Ajker Patrika

২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির পূর্বাভাস

আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০২৪, ১৪: ১১
২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির পূর্বাভাস

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানি ধীরগতিতে হ্রাস পাচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের ত্রিপুরার অভ্যন্তরীণ অববাহিকায় ভারী বৃষ্টিপাত দেখা যায়নি। এমন প্রেক্ষাপটে আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।

আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান স্বাক্ষরিত নদ-নদীর পরিস্থিতি ও পূর্বাভাসে এই চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
 
একনজরে নদ-নদীর পরিস্থিতি ও পূর্বাভাসে বলা হয়, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানি ধীরগতিতে হ্রাস পাচ্ছে। বিগত ২৪ ঘণ্টায় পূর্বাঞ্চলীয় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকাসমূহে ভারী বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়নি এবং উজানের নদ-নদীর পানির সমতল হ্রাস পাওয়া শুরু হয়েছে। ফলে বর্তমানে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির ধীরগতিতে উন্নতি হচ্ছে।

আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য তুলে ধরে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলেছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এ সময় এ অঞ্চলের ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী, ফেনী, গোমতী, হালদা ইত্যাদি নদীসমূহের সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় কমতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়। 

এই সময়ে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানেও ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদ-নদীসমূহের সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানির সমতল কমছে। আর গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানিও কমছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এসব নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে।

গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দেশের অন্তত ৯ জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ফেনীর বাসিন্দারা আকস্মিক বন্যায় পড়েছে চরম দুর্ভোগে। তিন পার্বত্য জেলা—রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে যোগ হয়েছে পাহাড়ধসের ঘটনা; ডুবেছে চট্টগ্রাম নগরীর অনেক সড়ক। 

মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জসহ হাওরাঞ্চলের মানুষ তো বিপদে আছে আগে থেকেই। এবার নিয়ে গত তিন মাসে তৃতীয় দফায় বন্যাকবলিত হয়েছে তারা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস আছে। চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের ঘটনা ঘটতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরও ত্রিপুরা, মেঘালয়সহ বাংলাদেশের সঙ্গে পূর্বাঞ্চলীয় ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী ভারতের কয়েকটি রাজ্যে আজ শুক্রবারও ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক শাহবাগ থেকে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার বিচার দাবিতে শাহবাগে ছাত্র–জনতার বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার বিচার দাবিতে শাহবাগে ছাত্র–জনতার বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ থেকে এই আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।

শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান নিতে থাকেন ছাত্র-জনতা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে বিক্ষোভ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘ভারতীয় পণ্য, বয়কট, বয়কট’—স্লোগান দিতে থাকেন।

হাদি মারা যাওয়ার খবর ঘোষণার পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন ছাত্র-জনতা। পরে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতার বিভিন্ন অংশ সেখানে যোগ দেয়। আজ সকাল থেকেও ছাত্র-জনতা শাহবাগে উপস্থিত হন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সঙ্গে অনেকেই যোগ দিচ্ছেন।

এ দিকে ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী সংগ্রামের সেনানী শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদিকে ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্তৃক গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে’—আজ বেলা ৩টায় শাহবাগে আধিপত্যবাদবিরোধী সমাবেশের ঘোষণা দেয় ডাকসু, ইসলামি ছাত্রশিবির ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

গতকাল রাতে শাহবাগের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন কার্যত একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-তরুণ এবং দেশপ্রেমিক নাগরিকদের জীবন আজ হুমকির মুখে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমাদের কেউ পরাজিত করতে পারবে না।’

নাহিদ বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় যেসব স্পটে আপনারা নেমে এসেছিলেন—যেমন চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, রংপুর এবং ঢাকায় যাত্রাবাড়ী ও উত্তরাসহ সব জায়গায় অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করুন।’ শাহবাগে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।

গতকাল রাতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর সংবাদে উত্তাল হয়ে উঠে রাজধানী ঢাকা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক শরিফ ওসমান হাদি গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগরে গণসংযোগকালে চলন্ত রিকশায় আততায়ীর গুলিতে আহত হন। গুলিটি তাঁর মাথায় লাগে। ঢাকা এবং পরে সিঙ্গাপুরে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকা এখন এক উত্তাল ও থমথমে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

ওসমান হাদির মরদেহ আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে এসে পৌঁছাবে বলে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যমুনা রেলসেতু: মেয়াদ বাড়ছে, কমছে প্রকল্পের খরচ

তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
যমুনা রেলসেতু: মেয়াদ বাড়ছে, কমছে প্রকল্পের খরচ

যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল করলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের মেয়াদ এই ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। তবে নতুন প্রস্তাবে এই মেয়াদ ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনীতে এই প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় ২৬৮ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা কমিয়ে ১৬ হাজার ৫১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, যমুনা রেলসেতুর কাঠামো ও রেললাইন নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করা হয়। তবে ঠিকাদারের কাজের বিল বকেয়া রয়েছে। সংকেত (সিগন্যালিং) ব্যবস্থার কিছু কাজ এবং নতুন একটি প্যাকেজের আওতায় অবকাঠামো নির্মাণ-কাজ এখনো বাকি।

বিশেষ করে নতুন প্যাকেজের দরপত্র প্রক্রিয়াই শুরু করা যায়নি। ফলে প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পের মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) যমুনা রেলসেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে প্রথম সংশোধনীতে সেই মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।

প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডে এই প্রকল্পের ব্রিজ লাইটিংয়ের কিছু মালামাল পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মালামাল ঠিকাদার নিজ দায়িত্বে আবার সংগ্রহ করে সরবরাহ করবে। এ ছাড়া ওই অগ্নিকাণ্ডের পর আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স কিছুদিন বন্ধ থাকায় সিগন্যালিং-সংক্রান্ত কিছু মালামাল আমদানিতে বিলম্ব হয়েছে। পরে রুট পরিবর্তন করে এসব মালামাল অন্য বন্দর দিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এ কারণে কাজ সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হচ্ছে।

প্রকল্পের আওতায় একটি বিশেষ নির্মাণ প্যাকেজের (ডব্লিউডি-৫) অধীনে রেলওয়ে সেতু জাদুঘর, পরিদর্শন বাংলো, ক্যাফেটেরিয়া, অভ্যন্তরীণ সড়ক, মাটি ভরাট ও ড্রেনেজ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৪ কোটি টাকা। তবে ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্যাকেজে পরিবর্তন আনা হয়। সংশোধিত পরিকল্পনায় রেলওয়ে সেতু জাদুঘর বাদ দিয়ে পরিদর্শন বাংলো, অভ্যন্তরীণ সড়ক, ড্রেনেজ এবং সয়দাবাদ রেলওয়ে স্টেশনের অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিবর্তিত এই প্যাকেজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫৪ কোটি টাকা। তবে এখনো এই কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। দরপত্রপ্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং নির্মাণকাজ শেষ করতে অতিরিক্ত সময় লাগবে।

এদিকে প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ‘সিসিটিভি নজরদারি ব্যবস্থা’ শীর্ষক একটি আলাদা প্যাকেজ যুক্ত করা হয়েছে। এই প্যাকেজ বাস্তবায়নের কাজও বাকি রয়েছে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, সার্বিকভাবে যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৯ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব ইতিমধ্যে রেলপথ উপদেষ্টার অনুমোদন পেয়েছে। এখন এটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। প্রকল্পের ভেতর এখনো কিছু ছোটখাটো কাজ বাকি থাকায় চূড়ান্তভাবে কাজ শেষ করতে এই অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন। তিনি বলেন, ডব্লিউডি-৫ প্যাকেজের কাজ শেষ করতে আনুমানিক ছয় মাস লাগতে পারে। তবে এ নিয়ে বড় কোনো জটিলতা নেই। সিগন্যালিংয়ের কাজ আগামী মধ্য জানুয়ারিতে শেষ হবে। বাড়তি সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের সব কাজ শেষ হবে বলে তাঁরা আশাবাদী।

প্রকল্পের ব্যয় কমেছে

প্রকল্পের আওতায় যমুনা রেলসেতুসহ ভায়াডাক্ট, অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট, লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। সয়দাবাদ ও ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন আধুনিকীকরণ, ইয়ার্ড রিমডেলিং, সিগন্যালিং ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সেতু রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিস ও আবাসন নির্মাণ করা হয়েছে।

মূল ডিপিপিতে প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। পরে প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ টাকায়। তবে দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় ২৬৮ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা কমিয়ে ১৬ হাজার ৫১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

এই প্রকল্পে ৪ হাজার ৬০৪ দশমিক ৪১ কোটি টাকা অর্থায়ন করা হয়েছে দেশীয় উৎস থেকে এবং বাকি ১১ হাজার ৯০৮ দশমিক ১১ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা।

১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বহুমুখী সেতু দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুতে ফাটল দেখা দিলে ট্রেনের গতি সীমিত করা হয়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় তৎকালীন সরকার।

প্রকল্পের সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, মূল সেতু চালু হওয়ায় বড় অর্জন হয়েছে। তবে সিগন্যালিং, স্টেশন অবকাঠামো ও নিরাপত্তাব্যবস্থার মতো বিষয়গুলো সম্পূর্ণ না হলে কাঙ্ক্ষিত সুফল পুরোপুরি পাওয়া যাবে না। তাই প্রকল্পের মেয়াদ যৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে কাজ শেষ করাই বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত। তবে পরিকল্পিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারা একটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে, এটা বন্ধ করা দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজ সন্ধ্যায় দেশে আসবে ওসমান হাদির মরদেহ

বাসস, ঢাকা  
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ১৯
শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি
শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আনা হবে।

এনসিপির স্বাস্থ্য সেলের প্রধান ও হাদির চিকিৎসায় নিয়োজিত থাকা ডা. আব্দুল আহাদ সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে স্থানীয় সময় বেলা ৩টা ৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুর থেকে রওনা হয়ে সম্ভাব্য সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করবে।’

বাংলাদেশ সময় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি।

১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিতে গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে আততায়ী। এ সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাদির মৃত্যুতে আজ বিশেষ মোনাজাত ও শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অস্ত্রোপচারের সময় মারা যান ওসমান হাদি: ডা. আহাদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বন্দুকধারীর হামলায় গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি। রাজধানীর পল্টন এলাকায় তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। অস্ত্রোপচারের পর গতকাল তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বন্দুকধারীর হামলায় গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি। রাজধানীর পল্টন এলাকায় তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। অস্ত্রোপচারের পর গতকাল তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্যসচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

ডা. আহাদ জানান, বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টার দিকে শরিফ ওসমান হাদির পরিবার অস্ত্রোপচারের জন্য সম্মতি দেয়। পরে তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘অপারেশন শেষ হওয়ার পর আর কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি। পরে সরাসরি তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয়।’

এদিকে হাদির মরদেহ শুক্রবার সকালে দেশে এসে পৌঁছাবে বলেও জানিয়েছেন ডা. আহাদ।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিতে গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে আততায়ী। এ সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাদির মৃত্যুতে শুক্রবার বিশেষ মোনাজাত ও শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত