Ajker Patrika

নেজামের গুলি ও অসহায় পুলিশ

সম্পাদকীয়
নেজামের গুলি ও অসহায় পুলিশ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে দুই জামায়াত কর্মী নিহত হওয়ার পর এলাকাটি থমথমে হয়ে আছে। চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এ বিষয়ে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। একটি হলো, গোলাগুলির সময় যে অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, তার একটি কোতোয়ালি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র। দ্বিতীয়টি হলো, ঘটনার দিন নিহত নেজাম অস্ত্র ওপেন করেছিলেন।

৫ আগস্টের ক্ষমতা পরিবর্তনের পর ৪০০-এর বেশি থানা লুট হয়েছিল, সেখানে চলেছিল সহিংসতা, এ কথা সবাই জানেন। সে সময় পুলিশের অস্ত্র লুট হয়েছিল। এখন পর্যন্ত সব অস্ত্রের সন্ধান পাওয়া যায়নি। কোনো সন্দেহ নেই, যারা অস্ত্র লুট করেছিল, তারা সেই অস্ত্র ব্যবহারেরও চেষ্টা করবে। অনুমান করা যায়, বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীদের একটা অংশও এই লুটপাটের সঙ্গে যুক্ত ছিল। অরাজক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে আইনবহির্ভূত এই

তাণ্ডব চালানো হয়েছিল। গণ-অভ্যুত্থানের আগে পুলিশ যেভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছিল, তা ছিল ন্যক্কারজনক। কিন্তু তার বিপরীতে যে তাণ্ডব চালানো হয়েছে থানাতে, তারও প্রশংসা করা যাবে না।

পুলিশ বিভাগের মনোবল ভেঙে গিয়েছিল তখন। অনেকেই পালিয়েছিলেন। খুলে রেখেছিলেন পুলিশের পোশাক। এখনো পুলিশ আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে কাজ করছে—এ রকম কথা বলা যাবে না। মাঝে মাঝেই দেখা যায়, কয়েকজন মানুষ এক হয়ে সংঘবদ্ধভাবে থানায় গিয়ে উত্তপ্ত বাক্য নিক্ষেপ করছেন। পুলিশের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হচ্ছে, বিনা বাক্যব্যয়ে পুলিশ তা মেনে নিচ্ছে। ‘তৌহিদি জনতা’র নামে যারা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক তরুণীর সঙ্গে অন্যায় আচরণ করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মীকে শাহবাগ থানায় আটক করলে তৌহিদি জনতার নামে একদল লোক থানায় গিয়েছিল তাকে ছাড়িয়ে আনতে। এই তৌহিদি জনতা কী করে আইনের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠল, তার জবাব কে দেবে? সরকারের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হলে এ ধরনের মব ভায়োলেন্স এবং তৌহিদি জনতার নামে চালানো অরাজকতার বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।

জামায়াতের দুই কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনার যে প্রতিবেদনগুলো এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ৫ আগস্টের ক্ষমতা বদলের পর নেজাম উদ্দিন প্রকাশ্যে যে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিলেন, তা মোটেই প্রশংসাযোগ্য নয়। ঘটনার দিনও সিএনজিচালিত কয়েকটি অটোরিকশায় চেপে যে দলটি এসে ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় অনবরত গুলিবর্ষণ করতে থাকে, তাদেরই একজন এই নেজাম উদ্দিন। এই নেজাম উদ্দিনের সাঙ্গপাঙ্গরাই পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের সদস্য মানিক চেয়ারম্যানের বাড়িঘর, গরুর খামার, ইটভাটা, বাগান লুট করেছে। এলাকায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে। এবং ঘটনাস্থলে পাওয়া গেছে থানা লুটপাটের অস্ত্র!

রাষ্ট্রের আইনি শক্তিগুলোকে অসার করে রেখে অরাজকতার উপাসকদের শক্তিশালী করা হলে পরে কোনোভাবেই এদের লাগাম টেনে ধরার সুযোগ থাকবে না, এ কথাটা সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের মনে রাখা উচিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএসএমএমইউতে হেনস্তার ঘটনা নিয়ে যা বললেন প্রাণ গোপালের মেয়ে ডা. অনিন্দিতা

বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব: গ্রেপ্তার ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী

স্বাধীনতা দিবসে কুচকাওয়াজ কেন হচ্ছে না, ব্যাখ্যা দিলেন প্রেস সচিব

জামিনে বেরিয়েই ছদ্মনামে হাসপাতালে ভর্তি হন ‘ডিবি হেফাজতে’ মৃত এজাজ

নিউজিল্যান্ডের কাছে বাজে হারের ‘বদলা’ নেবেই পাকিস্তান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত