Ajker Patrika

আবারও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে: রেজা কিবরিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ আগস্ট ২০২৩, ১৬: ০৯
আবারও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে: রেজা কিবরিয়া

গণ অধিকার পরিষদের (একাংশ) আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া বলেছেন, এর আগে যুক্তরাষ্ট্র একবার স্যাংশন আরোপ করেছে। সেটা তোলার চেষ্টা করেও সরকার সফল হয়নি। আওয়ামী লীগের চিন্তা করা উচিত, স্যাংশন আবার আসতে পারে। এখন তাদের সতর্ক হওয়া উচিত।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ বিএনপির নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন রেজা কিবরিয়া।

রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘এখনো আমরা বাইরের দেশের ওপর নির্ভরশীল। আমাদের রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স, বিদেশি সাহায্য—এগুলো এখনো তাদের কাছ থেকে আসছে। আমাদের ব্রিজ, রাস্তা এখনো তাদের অর্থায়নে বাস্তবায়ন হয়। সুতরাং তাদের ওপর এখনো আমাদের নির্ভরতা আছে। তাই তারা কী বলে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছে। বিরোধীদের দমন-পীড়ন বন্ধ করতে বলছে।’

তিনি বলেন, ‘টাকা চুরি করেছে ঠিকই, কিন্তু এই টাকা তারা ভোগ করতে পারবে না। সরকারের পতন হলে এই টাকা ফেরত আনা হবে। পাচার করা টাকার ব্যাপারে সেসব দেশই এখন অনুসন্ধান করছে। আমার বাবা হত্যার ১৮ বছর পরও বিচার পাইনি। তারেক-জোবাইদার যে রায়, তা জনগণ মানে না। শেখ হাসিনার জজরা এই যে রায় দেয়, সেটা আমরা মানি না।’

সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সরকার নামে মাত্র সরকার হিসেবে আছে। যদি সরকার থাকত, তাহলে হাজার হাজার, লাখ লাখ কোটি টাকা কীভাবে পাচার হয়? বেগম জিয়াকে ছাড়েন। নইলে জনগণ তাঁকে জেল ভেঙে নিয়ে আসবে। পৌনে ২ লাখ মামলায় ৪০ লাখ লোককে আসামি দিয়েছেন। এখন এসব বন্ধ করে পদত্যাগ করে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ তৈরি করেন।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী নাগরিক দলের সহসভাপতি ইসমাইল হোসেন সরকারসহ অন্যরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মরদেহ এভারকেয়ার থেকে নেওয়া হয়েছে ফিরোজায়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহ এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে নেওয়া হয়েছে তাঁর গুলশানের বাসভবন ফিরোজায়।

আজ বুধবার সকাল ৯টার কিছু সময় আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মরদেহবাহী গাড়ি ফিরোজার পথে রওনা হয়।

খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজা রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বুধবার বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা আয়োজনে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

জানাজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এবং নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউসহ রাজধানীতে ২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার প্রয়াণ

মিশে থাকবেন ধানের শীষে

  • ঢাকার হাসপাতালে ভোর ৬টায় খালেদা জিয়ার মৃত্যু।
  • আজ বেলা ২টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা।
  • জানাজায় আসা ব্যক্তিদের ব্যাগ বহন না করতে নির্দেশনা।
  • সাত দিনের শোকের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
কামরুল হাসান, ঢাকা 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জীবদ্দশায় জনসমক্ষে মাত্র দুবার কেঁদেছিলেন তিনি। প্রথমবার, যেদিন চট্টগ্রাম থেকে স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মরদেহ আনা হয়েছিল ঢাকায়। দ্বিতীয়বার, সেনানিবাসের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়ার পর। সেদিন দেশবাসী দেখেছিল তাঁর অশ্রুসিক্ত চোখ। এরপর আর কোনো দিন কেউ তাঁকে কাঁদতে দেখেনি। জেল-জুলুম, নির্যাতন, হিংসা-বিদ্বেষ, শত লাঞ্ছনাতেও তিনি ছিলেন অটল, অবিচল।

সেই আপসহীন নেত্রী, বিএনপির চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া জীবনের পরম সত্যের কাছে সঁপে দিলেন নিজেকে। এবার আর তিনি নিজে কাঁদলেন না; কোটি কোটি মানুষকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন পরপারে।

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ৮০ বছর বয়সে মৃত্যুকে বরণ করে নিলেন খালেদা জিয়া (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

দীর্ঘদিনের বন্দিদশায় মনে ও শরীরে ভেঙে পড়েছিলেন আপসহীন নেত্রী। কারাগারে থাকার সময় বিগত সরকার তাঁকে চিকিৎসার ন্যূনতম সুযোগও দেয়নি। জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের বিদায়ের পর সেই বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন তিনি। এরপর চিকিৎসা নিতে লন্ডনে যান চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি। লন্ডনে চিকিৎসায় তাঁর অনেকটা শারীরিক উন্নতি হয়। সেখানে বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করেন। দেশে ফিরে আসেন ৬ মে। সেদিন লাখো মানুষ তাঁদের প্রিয় নেত্রীর প্রত্যাবর্তন উদ্‌যাপন করছিলেন। বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় তাঁকে পৌঁছতে লেগে যায় দীর্ঘ সময়। তবে ফিরে আসার পর থেকে প্রায়ই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তেন তিনি। বয়সও ছিল অনেকটা প্রতিকূল। সর্বশেষ গত ২৩ নভেম্বর, রোববার, শেষবারের মতো এভারকেয়ার হাসপাতালে যান চিকিৎসা নিতে। এরপর ৩৮ দিন লড়াই করে মেনে নিলেন পরম সত্য। দেশবাসীর কাছ থেকে চিরবিদায় নিলেন তাঁদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়া।

এত দিন ধরে খালেদা জিয়াকে বাঁচিয়ে রাখতে পরিবার, দল ও সরকারের পক্ষ থেকে এমন কোনো প্রচেষ্টা ছিল না, যা করা হয়নি। তাঁকে ঘিরে চলছিল উন্নত চিকিৎসা, নিরবচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষণ আর দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বিত পরামর্শ। এর বাইরে পরিবারের সদস্যরা প্রতিদিন চোখ ভিজিয়েছেন প্রার্থনায়। সমর্থকেরা হাসপাতালের বাইরে অশ্রুসিক্ত হয়ে অপেক্ষায় থেকেছেন তাঁর সুস্থতা কামনায়। সারা দেশে সাধারণ মানুষ প্রিয় নেত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন মসজিদ-মন্দির-গির্জায়। দেশীয় চিকিৎসকদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও চীনের চিকিৎসকেরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে গেছেন, যেন সংকটের এই গভীর অন্ধকার ভেদ করে তিনি ফিরতে পারেন জীবনের আলোয়। সবার আকুতি ছিল একটাই—খালেদা জিয়া বেঁচে থাকুন, সুস্থ হয়ে আবার উঠে দাঁড়ান।

হাসপাতালে ভর্তির পর খালেদা জিয়াকে অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মর্যাদা দিয়ে সম্মানিত করেছিল সরকার। তাঁর নিরাপত্তায় নিয়োগ করা হয়েছিল এসএসএফ। কিন্তু পৃথিবীর কোনো পাহারার কি সাধ্য আছে মৃত্যুদূতকে ঠেকানোর? হয়তো রোগশয্যায় শুয়ে তিনিও লড়াই করে যাচ্ছিলেন মৃত্যুর সঙ্গে। যে লড়াইয়ে মানুষের হারই হয় অনিবার্য।

খালেদা জিয়ার মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো দেশ। শোক জানায় খালেদা জিয়ার নিজের দল বিএনপিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। দেশ-বিদেশের রাষ্ট্রনায়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও শোক জানান।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক এবং আজ বুধবার খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফনের দিনে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন।

মায়ের মৃত্যুর পর বড় ছেলে তারেক রহমান বলেছেন, ‘আমার কাছে খালেদা জিয়া একজন মমতাময়ী মা, যিনি নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশ ও মানুষের জন্য।’

রাজনীতিবিদদের দীর্ঘ যাত্রাপথে উত্থান-পতন ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকে। মামলা-মোকদ্দমা, কারাবাস, জিঘাংসা কিংবা অন্ধ বিদ্বেষ—এর সবই রাজনীতিকদের জীবনে বারবার ফিরে আসে। খালেদা জিয়ার জীবন এসব ঝড়ঝাপটার মাঝে কঠিন এক পথরেখা এঁকে দিয়েছিল। ব্যক্তিগত জীবনে স্বামী-সন্তান হারানোর অসহনীয় শোক, অকারণ অপবাদ, দীর্ঘ রোগযন্ত্রণা—এসবের ভারও তাঁকে বয়ে বেড়াতে হয়েছে নিঃশব্দ দৃঢ়তায়।

মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে খালেদা জিয়ার জীবনে নেমে এসেছিল এক গভীর অন্ধকার। মেজর জিয়াউর রহমান যুদ্ধের অত্যন্ত সংকটময় মুহূর্তে প্রায় তিন শ সৈনিক নিয়ে বাসভবনের পাশ দিয়ে চলে যান। স্ত্রী-সন্তানের মুখ দেখার সুযোগটুকুও পাননি। ছোট দুই ছেলেকে বুকে নিয়ে বিপন্ন সময়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে নিঃসীম অপেক্ষায় থেকেছেন খালেদা জিয়া। এরপর চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পালিয়ে আসা, ঠিকানা বদলে আত্মগোপন করা আর অদৃশ্য আতঙ্কের সঙ্গে ছিল তাঁর প্রতিদিনের লড়াই। সবই তাঁর পিছু নিয়েছিল। ১৯৭১ সালের ২ জুলাই ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীর একটি বাড়ি থেকে পাকিস্তানি সেনারা তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এরপর বন্দী অবস্থায় একাকী কাটাতে হয় যুদ্ধের ভয়াবহ দিনগুলো। সময় স্বয়ং যেন তাঁর সহনশীলতার পরীক্ষা নিচ্ছিল।

স্বাধীনতার পরও খালেদা জিয়ার পথ ছিল অনাবৃত কণ্টকময়। মতাদর্শের দ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ব্যক্তিগত বিদ্বেষ, অসংখ্য দুর্বিনীত মন্তব্য—সবই তাঁকে বারবার আহত করেছে অন্তরে-বাইরে। বহু স্মৃতিবিজড়িত সেনানিবাসের বাড়ি থেকে ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর উচ্ছেদের মুহূর্তে সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁকে দেখা গিয়েছিল অশ্রুসিক্ত চোখে, অবিচল চিত্তে দাঁড়িয়ে থাকা এক দৃঢ়মানবী হিসেবে। এমন অজস্র ক্ষত-বিক্ষত ঘটনার ভিড়েও তিনি কখনো ভেঙে পড়েননি। সময়ের নির্মম আঘাত ও মানবিক নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে তাঁর নীরব প্রতিরোধ ছিল ধৈর্যের, মর্যাদার এবং নিজের ওপর অনিঃশেষ আস্থার। অনমনীয় দৃঢ়তায় তিনি বারবার প্রমাণ করেছেন, মানুষ যখন অন্তর্দীপ জ্বালিয়ে রাখে, তখন বাইরের ঝড় তাকে নত করতে পারে না।

খালেদা জিয়ার বাবা এস্কান্দার মজুমদারের আদি বাস ছিল ফেনী জেলার পরশুরাম থানার শ্রীপুর গ্রামে। পেশায় চা ব্যবসায়ী। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর পূর্ব ভারতের জলপাইগুড়ি থেকে চায়ের ব্যবসা বন্ধ করে তিনি স্থায়ীভাবে চলে আসেন বাংলাদেশের দিনাজপুরে। তার আগে জলপাইগুড়িতেই ১৯৪৬ সালে জন্ম হয় খালেদার। মা ছিলেন তৈয়বা বেগম।

এস্কান্দার মজুমদারের তিন মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে খালেদা তৃতীয়। জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হয় খালেদা খানম। তবে পরিবারের লোকেরা ডাকতেন ‘পুতুল’ নামে। দিনাজপুরের সেন্ট যোসেফ কনভেন্ট, দিনাজপুর সরকারি স্কুল এবং সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। ছোটবেলা থেকে তাঁর ছিল ফুলের প্রতি নিবিড় অনুরাগ। পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি থাকতে পছন্দ করতেন। পরিমিত আহার করতেন, ফল খেতেন বেশি। সাদা ভাত, সবজি, মসুর ডাল আর মাছ ছিল প্রিয় খাবার।

গ্রাম-বাংলার আর দশটা বালিকার মতো খালেদাও ফুল কুড়িয়ে বেড়ানো কিশোরী বয়স পেরোতে পারেননি। মাত্র ১৫ বছর বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। স্বামী তরুণ ও চৌকস সেনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমান। ১৯৬০ সালের ৫ আগস্ট দিনাজপুরের মুদিপাড়ার পৈতৃক বাড়িতে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তিনি ‘বেগম খালেদা জিয়া’ নামে পরিচিতি পান।

জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া দম্পতির দুই ছেলে—জ্যেষ্ঠ তারেক রহমানের জন্ম ১৯৬৫ সালের ২০ নভেম্বর এবং কনিষ্ঠ আরাফাত রহমান কোকোর জন্ম ১৯৭০ সালের ১২ আগস্ট। কোকো ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মালয়েশিয়ায় মারা যান। সেদিন কান্না ভুলে শোকে পাথর হয়ে ছিলেন খালেদা জিয়া।

তবে খালেদা জিয়ার সুখের খবর ছিল, বড় ছেলে তারেক রহমানের লন্ডনের নির্বাসিত জীবন থেকে ফিরে আসা। ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমান যেদিন ফিরে আসেন, সেদিন তিনি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের শয্যায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

খালেদা জিয়ার স্বামী জিয়াউর রহমান ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের একটি সেক্টরের কমান্ডার। ১৯৭৭ সালে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন। সে সময় খাল খননসহ নানা উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে হাত দেন তিনি। এরপর ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে শহীদ হন। ৩৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া মাত্র ২১ বছরের দাম্পত্যজীবন কাটিয়ে অকালবৈধব্য বরণ করেন। শুরু হয় তাঁর আরেক জীবন।

চট্টগ্রাম থেকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মরদেহ আনা হয় ঢাকায়। ১৯৮১ সালের ২ জুন রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে সেই জানাজায় লাখ লাখ মানুষ অংশ নেয়। সে সময় সবার দাবি ছিল, বিএনপি যেন ভেঙে না পড়ে। বাধ্য হয়ে বিএনপির হাল ধরেন খালেদা জিয়া। ১৯৮২ সালের ৪ জানুয়ারি তিনি দলের সাধারণ সদস্যপদ গ্রহণ করেন। শুরু হয় আটপৌরে গৃহবধূ থেকে রাজনীতিবিদ খালেদা জিয়ার আরেক জীবন। ১৯৮৪ সালে তিনি দলটির চেয়ারপারসনের দায়িত্ব নেন। নিজের ৪৩ বছরের রাজনৈতিক জীবনের ৪১ বছরই দেশের প্রধান একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দেন।

জিয়াউর রহমান শহীদ হওয়ার পর নানা টানাপোড়েনে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এইচ এম এরশাদ। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই তিনি স্বৈরাচারী হয়ে ওঠেন। শুরু হয় এরশাদবিরোধী আন্দোলন। সেই আন্দোলনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গঠিত হয় ৭-দলীয় ঐক্যজোট। ১৯৮৬ সালে তিনি জাতির কাছে দেওয়া অঙ্গীকার পূরণ করে জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার দৃঢ়প্রত্যয় ঘোষণা করেন। এরপরই তিনি জাতির কাছে হয়ে ওঠেন আপসহীন নেত্রী। এ সময় এরশাদ সরকার তাঁকে একাধিকবার আটক ও গৃহবন্দী করে রাখে। তবু এতটুকু টলেননি তিনি।

নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে এরশাদ ক্ষমতাচ্যুত হলে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে জিতে দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা জিয়া। ১৯৯১ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের কাছে শপথ গ্রহণ করেন। এরপর ১৯৯৬ সালে দ্বিতীয় এবং ২০০১ সালে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। রাজনৈতিক জীবনে খালেদা জিয়া ২৩টি সংসদীয় আসনে নির্বাচন করেছেন। কোনোটিতে কখনো পরাজিত হননি।

রাজনৈতিক জীবনে অনেক সাফল্য থাকলেও কিছু সমালোচনাও রয়েছে খালেদা জিয়ার। ক্ষমতায় থাকার সময় দুর্নীতি দমনে তিনিও সফল হননি। তাঁর আমলে দুর্নীতির ধারণা সূচক অনুযায়ী (২০০১-২০০৫) টানা পাঁচ বছর বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে বাংলাদেশ। এর বাইরে সার কেলেঙ্কারি, কানসাট হত্যাকাণ্ড, হাওয়া ভবন, ১০ ট্রাক অস্ত্রসহ বেশ কিছু ঘটনার কালিমা লাগে বিএনপির গায়ে। খালেদা জিয়াকেও তার মাশুল দিতে হয়।

খালেদা জিয়ার জীবন ছিল বিক্ষত ইতিহাসের দীর্ঘ পদ্য; যেখানে বারবার ফিরে এসেছে বন্দিত্বের অন্ধকার অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল সেই দিনে ২ জুলাই থেকে স্বাধীনতার চূড়ান্ত বিজয় পর্যন্ত তিনি সেনানিবাসের দেয়ালে আটকে ছিলেন এক নীরব প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে। ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর আবারও সেই সেনানিবাসের ঘর তাঁকে বন্দী করে শোক আর শূন্যতার মাঝে।

‘ওয়ান-ইলেভেন’ নামে কালচক্রের দুর্বিষহ পর্বে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে নিয়ে যাওয়া হয় বন্দিত্বের আরেক অন্ধ গহ্বরে—প্রথমে সেনানিবাসের শহীদ মইনুল সড়কের বাড়ি; পরে সংসদ ভবনের একটি নিরালা স্থাপনাকে সাবজেল ঘোষণার পর, সেখানে কাটাতে হয় এক বছর। সেই দিনগুলো ছিল অবরুদ্ধ বায়ুর মতো ভারী, নিশ্বাসহীন।

কিন্তু সবচেয়ে কঠিন সময় যেন অপেক্ষা করছিল পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত পুরোনো কারাগারে। ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়’ ২০১৮ সালে, সেখানে বিশেষ কারাগার ঘোষণা করে তাঁকে বন্দী করা হয়। নির্জন, কঠোর, শীতল সেই দেয়ালগুলো তাঁর শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার সাক্ষী হয়ে থাকে। তাঁকে দেওয়া হয় ১৭ বছরের দণ্ড; স্লো পয়জনিংয়ের অভিযোগে ঘনীভূত হয় আশঙ্কার কালোমেঘ। বিদেশে চিকিৎসার আবেদন একের পর এক নাকচ হয়, আর তিনি ধীরে ধীরে অসুস্থতার ভারে নুয়ে পড়েন।

মানবিক কারণে ২০২০ সালে দেওয়া হয় গৃহবন্দী অবস্থায় থাকার অনুমতি। তবু শর্ত ছিল রাজনীতির আলোয় না ফেরার। আর গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রপতির নির্বাহী আদেশে তাঁর দণ্ড মওকুফ হয়। কারা অন্তরাল ভেঙে তিনি ফিরে আসেন মুক্তির আলোয়।

এই জীবনগাথা শুধু একজন রাজনীতিকের নয়; এটি অগ্নিদগ্ধ সময়ের ভেতর দিয়ে হেঁটে যাওয়া এক দৃঢ়চেতা নারীর সংগ্রামের কবিতা। যিনি আর কখনো ফিরে আসবেন না বহু আকাঙ্ক্ষার পৃথিবীতে। তবে তিনি বেঁচে থাকবেন মানুষের মনে, ধানের শীষে; জাতীয়তাবাদের প্রতীক হয়ে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজার প্রস্তুতি নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজার প্রস্তুতি নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী

তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার বাদ জোহর বেলা ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশের জাতীয় নেতাকে সর্বস্তরের জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে সম্মান জানাতে পারে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে পারে, সে জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সব দপ্তর। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের চারপাশের সড়কগুলোতেও যেন জনসাধারণ অবস্থান করতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

জানাজার পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে।

এ সময় খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মনোনীত রাজনীতিবিদেরা উপস্থিত থাকবেন। দাফনকাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্নের জন্য সেখানে নির্ধারিত ব্যক্তিদের ব্যতীত আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। দাফনকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাসপাতালে খালেদার শেষ দিনগুলো

  • গত ২৩ নভেম্বর এভারকেয়ারে ভর্তি হন খালেদা জিয়া।
  • টানা ৩৮ দিন হাসপাতালে ছিলেন তিনি।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ০৮
হাসপাতালে খালেদার শেষ দিনগুলো

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এর আগেও অনেকবার গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে, আবার কখনো ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বাসায়। কিন্তু এবার আর তাঁর ফেরা হলো না। টানা ৩৮ দিন হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে লড়েছেন রোগের সঙ্গে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে এই হাসপাতালেই মৃত্যুকে বরণ করে নেন গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এই আপসহীন নেত্রী।

শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ২৩ নভেম্বর শেষ দফায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। ৮০ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সেখানে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। তবে শারীরিক অবস্থা দীর্ঘ পথ ভ্রমণের অনুকূলে না থাকায় সেটি আর সম্ভব হয়নি।

পরিবার ও দলীয় সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছিল। তবে মেডিকেল বোর্ডের মত ছিল, দীর্ঘ বিমানযাত্রা তাঁর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ফুসফুসে সংক্রমণ, শ্বাসকষ্ট, হৃদ্‌যন্ত্রের দুর্বলতা ও অন্যান্য জটিলতার কারণে ২৯ নভেম্বরের পর বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগ স্থগিত হয়। পরবর্তী সময়ে শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরিকল্পনা আর বাস্তবায়িত হয়নি। সেই সময়ই সরকার তাঁকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ঘোষণা করে। সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।

সম্প্রতি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস, জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান ছাড়াও রাজনৈতিক দলের নেতারা তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সঙ্গে সার্বক্ষণিক জড়িত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। গতকাল দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছিল। দেশি-বিদেশি খ্যাতনামা চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড দায়িত্বে ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট সিনাই ও জন হপকিন্স হাসপাতাল, যুক্তরাজ্যের লন্ডন ব্রিজ হাসপাতাল, লন্ডন ক্লিনিক ও কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা চিকিৎসা বোর্ডে যুক্ত ছিলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানও চিকিৎসক দলের সদস্য ছিলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফেরার পর নিয়মিত হাসপাতালে গিয়ে মায়ের চিকিৎসার তদারকি করতেন। সোমবার রাতেও মাকে দেখতে হাসপাতালে যান তিনি। এই রাতে ছেলে তারেক ছাড়াও পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান, বড় বোন সেলিনা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, দুই নাতনি জাইমা রহমান ও জাহিয়া রহমান এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে যান। রাত দুইটা নাগাদ পরিবারের সদস্যসহ হাসপাতাল ত্যাগ করেন তারেক রহমান। পরে সকাল ৬টার দিকে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর পায় দেশবাসী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত