Ajker Patrika

বাংলাদেশে আমার আর ফেরা হবে না

নাজিম আল শমষের, ঢাকা
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৩, ১০: ৪৭
বাংলাদেশে আমার আর ফেরা হবে না

আজ ভোরে বাংলাদেশ ছেড়ে যাচ্ছেন পল স্মলি। তাঁর সম্ভাব্য গন্তব্য মালদ্বীপ। সাত বছরে দুই মেয়াদে কাজ করা বাফুফের এই ব্রিটিশ টেকনিক্যাল ডিরেক্টরকে নিয়ে আছে অনেক সমালোচনা আর বিতর্ক। বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার আগে সব প্রশ্নের জবাব দিতে গতকাল চারজন সাংবাদিককে ডেকেছিলেন স্মলি। সেখানে ছিলেন আজকের পত্রিকার নাজিম আল শমষেরও। স্মলির সঙ্গে কথোপকথন থাকল এখানে—

প্রশ্ন: বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের পদ থেকে আপনার সরে দাঁড়ানোর কারণ যদি ব্যাখ্যা করতেন। 
পল স্মলি: বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে তিন-চার সপ্তাহ ধরে এ বিষয়ে আলোচনা করছিলাম। ফিফা থেকে বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে নিষিদ্ধ করার পর আমি হতাশা থেকে বাফুফেকে কয়েকটি বিষয় পরিবর্তন করতে বলেছিলাম। যেমন সারা দেশে ফুটবলের উন্নয়ন নিয়ে ফেডারেশনের যে অবস্থান...আমার মতে কিছু কিছু বিষয়ে দ্রুত পরিবর্তন আনতেই হতো। কিন্তু দুর্ভাগ্য, সভাপতি সিদ্ধান্ত দিতে সময় নিচ্ছিলেন। তখন আমার মনে হলো, এখন সরে দাঁড়ানোই ভালো। গতকাল (পরশু) সভাপতিকে আমার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। সভাপতি অবশ্যই আমাকে থেকে যেতে বলেছেন। এখানে অনেক ইতিবাচকতাই আছে। কিন্তু দিন শেষে সবকিছুই বৃথা যেত। যেমন টেকনিক্যাল বিভাগের পুরো কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। ফেডারেশনের সব কটি বিভাগের কাজের মানসিকতায় পরিবর্তন করতে হবে। লিগের দলগুলোকে একাডেমি করতে হবে। তরুণ ফুটবলার তুলে আনার দায়িত্বটা তাদেরই নিতে হবে। কোচ, খেলোয়াড়, জামাল-সাবিনা, ফেডারেশনের কর্মকর্তারা আমাকে যে সমর্থন দিয়েছেন, সবার কাছে কৃতজ্ঞতা। সবকিছু মিলিয়ে আমার মনে হয়েছে, এখন সরে দাঁড়ানোর সময়। 

প্রশ্ন: টেকনিক্যাল বিভাগে কী সমস্যা ছিল? 
স্মলি: আমাদের অনেক জনবলের দরকার ছিল, যারা ঢাকার বাইরে জেলা-বিভাগগুলোতে ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করবে। বিষয়টি নিয়ে অনেক সমালোচনা আছে। কিন্তু পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় ইচ্ছা থাকার পরও আমরা ঢাকার বাইরে দেশজুড়ে ফুটবলের কারিগরি দিক ও অবকাঠামোতে পরিবর্তন আনতে পারিনি। সভাপতি আমার সঙ্গে একমত হয়েছেন। বলেছেন, আমরা যা করতে পারিনি, ভবিষ্যতে সেটা অবশ্যই করার চেষ্টা করব। আর ফেডারেশন এই কাজটা করতে পারেনি মূলত প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকায়। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত। কারণ, জাতীয় দল সাফল্য পাচ্ছে। একাডেমির মেয়েরা দেশকে সাফ এনে দিয়েছে। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, উন্নয়নের ইচ্ছাকে একটু ভিন্নভাবে পরিচালনা করতে হবে। 

প্রশ্ন: টেকনিক্যাল বিভাগে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা কি ঠিকঠাক কাজ করতেন না? 
স্মলি: আমাদের টেকনিক্যাল বিভাগে সঠিক কোনো কাঠামোই ছিল না। হ্যাঁ, আমি ছিলাম, আরও কয়েকজন ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোয় আমাদের বিশেষ কিছু পদের দরকার ছিল। আমার দায়িত্ব বৈচিত্র্যে ভরা ছিল। আমি একাডেমির সঙ্গে কাজ করেছি, মেয়েদের একাডেমির সঙ্গে ছিলাম। ছেলে-মেয়েদের বয়সভিত্তিক ভিন্ন ভিন্ন দলের সঙ্গেও কাজ করেছি। এখন যেখানে আছি, আমাদের সেখান থেকে এগোতে হবে। সেটা করতে হলে আমাদের পর্যাপ্ত মানবসম্পদের দরকার হবে। এসব ছাড়া এগোনো সম্ভবই হবে না। 

প্রশ্ন: বেতন-ভাতা নিয়ে কি কোনো সমস্যা ছিল? 
স্মলি: আমি বেতন-ভাতা নিয়ে কোনো কথাই বলিনি। আপনাদের কয়েকজন সাংবাদিক সহকর্মী প্রতিবেদন করেছেন যে আমি কৌশলে বেতন বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। এমনটা মোটেও ঘটেনি। আমি সভাপতির সঙ্গে যা নিয়ে সব সময় বলেছি, সেটা হলো কীভাবে ফেডারেশনের আরও উন্নতি করা যায়, কীভাবে নারী-পুরুষ জাতীয় দলকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেওয়া যায়। কীভাবে আমরা একাডেমির উন্নয়ন করতে পারি, কীভাবে কোচদের উন্নত প্রশিক্ষণ দিতে পারি। 

প্রশ্ন: আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, নারী দলের সাবেক কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের সঙ্গে আপনার সংঘাতপূর্ণ সম্পর্ক। এটা নিয়ে কী বলবেন? 
স্মলি: অভিযোগ? এটা কিন্তু গুরুতর একটা শব্দ! মোটেও এমনটা হয়নি। এটা সম্পূর্ণ ভুল ও অসত্য অভিযোগ। তাঁর (ছোটন) সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের মতো। সব দলের সঙ্গেই আমি সহায়ক একজন ব্যক্তির মতো কাজ করেছি। আপনারা সবাই জানেন, বয়সভিত্তিক ফুটবলে আমার ভূমিকা কেমন ছিল। আমি জানি না, তিনি আমার সম্পর্কে কী বলেছেন। তাঁর সঙ্গে আমার মোটেও এমন সম্পর্ক ছিল না। 

প্রশ্ন: আপনি নাকি বাফুফের পেশাদারি নিয়ে হতাশ ছিলেন? এটা কি আপনার সরে দাঁড়ানোর অন্যতম কারণ? 
স্মলি: আমি কোথাও অপেশাদার শব্দটা ব্যবহার করিনি। ফেডারেশনের কোথায় কোন পরিবর্তনটা প্রয়োজন, সেটা সব সময় বলার চেষ্টা করেছি। আমার কী কী চাহিদা ছিল, সেটা আপনাদের আগেই বলেছি। ফিফার প্রতিবেদনে বিশেষভাবে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছিল কোন কোন জায়গায় সমস্যা আছে। আমি সেসব বিষয় পরিবর্তন করে যেটা করণীয় দরকার ছিল, সেটাই করতে চেয়েছি। সভাপতি আমাকে বলেছেন, তোমার কথা ঠিক আছে, কিন্তু আমাদের পক্ষে এসব এখনই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তখনই আমি বলেছি, ঠিক আছে, আমি তাহলে সরে যাচ্ছি। 

প্রশ্ন: আবু নাঈম সোহাগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর সালাউদ্দিনকে কী পরামর্শ দিয়েছিলেন? 
স্মলি: ফিফা আর্থিক অনিয়ম নিয়ে যেসব অভিযোগ করেছে, সেসব নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি শুধু বলতে চেয়েছি, ফেডারেশনে পরিবর্তন আনতে হবে। ঢাকাভিত্তিক ফুটবল থেকে খেলাকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। কীভাবে ভালো খেলোয়াড় নির্বাচন করতে হবে, সেটাও আমাদের চিন্তায় ছিল। 

প্রশ্ন: বাফুফের সদস্যরা কি কখনো আপনার কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে? তাঁদের সমালোচনা সম্পর্কে কী বলবেন? 
স্মলি: না, কোনো সমস্যা হয়নি। হয়তো কিছু সমালোচনা ছিল, তবে মেনে নিয়েই কাজ করেছি। যেসব সমালোচনা ইতিবাচক ছিল, সেসব আমি মাথা পেতেই নিয়েছি। এটা অনেক সময় উপকারই করেছে। এসব সমালোচনা থেকে অনেক কিছু শিক্ষণীয় ছিল। আমার চুক্তিতেই বলা ছিল, আমি সরাসরি সভাপতির অধীনে কাজ করব। কমিটির কাছে আমার কোনো জবাবদিহি ছিল না। 

প্রশ্ন: আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, আপনি এএফসি প্রো লাইসেন্সে কোচিংয়ে মাত্র একজনকে উত্তীর্ণ করিয়েছেন। বড় কয়েকটি নাম এখন পর্যন্ত আটকে আছে। কয়েকজন উত্তীর্ণই হতে পারেননি। যাঁরা আটকে আছেন, আপনি চলে গেলে তাঁদের কী হবে? 
স্মলি: প্রথমে বলি, যা হয়েছে, সেটা পেশাদারিভাবেই হয়েছে। আরেকটি বিষয় বলি, এ বিষয়ে কিছু ভুল ও নেতিবাচক প্রতিবেদন হয়েছে। যাঁরা দুই বছরের ডিপ্লোমা কোর্স করেছেন, তাঁদের সমান চোখেই দেখা হয়েছে। এএফসি-ফিফার নির্দেশনায় বলাই আছে, লাইসেন্স পেতে হলে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। আমি বা আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেটা ফিফার নির্দেশনা মেনেই করেছি। 

প্রশ্ন: চলে যাওয়ার মুহূর্তে বাফুফের প্রতি আপনার কোনো পরামর্শ? 
স্মলি: আমি আমার পরিকল্পনাগুলো রেখে যাচ্ছি। কোথায় কোথায় পরিবর্তন করতে হবে, সেটা আমি সভাপতিকে বলে গেছি। যদি এসব বিষয়ে পরিবর্তন না ঘটে, তাহলে আপনারা যেমন ফুটবল দেখতে চান, তেমন ফুটবল দেখা সত্যিই কঠিন। জিততে হলে, উন্নতি করতে হলে এসব পরিবর্তন সত্যিকার অর্থে জরুরি। 

প্রশ্ন: বাংলাদেশে কি আর ফেরার সম্ভাবনা আছে? 
স্মলি: কোথায় যাচ্ছি, সেটা এখনই বলতে চাইছি না। বাংলাদেশে দারুণ সময় কাটিয়েছি। তবে বলতেই হচ্ছে, বাংলাদেশে আমার আর ফেরা হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কলম্বিয়ায় ফুটবল ম্যাচে সহিংসতায় আহত ৫৯

ক্রীড়া ডেস্ক    
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি

লাতিন আমেরিকার ফুটবলে সহিংসতা নতুন কিছু নয়। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকাতেই ঘটে মারামারির ঘটনা। স্থানীয় টুর্নামেন্টে সহিংসতার কারণে তো প্রায়ই খবরের শিরোনামে আসে লাতিন আমেরিকার ফুটবল। কলম্বিয়ায় এক ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

কলম্বিয়ার মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে পরশু রাতে কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হয়েছিল দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল। ১-০ গোলে আতলেতিকো ন্যাশনাল জয়ের পরই ভক্ত-সমর্থকেরা মাঠে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করেন। আতশবাজি-আগুন নিয়ে এমনভাবে হামলা চালিয়েছিলেন ভক্তরা, যেটা সামাল দিতে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে। সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কলম্বিয়ার স্থানীয় পত্রিকা ‘এল কলোম্বিয়ানো’র এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মাঠের কিছু অংশে আগুন ধরানো হয়েছে। উপড়ে ফেলা হয়েছে অনেক আসন। গ্যালারিতে আতশবাজির ধোঁয়ার কারণে ম্যাচ শুরু হতেও দেরি হয় ১৪ মিনিট।

মেডেলিনের মেয়র ফেদেরিকো গুতিয়েরেস কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালে সহিংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। গুতিয়েরেস বলেন, ‘যারা স্টেডিয়ামে হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ বা ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে, তাদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। সবাই মাঠে বসে খেলা উপভোগ করতে পারবেন। হাতে গোনা কয়েকজনের জন্য পরিবেশ নষ্ট হবে, এমনটা তো হতে দেওয়া যাবে না। বছরের পর বছর ধরে আমরা পুরো লাতিন আমেরিকায় শান্তিপূর্ণ ফুটবলের মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি।’ পুলিশ কমান্ডার উইলিয়াম কাস্তানো বলেন, ‘স্টেডিয়ামে দর্শকদের কাছ থেকে অস্ত্র, আতশবাজি জব্দ করা হয়েছে। ১২০ কেজিরও বেশি পাইরোটেকনিক (বিস্ফোরণের প্রভাব তৈরির মতো রাসায়নিক বস্তু) ছিল সেখানে।’

দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল কলম্বিয়া কাপ ফাইনালের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছে। পরশু রাতে দ্বিতীয় লেগটা হয়ে যায় শিরোপা নির্ধারণী। দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ গোলে জিতে শিরোপা জিতেছে আতলেতিকো ন্যাশনাল। কিন্তু মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় আতলেতিকো ন্যাশনালের ম্যাচ পরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, শিরোপা নিয়ে উদযাপন-কিছুই করা সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে সোনার লড়াইয়ে বাংলাদেশের জুমার-ঊর্মি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন

ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জ টুর্নামেন্টে মিশ্র দ্বৈত বিভাগে ফাইনালে উঠেছেন বাংলাদেশের আল আমিন জুমার ও ঊর্মি আক্তার। আজ সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের কুনলাপাথ লোথোং ও সারিসা জানপেং জুটিকে হারিয়েছেন ২১-১১ ও ২১-১৪ গেমে। পদক তো নিশ্চিত হয়েছে আগে, জুমার-ঊর্মি এবার দেখাচ্ছেন সোনা জয়ের ঝিলিকও। ফাইনালে কাল মালয়েশিয়ার দাতু আনিফ ইসাক দাতু আসরা ও ক্লারিসা সানের মুখোমুখি হবেন তারা।

পল্টনের শহীদ তাজউদ্দিন ইনডোর স্টেডিয়ামে সকালটাও অন্যরকম ছিল জুমার-ঊর্মির। কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের স্বস্তিক মাথারাসান-কীর্তি মাঞ্চালাকে তিন সেটের লড়াইয়ে হারিয়েছেন ২১-১৬, ১৯-২১ ও ২১-১৮ গেমে। প্রথম সেট খানিকটা সহজে জিতলেও দ্বিতীয় সেটে হারতে হয়। তৃতীয় সেটে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে নিশ্চিত করেন ব্রোঞ্জ পদক।

রাতে সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের জুটিকে পাত্তাই দিলেন না জুমার-ঊর্মি। প্রথম সেটে একটা সময় অবশ্য পিছিয়ে ছিলেন ৫-৩ পয়েন্টে। সেখান থেকে অনবরত পয়েন্ট তুলতে থাকেন জুমার। শেষ দিকে ঊর্মিও দেখান তাঁর দাপট। দ্বিতীয় সেটে শুরুতেই আধিপত্য দেখাতে থাকে বাংলাদেশের জুটি। নিয়ে নেন বড় ব্যবধানের লিড। যা পরে আর ছোট করতে পারেননি থাইল্যান্ডের শাটলাররা।

ফাইনালে উঠে জুমার বলেন, ‘ফাইনাল নিয়ে প্রত্যাশা অবশ্যই ভালো খেলার চেষ্টা করব। বাকিটা আল্লাহ ভরসা, জানিনা কি হবে। দেখা যাক। আগে যে রেজাল্টগুলো আমরা আশাও করতে পারতাম না, এখন বাংলাদেশ অন্যান্য বারের মতো হচ্ছে না যে মানে বাংলাদেশ আসছে আর হেরে যাচ্ছে—এরকম হচ্ছে না। প্রত্যেকটা টিমই আমাদের লড়াই করে হেরেছে।’

জুমারের সঙ্গে বোঝাপড়া নিয়ে ঊর্মি বলেন, ‘সকালেই আমি বলেছিলাম, আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। সেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ফাইনাল নিশ্চিত করেছি। এবার সোনা জিততে চাই। জুমারের সঙ্গে ছয়-সাত বছর ধরে জুটি বেঁধে খেলছি। যেহেতু অনেকদিন ধরে খেলছি, সেহেতু আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা ভালো। আমরা এর আগেও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে পদক জিতেছি।’

এর আগে একক ইভেন্টে কেবল হতাশাই উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের শাটলাররা। দ্বৈতে গতকাল কোয়ার্টার ফাইনালে কেউই জয়ের হাসি হাসতে পারেননি। মিশ্র দ্বৈতে জুমার-ঊর্মি ফুটলেন আশার আলো হয়ে। রুপা নিশ্চিত করে লক্ষ্য এবার সোনার পদক গলায় ঝুলানো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২৫৮ রান তাড়া করে জিতে ব্রিসবেনের ইতিহাস

ক্রীড়া ডেস্ক    
ম্যাট রেনশ ও জ্যাক উইলডারমুথের জোড়া সেঞ্চুরিতে ২৫৮ রান তাড়া করে জিতেছে ব্রিসবেন হিট। ছবি: ক্রিকইনফো
ম্যাট রেনশ ও জ্যাক উইলডারমুথের জোড়া সেঞ্চুরিতে ২৫৮ রান তাড়া করে জিতেছে ব্রিসবেন হিট। ছবি: ক্রিকইনফো

গায়ের জোরে জেতা যাকে বলে, ঠিক তেমনই এক ম্যাচ দেখা গেল আজ বিগ ব্যাশে। গ্যাবায় পার্থ স্কর্চার্সের দেওয়া ২৫৮ রানের লক্ষ্য এক বল হাতে রেখে তাড়া করে নতুন ইতিহাস গড়েছে ব্রিসবেন হিট। বিগ ব্যাশে এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করার রেকর্ড নেই আর কারও।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো রান তাড়ায় দুজন ব্যাটার সেঞ্চুরি করলেন। ম্যাট রেনশ ও জ্যাক উইল্ডারমুথ ২১২ রানের জুটি গড়ে হিটকে আট উইকেটের জয় এনে দেন। বিগব্যাশে এটাই সর্বোচ্চ রানের জুটি। টস হেরে আগে ব্যাটিং করা পার্থ স্করচার্স ৬ উইকেটে ২৫৭ রান তোলে। ফিন অ্যালেন (৩৮ বলে ৭৯) ও কুপার কনোলি (৩৭ বলে ৭৭) দুজনে মিলে ১৪টি ছক্কায় সাজানো ঝোড়ো ১৪২ রানের জুটি গড়েন।

শেষদিকে নিক হবসন অপরাজিত ৪৮ রান করে ইনিংসের ফলে হিটের সামনে দাঁড়ায় প্রায় অসম্ভব এক লক্ষ্য। রান তাড়ার প্রথম বলেই অধিনায়ক জাই রিচার্ডসনের বলে গোল্ডেন ডাক হয়ে ফিরলেও কলিন মনরোর দলটি বিচলিত হয়নি। রেনশ ৪৮ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তাঁর ইনিংসে ছিল ৯টি বিশাল ছক্কা; ১০১ রানে তিনি রানআউট হন। উইল্ডারমুথ শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। মাত্র ৫৪ বলে অপরাজিত ১১০ রানের এই ইনিংসে তিনি ছিলেন বিধ্বংসী। সব মিলিয়ে ৩৬ ছক্কার দেখা মিলেছে এই ম্যাচে; বিগ ব্যাশে আগে কখনো ঘটেনি তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সেই দুবাইয়ে ফের ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৪
২০২৫ অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে পরশু মুখোমুখি হবে ভারত-পাকিস্তান। ছবি: এসিসি
২০২৫ অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে পরশু মুখোমুখি হবে ভারত-পাকিস্তান। ছবি: এসিসি

খুব বেশি দিন আগের ঘটনা নয়। এ বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছিল ভারত। সেই দুবাইয়ের আরেক স্টেডিয়ামে আরেক ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান।

ভারত-পাকিস্তান এবারও মুখোমুখি হচ্ছে এশিয়া কাপ ফাইনালে। তবে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্টটা মূলত বয়সভিত্তিক। দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমিতে পরশু হতে যাওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ ফাইনালে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। আজ দুবাইয়ের দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে এক সেমিফাইনালে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। একই শহরের আরেক মাঠ আইসিসি একাডেমিতে আরেক সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেসেখেলে জিতেছে ভারত।

বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেমিফাইনাল। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে একই সময়ে আইসিসি একাডেমি মাঠে শুরু হতো ভারত-শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেমিফাইনালও। কিন্তু দুবাইয়ে সাতসকালে বৃষ্টির কারণে কোনোটাই সময়মতো শুরু হয়নি। বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ হয়েছে ২৭ ওভারে। অন্যদিকে ভারত-শ্রীলঙ্কা সেমিফাইনালটা হয়েছে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে।

দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমিতে আজ ২০ ওভারে ১৩৮ রানের লক্ষ্যে নেমে একটু চাপে পড়ে ভারত। ৩.৩ ওভারে ২ উইকেটে ২৫ রানে পরিণত হয় আয়ুশ মাত্রের নেতৃত্বাধীন ভারত। অধিনায়ক মাত্রে (৭) ও বৈভব সূর্যবংশী (৯) দুই ওপেনারই এক অঙ্কের ঘরে রান করে আউট হয়েছেন। শ্রীলঙ্কার বোলারদের সামনে এরপর ঢাল হয়ে দাঁড়ান অ্যারন জর্জ ও বিহান মালহোত্রা। তৃতীয় উইকেটে ৮৭ বলে ১১৪ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়েন তাঁরা (জর্জ-মালহোত্রা)। ২ ওভার হাতে রেখে ৮ উইকেটের বিশাল জয়ে ফাইনালের টিকিট কেটেছে ভারত।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮ উইকেটের জয়ে দুই ভারতীয় জর্জ ও মালহোত্রা ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন। ৪৫ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৬১ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন মালহোত্রা। জর্জ ৪৯ বলে ৫৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। শ্রীলঙ্কার দুটি উইকেটই নিয়েছেন রাসিত নিমসারা। ইনিংস সর্বোচ্চ ৪২ রান করেছেন চামিকা হিনাতিগালা। ভারতের হেনিল প্যাটেল ও কনিষ্ক চৌহান দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। একটি করে উইকেট পেয়েছেন কিশান সিংহ, দিপেশ দেবেন্দ্রন ও খিলান প্যাটেল।

ভারত এর আগে আটবার অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছে। পাকিস্তান জিতেছে একবার। সেটাও ভারতের বিপক্ষে। ২০১২ সালে ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল টাই হলে যৌথভাবে তাদের চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়েছিল। বাংলাদেশ সময় পরশু বেলা ১১টায় অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত