নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টাতেও রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত আগুন পুরো নেভেনি। আহত হয়েছেন ২২ জন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। আমদানিকারকেরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। বিমানবন্দরের ভেতরে নজিরবিহীন এই অগ্নিকাণ্ডকে অনেকে রহস্যজনক বলছেন। অনেকে বলছেন, বিমানবন্দরে সার্বক্ষণিক ফায়ার ইউনিট থাকার পরও আগুন এভাবে ছড়িয়ে পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। ঘটনা তদন্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সাত সদস্যের ও কাস্টমস পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে গত মঙ্গলবার রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানা, চট্টগ্রামের ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানায় বৃহস্পতিবার অগ্নিকাণ্ডের পর গতকাল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন লাগল। প্রত্যক্ষদর্শী, ফায়ার সার্ভিস ও বিমানবন্দরের সূত্র জানায়, বেলা সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়। এটি বিমানবন্দরের ডাকঘর ও হ্যাঙ্গারের মাঝামাঝি স্থানে এবং ৮ নম্বর গেটের পাশে অবস্থিত। সামনে খোলা জায়গা থাকায় বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের এলাকা থেকেও ঘন কালো ধোঁয়া দেখা যায়।
আগুনের কারণে বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিমানবন্দরে থাকা উড়োজাহাজগুলো নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে সাধারণত তুলনামূলক কম ওজনের যন্ত্রপাতি, পচনশীল পণ্য ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী আমদানি হয়। এ ছাড়া পোশাক খাতসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহারের জন্য নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থও আসে। বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটটি হ্যাঙ্গার গেট নামে পরিচিত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনের সূত্রপাত আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনের তিনটি গেটের মধ্যে ২ নম্বর গেটের কুরিয়ার শাখা থেকে হয়েছে।
বিমানবন্দরে উপস্থিত বিমান বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানান, বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে অ্যালার্ম (সংকেত) বেজে ওঠে। এতে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স থেকে সব কর্মী দ্রুত বেরিয়ে আসেন। কর্মীদের অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো অনুমতিজনিত জটিলতার কারণে ৮ নম্বর ফটকে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। এই সময়েই আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। তখন ওই কমপ্লেক্সের সামনে উড়োজাহাজ পার্কিংয়ে থাকা উড়োজাহাজগুলো সরিয়ে ফাঁকা করা হয়।
খবর ছড়িয়ে পড়লে কার্গো ভিলেজের বাইরে উৎসুক জনতা ভিড় করে। মাইকিং করে বিমানবাহিনী সবাইকে সরে যেতে অনুরোধ জানায়। বিমানবন্দরে প্রবেশের পথগুলো বন্ধ রাখা হয়। এতে উত্তরামুখী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য সংরক্ষণ করা হয়। ১ নম্বর গেট বা গেট ‘এ’ কমার্শিয়াল গেট নামে পরিচিত, যেখানে কেমিক্যাল, কসমেটিকস ও ব্যাগেজ রাখা হয়। গেট ‘বি’-তে গার্মেন্টস পণ্য এবং গেট ‘সি’-তে ইলেকট্রনিকস ও শিল্প মেশিন রাখা হয়। এসব পণ্য সাধারণত ২৪ থেকে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভবনে থাকে। এরপর আমদানিকারকেরা ছাড়িয়ে নেন।
বিমানবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম ভূঁইয়া মিঠু সাংবাদিকদের জানান, শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বেলা ২টা পর্যন্ত কার্গো ভিলেজে নিয়মিত কাজ চলে। অনেক পণ্য জমে ছিল, যেগুলো রোববার ছাড়িয়ে নেওয়ার কথা ছিল। তাই দুপুরেও শ্রমিক, আনসারসহ অনেকে ছিলেন। আগুন লাগার পর সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, কুরিয়ার গুদামের পাশেই রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে। পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্পের জন্য আমদানি করা রাসায়নিক সেখানে মজুত ছিল।
ওই কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে আসা বিমানের কর্মীরা বলেন, কুরিয়ার শাখার শেডের বাইরেও উড়োজাহাজ থেকে নামানো অনেক পণ্য ছিল।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া অফিসার তালহা বিন জসিম জানান, বেলা সোয়া ২টার দিকে তাঁরা আগুন লাগার খবর পান। ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট এবং নৌবাহিনীও কাজ করে। দুই প্লাটুন বিজিবিও মাঠে ছিল। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুজন ও আনসারের ২২ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
সন্ধ্যার পর ৮ নম্বর ফটক দিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেখা যায়। ফটকের সামনে থেকে সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে দূরে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
সন্ধ্যার পর কার্গো ভিলেজ এলাকায় যান অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে। আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বিমানবন্দর চালু করা। বিমানবন্দরের চলমান কার্যক্রম কীভাবে বজায় রাখা যাবে, সে বিষয়ে আমরা পদ্ধতিগতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি।’ তিনি জানান, আগুন লেগেছে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে, তবে রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্স নিরাপদ রয়েছে। আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে তদন্ত করা হবে এবং তথ্যের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। তদন্তের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার রাত পৌনে ৯টার দিকে বিবৃতিতে বলেছে, ঢাকার বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজসহ অন্যান্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না।
উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা
আগুন লাগার পর বেলা সাড়ে ৩টা থেকে টানা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এ সময় নয়টি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করতে না পেরে বিকল্প হিসেবে আটটি ফ্লাইট চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এবং একটি ফ্লাইট সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিকেলে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ বলেন, কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার পর উড়োজাহাজ ওঠানামা স্থগিত রাখা হয়েছে।
রাত ৯টা থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট কার্যক্রম আবার চালু করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তদন্ত কমিটি
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। সংস্থার প্রশাসন ও মানবসম্পদ পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নওসাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট সেফটির প্রধানকে। কমিটিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন এবং বিমানের আরও পাঁচজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।
কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ক্ষতি নিরূপণের জন্য কাস্টমস আইআরডির যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করছে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো
কার্গো ভিলেজে আগুনে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো কাজ শুরু করেছে। তারা সদস্য কারখানাগুলোর কাছে নির্ধারিত ফরমে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের তালিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে। সংগঠনগুলো বলছে, এক–দুদিনের মধ্যেই কার্গো ভিলেজে থাকা পণ্যের সঠিক তথ্য জানা যাবে।
রপ্তানিকারক প্রতিনিধিরা বলেন, কার্গো ভিলেজের মতো স্পর্শকাতর স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রমাণ করে এটি কতটা অনিরাপদ ছিল। বছরের পর বছর ধরে খোলা জায়গায় পণ্য রাখার বিষয়ে অভিযোগ করেও সমাধান হয়নি। তাঁরা বলছেন, এটি কেবল দুর্ঘটনা নাকি কোনো ষড়যন্ত্র—তা দ্রুত তদন্তে বের করা উচিত।
আকাশপথে পণ্য পরিবহনকারী আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই ঘটনায় আমদানিকারকদের বড় ক্ষতি হলো।’
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ক্ষতির নির্ভরযোগ্য তথ্য এখনো হাতে নেই। প্রতিদিন গড়ে ২০০–২৫০টি কারখানার পণ্য উড়োজাহাজে রপ্তানি হয়। সে হিসাবে সমপরিমাণ কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
রাজনৈতিক নেতাদের উদ্বেগ
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ উদ্বেগ জানান এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান।
সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এবং বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন লাগার ঘটনা একই সূত্রে গাথা। এসব অগ্নিকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত—এমনটাই জনগণ বিশ্বাস করে।’
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিঃসন্দেহে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, অবহেলা ও নিরাপত্তা ঘাটতির এক স্পষ্ট প্রমাণ।
মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে মঙ্গলবার রাসায়নিকের একটি গুদাম ও পাশের পোশাক কারখানায় আগুনে ১৬ জন নিহত হন। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ইপিজেডে অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইলস লিমিটেডের কারখানায় আগুন লাগে। প্রায় সাড়ে ১৭ ঘণ্টা পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টাতেও রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত আগুন পুরো নেভেনি। আহত হয়েছেন ২২ জন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। আমদানিকারকেরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। বিমানবন্দরের ভেতরে নজিরবিহীন এই অগ্নিকাণ্ডকে অনেকে রহস্যজনক বলছেন। অনেকে বলছেন, বিমানবন্দরে সার্বক্ষণিক ফায়ার ইউনিট থাকার পরও আগুন এভাবে ছড়িয়ে পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। ঘটনা তদন্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সাত সদস্যের ও কাস্টমস পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে গত মঙ্গলবার রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানা, চট্টগ্রামের ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানায় বৃহস্পতিবার অগ্নিকাণ্ডের পর গতকাল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন লাগল। প্রত্যক্ষদর্শী, ফায়ার সার্ভিস ও বিমানবন্দরের সূত্র জানায়, বেলা সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়। এটি বিমানবন্দরের ডাকঘর ও হ্যাঙ্গারের মাঝামাঝি স্থানে এবং ৮ নম্বর গেটের পাশে অবস্থিত। সামনে খোলা জায়গা থাকায় বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের এলাকা থেকেও ঘন কালো ধোঁয়া দেখা যায়।
আগুনের কারণে বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিমানবন্দরে থাকা উড়োজাহাজগুলো নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে সাধারণত তুলনামূলক কম ওজনের যন্ত্রপাতি, পচনশীল পণ্য ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী আমদানি হয়। এ ছাড়া পোশাক খাতসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহারের জন্য নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থও আসে। বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটটি হ্যাঙ্গার গেট নামে পরিচিত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনের সূত্রপাত আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনের তিনটি গেটের মধ্যে ২ নম্বর গেটের কুরিয়ার শাখা থেকে হয়েছে।
বিমানবন্দরে উপস্থিত বিমান বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানান, বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে অ্যালার্ম (সংকেত) বেজে ওঠে। এতে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স থেকে সব কর্মী দ্রুত বেরিয়ে আসেন। কর্মীদের অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো অনুমতিজনিত জটিলতার কারণে ৮ নম্বর ফটকে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। এই সময়েই আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। তখন ওই কমপ্লেক্সের সামনে উড়োজাহাজ পার্কিংয়ে থাকা উড়োজাহাজগুলো সরিয়ে ফাঁকা করা হয়।
খবর ছড়িয়ে পড়লে কার্গো ভিলেজের বাইরে উৎসুক জনতা ভিড় করে। মাইকিং করে বিমানবাহিনী সবাইকে সরে যেতে অনুরোধ জানায়। বিমানবন্দরে প্রবেশের পথগুলো বন্ধ রাখা হয়। এতে উত্তরামুখী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য সংরক্ষণ করা হয়। ১ নম্বর গেট বা গেট ‘এ’ কমার্শিয়াল গেট নামে পরিচিত, যেখানে কেমিক্যাল, কসমেটিকস ও ব্যাগেজ রাখা হয়। গেট ‘বি’-তে গার্মেন্টস পণ্য এবং গেট ‘সি’-তে ইলেকট্রনিকস ও শিল্প মেশিন রাখা হয়। এসব পণ্য সাধারণত ২৪ থেকে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভবনে থাকে। এরপর আমদানিকারকেরা ছাড়িয়ে নেন।
বিমানবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম ভূঁইয়া মিঠু সাংবাদিকদের জানান, শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বেলা ২টা পর্যন্ত কার্গো ভিলেজে নিয়মিত কাজ চলে। অনেক পণ্য জমে ছিল, যেগুলো রোববার ছাড়িয়ে নেওয়ার কথা ছিল। তাই দুপুরেও শ্রমিক, আনসারসহ অনেকে ছিলেন। আগুন লাগার পর সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, কুরিয়ার গুদামের পাশেই রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে। পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্পের জন্য আমদানি করা রাসায়নিক সেখানে মজুত ছিল।
ওই কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে আসা বিমানের কর্মীরা বলেন, কুরিয়ার শাখার শেডের বাইরেও উড়োজাহাজ থেকে নামানো অনেক পণ্য ছিল।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া অফিসার তালহা বিন জসিম জানান, বেলা সোয়া ২টার দিকে তাঁরা আগুন লাগার খবর পান। ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট এবং নৌবাহিনীও কাজ করে। দুই প্লাটুন বিজিবিও মাঠে ছিল। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুজন ও আনসারের ২২ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
সন্ধ্যার পর ৮ নম্বর ফটক দিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেখা যায়। ফটকের সামনে থেকে সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে দূরে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
সন্ধ্যার পর কার্গো ভিলেজ এলাকায় যান অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে। আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বিমানবন্দর চালু করা। বিমানবন্দরের চলমান কার্যক্রম কীভাবে বজায় রাখা যাবে, সে বিষয়ে আমরা পদ্ধতিগতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি।’ তিনি জানান, আগুন লেগেছে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে, তবে রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্স নিরাপদ রয়েছে। আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে তদন্ত করা হবে এবং তথ্যের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। তদন্তের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার রাত পৌনে ৯টার দিকে বিবৃতিতে বলেছে, ঢাকার বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজসহ অন্যান্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না।
উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা
আগুন লাগার পর বেলা সাড়ে ৩টা থেকে টানা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এ সময় নয়টি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করতে না পেরে বিকল্প হিসেবে আটটি ফ্লাইট চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এবং একটি ফ্লাইট সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিকেলে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ বলেন, কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার পর উড়োজাহাজ ওঠানামা স্থগিত রাখা হয়েছে।
রাত ৯টা থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট কার্যক্রম আবার চালু করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তদন্ত কমিটি
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। সংস্থার প্রশাসন ও মানবসম্পদ পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নওসাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট সেফটির প্রধানকে। কমিটিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন এবং বিমানের আরও পাঁচজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।
কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ক্ষতি নিরূপণের জন্য কাস্টমস আইআরডির যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করছে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো
কার্গো ভিলেজে আগুনে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো কাজ শুরু করেছে। তারা সদস্য কারখানাগুলোর কাছে নির্ধারিত ফরমে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের তালিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে। সংগঠনগুলো বলছে, এক–দুদিনের মধ্যেই কার্গো ভিলেজে থাকা পণ্যের সঠিক তথ্য জানা যাবে।
রপ্তানিকারক প্রতিনিধিরা বলেন, কার্গো ভিলেজের মতো স্পর্শকাতর স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রমাণ করে এটি কতটা অনিরাপদ ছিল। বছরের পর বছর ধরে খোলা জায়গায় পণ্য রাখার বিষয়ে অভিযোগ করেও সমাধান হয়নি। তাঁরা বলছেন, এটি কেবল দুর্ঘটনা নাকি কোনো ষড়যন্ত্র—তা দ্রুত তদন্তে বের করা উচিত।
আকাশপথে পণ্য পরিবহনকারী আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই ঘটনায় আমদানিকারকদের বড় ক্ষতি হলো।’
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ক্ষতির নির্ভরযোগ্য তথ্য এখনো হাতে নেই। প্রতিদিন গড়ে ২০০–২৫০টি কারখানার পণ্য উড়োজাহাজে রপ্তানি হয়। সে হিসাবে সমপরিমাণ কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
রাজনৈতিক নেতাদের উদ্বেগ
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ উদ্বেগ জানান এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান।
সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এবং বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন লাগার ঘটনা একই সূত্রে গাথা। এসব অগ্নিকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত—এমনটাই জনগণ বিশ্বাস করে।’
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিঃসন্দেহে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, অবহেলা ও নিরাপত্তা ঘাটতির এক স্পষ্ট প্রমাণ।
মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে মঙ্গলবার রাসায়নিকের একটি গুদাম ও পাশের পোশাক কারখানায় আগুনে ১৬ জন নিহত হন। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ইপিজেডে অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইলস লিমিটেডের কারখানায় আগুন লাগে। প্রায় সাড়ে ১৭ ঘণ্টা পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টাতেও রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত আগুন পুরো নেভেনি। আহত হয়েছেন ২২ জন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। আমদানিকারকেরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। বিমানবন্দরের ভেতরে নজিরবিহীন এই অগ্নিকাণ্ডকে অনেকে রহস্যজনক বলছেন। অনেকে বলছেন, বিমানবন্দরে সার্বক্ষণিক ফায়ার ইউনিট থাকার পরও আগুন এভাবে ছড়িয়ে পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। ঘটনা তদন্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সাত সদস্যের ও কাস্টমস পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে গত মঙ্গলবার রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানা, চট্টগ্রামের ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানায় বৃহস্পতিবার অগ্নিকাণ্ডের পর গতকাল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন লাগল। প্রত্যক্ষদর্শী, ফায়ার সার্ভিস ও বিমানবন্দরের সূত্র জানায়, বেলা সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়। এটি বিমানবন্দরের ডাকঘর ও হ্যাঙ্গারের মাঝামাঝি স্থানে এবং ৮ নম্বর গেটের পাশে অবস্থিত। সামনে খোলা জায়গা থাকায় বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের এলাকা থেকেও ঘন কালো ধোঁয়া দেখা যায়।
আগুনের কারণে বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিমানবন্দরে থাকা উড়োজাহাজগুলো নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে সাধারণত তুলনামূলক কম ওজনের যন্ত্রপাতি, পচনশীল পণ্য ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী আমদানি হয়। এ ছাড়া পোশাক খাতসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহারের জন্য নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থও আসে। বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটটি হ্যাঙ্গার গেট নামে পরিচিত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনের সূত্রপাত আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনের তিনটি গেটের মধ্যে ২ নম্বর গেটের কুরিয়ার শাখা থেকে হয়েছে।
বিমানবন্দরে উপস্থিত বিমান বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানান, বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে অ্যালার্ম (সংকেত) বেজে ওঠে। এতে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স থেকে সব কর্মী দ্রুত বেরিয়ে আসেন। কর্মীদের অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো অনুমতিজনিত জটিলতার কারণে ৮ নম্বর ফটকে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। এই সময়েই আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। তখন ওই কমপ্লেক্সের সামনে উড়োজাহাজ পার্কিংয়ে থাকা উড়োজাহাজগুলো সরিয়ে ফাঁকা করা হয়।
খবর ছড়িয়ে পড়লে কার্গো ভিলেজের বাইরে উৎসুক জনতা ভিড় করে। মাইকিং করে বিমানবাহিনী সবাইকে সরে যেতে অনুরোধ জানায়। বিমানবন্দরে প্রবেশের পথগুলো বন্ধ রাখা হয়। এতে উত্তরামুখী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য সংরক্ষণ করা হয়। ১ নম্বর গেট বা গেট ‘এ’ কমার্শিয়াল গেট নামে পরিচিত, যেখানে কেমিক্যাল, কসমেটিকস ও ব্যাগেজ রাখা হয়। গেট ‘বি’-তে গার্মেন্টস পণ্য এবং গেট ‘সি’-তে ইলেকট্রনিকস ও শিল্প মেশিন রাখা হয়। এসব পণ্য সাধারণত ২৪ থেকে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভবনে থাকে। এরপর আমদানিকারকেরা ছাড়িয়ে নেন।
বিমানবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম ভূঁইয়া মিঠু সাংবাদিকদের জানান, শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বেলা ২টা পর্যন্ত কার্গো ভিলেজে নিয়মিত কাজ চলে। অনেক পণ্য জমে ছিল, যেগুলো রোববার ছাড়িয়ে নেওয়ার কথা ছিল। তাই দুপুরেও শ্রমিক, আনসারসহ অনেকে ছিলেন। আগুন লাগার পর সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, কুরিয়ার গুদামের পাশেই রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে। পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্পের জন্য আমদানি করা রাসায়নিক সেখানে মজুত ছিল।
ওই কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে আসা বিমানের কর্মীরা বলেন, কুরিয়ার শাখার শেডের বাইরেও উড়োজাহাজ থেকে নামানো অনেক পণ্য ছিল।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া অফিসার তালহা বিন জসিম জানান, বেলা সোয়া ২টার দিকে তাঁরা আগুন লাগার খবর পান। ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট এবং নৌবাহিনীও কাজ করে। দুই প্লাটুন বিজিবিও মাঠে ছিল। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুজন ও আনসারের ২২ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
সন্ধ্যার পর ৮ নম্বর ফটক দিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেখা যায়। ফটকের সামনে থেকে সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে দূরে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
সন্ধ্যার পর কার্গো ভিলেজ এলাকায় যান অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে। আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বিমানবন্দর চালু করা। বিমানবন্দরের চলমান কার্যক্রম কীভাবে বজায় রাখা যাবে, সে বিষয়ে আমরা পদ্ধতিগতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি।’ তিনি জানান, আগুন লেগেছে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে, তবে রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্স নিরাপদ রয়েছে। আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে তদন্ত করা হবে এবং তথ্যের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। তদন্তের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার রাত পৌনে ৯টার দিকে বিবৃতিতে বলেছে, ঢাকার বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজসহ অন্যান্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না।
উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা
আগুন লাগার পর বেলা সাড়ে ৩টা থেকে টানা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এ সময় নয়টি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করতে না পেরে বিকল্প হিসেবে আটটি ফ্লাইট চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এবং একটি ফ্লাইট সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিকেলে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ বলেন, কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার পর উড়োজাহাজ ওঠানামা স্থগিত রাখা হয়েছে।
রাত ৯টা থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট কার্যক্রম আবার চালু করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তদন্ত কমিটি
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। সংস্থার প্রশাসন ও মানবসম্পদ পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নওসাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট সেফটির প্রধানকে। কমিটিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন এবং বিমানের আরও পাঁচজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।
কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ক্ষতি নিরূপণের জন্য কাস্টমস আইআরডির যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করছে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো
কার্গো ভিলেজে আগুনে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো কাজ শুরু করেছে। তারা সদস্য কারখানাগুলোর কাছে নির্ধারিত ফরমে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের তালিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে। সংগঠনগুলো বলছে, এক–দুদিনের মধ্যেই কার্গো ভিলেজে থাকা পণ্যের সঠিক তথ্য জানা যাবে।
রপ্তানিকারক প্রতিনিধিরা বলেন, কার্গো ভিলেজের মতো স্পর্শকাতর স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রমাণ করে এটি কতটা অনিরাপদ ছিল। বছরের পর বছর ধরে খোলা জায়গায় পণ্য রাখার বিষয়ে অভিযোগ করেও সমাধান হয়নি। তাঁরা বলছেন, এটি কেবল দুর্ঘটনা নাকি কোনো ষড়যন্ত্র—তা দ্রুত তদন্তে বের করা উচিত।
আকাশপথে পণ্য পরিবহনকারী আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই ঘটনায় আমদানিকারকদের বড় ক্ষতি হলো।’
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ক্ষতির নির্ভরযোগ্য তথ্য এখনো হাতে নেই। প্রতিদিন গড়ে ২০০–২৫০টি কারখানার পণ্য উড়োজাহাজে রপ্তানি হয়। সে হিসাবে সমপরিমাণ কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
রাজনৈতিক নেতাদের উদ্বেগ
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ উদ্বেগ জানান এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান।
সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এবং বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন লাগার ঘটনা একই সূত্রে গাথা। এসব অগ্নিকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত—এমনটাই জনগণ বিশ্বাস করে।’
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিঃসন্দেহে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, অবহেলা ও নিরাপত্তা ঘাটতির এক স্পষ্ট প্রমাণ।
মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে মঙ্গলবার রাসায়নিকের একটি গুদাম ও পাশের পোশাক কারখানায় আগুনে ১৬ জন নিহত হন। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ইপিজেডে অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইলস লিমিটেডের কারখানায় আগুন লাগে। প্রায় সাড়ে ১৭ ঘণ্টা পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টাতেও রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত আগুন পুরো নেভেনি। আহত হয়েছেন ২২ জন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। আমদানিকারকেরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। বিমানবন্দরের ভেতরে নজিরবিহীন এই অগ্নিকাণ্ডকে অনেকে রহস্যজনক বলছেন। অনেকে বলছেন, বিমানবন্দরে সার্বক্ষণিক ফায়ার ইউনিট থাকার পরও আগুন এভাবে ছড়িয়ে পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। ঘটনা তদন্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সাত সদস্যের ও কাস্টমস পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে গত মঙ্গলবার রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানা, চট্টগ্রামের ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানায় বৃহস্পতিবার অগ্নিকাণ্ডের পর গতকাল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন লাগল। প্রত্যক্ষদর্শী, ফায়ার সার্ভিস ও বিমানবন্দরের সূত্র জানায়, বেলা সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়। এটি বিমানবন্দরের ডাকঘর ও হ্যাঙ্গারের মাঝামাঝি স্থানে এবং ৮ নম্বর গেটের পাশে অবস্থিত। সামনে খোলা জায়গা থাকায় বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের এলাকা থেকেও ঘন কালো ধোঁয়া দেখা যায়।
আগুনের কারণে বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিমানবন্দরে থাকা উড়োজাহাজগুলো নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে সাধারণত তুলনামূলক কম ওজনের যন্ত্রপাতি, পচনশীল পণ্য ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী আমদানি হয়। এ ছাড়া পোশাক খাতসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহারের জন্য নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থও আসে। বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটটি হ্যাঙ্গার গেট নামে পরিচিত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনের সূত্রপাত আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনের তিনটি গেটের মধ্যে ২ নম্বর গেটের কুরিয়ার শাখা থেকে হয়েছে।
বিমানবন্দরে উপস্থিত বিমান বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানান, বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে অ্যালার্ম (সংকেত) বেজে ওঠে। এতে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স থেকে সব কর্মী দ্রুত বেরিয়ে আসেন। কর্মীদের অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো অনুমতিজনিত জটিলতার কারণে ৮ নম্বর ফটকে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। এই সময়েই আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। তখন ওই কমপ্লেক্সের সামনে উড়োজাহাজ পার্কিংয়ে থাকা উড়োজাহাজগুলো সরিয়ে ফাঁকা করা হয়।
খবর ছড়িয়ে পড়লে কার্গো ভিলেজের বাইরে উৎসুক জনতা ভিড় করে। মাইকিং করে বিমানবাহিনী সবাইকে সরে যেতে অনুরোধ জানায়। বিমানবন্দরে প্রবেশের পথগুলো বন্ধ রাখা হয়। এতে উত্তরামুখী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য সংরক্ষণ করা হয়। ১ নম্বর গেট বা গেট ‘এ’ কমার্শিয়াল গেট নামে পরিচিত, যেখানে কেমিক্যাল, কসমেটিকস ও ব্যাগেজ রাখা হয়। গেট ‘বি’-তে গার্মেন্টস পণ্য এবং গেট ‘সি’-তে ইলেকট্রনিকস ও শিল্প মেশিন রাখা হয়। এসব পণ্য সাধারণত ২৪ থেকে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভবনে থাকে। এরপর আমদানিকারকেরা ছাড়িয়ে নেন।
বিমানবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম ভূঁইয়া মিঠু সাংবাদিকদের জানান, শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বেলা ২টা পর্যন্ত কার্গো ভিলেজে নিয়মিত কাজ চলে। অনেক পণ্য জমে ছিল, যেগুলো রোববার ছাড়িয়ে নেওয়ার কথা ছিল। তাই দুপুরেও শ্রমিক, আনসারসহ অনেকে ছিলেন। আগুন লাগার পর সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, কুরিয়ার গুদামের পাশেই রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে। পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্পের জন্য আমদানি করা রাসায়নিক সেখানে মজুত ছিল।
ওই কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে আসা বিমানের কর্মীরা বলেন, কুরিয়ার শাখার শেডের বাইরেও উড়োজাহাজ থেকে নামানো অনেক পণ্য ছিল।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া অফিসার তালহা বিন জসিম জানান, বেলা সোয়া ২টার দিকে তাঁরা আগুন লাগার খবর পান। ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট এবং নৌবাহিনীও কাজ করে। দুই প্লাটুন বিজিবিও মাঠে ছিল। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুজন ও আনসারের ২২ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
সন্ধ্যার পর ৮ নম্বর ফটক দিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেখা যায়। ফটকের সামনে থেকে সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে দূরে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
সন্ধ্যার পর কার্গো ভিলেজ এলাকায় যান অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে। আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বিমানবন্দর চালু করা। বিমানবন্দরের চলমান কার্যক্রম কীভাবে বজায় রাখা যাবে, সে বিষয়ে আমরা পদ্ধতিগতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি।’ তিনি জানান, আগুন লেগেছে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে, তবে রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্স নিরাপদ রয়েছে। আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে তদন্ত করা হবে এবং তথ্যের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। তদন্তের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার রাত পৌনে ৯টার দিকে বিবৃতিতে বলেছে, ঢাকার বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজসহ অন্যান্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না।
উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা
আগুন লাগার পর বেলা সাড়ে ৩টা থেকে টানা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এ সময় নয়টি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করতে না পেরে বিকল্প হিসেবে আটটি ফ্লাইট চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এবং একটি ফ্লাইট সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিকেলে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ বলেন, কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার পর উড়োজাহাজ ওঠানামা স্থগিত রাখা হয়েছে।
রাত ৯টা থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট কার্যক্রম আবার চালু করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তদন্ত কমিটি
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। সংস্থার প্রশাসন ও মানবসম্পদ পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নওসাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট সেফটির প্রধানকে। কমিটিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন এবং বিমানের আরও পাঁচজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।
কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ক্ষতি নিরূপণের জন্য কাস্টমস আইআরডির যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করছে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো
কার্গো ভিলেজে আগুনে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো কাজ শুরু করেছে। তারা সদস্য কারখানাগুলোর কাছে নির্ধারিত ফরমে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের তালিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে। সংগঠনগুলো বলছে, এক–দুদিনের মধ্যেই কার্গো ভিলেজে থাকা পণ্যের সঠিক তথ্য জানা যাবে।
রপ্তানিকারক প্রতিনিধিরা বলেন, কার্গো ভিলেজের মতো স্পর্শকাতর স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রমাণ করে এটি কতটা অনিরাপদ ছিল। বছরের পর বছর ধরে খোলা জায়গায় পণ্য রাখার বিষয়ে অভিযোগ করেও সমাধান হয়নি। তাঁরা বলছেন, এটি কেবল দুর্ঘটনা নাকি কোনো ষড়যন্ত্র—তা দ্রুত তদন্তে বের করা উচিত।
আকাশপথে পণ্য পরিবহনকারী আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই ঘটনায় আমদানিকারকদের বড় ক্ষতি হলো।’
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ক্ষতির নির্ভরযোগ্য তথ্য এখনো হাতে নেই। প্রতিদিন গড়ে ২০০–২৫০টি কারখানার পণ্য উড়োজাহাজে রপ্তানি হয়। সে হিসাবে সমপরিমাণ কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
রাজনৈতিক নেতাদের উদ্বেগ
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ উদ্বেগ জানান এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান।
সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এবং বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন লাগার ঘটনা একই সূত্রে গাথা। এসব অগ্নিকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত—এমনটাই জনগণ বিশ্বাস করে।’
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিঃসন্দেহে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, অবহেলা ও নিরাপত্তা ঘাটতির এক স্পষ্ট প্রমাণ।
মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে মঙ্গলবার রাসায়নিকের একটি গুদাম ও পাশের পোশাক কারখানায় আগুনে ১৬ জন নিহত হন। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ইপিজেডে অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইলস লিমিটেডের কারখানায় আগুন লাগে। প্রায় সাড়ে ১৭ ঘণ্টা পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

রাইড শেয়ারিংয়ের কার, মাইক্রোবাস/ জিপ, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার জন্য নতুন ভাড়ার হার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। রাইডশেয়ারিংয়ের প্রস্তাবিত সংশোধিত নীতিমালায় অটোরিকশা যুক্ত করা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স।
৬ ঘণ্টা আগে
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আপ্যায়নে ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে—সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এমন দাবি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং একে ‘সর্বৈব মিথ্যাচার’ বলে অভিহিত করেছে। প্রেস উইং জানিয়েছে, একটি বিশেষ মহল সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগে
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মহৎ উদ্দেশ্য ছিল জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। গণতন্ত্রের মূলকথা হলো, জনগণ ভোট দিতে পারবে। ভোটাধিকার প্রয়োগটাই এখানে মুখ্য। সে কারণে ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত করা) আনা হয়েছিল।
৯ ঘণ্টা আগেতৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা

রাইড শেয়ারিংয়ের কার, মাইক্রোবাস/ জিপ, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার জন্য নতুন ভাড়ার হার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। রাইডশেয়ারিংয়ের প্রস্তাবিত সংশোধিত নীতিমালায় অটোরিকশা যুক্ত করা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স।
রাইডশেয়ারিং সেবার নীতিমালা-২০১৭ সংশোধন করে বিআরটিএ ২ নভেম্বর প্রস্তাবটি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। আগে ট্যাক্সিক্যাব সার্ভিস গাইডলাইন-২০১০ অনুযায়ী রাইড শেয়ারিংয়ের ভাড়া নির্ধারিত থাকলেও তা নতুনভাবে নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত আগস্টে গঠিত বিআরটিএর কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই প্রস্তাব করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, বিআরটিএর প্রস্তাবিত ভাড়ার কাঠামো অনুযায়ী মাইক্রোবাস, মোটরকার/জিপ, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের জন্য সর্বনিম্ন ভাড়া ২ কিলোমিটারের মধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। মাইক্রোবাসের ২ কিলোমিটারের সর্বনিম্ন ভাড়া হবে ১১০ টাকা, মোটরকার ও জিপের ১১০ টাকা, অটোরিকশার ৭০ টাকা এবং মোটরসাইকেলের ৬৫ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি যানের প্রথম ২ কিলোমিটারের ভাড়ার সঙ্গে ২০ টাকা বুকিং ফি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মাইক্রোবাসের ক্ষেত্রে প্রথম ২ কিলোমিটারের পর পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ৩৮ টাকা। ভ্রমণ চলাকালে প্রতি মিনিটের ভাড়া ২ টাকা। মোটরকার ও জিপে প্রথম ২ কিলোমিটারের পর পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ৩৬ টাকা এবং ভ্রমণ চলাকালীন প্রতি মিনিটে ভাড়া ২ টাকা। অটোরিকশার প্রথম ২ কিলোমিটারের পর পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারে ১৮ টাকা এবং ভ্রমণ চলাকালীন প্রতি মিনিটে ভাড়া ২ টাকা। মোটরসাইকেলের প্রথম ২ কিলোমিটারের পর পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ১৬ টাকা এবং ভ্রমণ চলাকালীন প্রতি মিনিটে ভাড়া ১ টাকা। মোটরসাইকেলের আগে প্রথম ২ কিলোমিটারের ভাড়া ছিল ৮৫ টাকা।
রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোর কমিশনের হারও কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে বিআরটিএ। প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা ভাড়ার সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ কমিশন নিতে পারবে। আগে এই হার ছিল ৩০ শতাংশ।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএর চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাইড শেয়ারিংয়ের নানা বিষয়ে একটি আবেদন করেছিলেন রাইডরা। তাঁদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। পরে এটা নিয়ে আমাদের একটি কমিটি হয়েছিল। ওই কমিটি রাইডশেয়ারিংয়ের নানা বিষয় পর্যালোচনা করেছে।’
বিআরটিএ সূত্র জানায়, রাইডশেয়ারিং সেবার প্রস্তাবিত সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী যাত্রী বা চালক কেউ ট্রিপ বাতিল করলে নির্দিষ্ট সময়ের পর বাতিল চার্জ প্রযোজ্য হবে। যাত্রী অনুরোধ পাঠানোর পর চালক গ্রহণ করে যাত্রীর অভিমুখে রওনা হওয়ার পর ৩ মিনিটের মধ্যে ট্রিপ বাতিল করলে কোনো চার্জ লাগবে না। তবে ওই সময়ের পর বাতিল করলে সম্ভাব্য ভাড়ার ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৩০ টাকা (যেটি কম) ক্যানসেলেশন চার্জ হিসেবে নেওয়া হবে, যা চালক ও রাইডশেয়ারিং কোম্পানি সমানভাবে ভাগ করবে।
চালকও অনুরোধ গ্রহণের পর ৩ মিনিটের মধ্যে বাতিল করলে কোনো চার্জ লাগবে না। কিন্তু এর পর বাতিল করলে তাঁর কাছ থেকেও একই হারে চার্জ কাটা হবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. মো. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাইড শেয়ারিংয়ে ভাড়া পুনর্নির্ধারণ ও কমিশন কমানো যাত্রীদের জন্য স্বস্তিদায়ক হবে। তবে বাস্তবায়ন ও তদারকি নিশ্চিত করাই মূল চ্যালেঞ্জ। এসব নিয়ম শুধু কাগজে নয়, বাস্তবেও কার্যকর করতে হবে।

রাইড শেয়ারিংয়ের কার, মাইক্রোবাস/ জিপ, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার জন্য নতুন ভাড়ার হার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। রাইডশেয়ারিংয়ের প্রস্তাবিত সংশোধিত নীতিমালায় অটোরিকশা যুক্ত করা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স।
রাইডশেয়ারিং সেবার নীতিমালা-২০১৭ সংশোধন করে বিআরটিএ ২ নভেম্বর প্রস্তাবটি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। আগে ট্যাক্সিক্যাব সার্ভিস গাইডলাইন-২০১০ অনুযায়ী রাইড শেয়ারিংয়ের ভাড়া নির্ধারিত থাকলেও তা নতুনভাবে নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত আগস্টে গঠিত বিআরটিএর কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই প্রস্তাব করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, বিআরটিএর প্রস্তাবিত ভাড়ার কাঠামো অনুযায়ী মাইক্রোবাস, মোটরকার/জিপ, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের জন্য সর্বনিম্ন ভাড়া ২ কিলোমিটারের মধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। মাইক্রোবাসের ২ কিলোমিটারের সর্বনিম্ন ভাড়া হবে ১১০ টাকা, মোটরকার ও জিপের ১১০ টাকা, অটোরিকশার ৭০ টাকা এবং মোটরসাইকেলের ৬৫ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি যানের প্রথম ২ কিলোমিটারের ভাড়ার সঙ্গে ২০ টাকা বুকিং ফি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মাইক্রোবাসের ক্ষেত্রে প্রথম ২ কিলোমিটারের পর পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ৩৮ টাকা। ভ্রমণ চলাকালে প্রতি মিনিটের ভাড়া ২ টাকা। মোটরকার ও জিপে প্রথম ২ কিলোমিটারের পর পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ৩৬ টাকা এবং ভ্রমণ চলাকালীন প্রতি মিনিটে ভাড়া ২ টাকা। অটোরিকশার প্রথম ২ কিলোমিটারের পর পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারে ১৮ টাকা এবং ভ্রমণ চলাকালীন প্রতি মিনিটে ভাড়া ২ টাকা। মোটরসাইকেলের প্রথম ২ কিলোমিটারের পর পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ১৬ টাকা এবং ভ্রমণ চলাকালীন প্রতি মিনিটে ভাড়া ১ টাকা। মোটরসাইকেলের আগে প্রথম ২ কিলোমিটারের ভাড়া ছিল ৮৫ টাকা।
রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোর কমিশনের হারও কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে বিআরটিএ। প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা ভাড়ার সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ কমিশন নিতে পারবে। আগে এই হার ছিল ৩০ শতাংশ।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএর চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাইড শেয়ারিংয়ের নানা বিষয়ে একটি আবেদন করেছিলেন রাইডরা। তাঁদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। পরে এটা নিয়ে আমাদের একটি কমিটি হয়েছিল। ওই কমিটি রাইডশেয়ারিংয়ের নানা বিষয় পর্যালোচনা করেছে।’
বিআরটিএ সূত্র জানায়, রাইডশেয়ারিং সেবার প্রস্তাবিত সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী যাত্রী বা চালক কেউ ট্রিপ বাতিল করলে নির্দিষ্ট সময়ের পর বাতিল চার্জ প্রযোজ্য হবে। যাত্রী অনুরোধ পাঠানোর পর চালক গ্রহণ করে যাত্রীর অভিমুখে রওনা হওয়ার পর ৩ মিনিটের মধ্যে ট্রিপ বাতিল করলে কোনো চার্জ লাগবে না। তবে ওই সময়ের পর বাতিল করলে সম্ভাব্য ভাড়ার ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৩০ টাকা (যেটি কম) ক্যানসেলেশন চার্জ হিসেবে নেওয়া হবে, যা চালক ও রাইডশেয়ারিং কোম্পানি সমানভাবে ভাগ করবে।
চালকও অনুরোধ গ্রহণের পর ৩ মিনিটের মধ্যে বাতিল করলে কোনো চার্জ লাগবে না। কিন্তু এর পর বাতিল করলে তাঁর কাছ থেকেও একই হারে চার্জ কাটা হবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. মো. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাইড শেয়ারিংয়ে ভাড়া পুনর্নির্ধারণ ও কমিশন কমানো যাত্রীদের জন্য স্বস্তিদায়ক হবে। তবে বাস্তবায়ন ও তদারকি নিশ্চিত করাই মূল চ্যালেঞ্জ। এসব নিয়ম শুধু কাগজে নয়, বাস্তবেও কার্যকর করতে হবে।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে।
১৯ দিন আগে
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আপ্যায়নে ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে—সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এমন দাবি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং একে ‘সর্বৈব মিথ্যাচার’ বলে অভিহিত করেছে। প্রেস উইং জানিয়েছে, একটি বিশেষ মহল সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগে
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মহৎ উদ্দেশ্য ছিল জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। গণতন্ত্রের মূলকথা হলো, জনগণ ভোট দিতে পারবে। ভোটাধিকার প্রয়োগটাই এখানে মুখ্য। সে কারণে ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত করা) আনা হয়েছিল।
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আপ্যায়নে ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে—সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এমন দাবি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং একে ‘সর্বৈব মিথ্যাচার’ বলে অভিহিত করেছে। প্রেস উইং জানিয়েছে, একটি বিশেষ মহল সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘অতি সম্প্রতি মহলবিশেষের পক্ষ থেকে সংঘবদ্ধ অপপ্রচারে বলা হচ্ছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আপ্যায়ন বাবদ ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। এটি একটি পরিকল্পিত প্রপাগান্ডা, যা প্রচারকারীরা কমিশনের কোনো ভাষ্য বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ না করেই চালাচ্ছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ২০২৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যক্রম শুরু করে। ২০২৪-২৫ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কমিশনের মোট বাজেট ছিল ৭ কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার ২৬ টাকা। এর মধ্যে ২০২৫ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে মাত্র ১ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ১২৬ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
বাজেটের মধ্যে আপ্যায়ন খাতে বরাদ্দ ছিল ৬৩ লাখ টাকা, যার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬৮৫ টাকা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, আপ্যায়ন খাতের অধিকাংশ ব্যয় হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ও কমিশনের বিভিন্ন বৈঠক চলাকালে। এসব বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধি, তাঁদের সহযোগী, সাংবাদিক, কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নিরাপত্তাকর্মীদের জন্য আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
প্রথম পর্যায়ে গত ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৪৪টি বৈঠক হয়, যেখানে ব্যয় হয় ৪ লাখ ৯১ হাজার টাকা।
দ্বিতীয় পর্যায়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ২৩টি বৈঠক হয়। এতে মোট ব্যয় হয় ২৮ লাখ ৮৩ হাজার ১০০ টাকা। এই বৈঠকগুলোর বেশির ভাগই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলেছে। ফলে নাশতার পাশাপাশি দুপুর ও রাতের খাবারেরও ব্যবস্থা করতে হয়েছে। গড়ে প্রতিদিনের ব্যয় ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকার কম।
তৃতীয় পর্যায়ে সাতটি বৈঠকে ৩০টি দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন, এতে ব্যয় হয় ৭ লাখ ৮ হাজার ৬০০ টাকা।
এ ছাড়া কমিশনের অভ্যন্তরীণ সভা হয়েছে ৫০টি, যার অনেকগুলোই দিনব্যাপী বা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অনুষ্ঠিত হয়। এই বাবদ মোট ব্যয় হয় ১ লাখ ৫ হাজার ৫২০ টাকা।
রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক, নাগরিক সমাজ ও পেশাজীবীদের সঙ্গে বৈঠক এবং তিনটি সংবাদ সম্মেলনসহ মোট ১৩টি সভায় ব্যয় হয় ২ লাখ ৩৪০ টাকা।
বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে ১৩টি, যেখানে আপ্যায়ন বাবদ ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ৯৬০ টাকা। প্রেস উইং জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞরা এসব বৈঠকের জন্য কোনো ভাতা বা সম্মানী নেননি।
এ ছাড়া গত ৯ মাসে অতিথি আপ্যায়নের জন্য ব্যয় হয়েছে ২ লাখ টাকা। এসব অতিথির মধ্যে ছিলেন বিদেশি কূটনীতিক, দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা, সম্পাদক, সাংবাদিক ও অন্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘উল্লিখিত বিস্তারিত হিসাব থেকে এটি স্পষ্ট যে, ৮৩ কোটি টাকার দাবি শুধু মিথ্যাচার নয়, বরং ঐকমত্য কমিশন ও তার কার্যক্রমকে হেয় করার একটি সংঘবদ্ধ ও পরিকল্পিত অপপ্রয়াস।’
কমিশনের দাবি, তারা সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করেছে, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত দৈনন্দিন সংবাদ থেকেই স্পষ্ট। সাংবাদিকেরা নির্বিঘ্নে কমিশন কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পেরেছেন, কমিশনের সহসভাপতি ও সদস্যরা নিয়মিতভাবে গণমাধ্যমকে তথ্য দিয়েছেন এবং প্রেস ব্রিফিং করেছেন।
এ ছাড়া, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনাগুলো সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছে।
কমিশন আশা প্রকাশ করেছে, যে অসাধু মহল এই প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে, তারা অবিলম্বে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘কমিশন তার দায়িত্ব পালনে দায়িত্বশীল গণমাধ্যমের সহযোগিতা পেয়েছে এবং আশা করে গণমাধ্যমগুলো ভবিষ্যতেও সঠিক তথ্য প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্তির হাত থেকে রক্ষা করবে।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আপ্যায়নে ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে—সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এমন দাবি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং একে ‘সর্বৈব মিথ্যাচার’ বলে অভিহিত করেছে। প্রেস উইং জানিয়েছে, একটি বিশেষ মহল সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘অতি সম্প্রতি মহলবিশেষের পক্ষ থেকে সংঘবদ্ধ অপপ্রচারে বলা হচ্ছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আপ্যায়ন বাবদ ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। এটি একটি পরিকল্পিত প্রপাগান্ডা, যা প্রচারকারীরা কমিশনের কোনো ভাষ্য বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ না করেই চালাচ্ছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ২০২৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যক্রম শুরু করে। ২০২৪-২৫ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কমিশনের মোট বাজেট ছিল ৭ কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার ২৬ টাকা। এর মধ্যে ২০২৫ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে মাত্র ১ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ১২৬ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
বাজেটের মধ্যে আপ্যায়ন খাতে বরাদ্দ ছিল ৬৩ লাখ টাকা, যার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬৮৫ টাকা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, আপ্যায়ন খাতের অধিকাংশ ব্যয় হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ও কমিশনের বিভিন্ন বৈঠক চলাকালে। এসব বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধি, তাঁদের সহযোগী, সাংবাদিক, কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নিরাপত্তাকর্মীদের জন্য আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
প্রথম পর্যায়ে গত ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৪৪টি বৈঠক হয়, যেখানে ব্যয় হয় ৪ লাখ ৯১ হাজার টাকা।
দ্বিতীয় পর্যায়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ২৩টি বৈঠক হয়। এতে মোট ব্যয় হয় ২৮ লাখ ৮৩ হাজার ১০০ টাকা। এই বৈঠকগুলোর বেশির ভাগই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলেছে। ফলে নাশতার পাশাপাশি দুপুর ও রাতের খাবারেরও ব্যবস্থা করতে হয়েছে। গড়ে প্রতিদিনের ব্যয় ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকার কম।
তৃতীয় পর্যায়ে সাতটি বৈঠকে ৩০টি দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন, এতে ব্যয় হয় ৭ লাখ ৮ হাজার ৬০০ টাকা।
এ ছাড়া কমিশনের অভ্যন্তরীণ সভা হয়েছে ৫০টি, যার অনেকগুলোই দিনব্যাপী বা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অনুষ্ঠিত হয়। এই বাবদ মোট ব্যয় হয় ১ লাখ ৫ হাজার ৫২০ টাকা।
রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক, নাগরিক সমাজ ও পেশাজীবীদের সঙ্গে বৈঠক এবং তিনটি সংবাদ সম্মেলনসহ মোট ১৩টি সভায় ব্যয় হয় ২ লাখ ৩৪০ টাকা।
বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে ১৩টি, যেখানে আপ্যায়ন বাবদ ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ৯৬০ টাকা। প্রেস উইং জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞরা এসব বৈঠকের জন্য কোনো ভাতা বা সম্মানী নেননি।
এ ছাড়া গত ৯ মাসে অতিথি আপ্যায়নের জন্য ব্যয় হয়েছে ২ লাখ টাকা। এসব অতিথির মধ্যে ছিলেন বিদেশি কূটনীতিক, দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা, সম্পাদক, সাংবাদিক ও অন্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘উল্লিখিত বিস্তারিত হিসাব থেকে এটি স্পষ্ট যে, ৮৩ কোটি টাকার দাবি শুধু মিথ্যাচার নয়, বরং ঐকমত্য কমিশন ও তার কার্যক্রমকে হেয় করার একটি সংঘবদ্ধ ও পরিকল্পিত অপপ্রয়াস।’
কমিশনের দাবি, তারা সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করেছে, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত দৈনন্দিন সংবাদ থেকেই স্পষ্ট। সাংবাদিকেরা নির্বিঘ্নে কমিশন কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পেরেছেন, কমিশনের সহসভাপতি ও সদস্যরা নিয়মিতভাবে গণমাধ্যমকে তথ্য দিয়েছেন এবং প্রেস ব্রিফিং করেছেন।
এ ছাড়া, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনাগুলো সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছে।
কমিশন আশা প্রকাশ করেছে, যে অসাধু মহল এই প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে, তারা অবিলম্বে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘কমিশন তার দায়িত্ব পালনে দায়িত্বশীল গণমাধ্যমের সহযোগিতা পেয়েছে এবং আশা করে গণমাধ্যমগুলো ভবিষ্যতেও সঠিক তথ্য প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্তির হাত থেকে রক্ষা করবে।’

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে।
১৯ দিন আগে
রাইড শেয়ারিংয়ের কার, মাইক্রোবাস/ জিপ, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার জন্য নতুন ভাড়ার হার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। রাইডশেয়ারিংয়ের প্রস্তাবিত সংশোধিত নীতিমালায় অটোরিকশা যুক্ত করা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স।
৬ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগে
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মহৎ উদ্দেশ্য ছিল জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। গণতন্ত্রের মূলকথা হলো, জনগণ ভোট দিতে পারবে। ভোটাধিকার প্রয়োগটাই এখানে মুখ্য। সে কারণে ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত করা) আনা হয়েছিল।
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক তাঁদের ব্যবস্থাপত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) অনুমোদিত ও নিবন্ধিত নয় এমন ওষুধ লিখে আসছেন। এতে রোগীদের স্বাস্থ্য বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়ছে। বিষয়টি তদন্তে মেডিকেল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবু হেনা চৌধুরীকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন ফার্মাকোলজি বিভাগের সভাপতি ডা. ইলোরা শারমিন এবং উপ-রেজিস্ট্রার (আইন) ডা. আবু হেনা হেলাল উদ্দিন আহমেদ। সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক (আইন) অ্যাডভোকেট তানিয়া আক্তার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএমইউর চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ওষুধ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কোনো ওষুধ, ভিটামিন, মিনারেল বা সাপ্লিমেন্টের নাম প্রেসক্রিপশনে লেখা হলে তা আইনভঙ্গের শামিল কি না এবং হলে কী ধরনের আইনি প্রতিকার বা শাস্তি প্রযোজ্য হতে পারে, তা নির্ধারণ করে প্রচলিত আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ক্ষেত্রে প্রামাণ্য আইন হিসেবে ‘ঔষধ ও কসমেটিকস আইন-২০২৩’ এবং ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০’ উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে—যেসব ভিটামিন, মিনারেল সাপ্লিমেন্ট ও হেলথ কেয়ার প্রোডাক্ট বিদেশ থেকে আমদানি হয়, সেগুলো ডিজিডিএ ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কীভাবে যাচাই-বাছাই করে, কিংবা এসব পণ্য ব্যবহারের অনুমোদন দেয় কি না, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ডিজিডিএর ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত ওষুধের তালিকা সহজেই পাওয়া যায়। এই বিষয়ে চিকিৎসকদের সচেতন করতে আইটি সেকশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রতিকার হিসেবে বিএমইউর চিকিৎসকেরা যেন অননুমোদিত ওষুধ প্রেসক্রিপশনে না লেখেন সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট ছাপানো এবং সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি অনিবন্ধিত ওষুধ লিখলে সম্ভাব্য শাস্তির বিষয়েও চিকিৎসকদের অবহিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালের অন্তর্বিভাগ, বহির্বিভাগ এবং প্রবেশদ্বারগুলোতে বড় সাইনবোর্ড স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি পাঠানো এবং ডিজিডিএ ও বিএসটিআই কর্তৃক নিবন্ধিত ওষুধের তালিকা বিভাগ ও বহির্বিভাগে সরবরাহের সুপারিশও করা হয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক তাঁদের ব্যবস্থাপত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) অনুমোদিত ও নিবন্ধিত নয় এমন ওষুধ লিখে আসছেন। এতে রোগীদের স্বাস্থ্য বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়ছে। বিষয়টি তদন্তে মেডিকেল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবু হেনা চৌধুরীকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন ফার্মাকোলজি বিভাগের সভাপতি ডা. ইলোরা শারমিন এবং উপ-রেজিস্ট্রার (আইন) ডা. আবু হেনা হেলাল উদ্দিন আহমেদ। সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক (আইন) অ্যাডভোকেট তানিয়া আক্তার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএমইউর চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ওষুধ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কোনো ওষুধ, ভিটামিন, মিনারেল বা সাপ্লিমেন্টের নাম প্রেসক্রিপশনে লেখা হলে তা আইনভঙ্গের শামিল কি না এবং হলে কী ধরনের আইনি প্রতিকার বা শাস্তি প্রযোজ্য হতে পারে, তা নির্ধারণ করে প্রচলিত আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ক্ষেত্রে প্রামাণ্য আইন হিসেবে ‘ঔষধ ও কসমেটিকস আইন-২০২৩’ এবং ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০’ উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে—যেসব ভিটামিন, মিনারেল সাপ্লিমেন্ট ও হেলথ কেয়ার প্রোডাক্ট বিদেশ থেকে আমদানি হয়, সেগুলো ডিজিডিএ ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কীভাবে যাচাই-বাছাই করে, কিংবা এসব পণ্য ব্যবহারের অনুমোদন দেয় কি না, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ডিজিডিএর ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত ওষুধের তালিকা সহজেই পাওয়া যায়। এই বিষয়ে চিকিৎসকদের সচেতন করতে আইটি সেকশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রতিকার হিসেবে বিএমইউর চিকিৎসকেরা যেন অননুমোদিত ওষুধ প্রেসক্রিপশনে না লেখেন সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট ছাপানো এবং সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি অনিবন্ধিত ওষুধ লিখলে সম্ভাব্য শাস্তির বিষয়েও চিকিৎসকদের অবহিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালের অন্তর্বিভাগ, বহির্বিভাগ এবং প্রবেশদ্বারগুলোতে বড় সাইনবোর্ড স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি পাঠানো এবং ডিজিডিএ ও বিএসটিআই কর্তৃক নিবন্ধিত ওষুধের তালিকা বিভাগ ও বহির্বিভাগে সরবরাহের সুপারিশও করা হয়েছে।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে।
১৯ দিন আগে
রাইড শেয়ারিংয়ের কার, মাইক্রোবাস/ জিপ, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার জন্য নতুন ভাড়ার হার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। রাইডশেয়ারিংয়ের প্রস্তাবিত সংশোধিত নীতিমালায় অটোরিকশা যুক্ত করা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স।
৬ ঘণ্টা আগে
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আপ্যায়নে ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে—সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এমন দাবি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং একে ‘সর্বৈব মিথ্যাচার’ বলে অভিহিত করেছে। প্রেস উইং জানিয়েছে, একটি বিশেষ মহল সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে।
৭ ঘণ্টা আগে
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মহৎ উদ্দেশ্য ছিল জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। গণতন্ত্রের মূলকথা হলো, জনগণ ভোট দিতে পারবে। ভোটাধিকার প্রয়োগটাই এখানে মুখ্য। সে কারণে ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত করা) আনা হয়েছিল।
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মহৎ উদ্দেশ্য ছিল জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। গণতন্ত্রের মূলকথা হলো, জনগণ ভোট দিতে পারবে। ভোটাধিকার প্রয়োগটাই এখানে মুখ্য। সে কারণে ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত করা) আনা হয়েছিল। সেই ত্রয়োদশ সংশোধনী আপিল বিভাগ বাতিল করলেন সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে। তার প্রধানত দুটি কারণ–একটি হলো এটা নির্বাচিত সরকার না। আরেকটি হলো, এটাতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানিতে আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এসব কথা বলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগে আজ নবম দিনের মতো এ বিষয়ে শুনানি হয়। এদিন রাষ্ট্রপক্ষ তাদের শুনানি শেষ করে। এরপর ১১ নভেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানিতে বলেন, ত্রয়োদশ সংশোধনী আপিল বিভাগ বাতিল করলেন এজন্য যে, বিচারকেরা প্রধান বিচারপতি, প্রধান উপদেষ্টা ইত্যাদি হওয়ার লোভ সামলাতে পারবেন না। যদি এটিই সত্য হয়, তাহলে যেসব বিচারপতি প্রধান বিচারপতি হওয়ার লোভে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে রায় দিয়েছিলেন, সেই সিস্টেমটা বদলানো দরকার।
আসাদুজ্জামান আরও বলেন, এটা প্রমাণিত হয়েছে, নির্বাচিত সরকার হলেই গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে পারে না। প্রমাণিত হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আওতায় বাংলাদেশের মানুষ কীভাবে নিরপেক্ষভাবে, স্বাধীনভাবে, উন্মুক্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
রায় কার্যকর হওয়া প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এই রায় সেই দিন থেকেই কার্যকর হবে। তবে জুলাই বিপ্লবের পর একটি সরকার গঠিত হয়েছে। রাজপথ থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে এ দেশের সরকার প্রধান কে হবেন, কোন ধরনের সরকার হবে। দেশের প্রধান বিচারপতি কে হবেন, সেটাও রাজপথ থেকে বলে দেওয়া হয়েছে। এই যে রেভ্যলুশনের (বিপ্লবের) বিজয়ী শক্তি, এটাকে রেভ্যলুশনের থিওরি জুরিসপ্রুডেন্স বলে। এ থিওরি অনুসারে, এই সরকার একটা নির্বাচনের পথ ধরে হেঁটে গেছে। সেই নির্বাচনের পথে হাঁটতে গিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এই সরকারের পরে যে সরকার আসবে, সেখান থেকে যদি কার্যকর করেন সেখানে কোনো ব্যত্যয় হবে না।’
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সরকার প্রধান যখন ৫ আগস্ট পালিয়ে যায়, তার ক্যাবিনেট যখন পালিয়ে যায়, তার সংসদ সদস্যরা যখন পালিয়ে যায়, তখন রাষ্ট্রপতির সামনে যখন কোনো পথ খোলা থাকে না। রাষ্ট্রপতি ১০৬ ধারায় সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে মতামত নিয়ে সরকার গঠন করেছেন। এই সরকার গঠন শুধু সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ওপর নির্ভর করে না। বিপ্লবের তত্ত্ব অনুসারে মুক্তিকামী জনগণ, বিজয়ী জনগণ, স্বাধীন জনগণ, গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বকারী জনগণ যেভাবে নির্ধারণ করবেন—সেটাই সংবিধান, সেটাই আইন। সুতরাং রেভ্যলুশনারি থিওরিতে যে জুরিসপ্রুডেন্স স্বীকার করা হলো, গ্রহণ করা হলো—সেই থিওরিটাকেই আমরা হাইলাইট করছি। ১০৬ সব নয়।’

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মহৎ উদ্দেশ্য ছিল জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। গণতন্ত্রের মূলকথা হলো, জনগণ ভোট দিতে পারবে। ভোটাধিকার প্রয়োগটাই এখানে মুখ্য। সে কারণে ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত করা) আনা হয়েছিল। সেই ত্রয়োদশ সংশোধনী আপিল বিভাগ বাতিল করলেন সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে। তার প্রধানত দুটি কারণ–একটি হলো এটা নির্বাচিত সরকার না। আরেকটি হলো, এটাতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানিতে আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এসব কথা বলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগে আজ নবম দিনের মতো এ বিষয়ে শুনানি হয়। এদিন রাষ্ট্রপক্ষ তাদের শুনানি শেষ করে। এরপর ১১ নভেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানিতে বলেন, ত্রয়োদশ সংশোধনী আপিল বিভাগ বাতিল করলেন এজন্য যে, বিচারকেরা প্রধান বিচারপতি, প্রধান উপদেষ্টা ইত্যাদি হওয়ার লোভ সামলাতে পারবেন না। যদি এটিই সত্য হয়, তাহলে যেসব বিচারপতি প্রধান বিচারপতি হওয়ার লোভে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে রায় দিয়েছিলেন, সেই সিস্টেমটা বদলানো দরকার।
আসাদুজ্জামান আরও বলেন, এটা প্রমাণিত হয়েছে, নির্বাচিত সরকার হলেই গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে পারে না। প্রমাণিত হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আওতায় বাংলাদেশের মানুষ কীভাবে নিরপেক্ষভাবে, স্বাধীনভাবে, উন্মুক্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
রায় কার্যকর হওয়া প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এই রায় সেই দিন থেকেই কার্যকর হবে। তবে জুলাই বিপ্লবের পর একটি সরকার গঠিত হয়েছে। রাজপথ থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে এ দেশের সরকার প্রধান কে হবেন, কোন ধরনের সরকার হবে। দেশের প্রধান বিচারপতি কে হবেন, সেটাও রাজপথ থেকে বলে দেওয়া হয়েছে। এই যে রেভ্যলুশনের (বিপ্লবের) বিজয়ী শক্তি, এটাকে রেভ্যলুশনের থিওরি জুরিসপ্রুডেন্স বলে। এ থিওরি অনুসারে, এই সরকার একটা নির্বাচনের পথ ধরে হেঁটে গেছে। সেই নির্বাচনের পথে হাঁটতে গিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এই সরকারের পরে যে সরকার আসবে, সেখান থেকে যদি কার্যকর করেন সেখানে কোনো ব্যত্যয় হবে না।’
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সরকার প্রধান যখন ৫ আগস্ট পালিয়ে যায়, তার ক্যাবিনেট যখন পালিয়ে যায়, তার সংসদ সদস্যরা যখন পালিয়ে যায়, তখন রাষ্ট্রপতির সামনে যখন কোনো পথ খোলা থাকে না। রাষ্ট্রপতি ১০৬ ধারায় সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে মতামত নিয়ে সরকার গঠন করেছেন। এই সরকার গঠন শুধু সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ওপর নির্ভর করে না। বিপ্লবের তত্ত্ব অনুসারে মুক্তিকামী জনগণ, বিজয়ী জনগণ, স্বাধীন জনগণ, গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বকারী জনগণ যেভাবে নির্ধারণ করবেন—সেটাই সংবিধান, সেটাই আইন। সুতরাং রেভ্যলুশনারি থিওরিতে যে জুরিসপ্রুডেন্স স্বীকার করা হলো, গ্রহণ করা হলো—সেই থিওরিটাকেই আমরা হাইলাইট করছি। ১০৬ সব নয়।’

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে।
১৯ দিন আগে
রাইড শেয়ারিংয়ের কার, মাইক্রোবাস/ জিপ, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার জন্য নতুন ভাড়ার হার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। রাইডশেয়ারিংয়ের প্রস্তাবিত সংশোধিত নীতিমালায় অটোরিকশা যুক্ত করা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স।
৬ ঘণ্টা আগে
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আপ্যায়নে ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে—সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এমন দাবি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং একে ‘সর্বৈব মিথ্যাচার’ বলে অভিহিত করেছে। প্রেস উইং জানিয়েছে, একটি বিশেষ মহল সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগে