দ্য ডিপ্লোম্যাটের সঙ্গে সাক্ষাৎকার

ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এসব কমিশনের একটি হলো সংবিধান সংস্কার কমিশন। গত ১৫ জানুয়ারি এই কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কমিশন এমন সুপারিশ করেছে, যাতে প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা চর্চার সুযোগ না থাকে এবং বাংলাদেশে যেন স্বৈরশাসন ফিরে না আসে।
সংবিধানের প্রস্তাবনায় গণতন্ত্রকে মৌলিক নীতিরূপে বজায় রেখে কমিশন সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার ও বহুত্ববাদ অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে। পাশাপাশি তিনটি নীতি বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। কমিশনের অন্যতম সুপারিশ ছিল ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’কে মৌলিক নীতির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া। এই বিষয়টি কিছু মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
সম্প্রতি জাপানভিত্তিক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সাময়িকী দ্য ডিপ্লোম্যাটের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলেছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. আলী রীয়াজ। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দ্য ডিপ্লোম্যাটের দক্ষিণ এশিয়া সম্পাদক সুধা রামাচন্দ্রন। সাক্ষাৎকারে আলী রীয়াজ যুক্তি দেন, শেখ হাসিনা সরকারের ঘোষিত ও চর্চিত ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল শুধু ধর্মীয় বৈচিত্র্যের সহনশীলতার মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাঁর মতে, কমিশন যে বহুত্ববাদের সুপারিশ করেছে তার পরিধি অনেক বিস্তৃত ও ব্যাপক।
সাক্ষাৎকারটি আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—
দ্য ডিপ্লোম্যাট: সংবিধান সংস্কার কমিশন বর্তমান সংবিধানের চার মূলনীতি—সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও গণতন্ত্র থেকে কেবল ‘গণতন্ত্র’ বহাল রাখার সুপারিশ করেছে। এর পেছনে যুক্তি কী?
আলী রীয়াজ: কমিশন সুপারিশ করেছে যে, সংবিধানে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল ঘোষিত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বর্ণিত দেশের প্রতিষ্ঠাকালীন মূলনীতিগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হোক। ওই ঘোষণাপত্রে তিন মূলনীতি ছিল—সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার। মুক্তিযুদ্ধের কয়েক মাস পরই ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণেতারা এসব মূলনীতি উপেক্ষা করেন। এটি বিস্ময়কর যে, প্রতিষ্ঠাকালীন মূলনীতিগুলো বিস্মৃতির অতলে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল এবং এর পরিবর্তে সংবিধান প্রণয়ন প্রক্রিয়া শুরুর আগে আওয়ামী লীগ ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যে দলীয় চারটি মূলনীতি নির্ধারণ করেছিল, সেগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কমিশন এবং অনেক অংশীজনের মতামত ছিল যে, দেশ যেন প্রতিষ্ঠাকালীন মূলনীতিতে ফিরে যায়, যা লক্ষ–কোটি শহীদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদনের উপযুক্ত উপায়।
আগে ছিল বলে (প্রস্তাবে) গণতন্ত্রকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এমন নয়, বরং বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের সংগ্রাম আকাঙ্ক্ষা বিশেষ করে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে শেখ হাসিনার ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা গণজাগরণের প্রতিফলন হিসেবে গণতন্ত্রকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে পদদলিত করেছেন।
পঞ্চম মূলনীতি (বহুত্ববাদ) সংযোজন করা হয়েছে দেশের বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করতে। বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক, ভাষাগত, ধর্মীয় ও জাতিগত বহুত্ববাদী ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন এবং সেটিকে রাষ্ট্রের মৌলিক নীতির অংশ করা উচিত। শেখ হাসিনা তাঁর বাবা মুজিবের মতোই স্বৈরাচারী শাসনকে চার রাষ্ট্রীয় মূলনীতির মোড়কে বৈধতা দিয়েছেন। গণ–অভ্যুত্থান এই মতাদর্শকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আমাদের সুপারিশ কেবল জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: প্রস্তাবনা থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ কেন বাদ দেওয়া হয়েছে?
আলী রীয়াজ: আমাদের সুপারিশে ধর্মনিরপেক্ষতার (সেক্যুলারিজম অর্থে) পরিবর্তে আরও বিস্তৃত নীতি হিসেবে বহুত্ববাদকে গ্রহণ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণা সংশোধিত বা পরিত্যক্ত হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতার তত্ত্ব ও এর বিভিন্ন রূপকে বিভিন্ন কারণে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। বিশেষ করে, এটি অপশ্চিমা সমাজগুলোর বৈচিত্র্য ধারণে কতটা কার্যকর সে প্রশ্ন তুলেছেন গবেষকেরা। তালাল আসাদ, সাবা মাহমুদ, চার্লস টেলর এবং আশীষ নন্দীর মতো সমাজবিজ্ঞানীদের কাজ স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে যে, ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাটি সমস্যাযুক্ত।
এই শব্দটির ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না। রাষ্ট্রের নীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতার উদ্ভব হয় ইউরোপের ধর্মযুদ্ধের (ক্রুসেড) পর। সে সময় থেকেই ধর্ম ও সমাজ এই পৃথক্করণ ক্রমশ মেনে নিতে শুরু করেছে। এর ফলে এই ‘পবিত্রতা’ বা খ্রিষ্টধর্মের প্রভাবমুক্ত হয়ে রাষ্ট্রের বৈষয়ীকরণের মধ্য দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা একধরনের রাজনৈতিক মতাদর্শ হিসেবে আবির্ভূত হয়।
তবে এসব তাত্ত্বিক বিতর্কের বাইরেও বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতাকে জাতিকে বিভক্ত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। বিশেষ করে, গত এক দশকে এক স্বৈরাচারী সরকার এটিকে অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগ করেছে। বাংলাদেশে পূর্ববর্তী শাসকগোষ্ঠী ও তাদের সমর্থকেরা ধর্মনিরপেক্ষতাকে মূলত ধর্মীয় বৈচিত্র্যের সহনশীলতা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছে। আমাদের কমিশনের সুপারিশ হলো, বহুত্ববাদ গ্রহণ করা। বহুত্ববাদ এমন এক নীতি যা শুধু ধর্মীয় বৈচিত্র্য—হিন্দু, বৌদ্ধ, আহমদিয়া, বাহাই সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করবে না, বরং দলিত ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মতো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকেও সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে সমানভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ দেবে। লক্ষণীয় যে, রাষ্ট্রের মৌলিক নীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতা থাকা সত্ত্বেও সংখ্যালঘু নির্যাতন দীর্ঘকাল ধরে অব্যাহত ছিল।
বাংলাদেশের সংবিধানের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, গত ৫২ বছরের মধ্যে মাত্র ১৮ বছর ৬ মাস সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল। বাকি ৩৩ বছর জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও আওয়ামী লীগ সরকারে থেকেও এটি পুনঃপ্রবর্তনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এরপর ২০১১ সালে শেখ হাসিনা এটি ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে তাঁর স্বৈরাচারী শাসনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার পথে এগিয়ে যান। এমনকি এই ইস্যুতে উচ্চ আদালতও কোনো হস্তক্ষেপ করেনি।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: বর্তমান সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা এবং রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলাম সহাবস্থান করছে। কমিশনের প্রস্তাবে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়া হয়েছে এবং ইসলামকে আগের জায়গাতেই রাখা হয়েছে। ধর্মের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক কী হবে?
আলী রীয়াজ: ইসলাম ১৯৮৮ সালে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর থেকে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি একাধিকবার ক্ষমতায় এসেছে এবং এই সময়ে আটবার সংবিধান সংশোধন হয়েছে, কিন্তু এরপরও তারা এটি বাতিলে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ২০২৪ সালের এপ্রিলে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম বহাল রাখা সংবিধানিক স্ববিরোধ সৃষ্টি করে না। আমরা যখন সমাজের বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শ করেছি তখন বিপুলসংখ্যক মানুষ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ৫০ হাজারেরও বেশি মতামত নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে বিপুলসংখ্যক মত ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে সংবিধানে রাখার পক্ষে ছিল।
আমরা আমাদের পর্যালোচনা প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ১২১টি দেশের সংবিধান পর্যালোচনা করেছি, যার মধ্যে বাংলাদেশের সংবিধানও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই পর্যালোচনা থেকে আমরা দেখেছি যে, ১৯টি দেশে রাষ্ট্রধর্ম আছে এবং ৭৫টি দেশের সংবিধানে ‘পরমেশ্বরের প্রতি বিশ্বাস’–এর কথা উল্লেখ আছে। অনেক পশ্চিমা দেশেও একটি রাষ্ট্রধর্ম বা একক ধর্মের সরকারি স্বীকৃতি রয়েছে। ২০১৭ সালে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টার জানিয়েছিল, ৮০টিরও বেশি দেশ একটি ধর্মকে সরকারিভাবে অনুমোদন দিয়ে অথবা একটি ধর্মকে অন্য ধর্মের তুলনায় অগ্রাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে সমর্থন দিয়ে থাকে। এতে বলা হয়েছে, ১৯৯টি দেশের মধ্যে ২২ শতাংশ দেশের রাষ্ট্রধর্ম রয়েছে এবং ২০ শতাংশ দেশ একটি ধর্মকে প্রাধান্য দেয়। সুতরাং, বাংলাদেশ কোনোভাবেই ব্যতিক্রম নয়।
রাষ্ট্র অনুমোদিত ধর্ম থাকলেও রাষ্ট্র এবং ধর্মের ভূমিকা আলাদা হতে পারে। ইসরায়েলের বার এলান ইউনিভার্সিটির ধর্ম ও রাষ্ট্র (আরএসএস) সংক্রান্ত গবেষণার তথ্য–উপাত্তের ভিত্তিতে জনাথন ফক্স বলেছিলেন যে, এ ধরনের পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে ভিন্ন হতে পারে। তিনি যুক্তরাজ্য এবং ইরানকে উদাহরণ হিসেবে দিয়েছেন। উভয় দেশেই রাষ্ট্রধর্ম বা সরকারি গির্জা আছে, তবে এই দুই রাষ্ট্রের কার্যক্রমে ধর্মের ভূমিকা একেবারে বিপরীত।
সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও ধর্মের সম্পর্ক গত কয়েক দশকের মতোই থাকবে। যতক্ষণ না ধর্ম আইনগত ব্যবস্থার উৎস হিসেবে কাজ করছে অথবা রাজনৈতিক–আইনি প্রতিষ্ঠানগুলোকে চ্যালেঞ্জ করছে, ততক্ষণ উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। অনেক সময় রাষ্ট্রধর্মগুলো প্রতীকীভাবে বেশি দেখা যায়, এর বাস্তবিক প্রভাব থাকে কম।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: স্বৈরশাসন যে আর ফিরবে না, সংবিধান সংস্কার কমিটি এটি কীভাবে নিশ্চিত করতে চায়?
আলী রীয়াজ: আমরা বেশ কিছু সুপারিশ করেছি। যা বাস্তবায়িত হলে ক্ষমতা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মধ্যে বিতরণ হয়ে যাবে এবং বর্তমানের মতো প্রধানমন্ত্রীর হাতে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ ঠেকাবে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা জাতীয় সাংবিধানিক পরিষদ (এনসিসি) গঠনের সুপারিশ করেছি। এই পরিষদ সাংবিধানিক পদগুলোতে নিয়োগ এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানদের নিয়োগের বিষয়ে সুপারিশ করবে। বর্তমানে এই ক্ষমতা শুধু প্রধানমন্ত্রীর হাতে। আমরা কিছু ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে স্থানান্তরের প্রস্তাবও দিয়েছি। বর্তমান সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়া কোনো নিয়োগ দিতে পারেন না; আমরা সুপারিশ করেছি এটি সীমিত করা উচিত।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, শাসক দলের সংসদ সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুগত। কারণ, তাঁরা দলের প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন না। এর ফলে খোদ শাসক দলের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন করতে চাইলেও প্রধানমন্ত্রীর অপসারণের জন্য কোনো প্রস্তাব আনা সম্ভব হয় না। আমরা সুপারিশ করেছি, প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে দলীয় প্রধান এবং সংসদ নেতা থাকতে পারবেন না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর জন্য সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনের প্রস্তাবও দিয়েছি।
আমরা সুপারিশ করেছি, বিচার বিভাগ স্বাধীন হওয়া উচিত এবং সুপ্রিম কোর্টের অধীনে একটি আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত। এই সুপারিশগুলো দায়িত্বশীলতা, ক্ষমতার ভারসাম্য এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যেই করা, যাতে স্বৈরশাসনের সম্ভাবনা রোধ করা সম্ভব হয়।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: রাজনৈতিক দলগুলো কোন ধরনের পরিবর্তনের বিরোধিতা করতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
আলী রীয়াজ: আমাদের সুপারিশের সারাংশ প্রকাশের পর রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে কোনো গুরুতর সমালোচনা বা পুরোপুরি প্রত্যাখ্যানের মতো কিছু শোনা যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই, তারা পুরো প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছে। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষেই জনসমক্ষে আনা হবে।
এসব সুপারিশের অনেকগুলোই রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে এসেছে। যেমন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট প্রতিষ্ঠার সুপারিশ। এই প্রস্তাবটি রাজনৈতিক দলগুলো এবং সাধারণ জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। তবে আমি বুঝি যে, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নিজস্ব প্রস্তাব রয়েছে এবং আমাদের কিছু সুপারিশ তাদের প্রস্তাবের সঙ্গে মেলে না। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে। আমি মনে করি, তেমন কোনো পার্থক্য নেই যা নিয়ে কোনো ধরনের সমঝোতা সম্ভব হবে না।
সবাই এবং আমি বলতে চাচ্ছি, সবারই কিছু পরিবর্তন চাওয়ার রয়েছে। গত ১৬ বছরের গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার অভিজ্ঞতা সবাইকেই বুঝিয়ে দিয়েছে যে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে পরিবর্তন প্রয়োজন। বাংলাদেশে নজিরবিহীন মাত্রার সহিংসতা হয়েছে। কেবল মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধও হয়েছে। শত শত মানুষের মৃত্যু এবং ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হওয়ার ঘটনা বৃথা যেতে পারে না।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: পরবর্তী প্রক্রিয়া কী হবে? নির্বাচিত কোনো সরকারই কী এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাবে?
আলী রীয়াজ: প্রাথমিকভাবে অন্তর্বর্তী সরকার যেসব সংস্কার কমিশন গঠন করেছিল, সেগুলো প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। যখন পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তখন এগুলো রাজনৈতিক দলগুলো যাচাই–বাছাই করে দেখবে। এরপর সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে। অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, শিগগিরই তাঁর নেতৃত্বে একটি ‘কনসেনসাস কমিশন’ গঠন করা হবে, যার মাধ্যমে আলোচনা এগিয়ে নেওয়া হবে। আশা করছি, একটি ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন করা হবে। এটি রাজনৈতিক দলগুলোর সহায়তায় দেশের গণতান্ত্রিক পুনর্নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার ব্যবস্থা চিহ্নিত করবে। প্রক্রিয়াটি এই ফেব্রুয়ারিতে শুরু হবে। এই আলোচনা থেকে একটি বাস্তবায়নের পথ বের হবে।
অনুবাদ করেছে আব্দুর রহমান

ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এসব কমিশনের একটি হলো সংবিধান সংস্কার কমিশন। গত ১৫ জানুয়ারি এই কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কমিশন এমন সুপারিশ করেছে, যাতে প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা চর্চার সুযোগ না থাকে এবং বাংলাদেশে যেন স্বৈরশাসন ফিরে না আসে।
সংবিধানের প্রস্তাবনায় গণতন্ত্রকে মৌলিক নীতিরূপে বজায় রেখে কমিশন সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার ও বহুত্ববাদ অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে। পাশাপাশি তিনটি নীতি বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। কমিশনের অন্যতম সুপারিশ ছিল ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’কে মৌলিক নীতির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া। এই বিষয়টি কিছু মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
সম্প্রতি জাপানভিত্তিক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সাময়িকী দ্য ডিপ্লোম্যাটের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলেছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. আলী রীয়াজ। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দ্য ডিপ্লোম্যাটের দক্ষিণ এশিয়া সম্পাদক সুধা রামাচন্দ্রন। সাক্ষাৎকারে আলী রীয়াজ যুক্তি দেন, শেখ হাসিনা সরকারের ঘোষিত ও চর্চিত ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল শুধু ধর্মীয় বৈচিত্র্যের সহনশীলতার মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাঁর মতে, কমিশন যে বহুত্ববাদের সুপারিশ করেছে তার পরিধি অনেক বিস্তৃত ও ব্যাপক।
সাক্ষাৎকারটি আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—
দ্য ডিপ্লোম্যাট: সংবিধান সংস্কার কমিশন বর্তমান সংবিধানের চার মূলনীতি—সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও গণতন্ত্র থেকে কেবল ‘গণতন্ত্র’ বহাল রাখার সুপারিশ করেছে। এর পেছনে যুক্তি কী?
আলী রীয়াজ: কমিশন সুপারিশ করেছে যে, সংবিধানে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল ঘোষিত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বর্ণিত দেশের প্রতিষ্ঠাকালীন মূলনীতিগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হোক। ওই ঘোষণাপত্রে তিন মূলনীতি ছিল—সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার। মুক্তিযুদ্ধের কয়েক মাস পরই ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণেতারা এসব মূলনীতি উপেক্ষা করেন। এটি বিস্ময়কর যে, প্রতিষ্ঠাকালীন মূলনীতিগুলো বিস্মৃতির অতলে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল এবং এর পরিবর্তে সংবিধান প্রণয়ন প্রক্রিয়া শুরুর আগে আওয়ামী লীগ ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যে দলীয় চারটি মূলনীতি নির্ধারণ করেছিল, সেগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কমিশন এবং অনেক অংশীজনের মতামত ছিল যে, দেশ যেন প্রতিষ্ঠাকালীন মূলনীতিতে ফিরে যায়, যা লক্ষ–কোটি শহীদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদনের উপযুক্ত উপায়।
আগে ছিল বলে (প্রস্তাবে) গণতন্ত্রকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এমন নয়, বরং বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের সংগ্রাম আকাঙ্ক্ষা বিশেষ করে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে শেখ হাসিনার ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা গণজাগরণের প্রতিফলন হিসেবে গণতন্ত্রকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে পদদলিত করেছেন।
পঞ্চম মূলনীতি (বহুত্ববাদ) সংযোজন করা হয়েছে দেশের বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করতে। বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক, ভাষাগত, ধর্মীয় ও জাতিগত বহুত্ববাদী ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন এবং সেটিকে রাষ্ট্রের মৌলিক নীতির অংশ করা উচিত। শেখ হাসিনা তাঁর বাবা মুজিবের মতোই স্বৈরাচারী শাসনকে চার রাষ্ট্রীয় মূলনীতির মোড়কে বৈধতা দিয়েছেন। গণ–অভ্যুত্থান এই মতাদর্শকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আমাদের সুপারিশ কেবল জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: প্রস্তাবনা থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ কেন বাদ দেওয়া হয়েছে?
আলী রীয়াজ: আমাদের সুপারিশে ধর্মনিরপেক্ষতার (সেক্যুলারিজম অর্থে) পরিবর্তে আরও বিস্তৃত নীতি হিসেবে বহুত্ববাদকে গ্রহণ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণা সংশোধিত বা পরিত্যক্ত হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতার তত্ত্ব ও এর বিভিন্ন রূপকে বিভিন্ন কারণে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। বিশেষ করে, এটি অপশ্চিমা সমাজগুলোর বৈচিত্র্য ধারণে কতটা কার্যকর সে প্রশ্ন তুলেছেন গবেষকেরা। তালাল আসাদ, সাবা মাহমুদ, চার্লস টেলর এবং আশীষ নন্দীর মতো সমাজবিজ্ঞানীদের কাজ স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে যে, ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাটি সমস্যাযুক্ত।
এই শব্দটির ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না। রাষ্ট্রের নীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতার উদ্ভব হয় ইউরোপের ধর্মযুদ্ধের (ক্রুসেড) পর। সে সময় থেকেই ধর্ম ও সমাজ এই পৃথক্করণ ক্রমশ মেনে নিতে শুরু করেছে। এর ফলে এই ‘পবিত্রতা’ বা খ্রিষ্টধর্মের প্রভাবমুক্ত হয়ে রাষ্ট্রের বৈষয়ীকরণের মধ্য দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা একধরনের রাজনৈতিক মতাদর্শ হিসেবে আবির্ভূত হয়।
তবে এসব তাত্ত্বিক বিতর্কের বাইরেও বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতাকে জাতিকে বিভক্ত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। বিশেষ করে, গত এক দশকে এক স্বৈরাচারী সরকার এটিকে অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগ করেছে। বাংলাদেশে পূর্ববর্তী শাসকগোষ্ঠী ও তাদের সমর্থকেরা ধর্মনিরপেক্ষতাকে মূলত ধর্মীয় বৈচিত্র্যের সহনশীলতা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছে। আমাদের কমিশনের সুপারিশ হলো, বহুত্ববাদ গ্রহণ করা। বহুত্ববাদ এমন এক নীতি যা শুধু ধর্মীয় বৈচিত্র্য—হিন্দু, বৌদ্ধ, আহমদিয়া, বাহাই সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করবে না, বরং দলিত ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মতো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকেও সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে সমানভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ দেবে। লক্ষণীয় যে, রাষ্ট্রের মৌলিক নীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতা থাকা সত্ত্বেও সংখ্যালঘু নির্যাতন দীর্ঘকাল ধরে অব্যাহত ছিল।
বাংলাদেশের সংবিধানের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, গত ৫২ বছরের মধ্যে মাত্র ১৮ বছর ৬ মাস সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল। বাকি ৩৩ বছর জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও আওয়ামী লীগ সরকারে থেকেও এটি পুনঃপ্রবর্তনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এরপর ২০১১ সালে শেখ হাসিনা এটি ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে তাঁর স্বৈরাচারী শাসনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার পথে এগিয়ে যান। এমনকি এই ইস্যুতে উচ্চ আদালতও কোনো হস্তক্ষেপ করেনি।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: বর্তমান সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা এবং রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলাম সহাবস্থান করছে। কমিশনের প্রস্তাবে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়া হয়েছে এবং ইসলামকে আগের জায়গাতেই রাখা হয়েছে। ধর্মের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক কী হবে?
আলী রীয়াজ: ইসলাম ১৯৮৮ সালে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর থেকে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি একাধিকবার ক্ষমতায় এসেছে এবং এই সময়ে আটবার সংবিধান সংশোধন হয়েছে, কিন্তু এরপরও তারা এটি বাতিলে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ২০২৪ সালের এপ্রিলে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম বহাল রাখা সংবিধানিক স্ববিরোধ সৃষ্টি করে না। আমরা যখন সমাজের বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শ করেছি তখন বিপুলসংখ্যক মানুষ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ৫০ হাজারেরও বেশি মতামত নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে বিপুলসংখ্যক মত ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে সংবিধানে রাখার পক্ষে ছিল।
আমরা আমাদের পর্যালোচনা প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ১২১টি দেশের সংবিধান পর্যালোচনা করেছি, যার মধ্যে বাংলাদেশের সংবিধানও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই পর্যালোচনা থেকে আমরা দেখেছি যে, ১৯টি দেশে রাষ্ট্রধর্ম আছে এবং ৭৫টি দেশের সংবিধানে ‘পরমেশ্বরের প্রতি বিশ্বাস’–এর কথা উল্লেখ আছে। অনেক পশ্চিমা দেশেও একটি রাষ্ট্রধর্ম বা একক ধর্মের সরকারি স্বীকৃতি রয়েছে। ২০১৭ সালে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টার জানিয়েছিল, ৮০টিরও বেশি দেশ একটি ধর্মকে সরকারিভাবে অনুমোদন দিয়ে অথবা একটি ধর্মকে অন্য ধর্মের তুলনায় অগ্রাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে সমর্থন দিয়ে থাকে। এতে বলা হয়েছে, ১৯৯টি দেশের মধ্যে ২২ শতাংশ দেশের রাষ্ট্রধর্ম রয়েছে এবং ২০ শতাংশ দেশ একটি ধর্মকে প্রাধান্য দেয়। সুতরাং, বাংলাদেশ কোনোভাবেই ব্যতিক্রম নয়।
রাষ্ট্র অনুমোদিত ধর্ম থাকলেও রাষ্ট্র এবং ধর্মের ভূমিকা আলাদা হতে পারে। ইসরায়েলের বার এলান ইউনিভার্সিটির ধর্ম ও রাষ্ট্র (আরএসএস) সংক্রান্ত গবেষণার তথ্য–উপাত্তের ভিত্তিতে জনাথন ফক্স বলেছিলেন যে, এ ধরনের পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে ভিন্ন হতে পারে। তিনি যুক্তরাজ্য এবং ইরানকে উদাহরণ হিসেবে দিয়েছেন। উভয় দেশেই রাষ্ট্রধর্ম বা সরকারি গির্জা আছে, তবে এই দুই রাষ্ট্রের কার্যক্রমে ধর্মের ভূমিকা একেবারে বিপরীত।
সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও ধর্মের সম্পর্ক গত কয়েক দশকের মতোই থাকবে। যতক্ষণ না ধর্ম আইনগত ব্যবস্থার উৎস হিসেবে কাজ করছে অথবা রাজনৈতিক–আইনি প্রতিষ্ঠানগুলোকে চ্যালেঞ্জ করছে, ততক্ষণ উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। অনেক সময় রাষ্ট্রধর্মগুলো প্রতীকীভাবে বেশি দেখা যায়, এর বাস্তবিক প্রভাব থাকে কম।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: স্বৈরশাসন যে আর ফিরবে না, সংবিধান সংস্কার কমিটি এটি কীভাবে নিশ্চিত করতে চায়?
আলী রীয়াজ: আমরা বেশ কিছু সুপারিশ করেছি। যা বাস্তবায়িত হলে ক্ষমতা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মধ্যে বিতরণ হয়ে যাবে এবং বর্তমানের মতো প্রধানমন্ত্রীর হাতে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ ঠেকাবে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা জাতীয় সাংবিধানিক পরিষদ (এনসিসি) গঠনের সুপারিশ করেছি। এই পরিষদ সাংবিধানিক পদগুলোতে নিয়োগ এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানদের নিয়োগের বিষয়ে সুপারিশ করবে। বর্তমানে এই ক্ষমতা শুধু প্রধানমন্ত্রীর হাতে। আমরা কিছু ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে স্থানান্তরের প্রস্তাবও দিয়েছি। বর্তমান সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়া কোনো নিয়োগ দিতে পারেন না; আমরা সুপারিশ করেছি এটি সীমিত করা উচিত।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, শাসক দলের সংসদ সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুগত। কারণ, তাঁরা দলের প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন না। এর ফলে খোদ শাসক দলের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন করতে চাইলেও প্রধানমন্ত্রীর অপসারণের জন্য কোনো প্রস্তাব আনা সম্ভব হয় না। আমরা সুপারিশ করেছি, প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে দলীয় প্রধান এবং সংসদ নেতা থাকতে পারবেন না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর জন্য সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনের প্রস্তাবও দিয়েছি।
আমরা সুপারিশ করেছি, বিচার বিভাগ স্বাধীন হওয়া উচিত এবং সুপ্রিম কোর্টের অধীনে একটি আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত। এই সুপারিশগুলো দায়িত্বশীলতা, ক্ষমতার ভারসাম্য এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যেই করা, যাতে স্বৈরশাসনের সম্ভাবনা রোধ করা সম্ভব হয়।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: রাজনৈতিক দলগুলো কোন ধরনের পরিবর্তনের বিরোধিতা করতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
আলী রীয়াজ: আমাদের সুপারিশের সারাংশ প্রকাশের পর রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে কোনো গুরুতর সমালোচনা বা পুরোপুরি প্রত্যাখ্যানের মতো কিছু শোনা যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই, তারা পুরো প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছে। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষেই জনসমক্ষে আনা হবে।
এসব সুপারিশের অনেকগুলোই রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে এসেছে। যেমন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট প্রতিষ্ঠার সুপারিশ। এই প্রস্তাবটি রাজনৈতিক দলগুলো এবং সাধারণ জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। তবে আমি বুঝি যে, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নিজস্ব প্রস্তাব রয়েছে এবং আমাদের কিছু সুপারিশ তাদের প্রস্তাবের সঙ্গে মেলে না। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে। আমি মনে করি, তেমন কোনো পার্থক্য নেই যা নিয়ে কোনো ধরনের সমঝোতা সম্ভব হবে না।
সবাই এবং আমি বলতে চাচ্ছি, সবারই কিছু পরিবর্তন চাওয়ার রয়েছে। গত ১৬ বছরের গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার অভিজ্ঞতা সবাইকেই বুঝিয়ে দিয়েছে যে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে পরিবর্তন প্রয়োজন। বাংলাদেশে নজিরবিহীন মাত্রার সহিংসতা হয়েছে। কেবল মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধও হয়েছে। শত শত মানুষের মৃত্যু এবং ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হওয়ার ঘটনা বৃথা যেতে পারে না।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: পরবর্তী প্রক্রিয়া কী হবে? নির্বাচিত কোনো সরকারই কী এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাবে?
আলী রীয়াজ: প্রাথমিকভাবে অন্তর্বর্তী সরকার যেসব সংস্কার কমিশন গঠন করেছিল, সেগুলো প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। যখন পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তখন এগুলো রাজনৈতিক দলগুলো যাচাই–বাছাই করে দেখবে। এরপর সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে। অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, শিগগিরই তাঁর নেতৃত্বে একটি ‘কনসেনসাস কমিশন’ গঠন করা হবে, যার মাধ্যমে আলোচনা এগিয়ে নেওয়া হবে। আশা করছি, একটি ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন করা হবে। এটি রাজনৈতিক দলগুলোর সহায়তায় দেশের গণতান্ত্রিক পুনর্নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার ব্যবস্থা চিহ্নিত করবে। প্রক্রিয়াটি এই ফেব্রুয়ারিতে শুরু হবে। এই আলোচনা থেকে একটি বাস্তবায়নের পথ বের হবে।
অনুবাদ করেছে আব্দুর রহমান

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল...
২ ঘণ্টা আগে
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
৪ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
৫ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর পূর্বাচলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ট্রেনিং গ্রাউন্ডে ‘ইন্টারন্যাশনাল ভলান্টিয়ার্স ডে’ উদ্যাপন উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়াররা নিজেদের নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে জনগণের বন্ধু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সমর্থ হয়েছেন। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্প, বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনা এবং অন্যান্য দুর্যোগে ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভলান্টিয়াররাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণ করেছেন।
উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ভলান্টিয়ারদের আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘কোনো রকম সুবিধা না নিয়ে নিজের ইচ্ছায় নিঃস্বার্থভাবে স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য আপনারা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। আপনারা এ কাজের প্রতিদান শুধু ইহকালে নয়, পরকালেও পাবেন।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সারা দেশে ৬২ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যে ৫৫ হাজারের বেশি ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রশিক্ষণ নেওয়ার মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবকেরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পরিবারের গর্বিত সদস্য হিসেবে আর্তমানবতার সেবায় ভূমিকা রাখছেন। এর ফলে একদিকে যেমন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের জনবল সংকট দূর হচ্ছে, তেমনি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাও বাড়ছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকারি বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে এককভাবে ভূমিকম্প, বড় অগ্নিদুর্ঘটনা বা বন্যার মতো দুর্যোগ মোকাবিলা করা দুরূহ। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকেরা পেশাদার বাহিনীর সঙ্গে কাজ করে দুর্যোগ প্রশমনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে, ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় সব স্তরে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ রাজনীতিমুক্ত হবে কি না—এ-সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আইন প্রণয়ন করা হয় জনগণকে সেবা দেওয়ার জন্য। এই আইনও করা হয়েছে জনগণ যেন প্রকৃত সেবা পায়, তা নিশ্চিত করতে। তিনি আশ্বস্ত করেন, পুলিশ কমিশন জনগণ ও পুলিশের প্রকৃত কল্যাণে কিছু সুপারিশ করবে, যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে।
এর আগে উপদেষ্টা পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ট্রেনিং গ্রাউন্ডে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রদর্শিত মহড়া দেখেন এবং তাঁদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর পূর্বাচলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ট্রেনিং গ্রাউন্ডে ‘ইন্টারন্যাশনাল ভলান্টিয়ার্স ডে’ উদ্যাপন উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়াররা নিজেদের নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে জনগণের বন্ধু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সমর্থ হয়েছেন। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্প, বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনা এবং অন্যান্য দুর্যোগে ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভলান্টিয়াররাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণ করেছেন।
উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ভলান্টিয়ারদের আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘কোনো রকম সুবিধা না নিয়ে নিজের ইচ্ছায় নিঃস্বার্থভাবে স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য আপনারা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। আপনারা এ কাজের প্রতিদান শুধু ইহকালে নয়, পরকালেও পাবেন।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সারা দেশে ৬২ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যে ৫৫ হাজারের বেশি ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রশিক্ষণ নেওয়ার মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবকেরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পরিবারের গর্বিত সদস্য হিসেবে আর্তমানবতার সেবায় ভূমিকা রাখছেন। এর ফলে একদিকে যেমন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের জনবল সংকট দূর হচ্ছে, তেমনি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাও বাড়ছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকারি বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে এককভাবে ভূমিকম্প, বড় অগ্নিদুর্ঘটনা বা বন্যার মতো দুর্যোগ মোকাবিলা করা দুরূহ। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকেরা পেশাদার বাহিনীর সঙ্গে কাজ করে দুর্যোগ প্রশমনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে, ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় সব স্তরে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ রাজনীতিমুক্ত হবে কি না—এ-সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আইন প্রণয়ন করা হয় জনগণকে সেবা দেওয়ার জন্য। এই আইনও করা হয়েছে জনগণ যেন প্রকৃত সেবা পায়, তা নিশ্চিত করতে। তিনি আশ্বস্ত করেন, পুলিশ কমিশন জনগণ ও পুলিশের প্রকৃত কল্যাণে কিছু সুপারিশ করবে, যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে।
এর আগে উপদেষ্টা পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ট্রেনিং গ্রাউন্ডে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রদর্শিত মহড়া দেখেন এবং তাঁদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এসব কমিশনের একটি হলো সংবিধান সংস্কার কমিশন। গত ১৫ জানুয়ারি এই কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
৪ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
৫ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৬ ঘণ্টা আগেরংপুর প্রতিনিধি

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাঁকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে এক দিনে, সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কী আসছে রিঅ্যাকশন।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এ রকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারেক সাহেব কখন আসবেন, এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্র্যাফট নিয়ে। সে ক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে।’
আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি, সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
এ ছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সব ক্ষেত্রে নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।
এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবার রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এ ছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তাঁর।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাঁকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে এক দিনে, সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কী আসছে রিঅ্যাকশন।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এ রকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারেক সাহেব কখন আসবেন, এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্র্যাফট নিয়ে। সে ক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে।’
আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি, সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
এ ছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সব ক্ষেত্রে নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।
এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবার রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এ ছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তাঁর।

ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এসব কমিশনের একটি হলো সংবিধান সংস্কার কমিশন। গত ১৫ জানুয়ারি এই কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল...
২ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
৫ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর দু’টি মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ ও ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারা এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে’ রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে।
এদিকে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাদের ‘হয়রানিমূলক’ বদলি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাদের দাবি, বৃহস্পতিবার তিনজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। এসব বদলিকে তাঁরা ‘হয়রানিমূলক বদলি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
শিক্ষক নেতারা দাবি করেছেন, ‘রেওয়াজ না থাকলেও নিজ জেলার বাইরে হয়রানি করতে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করা হয়েছে।’
যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এসব বদলির আদেশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ জানিয়েছেন, তাঁকে নোয়াখালী সদর উপজেলার কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আরেক আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি জানিয়েছেন, তিনিসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অন্তত ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে অন্য জেলায় প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রথমে শোকজ ও পরে বদলি করা হলো। এটি হয়রানিমূলক বদলি, আমাদের শাস্তি দিয়েছে কারণ আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই করেছি। কিন্তু অনেক শিক্ষক যাঁরা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না তবুও তাঁরা বদলি হয়েছেন।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ অনুসারীরা সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়নের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু স্কুলে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তা বর্জন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যান।
কয়েক দিন আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছিলেন। পরে ১১ তম গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।
গত ৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে সেদিন বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস প্রয়োগ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সেসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা পরদিন থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন।
পরে ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা, যেখানে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সরকারে আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ওই দিন রাতে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর দু’টি মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ ও ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারা এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে’ রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে।
এদিকে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাদের ‘হয়রানিমূলক’ বদলি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাদের দাবি, বৃহস্পতিবার তিনজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। এসব বদলিকে তাঁরা ‘হয়রানিমূলক বদলি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
শিক্ষক নেতারা দাবি করেছেন, ‘রেওয়াজ না থাকলেও নিজ জেলার বাইরে হয়রানি করতে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করা হয়েছে।’
যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এসব বদলির আদেশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ জানিয়েছেন, তাঁকে নোয়াখালী সদর উপজেলার কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আরেক আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি জানিয়েছেন, তিনিসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অন্তত ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে অন্য জেলায় প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রথমে শোকজ ও পরে বদলি করা হলো। এটি হয়রানিমূলক বদলি, আমাদের শাস্তি দিয়েছে কারণ আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই করেছি। কিন্তু অনেক শিক্ষক যাঁরা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না তবুও তাঁরা বদলি হয়েছেন।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ অনুসারীরা সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়নের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু স্কুলে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তা বর্জন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যান।
কয়েক দিন আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছিলেন। পরে ১১ তম গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।
গত ৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে সেদিন বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস প্রয়োগ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সেসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা পরদিন থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন।
পরে ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা, যেখানে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সরকারে আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ওই দিন রাতে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এসব কমিশনের একটি হলো সংবিধান সংস্কার কমিশন। গত ১৫ জানুয়ারি এই কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল...
২ ঘণ্টা আগে
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
৪ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৬ ঘণ্টা আগেশাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এসব কমিশনের একটি হলো সংবিধান সংস্কার কমিশন। গত ১৫ জানুয়ারি এই কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল...
২ ঘণ্টা আগে
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
৪ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
৫ ঘণ্টা আগে