রেজা করিম, ঢাকা

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি দল এরই মধ্যে দেশব্যাপী সম্ভাব্য প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে মাঠে সরব বিএনপির মনোনয়ন-প্রত্যাশীরাও। সব মিলিয়ে তৃণমূলে বইছে ভোটের হাওয়া।
আওয়ামী লীগ ছাড়া ভোটের মাঠে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় রয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এ ছাড়াও অন্য দলগুলোর মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, এলডিপি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি), গণঅধিকার পরিষদের নেতারাও তাঁদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। নির্বাচনীমুখী প্রচারে স্বতন্ত্র প্রার্থীরও দেখা মিলছে কোথাও কোথাও।
ত্রয়োদশ নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে বিএনপিতে প্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এটা চূড়ান্ত হবে। জানতে চাইলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকা'কে বলেন, মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য, সৎ, যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিগত দিনে কারা কতটা ভূমিকা রেখেছেন দলের জন্য, সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই দল প্রার্থী মনোনয়ন দেবে।
এদিকে নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে প্রচারে নেমেছে জামায়াতে ইসলামী। তবে সময় ও পরিস্থিতির প্রয়োজনে এতে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম। দলের নির্বাচনী প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৩০০ আসনে আমরা প্রার্থী দিয়েছি। প্রার্থীরা কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী নিজ নিজ এলাকায় প্রচারে নেমেছেন। কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও তা একেবারেই চূড়ান্ত নয়। সমমনাদের সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতা হলে প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন আসবে।
এদিকে আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে তৃণমূলে নির্বাচনী আমেজের চিত্র পাওয়া গেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতায় সরগরম হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ। ভোটারদের আস্থা অর্জনে প্রতিদিন নতুন নতুন কর্মসূচি হাতে নিচ্ছেন তাঁরা; ব্যস্ত রয়েছেন ঘরোয়া বৈঠক, জনসভা, সেমিনারের পাশাপাশি সামাজিক অনুষ্ঠান, দোয়া মাহফিল এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও। ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জনাকীর্ণ এলাকায় ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণে প্রচার-প্রচারণা ও মোটরসাইকেল শোডাউন করছেন অনেক প্রার্থী। স্থানীয় নেতাদের নির্বাচনী প্রচারকে চাঙা করতে কোথাও কোথাও আসছেন কেন্দ্রীয় নেতারাও।
সমানতালে বিএনপি-জামায়াত
মাদারীপুর-২ আসনে এত দিন ধরে রাজত্ব করে এসেছেন আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান খান। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে শাজাহান খান ও তাঁর ছেলে আসিব খানসহ এই এলাকার আরও অনেক নেতা কারাগারে। আওয়ামী লীগবিহীন ওই আসন কবজায় নিতে বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীও বেশ সরব। এই আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী আব্দুস সোবহান খান প্রচারে নেমেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে মাঠে নেমেছি। যুব ও সাধারণ জনগণের বিপুল সাড়া পাচ্ছি। তাই সাংগঠনিকভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী নির্বাচিত হবে বলে আমি আশাবাদী।’
একই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্তত ৭ জন মাঠে রয়েছেন এই মুহূর্তে। নিজ নিজ জায়গা থেকে তাঁরাও ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করছেন। এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দলের সহশিক্ষা-বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক নারী সংসদ সদস্য হেলেন জেরিন খান বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর বাংলাদেশের মানুষ ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত ছিলেন। আগামী নির্বাচনে সৎ, যোগ্যদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠাতে কাজ করব। আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগণের পাশে থাকতে চাই।’
বিএনপির মনোনয়নের দৌড়ে নবীন-প্রবীণের পাশাপাশি বহিষ্কৃতরাও
পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে বিএনপির টিকিটে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই জয় সুনিশ্চিত, এমনটা ধরে নিয়ে দলটির মনোনয়ন পেতে মরিয়া অনেকেই। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ নিবিড় রাখছেন, রাষ্ট্র সংস্কারে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা নিয়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। কোনোভাবেই যাতে মনোনয়নবঞ্চিত না হতে হয়, সে জন্য নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন তাঁরা। এটা করতে গিয়ে অনেক জায়গায় নিজেদের মধ্যে কোন্দলেও জড়িয়ে পড়ছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। ময়মনসিংহ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স; চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিচারপতি টি এইচ খানের সন্তান আফজাল এইচ খান; ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য ও হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সালমান ওমর রুবেল। জুলাই অভ্যুত্থানের আগে থেকেই তিন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মাঠে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন তাঁরা।
বিএনপির প্রার্থিতার দৌড়ে রয়েছেন হেভিওয়েট নেতা ও তরুণ প্রার্থী। দেশের অনেক জায়গায় মনোনয়ন পেতে তরুণ-প্রবীণের লড়াই বেশ জমে উঠেছে। বাগেরহাট-১ আসনে প্রার্থিতার দৌড়ে রয়েছেন একাধিক হেভিওয়েট ও তরুণ প্রার্থী। তাঁরা হলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান; বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান দিপু; বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মাসুদ রানা; জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সাবেক খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ স্বপন, ফকিরহাটের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ কামরুল ইসলাম। মনোনয়নপ্রত্যাশী এই ৫ নেতাই প্রচারে নেমেছেন সর্বশক্তি দিয়ে। আবার কেন্দ্রের সঙ্গেও তাঁদের প্রত্যেকেরই নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। এই প্রতিযোগিতা শেষে দলের কাছ থেকে সবুজ সংকেত কে পান, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এদিকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে অতীতে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন এমন অনেক নেতাও দলের মনোনয়নে এমপি হওয়ার আশা করছেন। ময়মনসিংহ-১১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চান দলটি থেকে বহিষ্কৃত ফখর উদ্দিন আহমেদ বাচ্চু। সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়ে দল তাঁকেই মনোনয়ন দেবে বলে তাঁর প্রত্যাশা। ফখর উদ্দিন আহমেদের দাবি, দলের হাইকমান্ড থেকে আশ্বাস পেয়েই তিনি নির্বাচনী প্রচারে নেমেছেন। যদিও এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ভালুকা উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, দলের হাইকমান্ড মনোনয়নের ব্যাপারে তাঁকেই আশ্বস্ত করেছেন।
অন্য এলাকার প্রার্থী নিয়েও রয়েছে আলোচনা। পাবনা-৩ আসনে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের প্রার্থী হতে পারেন, এমন খবর পাওয়া গছে। জাফির তুহিন পাবনা-২ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় বিএনপি তাঁকে পাবনা-৩ আসনে কাজ করার জন্য অনুমতি দিয়েছে, এমন খবর এলাকায় আসার পর চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এই আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও তুহিনকে নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন।
দুবারের সাবেক এমপি ও চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কে এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বাইরের কোনো প্রার্থীকে পাবনা-৩ আসনের মানুষ মানবে না। আশা করি, দল যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে।’
আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসানুল ইসলাম রাজা বলেন, ‘কেউ ধানের শীষ পেয়ে গেছেন মর্মে প্রচারণা চালাচ্ছেন; যাঁদের সুদীর্ঘকাল ধরে এই আসনের মাটি-মানুষের সাথে কোনো সম্পর্ক ছিল না। তিনি কিনা মন্ত্রী হওয়ার আশ্বাসে এই আসনের সাধারণ সহজসরল মানুষকে ধোঁকা দিয়ে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছেন।’
মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসাদুল ইসলাম হীরা বলেন, ‘দল থেকে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তাই আমি আমার মতো করে কাজ করে যাচ্ছি।’ হাসান জাফির তুহিন অবশ্য দাবি করেন, দেড় মাস আগে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই তাঁকে এখানে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দলের নির্দেশে আমি এখানে কাজ করছি। তারেক রহমান এই অঞ্চলের মানুষের জন্য আমাকে পাঠিয়েছেন। আশা করি, সবচেয়ে বেশি ভোটে এই আসনের মানুষ আমাকে বিজয়ী করবে।’
এদিকে বিএনপিতে মনোনয়ন নিয়ে দৌড়ঝাঁপে ব্যতিক্রমও আছে কোথাও কোথাও, যেখানে একক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের মৌলভীবাজার-৩ আসনে তাঁর ছেলে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।
মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে কোন্দল, দলাদলি ও মনোমালিন্যকে বড় কোনো সমস্যা হিসেবে দেখছেন না বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, ‘এত বড় একটা দলে (বিএনপি) এগুলো হয়েই থাকে। আশা রাখি সময়ের প্রয়োজনে সঠিক সময়ে সবাই এক হয়ে যাবে।’
জামায়াত আমিরকে নিয়ে আলোচনায় মৌলভীবাজার-১
তারকা নেতারা প্রার্থী হবেন, এমন সম্ভাব্যতার কারণে কোনো কোনো আসন এরই মধ্যে এসেছে আলোচনায়। মৌলভীবাজার-১ আসনে প্রার্থী দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান এই নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা। তিনিও এই আসনে প্রার্থী হতে পারেন। জামায়াত আমির এই আসনে প্রার্থী হবেন, স্থানীয় জামায়াতের নেতা-কর্মীদের এমনটাই চাওয়া বলে জানা গেছে। মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইয়ামীর আলী বলেন, ‘জামায়াতের আমিরের নিজ জন্মস্থান হওয়ায় এলাকার মানুষ উনাকে প্রার্থী হিসেবে চাচ্ছে। আমরাও চাচ্ছি। তৃণমূল মানুষের কথা আমরা কেন্দ্রে জানিয়েছি।’ অন্যদিকে আসনটিতে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও বেশ প্রভাবশালী। তাঁদের মধ্যে প্রবাসী দুই নেতার তারেক রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে তাঁরাও আলোচনায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভোটারদের প্রত্যাশা
আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট ও দোয়া চাচ্ছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যও দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ। বিভিন্ন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় চায়ের দোকান থেকে সর্বত্র মুখর রেখেছেন ভোটাররা। এবার সত্যিকার অর্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা তাঁদের।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি দল এরই মধ্যে দেশব্যাপী সম্ভাব্য প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে মাঠে সরব বিএনপির মনোনয়ন-প্রত্যাশীরাও। সব মিলিয়ে তৃণমূলে বইছে ভোটের হাওয়া।
আওয়ামী লীগ ছাড়া ভোটের মাঠে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় রয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এ ছাড়াও অন্য দলগুলোর মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, এলডিপি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি), গণঅধিকার পরিষদের নেতারাও তাঁদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। নির্বাচনীমুখী প্রচারে স্বতন্ত্র প্রার্থীরও দেখা মিলছে কোথাও কোথাও।
ত্রয়োদশ নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে বিএনপিতে প্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এটা চূড়ান্ত হবে। জানতে চাইলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকা'কে বলেন, মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য, সৎ, যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিগত দিনে কারা কতটা ভূমিকা রেখেছেন দলের জন্য, সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই দল প্রার্থী মনোনয়ন দেবে।
এদিকে নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে প্রচারে নেমেছে জামায়াতে ইসলামী। তবে সময় ও পরিস্থিতির প্রয়োজনে এতে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম। দলের নির্বাচনী প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৩০০ আসনে আমরা প্রার্থী দিয়েছি। প্রার্থীরা কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী নিজ নিজ এলাকায় প্রচারে নেমেছেন। কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও তা একেবারেই চূড়ান্ত নয়। সমমনাদের সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতা হলে প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন আসবে।
এদিকে আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে তৃণমূলে নির্বাচনী আমেজের চিত্র পাওয়া গেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতায় সরগরম হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ। ভোটারদের আস্থা অর্জনে প্রতিদিন নতুন নতুন কর্মসূচি হাতে নিচ্ছেন তাঁরা; ব্যস্ত রয়েছেন ঘরোয়া বৈঠক, জনসভা, সেমিনারের পাশাপাশি সামাজিক অনুষ্ঠান, দোয়া মাহফিল এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও। ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জনাকীর্ণ এলাকায় ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণে প্রচার-প্রচারণা ও মোটরসাইকেল শোডাউন করছেন অনেক প্রার্থী। স্থানীয় নেতাদের নির্বাচনী প্রচারকে চাঙা করতে কোথাও কোথাও আসছেন কেন্দ্রীয় নেতারাও।
সমানতালে বিএনপি-জামায়াত
মাদারীপুর-২ আসনে এত দিন ধরে রাজত্ব করে এসেছেন আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান খান। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে শাজাহান খান ও তাঁর ছেলে আসিব খানসহ এই এলাকার আরও অনেক নেতা কারাগারে। আওয়ামী লীগবিহীন ওই আসন কবজায় নিতে বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীও বেশ সরব। এই আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী আব্দুস সোবহান খান প্রচারে নেমেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে মাঠে নেমেছি। যুব ও সাধারণ জনগণের বিপুল সাড়া পাচ্ছি। তাই সাংগঠনিকভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী নির্বাচিত হবে বলে আমি আশাবাদী।’
একই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্তত ৭ জন মাঠে রয়েছেন এই মুহূর্তে। নিজ নিজ জায়গা থেকে তাঁরাও ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করছেন। এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দলের সহশিক্ষা-বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক নারী সংসদ সদস্য হেলেন জেরিন খান বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর বাংলাদেশের মানুষ ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত ছিলেন। আগামী নির্বাচনে সৎ, যোগ্যদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠাতে কাজ করব। আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগণের পাশে থাকতে চাই।’
বিএনপির মনোনয়নের দৌড়ে নবীন-প্রবীণের পাশাপাশি বহিষ্কৃতরাও
পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে বিএনপির টিকিটে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই জয় সুনিশ্চিত, এমনটা ধরে নিয়ে দলটির মনোনয়ন পেতে মরিয়া অনেকেই। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ নিবিড় রাখছেন, রাষ্ট্র সংস্কারে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা নিয়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। কোনোভাবেই যাতে মনোনয়নবঞ্চিত না হতে হয়, সে জন্য নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন তাঁরা। এটা করতে গিয়ে অনেক জায়গায় নিজেদের মধ্যে কোন্দলেও জড়িয়ে পড়ছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। ময়মনসিংহ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স; চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিচারপতি টি এইচ খানের সন্তান আফজাল এইচ খান; ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য ও হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সালমান ওমর রুবেল। জুলাই অভ্যুত্থানের আগে থেকেই তিন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মাঠে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন তাঁরা।
বিএনপির প্রার্থিতার দৌড়ে রয়েছেন হেভিওয়েট নেতা ও তরুণ প্রার্থী। দেশের অনেক জায়গায় মনোনয়ন পেতে তরুণ-প্রবীণের লড়াই বেশ জমে উঠেছে। বাগেরহাট-১ আসনে প্রার্থিতার দৌড়ে রয়েছেন একাধিক হেভিওয়েট ও তরুণ প্রার্থী। তাঁরা হলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান; বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান দিপু; বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মাসুদ রানা; জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সাবেক খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ স্বপন, ফকিরহাটের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ কামরুল ইসলাম। মনোনয়নপ্রত্যাশী এই ৫ নেতাই প্রচারে নেমেছেন সর্বশক্তি দিয়ে। আবার কেন্দ্রের সঙ্গেও তাঁদের প্রত্যেকেরই নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। এই প্রতিযোগিতা শেষে দলের কাছ থেকে সবুজ সংকেত কে পান, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এদিকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে অতীতে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন এমন অনেক নেতাও দলের মনোনয়নে এমপি হওয়ার আশা করছেন। ময়মনসিংহ-১১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চান দলটি থেকে বহিষ্কৃত ফখর উদ্দিন আহমেদ বাচ্চু। সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়ে দল তাঁকেই মনোনয়ন দেবে বলে তাঁর প্রত্যাশা। ফখর উদ্দিন আহমেদের দাবি, দলের হাইকমান্ড থেকে আশ্বাস পেয়েই তিনি নির্বাচনী প্রচারে নেমেছেন। যদিও এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ভালুকা উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, দলের হাইকমান্ড মনোনয়নের ব্যাপারে তাঁকেই আশ্বস্ত করেছেন।
অন্য এলাকার প্রার্থী নিয়েও রয়েছে আলোচনা। পাবনা-৩ আসনে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের প্রার্থী হতে পারেন, এমন খবর পাওয়া গছে। জাফির তুহিন পাবনা-২ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় বিএনপি তাঁকে পাবনা-৩ আসনে কাজ করার জন্য অনুমতি দিয়েছে, এমন খবর এলাকায় আসার পর চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এই আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও তুহিনকে নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন।
দুবারের সাবেক এমপি ও চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কে এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বাইরের কোনো প্রার্থীকে পাবনা-৩ আসনের মানুষ মানবে না। আশা করি, দল যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে।’
আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসানুল ইসলাম রাজা বলেন, ‘কেউ ধানের শীষ পেয়ে গেছেন মর্মে প্রচারণা চালাচ্ছেন; যাঁদের সুদীর্ঘকাল ধরে এই আসনের মাটি-মানুষের সাথে কোনো সম্পর্ক ছিল না। তিনি কিনা মন্ত্রী হওয়ার আশ্বাসে এই আসনের সাধারণ সহজসরল মানুষকে ধোঁকা দিয়ে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছেন।’
মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসাদুল ইসলাম হীরা বলেন, ‘দল থেকে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তাই আমি আমার মতো করে কাজ করে যাচ্ছি।’ হাসান জাফির তুহিন অবশ্য দাবি করেন, দেড় মাস আগে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই তাঁকে এখানে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দলের নির্দেশে আমি এখানে কাজ করছি। তারেক রহমান এই অঞ্চলের মানুষের জন্য আমাকে পাঠিয়েছেন। আশা করি, সবচেয়ে বেশি ভোটে এই আসনের মানুষ আমাকে বিজয়ী করবে।’
এদিকে বিএনপিতে মনোনয়ন নিয়ে দৌড়ঝাঁপে ব্যতিক্রমও আছে কোথাও কোথাও, যেখানে একক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের মৌলভীবাজার-৩ আসনে তাঁর ছেলে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।
মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে কোন্দল, দলাদলি ও মনোমালিন্যকে বড় কোনো সমস্যা হিসেবে দেখছেন না বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, ‘এত বড় একটা দলে (বিএনপি) এগুলো হয়েই থাকে। আশা রাখি সময়ের প্রয়োজনে সঠিক সময়ে সবাই এক হয়ে যাবে।’
জামায়াত আমিরকে নিয়ে আলোচনায় মৌলভীবাজার-১
তারকা নেতারা প্রার্থী হবেন, এমন সম্ভাব্যতার কারণে কোনো কোনো আসন এরই মধ্যে এসেছে আলোচনায়। মৌলভীবাজার-১ আসনে প্রার্থী দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান এই নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা। তিনিও এই আসনে প্রার্থী হতে পারেন। জামায়াত আমির এই আসনে প্রার্থী হবেন, স্থানীয় জামায়াতের নেতা-কর্মীদের এমনটাই চাওয়া বলে জানা গেছে। মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইয়ামীর আলী বলেন, ‘জামায়াতের আমিরের নিজ জন্মস্থান হওয়ায় এলাকার মানুষ উনাকে প্রার্থী হিসেবে চাচ্ছে। আমরাও চাচ্ছি। তৃণমূল মানুষের কথা আমরা কেন্দ্রে জানিয়েছি।’ অন্যদিকে আসনটিতে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও বেশ প্রভাবশালী। তাঁদের মধ্যে প্রবাসী দুই নেতার তারেক রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে তাঁরাও আলোচনায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভোটারদের প্রত্যাশা
আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট ও দোয়া চাচ্ছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যও দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ। বিভিন্ন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় চায়ের দোকান থেকে সর্বত্র মুখর রেখেছেন ভোটাররা। এবার সত্যিকার অর্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা তাঁদের।
রেজা করিম, ঢাকা

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি দল এরই মধ্যে দেশব্যাপী সম্ভাব্য প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে মাঠে সরব বিএনপির মনোনয়ন-প্রত্যাশীরাও। সব মিলিয়ে তৃণমূলে বইছে ভোটের হাওয়া।
আওয়ামী লীগ ছাড়া ভোটের মাঠে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় রয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এ ছাড়াও অন্য দলগুলোর মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, এলডিপি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি), গণঅধিকার পরিষদের নেতারাও তাঁদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। নির্বাচনীমুখী প্রচারে স্বতন্ত্র প্রার্থীরও দেখা মিলছে কোথাও কোথাও।
ত্রয়োদশ নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে বিএনপিতে প্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এটা চূড়ান্ত হবে। জানতে চাইলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকা'কে বলেন, মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য, সৎ, যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিগত দিনে কারা কতটা ভূমিকা রেখেছেন দলের জন্য, সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই দল প্রার্থী মনোনয়ন দেবে।
এদিকে নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে প্রচারে নেমেছে জামায়াতে ইসলামী। তবে সময় ও পরিস্থিতির প্রয়োজনে এতে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম। দলের নির্বাচনী প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৩০০ আসনে আমরা প্রার্থী দিয়েছি। প্রার্থীরা কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী নিজ নিজ এলাকায় প্রচারে নেমেছেন। কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও তা একেবারেই চূড়ান্ত নয়। সমমনাদের সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতা হলে প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন আসবে।
এদিকে আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে তৃণমূলে নির্বাচনী আমেজের চিত্র পাওয়া গেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতায় সরগরম হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ। ভোটারদের আস্থা অর্জনে প্রতিদিন নতুন নতুন কর্মসূচি হাতে নিচ্ছেন তাঁরা; ব্যস্ত রয়েছেন ঘরোয়া বৈঠক, জনসভা, সেমিনারের পাশাপাশি সামাজিক অনুষ্ঠান, দোয়া মাহফিল এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও। ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জনাকীর্ণ এলাকায় ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণে প্রচার-প্রচারণা ও মোটরসাইকেল শোডাউন করছেন অনেক প্রার্থী। স্থানীয় নেতাদের নির্বাচনী প্রচারকে চাঙা করতে কোথাও কোথাও আসছেন কেন্দ্রীয় নেতারাও।
সমানতালে বিএনপি-জামায়াত
মাদারীপুর-২ আসনে এত দিন ধরে রাজত্ব করে এসেছেন আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান খান। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে শাজাহান খান ও তাঁর ছেলে আসিব খানসহ এই এলাকার আরও অনেক নেতা কারাগারে। আওয়ামী লীগবিহীন ওই আসন কবজায় নিতে বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীও বেশ সরব। এই আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী আব্দুস সোবহান খান প্রচারে নেমেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে মাঠে নেমেছি। যুব ও সাধারণ জনগণের বিপুল সাড়া পাচ্ছি। তাই সাংগঠনিকভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী নির্বাচিত হবে বলে আমি আশাবাদী।’
একই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্তত ৭ জন মাঠে রয়েছেন এই মুহূর্তে। নিজ নিজ জায়গা থেকে তাঁরাও ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করছেন। এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দলের সহশিক্ষা-বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক নারী সংসদ সদস্য হেলেন জেরিন খান বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর বাংলাদেশের মানুষ ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত ছিলেন। আগামী নির্বাচনে সৎ, যোগ্যদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠাতে কাজ করব। আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগণের পাশে থাকতে চাই।’
বিএনপির মনোনয়নের দৌড়ে নবীন-প্রবীণের পাশাপাশি বহিষ্কৃতরাও
পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে বিএনপির টিকিটে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই জয় সুনিশ্চিত, এমনটা ধরে নিয়ে দলটির মনোনয়ন পেতে মরিয়া অনেকেই। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ নিবিড় রাখছেন, রাষ্ট্র সংস্কারে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা নিয়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। কোনোভাবেই যাতে মনোনয়নবঞ্চিত না হতে হয়, সে জন্য নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন তাঁরা। এটা করতে গিয়ে অনেক জায়গায় নিজেদের মধ্যে কোন্দলেও জড়িয়ে পড়ছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। ময়মনসিংহ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স; চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিচারপতি টি এইচ খানের সন্তান আফজাল এইচ খান; ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য ও হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সালমান ওমর রুবেল। জুলাই অভ্যুত্থানের আগে থেকেই তিন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মাঠে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন তাঁরা।
বিএনপির প্রার্থিতার দৌড়ে রয়েছেন হেভিওয়েট নেতা ও তরুণ প্রার্থী। দেশের অনেক জায়গায় মনোনয়ন পেতে তরুণ-প্রবীণের লড়াই বেশ জমে উঠেছে। বাগেরহাট-১ আসনে প্রার্থিতার দৌড়ে রয়েছেন একাধিক হেভিওয়েট ও তরুণ প্রার্থী। তাঁরা হলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান; বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান দিপু; বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মাসুদ রানা; জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সাবেক খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ স্বপন, ফকিরহাটের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ কামরুল ইসলাম। মনোনয়নপ্রত্যাশী এই ৫ নেতাই প্রচারে নেমেছেন সর্বশক্তি দিয়ে। আবার কেন্দ্রের সঙ্গেও তাঁদের প্রত্যেকেরই নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। এই প্রতিযোগিতা শেষে দলের কাছ থেকে সবুজ সংকেত কে পান, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এদিকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে অতীতে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন এমন অনেক নেতাও দলের মনোনয়নে এমপি হওয়ার আশা করছেন। ময়মনসিংহ-১১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চান দলটি থেকে বহিষ্কৃত ফখর উদ্দিন আহমেদ বাচ্চু। সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়ে দল তাঁকেই মনোনয়ন দেবে বলে তাঁর প্রত্যাশা। ফখর উদ্দিন আহমেদের দাবি, দলের হাইকমান্ড থেকে আশ্বাস পেয়েই তিনি নির্বাচনী প্রচারে নেমেছেন। যদিও এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ভালুকা উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, দলের হাইকমান্ড মনোনয়নের ব্যাপারে তাঁকেই আশ্বস্ত করেছেন।
অন্য এলাকার প্রার্থী নিয়েও রয়েছে আলোচনা। পাবনা-৩ আসনে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের প্রার্থী হতে পারেন, এমন খবর পাওয়া গছে। জাফির তুহিন পাবনা-২ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় বিএনপি তাঁকে পাবনা-৩ আসনে কাজ করার জন্য অনুমতি দিয়েছে, এমন খবর এলাকায় আসার পর চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এই আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও তুহিনকে নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন।
দুবারের সাবেক এমপি ও চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কে এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বাইরের কোনো প্রার্থীকে পাবনা-৩ আসনের মানুষ মানবে না। আশা করি, দল যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে।’
আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসানুল ইসলাম রাজা বলেন, ‘কেউ ধানের শীষ পেয়ে গেছেন মর্মে প্রচারণা চালাচ্ছেন; যাঁদের সুদীর্ঘকাল ধরে এই আসনের মাটি-মানুষের সাথে কোনো সম্পর্ক ছিল না। তিনি কিনা মন্ত্রী হওয়ার আশ্বাসে এই আসনের সাধারণ সহজসরল মানুষকে ধোঁকা দিয়ে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছেন।’
মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসাদুল ইসলাম হীরা বলেন, ‘দল থেকে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তাই আমি আমার মতো করে কাজ করে যাচ্ছি।’ হাসান জাফির তুহিন অবশ্য দাবি করেন, দেড় মাস আগে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই তাঁকে এখানে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দলের নির্দেশে আমি এখানে কাজ করছি। তারেক রহমান এই অঞ্চলের মানুষের জন্য আমাকে পাঠিয়েছেন। আশা করি, সবচেয়ে বেশি ভোটে এই আসনের মানুষ আমাকে বিজয়ী করবে।’
এদিকে বিএনপিতে মনোনয়ন নিয়ে দৌড়ঝাঁপে ব্যতিক্রমও আছে কোথাও কোথাও, যেখানে একক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের মৌলভীবাজার-৩ আসনে তাঁর ছেলে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।
মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে কোন্দল, দলাদলি ও মনোমালিন্যকে বড় কোনো সমস্যা হিসেবে দেখছেন না বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, ‘এত বড় একটা দলে (বিএনপি) এগুলো হয়েই থাকে। আশা রাখি সময়ের প্রয়োজনে সঠিক সময়ে সবাই এক হয়ে যাবে।’
জামায়াত আমিরকে নিয়ে আলোচনায় মৌলভীবাজার-১
তারকা নেতারা প্রার্থী হবেন, এমন সম্ভাব্যতার কারণে কোনো কোনো আসন এরই মধ্যে এসেছে আলোচনায়। মৌলভীবাজার-১ আসনে প্রার্থী দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান এই নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা। তিনিও এই আসনে প্রার্থী হতে পারেন। জামায়াত আমির এই আসনে প্রার্থী হবেন, স্থানীয় জামায়াতের নেতা-কর্মীদের এমনটাই চাওয়া বলে জানা গেছে। মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইয়ামীর আলী বলেন, ‘জামায়াতের আমিরের নিজ জন্মস্থান হওয়ায় এলাকার মানুষ উনাকে প্রার্থী হিসেবে চাচ্ছে। আমরাও চাচ্ছি। তৃণমূল মানুষের কথা আমরা কেন্দ্রে জানিয়েছি।’ অন্যদিকে আসনটিতে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও বেশ প্রভাবশালী। তাঁদের মধ্যে প্রবাসী দুই নেতার তারেক রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে তাঁরাও আলোচনায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভোটারদের প্রত্যাশা
আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট ও দোয়া চাচ্ছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যও দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ। বিভিন্ন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় চায়ের দোকান থেকে সর্বত্র মুখর রেখেছেন ভোটাররা। এবার সত্যিকার অর্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা তাঁদের।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি দল এরই মধ্যে দেশব্যাপী সম্ভাব্য প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে মাঠে সরব বিএনপির মনোনয়ন-প্রত্যাশীরাও। সব মিলিয়ে তৃণমূলে বইছে ভোটের হাওয়া।
আওয়ামী লীগ ছাড়া ভোটের মাঠে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় রয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এ ছাড়াও অন্য দলগুলোর মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, এলডিপি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি), গণঅধিকার পরিষদের নেতারাও তাঁদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। নির্বাচনীমুখী প্রচারে স্বতন্ত্র প্রার্থীরও দেখা মিলছে কোথাও কোথাও।
ত্রয়োদশ নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে বিএনপিতে প্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এটা চূড়ান্ত হবে। জানতে চাইলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকা'কে বলেন, মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য, সৎ, যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিগত দিনে কারা কতটা ভূমিকা রেখেছেন দলের জন্য, সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই দল প্রার্থী মনোনয়ন দেবে।
এদিকে নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে প্রচারে নেমেছে জামায়াতে ইসলামী। তবে সময় ও পরিস্থিতির প্রয়োজনে এতে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম। দলের নির্বাচনী প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৩০০ আসনে আমরা প্রার্থী দিয়েছি। প্রার্থীরা কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী নিজ নিজ এলাকায় প্রচারে নেমেছেন। কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও তা একেবারেই চূড়ান্ত নয়। সমমনাদের সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতা হলে প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন আসবে।
এদিকে আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে তৃণমূলে নির্বাচনী আমেজের চিত্র পাওয়া গেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতায় সরগরম হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ। ভোটারদের আস্থা অর্জনে প্রতিদিন নতুন নতুন কর্মসূচি হাতে নিচ্ছেন তাঁরা; ব্যস্ত রয়েছেন ঘরোয়া বৈঠক, জনসভা, সেমিনারের পাশাপাশি সামাজিক অনুষ্ঠান, দোয়া মাহফিল এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও। ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জনাকীর্ণ এলাকায় ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণে প্রচার-প্রচারণা ও মোটরসাইকেল শোডাউন করছেন অনেক প্রার্থী। স্থানীয় নেতাদের নির্বাচনী প্রচারকে চাঙা করতে কোথাও কোথাও আসছেন কেন্দ্রীয় নেতারাও।
সমানতালে বিএনপি-জামায়াত
মাদারীপুর-২ আসনে এত দিন ধরে রাজত্ব করে এসেছেন আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান খান। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে শাজাহান খান ও তাঁর ছেলে আসিব খানসহ এই এলাকার আরও অনেক নেতা কারাগারে। আওয়ামী লীগবিহীন ওই আসন কবজায় নিতে বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীও বেশ সরব। এই আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী আব্দুস সোবহান খান প্রচারে নেমেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে মাঠে নেমেছি। যুব ও সাধারণ জনগণের বিপুল সাড়া পাচ্ছি। তাই সাংগঠনিকভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী নির্বাচিত হবে বলে আমি আশাবাদী।’
একই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্তত ৭ জন মাঠে রয়েছেন এই মুহূর্তে। নিজ নিজ জায়গা থেকে তাঁরাও ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করছেন। এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দলের সহশিক্ষা-বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক নারী সংসদ সদস্য হেলেন জেরিন খান বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর বাংলাদেশের মানুষ ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত ছিলেন। আগামী নির্বাচনে সৎ, যোগ্যদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠাতে কাজ করব। আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগণের পাশে থাকতে চাই।’
বিএনপির মনোনয়নের দৌড়ে নবীন-প্রবীণের পাশাপাশি বহিষ্কৃতরাও
পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে বিএনপির টিকিটে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই জয় সুনিশ্চিত, এমনটা ধরে নিয়ে দলটির মনোনয়ন পেতে মরিয়া অনেকেই। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ নিবিড় রাখছেন, রাষ্ট্র সংস্কারে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা নিয়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। কোনোভাবেই যাতে মনোনয়নবঞ্চিত না হতে হয়, সে জন্য নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন তাঁরা। এটা করতে গিয়ে অনেক জায়গায় নিজেদের মধ্যে কোন্দলেও জড়িয়ে পড়ছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। ময়মনসিংহ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স; চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিচারপতি টি এইচ খানের সন্তান আফজাল এইচ খান; ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য ও হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সালমান ওমর রুবেল। জুলাই অভ্যুত্থানের আগে থেকেই তিন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মাঠে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন তাঁরা।
বিএনপির প্রার্থিতার দৌড়ে রয়েছেন হেভিওয়েট নেতা ও তরুণ প্রার্থী। দেশের অনেক জায়গায় মনোনয়ন পেতে তরুণ-প্রবীণের লড়াই বেশ জমে উঠেছে। বাগেরহাট-১ আসনে প্রার্থিতার দৌড়ে রয়েছেন একাধিক হেভিওয়েট ও তরুণ প্রার্থী। তাঁরা হলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান; বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান দিপু; বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মাসুদ রানা; জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সাবেক খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ স্বপন, ফকিরহাটের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ কামরুল ইসলাম। মনোনয়নপ্রত্যাশী এই ৫ নেতাই প্রচারে নেমেছেন সর্বশক্তি দিয়ে। আবার কেন্দ্রের সঙ্গেও তাঁদের প্রত্যেকেরই নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। এই প্রতিযোগিতা শেষে দলের কাছ থেকে সবুজ সংকেত কে পান, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এদিকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে অতীতে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন এমন অনেক নেতাও দলের মনোনয়নে এমপি হওয়ার আশা করছেন। ময়মনসিংহ-১১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চান দলটি থেকে বহিষ্কৃত ফখর উদ্দিন আহমেদ বাচ্চু। সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়ে দল তাঁকেই মনোনয়ন দেবে বলে তাঁর প্রত্যাশা। ফখর উদ্দিন আহমেদের দাবি, দলের হাইকমান্ড থেকে আশ্বাস পেয়েই তিনি নির্বাচনী প্রচারে নেমেছেন। যদিও এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ভালুকা উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, দলের হাইকমান্ড মনোনয়নের ব্যাপারে তাঁকেই আশ্বস্ত করেছেন।
অন্য এলাকার প্রার্থী নিয়েও রয়েছে আলোচনা। পাবনা-৩ আসনে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের প্রার্থী হতে পারেন, এমন খবর পাওয়া গছে। জাফির তুহিন পাবনা-২ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় বিএনপি তাঁকে পাবনা-৩ আসনে কাজ করার জন্য অনুমতি দিয়েছে, এমন খবর এলাকায় আসার পর চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এই আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও তুহিনকে নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন।
দুবারের সাবেক এমপি ও চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কে এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বাইরের কোনো প্রার্থীকে পাবনা-৩ আসনের মানুষ মানবে না। আশা করি, দল যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে।’
আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসানুল ইসলাম রাজা বলেন, ‘কেউ ধানের শীষ পেয়ে গেছেন মর্মে প্রচারণা চালাচ্ছেন; যাঁদের সুদীর্ঘকাল ধরে এই আসনের মাটি-মানুষের সাথে কোনো সম্পর্ক ছিল না। তিনি কিনা মন্ত্রী হওয়ার আশ্বাসে এই আসনের সাধারণ সহজসরল মানুষকে ধোঁকা দিয়ে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছেন।’
মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসাদুল ইসলাম হীরা বলেন, ‘দল থেকে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তাই আমি আমার মতো করে কাজ করে যাচ্ছি।’ হাসান জাফির তুহিন অবশ্য দাবি করেন, দেড় মাস আগে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই তাঁকে এখানে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দলের নির্দেশে আমি এখানে কাজ করছি। তারেক রহমান এই অঞ্চলের মানুষের জন্য আমাকে পাঠিয়েছেন। আশা করি, সবচেয়ে বেশি ভোটে এই আসনের মানুষ আমাকে বিজয়ী করবে।’
এদিকে বিএনপিতে মনোনয়ন নিয়ে দৌড়ঝাঁপে ব্যতিক্রমও আছে কোথাও কোথাও, যেখানে একক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের মৌলভীবাজার-৩ আসনে তাঁর ছেলে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।
মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে কোন্দল, দলাদলি ও মনোমালিন্যকে বড় কোনো সমস্যা হিসেবে দেখছেন না বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, ‘এত বড় একটা দলে (বিএনপি) এগুলো হয়েই থাকে। আশা রাখি সময়ের প্রয়োজনে সঠিক সময়ে সবাই এক হয়ে যাবে।’
জামায়াত আমিরকে নিয়ে আলোচনায় মৌলভীবাজার-১
তারকা নেতারা প্রার্থী হবেন, এমন সম্ভাব্যতার কারণে কোনো কোনো আসন এরই মধ্যে এসেছে আলোচনায়। মৌলভীবাজার-১ আসনে প্রার্থী দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান এই নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা। তিনিও এই আসনে প্রার্থী হতে পারেন। জামায়াত আমির এই আসনে প্রার্থী হবেন, স্থানীয় জামায়াতের নেতা-কর্মীদের এমনটাই চাওয়া বলে জানা গেছে। মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইয়ামীর আলী বলেন, ‘জামায়াতের আমিরের নিজ জন্মস্থান হওয়ায় এলাকার মানুষ উনাকে প্রার্থী হিসেবে চাচ্ছে। আমরাও চাচ্ছি। তৃণমূল মানুষের কথা আমরা কেন্দ্রে জানিয়েছি।’ অন্যদিকে আসনটিতে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও বেশ প্রভাবশালী। তাঁদের মধ্যে প্রবাসী দুই নেতার তারেক রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে তাঁরাও আলোচনায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভোটারদের প্রত্যাশা
আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট ও দোয়া চাচ্ছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যও দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ। বিভিন্ন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় চায়ের দোকান থেকে সর্বত্র মুখর রেখেছেন ভোটাররা। এবার সত্যিকার অর্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা তাঁদের।

কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না।
৫ ঘণ্টা আগে
লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান। সেখান থেকে সোজা এভারকেয়ার হাসপাতালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে গেছেন তিনি।
৫ ঘণ্টা আগে
ঢাকায় পৌঁছেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান। আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে জোবাইদা রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি (বিজি-৩০২) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
৬ ঘণ্টা আগে
কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না।
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যান্ত্রিক ত্রুটিই শুধু নয়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডনে যাওয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর শারীরিক অবস্থাও।
আজ শুক্রবার সকালে গণমাধ্যমে এমনটি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা ভালো না। এয়ারক্র্যাফটের সমস্যা আছে, একই সঙ্গে শারীরিক অবস্থাও ভালো না। এই অবস্থায় যাত্রার তারিখ বদল করা হয়েছে। এখন মেডিকেল বোর্ড বললে, ফ্লাই করার মতো থাকলে রোববার তাঁকে লন্ডনে নেওয়া হবে।’
এর আগে বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না। এর ফলে খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে রোববার ৭ ডিসেম্বর হতে পারে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার আসছে না। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে এটি শনিবার পৌঁছাতে পারে। ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা যদি যাত্রার জন্য উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দিলে, ইনশা আল্লাহ ৭ তারিখ (রোববার) তিনি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন।’
এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ইতিমধ্যে লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছেছেন। বিমানবন্দরে নেমে সরাসরি তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গেছেন।
বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এক নেতা আজকের পত্রিকাকে জানান, জোবাইদা রহমান এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডন ফিরবেন।
এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মধ্যে ডা. জাহিদ হোসেন, ডা. এনামুল হক চৌধুরী (চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা), ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী, ডা. সাহাবুদ্দিন তালুকদার, ডা. নুরুদ্দিন আহমেদ, ডা. মো. জাফর ইকবাল, ডা. মোহাম্মদ আল মামুন থাকবেন।
চিকিৎসক দলের বাইরে খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ সৈয়দা শামিলা রহমান, তারেক রহমানের সহকারী মো. আব্দুল হাই মল্লিক, খালেদা জিয়ার সহকারী একান্ত সচিব মো. মাসুদুর রহমান এবং গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম ও রুপা শিকদার ছাড়াও এসএসএফের দুজন সদস্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাবেন।
দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তখনই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নেওয়া হয় করোনারি কেয়ার ইউনিটে। সেদিন থেকে হাসপাতালেই রয়েছেন তিনি।
অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে এভারকেয়ার হাসপাতালের ১২ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারক করছে। চীন ও যুক্তরাজ্য থেকেও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গত কয়েক দিনে বাংলাদেশে এসে মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এই মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তেই খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হচ্ছে।

কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যান্ত্রিক ত্রুটিই শুধু নয়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডনে যাওয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর শারীরিক অবস্থাও।
আজ শুক্রবার সকালে গণমাধ্যমে এমনটি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা ভালো না। এয়ারক্র্যাফটের সমস্যা আছে, একই সঙ্গে শারীরিক অবস্থাও ভালো না। এই অবস্থায় যাত্রার তারিখ বদল করা হয়েছে। এখন মেডিকেল বোর্ড বললে, ফ্লাই করার মতো থাকলে রোববার তাঁকে লন্ডনে নেওয়া হবে।’
এর আগে বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না। এর ফলে খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে রোববার ৭ ডিসেম্বর হতে পারে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার আসছে না। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে এটি শনিবার পৌঁছাতে পারে। ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা যদি যাত্রার জন্য উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দিলে, ইনশা আল্লাহ ৭ তারিখ (রোববার) তিনি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন।’
এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ইতিমধ্যে লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছেছেন। বিমানবন্দরে নেমে সরাসরি তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গেছেন।
বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এক নেতা আজকের পত্রিকাকে জানান, জোবাইদা রহমান এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডন ফিরবেন।
এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মধ্যে ডা. জাহিদ হোসেন, ডা. এনামুল হক চৌধুরী (চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা), ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী, ডা. সাহাবুদ্দিন তালুকদার, ডা. নুরুদ্দিন আহমেদ, ডা. মো. জাফর ইকবাল, ডা. মোহাম্মদ আল মামুন থাকবেন।
চিকিৎসক দলের বাইরে খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ সৈয়দা শামিলা রহমান, তারেক রহমানের সহকারী মো. আব্দুল হাই মল্লিক, খালেদা জিয়ার সহকারী একান্ত সচিব মো. মাসুদুর রহমান এবং গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম ও রুপা শিকদার ছাড়াও এসএসএফের দুজন সদস্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাবেন।
দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তখনই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নেওয়া হয় করোনারি কেয়ার ইউনিটে। সেদিন থেকে হাসপাতালেই রয়েছেন তিনি।
অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে এভারকেয়ার হাসপাতালের ১২ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারক করছে। চীন ও যুক্তরাজ্য থেকেও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গত কয়েক দিনে বাংলাদেশে এসে মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এই মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তেই খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হচ্ছে।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি দল এরই মধ্যে দেশব্যাপী সম্ভাব্য প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।
২৬ আগস্ট ২০২৫
লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান। সেখান থেকে সোজা এভারকেয়ার হাসপাতালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে গেছেন তিনি।
৫ ঘণ্টা আগে
ঢাকায় পৌঁছেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান। আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে জোবাইদা রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি (বিজি-৩০২) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
৬ ঘণ্টা আগে
কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না।
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান। সেখান থেকে সোজা এভারকেয়ার হাসপাতালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে গেছেন তিনি।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টা ৫২ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছান তিনি।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেন জুবাইদা রহমান। বেলা পৌনে ১১টার কিছুক্ষণ আগে তাঁকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৩০২ ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
জুবাইদা রহমান বেলা ১১টা ২৪ মিনিটে বিমানবন্দরের ভিআইপি গেট দিয়ে বের হয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন।

লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান। সেখান থেকে সোজা এভারকেয়ার হাসপাতালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে গেছেন তিনি।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টা ৫২ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছান তিনি।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেন জুবাইদা রহমান। বেলা পৌনে ১১টার কিছুক্ষণ আগে তাঁকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৩০২ ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
জুবাইদা রহমান বেলা ১১টা ২৪ মিনিটে বিমানবন্দরের ভিআইপি গেট দিয়ে বের হয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি দল এরই মধ্যে দেশব্যাপী সম্ভাব্য প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।
২৬ আগস্ট ২০২৫
কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না।
৫ ঘণ্টা আগে
ঢাকায় পৌঁছেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান। আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে জোবাইদা রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি (বিজি-৩০২) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
৬ ঘণ্টা আগে
কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না।
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকায় পৌঁছেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান। আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে জোবাইদা রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি (বিজি-৩০২) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার পর তাঁকে বহনকারী বিমানের ফ্লাইট (বিজি-৩০২) হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে।
এর আগে দীর্ঘ ১৭ বছর পর গত ৬ মে দেশে এসেছিলেন জোবাইদা রহমান। এক মাস পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ব্যস্ত সময় কাটিয়ে ৫ জুন আবারো লন্ডন ফিরে যান তিনি।
এদিকে খালেদা জিয়াকে নেওয়ার জন্য কাতারের আমিরের যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স গতকাল রাতে ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি আসতে বিলম্ব হচ্ছে।
কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স গতকাল রাতে ঢাকায় পৌঁছাবে—গতকাল বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কথা বলেছিলেন। তবে সন্ধ্যার পর দলটির মিডিয়া উইং জানিয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কিছু টেকনিক্যাল (কারিগরি) সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ কারণে এর যাত্রা বিলম্বিত হবে। সর্বশেষ বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হওয়ায় আগামী রোববার খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হতে পারে।
খালেদা জিয়ার ১৪ জন সফরসঙ্গী
পুত্রবধূ সৈয়দা শামিলা রহমান, ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক জাহিদ হোসেন, এনামুল হক চৌধুরী (চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা), চিকিৎসক ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী, চিকিৎসক সাহাবুদ্দিন তালুকদার, চিকিৎসক নুরুদ্দিন আহমেদ, চিকিৎসক মোহাম্মদ জাফর ইকবাল, চিকিৎসক মোহাম্মদ আল মামুন, হাসান শাহরিয়ার ইকবাল (এসএসএফ), সৈয়দ সামিন মাহফুজ (এসএসএফ), আব্দুল হাই মল্লিক (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সহকারী), মাসুদের রহমান (অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রাইভেট সেক্রেটারি), ফাতেমা বেগম (গৃহকর্মী) ও রুপা শিকদার (গৃহকর্মী)।
জোবাইদা রহমানেরও এই তালিকায় সংযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুসের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সেখানেই ১২ দিন ধরে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর আগে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে গত ৬ মে দেশে ফেরেন তিনি।

ঢাকায় পৌঁছেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান। আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে জোবাইদা রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি (বিজি-৩০২) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার পর তাঁকে বহনকারী বিমানের ফ্লাইট (বিজি-৩০২) হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে।
এর আগে দীর্ঘ ১৭ বছর পর গত ৬ মে দেশে এসেছিলেন জোবাইদা রহমান। এক মাস পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ব্যস্ত সময় কাটিয়ে ৫ জুন আবারো লন্ডন ফিরে যান তিনি।
এদিকে খালেদা জিয়াকে নেওয়ার জন্য কাতারের আমিরের যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স গতকাল রাতে ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি আসতে বিলম্ব হচ্ছে।
কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স গতকাল রাতে ঢাকায় পৌঁছাবে—গতকাল বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কথা বলেছিলেন। তবে সন্ধ্যার পর দলটির মিডিয়া উইং জানিয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কিছু টেকনিক্যাল (কারিগরি) সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ কারণে এর যাত্রা বিলম্বিত হবে। সর্বশেষ বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হওয়ায় আগামী রোববার খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হতে পারে।
খালেদা জিয়ার ১৪ জন সফরসঙ্গী
পুত্রবধূ সৈয়দা শামিলা রহমান, ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক জাহিদ হোসেন, এনামুল হক চৌধুরী (চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা), চিকিৎসক ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী, চিকিৎসক সাহাবুদ্দিন তালুকদার, চিকিৎসক নুরুদ্দিন আহমেদ, চিকিৎসক মোহাম্মদ জাফর ইকবাল, চিকিৎসক মোহাম্মদ আল মামুন, হাসান শাহরিয়ার ইকবাল (এসএসএফ), সৈয়দ সামিন মাহফুজ (এসএসএফ), আব্দুল হাই মল্লিক (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সহকারী), মাসুদের রহমান (অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রাইভেট সেক্রেটারি), ফাতেমা বেগম (গৃহকর্মী) ও রুপা শিকদার (গৃহকর্মী)।
জোবাইদা রহমানেরও এই তালিকায় সংযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুসের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সেখানেই ১২ দিন ধরে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর আগে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে গত ৬ মে দেশে ফেরেন তিনি।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি দল এরই মধ্যে দেশব্যাপী সম্ভাব্য প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।
২৬ আগস্ট ২০২৫
কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না।
৫ ঘণ্টা আগে
লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান। সেখান থেকে সোজা এভারকেয়ার হাসপাতালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে গেছেন তিনি।
৫ ঘণ্টা আগে
কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না।
৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না। এর ফলে খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে রোববার ৭ ডিসেম্বর হতে পারে।
আজ সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বরাত দিয়ে দলের মিডিয়া সেলের এক ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পোস্টে বলা হয়, কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এখনো না পৌঁছানোয় বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার প্রক্রিয়া কিছুটা পিছিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার আসছে না। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে এটি শনিবার পৌঁছাতে পারে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা যদি যাত্রার জন্য উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দিলে, ইনশা আল্লাহ ৭ তারিখ (রোববার) তিনি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন।’

কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না। এর ফলে খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে রোববার ৭ ডিসেম্বর হতে পারে।
আজ সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বরাত দিয়ে দলের মিডিয়া সেলের এক ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পোস্টে বলা হয়, কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এখনো না পৌঁছানোয় বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার প্রক্রিয়া কিছুটা পিছিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার আসছে না। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে এটি শনিবার পৌঁছাতে পারে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা যদি যাত্রার জন্য উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দিলে, ইনশা আল্লাহ ৭ তারিখ (রোববার) তিনি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন।’

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি দল এরই মধ্যে দেশব্যাপী সম্ভাব্য প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।
২৬ আগস্ট ২০২৫
কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না।
৫ ঘণ্টা আগে
লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান। সেখান থেকে সোজা এভারকেয়ার হাসপাতালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে গেছেন তিনি।
৫ ঘণ্টা আগে
ঢাকায় পৌঁছেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান। আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে জোবাইদা রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি (বিজি-৩০২) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
৬ ঘণ্টা আগে