প্রসঙ্গ আওয়ামী লীগ
সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী ও শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ।
আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে—এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকেও জড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণেরা। এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না এলে রাজনীতিতে নতুন সংকটের ছায়া দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসানের পর পরিস্থিতি থিতিয়ে আসতে সময় চলে গেছে প্রায় সাত মাস। এখন চলছে রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ। জাতীয় সংসদ, গণপরিষদ, নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন—কোনটি আগে হবে, তা নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ পুরোনো দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতভেদ আছে। আর তরুণদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মূল চাওয়া —গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও সংবিধান পুনর্লিখনের জন্য আগে গণপরিষদ নির্বাচন অথবা একই সঙ্গে গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সংস্কার প্রশ্নে দলগুলোর মধ্যে এমন মতবিরোধের মধ্যেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি রাজনীতিতে নতুন ইস্যু হয়ে উঠেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমানে সক্রিয় দলগুলোর বেশির ভাগ আওয়ামী লীগকে আর রাজনীতিতে দেখতে চায় না; সরাসরি নির্বাচনে তো নয়ই। কিন্তু কী উপায়ে দলটিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা যাবে, সে বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে সরকারের কৌশল ও হিসাবে গড়বড় থাকতে পারে। এই অবস্থা কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টায়ও আছে বিভিন্ন ব্যক্তি-গোষ্ঠী। ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে কেউ কেউ নিরাপত্তা বাহিনীর প্রসঙ্গও টেনে আনছেন। এতে সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় তিনি তরুণদের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু এখন তরুণেরা যে পথে চলেছে, সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে কথা বলছে, সেটি ‘ভুল’ হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘একটি দলকে নিষিদ্ধ করা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এতে জনমত গঠন এবং আইন-আদালতের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। যেহেতু আওয়ামী লীগ তিনটি নির্বাচনে মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি, তাই তরুণেরা নির্বাহী আদেশে তিন নির্বাচনে দলটি নিষিদ্ধ করার দাবি তুলতে পারে। সেটা না করে তারা যে পথে নামছে, সেটা ঠিক কৌশল নয়।’
অধ্যাপক দিলারা বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক কৌশলে ভুল হলে সংস্কার ও নির্বাচন—দুই ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি আছে।
অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, সেনাবাহিনীকে সবকিছুতে টেনে আনা ঠিক নয়। সামরিক-বেসামরিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলতে গেলে স্থান, কাল ও পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখতে হয়। তা না হলে ঝামেলা দেখা দেয়।
রাজনীতিতে এই নতুন উত্তাপ শুরু হয় মূলত ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই’—প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন মন্তব্যের পর। ড. ইউনূস গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলের কাছে মন্তব্যটি করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যেসব নেতার বিরুদ্ধে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের বিচার করা হবে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে ড. ইউনূসের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে একটি পোস্ট দেন। এতে তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূস, আওয়ামী লীগ ৫ আগস্টেই নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। উত্তর পাড়া ও ভারতের প্রেসক্রিপশনে আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ওপেন করার চেষ্টা করে লাভ নেই।’
এই পোস্টের ঘণ্টাখানেক পর আরেকটি বড় পোস্টে হাসনাত বলেন, ক্যান্টনমেন্ট থেকে তিনিসহ তিনজনের কাছে সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে সামনে রেখে পরিশোধিত (রিফাইন্ড) আওয়ামী লীগকে সামনে আনার পরিকল্পনা গত ১১ মার্চ বেলা ২টা ৩০ মিনিটের দিকে উপস্থাপন করা হয়। পরিকল্পনাটি কে উপস্থাপন করেছেন, তা হাসনাত বলেননি। তাঁর দাবি, তিনি তৎক্ষণাৎ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে দলটির বিচার নিয়ে কাজ করার জন্য পরিকল্পনা উপস্থাপনকারীদের অনুরোধ করেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ গতকাল দুপুরের পর ফেসবুকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগের প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, ‘সেনাপ্রধানের দিক থেকে মূল ভেটো (আপত্তি) ছিল যে, ড. ইউনূস কেন? কেন অন্য কোনো ব্যক্তি নয়। ড. ইউনূসের নামে মামলা আছে। তিনি একজন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি। একজন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি কীভাবে একটি দেশের প্রধান উপদেষ্টা হতে পারে!’
আসিফ ভিডিওতে সেনাপ্রধানকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে কিছু লোক একেবারেই দেখতে (পছন্দ করতে) পারছে না। কিন্তু দেশের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ লোক আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। দেশের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ লোকের বিরুদ্ধে গিয়ে একটি লোককে প্রধান উপদেষ্টা করা উচিত কি।’
আসিফের দাবি, সেনাপ্রধান সর্বশেষ তাঁদের বলেন, তিনি (সেনাপ্রধান) ‘বুকে পাথর চাপা দিয়ে’ ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্তটি মেনে নেন।
আসিফ মাহমুদ গতকাল দুপুরের পর ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, গণহত্যার বছর না ঘুরতেই আওয়ামী লীগকে ফেরানোর খায়েস বিপজ্জনক। এর আড়াই ঘণ্টা পর আরেকটি পোস্টে ফেসবুকে তিনি বলেন, নির্বাচন পিছিয়ে যাবে, অনিশ্চয়তা তৈরি হবে—এসব আশঙ্কার কথা বলে কেউ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে জনতার ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারবে না।
সেনাপ্রধান প্রসঙ্গে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও ক্যান্টনমেন্টের প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সামি উদ দৌলা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে গতকাল বলেন, ‘কোনো ধরনের মন্তব্য নেই।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা মনে করেন, দেশ একটি স্পর্শকাতর সময় পার করছে। এই অবস্থায় সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে নিয়ে যত কম আলোচনা হয়, তত ভালো। কারণ, বৈরী মনোভাবাপন্ন বিদেশি শক্তিগুলো পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অরাজকতা তৈরির চেষ্টা করতে পারে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহেদুল আনাম খান গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সেনাপ্রধান যখন কারও সঙ্গে কথা বলেন, তখন পরিস্থিতি বোঝানোর জন্য কাউকে হয়তো আস্থায় নিয়ে কথা বলেন। সবাই তাঁর অবস্থানের সঙ্গে একমত না-ও হতে পারেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কী কথা হলো, তা বাইরে না আসা ভালো।’
সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধান সম্পর্কে মন্তব্য থেকে দেশের ভেতরে বিভাজন তৈরি হওয়ার ঝুঁকি আছে, এমনটা উল্লেখ করে শাহেদুল আনাম খান বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় যে ঐক্য তৈরি হয়েছে, বিভিন্ন মহল নিজেদের স্বার্থে তা নস্যাতের চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, এখন বিভাজন নয়, সংহতির সময়।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান গতকাল ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না। তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে সর্বস্তরের জনগণকে সংযত, সতর্ক এবং ঐক্যবদ্ধ থেকে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগের বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গতকাল বিকেল পর্যন্ত দলের দুই নেতার তিনটি পুরোনো ভিডিও ক্লিপে দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারির একটি ভিডিও অনুযায়ী, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিয়ে কোনো কৌশল অন্তর্বর্তী সরকার করলে আমরা মেনে নেব না; জনগণ মেনে নেবে না।’
এদিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী গতকাল দুপুরের পর এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘গত ৫৩ বছরে জামায়াতে ইসলামীকে বারংবার রাজনীতিতে পুনর্বাসন করার প্রচেষ্টা করা হয়েছে। জেনারেল জিয়ার হাত ধরেই এই অবৈধ কাজ সম্পন্ন হয়। সেনা-জনতার অভ্যুত্থানের ফসল লুটকারী জিয়া জনগণের অভিপ্রায় তোয়াক্কা না করে গায়ের জোরে এই অবৈধ শক্তিকে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়।’
নাসীরুদ্দীন কোনো ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করে অভিযোগ তোলেন ‘ক্যান্টনমেন্টের ষড়যন্ত্রকারীরা’ ছাত্র-নাগরিকদের গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করার অভিপ্রায়ে হাসিনা ও তাঁর দল আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের ‘দেশবিরোধী চক্রান্তকে’ ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার লড়াইয়ে বিএনপি, জামায়াত ও প্রশাসনের বাংলাদেশের পক্ষের অংশকে ছাত্র-নাগরিকদের লড়াইয়ে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে গতকালও বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। মিছিল ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় রাজধানী ঢাকার নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনের এলাকা, পল্টন, প্রেসক্লাব, শাহবাগ, হাইকোর্ট, সার্ক ফোয়ারা, সংসদ ভবন, রামপুরা টিভি স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে। এসব এলাকায় জলকামান, এপিসি ও টহল টিম মোতায়েন ছিল। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করতেও দেখা গেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের।
গতকাল দুপুরে নাইটিঙ্গেল মোড়ে তিনটি গাড়িসহ সেনাবাহিনীর একটি প্লাটুন (২৫-৩০ জন) অবস্থান নেয়। টহল গাড়ির ওপর রাইফেল তাক করা ছিল এবং জনসমাগম হলে সেটিকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হচ্ছিল। পাশাপাশি পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদেরও সেখানে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে শাহবাগ এলাকায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ চললেও পাশেই ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে ছিল এবং সন্দেহভাজনদের তল্লাশি চালায়। কেউ ছবি ভিডিও করতে দিলে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
নিরাপত্তা তৎপরতা প্রসঙ্গে পুলিশের লালবাগ বিভাগের ডিসি জসিম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে।’
আরও খবর পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ।
আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে—এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকেও জড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণেরা। এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না এলে রাজনীতিতে নতুন সংকটের ছায়া দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসানের পর পরিস্থিতি থিতিয়ে আসতে সময় চলে গেছে প্রায় সাত মাস। এখন চলছে রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ। জাতীয় সংসদ, গণপরিষদ, নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন—কোনটি আগে হবে, তা নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ পুরোনো দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতভেদ আছে। আর তরুণদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মূল চাওয়া —গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও সংবিধান পুনর্লিখনের জন্য আগে গণপরিষদ নির্বাচন অথবা একই সঙ্গে গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সংস্কার প্রশ্নে দলগুলোর মধ্যে এমন মতবিরোধের মধ্যেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি রাজনীতিতে নতুন ইস্যু হয়ে উঠেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমানে সক্রিয় দলগুলোর বেশির ভাগ আওয়ামী লীগকে আর রাজনীতিতে দেখতে চায় না; সরাসরি নির্বাচনে তো নয়ই। কিন্তু কী উপায়ে দলটিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা যাবে, সে বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে সরকারের কৌশল ও হিসাবে গড়বড় থাকতে পারে। এই অবস্থা কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টায়ও আছে বিভিন্ন ব্যক্তি-গোষ্ঠী। ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে কেউ কেউ নিরাপত্তা বাহিনীর প্রসঙ্গও টেনে আনছেন। এতে সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় তিনি তরুণদের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু এখন তরুণেরা যে পথে চলেছে, সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে কথা বলছে, সেটি ‘ভুল’ হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘একটি দলকে নিষিদ্ধ করা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এতে জনমত গঠন এবং আইন-আদালতের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। যেহেতু আওয়ামী লীগ তিনটি নির্বাচনে মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি, তাই তরুণেরা নির্বাহী আদেশে তিন নির্বাচনে দলটি নিষিদ্ধ করার দাবি তুলতে পারে। সেটা না করে তারা যে পথে নামছে, সেটা ঠিক কৌশল নয়।’
অধ্যাপক দিলারা বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক কৌশলে ভুল হলে সংস্কার ও নির্বাচন—দুই ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি আছে।
অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, সেনাবাহিনীকে সবকিছুতে টেনে আনা ঠিক নয়। সামরিক-বেসামরিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলতে গেলে স্থান, কাল ও পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখতে হয়। তা না হলে ঝামেলা দেখা দেয়।
রাজনীতিতে এই নতুন উত্তাপ শুরু হয় মূলত ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই’—প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন মন্তব্যের পর। ড. ইউনূস গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলের কাছে মন্তব্যটি করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যেসব নেতার বিরুদ্ধে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের বিচার করা হবে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে ড. ইউনূসের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে একটি পোস্ট দেন। এতে তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূস, আওয়ামী লীগ ৫ আগস্টেই নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। উত্তর পাড়া ও ভারতের প্রেসক্রিপশনে আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ওপেন করার চেষ্টা করে লাভ নেই।’
এই পোস্টের ঘণ্টাখানেক পর আরেকটি বড় পোস্টে হাসনাত বলেন, ক্যান্টনমেন্ট থেকে তিনিসহ তিনজনের কাছে সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে সামনে রেখে পরিশোধিত (রিফাইন্ড) আওয়ামী লীগকে সামনে আনার পরিকল্পনা গত ১১ মার্চ বেলা ২টা ৩০ মিনিটের দিকে উপস্থাপন করা হয়। পরিকল্পনাটি কে উপস্থাপন করেছেন, তা হাসনাত বলেননি। তাঁর দাবি, তিনি তৎক্ষণাৎ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে দলটির বিচার নিয়ে কাজ করার জন্য পরিকল্পনা উপস্থাপনকারীদের অনুরোধ করেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ গতকাল দুপুরের পর ফেসবুকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগের প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, ‘সেনাপ্রধানের দিক থেকে মূল ভেটো (আপত্তি) ছিল যে, ড. ইউনূস কেন? কেন অন্য কোনো ব্যক্তি নয়। ড. ইউনূসের নামে মামলা আছে। তিনি একজন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি। একজন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি কীভাবে একটি দেশের প্রধান উপদেষ্টা হতে পারে!’
আসিফ ভিডিওতে সেনাপ্রধানকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে কিছু লোক একেবারেই দেখতে (পছন্দ করতে) পারছে না। কিন্তু দেশের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ লোক আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। দেশের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ লোকের বিরুদ্ধে গিয়ে একটি লোককে প্রধান উপদেষ্টা করা উচিত কি।’
আসিফের দাবি, সেনাপ্রধান সর্বশেষ তাঁদের বলেন, তিনি (সেনাপ্রধান) ‘বুকে পাথর চাপা দিয়ে’ ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্তটি মেনে নেন।
আসিফ মাহমুদ গতকাল দুপুরের পর ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, গণহত্যার বছর না ঘুরতেই আওয়ামী লীগকে ফেরানোর খায়েস বিপজ্জনক। এর আড়াই ঘণ্টা পর আরেকটি পোস্টে ফেসবুকে তিনি বলেন, নির্বাচন পিছিয়ে যাবে, অনিশ্চয়তা তৈরি হবে—এসব আশঙ্কার কথা বলে কেউ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে জনতার ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারবে না।
সেনাপ্রধান প্রসঙ্গে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও ক্যান্টনমেন্টের প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সামি উদ দৌলা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে গতকাল বলেন, ‘কোনো ধরনের মন্তব্য নেই।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা মনে করেন, দেশ একটি স্পর্শকাতর সময় পার করছে। এই অবস্থায় সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে নিয়ে যত কম আলোচনা হয়, তত ভালো। কারণ, বৈরী মনোভাবাপন্ন বিদেশি শক্তিগুলো পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অরাজকতা তৈরির চেষ্টা করতে পারে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহেদুল আনাম খান গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সেনাপ্রধান যখন কারও সঙ্গে কথা বলেন, তখন পরিস্থিতি বোঝানোর জন্য কাউকে হয়তো আস্থায় নিয়ে কথা বলেন। সবাই তাঁর অবস্থানের সঙ্গে একমত না-ও হতে পারেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কী কথা হলো, তা বাইরে না আসা ভালো।’
সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধান সম্পর্কে মন্তব্য থেকে দেশের ভেতরে বিভাজন তৈরি হওয়ার ঝুঁকি আছে, এমনটা উল্লেখ করে শাহেদুল আনাম খান বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় যে ঐক্য তৈরি হয়েছে, বিভিন্ন মহল নিজেদের স্বার্থে তা নস্যাতের চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, এখন বিভাজন নয়, সংহতির সময়।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান গতকাল ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না। তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে সর্বস্তরের জনগণকে সংযত, সতর্ক এবং ঐক্যবদ্ধ থেকে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগের বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গতকাল বিকেল পর্যন্ত দলের দুই নেতার তিনটি পুরোনো ভিডিও ক্লিপে দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারির একটি ভিডিও অনুযায়ী, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিয়ে কোনো কৌশল অন্তর্বর্তী সরকার করলে আমরা মেনে নেব না; জনগণ মেনে নেবে না।’
এদিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী গতকাল দুপুরের পর এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘গত ৫৩ বছরে জামায়াতে ইসলামীকে বারংবার রাজনীতিতে পুনর্বাসন করার প্রচেষ্টা করা হয়েছে। জেনারেল জিয়ার হাত ধরেই এই অবৈধ কাজ সম্পন্ন হয়। সেনা-জনতার অভ্যুত্থানের ফসল লুটকারী জিয়া জনগণের অভিপ্রায় তোয়াক্কা না করে গায়ের জোরে এই অবৈধ শক্তিকে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়।’
নাসীরুদ্দীন কোনো ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করে অভিযোগ তোলেন ‘ক্যান্টনমেন্টের ষড়যন্ত্রকারীরা’ ছাত্র-নাগরিকদের গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করার অভিপ্রায়ে হাসিনা ও তাঁর দল আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের ‘দেশবিরোধী চক্রান্তকে’ ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার লড়াইয়ে বিএনপি, জামায়াত ও প্রশাসনের বাংলাদেশের পক্ষের অংশকে ছাত্র-নাগরিকদের লড়াইয়ে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে গতকালও বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। মিছিল ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় রাজধানী ঢাকার নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনের এলাকা, পল্টন, প্রেসক্লাব, শাহবাগ, হাইকোর্ট, সার্ক ফোয়ারা, সংসদ ভবন, রামপুরা টিভি স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে। এসব এলাকায় জলকামান, এপিসি ও টহল টিম মোতায়েন ছিল। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করতেও দেখা গেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের।
গতকাল দুপুরে নাইটিঙ্গেল মোড়ে তিনটি গাড়িসহ সেনাবাহিনীর একটি প্লাটুন (২৫-৩০ জন) অবস্থান নেয়। টহল গাড়ির ওপর রাইফেল তাক করা ছিল এবং জনসমাগম হলে সেটিকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হচ্ছিল। পাশাপাশি পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদেরও সেখানে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে শাহবাগ এলাকায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ চললেও পাশেই ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে ছিল এবং সন্দেহভাজনদের তল্লাশি চালায়। কেউ ছবি ভিডিও করতে দিলে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
নিরাপত্তা তৎপরতা প্রসঙ্গে পুলিশের লালবাগ বিভাগের ডিসি জসিম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে।’
আরও খবর পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন কার্যক্রম পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করা হবে। এ সময় ১০ হাজারের বেশি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
২ ঘণ্টা আগে
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে গভীর সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, তার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। সম্প্রতি তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ডায়েরি থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই সময়ের ক্ষমতা দখল, ষড়যন্ত্র...
২ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে সংসদ ভবন এলাকায় আসতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সেখানে কেউ কাঁদছেন, কেউ মন খারাপ করে বসে আছেন। পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে শোকের পরিবেশ।
২ ঘণ্টা আগে
গুলশান থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পথে যাত্রা শুরু করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহবাহী জাতীয় পতাকায় মোড়ানো গাড়িটি। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে গুলশানের ৭৯ সড়কে ১৯৬ নম্বর বাড়িতে তারেক রহমানের বাসভবন থেকে বের হয় গাড়িবহর।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজা, দাফন ঘিরে জাতীয় সংসদ ভবন এবং জিয়া উদ্যান এলাকা ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থার কয়েক হাজার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। অনুমোদিত ছাড়া সংসদ ভবনের উত্তর প্লাজায় কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
আজ বুধবার সকালে সংসদ ভবন এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। আজ সকাল ৯টার একটু আগে বাংলাদেশের পতাকায় মোড়ানো একটি গাড়িতে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের উদ্দেশে বের করা হয় তাঁর মরদেহ। এরপর নেওয়া হয় গুলশানের তারেক রহমানের বাসায়। সেখান থেকে তাঁর মরদেহ জানাজা ও দাফনের জন্য আনা হয় জাতীয় সংসদ ভবনে।

খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টাগণ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন কার্যক্রম পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করা হবে। এ সময় ১০ হাজারের বেশি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
জানা যায়, খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে পাকিস্তানের স্পিকার ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত ও দেশটির উচ্চশিক্ষামন্ত্রী, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল সরকারের একজন প্রতিনিধিসহ বেশ কয়েকটি দেশের মন্ত্রী ও বিশেষ দূত ঢাকায় আসছেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজা, দাফন ঘিরে জাতীয় সংসদ ভবন এবং জিয়া উদ্যান এলাকা ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থার কয়েক হাজার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। অনুমোদিত ছাড়া সংসদ ভবনের উত্তর প্লাজায় কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
আজ বুধবার সকালে সংসদ ভবন এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। আজ সকাল ৯টার একটু আগে বাংলাদেশের পতাকায় মোড়ানো একটি গাড়িতে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের উদ্দেশে বের করা হয় তাঁর মরদেহ। এরপর নেওয়া হয় গুলশানের তারেক রহমানের বাসায়। সেখান থেকে তাঁর মরদেহ জানাজা ও দাফনের জন্য আনা হয় জাতীয় সংসদ ভবনে।

খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টাগণ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন কার্যক্রম পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করা হবে। এ সময় ১০ হাজারের বেশি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
জানা যায়, খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে পাকিস্তানের স্পিকার ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত ও দেশটির উচ্চশিক্ষামন্ত্রী, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল সরকারের একজন প্রতিনিধিসহ বেশ কয়েকটি দেশের মন্ত্রী ও বিশেষ দূত ঢাকায় আসছেন।

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে—এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকেও...
২২ মার্চ ২০২৫
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে গভীর সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, তার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। সম্প্রতি তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ডায়েরি থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই সময়ের ক্ষমতা দখল, ষড়যন্ত্র...
২ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে সংসদ ভবন এলাকায় আসতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সেখানে কেউ কাঁদছেন, কেউ মন খারাপ করে বসে আছেন। পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে শোকের পরিবেশ।
২ ঘণ্টা আগে
গুলশান থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পথে যাত্রা শুরু করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহবাহী জাতীয় পতাকায় মোড়ানো গাড়িটি। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে গুলশানের ৭৯ সড়কে ১৯৬ নম্বর বাড়িতে তারেক রহমানের বাসভবন থেকে বের হয় গাড়িবহর।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে গভীর সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, তার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। সম্প্রতি তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ডায়েরি থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই সময়ের ক্ষমতা দখল, ষড়যন্ত্র এবং একজন সাধারণ গৃহবধূ থেকে খালেদা জিয়ার প্রখর রাজনৈতিক নেত্রী হয়ে ওঠার রোমাঞ্চকর ইতিহাস।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন বিচারপতি আবদুস সাত্তার। তবে পরবর্তী পূর্ণমেয়াদি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে বিএনপির ভেতরে চরম দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। তৎকালীন নীতিনির্ধারকদের মতে, একদল খালেদা জিয়াকে সরাসরি রাজনীতিতে আনতে চাইলেও তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল এরশাদের প্ররোচনায় একটি পক্ষ বিচারপতি সাত্তারের মনোনয়ন নিশ্চিত করে। এরশাদের আশঙ্কা ছিল, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের ওপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ নিরঙ্কুশ থাকবে না।
এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. এম এ মতিন এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অভিযোগ রয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে একটি ‘প্রেশার গ্রুপ’ তৈরি করা হয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজও সাত্তারের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছিলেন। এমনকি লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার শামসুদ্দোহাও এরশাদের প্ররোচনায় প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে জানা যায়।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ বিচারপতি সাত্তারকে হটিয়ে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখল করার পরপরই শুরু হয় ধরপাকড়। তৎকালীন প্রভাবশালী নেতা তানভীর আহমদ সিদ্দিকীসহ অনেককে জেলে পাঠানো হয়। এরশাদের শাসনামলে বিএনপিকে দুর্বল করার জন্য বারবার ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করা হয়। এর ফলে ১৯৮৩ সালে শাহ আজিজ, ডা. এম এ মতিন এবং শামসুল হুদা চৌধুরীদের নিয়ে ‘বিএনপি (হুদা-মতিন)’ গ্রুপ গঠিত হয়, যারা মূলত এরশাদকে সমর্থন জোগাত।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর জেনারেল এরশাদ দাবি করতে থাকেন যে প্রশাসনে সামরিক বাহিনীর সরাসরি অংশীদারত্ব থাকতে হবে। এই অগণতান্ত্রিক দাবি বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ওয়াশিংটনে কর্মরত তৎকালীন কর্মকর্তা এম সাইদুজ্জামান ফ্যাক্স বার্তার মাধ্যমে সরকারকে জানিয়েছিলেন, সামরিক হস্তক্ষেপের কারণে বৈদেশিক সাহায্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি সাত্তারকে সতর্ক করলেও ততক্ষণে পর্দার আড়ালে ক্ষমতা দখলের চিত্রনাট্য চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল।
বিএনপির এই চরম দুর্দিনে দল যখন অস্তিত্ব সংকটে, তখনই দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনুরোধে খালেদা জিয়া রাজনীতিতে আসেন। ১৯৮৭ সালে তাঁকে আটকের পরও আন্দোলন দমানো যায়নি। ধীরে ধীরে তিনি একজন দক্ষ বক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। অথচ ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অত্যন্ত লাজুক ছিলেন এবং এমনকি জিয়াউর রহমানের জীবদ্দশায় কোনো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যেতেও সংকোচ বোধ করতেন। তাঁর এই আমূল পরিবর্তন এবং প্রখর স্মৃতিশক্তি বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের মতো আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বদেরও মুগ্ধ করেছিল।
১৯৮৬ সালের নির্বাচনে এরশাদ বিএনপিকে ১২৬টি আসন দেওয়ার টোপ দিয়েছিলেন। এই প্রস্তাব নিয়ে দলের অভ্যন্তরে বিতর্ক থাকলেও খালেদা জিয়া তাঁর সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, স্বৈরশাসকের অধীনে কোনো সিট ভাগাভাগি বা নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ ঘোষণা করলেও পরদিনই নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনকে দুর্বল করে দেন বলে বিএনপি নেতাদের অভিমত।
দীর্ঘ ৯ বছরের লড়াইয়ের পর ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর সম্মিলিত আন্দোলনের মুখে এরশাদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের পদত্যাগ এবং প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে পুনরায় গণতন্ত্রের সূর্য উদিত হয়।
তথ্যসূত্র: তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ‘গণতন্ত্রের সংগ্রাম’ বইয়ের ঐতিহাসিক নথি

১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে গভীর সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, তার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। সম্প্রতি তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ডায়েরি থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই সময়ের ক্ষমতা দখল, ষড়যন্ত্র এবং একজন সাধারণ গৃহবধূ থেকে খালেদা জিয়ার প্রখর রাজনৈতিক নেত্রী হয়ে ওঠার রোমাঞ্চকর ইতিহাস।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন বিচারপতি আবদুস সাত্তার। তবে পরবর্তী পূর্ণমেয়াদি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে বিএনপির ভেতরে চরম দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। তৎকালীন নীতিনির্ধারকদের মতে, একদল খালেদা জিয়াকে সরাসরি রাজনীতিতে আনতে চাইলেও তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল এরশাদের প্ররোচনায় একটি পক্ষ বিচারপতি সাত্তারের মনোনয়ন নিশ্চিত করে। এরশাদের আশঙ্কা ছিল, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের ওপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ নিরঙ্কুশ থাকবে না।
এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. এম এ মতিন এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অভিযোগ রয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে একটি ‘প্রেশার গ্রুপ’ তৈরি করা হয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজও সাত্তারের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছিলেন। এমনকি লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার শামসুদ্দোহাও এরশাদের প্ররোচনায় প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে জানা যায়।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ বিচারপতি সাত্তারকে হটিয়ে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখল করার পরপরই শুরু হয় ধরপাকড়। তৎকালীন প্রভাবশালী নেতা তানভীর আহমদ সিদ্দিকীসহ অনেককে জেলে পাঠানো হয়। এরশাদের শাসনামলে বিএনপিকে দুর্বল করার জন্য বারবার ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করা হয়। এর ফলে ১৯৮৩ সালে শাহ আজিজ, ডা. এম এ মতিন এবং শামসুল হুদা চৌধুরীদের নিয়ে ‘বিএনপি (হুদা-মতিন)’ গ্রুপ গঠিত হয়, যারা মূলত এরশাদকে সমর্থন জোগাত।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর জেনারেল এরশাদ দাবি করতে থাকেন যে প্রশাসনে সামরিক বাহিনীর সরাসরি অংশীদারত্ব থাকতে হবে। এই অগণতান্ত্রিক দাবি বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ওয়াশিংটনে কর্মরত তৎকালীন কর্মকর্তা এম সাইদুজ্জামান ফ্যাক্স বার্তার মাধ্যমে সরকারকে জানিয়েছিলেন, সামরিক হস্তক্ষেপের কারণে বৈদেশিক সাহায্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি সাত্তারকে সতর্ক করলেও ততক্ষণে পর্দার আড়ালে ক্ষমতা দখলের চিত্রনাট্য চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল।
বিএনপির এই চরম দুর্দিনে দল যখন অস্তিত্ব সংকটে, তখনই দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনুরোধে খালেদা জিয়া রাজনীতিতে আসেন। ১৯৮৭ সালে তাঁকে আটকের পরও আন্দোলন দমানো যায়নি। ধীরে ধীরে তিনি একজন দক্ষ বক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। অথচ ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অত্যন্ত লাজুক ছিলেন এবং এমনকি জিয়াউর রহমানের জীবদ্দশায় কোনো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যেতেও সংকোচ বোধ করতেন। তাঁর এই আমূল পরিবর্তন এবং প্রখর স্মৃতিশক্তি বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের মতো আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বদেরও মুগ্ধ করেছিল।
১৯৮৬ সালের নির্বাচনে এরশাদ বিএনপিকে ১২৬টি আসন দেওয়ার টোপ দিয়েছিলেন। এই প্রস্তাব নিয়ে দলের অভ্যন্তরে বিতর্ক থাকলেও খালেদা জিয়া তাঁর সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, স্বৈরশাসকের অধীনে কোনো সিট ভাগাভাগি বা নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ ঘোষণা করলেও পরদিনই নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনকে দুর্বল করে দেন বলে বিএনপি নেতাদের অভিমত।
দীর্ঘ ৯ বছরের লড়াইয়ের পর ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর সম্মিলিত আন্দোলনের মুখে এরশাদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের পদত্যাগ এবং প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে পুনরায় গণতন্ত্রের সূর্য উদিত হয়।
তথ্যসূত্র: তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ‘গণতন্ত্রের সংগ্রাম’ বইয়ের ঐতিহাসিক নথি

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে—এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকেও...
২২ মার্চ ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন কার্যক্রম পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করা হবে। এ সময় ১০ হাজারের বেশি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
২ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে সংসদ ভবন এলাকায় আসতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সেখানে কেউ কাঁদছেন, কেউ মন খারাপ করে বসে আছেন। পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে শোকের পরিবেশ।
২ ঘণ্টা আগে
গুলশান থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পথে যাত্রা শুরু করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহবাহী জাতীয় পতাকায় মোড়ানো গাড়িটি। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে গুলশানের ৭৯ সড়কে ১৯৬ নম্বর বাড়িতে তারেক রহমানের বাসভবন থেকে বের হয় গাড়িবহর।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মরদেহ জানাজার জন্য মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার কিছু পরে নেওয়া হয়েছে। এর পর বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে বলে জানা গেছে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে খালেদা জিয়ার জানাজাকে কেন্দ্র করে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সকল দপ্তর। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের চারপাশের সড়কগুলোতেও যেন জনসাধারণ অবস্থান করতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে সংসদ ভবন এলাকায় আসতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সেখানে কেউ কাঁদছেন, কেউ মন খারাপ করে বসে আছেন। পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে শোকের পরিবেশ।
জানাজার পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশে খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত ও বিএনপির মনোনীত রাজনীতিবিদেরা উপস্থিত থাকবেন।
দাফনের কাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্নের জন্য সেখানে নির্ধারিত ব্যক্তি ব্যতীত আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। দাফন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হবে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মরদেহ জানাজার জন্য মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার কিছু পরে নেওয়া হয়েছে। এর পর বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে বলে জানা গেছে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে খালেদা জিয়ার জানাজাকে কেন্দ্র করে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সকল দপ্তর। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের চারপাশের সড়কগুলোতেও যেন জনসাধারণ অবস্থান করতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে সংসদ ভবন এলাকায় আসতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সেখানে কেউ কাঁদছেন, কেউ মন খারাপ করে বসে আছেন। পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে শোকের পরিবেশ।
জানাজার পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশে খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত ও বিএনপির মনোনীত রাজনীতিবিদেরা উপস্থিত থাকবেন।
দাফনের কাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্নের জন্য সেখানে নির্ধারিত ব্যক্তি ব্যতীত আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। দাফন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হবে।

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে—এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকেও...
২২ মার্চ ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন কার্যক্রম পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করা হবে। এ সময় ১০ হাজারের বেশি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
২ ঘণ্টা আগে
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে গভীর সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, তার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। সম্প্রতি তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ডায়েরি থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই সময়ের ক্ষমতা দখল, ষড়যন্ত্র...
২ ঘণ্টা আগে
গুলশান থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পথে যাত্রা শুরু করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহবাহী জাতীয় পতাকায় মোড়ানো গাড়িটি। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে গুলশানের ৭৯ সড়কে ১৯৬ নম্বর বাড়িতে তারেক রহমানের বাসভবন থেকে বের হয় গাড়িবহর।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

গুলশান থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পথে যাত্রা শুরু করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহবাহী জাতীয় পতাকায় মোড়ানো গাড়িটি। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে গুলশানের ৭৯ সড়কে ১৯৬ নম্বর বাড়িতে তারেক রহমানের বাসভবন থেকে বের হয় গাড়িবহর।
এর আগে, আজ সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে জাতীয় পতাকায় মোড়ানো সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মরদেহবাহী গাড়ি তারেক রহমানের বাসভবনে প্রবেশ করে। এর পাশেই খালেদা জিয়ার দীর্ঘদিনের বাসভবন ফিরোজা।
এ সময় পুরো এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে দিয়ে মরদেহ বাসার ভেতরে নেওয়া হলে স্বজনদের মধ্যে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। আত্মীয়স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় খালেদা জিয়ার মরদেহের পাশে বসে তাঁর সন্তান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোরআন তেলাওয়াত করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমদ এবং রেজা কিবরিয়াসহ দলের শীর্ষ নেতারা। বাসার বাইরে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ ভিড় করেন। প্রিয় নেত্রীকে শেষবারের মতো এক নজর দেখার চেষ্টা করেন অনেকে। এলাকা জুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া।

গুলশান থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পথে যাত্রা শুরু করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহবাহী জাতীয় পতাকায় মোড়ানো গাড়িটি। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে গুলশানের ৭৯ সড়কে ১৯৬ নম্বর বাড়িতে তারেক রহমানের বাসভবন থেকে বের হয় গাড়িবহর।
এর আগে, আজ সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে জাতীয় পতাকায় মোড়ানো সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মরদেহবাহী গাড়ি তারেক রহমানের বাসভবনে প্রবেশ করে। এর পাশেই খালেদা জিয়ার দীর্ঘদিনের বাসভবন ফিরোজা।
এ সময় পুরো এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে দিয়ে মরদেহ বাসার ভেতরে নেওয়া হলে স্বজনদের মধ্যে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। আত্মীয়স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় খালেদা জিয়ার মরদেহের পাশে বসে তাঁর সন্তান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোরআন তেলাওয়াত করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমদ এবং রেজা কিবরিয়াসহ দলের শীর্ষ নেতারা। বাসার বাইরে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ ভিড় করেন। প্রিয় নেত্রীকে শেষবারের মতো এক নজর দেখার চেষ্টা করেন অনেকে। এলাকা জুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া।

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে—এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকেও...
২২ মার্চ ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন কার্যক্রম পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করা হবে। এ সময় ১০ হাজারের বেশি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
২ ঘণ্টা আগে
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে গভীর সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, তার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। সম্প্রতি তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ডায়েরি থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই সময়ের ক্ষমতা দখল, ষড়যন্ত্র...
২ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে সংসদ ভবন এলাকায় আসতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সেখানে কেউ কাঁদছেন, কেউ মন খারাপ করে বসে আছেন। পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে শোকের পরিবেশ।
২ ঘণ্টা আগে