Ajker Patrika

একই ভুল বারবার করছেন কোহলি

আরমান হোসেন, ঢাকা
একই ভুল বারবার করছেন কোহলি

হেডিংলি টেস্টে প্রায় সাড়ে তিন দিনেই ইনিংস ও ৭৬ রানে হেরেছে ভারত। এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ভারত গুটিয়ে গিয়েছিল ৭৮ রানে। দুই ইনিংসেই ভারতের ব্যাটিং ব্যর্থতার মতো আরেকটি ‘কমন’ বিষয় বিরাট কোহলির আউট হওয়ার ধরন। 

প্রথম ইনিংসে জিমি অ্যান্ডারসনের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন কোহলি (৭)। দ্বিতীয় ইনিংসেও ওলি রবিনসনের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে আত্মাহুতি দিয়েছেন, স্লিপে দাঁড়ানো জো রুটের হাতে দেওয়া ক্যাচ যেন প্রথম ইনিংসের আউটের রিপ্লে! এই সিরিজের আগের তিন ইনিংসেও কোহলি আউট হয়েছেন একইভাবে। যে ভুলগুলো করা উচিত নয় বলে ভারতীয় অধিনায়ক নিজেই জানিয়েছিলেন, সে ভুলগুলোই বারবার করছেন তিনি। 

প্রথম ইনিংসে কোহলির আউটের পর তাঁর ব্যাটিং কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইন। জনপ্রিয় এই ইংলিশ ধারাভাষ্যকার তখন জানিয়েছিলেন স্ট্যান্সসহ পুরো ব্যাটিং-কৌশলে বড় পরিবর্তন এনেছেন কোহলি। যেটা তাঁর ব্যাটিংয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সাত বছর আগে কোহলির ব্যাটিং-কৌশল কেমন ছিল, সে প্রসঙ্গ টেনে এনে নাসের বলেছিলেন, ‘২০১৪ সালে কোহলি ব্যাটিং করার সময় তাঁর কাঁধ ও হিপ খোলা থাকত, শরীর থাকত সোজা।’ 

এই ব্যাটিং-কৌশলে শুরুর দিকে মানিয়ে নিতে বেশ সমস্যায় পড়েছিলেন কোহলি। ২০১৪ সালের ইংল্যান্ডে সফরে যেটি তাঁকে বেশ ভুগিয়েছিল। পরে অবশ্য সফল হয়েছিলেন তিনি। একই বছরের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়া সিরিজটি কাটিয়েছিলেন স্বপ্নের মতো। অ্যাডিলেড ওভালে সিরিজের প্রথম টেস্টে দুই ইনিংসেই করেছিলেন সেঞ্চুরি (১১৫ ও ১৪১)। মেলবোর্নে সিরিজের তৃতীয় টেস্টেও হেসেছিল তাঁর ব্যাট, প্রথম ইনিংসে উপহার দিয়েছিলেন ১৬৯ রানের ইনিংস। সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন সিরিজের চতুর্থ টেস্টেও। পরের তিন বছরও ব্যাট হাতে রান ফোয়ারা ছড়িয়েছেন। 

২০১৮ সালে আগের ব্যাটিং-কৌশল থেকে সরে আসেন কোহলি। নাসের মনে করিয়ে দিয়েছেন সে কথাও, ‘২০১৮ সালে পেছনের পা পপিং ক্রিজের সমান্তরালে ছিল। এবার ইংল্যান্ড সিরিজে পেছনের পা আর সমান্তরালে রাখতে পারছেন না। ডান কাঁধ আবারও উন্মুক্ত হয়ে গেছে ২০১৪–এর মতো। তাঁর আউটের ধরন তাই আগের মতো।’ 

শরীরের এই ভারসাম্য আর পায়ের কাজের পরিবর্তন প্রভাব ফেলেছে কোহলির ব্যাটিংয়ে। ২০১৮ সালের পর থেকে ভারতীয় তারকার ব্যাটিংয়েই সে প্রভাব দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোহলির পরিসংখ্যান দেখলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ সালের ইংল্যান্ড সফরে অফ স্টাম্প লাইনে কোহলির ব্যাটিং গড় অবিশ্বাস্যভাবে নিচে নেমে গিয়েছিল—৬.৭১! সেই ব্যর্থতা ঢাকা পড়েছিল ২০১৮ সালের গড়ে ১৫৯ রান তুলে। এ বছর সেটি আবার পৌঁছে গেছে ২০১৪ সালের কাছাকাছি—১১.৬৬! (হেডিংলি টেস্টের আগ পর্যন্ত) 

ব্যাটিং-কৌশলের এই পরিবর্তন গত দুই বছরেও মানিয়ে নিতে পারেননি কোহলি। উপমহাদেশের বাইরে রানখরায় ভুগছেন তিনি। প্রায় দুই বছর হতে চলল সেঞ্চুরি নেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। তিন সংস্করণ মিলিয়ে এই সময়ে খেলেছেন ৫১ ইনিংস। 

নটিংহাম, লর্ডসের পর হেডিংলিতেও জিমি অ্যান্ডারসনের আউট সুইংয়ে পরাস্ত বিরাট কোহলিচলতি বছর এখন পর্যন্ত ১১ টেস্টে ১৯ ইনিংসে মাত্র প্রায় ২৩ গড়ে ৪৬৯ রান করেছেন কোহলি, যা সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের নামের সঙ্গে একেবারেই বেমানান। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের মাটিতে সাদা পোশাকে ক্যারিয়ারজুড়েই ভুগেছেন ভারতীয় অধিনায়ক। সময়ের অন্যতম সেরা দুই ব্যাটসম্যান বাবর আজম ও স্টিভ স্মিথের গড় যেখানে যথাক্রমে ৬৫.৭৫ ও ৫৯.৫৫। সেখানে ইংল্যান্ডের মাটিতে কোহলির গড় ৩৩.৬২। 

দল এত দিন ভালো করায় কোহলির ব্যাটিং ব্যর্থতা সেভাবে সামনে আসছিল না। কিন্তু পরশু হেডিংলি টেস্টে ইংলিশ পেসারদের তোপে ভারতের ব্যাটিং লাইন আপ যেভাবে অসহায় ছিল, ভারতীয় অধিনায়কের ব্যর্থতা আবার সামনে চলে আসছে। ইংলিশ কন্ডিশনে সুইংয়েই বারবার ধরাশায়ী হচ্ছেন কোহলি। হেডিংলি টেস্টের প্রথম ইনিংসে অ্যান্ডারসনের দুর্দান্ত এক আউট সুইংয়ে ফিরেছিলেন ৭ রান করে। দ্বিতীয় ইনিংসেও রবিনসনের বলে একই পরিণতি। টেস্টে পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাতবার আউট হয়েছেন অ্যান্ডারসনের বলে। 

১৭ বছর আগে ২০০৩-০৪ মৌসুমে কোহলির মতো একই সমস্যায় পড়েছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। সেবার অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিল ভারত। চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ৫ ইনিংসে শচীনের স্কোর ছিল ০, ১, ৩৭, ০, ৪৪। বারবার অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিচ্ছিলেন শচীন। সিরিজের আগের টেস্টের দুই ইনিংসেই আউটও হয়েছিলেন একইভাবে। সিরিজের শেষ টেস্টে তাই শচীনের সামনে শেষ সুযোগ ছিল অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে নিজেকে প্রমাণের। বছরের পর বছর কাভার ড্রাইভ খেলা শচীন এবার চোয়ালবদ্ধ। 

এবারের লড়াইটা যতটা না প্রতিপক্ষ বোলারদের বিপক্ষে, তার চেয়ে বেশি নিজের সঙ্গে। ধৈর্য, অধ্যবসায় আর নিজের ওপর অসম্ভব নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এবার সিডনি টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামেন লিটল মাস্টার। শচীন এরপর প্রায় ১০ ঘণ্টা ব্যাটিং করলেন অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কোনো কাভার ড্রাইভ না করেই। প্রিয় শট বিসর্জন দিয়ে সেবার সিডনিতে অপরাজিত ২৪১ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস খেলে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন শচীন। 

ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে এসে কোহলির সামনেও একই চ্যালেঞ্জ। অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে যেকোনোভাবে নিজের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা। অফ ফর্ম, আউট হওয়ার ধরন সবকিছুর কারণ যে একটাই—অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে নিজেকে সংবরণ করতে না পেরে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসা। 

এমন কত কঠিন চ্যালেঞ্জকেই তো বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সীমানা পার করেছেন কোহলি। এ চ্যালেঞ্জও তাঁর উতরে যাওয়ার কথা। না হলে নিন্দুকেরা তাঁর ব্যাটসম্যানশিপ নিয়ে কথা তুলবে নিশ্চিত!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভাই হারালেন সিকান্দার রাজা

ক্রীড়া ডেস্ক    
সিকান্দার রাজা। ছবি: ক্রিকইনফো
সিকান্দার রাজা। ছবি: ক্রিকইনফো

ভাই হারালেন জিম্বাবুয়ের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন এই তারকা অলরাউন্ডারের ছোট ভাই মুহাম্মাদ মাহদি। এক বিবৃতিতে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট (এনজেডসি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

স্বাস্থ্যগত জটিলতার কারণে গত সোমবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মাহদি। পর দিন অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বর তাঁকে হারারের ওয়ারেন হিলস কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। রাজার ছোট ভাইয়ের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। রাজার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি শক্তি, সান্ত্বনা এবং শান্তি কামনা করেছে এনজেডসি।

হিমোফিলিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন মাহদি। এটি একটি বিরল রোগ যা রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। শেষ পর্যন্ত আর পেরে উঠলেন না মাহদি। ছোট ভাই হারানোটা বড় ধাক্কা হয়েই এল রাজার জন্য। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে ২০১৩ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করেন তিনি। দেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ২২ টেস্ট, ১৫৩ ওয়ানডের পাশাপাশি ১২৭টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। ৩ সংস্করণে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে মোট ৮৭৯৩ রান। বল হাতে নিয়েছেন ২৩৬ উইকেট।

বর্তমান সময়ে জিম্বাবুয়ের সেরা ক্রিকেটার মনে করা হয় রাজাকে। ব্যাট কিংবা বল–দুই বিভাগেই বেশ কার্যকরী তিনি। গত মাসে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো আইসিসি টি-টোয়েন্টি অলরাউন্ডারদের তালিকার শীর্ষে ওঠে এসেছেন রাজা। সবকিছু ঠিক থাকলে তাঁর নেতৃত্বেই ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলবে জিম্বাবুয়ে।

সংক্ষিপ্ত ওভারের বিশ্বকাপে ‘বি’ গ্রুপে পড়েছে দলটি। তাদের বাকি ৪ প্রতিপক্ষ হলো অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, আয়ারল্যান্ড ও ওমান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। এক দিন পর অর্থাৎ ৯ ফেব্রুয়ারি নিজেদের প্রথম ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে মাঠে নামবে রাজার দল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিপিএল থেকে কেন বাদ চট্টগ্রাম, ব্যাখ্যা দিল বিসিবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ০৯
এবারের বিপিএল থেকে বাদ পড়েছে চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়াম। ছবি: বিসিবি
এবারের বিপিএল থেকে বাদ পড়েছে চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়াম। ছবি: বিসিবি

তিন ভেন্যুতে ২০২৬ বিপিএল হওয়ার কথা থাকলেও এবার সেটা দুই ভেন্যুতে করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামের নাম বিপিএলের ভেন্যুর তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু জানিয়েছেন, বিশেষ পরিস্থিতির কারণে ভেন্যুর সংখ্যা কমানো হয়েছে।

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গতকাল মারা যাওয়ায় দেশে চলছে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক। আজ সাধারণ ছুটি। গতকাল সিলেট স্টেডিয়ামে বিপিএলে যে দুটি ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল, সেই দুইটা ম্যাচ স্থগিত করা হয়েছে। বিসিবি দুই দফা সূচি পরিবর্তনের পর নতুন সূচি অনুযায়ী ৪ জানুয়ারি সিলেট স্টেডিয়ামে হবে সিলেট টাইটানস-চট্টগ্রাম রয়্যালস, ঢাকা ক্যাপিটালস-রংপুর রাইডার্স এই দুই ম্যাচ। সিলেটে আজ সাংবাদিকদের মিঠু বলেন, ‘আমাদের মরহুম খালেদা জিয়া যিনি মারা গেছেন, সেটার জন্য জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁর আজ জানাজা। তাঁর সম্মানে দুই দিন খেলা বন্ধ রাখা হয়েছে।’

আগের সূচি অনুযায়ী ২ জানুয়ারি সিলেট পর্ব শেষ হওয়ার কথা ছিল। দুই দিন বিরতি দিয়ে চট্টগ্রামে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল ৫ জানুয়ারি। কিন্তু দুই দিন খেলা বন্ধ থাকায় সূচিতে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এদিকে ৭ ফেব্রুয়ারি ভারত-শ্রীলঙ্কায় শুরু হচ্ছে দশম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২৬ জানুয়ারির মধ্যে লিটন দাস-তানজিদ হাসান তামিমরা বিশ্বকাপ খেলতে দেশ ছাড়বেন বলে মিঠু আজ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। ফাইনালটা তাই ২৩ জানুয়ারি করতে হচ্ছে।

পরিবর্তিত সূচিতে দুই দিনের যাত্রাবিরতির অংশটা বাদ দিয়ে সিলেট-মিরপুরে বিপিএল আয়োজন করতে হচ্ছে বলে আজ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মিঠু। সিলেটে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব বলেন, ‘আপনারা ব্যাপারটা জানেন যে আমাদের প্রথম সমস্যা ছিল ফাইনাল ২৩ জানুয়ারি করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপ খেলতে চলে যাচ্ছে ২৬ জানুয়ারির মধ্যে। আমাদের যে প্রোডাকশন, এমনকি আপনাদেরও একটা পরিকল্পনা আছে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী দলগুলোর সঙ্গে, গভর্নিং কাউন্সিল থেকে শুরু করে টেকনিক্যাল কমিটি-সবার সঙ্গে আলাপ করে আমাদের যে দুই দিন বিরতি হয়েছে, দুই দিনের গ্যাপ পূরণ করতে আমাদের খেলা এখন দুই ভেন্যুতে নিয়ে আসা হচ্ছে।’

ঢাকা ক্যাপিটালস, সিলেট টাইটান্স, চট্টগ্রাম রয়্যালস, রাজশাহী ওয়ারিয়র্স, রংপুর রাইডার্স,নোয়াখালী এক্সপ্রেস—এই ছয় দল নিয়ে চলমান ২০২৬ বিপিএলের ৩৪ ম্যাচের মধ্যে ১২টি করে ম্যাচ হওয়ার কথা চট্টগ্রাম ও সিলেটে। মিরপুরের জন্য বরাদ্দ ছিল ১০ ম্যাচ। পরিবর্তিত সূচিতে মিরপুরে ১০ ম্যাচই থাকছে। শুধু চট্টগ্রাম পর্বের ম্যাচগুলো সিলেটে নেওয়া হয়েছে। নবাগত নোয়াখালী এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে জয়ের দেখা পায়নি। ৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স।

পরিবর্তিত সূচি অনুযায়ী বিপিএল
সিলেট পর্ব

১ জানুয়ারি

দুপুর ১টা সিলেট টাইটানস-ঢাকা ক্যাপিটালস

সন্ধ্যা ৬টা রংপুর রাইডার্স-রাজশাহী ওয়ারিয়র্স

২ জানুয়ারি

দুপুর ২টা ঢাকা ক্যাপিটালস-চট্টগ্রাম রয়্যালস

সন্ধ্যা ৭টা সিলেট টাইটানস-রংপুর রাইডার্স

৪ জানুয়ারি

দুপুর ১টা সিলেট টাইটানস-চট্টগ্রাম রয়্যালস

সন্ধ্যা ৬টা ঢাকা ক্যাপিটালস-রংপুর রাইডার্স

৫ জানুয়ারি

দুপুর ১টা নোয়াখালী এক্সপ্রেস-সিলেট টাইটান্স

সন্ধ্যা ৬টা চট্টগ্রাম রয়্যালস-রংপুর রাইডার্স

৭ জানুয়ারি

দুপুর ১টা ঢাকা ক্যাপিটালস-নোয়াখালী এক্সপ্রসে

সন্ধ্যা ৬টা চট্টগ্রাম রয়্যালস-সিলেট টাইটানস

৮ জানুয়ারি

দুপুর ১টা নোয়াখালী এক্সপ্রেস-রাজশাহী ওয়ারিয়র্স

সন্ধ্যা ৬টা ঢাকা ক্যাপিটালস-সিলেট টাইটানস

৯ জানুয়ারি

দুপুর ২টা রাজশাহী ওয়ারিয়র্স-চট্টগ্রাম রয়্যালস

সন্ধ্যা ৭টা নোয়াখালী এক্সপ্রেস-রংপুর রাইডার্স

১১ জানুয়ারি

দুপুর ১টা রাজশাহী ওয়ারিয়র্স-রংপুর রাইডার্স

সন্ধ্যা ৬টা নোয়াখালী এক্সপ্রেস, ঢাকা ক্যাপিটালস

১২ জানুয়ারি

দুপুর ১টা সিলেট টাইটানস-রংপুর রাইডার্স

সন্ধ্যা ৬টা রাজশাহী ওয়ারিয়র্স-ঢাকা ক্যাপিটালস

ঢাকা পর্ব

১৫ জানুয়ারি

দুপুর ১টা চট্টগ্রাম রয়্যালস-নোয়াখালী এক্সপ্রেস

সন্ধ্যা ৬টা রাজশাহী ওয়ারিয়র্স-সিলেট টাইটানস

১৬ জানুয়ারি

দুপুর ২টা রংপুর রাইডার্স-ঢাকা ক্যাপিটালস

সন্ধ্যা ৭টা চট্টগ্রাম রয়্যালস-রাজশাহী ওয়ারির্স

১৭ জানুয়ারি

দুপুর ১টা রংপুর রাইডার্স-নোয়াখালী এক্সপ্রেস

সন্ধ্যা ৬টা চট্টগ্রাম রয়্যালস-ঢাকা ক্যাপিটালস

১৯ জানুয়ারি

দুপুর ১টা এলিমেটর (তৃতীয়-চতুর্থ)

সন্ধ্যা ৬টা প্রথম কোয়ালিফায়ার (প্রথম-দ্বিতীয়)

২১ জানুয়ারি

সন্ধ্যা ৬টা দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার (এলিমিনেটর জয়ী-প্রথম কোয়ালিফায়ারের পরাজিত দল)

২৩ জানুয়ারি

সন্ধ্যা ৭টা ফাইনাল

‘আমরা অনেক চেষ্টা করছি। এটা ছাড়া মেলানো যাচ্ছে না। চট্টগ্রামের দর্শক,ম্যানেজমেন্টের কথা বলেন, সবকিছু প্রস্তুত করে ফেলেছিল। এমন পরিস্থিতির কারণে আমাদের চট্টগ্রামের ম্যাচগুলো বাতিল করে এখানে দু্ই দিন বাঁচাব। দুই দিনের মধ্যে চট্টগ্রামে সবকিছু যাওয়ার কথা ছিল। সেকারণে চট্টগ্রামের খেলাগুলো এখানে (সিলেট-মিরপুর) নিয়ে এসেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সবুজসংকেত পেয়েও সাকিবের দেশে না ফেরার ব্যাখ্যায় বিসিবি যা বলছে

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ১৯
লম্বা সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে আছেন তারকা অলরাউন্ডার। ফাইল ছবি
লম্বা সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে আছেন তারকা অলরাউন্ডার। ফাইল ছবি

দেশে ফেরার জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সবুজ সংকেত পেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরতে না পারায় বিসিবির পাশাপাশি সাবেক ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া এবং বর্তমান ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে দায়ী করেন এই অলরাউন্ডার। সম্প্রতি আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান সাকিব।

সাকিবের অভিযোগ, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে তাঁর দেশে ফেরা হয়নি। বিষয়টি নিয়মের বাইরে হওয়ায় বিসিবির নিষিদ্ধ হওয়া উচিত বলে মনে করেন সাবেক অধিনায়ক। সাকিবের সেসব অভিযোগের কোনো জবাব দিতে পারেননি বিসিবি পরিচালক এবং বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব ইফতেখার রহমান মিঠু। বিষয়টি তৎকালীন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের কোর্টে বল ঠেলে দিলেন তিনি।

সংবাদমাধ্যমকে মিঠু বলেন, ‘এই বিষয়টা নিয়ে (সাকিবের দেশে ফিরতে না পারা) মন্তব্য করার মতো আমি কেউ না। এখন আমি বিপিএল নিয়ে কথা বলছি। এটা মূল্যবান প্রশ্ন। এটার জন্য সঠিক কাউকে প্রশ্ন করতে পারেন। এই ঘটনাটা বর্তমান সভাপতির সময় ঘটেনি। তাই বলে যে আমরা বলব বিসিবির এখানে কিছু না সেটা তো না। এই ঘটনায় রাজনৈতিক প্রভাব ছিল কিনা সেটা তখনকার বোর্ড সভাপতি (ফারুক আহমেদ) বলতে পারবেন। কারণ সভাপতি হিসেবে তখন উনিই সব যোগাযোগ করেছেন।’

সাবেক ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেছিলেন, সাকিব যেন খেলতে না পারে সেটা নিয়ে তিনি বিসিবিতে আলাপ করবেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল এবং মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনের সঙ্গে কথা বলবেন মিঠু।

এই প্রসঙ্গে বিসিবির এই সংগঠক বলেন, ‘এটা ভালো প্রশ্ন। আমার মনে হয় বিষয়টা নিয়ে আমাদের আলাপ করা উচিত। সাকিব দারুণ একজন ক্রিকেটার, বাংলাদেশের সম্পদ, বাংলাদেশ ক্রিকেটের সম্পদ। আজ পর্যন্ত ওর মতো ক্রিকেটার বাংলাদেশে আসেনি। যেহেতু আলাপটা উঠেছে, এটা নিয়ে আমি বিসিবি সভাপতির সঙ্গে আলাপ করব। কিন্তু সভাপতি এবং মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান সিদ্ধান্ত নেবে কীভাবে বিষয়টা নিয়ে কথা বলবে।’

এর আগে গত পরশু আজকের পত্রিকাকে সাকিব বলেন, ‘আমাকে সরাসরি ক্রীড়া উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টা গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছিলেন। আমি প্লেনে উঠেছি। বিসিবি থেকে আমাকে পুরো নিশ্চিত করা হয়েছে। (যুক্তরাষ্ট্র থেকে) তারপর আমি প্লেনে উঠেছি। দুবাইয়ে নামার পর তাদের সব জায়গা থেকে আবার বলছে, না, তাদের নাকি ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। যদি না আসি, তাহলে ভালো হয়। আমি আর যাইনি।’

বিসিবিতে সরকারের হস্তক্ষেপ হওয়ায় রীতিমতো হতাশা প্রকাশ করেছেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘কথা হচ্ছে ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্কই থাকার কথা নয়। আর ক্রিকেট বোর্ড যদি সরকারের ওপর চাপিয়ে দেয়, এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারের হস্তক্ষেপ আছে। এর অর্থ হলো, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত। তাদের সঙ্গে সঙ্গে নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া উচিত (হাসি) ! আসলে ওই সাবজেক্টেই যাওয়া উচিত নয়। আমাকে যদি ক্রিকেট বোর্ড ফেরত না নিতে পারে (দেশে), এটা তাদের ব্যর্থতা। ঠিক না? আমার কী করার আছে এখানে?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রুটের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন ব্রুক

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ১০
টেস্টে ব্যাটারদের র‍্যাঙ্কিংয়ে এখন দুইয়ে হ্যারি ব্রুক (ডানে)। এগিয়েছেন তিন ধাপ। ছবি: সংগৃহীত
টেস্টে ব্যাটারদের র‍্যাঙ্কিংয়ে এখন দুইয়ে হ্যারি ব্রুক (ডানে)। এগিয়েছেন তিন ধাপ। ছবি: সংগৃহীত

ব্যাটারদের ব্যর্থতায় অ্যাশেজ খুইয়ে বসে আছে ইংল্যান্ড। জো রুটই যা একটু ধারাবাহিকভাবে রান করছেন। তাতে টেস্টে ব্যাটারদের র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন জো রুট। তাঁর ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন সতীর্থ হ্যারি ব্রুক।

বছরের শেষ দিন আজ সাপ্তাহিক র‍্যাঙ্কিং হালনাগাদ করেছে আইসিসি। হালনাগাদের পর তিন ধাপ এগিয়ে টেস্টে ব্যাটারদের র‍্যাঙ্কিংয়ে এখন দ্বিতীয় স্থানে ব্রুক। তাঁর রেটিং পয়েন্ট ৮৪৬। সবার ওপরে থাকা জো রুটের রেটিং পয়েন্ট ৮৬৭। এবারের অ্যাশেজে এখন পর্যন্ত ব্রুক ৩৩.১৪ গড় ও ৭৯.১৮ স্ট্রাইকরেটে করেছেন ২৩২। যার মধ্যে মেলবোর্নে দুই দিনে শেষ হওয়া বক্সিং ডে টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৪১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। সিরিজের চতুর্থ টেস্টে ৪ উইকেটে জিতে ১৫ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাঠে টেস্ট জেতে ইংল্যান্ড।

ব্রুক এগোনোয় টেস্টে ব্যাটারদের র‍্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়েছেন কেইন উইলিয়ামসন, ট্রাভিস হেড, স্টিভ স্মিথের মতো তারকারা। ৮২২ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে তিনে উইলিয়ামসন। চার ও পাঁচে থাকা হেড ও স্মিথের রেটিং পয়েন্ট ৮১৬ ও ৮১১। উইলিয়ামসন-হেড এক ধাপ করে পিছিয়েছেন। দুই ধাপ পিছিয়েছেন স্মিথ। এক ধাপ করে এগিয়ে টেস্টে ব্যাটারদের র‍্যাঙ্কিংয়ে সেরা দশে এখন পাকিস্তানের সৌদ শাকিল ও ভারতের শুবমান গিল। ৯ ও ১০ নম্বরে থাকা শাকিল ও গিলের রেটিং পয়েন্ট ৭৩৪ ও ৭৩০।

৮৭৯ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে টেস্টে বোলারদের র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন জসপ্রীত বুমরা। এক ধাপ এগিয়ে টেস্টে বোলারদের র‍্যাঙ্কিংয়ে দুইয়ে উঠে এসেছেন মিচেল স্টার্ক। সমান ৮৪৩ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে যৌথভাবে দুইয়ে পাকিস্তানের নোমান আলী। নোমান দুই ধাপ এগিয়েছেন। দুই ধাপ পিছিয়ে চার নম্বরে নেমে গেছেন প্যাট কামিন্স। এবারের অ্যাশেজে অ্যাডিলেডে শুধু তৃতীয় টেস্টটা খেলেছেন। মেলবোর্ন কাঁপিয়ে ১৩ ধাপ এগিয়ে টেস্টে বোলারদের র‍্যাঙ্কিংয়ে ৩০ নম্বরে উঠে এসেছেন ইংল্যান্ডের পেসার জশ টাঙ। মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টে ৮৯ রানে নিয়েছেন ৭ উইকেট। যাঁর মধ্যে প্রথম ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট।

২০২৫-২৬ মৌসুমের অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। ৪৩৭ রান করে এবারের অ্যাশেজে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হেড। অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি ব্যাটার দুই ফিফটির দুটিকেই সেঞ্চুরিতে পরিণত করেছেন। ২৬ উইকেট নিয়ে এবার সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী স্টার্ক। দুইবার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন। ৪ জানুয়ারি সিডনিতে শুরু হবে অ্যাশেজের পঞ্চম টেস্ট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত