Ajker Patrika

নির্বাচন নিয়ে দলগুলোর তিন মত

  • বিএনপি চায় ন্যূনতম সংস্কার করে দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
  • জামায়াত প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষেই স্থানীয় নির্বাচনের পক্ষে।
  • তরুণদের দল এনসিপি চায় আগে স্থানীয় নির্বাচন, নতুন সংবিধান।
  • এনসিপি একই সঙ্গে সংসদ ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি তুলেছে।
রেজা করিম, ঢাকা 
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৫, ১৩: ৪২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগবিহীন রাজনীতির মাঠে সম্প্রতি নির্বাচন নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী এবং জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং আরও কয়েকটি দল নির্বাচনের কথা বলছে। তবে আগে জাতীয় সংসদ না স্থানীয় সরকারের নির্বাচন—এ নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যও চলছে।

অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে জোর দিলেও বিএনপি চায় ন্যূনতম সংস্কার শেষে দ্রুততম সময়ে সংসদ নির্বাচন। জামায়াত জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য সময় দেওয়ার পক্ষে। এর সঙ্গে এনসিপির মিল থাকলেও তারা নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য গণপরিষদ নির্বাচনেরও দাবি জানিয়েছে।

নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়তে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন এই কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে। কমিশন আবারও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা এ বছরের ডিসেম্বর কিংবা আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। তবে এই সময়টা কবে চূড়ান্ত হবে, তা আপনারা উনার মুখ থেকেই শুনবেন।’

এদিকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। গত মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সরকারপ্রধান যেখানে একটি টাইমফ্রেম ঘোষণা করেছেন। হয় আগামী ডিসেম্বর, না হয় ২০২৬ সালের শুরুর দিকে। আমরা ডিসেম্বরকে ধরে নিয়েই প্রস্তুতি নিচ্ছি। সুতরাং, ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরেই আমাদের চিন্তাভাবনা এখন পর্যন্ত।’

ইসির এই প্রস্তুতির মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতার কারণে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য চলছে। যেমন মঙ্গলবার রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে ২০২৪-এর শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, ‘যত দিন হাসিনাকে ফাঁসির মঞ্চে না দেখছি, তত দিন কেউ যেন নির্বাচনের কথা না বলে।’ তাঁর এই বক্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে কিছু কিছু লোক নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার জন্য, নির্বাচন না করার জন্য একটা অজুহাত তৈরির পাঁয়তারা করছে। এর মধ্যে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত কাজ করছে।’

গতকাল বুধবার রাজধানীতে এক গোলটেবিল বৈঠকে এনসিপি নেতার ওই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিচারপ্রক্রিয়ার সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। কোনো অজুহাতেই নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পেছানোর সুযোগ নেই। একটি পক্ষের নিজস্ব প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতেই হবে, এমন মনোভাব পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার মনোভাবকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

বিএনপি ন্যূনতম সংস্কার করে চলতি বছরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণারও দাবি জানাচ্ছে। সাত মাস বয়সী অন্তর্বর্তী সরকার রোডম্যাপ ঘোষণা না করায় হতাশ বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলো। সংসদ নির্বাচনের দাবি আদায়ে মাঠে নামার কথাও বলেছেন বিএনপির নেতারা।

২ মার্চ রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমদ চলতি মাসেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার দাবি জানান প্রধান উপদেষ্টার কাছে। তিনি বলেন, তা না হলে রাজনৈতিকভাবে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো বসে পুনরায় নির্ধারণ করতে হবে, তাঁরা কোনভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এগোবেন।

অবশ্য জামায়াতে ইসলামী জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চায়। সংস্কার প্রশ্নেও বিএনপির সঙ্গে মতের মিল নেই দলটির। জামায়াত প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য সরকারকে আরও সময় দিতে রাজি। সম্প্রতি এক সমাবেশে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, আগে স্থানীয় নির্বাচনগুলো সম্পন্ন করতে হবে, যাতে জনগণ তাদের সেবা পেতে পারে। উপযুক্ত সংস্কার নিশ্চিত করার পরই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের ন্যূনতম রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার নিশ্চিত করার পরই আমরা জাতীয় নির্বাচন চাই।’

তরুণদের দল এনসিপিও আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায়। একই সঙ্গে নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য গণপরিষদ নির্বাচনেরও দাবি জানাচ্ছেন নতুন দলের নেতারা। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, পুরোনো সংবিধান ও পুরোনো শাসনকাঠামো রেখে একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। শুধু সরকার পরিবর্তন করেই জনগণের কল্যাণ ও প্রকৃত গণতন্ত্র বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। সেকেন্ড রিপাবলিকের (দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র) জন্য নতুন সংবিধান ও গণপরিষদ নির্বাচনের লক্ষ্যে নতুন দল কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সামনের যে নির্বাচন, সেটা একই সঙ্গে গণপরিষদ এবং সংসদ নির্বাচন আকারে করা যেতে পারে।

কোন নির্বাচন আগে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতায় দোষের কিছু দেখছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তবে বিরাজমান পরিস্থিতিতে তাঁরা বৃহত্তর স্বার্থে দলগুলোর মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার তাগিদ দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি অত্যন্ত ঘোলাটে। এই অবস্থায় বৃহত্তর স্বার্থে দলগুলোকে অবশ্যই সমঝোতায় আসতে হবে। তা না হলে সামনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

বাসার দরজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুনে মহল্লা ছেয়ে ফেললেই জনগণের মনে জায়গা পাওয়া যাবে না: খান মুহাম্মদ মুরসালীন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ পুরান ঢাকার বাংলাবাজারে পরিচ্ছন্ন ঢাকার দাবিতে গণসংযোগ করেন খান মুহাম্মদ মুরসালীন। ছবি: সংগৃহীত
আজ পুরান ঢাকার বাংলাবাজারে পরিচ্ছন্ন ঢাকার দাবিতে গণসংযোগ করেন খান মুহাম্মদ মুরসালীন। ছবি: সংগৃহীত

বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন দিয়ে মহল্লা ছেয়ে ফেললেই জনগণের মনে জায়গা পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও নির্বাচনকালীন মিডিয়া উপকমিটির সাধারণ সম্পাদক খান মুহাম্মদ মুরসালীন। আজ শনিবার পুরান ঢাকার বাংলাবাজারে পরিচ্ছন্ন ঢাকার দাবিতে গণসংযোগকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষে ঢাকা-৬ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী।

মুরসালীন বড় দলগুলোর প্রচারণা পদ্ধতির সমালোচনা করে বলেন, পুরান ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের শিকার এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার ধরন দেখেই বোঝা যাচ্ছে তথাকথিত বড় রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বারা নয়া বন্দোবস্ত সম্ভব নয়।

এনসিপির এই নেতা বলেন, আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছি নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণায় কোনো নতুনত্ব নেই। শহরের প্রতিটি দেয়াল পোস্টারে ঢেকে গেছে। বিলবোর্ড ফেস্টুনের চাপে সাধারণ জনগণের জন্য ফুটপাত দিয়ে চলাচল রীতিমতো সংগ্রামে পরিণত হয়েছে। যাঁরা সংসদে গিয়ে জনগণের সেবা করবেন প্রচার করছেন, তাঁদের দ্বারাই জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। এই বিষয়গুলো দেখার এবং ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। কিন্তু তারাও নিশ্চুপ।

প্রচলিত গৎবাঁধা প্রচার ও প্রতিশ্রুতির বদলে জনগণ এখন পলিসি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মুরসালীন বলেন, ‘আপানারা জানেন, পুরান ঢাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ ব্যবসায়ী এলাকা। সরু রাস্তা এবং তীব্র যানজট এখানকার নিত্যদিনের দুর্ভোগ। পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ তো আছেই। ফলে এই সংকটগুলো সমাধানে এখন জনগণ পলিসি সম্পর্কে জানতে চায়। তারা জানতে চায়, এই ঘিঞ্জি এলাকাগুলোতে অনাগত সন্তানদের সুস্থ বিকাশে খেলাধুলা, সংস্কৃতিচর্চা ও মেধা বিকাশে সাংসদরা কী কী পলিসি গ্রহণ করবেন। জনগণ জানতে চায়, যেকোনো দুর্যোগে তাৎক্ষণিক নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রতিটি মহল্লায় কীভাবে গড়ে তোলা হবে। ব্যবসার প্রসার ও বিকাশে সাংসদেরা ব্যবসায়ীদের জন্য কী কী নিরাপত্তা বলয় তৈরি করবে। এসব প্রশ্নের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার মধ্য দিয়ে জনগণের মনে জায়গা করে নিতে হবে। বিলবোর্ড, ব্যানার আর ফেস্টুনে মহল্লাগুলো ছেয়ে ফেললেই জনগণের মনে জায়গা পাওয়া যাবে না। পরিবর্তনের নিশ্চয়তা নিজেদের কাজের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করতে হবে।’

এ সময় বাংলাবাজারের প্রেস মালিক ও স্থানীয় পুস্তক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন খান মুহাম্মদ মুরসালীন। ব্যবসার পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিতের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

বাসার দরজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী অস্ত্রের মহড়ায় নেমেছে: আখতার হোসেন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সাংবাদিকদের সঙ্গে এনসিপি নেতা আখতার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাংবাদিকদের সঙ্গে এনসিপি নেতা আখতার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই ‘অস্ত্রের মহড়ায়’ নেমেছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত এখন কে কার থেকে এগিয়ে যাবে, সেই প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে।

আজ শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে জুলাই চেতনার পেশাজীবীদের সংগঠন ‘ন্যাশনাল প্রফেশনাল অ্যালায়েন্সের’ আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় রাজনীতি প্রসঙ্গে আখতার অভিযোগ করেন, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী অস্ত্রের মহড়া ও প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের শরিক দল হিসেবে বিএনপি এবং জামায়াত অভ্যুত্থানের পর নতুন রাজনীতির প্রতি প্রতিশ্রুতি দেবে বলে আশা ছিল। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয়, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই বিএনপি-জামায়াতের মতো দলগুলো অস্ত্রের মহড়ায় নেমেছে। তারা কে কার থেকে এগিয়ে যাবে, সেই প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে।

মিডিয়ায় প্রচারিত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বক্তব্য উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ভারতে থাকবেন নাকি থাকবেন না, সেটা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত। কোনোভাবেই একজন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, কোনো একজন গণহত্যাকারী, মানবতাবিরোধী অপরাধীর ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে কোনো একটি দেশ তার কূটনীতি সাজাতে পারে না। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার ওপরে, বাংলাদেশের মানুষের কাছে, এ দেশের বিচার বিভাগের কাছে অতি দ্রুত হস্তান্তর করার দাবি জানাই।’

অনুষ্ঠানে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ভারতকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ভারতকে বলতে চাই, নির্বাচনে ডিসটার্ব (বিরক্ত) করতে আসবেন না। পরে লেজ গুটিয়ে পালাতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় বিজেপির সন্ত্রাস রুখে দিতে আমরা প্রস্তুত।’

এ সময় নাসীরুদ্দীন প্রতিশ্রুতি দেন, এনসিপি সরকার গঠন করলে বা সরকারের অংশ হলে বেসরকারি খাতে শুক্র ও শনিবার ছুটি ঘোষণা করা হবে।

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা কোনো দলের কাছে আসন নিয়ে দর-কষাকষিতে যাব না। আসন বণ্টনের রাজনীতি বাংলাদেশে আর চলবে না।’

অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল প্রফেশনাল অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক হিসেবে নাভিদ নওরোজ শাহ্ এবং সদস্যসচিব হিসেবে তৌহিদ হোসেন মজুমদারের নাম ঘোষণা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

বাসার দরজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিয়ে করলেন হান্নান মাসউদ, কনে কে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৩৩
ছবি: আব্দুল হান্নান মাসউদের ফেসবুক পোস্ট থেকে নেওয়া
ছবি: আব্দুল হান্নান মাসউদের ফেসবুক পোস্ট থেকে নেওয়া

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ জাতীয় ছাত্রশক্তির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামলী সুলতানা জেদনীকে বিয়ে করেছেন। গতকাল শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) এই দম্পতির বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে মাসউদ-জেদনীর বিয়ের ছবি পোস্ট করে তথ্যটি জানান।

তিনি তাঁর পোস্টে আরও বলেন, জুলাইয়ের অনুপ্রেরণা নিয়ে গড়ে ওঠা দুজন রাজনীতিবিদের এই আয়োজনে থাকতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে জেদনীর বাসায় দুই পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের উপস্থিতিতে তাদের বাগদান সম্পন্ন হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পাত্রী শ্যামলী সুলতানা জেদনী লক্ষ্মীপুর জেলার বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে জাতীয় ছাত্রশক্তির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া তিনি সংগঠনটির মিডিয়া সেলের সহ-সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্বে আছেন। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী জেদনী।

অন্যদিকে, নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সন্তান হান্নান মাসউদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি এনসিপিতে যোগ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

বাসার দরজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছিল, উনার ফ্লাই করা ঠিক হবে না: ডা. জাহিদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ডা. জাহিদ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ডা. জাহিদ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। এখন বিষয়টি নির্ভর করছে বিএনপির চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার ওপর।

আজ শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এক ব্রিফিংয়ে এমনটাই জানালেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন।

জাহিদ হোসেন বলেন, ‘এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সব সময়ই প্রস্তুত আছে। প্রস্তুত থাকলেও উনার চিকিৎসাগত দিকে থেকে নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা প্রাধান্য পাচ্ছে। মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরাও উনার শারীরিক অবস্থার দিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।’

খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া বিলম্বিত হওয়ার কারণ উল্লেখ করে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের যান্ত্রিক ত্রুটি যেমন ছিল, একইভাবে মেডিকেল বোর্ডও সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, ওই মুহূর্তে উনার ফ্লাই করা সঠিক হবে না। সে জন্যই উনার বিদেশ যাওয়া বিলম্বিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে হয়তো শারীরিক অবস্থাই বলে দেবে যে, ওনাকে কখন বিদেশে নিয়ে যাওয়া যাবে।’

ডা. জাহিদ বলেন, ‘দেশের সব মানুষ উনার সুস্থতা চায়। যেহেতু উনার স্বাস্থ্য আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, সেহেতু বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তদারকির পাশাপাশি চিকিৎসকদের মতামতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। দলও বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা অত্যন্ত দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে বিষয়টি ব্যবস্থাপনা করছেন।’

গত ২৩ নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

বাসার দরজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত