সংস্কার কমিশনের সুপারিশ
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে অনেক মানুষ দরিদ্রতার মধ্যে পড়ছে। বিষয়টি বিবেচনায় ব্যয়বহুল চিকিৎসায় স্বাস্থ্যবিমা চালুর পক্ষে স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার কমিশন। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ প্রস্তাব দিয়ে শুরুতে চার থেকে পাঁচটি ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য বিমা-সুবিধা দিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ দেবে কমিশন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যানসার, ডায়ালাইসিস, কার্ডিয়াক সার্জারি ও পক্ষাঘাত।
সংস্কার কমিশন বলেছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সরকারের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। প্রতিবেদনে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার বাইরে ব্যয়বহুল চিকিৎসাগুলোকেও অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে। সংস্কার কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্বাস্থ্যবিমার প্রস্তাবকে ভালো বললেও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এটি বাস্তবায়নের উপায়ও কমিশনকে বলতে হবে। জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল ছাড়া সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
গত বছরের ১৮ নভেম্বর ১২ সদস্যের স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশনের প্রধান করা হয়েছে জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানকে। প্রতিবেদন দিতে কমিশনকে প্রথমে ৯০ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়। পরে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম দফায় ৩০ মার্চ পর্যন্ত এবং মার্চের শেষে দ্বিতীয় দফায় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।
কমিশনের অন্তত তিন সদস্য আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁদের মাঠপর্যায়ের সব কার্যক্রম মার্চের মধ্যেই শেষ হয়েছে। জেলা, বিভাগ, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চিকিৎসা শিক্ষা, ওষুধ, জনস্বাস্থ্য, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের বিষয়সহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করা হয়েছে।
মাঠপর্যায়ের কর্মীদের মতামত, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদনও আমলে নিয়েছে কমিশন। ইংরেজি ভাষায় তৈরি করা প্রতিবেদনটি বর্তমানে বাংলা ভাষায় চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
সূত্র বলেছে, কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় (আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার) বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা। নিজস্ব ব্যয়ে চিকিৎসা করাতে বিপর্যয়ের পরিস্থিতিতে পড়ছে মানুষ। বিনা মূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হওয়া উচিত। তবে প্রাথমিক সেবার বাইরেও ব্যয়বহুল চিকিৎসাগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব থাকছে প্রতিবেদনে।
সরকারের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট বলছে, স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় ৬৭ শতাংশ। তবে বিশ্বব্যাংকের হিসাবে বাংলাদেশে এই ব্যয় ৭৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সূত্র বলছে, চিকিৎসার উচ্চব্যয়ের কারণে দেশের ১৮ শতাংশ পরিবার বিপর্যয়মূলক স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়ের মধ্যে পড়েছে। ২০২২ সালে বিপর্যয়কর স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় মেটাতে গিয়ে দেশে ৬১ লাখের বেশি মানুষ দরিদ্র হয়েছে।
সংস্কার কমিশনের একজন সদস্য বলেন, স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়নের বিষয়টিতে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে গুরুত্ব দিতে সরকারকে প্রস্তাব করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় মেটাতে গিয়ে মানুষকে দরিদ্রতা থেকে বাঁচাতে কর্মপরিকল্পনা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ধনীরা চিকিৎসার জন্য কোটি টাকা ব্যয় করলেও বিপর্যয়ের মুখে পড়েন না। তবে মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষ দরিদ্র হন। কেউ কেউ সর্বস্ব হারান। অনেক সময় অর্থের অভাবে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে। গবেষণার তথ্য ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে এমন চার থেকে পাঁচটি জটিল স্বাস্থ্য অবস্থা ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা শনাক্ত করা হয়েছে। যেগুলোর ব্যয় বিমা থেকে বহন করতে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হবে।
যেসব চিকিৎসা বিমার আওতায় আনার প্রস্তাব থাকছে
দেশে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই মারা যান অসংক্রামক ও দীর্ঘমেয়াদি কয়েকটি রোগে। এর মধ্যে হৃদ্রোগ ও ক্যানসার শীর্ষে। এ ছাড়া পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা ও কিডনি বিকল রোগীদের ডায়ালাইসিস ব্যয়বহুল হওয়ায় চিকিৎসাবঞ্চিত হচ্ছেন অনেক রোগী।
কমিশন সূত্র বলছে, ব্যয় বিবেচনায় কমিশন শুরুতে ডায়ালাইসিস, পক্ষাঘাত, করোনারি আর্টারি বাইপাস গ্রাফটিং বা বাইপাস সার্জারি, ক্যানসারের চিকিৎসাকে স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনার প্রস্তাব দেবে।
কমিশনের দুজন সদস্য বলেন, তাঁরা চার থেকে পাঁচটি অবস্থা নির্ণয় করেছেন। সরকার এগুলোর দু-তিনটি নিয়ে শুরু করতে পারে। পক্ষাঘাত, ডায়ালাইসিসের জন্য পুরো পরিবার মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়ে। ক্যানসারের চিকিৎসা, কার্ডিয়াক সার্জারি ব্যয়বহুল। যেসব খরচ একজন মানুষকে দারিদ্র্যসীমায় ঠেলে দিচ্ছে, তা নিয়ে সরকারের বিমা শুরু করা উচিত। এসব বিমার আওতায় এলে প্রতারণার সুযোগ থাকবে না। কারণ, কার্ডিয়াক সার্জারি, ক্যানসার বা ডায়ালাইসিস প্রয়োজন না হলে কোনো প্রতিষ্ঠান এসব নিয়ে প্রতারণা করতে পারবে না। শুরুতে সাধারণ রোগগুলোকে বিমায় রাখলে তা কার্যকর করা কঠিন। ধীরে ধীরে সব ধরনের চিকিৎসা স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনা যাবে।
তবে দেশে এসব রোগের চিকিৎসা-সুবিধা অপ্রতুল। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের এক গবেষণার তথ্য বলছে, দেশে কার্ডিয়াক সার্জারির সুবিধা থাকা প্রতিষ্ঠান আছে ৩২টি।
জাতীয় কিডনি ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট বলছে, দেশে সরকারি ও বেসরকারি কিডনি ডায়ালাইসিস কেন্দ্র আছে ১৩০টি, ডায়ালাইসিস মেশিন রয়েছে ৬৫০টি। অথচ দেশে ২ কোটি মানুষ দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে বছরে অন্তত ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার মানুষের কিডনি রোগ শেষ পর্যায়ে (পঞ্চম স্তর) পৌঁছায়। অর্থাৎ তাঁদের কিডনি প্রতিস্থাপনের বিকল্প নেই। প্রতিস্থাপন পর্যন্ত তাঁদের ডায়ালাইসিস করতে হবে। কিডনি প্রতিস্থাপনের সুবিধা রয়েছে ১০টি প্রতিষ্ঠানে। ডায়ালাইসিস প্রয়োজন—এমন রোগীদের মাত্র ২৫ শতাংশ এই সুবিধার আওতায় আসছে। একইভাবে ক্যানসারের চিকিৎসা-সুবিধাও অপ্রতুল।
চিকিৎসা-সুবিধার অপ্রতুলতায় কীভাবে স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন হবে—এমন প্রশ্নে কমিশনের একজন সদস্য জানান, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বাড়াতে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হবে। সচ্ছল ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রিমিয়াম (কিস্তি) নেওয়া হতে পারে। সামাজিক বিনিয়োগ, সোশ্যাল বিজনেসের (সামাজিক ব্যবসা) জন্য বিনিয়োগকারীদের উদ্বুদ্ধ করা হতে পারে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নিজ উদ্যোগে কাজ করত। সে ক্ষেত্রে সরকারের কোষাগারে তারা লভ্যাংশের নির্দিষ্ট অংশ জমা দেবে। তা থেকে জটিল চিকিৎসায় ব্যয় হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, একটি দেশের স্বাস্থ্য-ব্যয়ের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ সেবাগ্রহীতার নিজের পকেট থেকে যেতে পারে। স্বাস্থ্যের জন্য সরকারের ব্যয় জিডিপির ৫ থেকে ৬ শতাংশ হতে হবে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৫ দশমিক ২ শতাংশ, যা জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। ডব্লিউএইচওর সর্বশেষ হিসাব বলছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় ছিল জিডিপির ২ দশমিক ৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্যবিমা নিয়ে সংস্কার কমিশনের চিন্তাকে ইতিবাচক বলছেন স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা। তবে বিমা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে পরিকল্পনা থাকতে হবে বলে মনে করেন তাঁরা। তাঁরা বলছেন, সরকার একটি জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল গঠন করতে পারে। যেখানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সবার কাছ থেকে দৈনিক এক টাকা বা তার কম কেটে নেবে। অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার, তামাক পণ্যসহ অতি বিলাসী পণ্য থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের বিশেষ কর আদায় করে ওই তহবিলে রাখা উচিত। সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী সরকার চিকিৎসাবিমায় খরচ করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কীভাবে স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন হবে, তার স্পষ্ট উল্লেখ কমিশনের প্রতিবেদনে থাকতে হবে। রোগের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে কম, তাতে সমস্যা নেই। দেশে স্বাস্থ্যবিমা চালু করা কঠিন। কেননা, মাত্র ১২-১৩ শতাংশ কর্মজীবী মানুষ আনুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। বাকিরা আয় করেন অনানুষ্ঠানিক খাতে। তাঁদের কাছ থেকে কীভাবে বিমার প্রিমিয়াম নেওয়া হবে? এসব বহনের সক্ষমতা সরকারের নেই। কেউ প্রিমিয়াম দিয়ে বিমার সুবিধা নিলে তেমন বিমা তো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের রয়েছে। তিনি বলেন, বিমার সুবিধায় স্বাস্থ্যসেবা কোন প্রতিষ্ঠান, কীভাবে দেবে, তার উপায় থাকা উচিত। জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল ছাড়া সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে অনেক মানুষ দরিদ্রতার মধ্যে পড়ছে। বিষয়টি বিবেচনায় ব্যয়বহুল চিকিৎসায় স্বাস্থ্যবিমা চালুর পক্ষে স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার কমিশন। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ প্রস্তাব দিয়ে শুরুতে চার থেকে পাঁচটি ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য বিমা-সুবিধা দিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ দেবে কমিশন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যানসার, ডায়ালাইসিস, কার্ডিয়াক সার্জারি ও পক্ষাঘাত।
সংস্কার কমিশন বলেছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সরকারের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। প্রতিবেদনে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার বাইরে ব্যয়বহুল চিকিৎসাগুলোকেও অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে। সংস্কার কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্বাস্থ্যবিমার প্রস্তাবকে ভালো বললেও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এটি বাস্তবায়নের উপায়ও কমিশনকে বলতে হবে। জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল ছাড়া সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
গত বছরের ১৮ নভেম্বর ১২ সদস্যের স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশনের প্রধান করা হয়েছে জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানকে। প্রতিবেদন দিতে কমিশনকে প্রথমে ৯০ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়। পরে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম দফায় ৩০ মার্চ পর্যন্ত এবং মার্চের শেষে দ্বিতীয় দফায় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।
কমিশনের অন্তত তিন সদস্য আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁদের মাঠপর্যায়ের সব কার্যক্রম মার্চের মধ্যেই শেষ হয়েছে। জেলা, বিভাগ, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চিকিৎসা শিক্ষা, ওষুধ, জনস্বাস্থ্য, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের বিষয়সহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করা হয়েছে।
মাঠপর্যায়ের কর্মীদের মতামত, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদনও আমলে নিয়েছে কমিশন। ইংরেজি ভাষায় তৈরি করা প্রতিবেদনটি বর্তমানে বাংলা ভাষায় চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
সূত্র বলেছে, কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় (আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার) বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা। নিজস্ব ব্যয়ে চিকিৎসা করাতে বিপর্যয়ের পরিস্থিতিতে পড়ছে মানুষ। বিনা মূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হওয়া উচিত। তবে প্রাথমিক সেবার বাইরেও ব্যয়বহুল চিকিৎসাগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব থাকছে প্রতিবেদনে।
সরকারের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট বলছে, স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় ৬৭ শতাংশ। তবে বিশ্বব্যাংকের হিসাবে বাংলাদেশে এই ব্যয় ৭৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সূত্র বলছে, চিকিৎসার উচ্চব্যয়ের কারণে দেশের ১৮ শতাংশ পরিবার বিপর্যয়মূলক স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়ের মধ্যে পড়েছে। ২০২২ সালে বিপর্যয়কর স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় মেটাতে গিয়ে দেশে ৬১ লাখের বেশি মানুষ দরিদ্র হয়েছে।
সংস্কার কমিশনের একজন সদস্য বলেন, স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়নের বিষয়টিতে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে গুরুত্ব দিতে সরকারকে প্রস্তাব করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় মেটাতে গিয়ে মানুষকে দরিদ্রতা থেকে বাঁচাতে কর্মপরিকল্পনা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ধনীরা চিকিৎসার জন্য কোটি টাকা ব্যয় করলেও বিপর্যয়ের মুখে পড়েন না। তবে মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষ দরিদ্র হন। কেউ কেউ সর্বস্ব হারান। অনেক সময় অর্থের অভাবে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে। গবেষণার তথ্য ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে এমন চার থেকে পাঁচটি জটিল স্বাস্থ্য অবস্থা ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা শনাক্ত করা হয়েছে। যেগুলোর ব্যয় বিমা থেকে বহন করতে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হবে।
যেসব চিকিৎসা বিমার আওতায় আনার প্রস্তাব থাকছে
দেশে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই মারা যান অসংক্রামক ও দীর্ঘমেয়াদি কয়েকটি রোগে। এর মধ্যে হৃদ্রোগ ও ক্যানসার শীর্ষে। এ ছাড়া পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা ও কিডনি বিকল রোগীদের ডায়ালাইসিস ব্যয়বহুল হওয়ায় চিকিৎসাবঞ্চিত হচ্ছেন অনেক রোগী।
কমিশন সূত্র বলছে, ব্যয় বিবেচনায় কমিশন শুরুতে ডায়ালাইসিস, পক্ষাঘাত, করোনারি আর্টারি বাইপাস গ্রাফটিং বা বাইপাস সার্জারি, ক্যানসারের চিকিৎসাকে স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনার প্রস্তাব দেবে।
কমিশনের দুজন সদস্য বলেন, তাঁরা চার থেকে পাঁচটি অবস্থা নির্ণয় করেছেন। সরকার এগুলোর দু-তিনটি নিয়ে শুরু করতে পারে। পক্ষাঘাত, ডায়ালাইসিসের জন্য পুরো পরিবার মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়ে। ক্যানসারের চিকিৎসা, কার্ডিয়াক সার্জারি ব্যয়বহুল। যেসব খরচ একজন মানুষকে দারিদ্র্যসীমায় ঠেলে দিচ্ছে, তা নিয়ে সরকারের বিমা শুরু করা উচিত। এসব বিমার আওতায় এলে প্রতারণার সুযোগ থাকবে না। কারণ, কার্ডিয়াক সার্জারি, ক্যানসার বা ডায়ালাইসিস প্রয়োজন না হলে কোনো প্রতিষ্ঠান এসব নিয়ে প্রতারণা করতে পারবে না। শুরুতে সাধারণ রোগগুলোকে বিমায় রাখলে তা কার্যকর করা কঠিন। ধীরে ধীরে সব ধরনের চিকিৎসা স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনা যাবে।
তবে দেশে এসব রোগের চিকিৎসা-সুবিধা অপ্রতুল। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের এক গবেষণার তথ্য বলছে, দেশে কার্ডিয়াক সার্জারির সুবিধা থাকা প্রতিষ্ঠান আছে ৩২টি।
জাতীয় কিডনি ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট বলছে, দেশে সরকারি ও বেসরকারি কিডনি ডায়ালাইসিস কেন্দ্র আছে ১৩০টি, ডায়ালাইসিস মেশিন রয়েছে ৬৫০টি। অথচ দেশে ২ কোটি মানুষ দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে বছরে অন্তত ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার মানুষের কিডনি রোগ শেষ পর্যায়ে (পঞ্চম স্তর) পৌঁছায়। অর্থাৎ তাঁদের কিডনি প্রতিস্থাপনের বিকল্প নেই। প্রতিস্থাপন পর্যন্ত তাঁদের ডায়ালাইসিস করতে হবে। কিডনি প্রতিস্থাপনের সুবিধা রয়েছে ১০টি প্রতিষ্ঠানে। ডায়ালাইসিস প্রয়োজন—এমন রোগীদের মাত্র ২৫ শতাংশ এই সুবিধার আওতায় আসছে। একইভাবে ক্যানসারের চিকিৎসা-সুবিধাও অপ্রতুল।
চিকিৎসা-সুবিধার অপ্রতুলতায় কীভাবে স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন হবে—এমন প্রশ্নে কমিশনের একজন সদস্য জানান, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বাড়াতে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হবে। সচ্ছল ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রিমিয়াম (কিস্তি) নেওয়া হতে পারে। সামাজিক বিনিয়োগ, সোশ্যাল বিজনেসের (সামাজিক ব্যবসা) জন্য বিনিয়োগকারীদের উদ্বুদ্ধ করা হতে পারে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নিজ উদ্যোগে কাজ করত। সে ক্ষেত্রে সরকারের কোষাগারে তারা লভ্যাংশের নির্দিষ্ট অংশ জমা দেবে। তা থেকে জটিল চিকিৎসায় ব্যয় হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, একটি দেশের স্বাস্থ্য-ব্যয়ের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ সেবাগ্রহীতার নিজের পকেট থেকে যেতে পারে। স্বাস্থ্যের জন্য সরকারের ব্যয় জিডিপির ৫ থেকে ৬ শতাংশ হতে হবে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৫ দশমিক ২ শতাংশ, যা জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। ডব্লিউএইচওর সর্বশেষ হিসাব বলছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় ছিল জিডিপির ২ দশমিক ৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্যবিমা নিয়ে সংস্কার কমিশনের চিন্তাকে ইতিবাচক বলছেন স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা। তবে বিমা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে পরিকল্পনা থাকতে হবে বলে মনে করেন তাঁরা। তাঁরা বলছেন, সরকার একটি জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল গঠন করতে পারে। যেখানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সবার কাছ থেকে দৈনিক এক টাকা বা তার কম কেটে নেবে। অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার, তামাক পণ্যসহ অতি বিলাসী পণ্য থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের বিশেষ কর আদায় করে ওই তহবিলে রাখা উচিত। সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী সরকার চিকিৎসাবিমায় খরচ করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কীভাবে স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন হবে, তার স্পষ্ট উল্লেখ কমিশনের প্রতিবেদনে থাকতে হবে। রোগের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে কম, তাতে সমস্যা নেই। দেশে স্বাস্থ্যবিমা চালু করা কঠিন। কেননা, মাত্র ১২-১৩ শতাংশ কর্মজীবী মানুষ আনুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। বাকিরা আয় করেন অনানুষ্ঠানিক খাতে। তাঁদের কাছ থেকে কীভাবে বিমার প্রিমিয়াম নেওয়া হবে? এসব বহনের সক্ষমতা সরকারের নেই। কেউ প্রিমিয়াম দিয়ে বিমার সুবিধা নিলে তেমন বিমা তো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের রয়েছে। তিনি বলেন, বিমার সুবিধায় স্বাস্থ্যসেবা কোন প্রতিষ্ঠান, কীভাবে দেবে, তার উপায় থাকা উচিত। জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল ছাড়া সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে অনেক মানুষ দরিদ্রতার মধ্যে পড়ছে। বিষয়টি বিবেচনায় ব্যয়বহুল চিকিৎসায় স্বাস্থ্যবিমা চালুর পক্ষে স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার কমিশন। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ প্রস্তাব দিয়ে শুরুতে চার থেকে পাঁচটি ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য বিমা-সুবিধা দিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ দেবে কমিশন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যানসার, ডায়ালাইসিস, কার্ডিয়াক সার্জারি ও পক্ষাঘাত।
সংস্কার কমিশন বলেছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সরকারের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। প্রতিবেদনে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার বাইরে ব্যয়বহুল চিকিৎসাগুলোকেও অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে। সংস্কার কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্বাস্থ্যবিমার প্রস্তাবকে ভালো বললেও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এটি বাস্তবায়নের উপায়ও কমিশনকে বলতে হবে। জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল ছাড়া সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
গত বছরের ১৮ নভেম্বর ১২ সদস্যের স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশনের প্রধান করা হয়েছে জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানকে। প্রতিবেদন দিতে কমিশনকে প্রথমে ৯০ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়। পরে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম দফায় ৩০ মার্চ পর্যন্ত এবং মার্চের শেষে দ্বিতীয় দফায় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।
কমিশনের অন্তত তিন সদস্য আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁদের মাঠপর্যায়ের সব কার্যক্রম মার্চের মধ্যেই শেষ হয়েছে। জেলা, বিভাগ, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চিকিৎসা শিক্ষা, ওষুধ, জনস্বাস্থ্য, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের বিষয়সহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করা হয়েছে।
মাঠপর্যায়ের কর্মীদের মতামত, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদনও আমলে নিয়েছে কমিশন। ইংরেজি ভাষায় তৈরি করা প্রতিবেদনটি বর্তমানে বাংলা ভাষায় চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
সূত্র বলেছে, কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় (আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার) বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা। নিজস্ব ব্যয়ে চিকিৎসা করাতে বিপর্যয়ের পরিস্থিতিতে পড়ছে মানুষ। বিনা মূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হওয়া উচিত। তবে প্রাথমিক সেবার বাইরেও ব্যয়বহুল চিকিৎসাগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব থাকছে প্রতিবেদনে।
সরকারের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট বলছে, স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় ৬৭ শতাংশ। তবে বিশ্বব্যাংকের হিসাবে বাংলাদেশে এই ব্যয় ৭৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সূত্র বলছে, চিকিৎসার উচ্চব্যয়ের কারণে দেশের ১৮ শতাংশ পরিবার বিপর্যয়মূলক স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়ের মধ্যে পড়েছে। ২০২২ সালে বিপর্যয়কর স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় মেটাতে গিয়ে দেশে ৬১ লাখের বেশি মানুষ দরিদ্র হয়েছে।
সংস্কার কমিশনের একজন সদস্য বলেন, স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়নের বিষয়টিতে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে গুরুত্ব দিতে সরকারকে প্রস্তাব করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় মেটাতে গিয়ে মানুষকে দরিদ্রতা থেকে বাঁচাতে কর্মপরিকল্পনা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ধনীরা চিকিৎসার জন্য কোটি টাকা ব্যয় করলেও বিপর্যয়ের মুখে পড়েন না। তবে মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষ দরিদ্র হন। কেউ কেউ সর্বস্ব হারান। অনেক সময় অর্থের অভাবে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে। গবেষণার তথ্য ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে এমন চার থেকে পাঁচটি জটিল স্বাস্থ্য অবস্থা ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা শনাক্ত করা হয়েছে। যেগুলোর ব্যয় বিমা থেকে বহন করতে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হবে।
যেসব চিকিৎসা বিমার আওতায় আনার প্রস্তাব থাকছে
দেশে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই মারা যান অসংক্রামক ও দীর্ঘমেয়াদি কয়েকটি রোগে। এর মধ্যে হৃদ্রোগ ও ক্যানসার শীর্ষে। এ ছাড়া পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা ও কিডনি বিকল রোগীদের ডায়ালাইসিস ব্যয়বহুল হওয়ায় চিকিৎসাবঞ্চিত হচ্ছেন অনেক রোগী।
কমিশন সূত্র বলছে, ব্যয় বিবেচনায় কমিশন শুরুতে ডায়ালাইসিস, পক্ষাঘাত, করোনারি আর্টারি বাইপাস গ্রাফটিং বা বাইপাস সার্জারি, ক্যানসারের চিকিৎসাকে স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনার প্রস্তাব দেবে।
কমিশনের দুজন সদস্য বলেন, তাঁরা চার থেকে পাঁচটি অবস্থা নির্ণয় করেছেন। সরকার এগুলোর দু-তিনটি নিয়ে শুরু করতে পারে। পক্ষাঘাত, ডায়ালাইসিসের জন্য পুরো পরিবার মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়ে। ক্যানসারের চিকিৎসা, কার্ডিয়াক সার্জারি ব্যয়বহুল। যেসব খরচ একজন মানুষকে দারিদ্র্যসীমায় ঠেলে দিচ্ছে, তা নিয়ে সরকারের বিমা শুরু করা উচিত। এসব বিমার আওতায় এলে প্রতারণার সুযোগ থাকবে না। কারণ, কার্ডিয়াক সার্জারি, ক্যানসার বা ডায়ালাইসিস প্রয়োজন না হলে কোনো প্রতিষ্ঠান এসব নিয়ে প্রতারণা করতে পারবে না। শুরুতে সাধারণ রোগগুলোকে বিমায় রাখলে তা কার্যকর করা কঠিন। ধীরে ধীরে সব ধরনের চিকিৎসা স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনা যাবে।
তবে দেশে এসব রোগের চিকিৎসা-সুবিধা অপ্রতুল। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের এক গবেষণার তথ্য বলছে, দেশে কার্ডিয়াক সার্জারির সুবিধা থাকা প্রতিষ্ঠান আছে ৩২টি।
জাতীয় কিডনি ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট বলছে, দেশে সরকারি ও বেসরকারি কিডনি ডায়ালাইসিস কেন্দ্র আছে ১৩০টি, ডায়ালাইসিস মেশিন রয়েছে ৬৫০টি। অথচ দেশে ২ কোটি মানুষ দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে বছরে অন্তত ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার মানুষের কিডনি রোগ শেষ পর্যায়ে (পঞ্চম স্তর) পৌঁছায়। অর্থাৎ তাঁদের কিডনি প্রতিস্থাপনের বিকল্প নেই। প্রতিস্থাপন পর্যন্ত তাঁদের ডায়ালাইসিস করতে হবে। কিডনি প্রতিস্থাপনের সুবিধা রয়েছে ১০টি প্রতিষ্ঠানে। ডায়ালাইসিস প্রয়োজন—এমন রোগীদের মাত্র ২৫ শতাংশ এই সুবিধার আওতায় আসছে। একইভাবে ক্যানসারের চিকিৎসা-সুবিধাও অপ্রতুল।
চিকিৎসা-সুবিধার অপ্রতুলতায় কীভাবে স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন হবে—এমন প্রশ্নে কমিশনের একজন সদস্য জানান, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বাড়াতে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হবে। সচ্ছল ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রিমিয়াম (কিস্তি) নেওয়া হতে পারে। সামাজিক বিনিয়োগ, সোশ্যাল বিজনেসের (সামাজিক ব্যবসা) জন্য বিনিয়োগকারীদের উদ্বুদ্ধ করা হতে পারে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নিজ উদ্যোগে কাজ করত। সে ক্ষেত্রে সরকারের কোষাগারে তারা লভ্যাংশের নির্দিষ্ট অংশ জমা দেবে। তা থেকে জটিল চিকিৎসায় ব্যয় হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, একটি দেশের স্বাস্থ্য-ব্যয়ের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ সেবাগ্রহীতার নিজের পকেট থেকে যেতে পারে। স্বাস্থ্যের জন্য সরকারের ব্যয় জিডিপির ৫ থেকে ৬ শতাংশ হতে হবে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৫ দশমিক ২ শতাংশ, যা জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। ডব্লিউএইচওর সর্বশেষ হিসাব বলছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় ছিল জিডিপির ২ দশমিক ৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্যবিমা নিয়ে সংস্কার কমিশনের চিন্তাকে ইতিবাচক বলছেন স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা। তবে বিমা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে পরিকল্পনা থাকতে হবে বলে মনে করেন তাঁরা। তাঁরা বলছেন, সরকার একটি জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল গঠন করতে পারে। যেখানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সবার কাছ থেকে দৈনিক এক টাকা বা তার কম কেটে নেবে। অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার, তামাক পণ্যসহ অতি বিলাসী পণ্য থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের বিশেষ কর আদায় করে ওই তহবিলে রাখা উচিত। সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী সরকার চিকিৎসাবিমায় খরচ করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কীভাবে স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন হবে, তার স্পষ্ট উল্লেখ কমিশনের প্রতিবেদনে থাকতে হবে। রোগের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে কম, তাতে সমস্যা নেই। দেশে স্বাস্থ্যবিমা চালু করা কঠিন। কেননা, মাত্র ১২-১৩ শতাংশ কর্মজীবী মানুষ আনুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। বাকিরা আয় করেন অনানুষ্ঠানিক খাতে। তাঁদের কাছ থেকে কীভাবে বিমার প্রিমিয়াম নেওয়া হবে? এসব বহনের সক্ষমতা সরকারের নেই। কেউ প্রিমিয়াম দিয়ে বিমার সুবিধা নিলে তেমন বিমা তো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের রয়েছে। তিনি বলেন, বিমার সুবিধায় স্বাস্থ্যসেবা কোন প্রতিষ্ঠান, কীভাবে দেবে, তার উপায় থাকা উচিত। জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল ছাড়া সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে অনেক মানুষ দরিদ্রতার মধ্যে পড়ছে। বিষয়টি বিবেচনায় ব্যয়বহুল চিকিৎসায় স্বাস্থ্যবিমা চালুর পক্ষে স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার কমিশন। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ প্রস্তাব দিয়ে শুরুতে চার থেকে পাঁচটি ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য বিমা-সুবিধা দিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ দেবে কমিশন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যানসার, ডায়ালাইসিস, কার্ডিয়াক সার্জারি ও পক্ষাঘাত।
সংস্কার কমিশন বলেছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সরকারের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। প্রতিবেদনে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার বাইরে ব্যয়বহুল চিকিৎসাগুলোকেও অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে। সংস্কার কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্বাস্থ্যবিমার প্রস্তাবকে ভালো বললেও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এটি বাস্তবায়নের উপায়ও কমিশনকে বলতে হবে। জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল ছাড়া সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
গত বছরের ১৮ নভেম্বর ১২ সদস্যের স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশনের প্রধান করা হয়েছে জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানকে। প্রতিবেদন দিতে কমিশনকে প্রথমে ৯০ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়। পরে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম দফায় ৩০ মার্চ পর্যন্ত এবং মার্চের শেষে দ্বিতীয় দফায় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।
কমিশনের অন্তত তিন সদস্য আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁদের মাঠপর্যায়ের সব কার্যক্রম মার্চের মধ্যেই শেষ হয়েছে। জেলা, বিভাগ, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চিকিৎসা শিক্ষা, ওষুধ, জনস্বাস্থ্য, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের বিষয়সহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করা হয়েছে।
মাঠপর্যায়ের কর্মীদের মতামত, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদনও আমলে নিয়েছে কমিশন। ইংরেজি ভাষায় তৈরি করা প্রতিবেদনটি বর্তমানে বাংলা ভাষায় চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
সূত্র বলেছে, কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় (আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার) বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা। নিজস্ব ব্যয়ে চিকিৎসা করাতে বিপর্যয়ের পরিস্থিতিতে পড়ছে মানুষ। বিনা মূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হওয়া উচিত। তবে প্রাথমিক সেবার বাইরেও ব্যয়বহুল চিকিৎসাগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব থাকছে প্রতিবেদনে।
সরকারের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট বলছে, স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় ৬৭ শতাংশ। তবে বিশ্বব্যাংকের হিসাবে বাংলাদেশে এই ব্যয় ৭৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সূত্র বলছে, চিকিৎসার উচ্চব্যয়ের কারণে দেশের ১৮ শতাংশ পরিবার বিপর্যয়মূলক স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়ের মধ্যে পড়েছে। ২০২২ সালে বিপর্যয়কর স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় মেটাতে গিয়ে দেশে ৬১ লাখের বেশি মানুষ দরিদ্র হয়েছে।
সংস্কার কমিশনের একজন সদস্য বলেন, স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়নের বিষয়টিতে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে গুরুত্ব দিতে সরকারকে প্রস্তাব করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় মেটাতে গিয়ে মানুষকে দরিদ্রতা থেকে বাঁচাতে কর্মপরিকল্পনা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ধনীরা চিকিৎসার জন্য কোটি টাকা ব্যয় করলেও বিপর্যয়ের মুখে পড়েন না। তবে মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষ দরিদ্র হন। কেউ কেউ সর্বস্ব হারান। অনেক সময় অর্থের অভাবে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে। গবেষণার তথ্য ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে এমন চার থেকে পাঁচটি জটিল স্বাস্থ্য অবস্থা ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা শনাক্ত করা হয়েছে। যেগুলোর ব্যয় বিমা থেকে বহন করতে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হবে।
যেসব চিকিৎসা বিমার আওতায় আনার প্রস্তাব থাকছে
দেশে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই মারা যান অসংক্রামক ও দীর্ঘমেয়াদি কয়েকটি রোগে। এর মধ্যে হৃদ্রোগ ও ক্যানসার শীর্ষে। এ ছাড়া পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা ও কিডনি বিকল রোগীদের ডায়ালাইসিস ব্যয়বহুল হওয়ায় চিকিৎসাবঞ্চিত হচ্ছেন অনেক রোগী।
কমিশন সূত্র বলছে, ব্যয় বিবেচনায় কমিশন শুরুতে ডায়ালাইসিস, পক্ষাঘাত, করোনারি আর্টারি বাইপাস গ্রাফটিং বা বাইপাস সার্জারি, ক্যানসারের চিকিৎসাকে স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনার প্রস্তাব দেবে।
কমিশনের দুজন সদস্য বলেন, তাঁরা চার থেকে পাঁচটি অবস্থা নির্ণয় করেছেন। সরকার এগুলোর দু-তিনটি নিয়ে শুরু করতে পারে। পক্ষাঘাত, ডায়ালাইসিসের জন্য পুরো পরিবার মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়ে। ক্যানসারের চিকিৎসা, কার্ডিয়াক সার্জারি ব্যয়বহুল। যেসব খরচ একজন মানুষকে দারিদ্র্যসীমায় ঠেলে দিচ্ছে, তা নিয়ে সরকারের বিমা শুরু করা উচিত। এসব বিমার আওতায় এলে প্রতারণার সুযোগ থাকবে না। কারণ, কার্ডিয়াক সার্জারি, ক্যানসার বা ডায়ালাইসিস প্রয়োজন না হলে কোনো প্রতিষ্ঠান এসব নিয়ে প্রতারণা করতে পারবে না। শুরুতে সাধারণ রোগগুলোকে বিমায় রাখলে তা কার্যকর করা কঠিন। ধীরে ধীরে সব ধরনের চিকিৎসা স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনা যাবে।
তবে দেশে এসব রোগের চিকিৎসা-সুবিধা অপ্রতুল। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের এক গবেষণার তথ্য বলছে, দেশে কার্ডিয়াক সার্জারির সুবিধা থাকা প্রতিষ্ঠান আছে ৩২টি।
জাতীয় কিডনি ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট বলছে, দেশে সরকারি ও বেসরকারি কিডনি ডায়ালাইসিস কেন্দ্র আছে ১৩০টি, ডায়ালাইসিস মেশিন রয়েছে ৬৫০টি। অথচ দেশে ২ কোটি মানুষ দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে বছরে অন্তত ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার মানুষের কিডনি রোগ শেষ পর্যায়ে (পঞ্চম স্তর) পৌঁছায়। অর্থাৎ তাঁদের কিডনি প্রতিস্থাপনের বিকল্প নেই। প্রতিস্থাপন পর্যন্ত তাঁদের ডায়ালাইসিস করতে হবে। কিডনি প্রতিস্থাপনের সুবিধা রয়েছে ১০টি প্রতিষ্ঠানে। ডায়ালাইসিস প্রয়োজন—এমন রোগীদের মাত্র ২৫ শতাংশ এই সুবিধার আওতায় আসছে। একইভাবে ক্যানসারের চিকিৎসা-সুবিধাও অপ্রতুল।
চিকিৎসা-সুবিধার অপ্রতুলতায় কীভাবে স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন হবে—এমন প্রশ্নে কমিশনের একজন সদস্য জানান, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বাড়াতে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হবে। সচ্ছল ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রিমিয়াম (কিস্তি) নেওয়া হতে পারে। সামাজিক বিনিয়োগ, সোশ্যাল বিজনেসের (সামাজিক ব্যবসা) জন্য বিনিয়োগকারীদের উদ্বুদ্ধ করা হতে পারে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নিজ উদ্যোগে কাজ করত। সে ক্ষেত্রে সরকারের কোষাগারে তারা লভ্যাংশের নির্দিষ্ট অংশ জমা দেবে। তা থেকে জটিল চিকিৎসায় ব্যয় হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, একটি দেশের স্বাস্থ্য-ব্যয়ের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ সেবাগ্রহীতার নিজের পকেট থেকে যেতে পারে। স্বাস্থ্যের জন্য সরকারের ব্যয় জিডিপির ৫ থেকে ৬ শতাংশ হতে হবে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৫ দশমিক ২ শতাংশ, যা জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। ডব্লিউএইচওর সর্বশেষ হিসাব বলছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় ছিল জিডিপির ২ দশমিক ৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্যবিমা নিয়ে সংস্কার কমিশনের চিন্তাকে ইতিবাচক বলছেন স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা। তবে বিমা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে পরিকল্পনা থাকতে হবে বলে মনে করেন তাঁরা। তাঁরা বলছেন, সরকার একটি জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল গঠন করতে পারে। যেখানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সবার কাছ থেকে দৈনিক এক টাকা বা তার কম কেটে নেবে। অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার, তামাক পণ্যসহ অতি বিলাসী পণ্য থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের বিশেষ কর আদায় করে ওই তহবিলে রাখা উচিত। সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী সরকার চিকিৎসাবিমায় খরচ করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কীভাবে স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন হবে, তার স্পষ্ট উল্লেখ কমিশনের প্রতিবেদনে থাকতে হবে। রোগের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে কম, তাতে সমস্যা নেই। দেশে স্বাস্থ্যবিমা চালু করা কঠিন। কেননা, মাত্র ১২-১৩ শতাংশ কর্মজীবী মানুষ আনুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। বাকিরা আয় করেন অনানুষ্ঠানিক খাতে। তাঁদের কাছ থেকে কীভাবে বিমার প্রিমিয়াম নেওয়া হবে? এসব বহনের সক্ষমতা সরকারের নেই। কেউ প্রিমিয়াম দিয়ে বিমার সুবিধা নিলে তেমন বিমা তো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের রয়েছে। তিনি বলেন, বিমার সুবিধায় স্বাস্থ্যসেবা কোন প্রতিষ্ঠান, কীভাবে দেবে, তার উপায় থাকা উচিত। জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল ছাড়া সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
৯ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১২ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৩ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেশাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে অনেক মানুষ দরিদ্রতার মধ্যে পড়ছে। বিষয়টি বিবেচনায় ব্যয়বহুল চিকিৎসায় স্বাস্থ্যবিমা চালুর পক্ষে স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার কমিশন। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ প্রস্তাব দিয়ে শুরুতে চার থেকে পাঁচটি ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য বিমা-সুবিধা দিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ...
২৫ এপ্রিল ২০২৫
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১২ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৩ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে অনেক মানুষ দরিদ্রতার মধ্যে পড়ছে। বিষয়টি বিবেচনায় ব্যয়বহুল চিকিৎসায় স্বাস্থ্যবিমা চালুর পক্ষে স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার কমিশন। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ প্রস্তাব দিয়ে শুরুতে চার থেকে পাঁচটি ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য বিমা-সুবিধা দিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ...
২৫ এপ্রিল ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
৯ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৩ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে অনেক মানুষ দরিদ্রতার মধ্যে পড়ছে। বিষয়টি বিবেচনায় ব্যয়বহুল চিকিৎসায় স্বাস্থ্যবিমা চালুর পক্ষে স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার কমিশন। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ প্রস্তাব দিয়ে শুরুতে চার থেকে পাঁচটি ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য বিমা-সুবিধা দিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ...
২৫ এপ্রিল ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
৯ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১২ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে অনেক মানুষ দরিদ্রতার মধ্যে পড়ছে। বিষয়টি বিবেচনায় ব্যয়বহুল চিকিৎসায় স্বাস্থ্যবিমা চালুর পক্ষে স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার কমিশন। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ প্রস্তাব দিয়ে শুরুতে চার থেকে পাঁচটি ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য বিমা-সুবিধা দিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ...
২৫ এপ্রিল ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
৯ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১২ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৩ ঘণ্টা আগে