Ajker Patrika

সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচন

তিন ইস্যু নিয়ে ভোটে সংশয়

  • সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জামায়াতসহ কিছু দলের। বিএনপি এটির বিপক্ষে।
  • সংসদ নির্বাচন আগে, নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে—এ নিয়েও বিভক্তি।
  • প্রতিশ্রুত সময়ে জুলাই সনদ সই নিয়ে শঙ্কা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ জুন ২০২৫, ১১: ৫৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে, এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল যৌথ বিবৃতিতে। সে ক্ষেত্রে ওই সময়ের মধ্যেই সংস্কার এবং জুলাই হত্যাযজ্ঞের বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি‌ অর্জন করা প্রয়োজন হবে। এ লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে এখন পর্যন্ত মৌলিক কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় হিমশিম খাচ্ছে কমিশন। মোটাদাগে তিন বিষয়ে ঝুলে আছে আলোচনা। বিষয়গুলো সমাধান না হলে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সংশয় কাটছে না।

কখনো নেপথ্যে, কখনো আনুষ্ঠানিক সংলাপের যেটুকু প্রকাশ্যে আনা হয়েছে, তাতে এটা পরিষ্কার যে কী কী জোগাড়যন্ত্র করে, কীভাবে এবং ঠিক কখন জাতীয় নির্বাচন করা যাবে, সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বেশ দূরত্ব রয়ে গেছে। এ দূরত্ব থাকার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের সপ্তম দিন গতকাল রোববার তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রগতি হলেও সত্যি কথা হচ্ছে, আশাব্যঞ্জক অগ্রগতির ক্ষেত্রে আমরা খানিকটা পিছিয়ে আছি।’

বিএনপি ও সমমনা দলগুলো, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) মাঠে সক্রিয় দলগুলোর সাম্প্রতিক বক্তব্যে এটা পরিষ্কার যে আইনসভার গঠনপ্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে দলগুলো কমপক্ষে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো আগে জাতীয় নির্বাচন চায়; অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও এনসিপি চায় আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। তারা মনে করছে, ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচনে দল তিনটির ভালো করার সুযোগ আছে। এতে বিএনপি এককভাবে জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ ফল পেতে পারে, এমন ধারণা ভুল প্রমাণ করা যেতে পারে। এর বাইরে নির্বাচন কমিশন ও মাঠ প্রশাসনের অবস্থাও যাচাই হয়ে যেতে পারে।

আইনসভায় দলগুলোকে প্রতিনিধিত্বকারী সদস্যরা কী প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হবেন, তা নিয়েও আছে মতভেদ। বিএনপি ও সমমনারা চায়, আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হলে নিম্নকক্ষে প্রতিটি আসনে এমপিরা নির্বাচিত হবেন সরাসরি ভোটে; আর উচ্চকক্ষের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন নিম্নকক্ষে প্রাপ্ত আসনের আনুপাতিক হারে।

অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন চায়, উভয় কক্ষের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন দলগুলোর মোট প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে। আর এনসিপি চায় নিম্নকক্ষের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন সরাসরি ভোটে; আর উচ্চকক্ষে মোট প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে।

আগে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচন করার পর আনুপাতিক হারের বিধানের আওতায় আইনসভার নির্বাচন করা গেলে উভয় কক্ষে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও এনসিপির সদস্যসংখ্যা সরাসরি ভোটে নির্বাচনে জিতে আসা সদস্যের তুলনায় বেশি হতে পারে, এমন আশাবাদ আছে এই তিন দলে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও আইনসভায় সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের দাবিটি গত শুক্রবার ঢাকায় এক সমাবেশে জোরালোভাবে তুলেছে সংশ্লিষ্ট দলগুলো। ইসলামী আন্দোলনের আয়োজনে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ সমমনারা এ দাবি তোলে। এ দাবির বিরুদ্ধে অবস্থান থাকায় বিএনপি ও তার সমমনাদের সেখানে আমন্ত্রণ করা হয়নি।

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান মনে করেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া উচিত। এতে নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও দক্ষতা যাচাই করা যাবে। শুক্রবার সিলেটে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আদালতের মাধ্যমে জুলাই হত্যাযজ্ঞের কিছু অভিযোগের নিষ্পত্তি করা এবং পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার বাধ্যবাধকতা সংবিধানে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে প্রায় সব দল একমত হয়েছে।

চলতি জুনের মধ্যে মৌলিক বিষয়গুলোয় ঐকমত্যে পৌঁছানো গেলে সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আগামী মাসের শুরুর দিকে ‘জুলাই সনদ’ অথবা ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের’ একটি দেওয়া যেতে পারে, এমন আশা দেখিয়েছিল সরকার। বাস্তবে অনেক বিষয়ে দলগুলোর অনড় অবস্থানের ফলে জুলাই সনদ নিয়েও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগামী ১৬ জুলাই আবু সাঈদের মৃত্যুবার্ষিকীতে ‘জুলাই সনদ’ সইয়ের আশা ছিল ঐকমত্য কমিশনের। কিন্তু এটি সেদিনই সম্ভব না-ও হতে পারে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ।

দলগুলো নিজ নিজ অবস্থান থেকে বিভিন্ন দাবি জানানো এবং সরকারের ওপর চাপ তৈরির কৌশল নিলেও মুহাম্মদ ইউনূস ঠিক কী করতে যাচ্ছেন, সে বিষয়ে প্রশ্ন আছে প্রায় সব মহলে। লন্ডন থেকে ফেরার পর তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের আলোচনায় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ইস্যু হিসেবে সীমিত আকারের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার বিষয়টি এসেছে, এমন আভাস দিচ্ছেন উভয়ের ঘনিষ্ঠজনেরা। এ কারণে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির আলোচনার বিষয়বস্তু প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

অন্যদিকে, সরকারের ভেতর-বাইরে অনেকে মনে করছেন, আনুষ্ঠানিক সংলাপ ও অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের বাইরেও বিভিন্ন মহল নানা ইস্যুতে সংলাপের গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে প্রভাব খাটাচ্ছে। এতে করে ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টায় গতি আনা যাচ্ছে না।

জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কোনটি আগে হবে, সংসদে প্রতিনিধিত্ব কীভাবে নির্ণীত হবে, জুলাই সনদ হবে কি না—এসব নিয়ে আলোচনার মধ্যেই আরেকটি বিষয়ও বেশ জোরালোভাবে সামনে এসেছে। তা হলো সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য একটি কমিটি গঠনের বিষয়ও সংবিধানে যুক্ত করতে চায় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের এ প্রস্তাব সমর্থন করছে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপিসহ কয়েকটি দল। তবে এই ধরনের কমিটি গঠনকে নির্বাহী বিভাগের হাত-পা বেঁধে দেওয়ার শামিল বলে মনে করে বিএনপি। বিএনপির কারণে মৌলিক সংস্কার আটকে আছে বলে অভিযোগ করেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন।

সংলাপে বিএনপি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি গতকাল বলেন, ঐকমত্য কীভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় হবে, তা ঠিক করতে হবে। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেসব বিষয়ে সনদে আনা যেতে পারে। যেগুলোতে হবে না, সেগুলো এখন বাস্তবায়ন হবে না। ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সব প্রস্তাব এখনই মানতে হবে, সে ধারণা থেকে বের হওয়ার তাগিদও দেন তিনি।

সাংবিধানিক পদগুলোতে নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠনসংক্রান্ত সংবিধানে যুক্ত করার বিষয়টি গতকালের সংলাপে তুলে ধরেন জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি পরে সাংবাদিকদের বলেন, সার্চ কমিটি থাকলেও সাংবিধানিক পদে নিয়োগ হতো প্রধানমন্ত্রীর গোপন তালিকা থেকে। সংবিধানে বিষয়টি যুক্ত হলে প্রধানমন্ত্রীর হাত-পা বেঁধে দেওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, তা ভুল-বোঝাবুঝি থেকে বলা হচ্ছে, এমনটা তিনি মনে করেন।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করা এবং আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ছাড়া জাতীয় নির্বাচন হবে না, এমন দাবির বিপক্ষে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একেকজন একেকটা দাবি তুলে নির্বাচনকে পিছিয়ে, নির্বাচনের অবস্থা সর্বনাশ করে দিয়ে এ জাতির সর্বনাশ করতে চাচ্ছে।’ গতকাল ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এনসিপি মনে করে, সরকার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু তার কোনো উদ্যোগ নেই। এই অভিযোগ তুলে ধরে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম গতকাল বলেন, সরকার এ বিষয়ে ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়ায় এনসিপির উদ্যোগে আগামী ৩ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের গত ১০ মের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামায়াত আমিরের বিপক্ষে লড়তে কোনো চাপ বোধ করছি না: বিএনপির মিল্টন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৪
আগারগাঁওয়ের ইটিআই ভবনে মনোনয়নপত্র জমা দেন ঢাকা-১৫ আসনে বিএনপি মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী শফিকুল ইসলাম খান মিল্টন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগারগাঁওয়ের ইটিআই ভবনে মনোনয়নপত্র জমা দেন ঢাকা-১৫ আসনে বিএনপি মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী শফিকুল ইসলাম খান মিল্টন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-১৫ আসনে বিএনপি মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী ঢাকা মহানগর যুবদল নেতা শফিকুল ইসলাম খান মিল্টন বলেছেন, জামায়াতের আমিরের বিপক্ষে লড়ে তিনি কোনো চাপ অনুভব করছেন না।

আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও এই আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলীর কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন তিনি।

জামায়াতের আমিরের বিপক্ষে লড়ে চাপ অনুভব করছেন কিনা জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম খান মিল্টন বলেন, ‘আমি বিএনপির পক্ষ থেকে লড়ছি। জামায়াতের আমিরের বিপক্ষে লড়ে আমি কোনো চাপ বোধ করছি না। আমি মিরপুরের সন্তান। আমি আশা করছি এলাকাবাসী তাদের এলাকার সন্তানকে ভোট দেবেন।’

যুবদলের এই নেতা আরও বলেন, ‘আমি ঢাকা-১৫ আসনে মনোনয়ন দাখিল করেছি। আমি আশা করছি এই আসনের বাসিন্দারা নিরাপদে থাকবে। নারীরা নিরাপদে থাকবে। আমরা আশা করি ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন।’

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো প্রচারণা শুরু হয়নি। আশা করি নির্বাচন কমিশন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ব্যবস্থা করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-১৩ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ববি হাজ্জাজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইটিআই ভবনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ববি হাজ্জাজ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইটিআই ভবনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ববি হাজ্জাজ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-১৩ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী ববি হাজ্জাজ। আজ সোমবার সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) ভবনে ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও এই আসনের রিটার্নিং অফিসার মো. ইউনুচ আলীর কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি।

এ সময় ববি হাজ্জাদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আশাবাদী আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হবে। ইসি তাঁর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন।

কৌশলগত কারণে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জোটে ছিলাম, জোটে আছি। বিএনপির নেতা-কর্মীরা শুরু থেকেই আমাদের সহযোগিতা করছেন। কৌশলগত কারণে আমরা এক মার্কায় নির্বাচন করব। প্রথম থেকেই বিএনপি নেতা-কর্মীরা সহযোগিতা করছেন।

এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)-এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ নিজ দল ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্বাচনে আর কোনো আইনি বাধা নেই মান্নার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি

ঋণখেলাপির তালিকায় থাকা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। আজ সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক এই আদেশ দেন। এর ফলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর অংশ নিতে কোনো আইনি বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

মান্নার আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২ শতাংশ ঋণের টাকা পরিশোধ করে রি-শিডিউল করতে হয়। মান্না তাঁর থেকে বেশি টাকা পরিশোধ করেছেন। এরপর ব্যাংক তাঁর নোটিশ প্রত্যাহারও করেছেন। যে কারণে তাঁর নির্বাচন করতে বাধা নেই।

ইসলামী ব্যাংকের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম লিটন আজকের পত্রিকাকে বলেন, চেম্বার আদালত ঋণ খেলাপির তালিকা ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন। তাই মাহমুদুর রহমান মান্নার নির্বাচনে বাধা নেই।

এর আগে ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম দিতে নির্দেশনা চেয়ে মান্নার করা রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এরপর চেম্বার আদালতে আবেদন করেন তিনি। গতকাল রোববার আবেদনটি চেম্বার আদালতে উঠলে আজকের দিন পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বগুড়া বড়গোলা শাখা খেলাপি ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আদায়ে ১০ ডিসেম্বর নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান আফাকু কোল্ডস্টোরেজ লিমিটেডকে ‘কলব্যাক নোটিশ’ পাঠায়। নোটিশটি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ বি এম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর ঠিকানায় পাঠানো হয়।

মাহমুদুর রহমান মান্না আফাকু কোল্ডস্টোরেজের ৫০ শতাংশের অংশীদার আর এ বি এম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরী ২৫ শতাংশ এবং তাঁর স্ত্রী ইসমত আরা লাইজু ২৫ শতাংশ অংশীদার। নোটিশে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়।

পরে ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। গত বুধবার হাইকোর্ট মান্নার রিট খারিজ করে দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘জেবু’কে নিয়ে মানুষের কৌতূহল দেখে অবাক জাইমা, দীর্ঘ পোস্টে লিখলেন অনুভূতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
জেবু এখন জাইমাদের পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ছবি: জাইমার ফেসবুক প্রোফাইল
জেবু এখন জাইমাদের পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ছবি: জাইমার ফেসবুক প্রোফাইল

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমান সম্প্রতি তাঁর পোষা বিড়াল ‘জেবু’কে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি আবেগপূর্ণ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। জেবুকে ঘিরে সাধারণ মানুষের কৌতূহল দেখে জাইমা যেমন অবাক হয়েছেন, তেমনি প্রাণীর প্রতি মানুষের মমতা ও দায়িত্ববোধের বিষয়টিকেও সামনে এনেছেন।

জাইমা রহমান তাঁর লেখায় উল্লেখ করেছেন, জেবুকে যখন প্রথম বিড়ালছানা হিসেবে বাড়িতে আনা হয়েছিল, তখন কেউ ভাবেনি যে সে পরিবারের এত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠবে। জাইমার ভাষ্যমতে, তাঁর বাবা-মা (তারেক রহমান ও ডা. জুবায়দা রহমান) বাসায় ফিরে আগে জেবুর খবর নিতেন, তারপর মেয়ের খোঁজ করতেন। জাইমার মা যখন বাগানে কাজ করতেন বা হাঁটতে বের হতেন, জেবু সারাক্ষণ তাঁর চারপাশেই থাকত।

জাইমা আরও জানান, সন্ধ্যায় তারেক রহমানের অনলাইন মিটিংগুলো চলাকালীন জেবু শান্ত হয়ে তাঁর কোলে বসে থাকত এবং পরম আদরে সময় কাটাত। জাইমা মনে করেন, প্রাণীরা মানুষের মনের অবস্থা বুঝতে পারে। তাঁর মন খারাপ থাকলে জেবু তাঁর কোমল স্পর্শ দিয়ে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করত।

বর্তমানে জেবু মহাদেশ পেরিয়ে এক নতুন পরিবেশে এসেছে। জাইমা তাঁর লেখায় উল্লেখ করেন, পোষা প্রাণী নিয়ে আবাসন পরিবর্তন করা কতটা কঠিন। মানুষের মতো প্রাণীদের জন্যও এই পরিবর্তনটা বেশ কষ্টের ও বড় চ্যালেঞ্জের, এটা হয়তো মানুষ সব সময় পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারে না।

বিড়াল সাধারণত ‘মিউ মিউ’ করলেও জেবু একেবারেই তা করে না। জাইমা মজার ছলে জানান, জেবু আলমারিতে আটকে পড়লেও ডাকে না। তবে খুশি বা অবাক হলে পাখির মতো নরম স্বরে শব্দ করে। আবার অনুমতি ছাড়া কেউ তাকে কোলে নিলে হালকা বিরক্তি প্রকাশ করে। অন্য কোনো বিড়াল অপছন্দ হলে বেশ জোরে চিৎকার করতেও পিছপা হয় না সে।

জাইমা রহমানের মতে, কোনো প্রাণীর দায়িত্ব নেওয়া মানে আল্লাহর সৃষ্টির সেবা করা। জেবুর মাধ্যমে তাঁদের পরিবার ধৈর্য ও প্রাণীর প্রতি মমতা শিখেছে। তিনি বিশ্বাস করেন, যে ব্যক্তি কোনো অবলা জীবের দায়িত্ব নেওয়ার সুযোগ পায়, সে নিজের সম্পর্কে অনেক নতুন কিছু জানতে পারে যা আগে কখনো কল্পনাও করেনি। জাইমা মনে করেন, ভালোবাসা কোনো প্রজাতির সীমা মানে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত