অরুণ কর্মকার
এতটা তর্কিত-বিতর্কিত আলোড়ন সৃষ্টিকারী বিদেশ সফর বাংলাদেশের আর কোনো সরকারপ্রধান করেছেন কি না সন্দেহ, যেমন সফর করলেন আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই নিবন্ধ গ্রন্থিত হওয়ার সময় পর্যন্ত সফরটি অবশ্য শেষ হয়নি। তাই এই সফর থেকে পাওয়া পরিপূর্ণ বার্তা এখানে পাওয়া যাবে না। তবে যা পাওয়া যাচ্ছে, তাকেও যথেষ্টই বলা যায়।
প্রধান উপদেষ্টা চার দিনের এই সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পৌঁছান ১০ জুন পূর্বাহ্ণে। অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাসের দায়িত্ব পালনকালে সরকারি ও রাষ্ট্রীয় মিলে এটি তাঁর একাদশ বিদেশ সফর। সফরের আগে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সফরকালে বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধান উপদেষ্টা। প্যালেসের এক অনুষ্ঠানে তিনি রাজা চার্লসের হাত থেকে গ্রহণ করবেন ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’। এ ছাড়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা। সাইড লাইনে অন্য কিছু দেখা-সাক্ষাৎ, কথাবার্তা তো থাকেই।
এই সফরের শুরুতে যে বিষয়টি অনেকেরই চোখ এড়িয়ে গেছে তা হলো, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কেউ কিংবা কেউই এই সফরে অন্তর্ভুক্ত হননি। আর একটি বিষয় সবারই নজরে এসেছে যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই আমরা ধরে নিয়েছি যে বিগত স্বৈর সরকারের সময় যুক্তরাজ্যে যে বিপুল অর্থ পাচার হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে, সেই সব অর্থ ফিরিয়ে আনা এবং সেই অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত ও সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা আটঘাট বেঁধে যাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে পাচার করা অর্থ দেশে আসার পথ সুগম হবে বলে দেশবাসী আশান্বিত হয়েছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিনিধি প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী না হওয়ার ঘটনা যে খটকার অস্পষ্ট আভাস দিয়েছিল, সেটি প্রকট হলো তখন, যখন দেখা গেল হিথ্রো বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার। সেখানে ব্রিটিশ সরকারের কোনো প্রতিনিধিও ছিলেন না। তখনই এই তর্কের শুরু যে এ কেমন সরকারি সফর! এরপর এই সফরের অনেক বিষয় নিয়ে নানা কথা হয়েছে। কিন্তু সরকারি সফর হওয়ার পরও আমাদের প্রধান উপদেষ্টাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে যুক্তরাজ্য সরকারের কোনো প্রতিনিধি কেন উপস্থিত ছিলেন না, সে বিষয়ে কোনো পক্ষ থেকেই টুঁ শব্দটিও শোনা যায়নি? ফলে অনেকের বদ্ধমূল ধারণা হতে পারে যে কোনো কোনো সরকারি সফরে এমনও হতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
এই সফরের পরের তর্কিত বিষয়টি হলো, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের বৈঠক। যেকোনো সরকারি সফরে সংশ্লিষ্ট দুই সরকারপ্রধানের মধ্যে একটি বৈঠক হয়েই থাকে। ১১ জুন ওই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানিয়ে দিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এরপর যুক্তরাজ্যের অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে। সেখানে একজন সংসদ সদস্য নাকি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী স্টারমার কানাডায় আছেন। সেই সূত্র ধরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব গণমাধ্যমকে বললেন, স্টারমার কানাডা সফরে থাকলেও তাঁরা চেষ্টা করছেন যাতে তাঁর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকটি হয়। এরপর জানা গেল স্টারমার যুক্তরাজ্যে তথা লন্ডনেই আছেন। তাঁর নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী কাজকর্ম করছেন।
এখন জানার বিষয় হলো, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব যে ১১ জুন বৈঠকটি হওয়ার কথা গণমাধ্যমের কাছে বললেন, তা কিসের ভিত্তিতে বলেছিলেন? দুই সরকারের অনুমোদিত এমন কোনো সূচি না থাকলে তো এমন কথা বলা যায় না! যদি তেমন কোনো সূচি থাকত, তা সত্ত্বেও যদি কোনো বিশেষ জরুরি পরিস্থিতিতে স্টারমারকে কানাডায় চলে যেতে হতো, তাহলেও তো সেটা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়ার কথা যুক্তরাজ্য সরকারেরই। এর কোনো কিছুই হলো না। অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের কোনো এমপি এসে বললেন যে স্টারমার কানাডায়। তার ভিত্তিতে কথা বলা, বিষয়টা ভাবতে গেলে বড়ই বিস্মিত হতে হয়। আমার জানতে ইচ্ছা করে কোন ব্রিটিশ এমপি স্টারমারের কানাডায় থাকার তথ্যটি জানিয়েছিলেন! নাকি এর সবই এলেবেলে কথা!
শেষ পর্যন্ত আসল তথ্যটি প্রকাশ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। এত দিনে সবাই জেনে গেছে যে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস রিপোর্ট করেছে—ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাহলে কি তিনি চান না বাংলাদেশ থেকে তাঁর দেশে পাচার হওয়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার/পাউন্ড বাংলাদেশে ফেরত আসুক! তিনি কি চান না অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত ও সুবিধাভোগীরা আইনের আওতায় আসুক! নাকি তাঁরা এখনো ভিন্ন পন্থায় প্রাচ্যের সম্পদ কুক্ষিগত করে সমৃদ্ধ হওয়ার ধারা অব্যাহত রাখতে চান! নাকি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাউকে বাঁচাতে চান! এসব প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই ওঠে। কিন্তু আবার যখন দেখা যায় সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পদ জব্দ করেছে সে দেশেরই সংশ্লিষ্ট একটি সংস্থা, তখন এই প্রশ্নেরই-বা কী ভিত্তি থাকতে পারে! তাহলে কি তাঁরা বাংলাদেশের তোলা দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সব অভিযোগ কিংবা কোনো কোনো অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে মনে করেন! হয়তোবা।
প্রধান উপদেষ্টার এই সফরের পরের যে বিষয়টি দেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সবার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, সেটি হলো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তাঁর বৈঠক। মূল বৈঠকটি হওয়ার কথা ‘ওয়ান টু ওয়ান’। অর্থাৎ সেই বৈঠকে শুধু মুহাম্মদ ইউনূস এবং তারেক রহমানই থাকবেন। তবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী লন্ডনে গেছেন।
সর্বশেষ খবর হলো, বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও মনে করেন ওই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
এতটা তর্কিত-বিতর্কিত আলোড়ন সৃষ্টিকারী বিদেশ সফর বাংলাদেশের আর কোনো সরকারপ্রধান করেছেন কি না সন্দেহ, যেমন সফর করলেন আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই নিবন্ধ গ্রন্থিত হওয়ার সময় পর্যন্ত সফরটি অবশ্য শেষ হয়নি। তাই এই সফর থেকে পাওয়া পরিপূর্ণ বার্তা এখানে পাওয়া যাবে না। তবে যা পাওয়া যাচ্ছে, তাকেও যথেষ্টই বলা যায়।
প্রধান উপদেষ্টা চার দিনের এই সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পৌঁছান ১০ জুন পূর্বাহ্ণে। অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাসের দায়িত্ব পালনকালে সরকারি ও রাষ্ট্রীয় মিলে এটি তাঁর একাদশ বিদেশ সফর। সফরের আগে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সফরকালে বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধান উপদেষ্টা। প্যালেসের এক অনুষ্ঠানে তিনি রাজা চার্লসের হাত থেকে গ্রহণ করবেন ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’। এ ছাড়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা। সাইড লাইনে অন্য কিছু দেখা-সাক্ষাৎ, কথাবার্তা তো থাকেই।
এই সফরের শুরুতে যে বিষয়টি অনেকেরই চোখ এড়িয়ে গেছে তা হলো, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কেউ কিংবা কেউই এই সফরে অন্তর্ভুক্ত হননি। আর একটি বিষয় সবারই নজরে এসেছে যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই আমরা ধরে নিয়েছি যে বিগত স্বৈর সরকারের সময় যুক্তরাজ্যে যে বিপুল অর্থ পাচার হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে, সেই সব অর্থ ফিরিয়ে আনা এবং সেই অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত ও সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা আটঘাট বেঁধে যাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে পাচার করা অর্থ দেশে আসার পথ সুগম হবে বলে দেশবাসী আশান্বিত হয়েছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিনিধি প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী না হওয়ার ঘটনা যে খটকার অস্পষ্ট আভাস দিয়েছিল, সেটি প্রকট হলো তখন, যখন দেখা গেল হিথ্রো বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার। সেখানে ব্রিটিশ সরকারের কোনো প্রতিনিধিও ছিলেন না। তখনই এই তর্কের শুরু যে এ কেমন সরকারি সফর! এরপর এই সফরের অনেক বিষয় নিয়ে নানা কথা হয়েছে। কিন্তু সরকারি সফর হওয়ার পরও আমাদের প্রধান উপদেষ্টাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে যুক্তরাজ্য সরকারের কোনো প্রতিনিধি কেন উপস্থিত ছিলেন না, সে বিষয়ে কোনো পক্ষ থেকেই টুঁ শব্দটিও শোনা যায়নি? ফলে অনেকের বদ্ধমূল ধারণা হতে পারে যে কোনো কোনো সরকারি সফরে এমনও হতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
এই সফরের পরের তর্কিত বিষয়টি হলো, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের বৈঠক। যেকোনো সরকারি সফরে সংশ্লিষ্ট দুই সরকারপ্রধানের মধ্যে একটি বৈঠক হয়েই থাকে। ১১ জুন ওই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানিয়ে দিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এরপর যুক্তরাজ্যের অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে। সেখানে একজন সংসদ সদস্য নাকি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী স্টারমার কানাডায় আছেন। সেই সূত্র ধরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব গণমাধ্যমকে বললেন, স্টারমার কানাডা সফরে থাকলেও তাঁরা চেষ্টা করছেন যাতে তাঁর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকটি হয়। এরপর জানা গেল স্টারমার যুক্তরাজ্যে তথা লন্ডনেই আছেন। তাঁর নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী কাজকর্ম করছেন।
এখন জানার বিষয় হলো, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব যে ১১ জুন বৈঠকটি হওয়ার কথা গণমাধ্যমের কাছে বললেন, তা কিসের ভিত্তিতে বলেছিলেন? দুই সরকারের অনুমোদিত এমন কোনো সূচি না থাকলে তো এমন কথা বলা যায় না! যদি তেমন কোনো সূচি থাকত, তা সত্ত্বেও যদি কোনো বিশেষ জরুরি পরিস্থিতিতে স্টারমারকে কানাডায় চলে যেতে হতো, তাহলেও তো সেটা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়ার কথা যুক্তরাজ্য সরকারেরই। এর কোনো কিছুই হলো না। অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের কোনো এমপি এসে বললেন যে স্টারমার কানাডায়। তার ভিত্তিতে কথা বলা, বিষয়টা ভাবতে গেলে বড়ই বিস্মিত হতে হয়। আমার জানতে ইচ্ছা করে কোন ব্রিটিশ এমপি স্টারমারের কানাডায় থাকার তথ্যটি জানিয়েছিলেন! নাকি এর সবই এলেবেলে কথা!
শেষ পর্যন্ত আসল তথ্যটি প্রকাশ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। এত দিনে সবাই জেনে গেছে যে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস রিপোর্ট করেছে—ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাহলে কি তিনি চান না বাংলাদেশ থেকে তাঁর দেশে পাচার হওয়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার/পাউন্ড বাংলাদেশে ফেরত আসুক! তিনি কি চান না অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত ও সুবিধাভোগীরা আইনের আওতায় আসুক! নাকি তাঁরা এখনো ভিন্ন পন্থায় প্রাচ্যের সম্পদ কুক্ষিগত করে সমৃদ্ধ হওয়ার ধারা অব্যাহত রাখতে চান! নাকি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাউকে বাঁচাতে চান! এসব প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই ওঠে। কিন্তু আবার যখন দেখা যায় সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পদ জব্দ করেছে সে দেশেরই সংশ্লিষ্ট একটি সংস্থা, তখন এই প্রশ্নেরই-বা কী ভিত্তি থাকতে পারে! তাহলে কি তাঁরা বাংলাদেশের তোলা দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সব অভিযোগ কিংবা কোনো কোনো অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে মনে করেন! হয়তোবা।
প্রধান উপদেষ্টার এই সফরের পরের যে বিষয়টি দেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সবার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, সেটি হলো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তাঁর বৈঠক। মূল বৈঠকটি হওয়ার কথা ‘ওয়ান টু ওয়ান’। অর্থাৎ সেই বৈঠকে শুধু মুহাম্মদ ইউনূস এবং তারেক রহমানই থাকবেন। তবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী লন্ডনে গেছেন।
সর্বশেষ খবর হলো, বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও মনে করেন ওই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুলাই। এই এক বছরের হিসাবনিকাশ অনেকেই করতে শুরু করেছেন—কী চেয়ে কী পেলাম। এক বছর আগে যে গণ-অভ্যুত্থান আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, তা নিছক একটি সাধারণ রাজনৈতিক ঘটনা নয়, বরং এমন একটি সামাজিক বিস্ফোরণ, যেখানে বহুদিন ধরে জমে থাকা ক্ষোভ, বঞ্চনা, অসন্তোষ এবং অবদমন একসঙ্গে...
১৩ ঘণ্টা আগেঠিক তিন বছর আগে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের জন্য বাহু প্রসারিত করেছিল ইউরোপ। আজ তারাই ভূমধ্যসাগরের ওপারে থাকা ৪০ লাখের বেশি ক্ষুধার্ত আফ্রিকানদের দিকে দৃষ্টি অন্ধ করে রেখেছে। তাদের দেখেও দেখছে না।
১৩ ঘণ্টা আগেমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে উচ্চ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। ঘোষিত হার অনুযায়ী, বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হতে পারে, যদিও তা আগামী ১ আগস্ট থেকে চালুর কথা বলা হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগেসরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে আরেকটা মিটিং হবে। কিন্তু চিঠি তো এসে গেছে। মানে সিদ্ধান্ত তো দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন সিদ্ধান্ত পরবর্তী পর্যায়ে কতটা নেগোসিয়েশনের সুযোগ আছে, সেইটা তো ওই চিঠিতে পরিষ্কার নয়। যদিও বলছে যে, তোমরা যদি নতুন প্রস্তাব নিয়ে আসো, আমরা সেটাকে বিবেচনা করব।
১ দিন আগে