Ajker Patrika

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

  • অন্তত ১২টি আসন যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের ছেড়ে দেবে বিএনপি
  • জামায়াত ২০০ আসনে দলীয় প্রার্থী দেবে, বাকি আসন সমমনা দলগুলোকে ছেড়ে দিতে পারে
  • জোট ও আসন সমঝোতা নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি এনসিপি
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪৯
ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অনেক আগে থেকে প্রার্থী চূড়ান্তের কাজ করছে রাজনৈতিক দলগুলো। তফসিল ঘোষণার পর সমমনাদের সঙ্গে নিয়ে শেষ মুহূর্তের হিসাব-নিকাশ কষছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ সব দল। সব ঠিক থাকলে চলতি সপ্তাহে আসন সমঝোতা শেষ করতে চায় তারা।

নির্বাচন সামনে রেখে দুই দফায় ২৭২ আসনের বিপরীতে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বিএনপি। অবশিষ্ট ২৮ আসনের মধ্যে অন্তত ১২টি আসন যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের জন্য জন্য ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। সব ঠিক থাকলে আজ মঙ্গলবার না হলেও আগামীকাল বুধবার বিএনপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে বলে জানা গেছে।

সূত্র বলছে, আলোচনার মধ্য দিয়ে শরিক দলগুলোর অনেক নেতার জন্য আসন ছাড়ের সবুজসংকেত দিয়েছে বিএনপি। তাঁরা হলেন গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ (ঢাকা-১৭), নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না (বগুড়া-২), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব অসুস্থ হওয়ায় তাঁর স্ত্রী তানিয়া রব (লক্ষ্মীপুর-৪), এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদের ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুক (চট্টগ্রাম-১৪), কুমিল্লা-৭ আসনে দলটির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ। এ ছাড়া জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের আমির উবায়দুল্লাহ ফারুককে সিলেট-৫, দলটির মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে নীলফামারী-১, জুনায়েদ আল হাবিবকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও মনির হোসেন কাসেমীকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনটি ছাড়ের সবুজসংকেত দেওয়া হয়েছে।

এদিকে নির্বাচনে অংশ নিতে সমমনা অনেক দলের নেতা নিজেদের দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগদান করেছেন। ৮ ডিসেম্বর ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বিএনপিতে যোগ দেন। তিনি লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি এলডিপি দলের হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেছিলেন। সমমনা ১২ দলীয় জোটের আরও এক শীর্ষ নেতা ও জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা গতকাল সোমবার বিএনপিতে যোগ দেন এবং নিজের আসন নিশ্চিত করেন। তিনি কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন।

শাহাদাত হোসেন সেলিম ও সৈয়দ এহসানুল হুদা ছাড়াও সমমনা দল ও জোটের আরও কয়েক নেতা বিএনপিতে যোগ দিতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। তাঁরা হলেন ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ও এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। এদিকে আসন সমঝোতা নিয়ে দর-কষাকষির মধ্যেই গণঅধিকার পরিষদের কোনো কোনো নেতা বিএনপিতে যোগদান করতে পারেন বলেও একটি সূত্র জানিয়েছে।

বিএনপি ২৭২ আসনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিল। এতে খুব বেশি রদবদলের সম্ভাবনা নেই বলে জানা গেছে। দলীয় সূত্র বলছে, এই তালিকা থেকে হাতে গোনা কয়েকজন প্রার্থীকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। কারা বাদ পড়তে যাচ্ছেন, সম্প্রতি প্রার্থীদের নিয়ে করা বিএনপির কর্মশালার মধ্য দিয়ে এর একটা ইঙ্গিত মিলেছে। গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গত বুধবার শুরু হয়ে মাঝে এক দিন বিরতি দিয়ে শনিবারে শেষ হয় ওই কর্মশালা। সেখানে তালিকায় স্থান পাওয়া প্রার্থীরা অংশ নেন। ২৭২ জনের তালিকায় নাম থাকার পরেও এই কর্মশালায় অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ পাননি কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ঝালকাঠি-২ আসনে ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো, চট্টগ্রাম-৬ আসনে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং যশোর-৬ আসনে কাজী রওনকুল ইসলাম। এসব আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে। আবার তালিকায় নাম না থাকার পরেও ডাক পেয়েছেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম-৪ আসনে ঘোষিত প্রার্থী কাজী সালাউদ্দিনকে না ডেকে আসলাম চৌধুরীকে কর্মশালায় ডাকা হয়েছে। নতুন ঘোষণায় বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।

সমমনা ৮ দলকে নিয়ে ৩০০ আসনের বিপরীতে প্রার্থী প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে জামায়াতে ইসলামী। চলতি সপ্তাহেই এই চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা হতে পারে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ২০০ আসনে জামায়াত দলীয় প্রার্থী দেবে। অবশিষ্ট ১০০টি আসন সমমনা দলগুলোকে ছাড় দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে জামায়াতের পক্ষ থেকে।

জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর নেতারা জানান, সমন্বিতভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্তের প্রক্রিয়া একেবারে শেষ পর্যায়ে। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের আগে প্রার্থী চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে। সব দলের প্রধানেরা এই বিষয় নিয়ে শিগগির আলোচনায় বসবেন। এর মধ্য দিয়ে প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবে। সব ঠিক থাকলে আজ-কালের মধ্যেই চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকার ঘোষণা আসবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ বলেন, ‘এখন একই আসনে আমাদের শরিক দলের একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন নিচ্ছেন। এটা দলের অনুমতি নিয়েই। কিন্তু ৮ দলের অঙ্গীকার অনুযায়ী পরে চূড়ান্ত প্রার্থী ছাড়া সবাই মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন।’ কোন দল কত আসনে নির্বাচন করবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা শুরু থেকে বলছি, দলের চেয়ে ব্যক্তির যোগ্যতা আর এলাকায় জনপ্রিয়তা ও সামর্থ্যকে গুরুত্ব দেব। তবু এত এত আসন, আর ৮টি দল হওয়ায় কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। নানা মানুষ ধরনা দিচ্ছেন প্রার্থী হওয়ার জন্য, এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আমাদের ৮ দলের অঙ্গীকার অনুযায়ী প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।’

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের কাজ প্রায় শেষ। আশা করছি চলতি সপ্তাহের মধ্যেই প্রার্থী ঘোষণা হবে।’

নির্বাচনী সমঝোতা আর জোট নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের জোটে আরও কয়েকটি দলের যোগ দেওয়ার বিষয়ে এখনো আলোচনা চলছে। নির্বাচনী সমঝোতার বিষয়ে আলোচনাও চলমান রয়েছে।’

এনসিপির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটে রয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। জেএসডি (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল) এবং ইসলামপন্থী একটি দলের একাংশের এই জোটে যুক্ত হওয়ার জোর সম্ভাবনা ছিল। তবে সেই সম্ভাবনা এখন ক্ষীণ হয়ে এসেছে বলে জানা গেছে।

গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নেতা বলেন, জোটে নতুন দল যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা এখন অনেক কম। তবে আলোচনা একেবারে ভেস্তে যায়নি।

১০ ডিসেম্বর ১২৫ আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে এনসিপি। বাকি আসনগুলোতে জোটসঙ্গীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে প্রার্থী দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল দলটি। নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার মাত্র সাত দিন বাকি। তবে এখনো বাকি আসনগুলোর প্রার্থীদের বিষয়ে ঘোষণা আসেনি। অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করা দুজন ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং মাহফুজ আলম এনসিপি থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানিয়েছেন একাধিক এনসিপি নেতা। যেকোনো সময় এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে বলেও জানান তাঁরা। তবে আসিফ মাহমুদ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনের কথা জানিয়েছেন। তিনি ইতিমধ্যে ঢাকা-১০ আসনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। অন্যদিকে মাহফুজ আলম এখনো নির্বাচনের ঘোষণা দেননি। তবে তিনি লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে এনসিপির প্রার্থী হবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এই দুই আসনের কোনোটিতেই এনসিপি এখনো প্রার্থী দেয়নি।

এনসিপির নেতৃত্বাধীন জোটের নেতারা জানান, ৩০০ আসনে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট প্রার্থী দেবে, সেভাবেই তালিকা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এই জোটের দল রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার ভুঁইয়া বলেন, ‘আমাদের আকাঙ্ক্ষা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার। সেভাবেই এখন চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ চলছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এই অবস্থায় নির্বাচন সময়মতো এবং ঠিকভাবে করা যাবে কি না, এটা নিয়ে আমরা প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন। আমরা ইতিমধ্যে সরকারকে জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশনকেও জানিয়েছি।’

এদিকে আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির (একাংশ) ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জাতীয় পার্টির (জেপি) নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সূত্রে জানা গেছে, জোটে থাকা ১৮টি দলের পক্ষ থেকে ৩০০ আসনের বিপরীতে ৬৫০ থেকে ৭০০ জনের নামের তালিকা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে জাতীয় পার্টির (একাংশ) পক্ষে ১৫০ আসন, জেপির পক্ষে ১০০ আসন, জনতার দলের পক্ষ থেকেও বেশ কিছু আসনের প্রার্থীর তালিকা দেওয়া হয়েছে। গত তিন দিন ধরে নেতারা আসনভিত্তিক যাচাই-বাছাই করছেন, যার ভিত্তিতে আজ মঙ্গলবার ৫০-১০০ আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে জোটটি। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগেই সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তবে এখন পর্যন্ত বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে আসন সমঝোতা করার পরিকল্পনা জোটটির নেই বলে সূত্র দাবি করেছে।

জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির (একাংশ) নির্বাহী চেয়ারম্যান মজিবুল হক চুন্নু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সব আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। কালকে (আজ মঙ্গলবার) হয়তো ৫০ থেকে ১০০ আসনের প্রার্থী ঘোষণা করতে পারি। বাকিগুলো ধাপে ধাপে মনোনয়ন জমা দেওয়ার (সময় শেষ) আগেই ঘোষণা করব। ’

জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করছে। ২৫ ডিসেম্বর দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করার কথা রয়েছে দলটির। গত রোববার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের পক্ষে রংপুর-৩ আসনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছে। দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে বহিষ্কৃত মহাসচিব মসিউর রহমান রাঁঙ্গাকেও।

জানতে চাইলে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আপাতত আমাদের জোট গঠনের কোনো চিন্তা নেই। দলগতভাবে ৩০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।’

দলটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ৩০০ আসনের নির্বাচনী প্রস্তুতি নেওয়া হলেও বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে দুই দফা আলোচনা হয়েছে বলে দাবি করছেন জাপার একাধিক নেতা। দলটির এক নেতা বলেন, ‘অনানুষ্ঠানিকভাবে সবচেয়ে বড় দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’ সেটি কি বিএনপি, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই নেতা বলেন, হ্যাঁ, বিএনপি। তাদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক হয়েছে। সেখানে আসন সমঝোতা নিয়ে আলাপ হয়েছে। তবে সেটি চূড়ান্ত হয়নি। মনোনয়ন প্রত্যাহারের আগেই সেটি চূড়ান্ত হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার মামলায় নিরীহ গ্রেপ্তারদের মুক্তি না দিলে বাড়বে ক্ষোভ: হেফাজত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার মামলায় নিরীহ গ্রেপ্তারদের মুক্তি না দিলে বাড়বে ক্ষোভ: হেফাজত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মামলায় গ্রেপ্তার নিরীহ সমালোচনাকারীদের মুক্তি দাবি করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি করেন হেফাজতের এই দুই নেতা।

বিবৃতিতে মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও সাজেদুর রহমান বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে যারা নিরীহ সমালোচনাকারী, তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় ভারতপন্থী পত্রিকা দুটির ওপর বাংলাদেশপন্থী ছাত্র-জনতার ক্ষোভ বাড়বে বই কমবে না।’

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশপন্থী ছাত্র-জনতার ‘শান্তিপূর্ণ’ প্রতিবাদ জারি থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান। তাঁরা বলেন, ‘প্রথম আলো-ডেইলি স্টার নিছক গণমাধ্যম নয়, বরং এ দেশে দিল্লির সাউথ ব্লকের অ্যাজেন্ডা ও বিশেষ মতাদর্শিক রাজনীতির ফুটসোলজার হিসেবে ভাড়া খাটা প্রতিষ্ঠান। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশপন্থী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জারি থাকবে।’

উল্লেখ্য, ১৮ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার ভবনের সামনে একদল লোক জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা ভবন দুটিতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন।

বিবৃতিতে এই দুই নেতা আরও বলেন, ‘মার্কিন ওয়ার অন টেররের সিপাহি ও ভারতপন্থী পত্রিকা হিসেবে সমালোচিত প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার অভিযোগে কোনো নিরীহ সমালোচনাকারীকে গ্রেপ্তার বা নির্যাতন করা যাবে না।’ তবে প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা সহিংস হওয়াও হেফাজতে ইসলাম সমর্থন করে না বলে জানান তাঁরা।

হেফাজতের দুই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, ‘এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে শুধু একজনের পরিচয়ে তাঁর প্রাক্তন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা মাদ্রাসার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এমন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত শয়তানির আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।’

মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও সাজেদুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে “জঙ্গি” ন্যারেটিভের গডফাদার প্রথম আলো। আর তার দোসর ডেইলি স্টার সেসব ন্যারেটিভ বিদেশিদের গলাধঃকরণ করিয়েছে। এভাবে পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে এ দেশের অগণিত আলেম, মাদ্রাসাছাত্র ও ধর্মপ্রাণ তরুণকে “জঙ্গিবাদের” তকমা দিয়ে জেল-জুলুমের সম্মতি উৎপাদন করা হয়েছিল। এর দায় পত্রিকা দুটি কখনো এড়াতে পারে না।’

মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও সাজেদুর রহমান আরও বলেন, ‘এক-এগারোর সময় পত্রিকা দুটির গণবিরোধী ভূমিকা আজও আমাদের জন্য সতর্কতা। প্রথম আলো-ডেইলি স্টার নিছক গণমাধ্যম নয়, বরং এ দেশে দিল্লির সাউথ ব্লকের অ্যাজেন্ডা ও বিশেষ মতাদর্শিক রাজনীতির ফুটসোলজার হিসেবে ভাড়া খাটা প্রতিষ্ঠান। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশপন্থী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জারি থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাতে-পায়ে শিকল পরিয়ে নির্বাচনে নয়, মুক্ত হয়ে এলাকায় যেতে চাই: আনিসুল ইসলাম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। ফাইল ছবি
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। ফাইল ছবি

দলীয় নেতাদের নামে থাকা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি (একাংশ) ও জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের (এনডিএফ) চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচনে যেতে চাই। কিন্তু আমার হাতে-পায়ে শিকল পরিয়ে নির্বাচনে যেতে বলেন, সেটা সম্ভব হবে না। আমি মুক্ত হতে চাই। মুক্ত হয়ে এলাকায় যেতে চাই।’

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে এনডিএফের প্রার্থী ঘোষণা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

নির্বাচনই সরকার গঠনের একমাত্র পথ উল্লেখ করে আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমেই সরকার গঠন বা পরিবর্তন হয়। সেটা করেছি বলে (বিগত তিন নির্বাচনে অংশ) আমরা সহযোগী, অপরাধী এবং আমাদের নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না।’

সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সংলাপে জাতীয় পার্টিকে আমন্ত্রণ না জানানোর সমালোচনা করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের ডাকেন নাই। জাতীয় পার্টির অপরাধটা কী ছিল? আনোয়ার হোসেন মঞ্জু সাহেব বলে গেছেন, আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি নির্লজ্জের মতো। আমাদের কেউ ডাকেনি, বলেনি। তারপরও নির্বাচনে যাচ্ছি, কারণ, আমরা নির্বাচনে বিশ্বাসী।’

সরকারের উদ্দেশে আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘আপনাদের মবোক্রেসি বন্ধ করুন। সরকারের অনেক পদধারী মানুষ বলছেন, মব কালচার ঠিক আছে। সে জন্য মব দিয়ে প্রথম আলো, ডেইলি স্টারকে আক্রমণ করেছে। উসকানিদাতাদের খোঁজার দরকার নেই, কারণ আপনাদের মধ্যে যাঁরা আছেন, তাঁরাই উসকানি দিচ্ছেন। কারণ, আপনাদের কিছু লোক বলেছেন, মবোক্রেসি ঠিক আছে, মবোক্রেসির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছি। সুন্দর করে কথা বললে দেশ রক্ষা হবে না, ব্যবস্থা নিতে হবে।’

নির্বাচনের নামে প্রহসন করা হচ্ছে জানিয়ে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করছেন না, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি করছেন না। আপনারা চান আমরা অস্ত্র নিয়ে জনগণের কাছে ভোট চাইব। কী করে এ কথা বলতে পারেন? আপনারা সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করলেন না, যেখানে আমাকে বন্দুক নিয়ে জনগণের কাছে ভোট চাইতে যেতে হবে।’

সরকারের উদ্দেশে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আপনার (সরকার) বলার দরকার ছিল, আমি পরিবর্তন করে দেব, যাতে নিশ্চিন্তে ভোটারদের কাছে যেতে পারেন। কিন্তু সেটা না করে বলছেন—আপনারা আপনাদের নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করুন। পকেটে বন্দুক নিয়ে যান, রিভলবার নিয়ে যান, অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যান। এ ভোট কি জুলাই আন্দোলনের ফসল? কখনোই না।’

জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মতো পরিবেশ থাকলে, পরিবেশ সৃষ্টি করা হলে এবং ‘‘মিথ্যা মামলা’’ প্রত্যাহার করা হলে... সময়ের ব্যাপার মাত্র। যাদের যাবজ্জীবন জেল হয়েছিল, তারা এখন বড় নেতা হয়ে গেছে। মামলা যারা খায়, তারা পরবর্তীকালে দেশ ও জাতির নেতা হয়। পুনরায় ক্ষমতায় আসে, দেশবাসীকে উপদেশ দেয়।’

সামনে দেশের পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করেন মঞ্জু। তিনি বলেন, ‘অবনতি হওয়ার সুনির্দিষ্ট সংকেত পাচ্ছি। কিন্তু তারপরও আমরা উদার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। নির্বাচন বয়কটের কথা চিন্তা করি না। কিন্তু সেটা চাপিয়ে দেওয়া হলে আমাদের কোনো উপায় নেই।’

জেপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘যখন কেউ ক্ষমতায় থাকে, তারা সবচেয়ে শক্তিশালী দল। কিন্তু যেদিন তারা ক্ষমতা থেকে নেমে যায়, তখন সবচেয়ে অসহায় দল তারা। এটা বাস্তব। বড় বড় দলের কথা বলছি। তাদের যন্ত্রণায় ঘুমানো যেত না, এখন তারা ঘুমায় কোথায় আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। এ জন্য সীমা লঙ্ঘন করা যাবে না।’

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে জাতীয় পার্টির (একাংশ) মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টা একটা ভালো নির্বাচন দিতে পারবেন, তিনি যখন চলে যাবেন, তখন শ্রদ্ধার সঙ্গে মনে রাখব। আমি এ ব্যাপারে সন্দিহান। তিনি পারবেন কি না, বলা কঠিন। আমরা সকলে তাকিয়ে আছি প্রধান উপদেষ্টা কী করেন।’

রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘দেশ এখন অনিরাপদ ও অগ্নিগর্ভ। সঙ্গে চলছে ভয়াবহ সন্ত্রাস। এই অবস্থায় সরকার কীভাবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নির্বাচন উপহার দেবে, তা আমাদের জানা নেই।’

রুহুল আমিন হাওলাদার আরও বলেন, তারেক জিয়া দেশে আসলে কী পরিবেশ, তা দেখার অপেক্ষায়। সেটা কি চর দখলের মতো নির্বাচন হবে, না নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং দেশে-বিদেশে সমাদৃত হবে এমন নির্বাচন নিয়ে অধিকাংশ মানুষের মনে সংশয় রয়েছে।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসী ও দাগি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করা হয় জানিয়ে জাতীয় পার্টির (একাংশ) নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘কিন্তু এবার তফসিল ঘোষণার পরে কোনো শুদ্ধি অভিযান দেখি না। কিন্তু দেখি একটি দলের নিরীহ কর্মীদের গ্রেপ্তার করার জন্য বলা হয়েছে।’

প্রার্থীদের অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার সমালোচনা করে চুন্নু বলেন, ‘এমনিতেই এত অস্ত্র। পাঁচ আগস্টের পরে যে অস্ত্র লুটপাট হয়েছে, তা এখনো উদ্ধার হয়নি। এখন যদি প্রার্থীরা অস্ত্র নেন, তাহলে তো এই অস্ত্র, ওই অস্ত্রের সঙ্গে যুদ্ধ হয়ে যাবে। কুরুক্ষেত্র হয়ে যাবে, কী নির্বাচন হবে এখানে! জীবনেও নির্বাচন সম্ভব না।’

দলটির নেতাদের নামে একাধিক ‘মিথ্যা মামলা’ রয়েছে বলে দাবি করেন চুন্নু। এসব মামলায় নির্বাচনের আগে গ্রেপ্তারের আশঙ্কা করে প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি সত্যিই যদি নির্বাচন করতে চান, তাহলে দয়া করে আমাদের মতো নির্বাচন পাগল মানুষদের নামে থাকা ‘‘মিথ্যা’’ মামলাগুলো প্রত্যাহার করেন।’

জাতীয় পার্টির (একাংশ) সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘নির্বাচন এমন একটা সময়ে হতে যাচ্ছে, যখন দেশের আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি। দেশে কার্যত কোন সরকার, সেটি নিয়ে জনগণের মনে প্রশ্নে জেগেছে। খোদ ঢাকার বুকে এক ঘণ্টা ধরে দুটো পত্রিকায় প্রথমে ভাঙচুর, লুটপাট ও তছনছ করল এবং অবশেষে অগ্নিসংযোগ করল, একজন পুলিশকে ডেকে পাওয়া গেল না। সাংবাদিকেরা প্রধান উপদেষ্টা হতে শুরু করে প্রত্যেক উপদেষ্টাকে ফোন করেছেন, কিন্তু কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বিএনপি নেতাদের ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল। ছবি: স্ক্রিনশট
জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বিএনপি নেতাদের ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল। ছবি: স্ক্রিনশট

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় নেতা-কর্মীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি ও বিশৃঙ্খলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গতকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হলে রাতেই বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ঢাকা-৬ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ইশরাক হোসেন।

‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম’-এর নবগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতেহা পাঠ করতে গিয়েছিলেন ইশরাক হোসেন। এই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত।

শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো এবং প্রোটোকল বজায় রাখা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ কয়েকজনকে ঠেলে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন ইশরাক হোসেন। ঠেলাঠেলি করে শেষ পর্যন্ত তিনি সামনে রিজভীর পাশে গিয়ে দাঁড়ান।

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সোমবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক দীর্ঘ পোস্টে ঘটনার ব্যাখ্যা দেন ইশরাক হোসেন। তিনি লেখেন—

‘নবগঠিত কমিটির সদস্যদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় নেতা–কর্মীদের ব্যাপক জনসমাগম ছিল। প্রোটোকল অনুসারে অতিথিদের স্বস্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা আহ্বায়ক হিসেবে আমার দায়িত্ব ছিল। সিরিয়াল ঠিক করার সময় আমাকে কিছুটা কঠোর অবস্থান নিতে হয়েছে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে কেউ মনঃকষ্ট পেয়ে থাকলে, আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’

ফেসবুক পোস্টে ইশরাক আরও বলেন, বর্তমান সময়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম’ সংগঠনটির ওপর বড় দায়িত্ব রয়েছে। একদিকে নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরা, অন্যদিকে যারা আজও বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মনে-প্রাণে স্বীকার করেনি, তাদের আস্ফালন রুখে দেওয়া। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, কালের পরিক্রমায় সত্য প্রকাশিত হবে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে: মির্জা ফখরুল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল। ছবি: স্ক্রিনশট
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল। ছবি: স্ক্রিনশট

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার কারণে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আরও কার্যকর ভূমিকা প্রত্যাশা করেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন। একই সংবাদ সম্মেলনে তিনি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে বিএনপির ‘আসন সমঝোতা’র আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও দেন।

আসন সমঝোতা অনুযায়ী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম চারটি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এবং ওই আসনগুলোতে বিএনপি কোনো প্রার্থী দেবে না। আসনগুলো হলো:

১. নীলফামারী-১: মাওলানা মো. মনজুরুল ইসলাম আফেন্দী।

২. নারায়ণগঞ্জ-৪: মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী।

৩. সিলেট-৫: মাওলানা মো. উবায়দুল্লাহ ফারুক।

৪. ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২: মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব।

বিএনপি মহাসচিব জানান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম তাদের নিজস্ব নির্বাচনী প্রতীক ‘খেজুর গাছ’ নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে। এই চারটি আসন বাদে সারা দেশের অন্য কোনো আসনে তারা প্রার্থী দেবে না।

উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে বিএনপি ইতিমধ্যে দুই দফায় ২৭২ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। বাকি ২৮ আসনের মধ্যে আজ ৪টি আসনে এই সমঝোতা সম্পন্ন হলো।

নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশ এখন অন্তর্বর্তীকালে আছে। আমরা এখন একটা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি। এর মধ্যে দেখা যাচ্ছে কিছু ব্যক্তি ও মহল এই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে ভয়ংকর চক্রান্ত করছে।’ তিনি এই চক্রান্ত রুখে দিয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আরও কার্যকর ভূমিকা প্রত্যাশা করেন।

সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে সরকারের দিক থেকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখা দরকার। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে তারা আইনশৃঙ্খলার দিকে পুরোপুরি দৃষ্টি দেবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।’ তিনি মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে না পারা সরকারের অন্যতম ব্যর্থতা।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ ছাড়াও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের আমির মাওলানা মো. উবায়দুল্লাহ ফারুক, মহাসচিব মাওলানা মো. মনজুরুল ইসলাম আফেন্দীসহ দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলন শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘এই সমঝোতা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথকে আরও সুগম করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত