প্রসঙ্গ আওয়ামী লীগ
সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী ও শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ।
আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে—এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকেও জড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণেরা। এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না এলে রাজনীতিতে নতুন সংকটের ছায়া দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসানের পর পরিস্থিতি থিতিয়ে আসতে সময় চলে গেছে প্রায় সাত মাস। এখন চলছে রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ। জাতীয় সংসদ, গণপরিষদ, নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন—কোনটি আগে হবে, তা নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ পুরোনো দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতভেদ আছে। আর তরুণদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মূল চাওয়া —গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও সংবিধান পুনর্লিখনের জন্য আগে গণপরিষদ নির্বাচন অথবা একই সঙ্গে গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সংস্কার প্রশ্নে দলগুলোর মধ্যে এমন মতবিরোধের মধ্যেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি রাজনীতিতে নতুন ইস্যু হয়ে উঠেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমানে সক্রিয় দলগুলোর বেশির ভাগ আওয়ামী লীগকে আর রাজনীতিতে দেখতে চায় না; সরাসরি নির্বাচনে তো নয়ই। কিন্তু কী উপায়ে দলটিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা যাবে, সে বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে সরকারের কৌশল ও হিসাবে গড়বড় থাকতে পারে। এই অবস্থা কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টায়ও আছে বিভিন্ন ব্যক্তি-গোষ্ঠী। ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে কেউ কেউ নিরাপত্তা বাহিনীর প্রসঙ্গও টেনে আনছেন। এতে সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় তিনি তরুণদের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু এখন তরুণেরা যে পথে চলেছে, সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে কথা বলছে, সেটি ‘ভুল’ হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘একটি দলকে নিষিদ্ধ করা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এতে জনমত গঠন এবং আইন-আদালতের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। যেহেতু আওয়ামী লীগ তিনটি নির্বাচনে মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি, তাই তরুণেরা নির্বাহী আদেশে তিন নির্বাচনে দলটি নিষিদ্ধ করার দাবি তুলতে পারে। সেটা না করে তারা যে পথে নামছে, সেটা ঠিক কৌশল নয়।’
অধ্যাপক দিলারা বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক কৌশলে ভুল হলে সংস্কার ও নির্বাচন—দুই ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি আছে।
অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, সেনাবাহিনীকে সবকিছুতে টেনে আনা ঠিক নয়। সামরিক-বেসামরিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলতে গেলে স্থান, কাল ও পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখতে হয়। তা না হলে ঝামেলা দেখা দেয়।
রাজনীতিতে এই নতুন উত্তাপ শুরু হয় মূলত ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই’—প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন মন্তব্যের পর। ড. ইউনূস গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলের কাছে মন্তব্যটি করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যেসব নেতার বিরুদ্ধে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের বিচার করা হবে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে ড. ইউনূসের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে একটি পোস্ট দেন। এতে তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূস, আওয়ামী লীগ ৫ আগস্টেই নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। উত্তর পাড়া ও ভারতের প্রেসক্রিপশনে আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ওপেন করার চেষ্টা করে লাভ নেই।’
এই পোস্টের ঘণ্টাখানেক পর আরেকটি বড় পোস্টে হাসনাত বলেন, ক্যান্টনমেন্ট থেকে তিনিসহ তিনজনের কাছে সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে সামনে রেখে পরিশোধিত (রিফাইন্ড) আওয়ামী লীগকে সামনে আনার পরিকল্পনা গত ১১ মার্চ বেলা ২টা ৩০ মিনিটের দিকে উপস্থাপন করা হয়। পরিকল্পনাটি কে উপস্থাপন করেছেন, তা হাসনাত বলেননি। তাঁর দাবি, তিনি তৎক্ষণাৎ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে দলটির বিচার নিয়ে কাজ করার জন্য পরিকল্পনা উপস্থাপনকারীদের অনুরোধ করেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ গতকাল দুপুরের পর ফেসবুকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগের প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, ‘সেনাপ্রধানের দিক থেকে মূল ভেটো (আপত্তি) ছিল যে, ড. ইউনূস কেন? কেন অন্য কোনো ব্যক্তি নয়। ড. ইউনূসের নামে মামলা আছে। তিনি একজন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি। একজন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি কীভাবে একটি দেশের প্রধান উপদেষ্টা হতে পারে!’
আসিফ ভিডিওতে সেনাপ্রধানকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে কিছু লোক একেবারেই দেখতে (পছন্দ করতে) পারছে না। কিন্তু দেশের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ লোক আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। দেশের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ লোকের বিরুদ্ধে গিয়ে একটি লোককে প্রধান উপদেষ্টা করা উচিত কি।’
আসিফের দাবি, সেনাপ্রধান সর্বশেষ তাঁদের বলেন, তিনি (সেনাপ্রধান) ‘বুকে পাথর চাপা দিয়ে’ ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্তটি মেনে নেন।
আসিফ মাহমুদ গতকাল দুপুরের পর ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, গণহত্যার বছর না ঘুরতেই আওয়ামী লীগকে ফেরানোর খায়েস বিপজ্জনক। এর আড়াই ঘণ্টা পর আরেকটি পোস্টে ফেসবুকে তিনি বলেন, নির্বাচন পিছিয়ে যাবে, অনিশ্চয়তা তৈরি হবে—এসব আশঙ্কার কথা বলে কেউ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে জনতার ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারবে না।
সেনাপ্রধান প্রসঙ্গে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও ক্যান্টনমেন্টের প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সামি উদ দৌলা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে গতকাল বলেন, ‘কোনো ধরনের মন্তব্য নেই।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা মনে করেন, দেশ একটি স্পর্শকাতর সময় পার করছে। এই অবস্থায় সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে নিয়ে যত কম আলোচনা হয়, তত ভালো। কারণ, বৈরী মনোভাবাপন্ন বিদেশি শক্তিগুলো পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অরাজকতা তৈরির চেষ্টা করতে পারে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহেদুল আনাম খান গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সেনাপ্রধান যখন কারও সঙ্গে কথা বলেন, তখন পরিস্থিতি বোঝানোর জন্য কাউকে হয়তো আস্থায় নিয়ে কথা বলেন। সবাই তাঁর অবস্থানের সঙ্গে একমত না-ও হতে পারেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কী কথা হলো, তা বাইরে না আসা ভালো।’
সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধান সম্পর্কে মন্তব্য থেকে দেশের ভেতরে বিভাজন তৈরি হওয়ার ঝুঁকি আছে, এমনটা উল্লেখ করে শাহেদুল আনাম খান বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় যে ঐক্য তৈরি হয়েছে, বিভিন্ন মহল নিজেদের স্বার্থে তা নস্যাতের চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, এখন বিভাজন নয়, সংহতির সময়।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান গতকাল ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না। তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে সর্বস্তরের জনগণকে সংযত, সতর্ক এবং ঐক্যবদ্ধ থেকে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগের বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গতকাল বিকেল পর্যন্ত দলের দুই নেতার তিনটি পুরোনো ভিডিও ক্লিপে দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারির একটি ভিডিও অনুযায়ী, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিয়ে কোনো কৌশল অন্তর্বর্তী সরকার করলে আমরা মেনে নেব না; জনগণ মেনে নেবে না।’
এদিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী গতকাল দুপুরের পর এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘গত ৫৩ বছরে জামায়াতে ইসলামীকে বারংবার রাজনীতিতে পুনর্বাসন করার প্রচেষ্টা করা হয়েছে। জেনারেল জিয়ার হাত ধরেই এই অবৈধ কাজ সম্পন্ন হয়। সেনা-জনতার অভ্যুত্থানের ফসল লুটকারী জিয়া জনগণের অভিপ্রায় তোয়াক্কা না করে গায়ের জোরে এই অবৈধ শক্তিকে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়।’
নাসীরুদ্দীন কোনো ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করে অভিযোগ তোলেন ‘ক্যান্টনমেন্টের ষড়যন্ত্রকারীরা’ ছাত্র-নাগরিকদের গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করার অভিপ্রায়ে হাসিনা ও তাঁর দল আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের ‘দেশবিরোধী চক্রান্তকে’ ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার লড়াইয়ে বিএনপি, জামায়াত ও প্রশাসনের বাংলাদেশের পক্ষের অংশকে ছাত্র-নাগরিকদের লড়াইয়ে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে গতকালও বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। মিছিল ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় রাজধানী ঢাকার নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনের এলাকা, পল্টন, প্রেসক্লাব, শাহবাগ, হাইকোর্ট, সার্ক ফোয়ারা, সংসদ ভবন, রামপুরা টিভি স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে। এসব এলাকায় জলকামান, এপিসি ও টহল টিম মোতায়েন ছিল। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করতেও দেখা গেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের।
গতকাল দুপুরে নাইটিঙ্গেল মোড়ে তিনটি গাড়িসহ সেনাবাহিনীর একটি প্লাটুন (২৫-৩০ জন) অবস্থান নেয়। টহল গাড়ির ওপর রাইফেল তাক করা ছিল এবং জনসমাগম হলে সেটিকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হচ্ছিল। পাশাপাশি পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদেরও সেখানে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে শাহবাগ এলাকায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ চললেও পাশেই ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে ছিল এবং সন্দেহভাজনদের তল্লাশি চালায়। কেউ ছবি ভিডিও করতে দিলে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
নিরাপত্তা তৎপরতা প্রসঙ্গে পুলিশের লালবাগ বিভাগের ডিসি জসিম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে।’
আরও খবর পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ।
আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে—এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকেও জড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণেরা। এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না এলে রাজনীতিতে নতুন সংকটের ছায়া দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসানের পর পরিস্থিতি থিতিয়ে আসতে সময় চলে গেছে প্রায় সাত মাস। এখন চলছে রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ। জাতীয় সংসদ, গণপরিষদ, নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন—কোনটি আগে হবে, তা নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ পুরোনো দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতভেদ আছে। আর তরুণদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মূল চাওয়া —গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও সংবিধান পুনর্লিখনের জন্য আগে গণপরিষদ নির্বাচন অথবা একই সঙ্গে গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সংস্কার প্রশ্নে দলগুলোর মধ্যে এমন মতবিরোধের মধ্যেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি রাজনীতিতে নতুন ইস্যু হয়ে উঠেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমানে সক্রিয় দলগুলোর বেশির ভাগ আওয়ামী লীগকে আর রাজনীতিতে দেখতে চায় না; সরাসরি নির্বাচনে তো নয়ই। কিন্তু কী উপায়ে দলটিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা যাবে, সে বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে সরকারের কৌশল ও হিসাবে গড়বড় থাকতে পারে। এই অবস্থা কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টায়ও আছে বিভিন্ন ব্যক্তি-গোষ্ঠী। ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে কেউ কেউ নিরাপত্তা বাহিনীর প্রসঙ্গও টেনে আনছেন। এতে সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় তিনি তরুণদের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু এখন তরুণেরা যে পথে চলেছে, সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে কথা বলছে, সেটি ‘ভুল’ হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘একটি দলকে নিষিদ্ধ করা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এতে জনমত গঠন এবং আইন-আদালতের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। যেহেতু আওয়ামী লীগ তিনটি নির্বাচনে মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি, তাই তরুণেরা নির্বাহী আদেশে তিন নির্বাচনে দলটি নিষিদ্ধ করার দাবি তুলতে পারে। সেটা না করে তারা যে পথে নামছে, সেটা ঠিক কৌশল নয়।’
অধ্যাপক দিলারা বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক কৌশলে ভুল হলে সংস্কার ও নির্বাচন—দুই ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি আছে।
অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, সেনাবাহিনীকে সবকিছুতে টেনে আনা ঠিক নয়। সামরিক-বেসামরিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলতে গেলে স্থান, কাল ও পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখতে হয়। তা না হলে ঝামেলা দেখা দেয়।
রাজনীতিতে এই নতুন উত্তাপ শুরু হয় মূলত ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই’—প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন মন্তব্যের পর। ড. ইউনূস গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলের কাছে মন্তব্যটি করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যেসব নেতার বিরুদ্ধে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের বিচার করা হবে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে ড. ইউনূসের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে একটি পোস্ট দেন। এতে তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূস, আওয়ামী লীগ ৫ আগস্টেই নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। উত্তর পাড়া ও ভারতের প্রেসক্রিপশনে আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ওপেন করার চেষ্টা করে লাভ নেই।’
এই পোস্টের ঘণ্টাখানেক পর আরেকটি বড় পোস্টে হাসনাত বলেন, ক্যান্টনমেন্ট থেকে তিনিসহ তিনজনের কাছে সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে সামনে রেখে পরিশোধিত (রিফাইন্ড) আওয়ামী লীগকে সামনে আনার পরিকল্পনা গত ১১ মার্চ বেলা ২টা ৩০ মিনিটের দিকে উপস্থাপন করা হয়। পরিকল্পনাটি কে উপস্থাপন করেছেন, তা হাসনাত বলেননি। তাঁর দাবি, তিনি তৎক্ষণাৎ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে দলটির বিচার নিয়ে কাজ করার জন্য পরিকল্পনা উপস্থাপনকারীদের অনুরোধ করেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ গতকাল দুপুরের পর ফেসবুকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগের প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, ‘সেনাপ্রধানের দিক থেকে মূল ভেটো (আপত্তি) ছিল যে, ড. ইউনূস কেন? কেন অন্য কোনো ব্যক্তি নয়। ড. ইউনূসের নামে মামলা আছে। তিনি একজন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি। একজন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি কীভাবে একটি দেশের প্রধান উপদেষ্টা হতে পারে!’
আসিফ ভিডিওতে সেনাপ্রধানকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে কিছু লোক একেবারেই দেখতে (পছন্দ করতে) পারছে না। কিন্তু দেশের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ লোক আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। দেশের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ লোকের বিরুদ্ধে গিয়ে একটি লোককে প্রধান উপদেষ্টা করা উচিত কি।’
আসিফের দাবি, সেনাপ্রধান সর্বশেষ তাঁদের বলেন, তিনি (সেনাপ্রধান) ‘বুকে পাথর চাপা দিয়ে’ ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্তটি মেনে নেন।
আসিফ মাহমুদ গতকাল দুপুরের পর ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, গণহত্যার বছর না ঘুরতেই আওয়ামী লীগকে ফেরানোর খায়েস বিপজ্জনক। এর আড়াই ঘণ্টা পর আরেকটি পোস্টে ফেসবুকে তিনি বলেন, নির্বাচন পিছিয়ে যাবে, অনিশ্চয়তা তৈরি হবে—এসব আশঙ্কার কথা বলে কেউ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে জনতার ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারবে না।
সেনাপ্রধান প্রসঙ্গে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও ক্যান্টনমেন্টের প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সামি উদ দৌলা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে গতকাল বলেন, ‘কোনো ধরনের মন্তব্য নেই।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা মনে করেন, দেশ একটি স্পর্শকাতর সময় পার করছে। এই অবস্থায় সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে নিয়ে যত কম আলোচনা হয়, তত ভালো। কারণ, বৈরী মনোভাবাপন্ন বিদেশি শক্তিগুলো পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অরাজকতা তৈরির চেষ্টা করতে পারে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহেদুল আনাম খান গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সেনাপ্রধান যখন কারও সঙ্গে কথা বলেন, তখন পরিস্থিতি বোঝানোর জন্য কাউকে হয়তো আস্থায় নিয়ে কথা বলেন। সবাই তাঁর অবস্থানের সঙ্গে একমত না-ও হতে পারেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কী কথা হলো, তা বাইরে না আসা ভালো।’
সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধান সম্পর্কে মন্তব্য থেকে দেশের ভেতরে বিভাজন তৈরি হওয়ার ঝুঁকি আছে, এমনটা উল্লেখ করে শাহেদুল আনাম খান বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় যে ঐক্য তৈরি হয়েছে, বিভিন্ন মহল নিজেদের স্বার্থে তা নস্যাতের চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, এখন বিভাজন নয়, সংহতির সময়।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান গতকাল ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না। তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে সর্বস্তরের জনগণকে সংযত, সতর্ক এবং ঐক্যবদ্ধ থেকে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগের বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গতকাল বিকেল পর্যন্ত দলের দুই নেতার তিনটি পুরোনো ভিডিও ক্লিপে দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারির একটি ভিডিও অনুযায়ী, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিয়ে কোনো কৌশল অন্তর্বর্তী সরকার করলে আমরা মেনে নেব না; জনগণ মেনে নেবে না।’
এদিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী গতকাল দুপুরের পর এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘গত ৫৩ বছরে জামায়াতে ইসলামীকে বারংবার রাজনীতিতে পুনর্বাসন করার প্রচেষ্টা করা হয়েছে। জেনারেল জিয়ার হাত ধরেই এই অবৈধ কাজ সম্পন্ন হয়। সেনা-জনতার অভ্যুত্থানের ফসল লুটকারী জিয়া জনগণের অভিপ্রায় তোয়াক্কা না করে গায়ের জোরে এই অবৈধ শক্তিকে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়।’
নাসীরুদ্দীন কোনো ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করে অভিযোগ তোলেন ‘ক্যান্টনমেন্টের ষড়যন্ত্রকারীরা’ ছাত্র-নাগরিকদের গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করার অভিপ্রায়ে হাসিনা ও তাঁর দল আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের ‘দেশবিরোধী চক্রান্তকে’ ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার লড়াইয়ে বিএনপি, জামায়াত ও প্রশাসনের বাংলাদেশের পক্ষের অংশকে ছাত্র-নাগরিকদের লড়াইয়ে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে গতকালও বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। মিছিল ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় রাজধানী ঢাকার নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনের এলাকা, পল্টন, প্রেসক্লাব, শাহবাগ, হাইকোর্ট, সার্ক ফোয়ারা, সংসদ ভবন, রামপুরা টিভি স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে। এসব এলাকায় জলকামান, এপিসি ও টহল টিম মোতায়েন ছিল। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করতেও দেখা গেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের।
গতকাল দুপুরে নাইটিঙ্গেল মোড়ে তিনটি গাড়িসহ সেনাবাহিনীর একটি প্লাটুন (২৫-৩০ জন) অবস্থান নেয়। টহল গাড়ির ওপর রাইফেল তাক করা ছিল এবং জনসমাগম হলে সেটিকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হচ্ছিল। পাশাপাশি পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদেরও সেখানে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে শাহবাগ এলাকায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ চললেও পাশেই ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে ছিল এবং সন্দেহভাজনদের তল্লাশি চালায়। কেউ ছবি ভিডিও করতে দিলে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
নিরাপত্তা তৎপরতা প্রসঙ্গে পুলিশের লালবাগ বিভাগের ডিসি জসিম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে।’
আরও খবর পড়ুন:

তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার বাদ জোহর বেলা ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে।
১ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এর আগেও অনেকবার গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে, আবার কখনো ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বাসায়। কিন্তু এবার আর তাঁর ফেরা হলো না। টানা ৩৮ দিন হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে লড়েছেন রোগের সঙ্গে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছেন তিনি।
১ ঘণ্টা আগে
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেড় দশকের বেশি সময় সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তিনি। বাসভবন, কার্যালয়, রাজপথ, হাসপাতাল, কারাগার, বিদেশ—সবখানেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে থেকেছেন তিনি। থেকে গেছেন আড়ালে। এই মানুষটি হলেন ফাতেমা বেগম।
১ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রাম, ব্যক্তিত্ব ও মানবিক দিক নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীনতা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনের অভিভাবকসুলভ আচরণ—সবকিছু মিলিয়ে তাঁরা খালেদা জিয়াকে দেখেছেন এক সংগ্রামী রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল মানুষ হিসেবে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার বাদ জোহর বেলা ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের জাতীয় নেতাকে সর্বস্তরের জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে সম্মান জানাতে পারে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে পারে, সে জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সব দপ্তর। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের চারপাশের সড়কগুলোতেও যেন জনসাধারণ অবস্থান করতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানাজার পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে।
এ সময় খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মনোনীত রাজনীতিবিদেরা উপস্থিত থাকবেন। দাফনকাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্নের জন্য সেখানে নির্ধারিত ব্যক্তিদের ব্যতীত আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। দাফনকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হবে।

তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার বাদ জোহর বেলা ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের জাতীয় নেতাকে সর্বস্তরের জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে সম্মান জানাতে পারে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে পারে, সে জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সব দপ্তর। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের চারপাশের সড়কগুলোতেও যেন জনসাধারণ অবস্থান করতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানাজার পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে।
এ সময় খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মনোনীত রাজনীতিবিদেরা উপস্থিত থাকবেন। দাফনকাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্নের জন্য সেখানে নির্ধারিত ব্যক্তিদের ব্যতীত আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। দাফনকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হবে।

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে—এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকেও...
২২ মার্চ ২০২৫
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এর আগেও অনেকবার গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে, আবার কখনো ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বাসায়। কিন্তু এবার আর তাঁর ফেরা হলো না। টানা ৩৮ দিন হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে লড়েছেন রোগের সঙ্গে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছেন তিনি।
১ ঘণ্টা আগে
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেড় দশকের বেশি সময় সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তিনি। বাসভবন, কার্যালয়, রাজপথ, হাসপাতাল, কারাগার, বিদেশ—সবখানেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে থেকেছেন তিনি। থেকে গেছেন আড়ালে। এই মানুষটি হলেন ফাতেমা বেগম।
১ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রাম, ব্যক্তিত্ব ও মানবিক দিক নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীনতা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনের অভিভাবকসুলভ আচরণ—সবকিছু মিলিয়ে তাঁরা খালেদা জিয়াকে দেখেছেন এক সংগ্রামী রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল মানুষ হিসেবে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এর আগেও অনেকবার গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে, আবার কখনো ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বাসায়। কিন্তু এবার আর তাঁর ফেরা হলো না। টানা ৩৮ দিন হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে লড়েছেন রোগের সঙ্গে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে এই হাসপাতালেই মৃত্যুকে বরণ করে নেন গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এই আপসহীন নেত্রী।
শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ২৩ নভেম্বর শেষ দফায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। ৮০ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সেখানে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। তবে শারীরিক অবস্থা দীর্ঘ পথ ভ্রমণের অনুকূলে না থাকায় সেটি আর সম্ভব হয়নি।
পরিবার ও দলীয় সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছিল। তবে মেডিকেল বোর্ডের মত ছিল, দীর্ঘ বিমানযাত্রা তাঁর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ফুসফুসে সংক্রমণ, শ্বাসকষ্ট, হৃদ্যন্ত্রের দুর্বলতা ও অন্যান্য জটিলতার কারণে ২৯ নভেম্বরের পর বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগ স্থগিত হয়। পরবর্তী সময়ে শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরিকল্পনা আর বাস্তবায়িত হয়নি। সেই সময়ই সরকার তাঁকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ঘোষণা করে। সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
সম্প্রতি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস, জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান ছাড়াও রাজনৈতিক দলের নেতারা তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সঙ্গে সার্বক্ষণিক জড়িত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। গতকাল দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছিল। দেশি-বিদেশি খ্যাতনামা চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড দায়িত্বে ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট সিনাই ও জন হপকিন্স হাসপাতাল, যুক্তরাজ্যের লন্ডন ব্রিজ হাসপাতাল, লন্ডন ক্লিনিক ও কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা চিকিৎসা বোর্ডে যুক্ত ছিলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানও চিকিৎসক দলের সদস্য ছিলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফেরার পর নিয়মিত হাসপাতালে গিয়ে মায়ের চিকিৎসার তদারকি করতেন। সোমবার রাতেও মাকে দেখতে হাসপাতালে যান তিনি। এই রাতে ছেলে তারেক ছাড়াও পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান, বড় বোন সেলিনা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, দুই নাতনি জাইমা রহমান ও জাহিয়া রহমান এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে যান। রাত দুইটা নাগাদ পরিবারের সদস্যসহ হাসপাতাল ত্যাগ করেন তারেক রহমান। পরে সকাল ৬টার দিকে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর পায় দেশবাসী।

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এর আগেও অনেকবার গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে, আবার কখনো ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বাসায়। কিন্তু এবার আর তাঁর ফেরা হলো না। টানা ৩৮ দিন হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে লড়েছেন রোগের সঙ্গে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে এই হাসপাতালেই মৃত্যুকে বরণ করে নেন গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এই আপসহীন নেত্রী।
শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ২৩ নভেম্বর শেষ দফায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। ৮০ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সেখানে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। তবে শারীরিক অবস্থা দীর্ঘ পথ ভ্রমণের অনুকূলে না থাকায় সেটি আর সম্ভব হয়নি।
পরিবার ও দলীয় সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছিল। তবে মেডিকেল বোর্ডের মত ছিল, দীর্ঘ বিমানযাত্রা তাঁর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ফুসফুসে সংক্রমণ, শ্বাসকষ্ট, হৃদ্যন্ত্রের দুর্বলতা ও অন্যান্য জটিলতার কারণে ২৯ নভেম্বরের পর বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগ স্থগিত হয়। পরবর্তী সময়ে শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরিকল্পনা আর বাস্তবায়িত হয়নি। সেই সময়ই সরকার তাঁকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ঘোষণা করে। সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
সম্প্রতি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস, জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান ছাড়াও রাজনৈতিক দলের নেতারা তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সঙ্গে সার্বক্ষণিক জড়িত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। গতকাল দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছিল। দেশি-বিদেশি খ্যাতনামা চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড দায়িত্বে ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট সিনাই ও জন হপকিন্স হাসপাতাল, যুক্তরাজ্যের লন্ডন ব্রিজ হাসপাতাল, লন্ডন ক্লিনিক ও কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা চিকিৎসা বোর্ডে যুক্ত ছিলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানও চিকিৎসক দলের সদস্য ছিলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফেরার পর নিয়মিত হাসপাতালে গিয়ে মায়ের চিকিৎসার তদারকি করতেন। সোমবার রাতেও মাকে দেখতে হাসপাতালে যান তিনি। এই রাতে ছেলে তারেক ছাড়াও পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান, বড় বোন সেলিনা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, দুই নাতনি জাইমা রহমান ও জাহিয়া রহমান এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে যান। রাত দুইটা নাগাদ পরিবারের সদস্যসহ হাসপাতাল ত্যাগ করেন তারেক রহমান। পরে সকাল ৬টার দিকে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর পায় দেশবাসী।

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে—এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকেও...
২২ মার্চ ২০২৫
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার বাদ জোহর বেলা ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে।
১ ঘণ্টা আগে
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেড় দশকের বেশি সময় সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তিনি। বাসভবন, কার্যালয়, রাজপথ, হাসপাতাল, কারাগার, বিদেশ—সবখানেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে থেকেছেন তিনি। থেকে গেছেন আড়ালে। এই মানুষটি হলেন ফাতেমা বেগম।
১ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রাম, ব্যক্তিত্ব ও মানবিক দিক নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীনতা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনের অভিভাবকসুলভ আচরণ—সবকিছু মিলিয়ে তাঁরা খালেদা জিয়াকে দেখেছেন এক সংগ্রামী রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল মানুষ হিসেবে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেড় দশকের বেশি সময় সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তিনি। বাসভবন, কার্যালয়, রাজপথ, হাসপাতাল, কারাগার, বিদেশ—সবখানেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে থেকেছেন তিনি। থেকে গেছেন আড়ালে। এই মানুষটি হলেন ফাতেমা বেগম।
২০১০ সাল থেকেই খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন ফাতেমা বেগম। গৃহকর্মী থেকে হয়ে ওঠেন বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা বলছেন, চেয়ারপারসনের প্রতি ফাতেমার মমত্ববোধ প্রবল। সব সময় পাশে থাকা, চেয়ারপারসনকে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো মনে করিয়ে দেওয়াসহ সব কাজই ফাতেমা করতেন।
ফাতেমা বেগমের গ্রামের বাড়ি ভোলা। ২০১০ সাল থেকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় খালেদা জিয়ার গৃহকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক সঙ্গী।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়। আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর গৃহপরিচারিকা হিসেবে ফাতেমাকে সঙ্গে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার ছয় দিনের মাথায় ফাতেমাও সেখানে যান। প্রায় ২৫ মাস স্বেচ্ছায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারেই ছিলেন।
এর আগে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের উত্তাল সময়েও ফাতেমাকে দেখা গেছে খালেদা জিয়ার নীরব ছায়াসঙ্গী হিসেবে। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের প্রতিবাদে আন্দোলনে খালেদা জিয়াকে গুলশানে কার্যালয়ের সামনে আটকে দেওয়ার সময়ও পতাকা হাতে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ফাতেমা। ২০১৫ সালের শুরুতে টানা ৯২ দিন বিএনপির চেয়ারপারসন গুলশান কার্যালয়ে অবস্থানকালেও তিনি ছিলেন সার্বক্ষণিক সঙ্গী।
স্বল্পভাষী ফাতেমার বয়স ৪০ বছর ছুঁই ছুই। তিনি এক সন্তানের জননী।
ফাতেমা মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন রাজধানীর শাহজাহানপুরে। বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের তথ্য বলছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতার মাধ্যমে মূলত ‘ফিরোজা’য় কাজ শুরু ফাতেমার।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেড় দশকের বেশি সময় ধরে নিরবচ্ছিন্ন এই সঙ্গ শুধু চাকরি নয়, এটি যেন রাজনৈতিক ইতিহাসের এক মানবিক অধ্যায়।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেড় দশকের বেশি সময় সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তিনি। বাসভবন, কার্যালয়, রাজপথ, হাসপাতাল, কারাগার, বিদেশ—সবখানেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে থেকেছেন তিনি। থেকে গেছেন আড়ালে। এই মানুষটি হলেন ফাতেমা বেগম।
২০১০ সাল থেকেই খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন ফাতেমা বেগম। গৃহকর্মী থেকে হয়ে ওঠেন বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা বলছেন, চেয়ারপারসনের প্রতি ফাতেমার মমত্ববোধ প্রবল। সব সময় পাশে থাকা, চেয়ারপারসনকে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো মনে করিয়ে দেওয়াসহ সব কাজই ফাতেমা করতেন।
ফাতেমা বেগমের গ্রামের বাড়ি ভোলা। ২০১০ সাল থেকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় খালেদা জিয়ার গৃহকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক সঙ্গী।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়। আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর গৃহপরিচারিকা হিসেবে ফাতেমাকে সঙ্গে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার ছয় দিনের মাথায় ফাতেমাও সেখানে যান। প্রায় ২৫ মাস স্বেচ্ছায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারেই ছিলেন।
এর আগে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের উত্তাল সময়েও ফাতেমাকে দেখা গেছে খালেদা জিয়ার নীরব ছায়াসঙ্গী হিসেবে। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের প্রতিবাদে আন্দোলনে খালেদা জিয়াকে গুলশানে কার্যালয়ের সামনে আটকে দেওয়ার সময়ও পতাকা হাতে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ফাতেমা। ২০১৫ সালের শুরুতে টানা ৯২ দিন বিএনপির চেয়ারপারসন গুলশান কার্যালয়ে অবস্থানকালেও তিনি ছিলেন সার্বক্ষণিক সঙ্গী।
স্বল্পভাষী ফাতেমার বয়স ৪০ বছর ছুঁই ছুই। তিনি এক সন্তানের জননী।
ফাতেমা মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন রাজধানীর শাহজাহানপুরে। বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের তথ্য বলছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতার মাধ্যমে মূলত ‘ফিরোজা’য় কাজ শুরু ফাতেমার।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেড় দশকের বেশি সময় ধরে নিরবচ্ছিন্ন এই সঙ্গ শুধু চাকরি নয়, এটি যেন রাজনৈতিক ইতিহাসের এক মানবিক অধ্যায়।

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে—এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকেও...
২২ মার্চ ২০২৫
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার বাদ জোহর বেলা ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে।
১ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এর আগেও অনেকবার গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে, আবার কখনো ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বাসায়। কিন্তু এবার আর তাঁর ফেরা হলো না। টানা ৩৮ দিন হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে লড়েছেন রোগের সঙ্গে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছেন তিনি।
১ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রাম, ব্যক্তিত্ব ও মানবিক দিক নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীনতা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনের অভিভাবকসুলভ আচরণ—সবকিছু মিলিয়ে তাঁরা খালেদা জিয়াকে দেখেছেন এক সংগ্রামী রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল মানুষ হিসেবে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রাম, ব্যক্তিত্ব ও মানবিক দিক নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীনতা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনের অভিভাবকসুলভ আচরণ—সবকিছু মিলিয়ে তাঁরা খালেদা জিয়াকে দেখেছেন এক সংগ্রামী রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল মানুষ হিসেবে। তাঁদের ভাষ্যে উঠে এসেছে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব, নির্যাতনের মুখেও অবিচল থাকা এবং শেষ দিন পর্যন্ত গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার এক অনন্য রাজনৈতিক জীবন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রামরত এক আপসহীন নেত্রী। তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন যে, নেত্রী (খালেদা জিয়া) দীর্ঘদিন তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রায় সমস্ত অংশই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন এবং গণতন্ত্রের মূল্যবোধগুলোকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, তিনি আজীবন কাজ করে গেছেন। তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তখন গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য তিনি কাজ করেছেন। জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। আর যখন বিরোধী ছিলেন, তখনো তিনি একইভাবে সেই গণতন্ত্রকেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বিএনপির রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক টার্নিং পয়েন্ট এবং দলকে গণমানুষের কাতারে নিয়ে যাওয়া নেতা। তিনি বলেন, ‘গৃহবধূ থেকে ম্যাডামের রাজনীতিতে আসাটা ছিল বিএনপির রাজনীতির জন্য একটা টার্নিং পয়েন্ট। দলের নেতৃত্বে এসে তিনিই বিএনপিকে একটি জনপ্রিয় দলে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করা এক নেত্রী। তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ওপরে জুলুম হয়েছে, নির্যাতন হয়েছে; কিন্তু তিনি কোনো দিন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। তিনি কোনো দিন আপস করেননি। গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিজেকে বিজয়ী প্রমাণ করতে পেরেছেন। ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আগপর্যন্ত তিনি স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করে গেছেন। তিনি সেই যুদ্ধে নিজেকে বিজয়ী বলে প্রমাণ করেছেন।
ড. আবদুল মঈন খান আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া রাজপথে যুদ্ধ করেছেন। ২০০৯ সালের পরে যখন স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নির্যাতন, অত্যাচার ও মিথ্যা মামলা তাঁর ওপরে নেমে এসেছিল...তখন অনেকে পরামর্শ দিয়েছিল—আপনি কেন এই কষ্ট সহ্য করছেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি ন্যায় ও সত্যের জন্য সংগ্রাম করছি। আমি সংগ্রাম করছি বাংলাদেশের মানুষের জন্য, আমি সংগ্রাম করছি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পূর্ণ প্রতিষ্ঠা করার জন্য।’’’
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন একই সঙ্গে রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল অভিভাবক। তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এমন একজন মানুষ ছিলেন, আমাদের যাদের উনার সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠভাবে মেশার সুযোগ হয়েছে...আমরা দেখেছি, উনি একদিকে যেমন সত্যি সত্যি অভিভাবক, আরেক দিকে মাতৃস্নেহে উনি আমাদের দেখতেন। কোনো দিন বাসায় যাওয়ার পরে কোনো কিছু না খেয়ে বাসা থেকে কেউ যেতে পারত না।’
চিকিৎসাধীন অবস্থার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘চিকিৎসকদের কী খাইয়েছেন? এগুলো সব সময় উনার যাঁরা কাজের সহকর্মী ছিলেন, সহায়তা করতেন, তাঁদের জিজ্ঞাসা করতেন। উনি বলে দিতেন, আজকে এটা দিবা। কোনো দিন (চিকিৎসক) যেতে একটু দেরি হলে জিজ্ঞাসা করতেন...এত দেরি কেন হলো? আমি তো বসে আছি। অর্থাৎ চিকিৎসকেরা কখন যাবেন...উনি যখন বাসায় থাকতেন, তখন প্রতিদিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা তাঁর বাসায় যেতেন। উনি সবার সঙ্গে কথা বলতেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘গণতন্ত্রের লড়াই করতে করতেই বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুপথযাত্রী হয়েছিলেন। খালেদা জিয়া ছিলেন আমাদের আকাঙ্ক্ষা। বাংলাদেশে দলমত-নির্বিশেষে সবাই তাঁর নামে ঐক্যবদ্ধ ছিল। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলে বাংলাদেশ গণতন্ত্র ফেরত পেত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম, সেই স্বপ্ন পূরণ হতো।’
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতি ছায়া থেকে বঞ্চিত হলো বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন, এই সংকট কাটিয়ে ওঠা জাতির জন্য কঠিন।

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রাম, ব্যক্তিত্ব ও মানবিক দিক নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীনতা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনের অভিভাবকসুলভ আচরণ—সবকিছু মিলিয়ে তাঁরা খালেদা জিয়াকে দেখেছেন এক সংগ্রামী রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল মানুষ হিসেবে। তাঁদের ভাষ্যে উঠে এসেছে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব, নির্যাতনের মুখেও অবিচল থাকা এবং শেষ দিন পর্যন্ত গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার এক অনন্য রাজনৈতিক জীবন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রামরত এক আপসহীন নেত্রী। তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন যে, নেত্রী (খালেদা জিয়া) দীর্ঘদিন তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রায় সমস্ত অংশই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন এবং গণতন্ত্রের মূল্যবোধগুলোকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, তিনি আজীবন কাজ করে গেছেন। তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তখন গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য তিনি কাজ করেছেন। জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। আর যখন বিরোধী ছিলেন, তখনো তিনি একইভাবে সেই গণতন্ত্রকেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বিএনপির রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক টার্নিং পয়েন্ট এবং দলকে গণমানুষের কাতারে নিয়ে যাওয়া নেতা। তিনি বলেন, ‘গৃহবধূ থেকে ম্যাডামের রাজনীতিতে আসাটা ছিল বিএনপির রাজনীতির জন্য একটা টার্নিং পয়েন্ট। দলের নেতৃত্বে এসে তিনিই বিএনপিকে একটি জনপ্রিয় দলে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করা এক নেত্রী। তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ওপরে জুলুম হয়েছে, নির্যাতন হয়েছে; কিন্তু তিনি কোনো দিন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। তিনি কোনো দিন আপস করেননি। গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিজেকে বিজয়ী প্রমাণ করতে পেরেছেন। ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আগপর্যন্ত তিনি স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করে গেছেন। তিনি সেই যুদ্ধে নিজেকে বিজয়ী বলে প্রমাণ করেছেন।
ড. আবদুল মঈন খান আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া রাজপথে যুদ্ধ করেছেন। ২০০৯ সালের পরে যখন স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নির্যাতন, অত্যাচার ও মিথ্যা মামলা তাঁর ওপরে নেমে এসেছিল...তখন অনেকে পরামর্শ দিয়েছিল—আপনি কেন এই কষ্ট সহ্য করছেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি ন্যায় ও সত্যের জন্য সংগ্রাম করছি। আমি সংগ্রাম করছি বাংলাদেশের মানুষের জন্য, আমি সংগ্রাম করছি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পূর্ণ প্রতিষ্ঠা করার জন্য।’’’
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন একই সঙ্গে রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল অভিভাবক। তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এমন একজন মানুষ ছিলেন, আমাদের যাদের উনার সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠভাবে মেশার সুযোগ হয়েছে...আমরা দেখেছি, উনি একদিকে যেমন সত্যি সত্যি অভিভাবক, আরেক দিকে মাতৃস্নেহে উনি আমাদের দেখতেন। কোনো দিন বাসায় যাওয়ার পরে কোনো কিছু না খেয়ে বাসা থেকে কেউ যেতে পারত না।’
চিকিৎসাধীন অবস্থার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘চিকিৎসকদের কী খাইয়েছেন? এগুলো সব সময় উনার যাঁরা কাজের সহকর্মী ছিলেন, সহায়তা করতেন, তাঁদের জিজ্ঞাসা করতেন। উনি বলে দিতেন, আজকে এটা দিবা। কোনো দিন (চিকিৎসক) যেতে একটু দেরি হলে জিজ্ঞাসা করতেন...এত দেরি কেন হলো? আমি তো বসে আছি। অর্থাৎ চিকিৎসকেরা কখন যাবেন...উনি যখন বাসায় থাকতেন, তখন প্রতিদিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা তাঁর বাসায় যেতেন। উনি সবার সঙ্গে কথা বলতেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘গণতন্ত্রের লড়াই করতে করতেই বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুপথযাত্রী হয়েছিলেন। খালেদা জিয়া ছিলেন আমাদের আকাঙ্ক্ষা। বাংলাদেশে দলমত-নির্বিশেষে সবাই তাঁর নামে ঐক্যবদ্ধ ছিল। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলে বাংলাদেশ গণতন্ত্র ফেরত পেত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম, সেই স্বপ্ন পূরণ হতো।’
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতি ছায়া থেকে বঞ্চিত হলো বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন, এই সংকট কাটিয়ে ওঠা জাতির জন্য কঠিন।

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে—এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকেও...
২২ মার্চ ২০২৫
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার বাদ জোহর বেলা ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে।
১ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এর আগেও অনেকবার গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে, আবার কখনো ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বাসায়। কিন্তু এবার আর তাঁর ফেরা হলো না। টানা ৩৮ দিন হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে লড়েছেন রোগের সঙ্গে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছেন তিনি।
১ ঘণ্টা আগে
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেড় দশকের বেশি সময় সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তিনি। বাসভবন, কার্যালয়, রাজপথ, হাসপাতাল, কারাগার, বিদেশ—সবখানেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে থেকেছেন তিনি। থেকে গেছেন আড়ালে। এই মানুষটি হলেন ফাতেমা বেগম।
১ ঘণ্টা আগে