Ajker Patrika

আসিফ মাহমুদ ও হাসনাতের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে তোলপাড়

আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৫, ১৪: ০২
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ এবং আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তাঁদের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় চলছে। এর জেরে আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভও করেছে।

আজ শুক্রবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। ভিডিওটি ১৫ মার্চ ধারণ করা হয়েছে বলে ওই পোস্টের মন্তব্যের ঘরে জানান তিনি।

‘ক্যান্টনমেন্টের ইন্টারভেনশনের ট্রেইলর-১’ শীর্ষক ২৮ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তায় আসিফ মাহমুদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসের নিয়োগ নিয়ে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের ‘ভেটো’ (আপত্তি) ছিল।

ভিডিওতে আসিফ বলেন, ‘সেনাপ্রধানের দিক থেকে মূল ভেটোটা (আপত্তি) ছিল ড. মুহাম্মদ ইউনূস কেন? হোয়াই নট অ্যানি আদার পারসন (অন্য কেউ কেন নয়)? ড. ইউনূসের নামে মামলা আছে। তিনি একজন কনভিকটেড পারসন (দণ্ডিত ব্যক্তি)। কনভিকটেড পারসন কীভাবে আসলে একটা দেশের প্রধান উপদেষ্টা হতে পারে?’

আওয়ামী লীগকে একটা লোক একেবারেই দেখতে পারছে না এবং বাংলাদেশে তো আলটিমেটলি ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ লোক আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। এই ৩০-৪০ শতাংশের মানুষের মতামতের বিরুদ্ধে গিয়ে কি একটা লোককে প্রধান উপদেষ্টা করা উচিত?—সেনাপ্রধান এমন মন্তব্য করেন বলে ভিডিওতে বলেন উপদেষ্টা আসিফ।

ভিডিওতে আসিফ আরও বলেন, ‘সেনাপ্রধান শেষে আমাদের বলেছিলেন, তিনি বুকে পাথর চাপা দিয়ে এ সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছেন।’

এর আগে গতকাল একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনার পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ তুলে অবিলম্বে দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণ) হাসনাত আবদুল্লাহ।

গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে (২০ মার্চ) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আসুন, সকল যদি কিন্তু পাশে রেখে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারলে জুলাই ব্যর্থ হয়ে যাবে। আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত আমাদের শহীদদের রক্ত আমরা বৃথা হতে দিবো না। ৫ আগস্টের পরের বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কামব্যাকের আর কোনো সুযোগ নাই, বরং আওয়ামী লীগকে অবশ্যই নিষিদ্ধ হতেই হবে।’

তিনি লেখেন, ‘১১ই মার্চ, সময় দুপুর ২:৩০। কিছুদিন আগে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে, “রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ” নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের। সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরীন শারমিন, তাপসকে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।

‘আমিসহ আরও দুইজনের কাছে ক্যান্টনমেন্ট থেকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় ১১ই মার্চ দুপুর ২:৩০-এ। আমাদেরকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, আসন সমঝোতার বিনিময়ে আমরা যেন এই প্রস্তাব মেনে নিই। আমাদেরকে বলা হয়, ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দলকেও এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে—তারা শর্ত সাপেক্ষে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে। একটি বিরোধী দল থাকার চেয়ে একটি দুর্বল আওয়ামী লীগসহ একাধিক বিরোধী দল থাকা নাকি ভালো। ফলশ্রুতিতে আপনি দেখবেন, গত দুইদিন মিডিয়াতে আওয়ামী লীগের পক্ষে একাধিক রাজনীতিবিদ বয়ান দেওয়া শুরু করেছে।’

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও লেখেন, ‘আমাদেরকে আরো বলা হয়—"রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ" যাদের দিয়ে করা হবে, তারা এপ্রিল-মে থেকে শেখ পরিবারের অপরাধ স্বীকার করবে, হাসিনাকে অস্বীকার করবে এবং তারা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ করবে এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবে।’

হাসনাত বলেন, তাঁরা তৎক্ষণাৎ এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে কাজ করতে বলেন।

‘এর উত্তরে আমাদের বলা হয়, আওয়ামী লীগকে ফিরতে কোনো ধরনের বাধা দিলে দেশে যে সংকট সৃষ্টি হবে, তার দায়ভার আমাদের নিতে হবে এবং “আওয়ামী লীগ মাস্ট কাম ব্যাক”।’ লিখেছেন হাসনাত আবদুল্লাহ।

হাসনাত আরও লেখেন, ‘আলোচনার একপর্যায়ে বলি—যেই দল এখনো ক্ষমা চায় নাই, অপরাধ স্বীকার করে নাই, সেই দলকে আপনারা কীভাবে ক্ষমা করে দিবেন! অপরপক্ষ থেকে রেগে গিয়ে উত্তর আসে, “ইউ পিপল নো নাথিং। ইউ ল্যাক উইজডম অ্যান্ড এক্সপিরিয়েন্স। উই আর ইন দিজ সার্ভিস ফর এটলিস্ট ফোর্টি ইয়ার্স। তোমার বয়সের থেকে বেশি। তা ছাড়া আওয়ামী লীগ ছাড়া ইনক্লুসিভ ইলেকশন হবে না।”

উত্তরে বলি, “আওয়ামী লীগের সাথে কোনো ইনক্লুসিভিটি হতে পারে না। আওয়ামী লীগকে ফেরাতে হলে আমাদের লাশের ওপর দিয়ে ফেরাতে হবে। আওয়ামী লীগ ফেরানোর চেষ্টা করা হলে যে সংকট তৈরি হবে, তার দায়ভার আপনাদের নিতে হবে।”

মিটিং অসমাপ্ত রেখেই তাঁদের চলে আসতে হয় বলে উল্লেখ করেন হাসনাত।

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও অভিযোগ করেন, জুলাই আন্দোলনের সময়ও তাঁদের ওপর নানা ধরনের চাপ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ওসব চাপে নতি স্বীকার না করে আপনাদের তথা জনগণের উপরেই আস্থা রেখেছি। আপনাদের সাথে নিয়েই হাসিনার চূড়ান্ত পতন ঘটিয়েছি।’

হাসনাত আরও বলেন, এখনো তিনি নির্দিষ্ট মহলের চাপকে অস্বীকার করে যাচ্ছেন।

এনসিপি নেতা লেখেন, ‘এ পোস্ট দেওয়ার পর আমার কী হবে আমি জানি না। নানামুখী প্রেশারে আমাকে হয়তো পড়তে হবে, হয়তো বিপদেও পড়তে হতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে কোনো ধরনের আপস করার সুযোগ নাই।’

তিনি আরও লেখেন, ‘আজ আবারও যদি আপনাদের সমর্থন পাই, রাজপথে আপনাদের পাশে পাই, তবে আবারও এই আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের ভারতীয় ষড়যন্ত্রও আমরা উড়িয়ে দিতে পারব।’

সবশেষে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, ‘আসুন, সকল যদি কিন্তু পাশে রেখে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারলে জুলাই ব্যর্থ হয়ে যাবে। আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত আমাদের শহীদদের রক্ত আমরা বৃথা হতে দিবো না। ৫ আগস্টের পরের বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কামব্যাকের আর কোন সুযোগ নাই বরং আওয়ামী লীগকে অবশ্যই নিষিদ্ধ হতেই হবে।’

ওই পোস্টে একজনের মন্তব্যের জবাবে হাসনাত আবদুল্লাহ লিখেছেন, ‘মৃত্যু হলেও মানুষ জানুক কেন মারা গিয়েছি।’

আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘লড়াইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ের জন্য আমরা প্রস্তুত। গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ পর্যন্ত এ লড়াই চলবে।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্পিকার ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৮
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।

এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘খালেদা জিয়াকে এভাবে বিদায় দিতে হবে ভাবিনি’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।

লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সংসদ-এলাকা

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’

বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’

জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমানের পদত্যাগ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৪
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।

তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু, সংসদ ভবন এলাকা লোকারণ্য

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৪
খালেদা জিয়ার জানাজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু, সংসদ ভবন এলাকা লোকারণ্য
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত