের প্রায় ৩৮ শতাংশ সিএটিএলের দখলে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সাল থেকে জাহাজে ব্যাটারি ব্যবহারের প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করছে। এ পর্যন্ত ৯০০টি নৌযানে ব্যাটারি সরবরাহ করেছে তারা। তাদের ব্যাটারি সংযুক্ত চীনের প্রথম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ক্রুজ জাহাজ ‘ইউজিয়ান ৭৭’ চলতি বছরের জুলাই থেকে চালু হয়েছে।
কনটেইনার জাহাজে গোশনের ব্যাটারি
গোশন হাই টেক জানিয়েছে, তাদের তৈরি ব্যাটারি প্যাক ব্যবহার করে ১৩২টি স্ট্যান্ডার্ড কনটেইনার বহনে সক্ষম একটি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ সফলভাবে চালানো সম্ভব হয়েছে। ‘পাফার ফিশ ব্লু ০১’ নামের জাহাজটি যৌথভাবে তৈরি করেছে চীনের উহু শিপইয়ার্ড ও সানদিয়ানশুই নিউ এনার্জি টেকনোলজি। জাহাজটি এরই মধ্যে চায়না ক্ল্যাসিফিকেশন সোসাইটি থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা এবং প্রযুক্তিগত সনদ পেয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বছর এই জাহাজ বাণিজ্যিকভাবে চলাচল শুরু করবে।
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা
২০২৩ সালের শেষে বিশ্বের প্রথম ৭০০ কনটেইনার বহনে সক্ষম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক কনটেইনার জাহাজ সরবরাহ করে চীন। ক্লার্কসনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষের দিকে বৈশ্বিক জাহাজ নির্মাণ অর্ডারের ৬৫ শতাংশ ছিল চীনা প্রতিষ্ঠানের দখলে।
গভীর সমুদ্রের এখনো সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ চালু হয়নি। এর প্রধান কারণ হলো ব্যাটারির অতিরিক্ত ওজন, যা জাহাজের ধারণক্ষমতা ও কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি গভীর সমুদ্রে চলাচল করার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত চার্জিং অবকাঠামো এখনো গড়ে ওঠেনি। তবে আশা করা যাচ্ছে, ২০২৬ সালে চীন এই বাজারে সবার আগে প্রবেশ করবে।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে। ফলে সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ও নতুন শক্তিচালিত জাহাজে বিনিয়োগ বাড়িয়ে চীন বৈশ্বিক জাহাজনির্মাণ শিল্পে নিজেদের আধিপত্য আরও শক্ত করছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগ জোরদার হওয়ার কারণে সমুদ্রের জাহাজেও এখন পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এই পরিবর্তনের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে চীনের ব্যাটারি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।
আগামী তিন বছরে সমুদ্রে নামবে বৈদ্যুতিক জাহাজ
বিশ্বের বড় ইভি ব্যাটারি নির্মাতা সিএটিএল জানিয়েছে, তাদের তৈরি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ আগামী তিন বছরের মধ্যে সমুদ্রে চলাচল শুরু করবে। বর্তমানে বৈশ্বিক ইভি ব্যাটারি বাজারের প্রায় ৩৮ শতাংশ সিএটিএলের দখলে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সাল থেকে জাহাজে ব্যাটারি ব্যবহারের প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করছে। এ পর্যন্ত ৯০০টি নৌযানে ব্যাটারি সরবরাহ করেছে তারা। তাদের ব্যাটারি সংযুক্ত চীনের প্রথম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ক্রুজ জাহাজ ‘ইউজিয়ান ৭৭’ চলতি বছরের জুলাই থেকে চালু হয়েছে।
কনটেইনার জাহাজে গোশনের ব্যাটারি
গোশন হাই টেক জানিয়েছে, তাদের তৈরি ব্যাটারি প্যাক ব্যবহার করে ১৩২টি স্ট্যান্ডার্ড কনটেইনার বহনে সক্ষম একটি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ সফলভাবে চালানো সম্ভব হয়েছে। ‘পাফার ফিশ ব্লু ০১’ নামের জাহাজটি যৌথভাবে তৈরি করেছে চীনের উহু শিপইয়ার্ড ও সানদিয়ানশুই নিউ এনার্জি টেকনোলজি। জাহাজটি এরই মধ্যে চায়না ক্ল্যাসিফিকেশন সোসাইটি থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা এবং প্রযুক্তিগত সনদ পেয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বছর এই জাহাজ বাণিজ্যিকভাবে চলাচল শুরু করবে।
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা
২০২৩ সালের শেষে বিশ্বের প্রথম ৭০০ কনটেইনার বহনে সক্ষম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক কনটেইনার জাহাজ সরবরাহ করে চীন। ক্লার্কসনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষের দিকে বৈশ্বিক জাহাজ নির্মাণ অর্ডারের ৬৫ শতাংশ ছিল চীনা প্রতিষ্ঠানের দখলে।
গভীর সমুদ্রের এখনো সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ চালু হয়নি। এর প্রধান কারণ হলো ব্যাটারির অতিরিক্ত ওজন, যা জাহাজের ধারণক্ষমতা ও কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি গভীর সমুদ্রে চলাচল করার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত চার্জিং অবকাঠামো এখনো গড়ে ওঠেনি। তবে আশা করা যাচ্ছে, ২০২৬ সালে চীন এই বাজারে সবার আগে প্রবেশ করবে।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

করোনা মহামারির প্রভাবে বদলে গেছে প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন। ২০২০ সালে অনলাইনে কেনাকাটার হার বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স, অনলাইন কোর্স, ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ জুমের দাপট দেখেছে বিশ্ব। ২০২১ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। নতুন বছরে পা ফেলার আগে চলতি বছর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া কিছু
২৭ ডিসেম্বর ২০২১
একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ।
১০ ঘণ্টা আগে
গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা।
১১ ঘণ্টা আগে
এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে।
১২ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে। ৪২ শতাংশের বেশি মানুষ তাঁদের প্রথম নাম ব্যবহার করেন, আর প্রায় ৪৪ শতাংশ মানুষ তাঁদের পাসওয়ার্ডে পোষা প্রাণীর নাম অথবা জন্মতারিখ জুড়ে দেন। এমনকি ২৬ শতাংশ মানুষ তাঁদের প্রাক্তনের নামও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করছেন। অথচ ৮১ শতাংশ মানুষ বেশ আত্মবিশ্বাসী যে তাঁদের পাসওয়ার্ড খুব নিরাপদ। নর্ডপাসের ২ দশমিক ৫ টেরাবাইট লিক হওয়া ডেটা বলছে ভিন্ন কথা। তারা জানিয়েছে, বেশির ভাগ পাসওয়ার্ড ভাঙতে ১ সেকেন্ডও লাগে না।
মহাদেশভেদে মানুষের এই পাসওয়ার্ড নির্বাচনের অদ্ভুত খেয়ালগুলো দেখে নেওয়া যাক।
ইউরোপে ফুটবল, আভিজাত্য ও কি-বোর্ডের কারসাজি
ইউরোপীয়দের কাছে কি-বোর্ডের বিন্যাস আর ফুটবলপ্রেমই পাসওয়ার্ডের প্রধান উৎস। যুক্তরাজ্যে জনপ্রিয় পাসওয়ার্ডগুলোর মধ্যে password, ashley এবং ফুটবল ক্লাব liverpool তালিকায় বেশ ওপরের দিকে।
ফ্রান্সে কি-বোর্ড সাজানো থাকে azerty ঢঙে, তাই সেখানে 123456-এর পরেই এর রাজত্ব। পাশাপাশি doudou বা marseille-এর মতো ফরাসি শব্দও জনপ্রিয় পাসওয়ার্ড হিসেবে। জার্মানিতে passwort এবং dragon শব্দটি দেখা যায় পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে।
ইতালিতে নিজের প্রিয় ফুটবল দলের প্রতি ভালোবাসা এতটাই যে Juventus শব্দটি সেখানে পাসওয়ার্ডের তালিকায় চতুর্থ। তবে তারা কিছুটা সৃজনশীলও বটে। অনেকে cambiami ব্যবহার করেন। এর অর্থ আমাকে পরিবর্তন করো।
স্পেনে দেশপ্রেম প্রবল। তাই পাসওয়ার্ড হিসেবে সেখানে España শব্দটি বেশ জনপ্রিয়। পর্তুগালে আবার ফুটবল ক্লাব benfica বা sporting শব্দ দুটি পাসওয়ার্ডের তালিকায় আধিপত্য বিস্তার করে আছে।
উত্তরের দেশগুলোর মধ্যে ডেনমার্কে webhompass বা hejmeddig (হ্যালো ইউ) এবং সুইডেনে hejsan শব্দগুলোর আধিপত্য আছে পাসওয়ার্ড হিসেবে। ফিনল্যান্ডে পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয় শব্দ salasana-এর ইংরেজে অর্থই হলো পাসওয়ার্ড। পোল্যান্ডে দেশপ্রেম ফুটে ওঠে polska শব্দে। এটি সে দেশে পাসওয়ার্ডের শব্দ হিসেবে জনপ্রিয়। সুইজারল্যান্ডে পর্তুগিজ অভিবাসীদের প্রভাবে Portugal শব্দটি পাসওয়ার্ড হিসেবে আছে ১৫ নম্বরে। এ ছাড়া অস্ট্রিয়ায় michael, বেলজিয়ামে azerty, নেদারল্যান্ডসে welkom01, আয়ারল্যান্ডে liverpool এবং চেক প্রজাতন্ত্রে martin কিংবা veronika-এর মতো সাধারণ শব্দগুলো পাসওয়ার্ড হিসেবে খুবই জনপ্রিয়।
আমেরিকায় যা গোপন কিন্তু প্রকাশ্য
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাসওয়ার্ডে ব্যবহৃত জনপ্রিয় শব্দ হলো secret। কী অদ্ভুত পরিহাস, যা গোপন করার কথা, তা-ই পাসওয়ার্ড! আমেরিকানরা baseball ও iloveyou শব্দ দুটি পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে ভালোবাসে। কানাডায় আবার জাতীয় খেলা hockey-এর জয়জয়কার। মেক্সিকোতে alejandro বা carlos-এর মতো শব্দ এবং ব্রাজিলে brasil বা rental শব্দ দুটি পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয়। চিলিতে তাদের ফুটবল দল colocolo পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয়, আর কলম্বিয়ায় পাসওয়ার্ড হিসেবে দেশের নাম Colombia-ই শেষ কথা।
সংখ্যাতত্ত্ব ও সংস্কৃতির প্রভাব এশিয়া এবং ওশেনিয়ায়
এশিয়ায় পাসওয়ার্ড নির্বাচনে সংখ্যাতত্ত্বের প্রভাব স্পষ্ট। জাপানে 123456789 সংখ্যার এই সিরিজ পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহারের শীর্ষে রয়েছে।
আর তারা কি-বোর্ড প্যাটার্ন 1qaz2wsx-ও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পছন্দ করে। চীনে জনপ্রিয় wangyut2 আর হংকংয়ে 5201314। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আবেগের ছোঁয়া বেশি। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় sayang পাসওয়ার্ডটি বেশ ওপরের দিকে দেখা যায়।
এর অর্থ প্রিয়তম। ফিলিপাইনেও দেখা যায় iloveyou-এর আধিপত্য। থাইল্যান্ডে 221225-এর মতো সংখ্যা বেশ ব্যবহৃত হয় পাসওয়ার্ড হিসেবে।
ভারতে মানুষ সরলতা পছন্দ করে। তাই 123456 বা india123 এবং Indya123-ই মানুষের প্রথম পছন্দ। তুরস্কে এক অদ্ভুত ধরনের ঘটনা দেখা যায়। দেশটিতে ব্রিটিশ ব্যান্ড Anathema এতই জনপ্রিয় যে এটি পাসওয়ার্ডের শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অভিবাসীদের প্রভাবে pakistan শব্দটি পাসওয়ার্ড হিসেবে ১১ নম্বরে রয়েছে। ওশেনিয়া অঞ্চলে অস্ট্রেলিয়ায় পাসওয়ার্ড হিসেবে password শব্দটির ব্যবহারের চল বেশি। এর পাশাপাশি pokemon বা lizottes শব্দ দুটিও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আফ্রিকায় ভালোবাসার সহজ পাঠ
দক্ষিণ আফ্রিকায় পাসওয়ার্ড হিসেবে মানুষ 123456 এই সংখ্যার সেট থেকে বেরিয়ে কিছুটা রোমান্টিক হয়ে 123love ব্যবহার করতে পছন্দ করেন।
সূত্র: নর্ডপাস, ইভিএন এক্সপ্রেস

এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে। ৪২ শতাংশের বেশি মানুষ তাঁদের প্রথম নাম ব্যবহার করেন, আর প্রায় ৪৪ শতাংশ মানুষ তাঁদের পাসওয়ার্ডে পোষা প্রাণীর নাম অথবা জন্মতারিখ জুড়ে দেন। এমনকি ২৬ শতাংশ মানুষ তাঁদের প্রাক্তনের নামও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করছেন। অথচ ৮১ শতাংশ মানুষ বেশ আত্মবিশ্বাসী যে তাঁদের পাসওয়ার্ড খুব নিরাপদ। নর্ডপাসের ২ দশমিক ৫ টেরাবাইট লিক হওয়া ডেটা বলছে ভিন্ন কথা। তারা জানিয়েছে, বেশির ভাগ পাসওয়ার্ড ভাঙতে ১ সেকেন্ডও লাগে না।
মহাদেশভেদে মানুষের এই পাসওয়ার্ড নির্বাচনের অদ্ভুত খেয়ালগুলো দেখে নেওয়া যাক।
ইউরোপে ফুটবল, আভিজাত্য ও কি-বোর্ডের কারসাজি
ইউরোপীয়দের কাছে কি-বোর্ডের বিন্যাস আর ফুটবলপ্রেমই পাসওয়ার্ডের প্রধান উৎস। যুক্তরাজ্যে জনপ্রিয় পাসওয়ার্ডগুলোর মধ্যে password, ashley এবং ফুটবল ক্লাব liverpool তালিকায় বেশ ওপরের দিকে।
ফ্রান্সে কি-বোর্ড সাজানো থাকে azerty ঢঙে, তাই সেখানে 123456-এর পরেই এর রাজত্ব। পাশাপাশি doudou বা marseille-এর মতো ফরাসি শব্দও জনপ্রিয় পাসওয়ার্ড হিসেবে। জার্মানিতে passwort এবং dragon শব্দটি দেখা যায় পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে।
ইতালিতে নিজের প্রিয় ফুটবল দলের প্রতি ভালোবাসা এতটাই যে Juventus শব্দটি সেখানে পাসওয়ার্ডের তালিকায় চতুর্থ। তবে তারা কিছুটা সৃজনশীলও বটে। অনেকে cambiami ব্যবহার করেন। এর অর্থ আমাকে পরিবর্তন করো।
স্পেনে দেশপ্রেম প্রবল। তাই পাসওয়ার্ড হিসেবে সেখানে España শব্দটি বেশ জনপ্রিয়। পর্তুগালে আবার ফুটবল ক্লাব benfica বা sporting শব্দ দুটি পাসওয়ার্ডের তালিকায় আধিপত্য বিস্তার করে আছে।
উত্তরের দেশগুলোর মধ্যে ডেনমার্কে webhompass বা hejmeddig (হ্যালো ইউ) এবং সুইডেনে hejsan শব্দগুলোর আধিপত্য আছে পাসওয়ার্ড হিসেবে। ফিনল্যান্ডে পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয় শব্দ salasana-এর ইংরেজে অর্থই হলো পাসওয়ার্ড। পোল্যান্ডে দেশপ্রেম ফুটে ওঠে polska শব্দে। এটি সে দেশে পাসওয়ার্ডের শব্দ হিসেবে জনপ্রিয়। সুইজারল্যান্ডে পর্তুগিজ অভিবাসীদের প্রভাবে Portugal শব্দটি পাসওয়ার্ড হিসেবে আছে ১৫ নম্বরে। এ ছাড়া অস্ট্রিয়ায় michael, বেলজিয়ামে azerty, নেদারল্যান্ডসে welkom01, আয়ারল্যান্ডে liverpool এবং চেক প্রজাতন্ত্রে martin কিংবা veronika-এর মতো সাধারণ শব্দগুলো পাসওয়ার্ড হিসেবে খুবই জনপ্রিয়।
আমেরিকায় যা গোপন কিন্তু প্রকাশ্য
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাসওয়ার্ডে ব্যবহৃত জনপ্রিয় শব্দ হলো secret। কী অদ্ভুত পরিহাস, যা গোপন করার কথা, তা-ই পাসওয়ার্ড! আমেরিকানরা baseball ও iloveyou শব্দ দুটি পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে ভালোবাসে। কানাডায় আবার জাতীয় খেলা hockey-এর জয়জয়কার। মেক্সিকোতে alejandro বা carlos-এর মতো শব্দ এবং ব্রাজিলে brasil বা rental শব্দ দুটি পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয়। চিলিতে তাদের ফুটবল দল colocolo পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয়, আর কলম্বিয়ায় পাসওয়ার্ড হিসেবে দেশের নাম Colombia-ই শেষ কথা।
সংখ্যাতত্ত্ব ও সংস্কৃতির প্রভাব এশিয়া এবং ওশেনিয়ায়
এশিয়ায় পাসওয়ার্ড নির্বাচনে সংখ্যাতত্ত্বের প্রভাব স্পষ্ট। জাপানে 123456789 সংখ্যার এই সিরিজ পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহারের শীর্ষে রয়েছে।
আর তারা কি-বোর্ড প্যাটার্ন 1qaz2wsx-ও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পছন্দ করে। চীনে জনপ্রিয় wangyut2 আর হংকংয়ে 5201314। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আবেগের ছোঁয়া বেশি। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় sayang পাসওয়ার্ডটি বেশ ওপরের দিকে দেখা যায়।
এর অর্থ প্রিয়তম। ফিলিপাইনেও দেখা যায় iloveyou-এর আধিপত্য। থাইল্যান্ডে 221225-এর মতো সংখ্যা বেশ ব্যবহৃত হয় পাসওয়ার্ড হিসেবে।
ভারতে মানুষ সরলতা পছন্দ করে। তাই 123456 বা india123 এবং Indya123-ই মানুষের প্রথম পছন্দ। তুরস্কে এক অদ্ভুত ধরনের ঘটনা দেখা যায়। দেশটিতে ব্রিটিশ ব্যান্ড Anathema এতই জনপ্রিয় যে এটি পাসওয়ার্ডের শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অভিবাসীদের প্রভাবে pakistan শব্দটি পাসওয়ার্ড হিসেবে ১১ নম্বরে রয়েছে। ওশেনিয়া অঞ্চলে অস্ট্রেলিয়ায় পাসওয়ার্ড হিসেবে password শব্দটির ব্যবহারের চল বেশি। এর পাশাপাশি pokemon বা lizottes শব্দ দুটিও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আফ্রিকায় ভালোবাসার সহজ পাঠ
দক্ষিণ আফ্রিকায় পাসওয়ার্ড হিসেবে মানুষ 123456 এই সংখ্যার সেট থেকে বেরিয়ে কিছুটা রোমান্টিক হয়ে 123love ব্যবহার করতে পছন্দ করেন।
সূত্র: নর্ডপাস, ইভিএন এক্সপ্রেস

করোনা মহামারির প্রভাবে বদলে গেছে প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন। ২০২০ সালে অনলাইনে কেনাকাটার হার বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স, অনলাইন কোর্স, ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ জুমের দাপট দেখেছে বিশ্ব। ২০২১ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। নতুন বছরে পা ফেলার আগে চলতি বছর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া কিছু
২৭ ডিসেম্বর ২০২১
একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ।
১০ ঘণ্টা আগে
গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা।
১১ ঘণ্টা আগে
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে।
১১ ঘণ্টা আগে