Ajker Patrika

চট্টগ্রামে মেট্রোরেল করার সমীক্ষা ও মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২২, ১৪: ৫৪
চট্টগ্রামে মেট্রোরেল করার সমীক্ষা ও মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

রাজধানী ঢাকার পর চট্টগ্রামেও মেট্রোরেলের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। বাণিজ্যিক এই নগরীতে মেট্রোরেলের মাস্টারপ্ল্যান ও সমীক্ষা প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। 

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে অনুমোদিত প্রকল্পের বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। 

এম এ মান্নান বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এরিয়ার জন্য মাস্টারপ্ল্যানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর জন্য ‘ট্রান্সপোর্ট মাস্টারপ্ল্যান অ্যান্ড প্রিলিমিনারি ফিজিবিলিটি স্টাডি ফর আরবান মেট্রোরেল ট্রানজিট কনস্ট্রাকশন অব চিটাগাং মেট্রোপলিটন এরিয়া’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, এতে ব্যয় হবে ৭০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে যানজট কমাতে এবং চট্টগ্রাম মহানগরীর মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য পরিবেশবান্ধব মেট্রোরেলের সুযোগ তৈরি হবে।’ 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মেট্রোরেলসহ একনেকে মোট আটটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। সব মিলিয়ে খরচ হবে ৪ হাজার ৮২৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প রয়েছে। মেট্রোরেলের সমীক্ষা ছাড়া অন্য দুটি প্রকল্প হচ্ছে কুমিল্লা সড়ক বিভাগাধীন চারটি জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ এবং লেবুখালী-বাউফল-গলাচিপা-আমড়াগাছিয়া জেলা মহাসড়কের (জেড-৮৮০৬) ৭০তম কিলোমিটারে রাবনাবাদ নদীর ওপর রাবনাবাদ সেতু নির্মাণ। 

অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে উপকূলীয় শহর জলবায়ু সহিষ্ণু প্রকল্প, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলি যোগাযোগব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাব্‌ল স্থাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, কারা নিরাপত্তা আধুনিকায়ন, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগ (প্রথম সংশোধিত) (পঞ্চমবার মেয়াদ বৃদ্ধি) প্রকল্প, জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অবকাঠামো উন্নয়ন (ইনফো-সরকার তৃতীয় পর্যায়) (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্প এবং কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্যনিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্প। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মনোমুগ্ধকর এয়ার শো দেখে উচ্ছ্বসিত হাজারো দর্শক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মনোমুগ্ধকর এয়ার শো দেখে উচ্ছ্বসিত হাজারো দর্শক

বাংলাদেশের বিজয়ের ৫৪ বছর উপলক্ষে তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত হয়েছে মনোমুগ্ধকর এয়ার শো। যাতে ৫৪ জন জাতীয় পতাকা নিয়ে প্যারাট্রুপিং করেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে এই প্যারাট্রুপিং করা হয়।

সশস্ত্র বাহিনীর আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বিভিন্ন বাহিনী প্রধান, রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপারের এই পতাকাবাহী স্কাইডাইভ প্রদর্শন বিশ্বের সর্ববৃহৎ পতাকা-প্যারাট্রুপিং প্রদর্শনী। এটি একটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড।

air-show

১২ হাজার উচ্চতা থেকে এই ফ্রি ফল জাম্পে অংশ নেওয়া এই ৫৪ জন হলেন—সেনা বাহিনীর ৪৬, নৌ বাহিনীর ৫, বিমানবাহিনীর ২ জন এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। আশিক চৌধুরী গুলিবিদ্ধ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরেন। ৪৯ থেকে ৫৪ বক্ষ নম্বরধারী ফ্রি ফল জাম্পাররা সুদানে নিহত ৬ জন শান্তিরক্ষীর নাম বুকে ধারণ করেন।

air-show-2

এই ফ্রি ফল জাম্পের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক এবং ড্রপ জোন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম এম ইমরুল হাসান।

perasut-2

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এয়ার শো শুরু হয়। এতে অংশ নেওয়া উড়োজাহাজগুলো হরেক রকমের রং ছড়ায় আকাশে। সেখানে জাতীয় পতাকার লাল-সবুজ ছাড়াও অন্যান্য রং ছিল। অন্যদিকে হেলিকপ্টারগুলো বহন করে জাতীয় পতাকা ও সশস্ত্র বাহিনীর পতাকা।

air-show-3

‘এয়ার শো’ দেখতে ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে দর্শনার্থীদের ঢল নামে। আগত দর্শনার্থীদের অনেকের হাতে জাতীয় পতাকা। কপালে বাঁধা জাতীয় পতাকার আদলের ফিতা কিংবা বিজয় দিবস লেখা কাপড়। লাল-সবুজের পোশাক পরেও এসেছেন অনেকেই। পুরোনো বিমানবন্দরে প্রবেশের ফটক সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তেজগাঁও বিমানবন্দরে এয়ার শো দেখতে জনস্রোত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৮
পুরাতন বিমানবন্দরে এয়ার শো দেখতে সকাল থেকেই মানুষের ভিড়। ছবি: ফেসবুক
পুরাতন বিমানবন্দরে এয়ার শো দেখতে সকাল থেকেই মানুষের ভিড়। ছবি: ফেসবুক

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে জমকালো ‘এয়ার শো’ দেখতে মানুষের ঢল নেমেছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিমানবন্দরমুখী মানুষের স্রোত দেখা যায়। তবে নির্ধারিত সময়ের পরও এয়ার শো শুরু না হওয়ায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন হাজারো দর্শক।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল পৌনে ১০টার দিকে আগারগাঁও-সংলগ্ন পুরোনো বিমানবন্দরের ফটকে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। নিরাপত্তা তল্লাশি শেষে সবাইকে একে একে প্রবেশ করানো হচ্ছে। ততক্ষণে শত শত পরিবার, শিশু ও উৎসুক জনতা বিমানবন্দরে প্রবেশ করে ভিড় জমিয়েছে।

আগত দর্শনার্থীদের হাতে শোভা পাচ্ছে জাতীয় পতাকা। অনেকের কপালে বাঁধা জাতীয় পতাকার আদলের ফিতা কিংবা ‘বিজয় দিবস’ লেখা কাপড়। অনেকেই পরিবারের সঙ্গে লাল-সবুজের পোশাক পরে এসেছে বিজয় উৎসবের এই বিশেষ প্রদর্শনী উপভোগ করতে।

গতকাল সোমবার এক তথ্যবিবরণীতে জানানো হয়েছিল মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ সকাল ১০টায় তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে এই জমকালো এয়ার শো অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু সকাল ১০টা ২০ মিনিটে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এয়ার শো শুরু হয়নি। জনসমাগম হলেও অনুষ্ঠান শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলে জানা গেছে।

তথ্যবিবরণীতে সরকার জানিয়েছে, এই এয়ার শো সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। একই সঙ্গে তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দর ও এর আশপাশ এলাকায় আজ কোনো প্রকার ড্রোন না ওড়ানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বিজয়ের ৫৪তম বছর উপলক্ষে এয়ার শোতে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে প্যারাট্রুপিং করে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন। এই ৫৪ জনের শেষ ৬ জন পোশাকে নিজেদের নেমপ্লেটের পরিবর্তে সুদানের ইউএন ঘাঁটিতে নিহত ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁদের নেমপ্লেট পরে প্যারাট্র‍্যুপিং করবেন।

এই ৫৪ জনের একজন আশিক চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) বর্তমান নির্বাহী চেয়ারম্যান। আশিক চৌধুরী জাম্প করবেন শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজয় দিবসে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবসে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ৩৪ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি।

এ সময় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদর্শন করে এবং বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। এরপর রাষ্ট্রপতি সেখানে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে সই করেন।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি বের হয়ে যাওয়ার পর জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ৬টা ৫৬ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও সরকারপ্রধান স্মৃতিসৌধে উপস্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্য, কূটনীতিক, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি এবং বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও তিন বাহিনীর প্রধানেরা বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপরই জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

আজ ১৬ ডিসেম্বর। ৫৫তম মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র যুদ্ধের পর এই দিনেই আমরা চূড়ান্ত বিজয় লাভ করেছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুদকের তদন্ত: ৭ দেশে জাবেদের আরও ৬১৫ সম্পদের সন্ধান

  • কম্বোডিয়া, ভিয়েতনামসহ সাতটি দেশে বিপুল সম্পদ।
  • নতুন ৩৮১টিসহ যুক্তরাজ্যে মোট সম্পদ ৭২৪টি।
  • নতুনগুলোসহ মোট ১ হাজার ১০০টি সম্পদের নথি দুদকের হাতে।
সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকা 
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩২
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। ছবি: সংগৃহীত

পাচারের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে বিপুল সম্পদ গড়ে আলোচনায় থাকা সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নতুন করে ৬১৫টি সম্পদের তথ্য পাওয়ার গেছে। কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইনসহ সাতটি দেশে বিপুল এই সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। তদন্তসংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

দুদকের একটি সূত্র জানায়, সাবেক ভূমিমন্ত্রীর নতুন করে ৬১৫টি সম্পদের নথিসহ মোট ১ হাজার ১০০টির মতো সম্পদের নথি রয়েছে তাদের কাছে। এর মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাট, প্লট, বাড়ি এবং তাঁর নামে থাকা কোম্পানি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স। আর এসব সম্পদ রয়েছে প্রায় ১০টি দেশে। সম্পদগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য ১০ হাজার কোটি টাকা।

বিএফআইইউ ও দুদকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নতুন করে যে ৬১৫টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, তার বেশির ভাগই যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে ৩৮১টি সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। এর আগে একই দেশে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর নামে ৩৪৩টি সম্পদের তথ্য পায় দুদক। সব মিলিয়ে শুধু যুক্তরাজ্যেই তাঁর ৭২৪টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেল।

এ ছাড়া, কম্বোডিয়ায় ১১১টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যার বাজারমূল্য ৩ কোটি ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৯৪৮ মার্কিন ডলার। মালয়েশিয়ায় ৪৭টি সম্পদ পাওয়া গেছে, যার বাজারমূল্য ১০ কোটি ৫৮ লাখ ৬৪ হাজার ২৪২ ডলার। ফিলিপাইনে ২টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যার মূল্য ৩ কোটি ৮৪ লাখ ৮৮ হাজার ৫৯০ পেসো, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮ কোটি টাকা। ভারতের হরিয়ানা, উত্তর চব্বিশপরগনাসহ দেশটিতে মোট ১১টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যার মূল্য ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৯২ হাজার ৬৪ ডলার।

সাইফুজ্জামান জাবেদের নামে থাইল্যান্ডে ২৪টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যার মূল্য ৩৬ কোটি ৩১ লাখ ২৪ হাজার ১৮৯ থাই বাত। যুক্তরাষ্ট্রে ৪৪টি সম্পদ ও ২টি কোম্পানির লাইসেন্স রয়েছে। ভিয়েতনামে ৩০টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সিঙ্গাপুরে সম্পদ থাকার প্রমাণ পেয়েছে বিএফআইইউ। সুইজারল্যান্ডেও তাঁর সম্পদ রয়েছে বলে তথ্য মিলেছে।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের নেতৃত্বে থাকা দুদকের উপপরিচালক মশিউর রহমান বলেন, ‘আমরা তাঁর যে অভিযোগগুলো অনুসন্ধান করছি, তার মধ্যে এখন পর্যন্ত সাবেক ভূমিমন্ত্রীর নামে এক হাজারের বেশি সম্পদ থাকার নথি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি নথিতেই ভিয়েতনামে তাঁর ৩০টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএফআইইউর এক কর্মকর্তা বলেন, সাইফুজ্জামান জাবেদ বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাচারের মাধ্যমে সম্পদ তৈরি করেন। অবৈধ অভিবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের টাকা তিনি তাঁর সেসব দেশের এজেন্ট দিয়ে সংগ্রহ করেছেন, পরে দেশে প্রবাসীদের স্বজনদের কাছে টাকা পরিশোধ করেছেন। তিনি জানান, জাবেদ তাঁর পাচারের অর্থ দিয়ে ভারত, মধ্যপ্রাচ্যসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে কোম্পানি ও ব্যবসা গড়ে তোলেন। পরে সেগুলো যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেন।

পাচারের অর্থ দেশে আনার বিষয়ে কথা বলেছেন দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পাচার করা অর্থ ফেরত আনার জন্য যথাযথ আইনিপ্রক্রিয়া শেষ করে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স পাঠাতে হবে। যদিও যেসব দেশে অর্থ পাচার হয়, তাদের সঙ্গে চুক্তি থাকলে এটি সহজ হয়। আমাদের এমন চুক্তি নেই বললেই চলে। এ কারণে পাচারের অর্থ ফেরত আনা বেশ কঠিন।’

মঈদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমি বলব, প্রক্রিয়া যত কঠিনই হোক, দুদককে সঠিক প্রক্রিয়ায় চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের অর্থগুলো পাচার হয়ে যেসব দেশে যায়, সেসব দেশ দুর্নীতির সূচকে অত্যন্ত ভালো অবস্থানে। কিন্তু পাচারের অর্থ যখন তাদের দেশে যায়, তখন তারা তা ফেরতে সহযোগিতা না করে উল্টো সুরক্ষার ব্যবস্থা করে রেখেছে। এটা তাদের দ্বৈত নীতিরই বহিঃপ্রকাশ।’

দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাজ্যে জাবেদ ও তাঁর পরিবারের নামে থাকা সম্পদ ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছে দুদক। এ লক্ষ্যে সে দেশের সরকারের সঙ্গে চুক্তি করতে পারে দুদক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত