Ajker Patrika

ছাত্রদের দলে থাকবেনা এক ব্যক্তির কর্তৃত্ব

তানিম আহমেদ ও সাখাওয়াত ফাহাদ, ঢাকা
ছাত্রদের দলে থাকবেনা এক ব্যক্তির কর্তৃত্ব

সব ঠিকঠাক থাকলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে সপ্তাহখানেকের মাথায়। এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে দলের গঠনতন্ত্র-ঘোষণাপত্র, সাংগঠনিক কাঠামো, কর্মসূচি-কৌশল ঠিক করা হচ্ছে। দলের নেতৃত্ব মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে। উদ্যোক্তারা গঠনতন্ত্রে এটা নিশ্চিৎ করতে চাইছেন যে দলে যেন একক কোনো ব্যক্তির কর্তৃত্ব সৃষ্টি না হয় এবং দলের মধ্যে গণতন্ত্রচর্চা সমুন্নত রাখা যায়।

দলের কাঠামো, নাম, প্রতীক, গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র তৈরিতে সামনে থেকে কাজ করছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। সংগঠনটির নেতারা বলছেন, ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দল গঠনের প্রস্তুতির কাজ ৯০ ভাগ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা আশাবাদী ফেব্রুয়ারির চতুর্থ সপ্তাহের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করতে পারব। এর মধ্যে জনসংযোগ, মতামত সংগ্রহ, গঠনতন্ত্র, মূলনীতি, কর্মসূচি, ইশতেহার, ঘোষণাপত্র নিয়ে কাজ চলছে।’

জানা গেছে, চলতি মাসের ২১ থেকে ২৪ তারিখের মধ্যে নতুন দলের আত্মপ্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে। শুরুতেই ১৫০-১৭০ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। এক বছরের মধ্যে সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার চিন্তা রয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের বর্তমান তথ্য উপদেষ্টা ও জুলাই আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলামকে আহ্বায়ক হিসেবে মোটামুটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং এই কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন নতুন দলের সদস্যসচিব হিসেবে প্রাথমিক বিবেচনায় রয়েছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

নাহিদ ইসলাম নতুন দলের আহ্বায়ক হচ্ছেন কি না, এমন প্রশ্নে আখতার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এগুলো এখনো আলোচনা ও পর্যালোচনার মধ্যে আছে। স্থির কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

নতুন দলের নাম কী হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দলের নাম ও প্রতীকের বিষয়ে মানুষের মতামত জানতে চেয়েছে সংগঠনটি। শতাধিক প্রস্তাবিত নাম নিয়ে সংগঠনের ফোরামে আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। দলীয় প্রতীকের বিষয়েও ইলিশ, রিকশা, কলমসহ চারটি প্রতীকের বিষয়ে সংগঠনটির ফোরামে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।

আখতার হোসেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো নাম চূড়ান্ত করিনি। অনেক নামের পরামর্শ পেয়েছি, আমাদের তালিকার মধ্যে আছে। আত্মপ্রকাশের সময়েই আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’

দলের ঘোষণাপত্রে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ঐতিহাসিক মুহূর্ত—১৯৪৭ সালের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি, বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ’৯০-এর অভ্যুত্থান এবং ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের জাতিগত আকাঙ্ক্ষাসহ নানান বিষয় উল্লেখ থাকবে।

গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র প্রসঙ্গে আখতার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা তরুণ নেতৃত্ব ও দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার কথা বলেছি। ইতিহাসের বিভিন্ন সংগ্রাম ও জাতিগত আকাঙ্ক্ষার জায়গা, রাষ্ট্র বিনির্মাণ, মানুষের মর্যাদার প্রশ্নকে সব থেকে গুরুত্ব দিয়ে দেখব।’

দল গঠনের বিষয়ে বিভিন্ন দেশের বৃহৎ এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গঠিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিয়ে পর্যালোচনা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে যেসব দেশে তরুণদের নেতৃত্বে সরকারের পতন হয়েছে, সেসব দেশের দলগুলোর ইতিহাস, গঠনতন্ত্র, কর্মপদ্ধতি, কার্যক্রম ও কর্মসূচি পর্যালোচনা করে অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান তাঁরা। এ ক্ষেত্রে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (একে) পার্টি, দেশটির পুরোনো জাস্টিস পার্টি, চিলির তরুণ প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিচের উদ্যোগে গঠিত রাজনৈতিক জোট ব্রড ফ্রন্ট, ভারতের আম আদমি পার্টি, পাকিস্তানের ইমরান খানের নেতৃত্বে তেহরিক-ই-ইনসাফসহ (পিটিআই) কয়েকটি দেশের রাজনৈতিক দলের গঠন, আদর্শ, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বা স্লোগানসহ বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এসব দল কীভাবে দেশগুলোতে সহজে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, তা বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে।

নাগরিক কমিটির এক নেতা বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া, চিলিসহ কয়েকটা জায়গা যেখানে অভ্যুত্থান বা বড় আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দল গঠিত হয়েছে, তাদের দেখছি। তাদের গঠনতন্ত্র আমরা দেখছি। কাউকে অনুসরণ করার জন্য নয়, দেখছি তারা কীভাবে কী করছে।

এসব বিষয়ে আখতার হোসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের যাঁরা রাজনৈতিক দল গঠনপ্রক্রিয়ার সঙ্গে আছেন, তাঁরা অনেকেই অনেক ফরম্যাটের কথা বলেছেন। বিদেশের অনেক রাজনৈতিক দল সম্পর্কেও আমরা পর্যালোচনা করছি। কিন্তু কোনো একক দলকে আমরা আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করিনি।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দলের আত্মপ্রকাশের পর কোন কোন কর্মসূচির মাধ্যমে জনসম্পৃক্ততা তৈরি করা যাবে, তা নিয়েও পর্যালোচনা করছে নাগরিক কমিটি। কর্মসূচির শুরুতে তারা আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে মাঠে নামবে। যার মাধ্যমে বুঝতে চেষ্টা করবে, কোন কোন রাজনৈতিক দল তাদের পক্ষে আছে।

দলটির একটি সূত্র বলছে, দল ঘোষণার পরে ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচির মাধ্যমে জনসম্পৃক্ততা তৈরির চেষ্টা করা হবে। সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত জনগণের বিরুদ্ধে গেলে তা নিয়ে প্রতিবাদ করা হবে, কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হবে। স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি না থাকায় জনগণ সেবাবঞ্চিত হচ্ছে, তাই জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে রাজনৈতিকভাবে মাঠে সক্রিয় থাকবে দলটি।

জাতীয় নাগরিক কমিটির নির্বাহী কমিটির সদস্য সারোয়ার তুষার আজকের পত্রিকাকে বলেন, দলের তিন ধরনের কর্মসূচি থাকবে। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একধরনের কর্মসূচি। ২০৩৫ সালকে কেন্দ্র করে একটা মধ্যমেয়াদি এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে একটা দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচির পরিকল্পনা থাকবে।

তুষার বলেন, ‘তরুণেরাই আমাদের মূল লক্ষ্য। তাঁদের যদি কনভিন্স করতে পারি, তাহলে তাঁরাও তাঁদের পরিবারকে কনভিন্স করতে পারবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ২৫৮২ জন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি।

খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি।

ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪ জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি।

ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত, রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল করার সময় ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি, নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগপর্যন্ত, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।

আর ভোট গ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। সেদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৪৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ: পি কে হালদারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পি কে হালদার। ফাইল ছবি
পি কে হালদার। ফাইল ছবি

দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এই চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০২২ সালের ১৯ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার, দিয়া শিপিং লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবপ্রসাদ ব্যানার্জী, পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুণ্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার এবং এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।

তদন্তে আরও ছয়জনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায় দুদক। তাঁরা হলেন ইটা অ্যান্ড টাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম নওশেরুল ইসলাম, দিয়া অয়েল লিমিটেডের এমডি বাসুদেব ব্যানার্জী, পরিচালক পূজা ব্যানার্জী, এমএসটি মেরিন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেডার্স লিমিটেডের পরিচালক অমল চন্দ্র দাস, মমতাজ বেগম এবং বিডিএস অ্যাডজাস্টার্সের চিফ এক্সিকিউটিভ ইবনে মোফাজ্জল বারকি।

আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে অবৈধ উপায়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে ঋণ হিসেবে ৪৪ কোটি টাকা গ্রহণ করে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমান মামলার অন্যতম আসামি এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক এম ডি রাসেল শাহরিয়ারকে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে এই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠায়।

কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাংলাদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা পি কে হালদার। তিনি শিবশংকর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।

২০২২ সালের ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরও পাঁচজন। পরে প্রশান্ত কুমার ওরফে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। বর্তমানে পি কে হালদার ভারতের কারাগারে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যা মামলার তদন্ত-বিচারকাজে আইনি পরামর্শক হলেন সমাজী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এহসানুল হক সমাজী। ফাইল ছবি
এহসানুল হক সমাজী। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় প্রসিকিউশন টিমকে আইনি পরামর্শ দিতে এহসানুল হক সমাজীকে স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজরের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর সমাজীকে অ্যাটর্নি জেনারেলের পদমর্যাদার সুবিধায় ওই দায়িত্ব দিয়ে আজ সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-১ শাখা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১২ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী প্রচারণাকালে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি আততায়ীর গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে ১৮ ডিসেম্বর তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগরীর পল্টন থানায় ১৪ ডিসেম্বর মামলা হয়েছে। ডিএমপির অধীনে এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় মামলাটি দ্রুত তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

হাদি হত্যাকাণ্ডের মামলা তদন্তকালে তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্তসংশ্লিষ্টদের এবং পরে আদালতে বিচারকালে বিচারসংশ্লিষ্ট প্রসিকিউশন টিমকে প্রয়োজনীয় আইনি পরামর্শ দেওয়ার জন্য এহসানুল হক সমাজীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এখন র‍্যাপিড পাস রিচার্জ করা যাবে মোবাইল অ্যাপে

তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মেট্রোর র‍্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড গত মাস থেকে অনলাইনে রিচার্জের সুবিধা চালু হয়েছে। ফলে যাত্রীরা ঘরে বসেই মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার ব্যবহার করে র‍্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে রিচার্জ করতে পারছেন। এবার সেই সেবাকে আরও সহজ ও ব্যবহারবান্ধব করতে র‍্যাপিড পাসের জন্য একটি অ্যাপ প্রস্তুত করেছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে র‍্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য র‍্যাপিড পাস অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন রিচার্জ সুবিধা চালু করা হচ্ছে।

ডিটিসিএ সূত্র জানিয়েছে, এক মাস ধরে র‍্যাপিড পাস অ্যাপটি নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। অ্যাপটি তৈরি করে ইতিমধ্যে গুগলের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে গুগল বিভিন্ন ধাপে অ্যাপটির পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার আজ সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, র‍্যাপিড পাস অ্যাপটি মোটামুটি প্রস্তুত। আগামী দুই–এক দিনের মধ্যে এটি জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এতে যাত্রীদের আরও বেশি সুবিধা হবে।

অ্যাপটি ব্যবহারের নিয়ম

ডিটিসিএ সূত্র জানায়, র‍্যাপিড পাস অ্যাপ ব্যবহার করতে হলে যেসব গ্রাহক ইতিমধ্যে rapidpass.com.bd ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, তাঁরা একই ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাপে লগইন করতে পারবেন। লগইনের পর ব্যবহারকারী ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত অ্যামাউন্ট সেট করে রিচার্জের জন্য প্রসেস দিতে পারবেন। এ সময় ব্যাংকের কার্ডের পাশাপাশি বিকাশ ও নগদের মাধ্যমেও সহজে রিচার্জ করা যাবে।

অনলাইনে রিচার্জ সম্পন্ন হওয়ার পর র‍্যাপিড পাস বা এমআরটি পাস কার্ডটি মেট্রো স্টেশনে থাকা এভিএমে (অ্যাড ভ্যালু মেশিন) ট্যাগ করলেই রিচার্জ করা অর্থ কার্ডে অ্যাকটিভ হয়ে যাবে। পাশাপাশি অ্যাপের মাধ্যমে কার্ডে থাকা বর্তমান ব্যালেন্স, কোথায় কোথায় ভ্রমণ করা হয়েছে—এসব বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। একই সঙ্গে যদি ব্যবহারকারীর মোবাইলে নিয়ার–ফিল্ড কমিউনিকেশন (এনএফসি) সুবিধা থাকে, তাহলে মোবাইলের নিচে র‍্যাপিড পাস কার্ড ধরলেই অ্যাপের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্ডে থাকা টাকার পরিমাণ মোবাইলের স্ক্রিনে দেখা যাবে।

ডিটিসিএ জানিয়েছে, র‍্যাপিড পাসের ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন রিচার্জের সুবিধা নিশ্চিত করতে মেট্রোর ১৬টি স্টেশনে দুটি করে মোট ৩২টি এভিএম বসানো হয়েছে। যাত্রীরা অনলাইনে রিচার্জ করার পর স্টেশনে থাকা এভিএম মেশিনে কার্ড স্পর্শ করলেই রিচার্জ সক্রিয় হয়ে যাবে।

ডিটিসিএ সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ১৭ লাখ গ্রাহক র‍্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে ইতিমধ্যে ২ লাখ ৩০ হাজার গ্রাহক rapidpass.com.bd ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, অর্থাৎ তাঁরা অনলাইনে রিচার্জ সুবিধা ব্যবহার করছেন।

ডিটিসিএ কর্মকর্তারা জানান, যাত্রীদের সময় ও ঝামেলা কমাতেই অ্যাপের মাধ্যমে রিচার্জ সুবিধা চালু করা হচ্ছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে সহজেই অর্থ যোগ করা যাবে, ফলে যাতায়াত আরও নিরবচ্ছিন্ন হবে। মেট্রোরেল চালুর পর থেকে যাত্রীরা স্বল্প সময়ে র‍্যাপিড পাস ব্যবহার করে যাতায়াতের সুবিধা পাচ্ছেন। অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইন রিচার্জ যুক্ত হওয়ায় ডিজিটাল সেবার পরিধি আরও বাড়বে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৫ নভেম্বর মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার থেকে র‍্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইন রিচার্জ সেবা চালু করা হয়েছিল। সেই সময় প্রধান উপদেষ্টার সড়ক, সেতু ও রেলযোগাযোগবিষয়ক বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত