Ajker Patrika

বাম দলগুলো দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন নিয়ে ক্ষুদ্র হয়ে গেছে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ জুন ২০২২, ১৬: ১৭
বাম দলগুলো দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন নিয়ে ক্ষুদ্র হয়ে গেছে: প্রধানমন্ত্রী

দেশের বাম দলগুলো দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন নিয়ে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী নির্বাচনে বিএনপির নেতা কে সেটা জানতে চেয়ে তিনি বলেছেন, ‘জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাই না, সেটা থাকব না।’ আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বাম দলগুলো তো ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র হতে হতে মানে দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন, দাঁড়ি বসবে না কমা বসবে, কমা বসবে না সেমিকোলন বসবে—এই করতে করতে ভাঙতে ভাঙতে তাদের অবস্থা...তারা এখন বাম হয়ে কখনো ডানে কাইত হয়, কখনো বামে কাইত হয়...তাদের তো এই অবস্থা। আছে কে? আমাকে সেইটা বলেন না। একটা ভালো শক্তিশালী দল করে দেন, মাঠেই দেখা হবে। মাঠে আমরা দেখব।’

আওয়ামী লীগ হচ্ছে এই উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন একটা দল। যে দলটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একেবারে গণমানুষের মাধ্যমে। আর বিএনপির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আইয়ুব খানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে দল ভাঙা-গড়ার খেলা খেলেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দল ভাঙা-গড়া, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের থেকে একে-ওকে নিয়ে, মানে এ গাছের ছাল ও গাছের বাকল সব জোড়া দিয়ে, অর্থাৎ ক্ষমতায় বসে একটা দল তৈরি করা। সেই (বিএনপি) দলটাই হয়ে গেছে মূল দল। আবার পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি, সেটাও ওইভাবেই তৈরি। আরেক মিলিটারি ডিক্টেটর, সেও ক্ষমতায় বসে জাতীয় পার্টি তৈরি করেছে। যে দলগুলো তৃণমূল থেকে উঠে আসেনি, সেই দলগুলোর কাছে আপনারা কী আশা করেন?’

বিএনপির নেতৃত্ব কার হাতে জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কে নেতা? এতিমের অর্থ আত্মসাৎ এবং দুর্নীতির দায়ে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি, আরেকজন ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, একুশে আগস্টে গ্রেনেড হামলাসহ দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। একজন তো ফিউজিটিভ। আরেকজনকে আমি অবশ্য আমার নির্বাহী ক্ষমতাবলে তাঁর সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকার সুযোগটা দিয়েছি, বয়সের কথা বিবেচনা করে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন এই (বিএনপি) দলটা যে নির্বাচন করবে, আপনারা বললেন কোনো দল অংশগ্রহণ করেনি, আপনারা কীভাবে বললেন অংশগ্রহণ করেনি? ২০১৮-এর নির্বাচনে বিএনপি একেকটা সিটে কয়জনকে নমিনেশন দিয়েছিল? সেটা কি আপনাদের মনে আছে? এক সিটে একজনকে সকালে দেয়, দুপুরে সেটা পরিবর্তন করে আরেকজন হয়। তারপর দ্বিতীয় দফায় আরেকজনের নাম দেয়। অর্থাৎ যে যত বেশি টাকা দিচ্ছে, তাকে নমিনেশন দিয়ে দিচ্ছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই অবস্থায় একটা দল যখন নির্বাচনে তাদের প্রার্থী দেয়....ঢাকা থেকে তাদের এক নেতা একজনকে দিচ্ছে তো লন্ডন থেকে আরেক নেতা আরেকজনকে দিচ্ছে। যে তাকে টাকা না দেয়, সে নমিনেশন পাবে না। দিনে যদি তিনবার আপনারা নমিনেশন বদলান...তারপর দেখা গেল মাঝখানে নির্বাচন ছেড়ে চলে গেল। এটা কি অস্বীকার করতে পারবে বিএনপি? তাহলে এটা পার্টিসিপেটরি ইলেকশন হয় নাই এ কথা কীভাবে বলেন? আর যখন আপনি নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে মধ্যপথে চলে যান, তখন মাঠ ফাকা। তখন বাকিরা যা খুশি তাই করতে পারে। সেই দোষটা কাকে দেবেন? এটা তো আওয়ামী লীগকে দিতে পারেন না। আর এই বাস্তবতা সবাই ভুলে যায়।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘একটা মিথ্যা আপনি বারবার বলতে পারেন। আর সত্যের শক্তিটা হচ্ছে একবার, সত্যটা একবার। আমি জানি না বিদেশেও তাদের কাছে অপপ্রচার করা হয় যে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না। একটা দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তখনই, যখন মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করবে। তখনই তাদের দেখাতে হবে সেই দল নির্বাচন করে জয়ী হলে কে হবে সরকারপ্রধান। এইটা তো মানুষ আগে বিবেচনা করে। করে না? এটা খালি আমাদের দেশে না, পৃথিবীর সব দেশেই। তারা (বিএনপি) যে ইলেকশন করবে, তারা কাকে দেখাবে? সাজাপ্রাপ্ত ফিউজিটিভকে? সে তো এখন এই দেশের নাগরিকত্ব বাতিল করে দিয়ে বিদেশি নাগরিক হয়ে বসে আছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কত টাকা ইনভেস্ট করলে সহজে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পাওয়া যায়? একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়েও কীভাবে ব্রিটিশ নাগরিক হলো সেটা খোঁজ করবেন? সেটা খোঁজ করেন না। সেটা তো আপনারা করেন না। সেটা করলেই তো বেরিয়ে আসে। এই নিয়ে তারা কী ইলেকশনটা করবে সেটাই তো বড় কথা। এখানে গণতন্ত্রের দোষটা কোথায়? আরেকটা দলেরও (জাতীয় পার্টি), সেই তাদের (বিএনপি) মতো অবস্থা। তাদের (জাতীয় পার্টি) ঠিক সাংগঠনিক তৎপরতা নেই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাই না, সেটা থাকব না। সামরিক শাসকেরা যা করেছে তার বিরুদ্ধে আমিই সংগ্রাম করেছি, আন্দোলন করেছি। জেল-জুলুম, বোমা, গ্রেনেড, গুলির সম্মুখীন আমিই হয়েছি। কিন্তু গণতন্ত্রটা করতে পেরেছি বলেই, এই ধারাবাহিকতাটা আছে বলেই আজকে দেশের এই উন্নতিটা। ওদের (বিএনপি) জন্য তো কান্নাকাটি করে লাভ নাই। ওরা ইলেকশনটা করবে কী নিয়ে? পুঁজিটা কী? সমস্যা তো ওইখানেই। বাংলাদেশে বিএনপির একটাও কি যোগ্য নেতা নেই, যাকে তারা দলের চেয়ারম্যান করতে পারে? তাহলে তো তাদের এই দুরবস্থাটা হয় না।’

পদ্মার ওপারে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প স্থাপন

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে ওপারে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প স্থাপনের ওপর সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘রেডি টু কুক হলে সবারই সুবিধা হবে। বাড়ির গিন্নিরা বেশি খুশি হবে। কষ্ট করে মাছ কাটতে হবে না। তরকারিও কুটতে হবে না। রেডি করে এনে রান্না করে খাবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মার ওপারে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প যাতে গড়ে ওঠে, সেটার ওপর আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। চামড়াশিল্পের সঙ্গে জড়িত আমার এক আত্মীয়কে আজ সকালেই বলেছি, কৃষিশিল্প করবে, সেই প্রস্তুতি নাও। আমি বলেছি, ওখানে একটি শিল্পকারখানা করতে হবে, যেখানে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প হয়।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা এখন কৃষিতেই গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ খাদ্যদ্রব্যটাই আমাদের এখন সব থেকে বেশি প্রয়োজন। কারণ, কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পপণ্য কেবল বিদেশে রপ্তানি নয়, দেশেও বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য বলেছি, দক্ষিণাঞ্চলে এ ধরনের শিল্প করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। সেদিকে আমরা গুরুত্ব দিতে চাই।’

দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা গ্রামে গ্রামে উন্নতি করছি। কেউ তো কাজের লোক পাবে না। কিন্তু ঘরে বসে যেন রেডি টু কুক, রান্নার জন্য প্রস্তুত, খাওয়ার জন্য প্রস্তুত। এ রকম থাকলে পরে সকলেরই সুবিধা হবে। বাড়ির গিন্নিরা বেশি খুশি হবে। কষ্ট করে মাছ কাটতে হবে না। তরকারিও কুটতে হবে না। রেডি করে এনে রান্না করে খাবে।’

কৃষিপণ্য রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষিপণ্য রপ্তানি করতে গেলে অনুমতি লাগে। আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে অনুমতি নেওয়ার চেষ্টা করছি। এটা হলে পরে আমাদের কৃষিপণ্যগুলো রপ্তানি করতে পারব। আর আমাদের নিজের দেশে তো বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের সবার ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। কৃষির ওপর আমরা সব সময় গুরুত্ব দিই। কৃষি থেকে শিল্প, আমরা সেদিকেই যাচ্ছি।’

শাহদীন মালিক স্বাধীন কথা বলেন

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধের পরে দেশের রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের করা সমালোচনার জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, ‘আইনজীবী শাহদীন মালিক, উনি সব সময় স্বাধীন। স্বাধীনই থাকেন। স্বাধীন মালিক তিনি। তিনি বলেছিলেন, পদ্মা সেতু দেশি অর্থায়নে হবে না, সম্ভব নয়। কিন্তু সম্ভব হয়েছে। তাঁকে দাওয়াত দিচ্ছি, তিনি যেন পদ্মা সেতুতে আসেন।’

২০১১ সালের ৭ অক্টোবর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেওয়া ‘স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের কোনো উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অর্থায়ন বাতিল করল’—এই বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া নিজেই ভুলে গেছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্টের টাকা বিশ্বব্যাংক বন্ধ করে দিয়েছিল দুর্নীতির কারণে। সেটার সঙ্গে তিনি ও তাঁর পুত্ররাও জড়িত ছিলেন। সিমেন্স এটার সঙ্গে জড়িত ছিল। এটা আমাদের কথা না, এফবিআই তথ্যটা বের করেছিল। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের টাকা বিশ্বব্যাংক বন্ধ করে দিয়েছিল দুর্নীতির কারণে। কাজেই এটা ভুলে গেছেন। বাঙালি তো এমনিতে ভুলে যায়।’

ড. আকবর আলি খান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ’৯৬ সালে যখন সরকারে এসেছিলাম, তখন তিনি অর্থসচিব ছিলেন। তিনি ২০১২ সালের ১ জুলাই বলেছিলেন, বিশ্বব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের পক্ষে পরবর্তীতে ঋণসহায়তা পাওয়া খুব দুষ্কর হয়ে পড়বে। যখনই কোনো দাতা সংস্থা কোনো নতুন প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহী হবে, তারা দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশকে ভিন্ন চোখে দেখবে। সরকার যদি বিকল্প অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করে, তাহলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে, কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাবে।’ এই কথার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি পদ্মা সেতুর কাজের মান নিয়ে কেউ কখনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না। তাই এই কথার কোনো ভিত্তি নেই।’

সরকারের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের গ্রহণযোগ্যতা আন্তর্জাতিকভাবে আছে কি না, আপনারই বিচার করবেন। বাংলাদেশের জনগণ বিচার করবে।’

নিজ অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করার যে পরিকল্পনা করেছে, তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে সরকার ইচ্ছা করলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারবে; কিন্তু শেষ করতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দীনের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই তাঁকে দাওয়াত দিতে। এটা যে শেষ হয়েছে, তিনি যেন পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে একটু যান। আমরা দাওয়াত দিচ্ছি। সবাইকে দাওয়াত দেব, যারা এ কথা বলেছেন, সবাইকে দাওয়াত দেব।’

পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করতে পারলেও শেষ করার গ্যারান্টি থাকবে না। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুরের প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কিন্তু শেষ করেছি। তাঁকেও দাওয়াত দিচ্ছি পদ্মা সেতুটা গাড়িতে পাড়ি দিতে।’

এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা প্রয়োজন, যার জোগান দিতে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ পড়বে। এর দায় সরকার এড়াতে পারবে না। সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের এমন বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রিজার্ভ কিন্তু এখনো ৪২ বিলিয়ন। বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ পড়েনি। সঙ্গে অন্য প্রকল্পগুলোও করে যাচ্ছি।’

এই মুহূর্তে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু শুরু করা হলে দেশের অন্য সব অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য যে কাজগুলো করা যেত, সেগুলো আর হবে না। সিপিডির ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের এমন বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব কাজ কিন্তু চলছে। কোনোটা কিন্তু থেমে যায়নি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এইটুকু বললাম এই কারণে, তাঁরা যখন কথা বলেন। আমি জানি না, কেন তাঁদের ভেতরে আত্মবিশ্বাসের অভাব। তারা ভুলে যান জাতির পিতার নেতৃত্বে এই দেশের মানুষ যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। আমরা বিজয়ী জাতি, কোনো কথা বললে ভেবেচিন্তেই বলি। বিজয়ী জাতি হিসেবে মানসিক শক্তি নিয়েই কথা বলি। কিন্তু ওনাদের ভেতরে একটা পরাজিত মনোভাব। তারা সব সময় আত্মগ্লানিতে ভোগেন, তাই তাদের আত্মবিশ্বাসের অভাব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে। আমি যেটা পারব, সেটাই বলব। যেটা বলব, করব। করে দেখাতে পারি, সেটা করেছি। এই জন্য দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ।’

বিশ্বব্যাংক সরে যাওয়ার পরে অধ্যাপক জামিলুর রেজাসহ যেসব বিশেষজ্ঞ প্যানেল সরকারকে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী। এই উপদেষ্টা প্যানেল সরকারের পাশে না দাঁড়ালে হয়তো পদ্মা সেতু সম্ভব হতো না বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিরুদ্ধ মতের মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে উদাসীনতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা দেশে আইনের শাসনের জন্য চূড়ান্ত হুমকিস্বরূপ এবং সমাজে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।

বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মব সন্ত্রাসে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।

আসকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে কমপক্ষে ২৯৩ জন নাগরিক মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। মবের শিকার হয়ে ২০২৫ সালে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ২৭, গাজীপুরে ১৭, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মাসের থেকে বেশি ঘটেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, যদিও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ছিলেন দল-মত নিরপেক্ষ সাধারণ নাগরিক।

আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কমপক্ষে ৩৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, নির্যাতনে, কথিত ‘গুলিতে’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে। ২০২৫ সালে কমপক্ষে ১০৭ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন হাজতি এবং কয়েদি ৩৮ জন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে অন্তত ৪০১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতার এই চিত্র কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভক্তিও সহিংসতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনি নিপীড়নের ঘটনা একটি উদ্বেগজনক ধারায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩৮১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকির শিকার হয়েছেন অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন ২০ জন। প্রকাশিত সংবাদ বা মতামতকে কেন্দ্র করে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২৩ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরাসরি হামলার শিকার হয়েছেন ১১৮ জন সাংবাদিক। এ সময়কালে দুর্বৃত্ত কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রহস্যজনকভাবে ৪ জন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৪২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি বাড়িঘর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি বসত ঘরে। এ ছাড়া ৪টি মন্দিরে হামলা, ৬৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, ৯টি জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ বছর দেশে ২১৭ জন নারী স্বামীর মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন এবং ৬৩ জন নারীকে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও ৫১ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অন্তত ১৬৮ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ধর্ষণের ৭৪৯টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৬৯টি ছিল একক ধর্ষণ এবং ১৮০টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। ধর্ষণের পর অন্তত ৩৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার পর প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ জন নারী।

আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত ৪১০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, আত্মহত্যা এবং বিস্ফোরণে মৃত্যু।

আসক মনে করে, দেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আশা ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হলেও বাস্তব পর্যায়ে বৈষম্য, নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের চিত্রে আশানুরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্পিকার ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৮
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।

এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘খালেদা জিয়াকে এভাবে বিদায় দিতে হবে ভাবিনি’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।

লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সংসদ-এলাকা

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’

বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’

জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমানের পদত্যাগ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৪
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।

তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত