Ajker Patrika

কারচুপির অভিযোগ আ.লীগ নেতাদেরই

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কারচুপির অভিযোগ আ.লীগ নেতাদেরই

সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন পরাজিত প্রার্থীরা। গতকাল বুধবার পর্যন্ত ২১ জন প্রার্থী এমন অভিযোগ এনেছেন। তাঁদের মধ্যে ১৯ জনই আওয়ামী লীগের নেতা। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। দুজন ১৪ দলীয় জোটের নেতা এবং নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন।

গতকাল পর্যন্ত ৯ জন প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে (ইসি) অভিযোগ জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। কেউ কেউ কমিশনে এসে করণীয় সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন। এর আগে ভোটকেন্দ্র দখল, জাল ভোট, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়াসহ নানা অভিযোগে ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন নির্বাচন বর্জন করার কথা জানান অর্ধশতাধিক প্রার্থী। 
নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করা কুষ্টিয়া-২ আসনের প্রার্থী জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, মাদারীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুস সোবহান গোলাপ ও বরগুনা-১ আসনের একই দলের ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু সংবাদ সম্মেলন করে কারচুপির অভিযোগ এনেছেন। গণমাধ্যমে ভোটে সূক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ করা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ফরিদপুর-২ আসনের মোহাম্মাদ জামাল হোসেন মিয়া, লালমনিরহাট-২ আসনের সিরাজুল হক, পাবনা-৩ আসনের মো. আব্দুল হামিদ, ময়মনসিংহ-১০ আসনের আবুল হোসেন ও কায়সার আহমেদ, রাজশাহী-১ আসনের গোলাম রব্বানী, রাজশাহী-৪ আসনের এনামুল হক, রাজশাহী-৫ আসনের ওবায়দুর রহমান ও রাজশাহী-৬ আসনের রাহেনুল হক রায়হান। এ ছাড়া ফলাফল ঘোষণার পরপরই কারচুপির অভিযোগ করেছেন ঢাকা-৫ আসনের একই দলের প্রার্থী হারুনর রশিদ মুন্না।

ইসি সূত্রে জানা যায়, ভোট নিয়ে ইসিতে অভিযোগ দিয়েছেন ফরিদপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমান দোলন, ঢাকা-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সানজিদা খানম, পিরোজপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রুস্তম আলী ফরাজী, রাজবাড়ী-২ আসনের নূরে আলম সিদ্দিকী, গোপালগঞ্জ-১ আসনের মো. কবির মিয়া, ঝিনাইদহ-১ আসনের নজরুল ইসলাম, ময়মনসিংহ-৩ আসনের সোমনাথ সাহা, রাজশাহী-২ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ১৪ দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা প্রমুখ। করণীয় সম্পর্কে খোঁজ নিতে গতকাল ইসিতে এসেছিলেন মানিকগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী মমতাজ বেগমসহ বেশ কয়েকজন।

সূত্র জানায়, কারচুপির অভিযোগ এনে গতকাল স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমান দোলন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে চিঠি দেন।

অনিয়মের ভিডিও, স্থিরচিত্রসহ তথ্য-প্রমাণাদি তুলে ধরে লিখিত অভিযোগে তিনি অনিয়ম হওয়া অর্ধশতাধিক কেন্দ্রের ভোট বাতিল করে পুনর্নির্বাচন চেয়েছেন। আরও কিছু কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনারও দাবি জানান তিনি। মৃত ও প্রবাসী ভোটারের ভোট নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর।

এ ছাড়া ভোটে কারচুপি, যোগসাজশে নির্বাচনী ফল পরিবর্তন ও কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ এনে ফলাফল স্থগিত চেয়ে সিইসিকে চিঠি দিয়েছেন সানজিদা খানম। রুস্তম আলী ফরাজী অভিযোগ করেছেন, ৫০টির বেশি ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজয়ী প্রার্থীর পক্ষে ২০ হাজার ভোট কেটে দিয়েছেন। ব্যাপক অনিয়ম, জালভোট ও পুনরায় গণনার দাবি জানিয়েছেন কবির মিয়া। ২১টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত ও পুনরায় ভোট গ্রহণের জন্য আবেদন করেছেন নজরুল ইসলাম। ভোট পুনর্গণনা, অবৈধ ফলাফল বাতিল এবং পুনরায় ভোট গ্রহণের আবেদন করেছেন সোমনাথ সাহা। অবশ্য অনিয়মের কারণে এই আসনের একটি কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হয়েছে। এই কেন্দ্রে আগামী শনিবার ভোট গ্রহণ করা হবে।

অভিযোগ জমার বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ আজকের পত্রিকাকে বলেন, যেসব অভিযোগ জমা পড়েছে, সেগুলো কমিশনে নথি আকারে উপস্থাপন করা হচ্ছে। কমিশন যে সিদ্ধান্ত দেবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮টির ফলাফল অনুযায়ী, নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন ২২২টিতে, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে। লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ১১টি আসনে এবং জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও কল্যাণ পার্টি ১টি করে আসনে বিজয়ী হয়েছে।

অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যে নির্বাচন। এখানেও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আসছে। নির্বাচন কমিশনের উচিত এগুলোর তদন্ত করে নির্বাচনকে কলুষমুক্ত করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন বহুদলীয় গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে: হাসনাত আবদুল্লাহ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চাকে শক্তিশালী করবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে এ মন্তব্য করেন তিনি।

হাসনাত লিখেছেন, ‘প্রায় দেড় যুগের নির্বাসন ভেঙে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ব্যক্তিগত কিংবা সাংগঠনিক অর্জনে সীমাবদ্ধ করতে নয়, বরং বাংলাদেশের ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবেই মূল্যায়ন করতে চাই। জনাব তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন প্রমাণ করে একজন বাংলাদেশি নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতার নিজ ভূমিতে ফেরার অধিকারকে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের মাধ্যমেও ঠেকিয়ে রাখা যায় না। স্বৈরাচার যত শক্তিশালীই হোক জনগণের রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তিকে চিরতরে দমিয়ে রাখতে পারে না।’

ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আরও লিখেছেন, ‘রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে জনাব তারেক রহমান ও তাঁর পরিবার যেভাবে রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, দীর্ঘ নির্বাসনে বাধ্য হয়েছেন, তা গত দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী শাসনের এক উন্মুক্ত দলিল। তবে মনে রাখা জরুরি এই প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়েছে হাজারো শহীদের রক্ত, অসংখ্য আহতের ত্যাগ এবং গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে। এই বাস্তবতা ক্ষমতার নয়, বরং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত লড়াইয়ে প্রাপ্ত বাস্তবতা।’

অভ্যুত্থান-পরবর্তী আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরে হাসনাত লিখেছেন, ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ভিন্নমত কোনো অপরাধ নয় বরং অধিকার, যেখানে রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে কাউকে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হতে হবে না, বরং রাষ্ট্রই তার সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। নতুন বাংলাদেশে গণতন্ত্র শুধু নির্বাচনের বেড়াজালে আবদ্ধ থাকবে না, বরং গণতন্ত্র হয়ে উঠবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠিত হওয়ার অধিকার এবং রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার ন্যায্য পরিবেশ নিশ্চিত করার সংজ্ঞা।

বিগত দেড় দশকের অবরুদ্ধ রাজনৈতিক পরিসর ভেঙে আজ আমরা যে মুক্ত বাংলাদেশের পথে হাঁটছি, সেখানে আইনের শাসন ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লড়াই। এই লড়াই যেন কোনো ব্যক্তি বা দলের মাঝে সীমাবদ্ধ না থাকে এবং জনগণের সার্বভৌমত্ব যেন পুনঃপ্রতিষ্ঠা পায়; সেটা নিশ্চিত করাও প্রত্যেকটি রাজনীতিবিদের দায়িত্ব।’

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও লিখেছেন, ‘জনাব তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন দেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চাকে আরও শক্তিশালী করবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি। তবে নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় সহাবস্থান, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সুস্থ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি গড়ে তোলাই এখন আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও লিখেছেন, ‘স্বদেশে প্রত্যাবর্তনকারী জনাব তারেক রহমানকে স্বাগত জানাই। বেগম জিয়া যেনো দ্রুতই সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অসম্পূর্ণ লড়াই পূর্ণ করার দিকনির্দেশনা দিতে পারেন সেই দোয়া করি। একইসাথে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামে তারেক রহমানের এই অংশগ্রহণ জনগণের প্রত্যাশা ও ইতিহাসের দায় পূরণে ভূমিকা রাখবেন এই কামনা করি। ইনকিলাব জিন্দাবাদ। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে মায়ের পাশে তারেক রহমানের দেড় ঘণ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২০
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে দেখতে যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে দেখতে যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখে এসেছেন ছেলে তারেক রহমান। স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে তিনি প্রায় দেড় ঘণ্টা মায়ের পাশে অবস্থান করেন। দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশের মাটিতে এই প্রথম জিয়া পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে হলেন।

তবে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানা যায়নি। এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার দলীয় পক্ষ থেকেও কোনো চিকিৎসক আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলেননি।

তবে গণমাধ্যমে আসা ছবিতে দেখা যায়, চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছেন তারেক রহমান। গত ২৩ নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগতে থাকা সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা চলছে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে।

দীর্ঘ দেড় যুগের নির্বাসিত জীবন শেষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তারেক রহমান। সেখানে উষ্ণ অভ্যর্থনা গ্রহণের পর তিনি ঢাকার ৩০০ ফুট সড়কে আয়োজিত সংবর্ধনা সমাবেশে যোগ দেন। প্রায় সোয়া তিন ঘণ্টা পর সেখানে পৌঁছে তিনি ১৫ মিনিটের মতো বক্তব্য দেন।

সংবর্ধনা শেষে বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে তারেক রহমানকে বহনকারী বাসটি এভারকেয়ার হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেয়। এ সময় জনসমাগমের কারণে বাসে উঠতে তাঁকে বেশ বেগ পেতে হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দীর্ঘ সময় ধরে নেতা-কর্মীদের সরিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর তিনি বাসে ওঠেন।

বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে লাল-সবুজ রঙের বাসটি এভারকেয়ার হাসপাতালের গেটে পৌঁছায় এবং বিকেল ৫টা ৫৪ মিনিটে তারেক রহমান হাসপাতালে প্রবেশ করেন। ঢাকায় পৌঁছানোর পর গুলশানের বাসায় প্রায় দুই ঘণ্টা বিশ্রাম শেষে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান, কন্যা জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে বিকেল ৫টার পর এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। পরে সেখানে তারেক রহমান তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন।

হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, এ জেড এম জাহিদ হোসেনসহ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় হাসপাতালের বাইরে জড়ো হওয়া বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।

মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটের দিকে তারেক রহমান হাসপাতাল ত্যাগ করেন। একই বাসে তাঁর স্ত্রী, কন্যা, ছোট ভাই প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা ওঠেন। পরে তাঁরা গুলশানের ২ নম্বর এলাকার ১৯৬ নম্বর বাসভবনের উদ্দেশে রওনা হন।

পথে রাস্তার দুই পাশে সাধারণ মানুষ ও নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানান তিনি। কেউ কেউ বাসের দিকে ফুল ছুড়ে দেন, আর তারেক রহমান হাত নেড়ে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাঁরা গুলশানের বাসভবনে পৌঁছান। সেখানেই আপাতত পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করবেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামীকাল ৩০০ ফুট-এয়ারপোর্ট রোডে বর্জ্য অপসারণ করবে বিএনপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০২
তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় অগণিত মানুষের সমাগম ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় অগণিত মানুষের সমাগম ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত অভূতপূর্ব জনসমাবেশ ঘিরে ৩০০ ফুটসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় সৃষ্ট বর্জ্য অপসারণ করবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। আগামীকাল শুক্রবার সকাল থেকে এই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আলমগীর পাভেল জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে অভূতপূর্ব জনসমাবেশে রাজধানীর জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে (৩০০ ফুট মহাসড়ক), এয়ারপোর্ট রোড ও সংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট সব বর্জ্য ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি স্বেচ্ছাশ্রমে আগামীকাল শুক্রবার সকাল থেকে অপসারণ কার্যক্রম শুরু করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে যেভাবে দেখছে বিশ্ব গণমাধ্যম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ১৭
বিমানবন্দর থেকে সংবর্ধনার জন্য নির্ধারিত মঞ্চের দিকে যাচ্ছেন তারেক রহমান। ছবি: রয়টার্স
বিমানবন্দর থেকে সংবর্ধনার জন্য নির্ধারিত মঞ্চের দিকে যাচ্ছেন তারেক রহমান। ছবি: রয়টার্স

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে ১৭ বছর পর তারেক রহমানের দেশে ফেরার ঘটনা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো গুরুত্বসহকারে কভার করেছে। সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে তাঁর ফেরাকে আগামী সংসদীয় নির্বাচন ও দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য এক মুখ্য ইভেন্ট হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ১৭ বছর নির্বাসন শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আজ বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেছেন। দলটি আশা করছে, তাঁর এই প্রত্যাবর্তন ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের আগে সমর্থকদের নতুন করে উদ্দীপ্ত করবে। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সংবর্ধনাস্থল পর্যন্ত সড়কের দুপাশে লাখো নেতা-কর্মী ও সমর্থক দলীয় পতাকা, ব্যানার ও ফুল হাতে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বিএনপির শীর্ষ নেতারা বিমানবন্দরে তাঁকে বরণ করেন।

রয়টার্স আরও লিখেছে, বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে তিনি জুতা খুলে পা রেখে বাংলাদেশের মাটি স্পর্শ করেন এবং এক মুঠো মাটি তুলে নেন। সমাবেশে তিনি ‘প্রিয় বাংলাদেশ’ বলে বক্তব্য শুরু করে সব ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা ও ঐক্যের অঙ্গীকার করেন। শান্তি, গণতন্ত্র ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের আহ্বান জানান তিনি।

১৭ বছর পর তাঁর দেশে ফিরে আসা আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও তীব্র করতে পারে বলেও মত দিয়েছে পত্রিকাটি।

অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) লিখেছে, তারেক রহমান লন্ডন থেকে নিজ দেশে ফিরে এসে সমর্থকদের উদ্দেশে নিরাপদ বাংলাদেশ গড়া এবং শান্তি ও ঐক্য ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছেন। রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল একটি সময়ে তিনি দেশে ফিরেছেন, যখন একটি অস্থায়ী প্রশাসনের অধীনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তাঁর দেশ।

কাতারভিত্তিক আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেরার সময় ঢাকা বিমানবন্দর থেকে যাত্রাপথে হাজার হাজার সমর্থক তারেক রহমানকে বর্ণাঢ্য অভ্যর্থনা দিয়েছেন। একাধিক মামলার কারণে দীর্ঘদিন দেশে ফিরতে পারেননি তিনি। ২০০৬–০৮ সালে সামরিক-সমর্থিত সরকারের আমলে নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতনের পর চিকিৎসার জন্য তিনি লন্ডনে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ মা খালেদা জিয়ার কারণে তাঁর দেশে ফেরা ব্যক্তিগতভাবেও জরুরি হয়ে ওঠে।

পত্রিকাটিতে তাঁর নেতৃত্বে বিএনপির আবারও ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে যাওয়ার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক জরিপে বিএনপির এগিয়ে থাকার ইঙ্গিত মিলেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন সামনে রেখে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন দেশের ভঙ্গুর রাজনৈতিক রূপান্তরে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিও তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবর খুব গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করেছে। সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, বাংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৭ বছর নির্বাসন শেষে দেশে ফিরেছেন। ৬০ বছর বয়সী তারেক রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে এবং প্রভাবশালী জিয়া পরিবারের প্রধান মুখ। ২০০৮ সাল থেকে তিনি লন্ডনে বসবাস করছিলেন। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় ফিরতে আশাবাদী।

তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে বাংলাদেশের নতুন বছরের রাজনৈতিক মূল ইভেন্ট হিসেবে দেখছে দি ইনডিপেনডেন্ট। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রায় ১৭ বছর স্বেচ্ছানির্বাসন শেষে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে ফিরেছেন। ৬০ বছর বয়সী তারেক রহমান ২০০৮ সালে সামরিক হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগের পর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনের আগে তাঁর ফেরাকে রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে দেখা হচ্ছে। কড়া নিরাপত্তায় তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় পৌঁছান। বিমানবন্দর থেকে তাঁর সংবর্ধনাস্থল পর্যন্ত বিপুল সমর্থকের ঢল নেমেছিল। সমাবেশে তিনি নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও ধর্মীয় সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেন। তাঁর মা খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ বলে তিনি হাসপাতালে যাওয়ার কথাও জানান।

তারেক রহমানের দেশে ফেরার রাজনৈতিক প্রভাব শুধু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ নয়। বিদেশি বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনাকে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা, মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতের মতামত নির্বাচনে একটি বড় সংকেত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত