আমিনুল ইসলাম নাবিল

‘জাতে আমি ঢাকাইয়া কইতে আমার সিনা টান’—শিল্পী হায়দার হোসেনের বিখ্যাত এই গান পুরোনো হওয়ার নয়। গানটি ঢাকাইয়াদের অনেক মহব্বতের। বাহান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলির এই শহরের পরতে পরতে ইতিহাস-ঐতিহ্যের ছোঁয়া। ইতিহাস-ঐতিহ্য বইপুস্তক কিংবা দাদা-দাদি, নানা-নানির কাছে গল্প শুনে জানা যায় কিন্তু যে জিনিসটা জানা যায় না বা পরিমাপ করা যায় না, সেটি হচ্ছে ‘ভালোবাসা’। এই পুরোনো শহরেই জড়িয়ে আছে আমাদের প্রেম-ভালোবাসার অনেক গল্প।
সেসব কথা থাক। অনেক পাওয়ার মাঝেও আমাদের ঢাকাইয়াদের একটা জিনিসের ভীষণ অভাব। সেটি হচ্ছে ‘অক্সিজেন’। অক্সিজেনের খোঁজে আমরা সব সময়ই চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকি। সুযোগ পেলেই দৌড়। ব্যস্ত জীবনের ফাঁকেই এবার আমরা ৬ ঢাকাইয়া মিলে ট্যুর দিই কুয়াকাটায়। সেটি নিয়েই মূলত এই লেখা...
পাঁচ ব্যবসায়ীর মধ্যে আমিই ছিলাম একমাত্র সংবাদকর্মী। কুয়াকাটার উদ্দেশে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয় চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি। আগেই বলে রাখা ভালো, আমরা সফরের সূচি ঠিক করি একটু ভিন্নভাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সরাসরি কুয়াকাটায় না গিয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। এর কারণ ছিল দুটো। এক. পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ছোট ভাই নাইমের বাসায় দাওয়াত আর দুই. ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা বিলাসী লঞ্চে ভ্রমণ।
সারা দিন অফিস শেষে রাত ৯টার সুন্দরবন-১৬ লঞ্চে সদরঘাট থেকে বরিশালের উদ্দেশে আমরা রওনা হই। একদিকে অনেক দিন পর ট্যুর, আরেকদিকে এমন জাঁকালো আরামদায়ক লঞ্চ রীতিমতো স্বস্তি ও প্রশান্তি দিয়েছে। দুই কেবিনে সারা রাত এপাশ-ওপাশ করলেও ঘুমানো যায়নি। কেননা এমন সুন্দর আবহাওয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে গান, আড্ডাকেই বেশি আনন্দদায়ক মনে হয়েছে। গান, আড্ডাতেই আমাদের রাতটা কেটেছে। মাঝে রাতের খাবার সেরেছি লঞ্চের ডাইনিংয়ে। লঞ্চের ভেতর এমন বিলাসী ডাইনিং তার ওপর মজার মজার খাবার সত্যিই অবাক করেছে। এভাবে হাসি-আড্ডা-গানের পর আসে কুয়াশা ঢাকা ভোর। ততক্ষণে আমরা পৌঁছে গেছি বরিশাল লঞ্চ ঘাটে। ফজর নামাজ পড়ে এবার আমাদের গন্তব্য নাইমের বাসা পটুয়াখালী দশমিনা উপজেলায়।
লঞ্চ থেকে নেমে আমরা চাপাচাপি করে উঠে পড়লাম অটোতে। চলে গেলাম বাস কাউন্টারে। আরামদায়ক লঞ্চের পর বাসের ভ্রমণটা কেমন যেন শরীরে সইল না। ক্লান্ত শরীরে যেখানে চোখ বন্ধ করলেই ঘুমিয়ে পড়ার কথা সেখানে অপলক চেয়ে আছি জানালার বাইরে। বাইরেও প্রকৃতি উপভোগের সুযোগ নেই। কেননা জানালার বাইরে শুধু কুয়াশা আর কুয়াশা। নাইমের বাসায় গিয়ে অনেক মজা করতে হবে এই চিন্তায় অনেকটা জোর করেই ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। ঘুমিয়েই পড়লাম কীভাবে যেন। চোখ খুলতেই দেখি বাস ফেরি পার হচ্ছে। কত স্মৃতি যে তখন মনের জানালায় উঁকি দিল। এর আগে প্রথমবার ফেরিতে উঠেছিলাম ২০১৮ সালে। ঢাকা থেকে খুলনায় গিয়েছিলাম সেবার বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। স্মৃতিচারণ করতে করতে পৌঁছে গেলাম পটুয়াখালী সদরে। এবার ফের চেপে বসলাম অটোতে। রাস্তা যেন ফুরাবার না। শরীরটাকে একদম আধমরা করে দুপুর ১১টায় আমাদের অটো থামল নাইমের বাড়ির উঠানে। নাইমদের বাড়িটা অনেক আকর্ষণীয়। মাটির ডুপ্লেক্স বাড়ি। দেখেই মনে ধরল। বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই আপ্যায়ন শুরু। সতেজ খাবার খেয়ে শরীরটা মুহূর্তেই চাঙা হয়ে গেল। বেরিয়ে পড়লাম ব্যাট-বল হাতে। বহুদিন পর খেলায় মেতে উঠলাম। একসময় এ রকম কত ক্রিকেট খেলেছি বংশাল টেকপট্টির মাঠে। সে যাই হোক তিন ম্যাচের সিরিজে আমার দলই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেসব কথা থাক, এবার পালা খাবারের। ওমা একি আয়োজন! টেবিল জুড়ে খাবার আর খাবার। হাঁসের মাংসটা যা মজাদার ছিল, উফ!
ঢাকায় থাকলে নির্ঘাত এমন উদরপূর্তির পর নাক ডেকে ঘুম দিতাম। কিন্তু জায়গাটিতো আর ইট-পাথরের নয়, জায়গাটা মাটি আর সবুজের, আহা! ছোট ভাই নাইম ও তাঁর চাচাতো ভাই সাকিবের নির্দেশনায় আমরা ছুটে চললাম তেঁতুলিয়া নদীর দিকে। অনেকটা পথ হাঁটলেও ক্লান্তি নেই। পাশে বন্ধু আনাস ও সাদের নানান মজার মজার কথা। মনে হলো যেন ফিরে গেছি সেই শৈশবে। তেঁতুলিয়া নদী অনেক সুন্দর, তার চেয়েও সুন্দর ছিল আবহাওয়া। একদম পড়ন্ত বিকেল। একটা ট্রলার ভাড়া করে বেরিয়ে পড়লাম। সাঁতার না জানায় কিছুটা ভয় হচ্ছিল। কিন্তু ভয়কে জয় করেইতো জীবনের পথ চলতে হয়। সাহসটা আরও বেড়ে গেছে যখন ট্রলার চালক নিজেই বললেন, ‘এখানটায় চড়, পানি হাঁটুর সমান।’ লোভ সামলাতে না পেরে নদীর চড়ে নেমে হাঁটলাম, দৌড়ালাম, ছবি তুললাম। আহ! কি যে শান্তি। ট্রলার থেকে নামার সময় বন্ধু সাদ কিছুটা ব্যথা পেলেও সেগুলোকে পাত্তা দেওয়ার ছেলে সে নয়। একদম ‘ঢাকাইয়া আগুন’। বাখরখানির চুল্লিতে বেড়ে ওঠা!
নদী পর্ব শেষে এখন গ্রাম ঘুরে দেখার পালা। একদম গ্রাম্য সাজেই বেরিয়ে পড়লাম, লুঙ্গি ও গায়ে চাদর জড়িয়ে। বন্ধুদের থেকে উপাধিও পেয়ে গেলাম ‘ইউপি চেয়ারম্যান’। আমি মানুষটা এমনই। ফাইভ স্টার হোটেলের চেয়ে টং দোকান আমায় বেশি টানে। গ্রাম্য বাজারের গরম-গরম জিলাপি, কাচা পাতির রং চা খেলাম। এটার যে কি অনুভূতি সেটা বোঝানোর মতো নয়। টং দোকানে মান্নার সিনেমা চলছে, একদম ভিড় জমিয়ে মানুষ তা উপভোগ করছে। একদম গ্রামের সাদামাটা জীবন। বাঁশের সাঁকো পার করে ফিরলাম নাইমের বাসায়। রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে বিছানায় একটু গড়াগড়ি খেতেই বারবিকিউর জন্য ডাকাডাকি। খোলা আকাশের নিচে, হাড়কাঁপানো শীতে পরিবেশে বারবিকিউ এবারই প্রথম। বারবিকিউ পর্ব শেষে অবশেষে ঘুমের পালা। রাত পেরোলেই আমাদের যাত্রা কুয়াকাটা।
পরদিন সকাল সকাল রওনা দেওয়ার প্ল্যান থাকলেও খেজুরের রস ও ডাব খাওয়ার লোভ সামলানো যায়নি। খেতে খেতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল, রওনা হলাম কুয়াকাটার উদ্দেশে। অটোযোগে প্রথমে দশমিনা বাজার, সেখান থেকে মোটরসাইকেলে আমাদের এবারের গন্তব্য পটুয়াখালী সদর। মোটরসাইকেলে দীর্ঘপথ বেশ আরামদায়কই ছিল। কিন্তু মাঝে একটা ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল। ক্লান্ত শরীরে মোটরসাইকেলেই ঘুমিয়ে পড়েন আমাদের একজন। ভাগ্য সহায় না হলে মোটরসাইকেল কাত হয়ে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। মোটরসাইকেল থেকে নেমে পানি পার হতে উঠে পড়লাম ট্রলারে। ট্রলারে উঠে মাথায় হাত! ছোট্ট একটা ট্রলারে ধারণক্ষমতার তিনগুণ মানুষ। আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানলাম, পানি তেমন গভীর নয়। তবুও মনের ভেতর উঁকি দিল সম্প্রতি ঘটে যাওয়া পঞ্চগড়ের বোদার সেই ট্রলার দুর্ঘটনাটি। এমনই অল্প গভীর পানিতে ট্রলার ডুবে প্রাণ গিয়েছিল ৭১ জন মানুষের। এ কথা ভাবতে ভাবতে আরেক ট্রলারের ধাক্কায় আমাদের ট্রলার উল্টে যাওয়ার উপক্রম হলো। কী যে ভয় পেয়েছিলাম। এ যাত্রায়ও দয়ালের অশেষ কৃপায় রক্ষা।
ট্রলার থেকে নেমে উঠে পড়লাম অটোতে। পটুয়াখালী শহরটা দেখে বেশ হিংসা হলো। নিঃসন্দেহে আমাদের যান্ত্রিক এই ঢাকার চেয়ে সুন্দর। অটো থেকে নেমে বাসে, আমাদের গন্তব্য কুয়াকাটা। দীর্ঘ যাত্রা শেষে অবশেষে আমরা পৌঁছে যাই সাগরকন্যা কুয়াকাটায়। কুয়াকাটায় এসে আপনি কক্সবাজারের ফিল খুঁজলে আশাহত হবেন। কুয়াকাটায় কক্সবাজারের মতো ওতো ‘গ্ল্যামার’ নেই। এখানকার হোটেলগুলোও তেমন লাক্সারি না। একটু হাঁটাহাঁটি করে আমরা উঠে পড়লাম মাঝারি মানের একটি হোটেলে। কিছুটা ফ্রেশ হয়েই কনকনে শীতে বেরিয়ে পড়লাম। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। কেমনই যেন এক অনুভূতি। আজ আমাদের রাতের খাবার—সামুদ্রিক মাছ। একে একে কোরাল, চিংড়ি ও বাঁশপাতা মাছও বাদ গেল না খাবারের তালিকা থেকে। এই ঠান্ডায় একটু পাগলামি না করলে কি চলে? খাবারদাবারের পর খেয়ে নিলাম আইসক্রিম।
এবার এল আমাদের ঘুমের পালা। দুর্দান্ত একটা ঘুম দিয়ে উঠে মোটরসাইকেল ভাড়া করে বেরিয়ে পড়লাম কুয়াকাটার দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে দেখতে। এরপর একে একে আমরা ঘুরলাম লাল কাঁকড়ার চর, ঝাউবন, কাউয়ার চর, লেবু চরসহ নানা জায়গা। সমুদ্রের পাড় ঘেঁষে এমন বাইক রাইডের আনন্দ ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। এবার খাবারের পালা। পুরো ট্যুরেই আমরা খেয়েছি ভরপুর। এবারও ব্যতিক্রম হলো না। গরম ভাত-ডালের সঙ্গে টুনা মাছ, বাঁশপাতা মাছের ভর্তা ও চিংড়ি, আহা শান্তি! আর সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে খাওয়ার মজাই আলাদা।
সবশেষে এবার সাগরকন্যাকে বিদায় জানানোর পালা। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত—পদ্মা সেতু দেখব তাই যাত্রা হবে বাসে, লঞ্চে নয়। টিকিট কেটে উঠে পড়লাম বাসে। সিট নিলাম ‘ই’ ও ‘এফ’ লাইনে। শুরু হলো ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা। চলছে আমাদের বাস। হঠাৎ বিপত্তি এক জায়গায় আটকে রইল পাক্কা ২০ মিনিট। এই সুযোগে বাসের সুপারভাইজারের সঙ্গে আড্ডা জুড়ে দিলাম। জানতে পারলাম সামনে আগুন লেগেছে তাই এই দশা। কিছুক্ষণ পরে ফের চলতে শুরু করল বাস। বরিশাল পার হওয়ার পর দেওয়া হলো যাত্রাবিরতি। আমাদের চোখও বলতে হবে, একদম খাদক চোখ। যাত্রাবিরতিতে খাবারের টেবিলে বসে চোখ গিয়ে পড়ল ফ্রিজে থাকা পায়েসের দিকে। একটা না একেকজন দুটা করে পায়েস খেলাম।
বাস যখন পদ্মা সেতু পার হচ্ছে জানালা দিয়ে কিছুটা দেখার চেষ্টা করলাম। তেমন স্পষ্ট করে দেখা না গেলেও মনের ভেতরে বেশ ভালো লাগল। অবাক দৃঢ়তায় দাঁড়িয়ে আমাদের পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু পার হওয়ার পরে এখন শুধু ঢাকায় ফেরার অপেক্ষা। কুয়াকাটা থেকে কেনা আচার-চকলেট পরিবারের সদস্যদের বণ্টনের চিন্তা। আহ! কত দিন পর বাসায় ফিরছি। দু’চোখ জুড়ে শান্তির ঘুমটা আসতেই এক চরম ঝাঁকুনিতে কেঁপে উঠলাম। শুধু চারদিকে চিৎকার-আর্তনাদ। বুঝতে আর বাকি নেই আমাদের বাস অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। ‘ই’ সিট থেকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে যেতে দেখলাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে রক্ত। ফায়ার সার্ভিস-পুলিশ সদস্যরাও দ্রুত এসে হাজির দুর্ঘটনাকবলিত বাস উদ্ধারে। তখনো চালক ও কয়েকজন যাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
চোখেমুখে আতঙ্ক নিয়েই পোস্তগোলা থেকে দুটি সিএনজি অটোরিকশায় আমরা ছয়জন চলে এলাম বংশাল পুকুরপাড়। সবাই সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত। তবে বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়ায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলাম। ভাগ্য সহায় না হলে সেদিন লাশ হয়েও ফিরতে পারতাম। এই কুয়াকাটা ট্যুর হতে পারত জীবনের শেষ ট্যুর। ওই যে যাত্রাবিরতিতে খাওয়া সেই পায়েসটাই হতে পারত জীবনের শেষ খাওয়া। কত স্বপ্ন নিমেষেই দুমড়ে-মুচড়ে যেতে পারত। বাসায় এসে দুর্ঘটনার কথা বলতেই আমার স্ত্রীর সে কি কান্না। এ সময়ে এমন ভালোবাসা পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। আপাতত বেঁচে আছি এইতো জরুরি খবর। জীবনে ঢাকার বাইরে অনেক ঘুরেছি, ভবিষ্যতেও ঘুরব। তবে এই জার্নিটা আমার কাছে ‘ডেড জার্নি’ হয়ে থাকবে। ভুলব না তোমায় কুয়াকাটা...
আমাদের শরীরের সামান্য আঘাত ধীরে ধীরে সেরে উঠেছে। তবে মনের ভেতরের ভয়টা হয়তো তাড়িয়ে বেড়াবে অনেকটা দিন। এই দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বাসের চালক। শুনেছি লোকটা বেঁচে আছেন, তবে দুই পা ভেঙেছে ও পাঁজরের হাড়ে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। তিনি দ্রুত সেরে উঠুক—এই কামনাই করি। আর হ্যাঁ, শীতের এই সময়টায় ঘন কুয়াশায় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এই সময়ে সাবধান থাকাটা বেশ জরুরি।
আরও পড়ুন:

‘জাতে আমি ঢাকাইয়া কইতে আমার সিনা টান’—শিল্পী হায়দার হোসেনের বিখ্যাত এই গান পুরোনো হওয়ার নয়। গানটি ঢাকাইয়াদের অনেক মহব্বতের। বাহান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলির এই শহরের পরতে পরতে ইতিহাস-ঐতিহ্যের ছোঁয়া। ইতিহাস-ঐতিহ্য বইপুস্তক কিংবা দাদা-দাদি, নানা-নানির কাছে গল্প শুনে জানা যায় কিন্তু যে জিনিসটা জানা যায় না বা পরিমাপ করা যায় না, সেটি হচ্ছে ‘ভালোবাসা’। এই পুরোনো শহরেই জড়িয়ে আছে আমাদের প্রেম-ভালোবাসার অনেক গল্প।
সেসব কথা থাক। অনেক পাওয়ার মাঝেও আমাদের ঢাকাইয়াদের একটা জিনিসের ভীষণ অভাব। সেটি হচ্ছে ‘অক্সিজেন’। অক্সিজেনের খোঁজে আমরা সব সময়ই চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকি। সুযোগ পেলেই দৌড়। ব্যস্ত জীবনের ফাঁকেই এবার আমরা ৬ ঢাকাইয়া মিলে ট্যুর দিই কুয়াকাটায়। সেটি নিয়েই মূলত এই লেখা...
পাঁচ ব্যবসায়ীর মধ্যে আমিই ছিলাম একমাত্র সংবাদকর্মী। কুয়াকাটার উদ্দেশে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয় চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি। আগেই বলে রাখা ভালো, আমরা সফরের সূচি ঠিক করি একটু ভিন্নভাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সরাসরি কুয়াকাটায় না গিয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। এর কারণ ছিল দুটো। এক. পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ছোট ভাই নাইমের বাসায় দাওয়াত আর দুই. ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা বিলাসী লঞ্চে ভ্রমণ।
সারা দিন অফিস শেষে রাত ৯টার সুন্দরবন-১৬ লঞ্চে সদরঘাট থেকে বরিশালের উদ্দেশে আমরা রওনা হই। একদিকে অনেক দিন পর ট্যুর, আরেকদিকে এমন জাঁকালো আরামদায়ক লঞ্চ রীতিমতো স্বস্তি ও প্রশান্তি দিয়েছে। দুই কেবিনে সারা রাত এপাশ-ওপাশ করলেও ঘুমানো যায়নি। কেননা এমন সুন্দর আবহাওয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে গান, আড্ডাকেই বেশি আনন্দদায়ক মনে হয়েছে। গান, আড্ডাতেই আমাদের রাতটা কেটেছে। মাঝে রাতের খাবার সেরেছি লঞ্চের ডাইনিংয়ে। লঞ্চের ভেতর এমন বিলাসী ডাইনিং তার ওপর মজার মজার খাবার সত্যিই অবাক করেছে। এভাবে হাসি-আড্ডা-গানের পর আসে কুয়াশা ঢাকা ভোর। ততক্ষণে আমরা পৌঁছে গেছি বরিশাল লঞ্চ ঘাটে। ফজর নামাজ পড়ে এবার আমাদের গন্তব্য নাইমের বাসা পটুয়াখালী দশমিনা উপজেলায়।
লঞ্চ থেকে নেমে আমরা চাপাচাপি করে উঠে পড়লাম অটোতে। চলে গেলাম বাস কাউন্টারে। আরামদায়ক লঞ্চের পর বাসের ভ্রমণটা কেমন যেন শরীরে সইল না। ক্লান্ত শরীরে যেখানে চোখ বন্ধ করলেই ঘুমিয়ে পড়ার কথা সেখানে অপলক চেয়ে আছি জানালার বাইরে। বাইরেও প্রকৃতি উপভোগের সুযোগ নেই। কেননা জানালার বাইরে শুধু কুয়াশা আর কুয়াশা। নাইমের বাসায় গিয়ে অনেক মজা করতে হবে এই চিন্তায় অনেকটা জোর করেই ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। ঘুমিয়েই পড়লাম কীভাবে যেন। চোখ খুলতেই দেখি বাস ফেরি পার হচ্ছে। কত স্মৃতি যে তখন মনের জানালায় উঁকি দিল। এর আগে প্রথমবার ফেরিতে উঠেছিলাম ২০১৮ সালে। ঢাকা থেকে খুলনায় গিয়েছিলাম সেবার বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। স্মৃতিচারণ করতে করতে পৌঁছে গেলাম পটুয়াখালী সদরে। এবার ফের চেপে বসলাম অটোতে। রাস্তা যেন ফুরাবার না। শরীরটাকে একদম আধমরা করে দুপুর ১১টায় আমাদের অটো থামল নাইমের বাড়ির উঠানে। নাইমদের বাড়িটা অনেক আকর্ষণীয়। মাটির ডুপ্লেক্স বাড়ি। দেখেই মনে ধরল। বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই আপ্যায়ন শুরু। সতেজ খাবার খেয়ে শরীরটা মুহূর্তেই চাঙা হয়ে গেল। বেরিয়ে পড়লাম ব্যাট-বল হাতে। বহুদিন পর খেলায় মেতে উঠলাম। একসময় এ রকম কত ক্রিকেট খেলেছি বংশাল টেকপট্টির মাঠে। সে যাই হোক তিন ম্যাচের সিরিজে আমার দলই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেসব কথা থাক, এবার পালা খাবারের। ওমা একি আয়োজন! টেবিল জুড়ে খাবার আর খাবার। হাঁসের মাংসটা যা মজাদার ছিল, উফ!
ঢাকায় থাকলে নির্ঘাত এমন উদরপূর্তির পর নাক ডেকে ঘুম দিতাম। কিন্তু জায়গাটিতো আর ইট-পাথরের নয়, জায়গাটা মাটি আর সবুজের, আহা! ছোট ভাই নাইম ও তাঁর চাচাতো ভাই সাকিবের নির্দেশনায় আমরা ছুটে চললাম তেঁতুলিয়া নদীর দিকে। অনেকটা পথ হাঁটলেও ক্লান্তি নেই। পাশে বন্ধু আনাস ও সাদের নানান মজার মজার কথা। মনে হলো যেন ফিরে গেছি সেই শৈশবে। তেঁতুলিয়া নদী অনেক সুন্দর, তার চেয়েও সুন্দর ছিল আবহাওয়া। একদম পড়ন্ত বিকেল। একটা ট্রলার ভাড়া করে বেরিয়ে পড়লাম। সাঁতার না জানায় কিছুটা ভয় হচ্ছিল। কিন্তু ভয়কে জয় করেইতো জীবনের পথ চলতে হয়। সাহসটা আরও বেড়ে গেছে যখন ট্রলার চালক নিজেই বললেন, ‘এখানটায় চড়, পানি হাঁটুর সমান।’ লোভ সামলাতে না পেরে নদীর চড়ে নেমে হাঁটলাম, দৌড়ালাম, ছবি তুললাম। আহ! কি যে শান্তি। ট্রলার থেকে নামার সময় বন্ধু সাদ কিছুটা ব্যথা পেলেও সেগুলোকে পাত্তা দেওয়ার ছেলে সে নয়। একদম ‘ঢাকাইয়া আগুন’। বাখরখানির চুল্লিতে বেড়ে ওঠা!
নদী পর্ব শেষে এখন গ্রাম ঘুরে দেখার পালা। একদম গ্রাম্য সাজেই বেরিয়ে পড়লাম, লুঙ্গি ও গায়ে চাদর জড়িয়ে। বন্ধুদের থেকে উপাধিও পেয়ে গেলাম ‘ইউপি চেয়ারম্যান’। আমি মানুষটা এমনই। ফাইভ স্টার হোটেলের চেয়ে টং দোকান আমায় বেশি টানে। গ্রাম্য বাজারের গরম-গরম জিলাপি, কাচা পাতির রং চা খেলাম। এটার যে কি অনুভূতি সেটা বোঝানোর মতো নয়। টং দোকানে মান্নার সিনেমা চলছে, একদম ভিড় জমিয়ে মানুষ তা উপভোগ করছে। একদম গ্রামের সাদামাটা জীবন। বাঁশের সাঁকো পার করে ফিরলাম নাইমের বাসায়। রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে বিছানায় একটু গড়াগড়ি খেতেই বারবিকিউর জন্য ডাকাডাকি। খোলা আকাশের নিচে, হাড়কাঁপানো শীতে পরিবেশে বারবিকিউ এবারই প্রথম। বারবিকিউ পর্ব শেষে অবশেষে ঘুমের পালা। রাত পেরোলেই আমাদের যাত্রা কুয়াকাটা।
পরদিন সকাল সকাল রওনা দেওয়ার প্ল্যান থাকলেও খেজুরের রস ও ডাব খাওয়ার লোভ সামলানো যায়নি। খেতে খেতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল, রওনা হলাম কুয়াকাটার উদ্দেশে। অটোযোগে প্রথমে দশমিনা বাজার, সেখান থেকে মোটরসাইকেলে আমাদের এবারের গন্তব্য পটুয়াখালী সদর। মোটরসাইকেলে দীর্ঘপথ বেশ আরামদায়কই ছিল। কিন্তু মাঝে একটা ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল। ক্লান্ত শরীরে মোটরসাইকেলেই ঘুমিয়ে পড়েন আমাদের একজন। ভাগ্য সহায় না হলে মোটরসাইকেল কাত হয়ে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। মোটরসাইকেল থেকে নেমে পানি পার হতে উঠে পড়লাম ট্রলারে। ট্রলারে উঠে মাথায় হাত! ছোট্ট একটা ট্রলারে ধারণক্ষমতার তিনগুণ মানুষ। আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানলাম, পানি তেমন গভীর নয়। তবুও মনের ভেতর উঁকি দিল সম্প্রতি ঘটে যাওয়া পঞ্চগড়ের বোদার সেই ট্রলার দুর্ঘটনাটি। এমনই অল্প গভীর পানিতে ট্রলার ডুবে প্রাণ গিয়েছিল ৭১ জন মানুষের। এ কথা ভাবতে ভাবতে আরেক ট্রলারের ধাক্কায় আমাদের ট্রলার উল্টে যাওয়ার উপক্রম হলো। কী যে ভয় পেয়েছিলাম। এ যাত্রায়ও দয়ালের অশেষ কৃপায় রক্ষা।
ট্রলার থেকে নেমে উঠে পড়লাম অটোতে। পটুয়াখালী শহরটা দেখে বেশ হিংসা হলো। নিঃসন্দেহে আমাদের যান্ত্রিক এই ঢাকার চেয়ে সুন্দর। অটো থেকে নেমে বাসে, আমাদের গন্তব্য কুয়াকাটা। দীর্ঘ যাত্রা শেষে অবশেষে আমরা পৌঁছে যাই সাগরকন্যা কুয়াকাটায়। কুয়াকাটায় এসে আপনি কক্সবাজারের ফিল খুঁজলে আশাহত হবেন। কুয়াকাটায় কক্সবাজারের মতো ওতো ‘গ্ল্যামার’ নেই। এখানকার হোটেলগুলোও তেমন লাক্সারি না। একটু হাঁটাহাঁটি করে আমরা উঠে পড়লাম মাঝারি মানের একটি হোটেলে। কিছুটা ফ্রেশ হয়েই কনকনে শীতে বেরিয়ে পড়লাম। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। কেমনই যেন এক অনুভূতি। আজ আমাদের রাতের খাবার—সামুদ্রিক মাছ। একে একে কোরাল, চিংড়ি ও বাঁশপাতা মাছও বাদ গেল না খাবারের তালিকা থেকে। এই ঠান্ডায় একটু পাগলামি না করলে কি চলে? খাবারদাবারের পর খেয়ে নিলাম আইসক্রিম।
এবার এল আমাদের ঘুমের পালা। দুর্দান্ত একটা ঘুম দিয়ে উঠে মোটরসাইকেল ভাড়া করে বেরিয়ে পড়লাম কুয়াকাটার দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে দেখতে। এরপর একে একে আমরা ঘুরলাম লাল কাঁকড়ার চর, ঝাউবন, কাউয়ার চর, লেবু চরসহ নানা জায়গা। সমুদ্রের পাড় ঘেঁষে এমন বাইক রাইডের আনন্দ ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। এবার খাবারের পালা। পুরো ট্যুরেই আমরা খেয়েছি ভরপুর। এবারও ব্যতিক্রম হলো না। গরম ভাত-ডালের সঙ্গে টুনা মাছ, বাঁশপাতা মাছের ভর্তা ও চিংড়ি, আহা শান্তি! আর সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে খাওয়ার মজাই আলাদা।
সবশেষে এবার সাগরকন্যাকে বিদায় জানানোর পালা। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত—পদ্মা সেতু দেখব তাই যাত্রা হবে বাসে, লঞ্চে নয়। টিকিট কেটে উঠে পড়লাম বাসে। সিট নিলাম ‘ই’ ও ‘এফ’ লাইনে। শুরু হলো ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা। চলছে আমাদের বাস। হঠাৎ বিপত্তি এক জায়গায় আটকে রইল পাক্কা ২০ মিনিট। এই সুযোগে বাসের সুপারভাইজারের সঙ্গে আড্ডা জুড়ে দিলাম। জানতে পারলাম সামনে আগুন লেগেছে তাই এই দশা। কিছুক্ষণ পরে ফের চলতে শুরু করল বাস। বরিশাল পার হওয়ার পর দেওয়া হলো যাত্রাবিরতি। আমাদের চোখও বলতে হবে, একদম খাদক চোখ। যাত্রাবিরতিতে খাবারের টেবিলে বসে চোখ গিয়ে পড়ল ফ্রিজে থাকা পায়েসের দিকে। একটা না একেকজন দুটা করে পায়েস খেলাম।
বাস যখন পদ্মা সেতু পার হচ্ছে জানালা দিয়ে কিছুটা দেখার চেষ্টা করলাম। তেমন স্পষ্ট করে দেখা না গেলেও মনের ভেতরে বেশ ভালো লাগল। অবাক দৃঢ়তায় দাঁড়িয়ে আমাদের পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু পার হওয়ার পরে এখন শুধু ঢাকায় ফেরার অপেক্ষা। কুয়াকাটা থেকে কেনা আচার-চকলেট পরিবারের সদস্যদের বণ্টনের চিন্তা। আহ! কত দিন পর বাসায় ফিরছি। দু’চোখ জুড়ে শান্তির ঘুমটা আসতেই এক চরম ঝাঁকুনিতে কেঁপে উঠলাম। শুধু চারদিকে চিৎকার-আর্তনাদ। বুঝতে আর বাকি নেই আমাদের বাস অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। ‘ই’ সিট থেকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে যেতে দেখলাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে রক্ত। ফায়ার সার্ভিস-পুলিশ সদস্যরাও দ্রুত এসে হাজির দুর্ঘটনাকবলিত বাস উদ্ধারে। তখনো চালক ও কয়েকজন যাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
চোখেমুখে আতঙ্ক নিয়েই পোস্তগোলা থেকে দুটি সিএনজি অটোরিকশায় আমরা ছয়জন চলে এলাম বংশাল পুকুরপাড়। সবাই সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত। তবে বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়ায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলাম। ভাগ্য সহায় না হলে সেদিন লাশ হয়েও ফিরতে পারতাম। এই কুয়াকাটা ট্যুর হতে পারত জীবনের শেষ ট্যুর। ওই যে যাত্রাবিরতিতে খাওয়া সেই পায়েসটাই হতে পারত জীবনের শেষ খাওয়া। কত স্বপ্ন নিমেষেই দুমড়ে-মুচড়ে যেতে পারত। বাসায় এসে দুর্ঘটনার কথা বলতেই আমার স্ত্রীর সে কি কান্না। এ সময়ে এমন ভালোবাসা পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। আপাতত বেঁচে আছি এইতো জরুরি খবর। জীবনে ঢাকার বাইরে অনেক ঘুরেছি, ভবিষ্যতেও ঘুরব। তবে এই জার্নিটা আমার কাছে ‘ডেড জার্নি’ হয়ে থাকবে। ভুলব না তোমায় কুয়াকাটা...
আমাদের শরীরের সামান্য আঘাত ধীরে ধীরে সেরে উঠেছে। তবে মনের ভেতরের ভয়টা হয়তো তাড়িয়ে বেড়াবে অনেকটা দিন। এই দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বাসের চালক। শুনেছি লোকটা বেঁচে আছেন, তবে দুই পা ভেঙেছে ও পাঁজরের হাড়ে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। তিনি দ্রুত সেরে উঠুক—এই কামনাই করি। আর হ্যাঁ, শীতের এই সময়টায় ঘন কুয়াশায় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এই সময়ে সাবধান থাকাটা বেশ জরুরি।
আরও পড়ুন:

নগুচি বলেছিলেন, ‘টিভিতে এভারেস্টের যে সুন্দর ছবি দেখতাম, ভেবেছিলাম পাহাড়টি তেমনই হবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি চারদিকে শুধু আবর্জনা।’ সেই শুরু; নগুচি ২০০০ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে প্রায় ৯০ টন বর্জ্য সরিয়েছিলেন। কিন্তু আজ এখন সমস্যাটি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।...
১২ ঘণ্টা আগে
বইয়ের পাতার মৃদু মর্মর আর শতাব্দীর প্রাচীন প্রতিধ্বনি। এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে এই সুর যেন একই সুতোয় গাঁথা। মেলবোর্ন থেকে রিও, বিশ্বের এই পাঁচটি অনন্য গ্রন্থাগার একটি বিশেষ দর্শনকে ধারণ করে আছে। পড়া মানে কেবল তথ্যের আহরণ নয়, বরং একটি বিশেষ স্থাপত্যের আবহে নিজেকে সঁপে দেওয়া। মঠের নিস্তব্ধতা থেকে
১৮ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতি যখন শুভ্র তুষারের চাদরে নিজেকে ঢেকে নেয়, উত্তর গোলার্ধের হিমশীতল তন্দ্রা তখন জেগে ওঠে এক ক্ষণস্থায়ী বিস্ময়ে। যার নাম আইস হোটেল। বসন্তের আগমনে যারা নিভৃতে গলে মিশে যায় নদীর পানিতে, সেই বরফ প্রাসাদগুলোই এখন বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে শীতকালীন অভিযানের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। বসন্তের প্রথম ছোঁয়া
২০ ঘণ্টা আগে
আজ নিজেকে সুপারম্যান মনে করতে পারেন। অফিসে বা ঘরে সবাইকে হুকুম দেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। তবে সাবধান! মঙ্গল আপনার রাশিতে একটু বেশিই গরম, তাই গরম চা খেতে গিয়ে জিব পুড়িয়ে বা কারোর সঙ্গে অযথা তর্কে জড়িয়ে ফিউজ ওড়াবেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রশংসা করুন, কিন্তু অন্যের সামনে নয়।
২১ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

সাগরপৃষ্ঠ থেকে ৮ হাজার ৮৪৮ দশমিক ৮৬ মিটার উঁচু মাউন্ট এভারেস্ট শৃঙ্গটি মানুষের অদম্য সাহসের শেষ সীমানা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এসব তকমা ও শ্বেতশুভ্র সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক করুণ চিত্র। ২০০০ সালে জাপানি পর্বতারোহী কেন নগুচি যখন এভারেস্টে প্রথম সংগঠিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেন, তখন তিনি যা দেখেছিলেন, তা ছিল রীতিমতো মর্মান্তিক। নগুচি বলেছিলেন, ‘টিভিতে এভারেস্টের যে সুন্দর ছবি দেখতাম, ভেবেছিলাম পাহাড়টি তেমনই হবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি চারদিকে শুধু আবর্জনা।’ সেই শুরু; নগুচি ২০০০ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে প্রায় ৯০ টন বর্জ্য সরিয়েছিলেন। কিন্তু আজ এখন সমস্যাটি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
সম্প্রতি নেপাল সরকার প্রথমবারের মতো একটি ব্যাপক নীতিমালাসহ এভারেস্ট ক্লিনিং অ্যাকশন প্ল্যান (২০২৫-২০২৯) ঘোষণা করেছে। এভারেস্ট যে ধীরে ধীরে ‘বিশ্বের উচ্চতম ডাস্টবিনে’ পরিণত হচ্ছে, সেই আন্তর্জাতিক সমালোচনা বন্ধ করতেই এই দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ।

সংকটের নেপথ্যে: প্লাস্টিক ও জলবায়ু পরিবর্তন
দশকের পর দশক ধরে আরোহী, গাইড এবং শেরপাদের ফেলে আসা অক্সিজেন সিলিন্ডার, প্লাস্টিকের বোতল, নাইলনের দড়ি এবং মানুষের মলমূত্রে পাহাড়ের ঢালগুলো বিষিয়ে উঠেছে; বিশেষ করে প্লাস্টিক এখন মূর্তিমান আতঙ্ক; একটি প্লাস্টিক ব্যাগ প্রকৃতিতে মিশে যেতে প্রায় ৫০০ বছর সময় নেয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বরফ গলে বেরিয়ে আসছে পুরোনো আবর্জনা এবং দীর্ঘদিনের চাপা পড়া মৃতদেহ, যা নিচের জনপদগুলোর পানীয় জলের উৎসকে দূষিত করছে।
নতুন পরিকল্পনা: একনজরে সরকারের রোডম্যাপ

নেপাল সরকারের সংস্কৃতি, পর্যটন ও বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় ঘোষিত পাঁচ বছর মেয়াদি এই পরিকল্পনায় বেশ কিছু বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো,
বেস ক্যাম্প স্থানান্তর: খুম্বু হিমবাহের ওপর অবস্থিত বর্তমান বেস ক্যাম্পটি ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ও আবর্জনার চাপে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। তাই এটি অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়া যায় কি না, তার সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে।
বর্জ্য ফেরাতে কড়া নজরদারি: আরোহীদের ব্যবহৃত প্রতিটি সরঞ্জাম, মই ও দড়ির তালিকা এন্ট্রি পয়েন্টে জমা দিতে হবে এবং নামার সময় তা মিলিয়ে দেখা হবে। প্রত্যেক আরোহী দলকে তাদের ব্যবহৃত সব সরঞ্জাম এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ পুরোনো আবর্জনা পাহাড় থেকে নামিয়ে আনতে হবে।
ক্যাম্প-২-এ বর্জ্য সংগ্রহ কেন্দ্র: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬ হাজার ৭৫০ মিটার উঁচুতে ক্যাম্প-২-এ বর্জ্য সংগ্রহের জন্য একটি অস্থায়ী কেন্দ্র করা হবে। এটি চেকপয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে, যাতে উচ্চতর ক্যাম্পগুলোতে কেউ আবর্জনা ফেলে আসতে না পারে।
মাউন্টেন রেঞ্জার ও ড্রোন: পাহাড়ের ওপর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তদারক করতে প্রশিক্ষিত আরোহীদের নিয়ে একটি মাউন্টেইন রেঞ্জার দল গঠন করা হবে। এমনকি দুর্গম এলাকা থেকে আবর্জনা সংগ্রহে ড্রোনের ব্যবহারও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আর্থিক নীতিমালা ও রয়্যালটি: বর্তমানে আরোহীদের ৪ হাজার ডলারের যে ডিপোজিট দিতে হয়, সেটিকে একটি অফেরতযোগ্য ফিতে রূপান্তরের প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনায়, যা সরাসরি পাহাড়ের কল্যাণে ব্যয় হবে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এভারেস্টের রয়্যালটি ১১ হাজার ডলার থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার ডলার করা হয়েছে।
আদালতের আদেশ ও সচেতনতা
এই মহাপরিকল্পনা মূলত গত বছর দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশের ফল। আদালত সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল পাহাড়ের ধারণক্ষমতা মেপে আরোহীদের পারমিট সংখ্যা নির্ধারণ করতে। এ ছাড়া ২০২৪ সাল থেকে বেস ক্যাম্পের ওপর ‘পুপ ব্যাগ’ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সরকার এখন পরিবেশ-সচেতনতাকে জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্তির পরিকল্পনা করছে।
একটি বিশাল কর্মযজ্ঞের শুরু
২০২৪ সালের বসন্ত মৌসুমে এভারেস্ট থেকে প্রায় ৮৫ টন বর্জ্য এবং ২৮ টন মানুষের মলমূত্র সরানো হয়েছে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষ করতে বড় অঙ্কের বাজেট প্রয়োজন, যা ১০০ কোটি রুপি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এভারেস্টের চূড়ায় আরোহীদের দীর্ঘ সারি আর যত্রতত্র আবর্জনার স্তূপ এখন বিশ্ববাসীর নজরে। এই পাঁচ বছরের মহাপরিকল্পনা কি পারবে বিশ্বের ছাদকে আবার তার আদি অকৃত্রিম রূপ ফিরিয়ে দিতে? সেটি সময় বলবে, তবে নেপাল সরকারের এই কাঠামোগত উদ্যোগ হিমালয়প্রেমীদের মনে আশার আলো জাগাচ্ছে।
সূত্র: দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট

সাগরপৃষ্ঠ থেকে ৮ হাজার ৮৪৮ দশমিক ৮৬ মিটার উঁচু মাউন্ট এভারেস্ট শৃঙ্গটি মানুষের অদম্য সাহসের শেষ সীমানা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এসব তকমা ও শ্বেতশুভ্র সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক করুণ চিত্র। ২০০০ সালে জাপানি পর্বতারোহী কেন নগুচি যখন এভারেস্টে প্রথম সংগঠিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেন, তখন তিনি যা দেখেছিলেন, তা ছিল রীতিমতো মর্মান্তিক। নগুচি বলেছিলেন, ‘টিভিতে এভারেস্টের যে সুন্দর ছবি দেখতাম, ভেবেছিলাম পাহাড়টি তেমনই হবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি চারদিকে শুধু আবর্জনা।’ সেই শুরু; নগুচি ২০০০ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে প্রায় ৯০ টন বর্জ্য সরিয়েছিলেন। কিন্তু আজ এখন সমস্যাটি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
সম্প্রতি নেপাল সরকার প্রথমবারের মতো একটি ব্যাপক নীতিমালাসহ এভারেস্ট ক্লিনিং অ্যাকশন প্ল্যান (২০২৫-২০২৯) ঘোষণা করেছে। এভারেস্ট যে ধীরে ধীরে ‘বিশ্বের উচ্চতম ডাস্টবিনে’ পরিণত হচ্ছে, সেই আন্তর্জাতিক সমালোচনা বন্ধ করতেই এই দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ।

সংকটের নেপথ্যে: প্লাস্টিক ও জলবায়ু পরিবর্তন
দশকের পর দশক ধরে আরোহী, গাইড এবং শেরপাদের ফেলে আসা অক্সিজেন সিলিন্ডার, প্লাস্টিকের বোতল, নাইলনের দড়ি এবং মানুষের মলমূত্রে পাহাড়ের ঢালগুলো বিষিয়ে উঠেছে; বিশেষ করে প্লাস্টিক এখন মূর্তিমান আতঙ্ক; একটি প্লাস্টিক ব্যাগ প্রকৃতিতে মিশে যেতে প্রায় ৫০০ বছর সময় নেয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বরফ গলে বেরিয়ে আসছে পুরোনো আবর্জনা এবং দীর্ঘদিনের চাপা পড়া মৃতদেহ, যা নিচের জনপদগুলোর পানীয় জলের উৎসকে দূষিত করছে।
নতুন পরিকল্পনা: একনজরে সরকারের রোডম্যাপ

নেপাল সরকারের সংস্কৃতি, পর্যটন ও বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় ঘোষিত পাঁচ বছর মেয়াদি এই পরিকল্পনায় বেশ কিছু বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো,
বেস ক্যাম্প স্থানান্তর: খুম্বু হিমবাহের ওপর অবস্থিত বর্তমান বেস ক্যাম্পটি ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ও আবর্জনার চাপে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। তাই এটি অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়া যায় কি না, তার সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে।
বর্জ্য ফেরাতে কড়া নজরদারি: আরোহীদের ব্যবহৃত প্রতিটি সরঞ্জাম, মই ও দড়ির তালিকা এন্ট্রি পয়েন্টে জমা দিতে হবে এবং নামার সময় তা মিলিয়ে দেখা হবে। প্রত্যেক আরোহী দলকে তাদের ব্যবহৃত সব সরঞ্জাম এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ পুরোনো আবর্জনা পাহাড় থেকে নামিয়ে আনতে হবে।
ক্যাম্প-২-এ বর্জ্য সংগ্রহ কেন্দ্র: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬ হাজার ৭৫০ মিটার উঁচুতে ক্যাম্প-২-এ বর্জ্য সংগ্রহের জন্য একটি অস্থায়ী কেন্দ্র করা হবে। এটি চেকপয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে, যাতে উচ্চতর ক্যাম্পগুলোতে কেউ আবর্জনা ফেলে আসতে না পারে।
মাউন্টেন রেঞ্জার ও ড্রোন: পাহাড়ের ওপর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তদারক করতে প্রশিক্ষিত আরোহীদের নিয়ে একটি মাউন্টেইন রেঞ্জার দল গঠন করা হবে। এমনকি দুর্গম এলাকা থেকে আবর্জনা সংগ্রহে ড্রোনের ব্যবহারও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আর্থিক নীতিমালা ও রয়্যালটি: বর্তমানে আরোহীদের ৪ হাজার ডলারের যে ডিপোজিট দিতে হয়, সেটিকে একটি অফেরতযোগ্য ফিতে রূপান্তরের প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনায়, যা সরাসরি পাহাড়ের কল্যাণে ব্যয় হবে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এভারেস্টের রয়্যালটি ১১ হাজার ডলার থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার ডলার করা হয়েছে।
আদালতের আদেশ ও সচেতনতা
এই মহাপরিকল্পনা মূলত গত বছর দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশের ফল। আদালত সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল পাহাড়ের ধারণক্ষমতা মেপে আরোহীদের পারমিট সংখ্যা নির্ধারণ করতে। এ ছাড়া ২০২৪ সাল থেকে বেস ক্যাম্পের ওপর ‘পুপ ব্যাগ’ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সরকার এখন পরিবেশ-সচেতনতাকে জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্তির পরিকল্পনা করছে।
একটি বিশাল কর্মযজ্ঞের শুরু
২০২৪ সালের বসন্ত মৌসুমে এভারেস্ট থেকে প্রায় ৮৫ টন বর্জ্য এবং ২৮ টন মানুষের মলমূত্র সরানো হয়েছে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষ করতে বড় অঙ্কের বাজেট প্রয়োজন, যা ১০০ কোটি রুপি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এভারেস্টের চূড়ায় আরোহীদের দীর্ঘ সারি আর যত্রতত্র আবর্জনার স্তূপ এখন বিশ্ববাসীর নজরে। এই পাঁচ বছরের মহাপরিকল্পনা কি পারবে বিশ্বের ছাদকে আবার তার আদি অকৃত্রিম রূপ ফিরিয়ে দিতে? সেটি সময় বলবে, তবে নেপাল সরকারের এই কাঠামোগত উদ্যোগ হিমালয়প্রেমীদের মনে আশার আলো জাগাচ্ছে।
সূত্র: দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট

পাঁচ ব্যবসায়ীর মধ্যে আমিই ছিলাম একমাত্র সংবাদকর্মী। কুয়াকাটার উদ্দেশে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয় চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি। আগেই বলে রাখা ভালো, আমরা সফরের সূচি ঠিক করি একটু ভিন্নভাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সরাসরি কুয়াকাটায় না গিয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই
১১ জানুয়ারি ২০২৩
বইয়ের পাতার মৃদু মর্মর আর শতাব্দীর প্রাচীন প্রতিধ্বনি। এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে এই সুর যেন একই সুতোয় গাঁথা। মেলবোর্ন থেকে রিও, বিশ্বের এই পাঁচটি অনন্য গ্রন্থাগার একটি বিশেষ দর্শনকে ধারণ করে আছে। পড়া মানে কেবল তথ্যের আহরণ নয়, বরং একটি বিশেষ স্থাপত্যের আবহে নিজেকে সঁপে দেওয়া। মঠের নিস্তব্ধতা থেকে
১৮ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতি যখন শুভ্র তুষারের চাদরে নিজেকে ঢেকে নেয়, উত্তর গোলার্ধের হিমশীতল তন্দ্রা তখন জেগে ওঠে এক ক্ষণস্থায়ী বিস্ময়ে। যার নাম আইস হোটেল। বসন্তের আগমনে যারা নিভৃতে গলে মিশে যায় নদীর পানিতে, সেই বরফ প্রাসাদগুলোই এখন বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে শীতকালীন অভিযানের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। বসন্তের প্রথম ছোঁয়া
২০ ঘণ্টা আগে
আজ নিজেকে সুপারম্যান মনে করতে পারেন। অফিসে বা ঘরে সবাইকে হুকুম দেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। তবে সাবধান! মঙ্গল আপনার রাশিতে একটু বেশিই গরম, তাই গরম চা খেতে গিয়ে জিব পুড়িয়ে বা কারোর সঙ্গে অযথা তর্কে জড়িয়ে ফিউজ ওড়াবেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রশংসা করুন, কিন্তু অন্যের সামনে নয়।
২১ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

বইয়ের পাতার মৃদু মর্মর আর শতাব্দীর প্রাচীন প্রতিধ্বনি। এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে এই সুর যেন একই সুতোয় গাঁথা। মেলবোর্ন থেকে রিও, বিশ্বের এই পাঁচটি অনন্য গ্রন্থাগার একটি বিশেষ দর্শনকে ধারণ করে আছে। পড়া মানে কেবল তথ্যের আহরণ নয়, বরং একটি বিশেষ স্থাপত্যের আবহে নিজেকে সঁপে দেওয়া। মঠের নিস্তব্ধতা থেকে শুরু করে প্রজাতন্ত্রী উদ্যোগ কিংবা ভবিষ্যতের কোনো স্বপ্নদর্শী প্রকল্প। এই সবকটি স্থাপনা আজ বিশ্বের বুদ্ধিবৃত্তিক এবং নগর সভ্যতার মাইলফলক। তাদের মূল সার্থকতা এখানেই যে, তারা বইকে কেবল তাকে সাজিয়ে রাখেনি বরং বইকে রূপান্তরিত করেছে এক একটি জীবন্ত পরিসরে। বইপ্রেমীদের জন্য পৃথিবীর সেরা সেই পাঁচটি লাইব্রেরি যেন পাঠ-স্বর্গের গল্প বলে। এই পাঁচটি লাইব্রেরি কেবল পড়ার জায়গা নয় বরং প্রতিটি বইপ্রেমীর জন্য একবার হলেও ঘুরে আসার মতো তীর্থস্থান।
অস্ট্রেলিয়ার সাংস্কৃতিক রাজধানীর হৃদপিণ্ডে অবস্থিত এই গ্রন্থাগারটি জ্ঞানের এক বিশাল বাতিঘর। ১৮৫৬ সাল থেকে সবার জন্য উন্মুক্ত এই প্রতিষ্ঠানটি সংস্কৃতির অবাধ অধিকারের এক মূর্ত প্রতীক। এর মূল আকর্ষণ হলো ১৯১৩ সালে নির্মিত ’ট্রোব রিডিং রুম’। এক বিশাল ৩৫ মিটারের অষ্টভুজাকার গম্বুজের নিচে দাঁড়িয়ে মনে হবে আপনি কোনো এক আধুনিক উপাসনালয়ে আছেন। সরু সিঁড়ি দিয়ে যুক্ত এর উঁচু গ্যালারিগুলো কক্ষটির গম্ভীরতাকে এক অনন্য উচ্চতা দান করেছে। এডওয়ার্ডিয়ান স্থাপত্যের এই শ্রেষ্ঠ নিদর্শনটি গত এক শতাব্দী ধরে জ্ঞান বিনিময়ের এক জীবন্ত সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

দৃষ্টিভ্রম নাকি কোনো মায়াবী জগত? ২০১৭ সালে চীনে নির্মিত এই লাইব্রেরিটি পড়ার ঘরের চিরাচরিত ধারণা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। এখানে সবকিছুই শুভ্র। এর বইয়ের তাকগুলো ঢেউয়ের মতো খেলে গেছে পুরো দেয়াল জুড়ে, যা কখনও সিঁড়ি আবার কখনও বসার আসনে পরিণত হয়েছে। তাকিয়ে থাকলে মনে হবে তাকগুলো বুঝি মিশে গেছে ছাদের কোনো অলীক শিল্পকর্মে। স্থাপত্যের ঠিক মাঝখানে রয়েছে এক বিশাল স্বচ্ছ গোলক, যার নাম দেওয়া হয়েছে ’দ্য আই’ বা ’চক্ষু’। ৩৩ হাজার বর্গমিটারের এই রেট্রো-ফিউচারিস্টিক প্রাঙ্গণে ১০ লক্ষেরও বেশি বই রয়েছে। ডাচ সংস্থা MVRDV-এর তৈরি এই স্থাপত্যটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছে মাত্র তিন বছর।
আমেরিকার সবচেয়ে গম্ভীর এবং আভিজাত্যপূর্ণ স্থান হলো এর জেফারসন উইং। মার্বেল পাথরের কারুকাজ আর সোনালি রঙের ছটায় এখানে তৈরি হয়েছে এক রাজকীয় পরিবেশ। ঐতিহাসিক চরিত্রদের আবক্ষ মূর্তি আর মোজাইকের পথ ধরে যখন আপনি অষ্টভুজাকার রিডিং রুমে প্রবেশ করবেন, তখন চারপাশের বিশালাকার গম্বুজ আর নরম আলো আপনাকে এক অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে ফেলে দেবে। ১৭ কোটি ৫০ লক্ষ নথি ও বইয়ের সংগ্রহ নিয়ে এটি বিশ্বের বৃহত্তম গ্রন্থাগার। বিরল পাণ্ডুলিপি থেকে শুরু করে কমিক বই কিংবা বিজ্ঞানের জটিল কাজ—সবই এখানে সাজানো আছে মাইলের পর মাইল বিস্তৃত তাকে। পাথরের গায়ে এখানে খোদাই করা আছে আমেরিকার উচ্চাভিলাষের গল্প।

অস্ট্রিয়ার স্টাইরিয়া অঞ্চলের পাহাড়ি জনপদে ১৭৭৬ সাল থেকে টিকে আছে এই বারোক স্থাপত্যের বিস্ময়। সাতটি বিশাল গম্বুজের নিচে শিল্পী বার্তোলোমিও আলতোমন্তের আঁকা ফ্রেস্কো বা দেয়ালচিত্রগুলো লাইব্রেরিটিকে এক স্বর্গীয় রূপ দিয়েছে। ৪৮টি জানালা দিয়ে আসা আলো যখন বাঁকানো তাকগুলোতে সাজানো লুথারের বাইবেলসহ প্রায় ৭০ হাজার বইয়ের ওপর পড়ে, তখন এক অপার্থিব পরিবেশ তৈরি হয়। শিল্পী জোসেফ স্টামেলের খোদাই করা মূর্তি আর সাদা-কালো মার্বেলের মেঝে জ্ঞান আর শিল্পের এক অদ্ভুত মেলবন্ধন ঘটিয়েছে এখানে।
এই গ্রন্থাগারের জন্ম হয়েছিল নির্বাসনের ইতিহাস থেকে। ১৮১০ সালে পর্তুগিজ রাজদরবার যখন লিসবন থেকে পালিয়ে রিওতে আশ্রয় নেয়, তখন তারা সাথে করে নিয়ে আসে বিশাল বইয়ের ভাণ্ডার। সেই সংগ্রহের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে নতুন বিশ্বের প্রথম বড় এই গ্রন্থাগার। বর্তমানে এখানে নথির সংখ্যা প্রায় ৯০ লক্ষ। ১৯১০ সালে রিও ব্রাঙ্কো অ্যাভিনিউতে নির্মিত হয় এর বিশাল নিওক্লাসিক্যাল ভবনটি। এর ভেতরে লোহার কারুকার্যময় ব্যালকনি, বিশালাকার থামের সারি আর সুউচ্চ অলিন্দগুলো আপনাকে মনে করিয়ে দেবে সেই রাজকীয় ঐতিহ্যের কথা।
সূত্র: ইএনভোলস

বইয়ের পাতার মৃদু মর্মর আর শতাব্দীর প্রাচীন প্রতিধ্বনি। এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে এই সুর যেন একই সুতোয় গাঁথা। মেলবোর্ন থেকে রিও, বিশ্বের এই পাঁচটি অনন্য গ্রন্থাগার একটি বিশেষ দর্শনকে ধারণ করে আছে। পড়া মানে কেবল তথ্যের আহরণ নয়, বরং একটি বিশেষ স্থাপত্যের আবহে নিজেকে সঁপে দেওয়া। মঠের নিস্তব্ধতা থেকে শুরু করে প্রজাতন্ত্রী উদ্যোগ কিংবা ভবিষ্যতের কোনো স্বপ্নদর্শী প্রকল্প। এই সবকটি স্থাপনা আজ বিশ্বের বুদ্ধিবৃত্তিক এবং নগর সভ্যতার মাইলফলক। তাদের মূল সার্থকতা এখানেই যে, তারা বইকে কেবল তাকে সাজিয়ে রাখেনি বরং বইকে রূপান্তরিত করেছে এক একটি জীবন্ত পরিসরে। বইপ্রেমীদের জন্য পৃথিবীর সেরা সেই পাঁচটি লাইব্রেরি যেন পাঠ-স্বর্গের গল্প বলে। এই পাঁচটি লাইব্রেরি কেবল পড়ার জায়গা নয় বরং প্রতিটি বইপ্রেমীর জন্য একবার হলেও ঘুরে আসার মতো তীর্থস্থান।
অস্ট্রেলিয়ার সাংস্কৃতিক রাজধানীর হৃদপিণ্ডে অবস্থিত এই গ্রন্থাগারটি জ্ঞানের এক বিশাল বাতিঘর। ১৮৫৬ সাল থেকে সবার জন্য উন্মুক্ত এই প্রতিষ্ঠানটি সংস্কৃতির অবাধ অধিকারের এক মূর্ত প্রতীক। এর মূল আকর্ষণ হলো ১৯১৩ সালে নির্মিত ’ট্রোব রিডিং রুম’। এক বিশাল ৩৫ মিটারের অষ্টভুজাকার গম্বুজের নিচে দাঁড়িয়ে মনে হবে আপনি কোনো এক আধুনিক উপাসনালয়ে আছেন। সরু সিঁড়ি দিয়ে যুক্ত এর উঁচু গ্যালারিগুলো কক্ষটির গম্ভীরতাকে এক অনন্য উচ্চতা দান করেছে। এডওয়ার্ডিয়ান স্থাপত্যের এই শ্রেষ্ঠ নিদর্শনটি গত এক শতাব্দী ধরে জ্ঞান বিনিময়ের এক জীবন্ত সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

দৃষ্টিভ্রম নাকি কোনো মায়াবী জগত? ২০১৭ সালে চীনে নির্মিত এই লাইব্রেরিটি পড়ার ঘরের চিরাচরিত ধারণা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। এখানে সবকিছুই শুভ্র। এর বইয়ের তাকগুলো ঢেউয়ের মতো খেলে গেছে পুরো দেয়াল জুড়ে, যা কখনও সিঁড়ি আবার কখনও বসার আসনে পরিণত হয়েছে। তাকিয়ে থাকলে মনে হবে তাকগুলো বুঝি মিশে গেছে ছাদের কোনো অলীক শিল্পকর্মে। স্থাপত্যের ঠিক মাঝখানে রয়েছে এক বিশাল স্বচ্ছ গোলক, যার নাম দেওয়া হয়েছে ’দ্য আই’ বা ’চক্ষু’। ৩৩ হাজার বর্গমিটারের এই রেট্রো-ফিউচারিস্টিক প্রাঙ্গণে ১০ লক্ষেরও বেশি বই রয়েছে। ডাচ সংস্থা MVRDV-এর তৈরি এই স্থাপত্যটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছে মাত্র তিন বছর।
আমেরিকার সবচেয়ে গম্ভীর এবং আভিজাত্যপূর্ণ স্থান হলো এর জেফারসন উইং। মার্বেল পাথরের কারুকাজ আর সোনালি রঙের ছটায় এখানে তৈরি হয়েছে এক রাজকীয় পরিবেশ। ঐতিহাসিক চরিত্রদের আবক্ষ মূর্তি আর মোজাইকের পথ ধরে যখন আপনি অষ্টভুজাকার রিডিং রুমে প্রবেশ করবেন, তখন চারপাশের বিশালাকার গম্বুজ আর নরম আলো আপনাকে এক অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে ফেলে দেবে। ১৭ কোটি ৫০ লক্ষ নথি ও বইয়ের সংগ্রহ নিয়ে এটি বিশ্বের বৃহত্তম গ্রন্থাগার। বিরল পাণ্ডুলিপি থেকে শুরু করে কমিক বই কিংবা বিজ্ঞানের জটিল কাজ—সবই এখানে সাজানো আছে মাইলের পর মাইল বিস্তৃত তাকে। পাথরের গায়ে এখানে খোদাই করা আছে আমেরিকার উচ্চাভিলাষের গল্প।

অস্ট্রিয়ার স্টাইরিয়া অঞ্চলের পাহাড়ি জনপদে ১৭৭৬ সাল থেকে টিকে আছে এই বারোক স্থাপত্যের বিস্ময়। সাতটি বিশাল গম্বুজের নিচে শিল্পী বার্তোলোমিও আলতোমন্তের আঁকা ফ্রেস্কো বা দেয়ালচিত্রগুলো লাইব্রেরিটিকে এক স্বর্গীয় রূপ দিয়েছে। ৪৮টি জানালা দিয়ে আসা আলো যখন বাঁকানো তাকগুলোতে সাজানো লুথারের বাইবেলসহ প্রায় ৭০ হাজার বইয়ের ওপর পড়ে, তখন এক অপার্থিব পরিবেশ তৈরি হয়। শিল্পী জোসেফ স্টামেলের খোদাই করা মূর্তি আর সাদা-কালো মার্বেলের মেঝে জ্ঞান আর শিল্পের এক অদ্ভুত মেলবন্ধন ঘটিয়েছে এখানে।
এই গ্রন্থাগারের জন্ম হয়েছিল নির্বাসনের ইতিহাস থেকে। ১৮১০ সালে পর্তুগিজ রাজদরবার যখন লিসবন থেকে পালিয়ে রিওতে আশ্রয় নেয়, তখন তারা সাথে করে নিয়ে আসে বিশাল বইয়ের ভাণ্ডার। সেই সংগ্রহের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে নতুন বিশ্বের প্রথম বড় এই গ্রন্থাগার। বর্তমানে এখানে নথির সংখ্যা প্রায় ৯০ লক্ষ। ১৯১০ সালে রিও ব্রাঙ্কো অ্যাভিনিউতে নির্মিত হয় এর বিশাল নিওক্লাসিক্যাল ভবনটি। এর ভেতরে লোহার কারুকার্যময় ব্যালকনি, বিশালাকার থামের সারি আর সুউচ্চ অলিন্দগুলো আপনাকে মনে করিয়ে দেবে সেই রাজকীয় ঐতিহ্যের কথা।
সূত্র: ইএনভোলস

পাঁচ ব্যবসায়ীর মধ্যে আমিই ছিলাম একমাত্র সংবাদকর্মী। কুয়াকাটার উদ্দেশে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয় চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি। আগেই বলে রাখা ভালো, আমরা সফরের সূচি ঠিক করি একটু ভিন্নভাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সরাসরি কুয়াকাটায় না গিয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই
১১ জানুয়ারি ২০২৩
নগুচি বলেছিলেন, ‘টিভিতে এভারেস্টের যে সুন্দর ছবি দেখতাম, ভেবেছিলাম পাহাড়টি তেমনই হবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি চারদিকে শুধু আবর্জনা।’ সেই শুরু; নগুচি ২০০০ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে প্রায় ৯০ টন বর্জ্য সরিয়েছিলেন। কিন্তু আজ এখন সমস্যাটি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।...
১২ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতি যখন শুভ্র তুষারের চাদরে নিজেকে ঢেকে নেয়, উত্তর গোলার্ধের হিমশীতল তন্দ্রা তখন জেগে ওঠে এক ক্ষণস্থায়ী বিস্ময়ে। যার নাম আইস হোটেল। বসন্তের আগমনে যারা নিভৃতে গলে মিশে যায় নদীর পানিতে, সেই বরফ প্রাসাদগুলোই এখন বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে শীতকালীন অভিযানের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। বসন্তের প্রথম ছোঁয়া
২০ ঘণ্টা আগে
আজ নিজেকে সুপারম্যান মনে করতে পারেন। অফিসে বা ঘরে সবাইকে হুকুম দেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। তবে সাবধান! মঙ্গল আপনার রাশিতে একটু বেশিই গরম, তাই গরম চা খেতে গিয়ে জিব পুড়িয়ে বা কারোর সঙ্গে অযথা তর্কে জড়িয়ে ফিউজ ওড়াবেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রশংসা করুন, কিন্তু অন্যের সামনে নয়।
২১ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

প্রকৃতি যখন শুভ্র তুষারের চাদরে নিজেকে ঢেকে নেয়, উত্তর গোলার্ধের হিমশীতল তন্দ্রা তখন জেগে ওঠে এক ক্ষণস্থায়ী বিস্ময়ে। যার নাম আইস হোটেল। বসন্তের আগমনে যারা নিভৃতে গলে মিশে যায় নদীর পানিতে, সেই বরফ প্রাসাদগুলোই এখন বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে শীতকালীন অভিযানের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। বসন্তের প্রথম ছোঁয়া লাগলেই এই তুষার প্রাসাদগুলো নিভৃতে গলে যায়। তখন তারা ফিরে যায় আপন উৎস, নদীর বুকে। আপনি কি কখনো হিমাঙ্কের নিচে এমন বরফের বিছানায় রাত কাটানোর অদম্য রোমাঞ্চ অনুভব করতে চেয়েছেন?
অনেকে ভাবেন, বরফের ঘরে ঘুমানো মানেই জমে যাওয়া। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। রুমের তাপমাত্রা থাকে প্রায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে পর্যটকদের দেওয়া হয় বিশেষ থার্মাল স্লিপিং ব্যাগ এবং রেইনডিয়ারের চামড়া, যা শরীরের স্বাভাবিক উষ্ণতা ধরে রাখে। বাথরুম বা পোশাক পরিবর্তনের জন্য পাশেই থাকে উত্তপ্ত আধুনিক ভবন। ২০২৫ সালের এই হাড়কাঁপানো মৌসুমেও সুইডেন, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড আর কানাডায় ফিরে এসেছে এই অনন্য ‘বরফবিলাস’।

আইস হোটেল ৩৬
বিশ্বের বিখ্যাত বরফ হোটেল আইস হোটেল ৩৬। প্রতিবছর এটি নতুন করে তৈরি করা হয় এবং এর প্রধান আকর্ষণ হলো বরফের ভাস্কর্য, বরফের ঘর, বরফের বার এবং আর্কটিক কার্যকলাপ; যেমন ডগ স্লেডিং ও নর্দান লাইট দেখা। সুইডিশ ল্যাপল্যান্ডের জুকাসজারভি ভিলেজে এ বছর উদ্বোধন করা হয়েছে আইস হোটেল ৩৬। নামের সংখ্যাটিই বলে দেয়, এটি তাদের ৩৬তম সংস্করণ। এবার এখানে ১২টি আর্ট স্যুট, আইস রুম, একটি প্রধান হল এবং সেরিমনি হল থাকবে। প্রতিবছর টোর্নে নদী থেকে বরফ সংগ্রহ করে হোটেলটি তৈরি করা হয়। বসন্তে এটি গলে নদীতে ফিরে যায়। এ বছরের সবচেয়ে বড় চমক হলো বরফ দিয়ে খোদাই করা একটি পূর্ণাঙ্গ গ্র্যান্ড পিয়ানো। অদ্ভুত শোনালেও সত্যি, এটি শুধু প্রদর্শনের জন্য নয়, রীতিমতো বাজানোর যোগ্য। ১২টি দেশের ৩৩ জন তুখোড় শিল্পী তাঁদের তুলির বদলে ছেনি-হাতুড়ির কারুকার্যে ফুটিয়ে তুলেছেন একেকটি কক্ষ বা আর্ট স্যুট। কোথাও দেয়ালে খোদাই করা হিমায়িত লাইব্রেরি, আবার কোথাও গোলকগুলো মাথার ওপর ভেসে থাকার বিভ্রম তৈরি করছে। জেনে রাখুন, এই হোটেলে দুজনের জন্য এক রাত কাটানোর খরচ পড়বে প্রায় ৬০০ ইউরো।

উত্তর মেরুর অন্যান্য বরফস্বর্গ
সুইডেনের বাইরেও ফিনল্যান্ড থেকে কানাডা পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে এই হিমাঙ্ক-বিজয়ীদের আস্তানা।
ফিনল্যান্ডের আপুক্কা রিসোর্ট: ল্যাপল্যান্ডের রোভানিয়েনিতে কাচের তৈরি ইগলুতে শুয়ে আকাশের ‘নর্দান লাইটস’ বা মেরুজ্যোতি দেখা এক স্বর্গীয় অনুভূতি। কাচের ছাদের ইগলু থেকে শুরু করে তুষারাবৃত বনের মধ্য দিয়ে রেইনডিয়ারের যাত্রা পর্যন্ত, আপুক্কা রিসোর্ট আপনার আর্কটিক স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়। আগস্ট থেকে এপ্রিল পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম চলবে। এখানে খরচ শুরু হয় ৪০০ ইউরো থেকে।
সুইজারল্যান্ডের ইগলু-ডর্ফ জেরম্যাট: আল্পস পর্বতমালার ২ হাজার ৭০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই ইগলু ভিলেজ। এই ইগলু গ্রামের অবস্থান এতটাই চমৎকার যে আপনি যখন এর রোদ-ঝলমলে বারান্দায় বসে কফি খাবেন কিংবা খোলা আকাশের নিচে উষ্ণ পানিতে হট টব বা ঘূর্ণি জলধারায় গা এলিয়ে দিতে পারবেন। আর আপনার ঠিক চোখের সামনে ধরা দেবে সুইজারল্যান্ডের সব থেকে আইকনিক পাহাড় ‘ম্যাটারহর্ন’। এখানে রাত কাটাতে লাগবে ৪৫০ ইউরো।
কানাডার হোটেল ডি গ্লেস: উত্তর আমেরিকার একমাত্র বরফ হোটেল এটি। এখানে কেবল থাকার ঘর নয়, রয়েছে বরফ-বার, হট টব এবং শরীর চাঙা করার সাউনা। পশমি চাদর, মেরুজ্যোতির আভা আর স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ নিস্তব্ধতার মাঝে হাতে খোদাই করা একটি স্যুটে রাত কাটানোর রোমাঞ্চই আলাদা। এখানে থাকার খরচ শুরু হয় ৫০০ ইউরো থেকে।

যেভাবে গড়া হয় তুষার প্রাসাদ
একটি আইস হোটেল তৈরি করা আর এক মহাকাব্য রচনা করা প্রায় একই কথা। এর প্রস্তুতি শুরু হয় সাত-আট মাস আগে থেকে। প্রথমে বরফ সংগ্রহের পালা। বসন্তের শেষে যখন বরফ সবচেয়ে স্বচ্ছ ও পুরু থাকে, তখন টর্ন রিভারের মতো নদীগুলো থেকে বিশাল বিশাল বরফের চাঁই কেটে নেওয়া হয়। এরপর সেগুলো সোলার পাওয়ারড হ্যাঙ্গারে যত্ন করে রাখা হয় পরবর্তী শীত পর্যন্ত। এরপর শুরু হয় নির্মাণযজ্ঞ। নভেম্বর মাসে যখন তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে স্থির হয়, তখন প্রায় ৯০ জন শিল্পী, ইঞ্জিনিয়ার ও শ্রমিকের এক অমানুষিক পরিশ্রমে মাত্র ৬ সপ্তাহে গড়ে ওঠে এই স্থাপত্য। নির্মাণের গোপন উপাদান ‘সনিস’। এটি তৈরিতে শত শত টন স্বচ্ছ বরফের পাশাপাশি ব্যবহৃত হয় এই বিশেষ উপাদান। এটি তুষার ও বরফের এমন এক বিশেষ মিশ্রণ, যা দেয়াল ও ছাদকে পাথরের মতো মজবুত করে।
সূত্র: আফ্রিকা নিউজ, আপুক্কা রিসোর্ট ডটকম, ইগলু-ডর্ফ জেরম্যাট ডটকম, হোটেল ডি গ্লেস ডটকম

প্রকৃতি যখন শুভ্র তুষারের চাদরে নিজেকে ঢেকে নেয়, উত্তর গোলার্ধের হিমশীতল তন্দ্রা তখন জেগে ওঠে এক ক্ষণস্থায়ী বিস্ময়ে। যার নাম আইস হোটেল। বসন্তের আগমনে যারা নিভৃতে গলে মিশে যায় নদীর পানিতে, সেই বরফ প্রাসাদগুলোই এখন বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে শীতকালীন অভিযানের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। বসন্তের প্রথম ছোঁয়া লাগলেই এই তুষার প্রাসাদগুলো নিভৃতে গলে যায়। তখন তারা ফিরে যায় আপন উৎস, নদীর বুকে। আপনি কি কখনো হিমাঙ্কের নিচে এমন বরফের বিছানায় রাত কাটানোর অদম্য রোমাঞ্চ অনুভব করতে চেয়েছেন?
অনেকে ভাবেন, বরফের ঘরে ঘুমানো মানেই জমে যাওয়া। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। রুমের তাপমাত্রা থাকে প্রায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে পর্যটকদের দেওয়া হয় বিশেষ থার্মাল স্লিপিং ব্যাগ এবং রেইনডিয়ারের চামড়া, যা শরীরের স্বাভাবিক উষ্ণতা ধরে রাখে। বাথরুম বা পোশাক পরিবর্তনের জন্য পাশেই থাকে উত্তপ্ত আধুনিক ভবন। ২০২৫ সালের এই হাড়কাঁপানো মৌসুমেও সুইডেন, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড আর কানাডায় ফিরে এসেছে এই অনন্য ‘বরফবিলাস’।

আইস হোটেল ৩৬
বিশ্বের বিখ্যাত বরফ হোটেল আইস হোটেল ৩৬। প্রতিবছর এটি নতুন করে তৈরি করা হয় এবং এর প্রধান আকর্ষণ হলো বরফের ভাস্কর্য, বরফের ঘর, বরফের বার এবং আর্কটিক কার্যকলাপ; যেমন ডগ স্লেডিং ও নর্দান লাইট দেখা। সুইডিশ ল্যাপল্যান্ডের জুকাসজারভি ভিলেজে এ বছর উদ্বোধন করা হয়েছে আইস হোটেল ৩৬। নামের সংখ্যাটিই বলে দেয়, এটি তাদের ৩৬তম সংস্করণ। এবার এখানে ১২টি আর্ট স্যুট, আইস রুম, একটি প্রধান হল এবং সেরিমনি হল থাকবে। প্রতিবছর টোর্নে নদী থেকে বরফ সংগ্রহ করে হোটেলটি তৈরি করা হয়। বসন্তে এটি গলে নদীতে ফিরে যায়। এ বছরের সবচেয়ে বড় চমক হলো বরফ দিয়ে খোদাই করা একটি পূর্ণাঙ্গ গ্র্যান্ড পিয়ানো। অদ্ভুত শোনালেও সত্যি, এটি শুধু প্রদর্শনের জন্য নয়, রীতিমতো বাজানোর যোগ্য। ১২টি দেশের ৩৩ জন তুখোড় শিল্পী তাঁদের তুলির বদলে ছেনি-হাতুড়ির কারুকার্যে ফুটিয়ে তুলেছেন একেকটি কক্ষ বা আর্ট স্যুট। কোথাও দেয়ালে খোদাই করা হিমায়িত লাইব্রেরি, আবার কোথাও গোলকগুলো মাথার ওপর ভেসে থাকার বিভ্রম তৈরি করছে। জেনে রাখুন, এই হোটেলে দুজনের জন্য এক রাত কাটানোর খরচ পড়বে প্রায় ৬০০ ইউরো।

উত্তর মেরুর অন্যান্য বরফস্বর্গ
সুইডেনের বাইরেও ফিনল্যান্ড থেকে কানাডা পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে এই হিমাঙ্ক-বিজয়ীদের আস্তানা।
ফিনল্যান্ডের আপুক্কা রিসোর্ট: ল্যাপল্যান্ডের রোভানিয়েনিতে কাচের তৈরি ইগলুতে শুয়ে আকাশের ‘নর্দান লাইটস’ বা মেরুজ্যোতি দেখা এক স্বর্গীয় অনুভূতি। কাচের ছাদের ইগলু থেকে শুরু করে তুষারাবৃত বনের মধ্য দিয়ে রেইনডিয়ারের যাত্রা পর্যন্ত, আপুক্কা রিসোর্ট আপনার আর্কটিক স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়। আগস্ট থেকে এপ্রিল পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম চলবে। এখানে খরচ শুরু হয় ৪০০ ইউরো থেকে।
সুইজারল্যান্ডের ইগলু-ডর্ফ জেরম্যাট: আল্পস পর্বতমালার ২ হাজার ৭০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই ইগলু ভিলেজ। এই ইগলু গ্রামের অবস্থান এতটাই চমৎকার যে আপনি যখন এর রোদ-ঝলমলে বারান্দায় বসে কফি খাবেন কিংবা খোলা আকাশের নিচে উষ্ণ পানিতে হট টব বা ঘূর্ণি জলধারায় গা এলিয়ে দিতে পারবেন। আর আপনার ঠিক চোখের সামনে ধরা দেবে সুইজারল্যান্ডের সব থেকে আইকনিক পাহাড় ‘ম্যাটারহর্ন’। এখানে রাত কাটাতে লাগবে ৪৫০ ইউরো।
কানাডার হোটেল ডি গ্লেস: উত্তর আমেরিকার একমাত্র বরফ হোটেল এটি। এখানে কেবল থাকার ঘর নয়, রয়েছে বরফ-বার, হট টব এবং শরীর চাঙা করার সাউনা। পশমি চাদর, মেরুজ্যোতির আভা আর স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ নিস্তব্ধতার মাঝে হাতে খোদাই করা একটি স্যুটে রাত কাটানোর রোমাঞ্চই আলাদা। এখানে থাকার খরচ শুরু হয় ৫০০ ইউরো থেকে।

যেভাবে গড়া হয় তুষার প্রাসাদ
একটি আইস হোটেল তৈরি করা আর এক মহাকাব্য রচনা করা প্রায় একই কথা। এর প্রস্তুতি শুরু হয় সাত-আট মাস আগে থেকে। প্রথমে বরফ সংগ্রহের পালা। বসন্তের শেষে যখন বরফ সবচেয়ে স্বচ্ছ ও পুরু থাকে, তখন টর্ন রিভারের মতো নদীগুলো থেকে বিশাল বিশাল বরফের চাঁই কেটে নেওয়া হয়। এরপর সেগুলো সোলার পাওয়ারড হ্যাঙ্গারে যত্ন করে রাখা হয় পরবর্তী শীত পর্যন্ত। এরপর শুরু হয় নির্মাণযজ্ঞ। নভেম্বর মাসে যখন তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে স্থির হয়, তখন প্রায় ৯০ জন শিল্পী, ইঞ্জিনিয়ার ও শ্রমিকের এক অমানুষিক পরিশ্রমে মাত্র ৬ সপ্তাহে গড়ে ওঠে এই স্থাপত্য। নির্মাণের গোপন উপাদান ‘সনিস’। এটি তৈরিতে শত শত টন স্বচ্ছ বরফের পাশাপাশি ব্যবহৃত হয় এই বিশেষ উপাদান। এটি তুষার ও বরফের এমন এক বিশেষ মিশ্রণ, যা দেয়াল ও ছাদকে পাথরের মতো মজবুত করে।
সূত্র: আফ্রিকা নিউজ, আপুক্কা রিসোর্ট ডটকম, ইগলু-ডর্ফ জেরম্যাট ডটকম, হোটেল ডি গ্লেস ডটকম

পাঁচ ব্যবসায়ীর মধ্যে আমিই ছিলাম একমাত্র সংবাদকর্মী। কুয়াকাটার উদ্দেশে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয় চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি। আগেই বলে রাখা ভালো, আমরা সফরের সূচি ঠিক করি একটু ভিন্নভাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সরাসরি কুয়াকাটায় না গিয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই
১১ জানুয়ারি ২০২৩
নগুচি বলেছিলেন, ‘টিভিতে এভারেস্টের যে সুন্দর ছবি দেখতাম, ভেবেছিলাম পাহাড়টি তেমনই হবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি চারদিকে শুধু আবর্জনা।’ সেই শুরু; নগুচি ২০০০ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে প্রায় ৯০ টন বর্জ্য সরিয়েছিলেন। কিন্তু আজ এখন সমস্যাটি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।...
১২ ঘণ্টা আগে
বইয়ের পাতার মৃদু মর্মর আর শতাব্দীর প্রাচীন প্রতিধ্বনি। এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে এই সুর যেন একই সুতোয় গাঁথা। মেলবোর্ন থেকে রিও, বিশ্বের এই পাঁচটি অনন্য গ্রন্থাগার একটি বিশেষ দর্শনকে ধারণ করে আছে। পড়া মানে কেবল তথ্যের আহরণ নয়, বরং একটি বিশেষ স্থাপত্যের আবহে নিজেকে সঁপে দেওয়া। মঠের নিস্তব্ধতা থেকে
১৮ ঘণ্টা আগে
আজ নিজেকে সুপারম্যান মনে করতে পারেন। অফিসে বা ঘরে সবাইকে হুকুম দেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। তবে সাবধান! মঙ্গল আপনার রাশিতে একটু বেশিই গরম, তাই গরম চা খেতে গিয়ে জিব পুড়িয়ে বা কারোর সঙ্গে অযথা তর্কে জড়িয়ে ফিউজ ওড়াবেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রশংসা করুন, কিন্তু অন্যের সামনে নয়।
২১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
আজ নিজেকে সুপারম্যান মনে করতে পারেন। অফিসে বা ঘরে সবাইকে হুকুম দেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। তবে সাবধান! মঙ্গল আপনার রাশিতে একটু বেশিই গরম, তাই গরম চা খেতে গিয়ে জিব পুড়িয়ে বা কারোর সঙ্গে অযথা তর্কে জড়িয়ে ফিউজ ওড়াবেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রশংসা করুন, কিন্তু অন্যের সামনে নয়।
বৃষ
আজকের মূল মনোযোগ থাকবে পেটের দিকে। বিদেশের কোনো কাজ বা দূরে ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে, কিন্তু মন পড়ে থাকবে বিরিয়ানির হাঁড়িতে। আর্থিক দিক থেকে দিনটি ভালো, তবে খরচ কমাতে আজ বন্ধুর পকেটের দিকে নজর রাখুন! মনে রাখবেন, বাজেট মানে শুধুই ডায়েরির পাতা নয়, মানিব্যাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা।
মিথুন
আজ মনে হবে আপনি একই সঙ্গে পঞ্চগড় আর লালপুরে আছেন। পরস্পরবিরোধী আবেগ আপনাকে ভোগাবে। একদিকে মনে হবে খুব কাজ করি, অন্যদিকে লেপ ছেড়ে উঠতে ইচ্ছা করবে না। বিবাহিতদের জন্য দিনটি ‘জি হুজুর’ বলে কাটানোই নিরাপদ। সাতটি বিষাদ ও বিচ্ছেদের গান শুনুন, আর না হলে অন্তত সাতবার দীর্ঘশ্বাস ফেলুন।
কর্কট
আজ আপনার আবেগ সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়বে। তুচ্ছ কারণে চোখে পানি আসতে পারে। ব্যবসায় বড় বিনিয়োগের প্ল্যান আজ ড্রয়ারেই থাক। কারণ, আপনার বিচারবুদ্ধি আজ আবেগের বন্যায় ভাসছে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান, কিন্তু ঝগড়া করবেন না। ফেসবুক বা ইনস্টায় ইমোশনাল স্ট্যাটাস দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
সিংহ
আজ যেখানেই যাবেন, লাইমলাইট আপনার ওপর থাকবে। গ্রহ বলছে আপনি প্রচুর আত্মবিশ্বাসী। তবে অফিসে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় একটু ‘ভলিউম’ কমিয়ে রাখুন, নতুবা তারা আপনার রাজকীয় গর্জনে ভয় পেয়ে ছুটি নিয়ে নিতে পারে! বড়দের সম্মান দিন, আর ছোটদের চকলেট খাইয়ে শান্ত রাখুন।
কন্যা
পারিপার্শ্বিক অস্থিরতা আপনাকে আজ একটু খিটখিটে করে তুলতে পারে। চাইবেন সবকিছু একদম নিখুঁত হোক, কিন্তু পৃথিবীটা তো আপনার নোটবই নয়! সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরুন, সঙ্গীর ভুল ধরাটা আজকের মতো অফ রাখুন। ঘর গোছাতে গিয়ে নিজের মাথাটা বেশি অগোছালো করবেন না।
তুলা
শরীর আজ বেশ চনমনে থাকবে। অনেক দিন ধরে আটকে থাকা কাজ ঝটপট শেষ করে ফেলবেন। তবে সাবধান, সংসারের বিবাদ আজ আপনার শান্তির রাজ্যে হানা দিতে পারে। টাকাপয়সার যোগ ভালো হলেও পকেটে ফুটো যেন না হয় খেয়াল রাখুন। অহেতুক তর্কে ‘মৌনতাই শ্রেয়’।
বৃশ্চিক
আজ আপনি চার মাথার মোড়ে দাঁড়িয়ে কনফিউজড বোধ করবেন—ডানে যাব না বাঁয়ে? রিয়েল এস্টেট বা জমি-সংক্রান্ত কাজে লাভের মুখ দেখতে পারেন। প্রেমে আজ রসপিঠার মতো মিষ্টি সম্পর্ক থাকবে, যদি না আপনি পুরোনো কোনো ঝগড়া টেনে আনেন। মনের কথা শুনুন, কিন্তু গুগল ম্যাপকেও একটু বিশ্বাস করুন।
ধনু
আজ আপনার রাশিতে গ্রহের মেলা বসেছে! আজ গোল্ডেন টাইম এনজয় করবেন। সৃজনশীল কাজে ফাটিয়ে দেবেন। টাকাপয়সা আসার প্রবল যোগ, কিন্তু সেই খুশিতে সবাইকে অকাতরে খাওয়াতে গিয়ে যেন নিজেকে উপোস করতে না হয়! মাজারে একটু শিরনি দিয়ে আসুন, মাথা ঠান্ডা থাকবে।
মকর
আজ আপনাকে হাড়ভাঙা খাটুনি খাটতে হতে পারে। তবে ফল হবে মিষ্টি। টাকা একদিকে পকেটে ঢুকবে, অন্যদিকে বিদ্যুৎ গতিতে বেরিয়ে যাবে। বিদেশি কোম্পানি বা দূরপাল্লার যোগাযোগ থেকে লাভের খবর আসতে পারে। উপার্জনের খাতাটা একটু আড়াল করে রাখুন।
কুম্ভ
আজ নতুন লোকজনের সঙ্গে আলাপ হবে, যা জীবনের মানে বদলে দিতে পারে। সাধারণ কাজও আপনি অসাধারণভাবে করবেন। তবে অতিরিক্ত উৎসাহে যেন কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি না হতে হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাসটা অন্তত আজকের জন্য ট্রাই করুন।
মীন
মীন রাশির জাতকেরা আজ কল্পনার জগতে ভাসবেন। ক্যারিয়ারে বড় কিছু করার সুযোগ আসবে। তবে বাস্তবে পা রাখাটা জরুরি। আর্থিক হিসাব মেলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে পারেন। বন্ধুর সাহায্য নিলে কাজ সহজ হবে। আকাশকুসুম চিন্তা না করে হাতের কাজটা আগে শেষ করুন।

মেষ
আজ নিজেকে সুপারম্যান মনে করতে পারেন। অফিসে বা ঘরে সবাইকে হুকুম দেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। তবে সাবধান! মঙ্গল আপনার রাশিতে একটু বেশিই গরম, তাই গরম চা খেতে গিয়ে জিব পুড়িয়ে বা কারোর সঙ্গে অযথা তর্কে জড়িয়ে ফিউজ ওড়াবেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রশংসা করুন, কিন্তু অন্যের সামনে নয়।
বৃষ
আজকের মূল মনোযোগ থাকবে পেটের দিকে। বিদেশের কোনো কাজ বা দূরে ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে, কিন্তু মন পড়ে থাকবে বিরিয়ানির হাঁড়িতে। আর্থিক দিক থেকে দিনটি ভালো, তবে খরচ কমাতে আজ বন্ধুর পকেটের দিকে নজর রাখুন! মনে রাখবেন, বাজেট মানে শুধুই ডায়েরির পাতা নয়, মানিব্যাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা।
মিথুন
আজ মনে হবে আপনি একই সঙ্গে পঞ্চগড় আর লালপুরে আছেন। পরস্পরবিরোধী আবেগ আপনাকে ভোগাবে। একদিকে মনে হবে খুব কাজ করি, অন্যদিকে লেপ ছেড়ে উঠতে ইচ্ছা করবে না। বিবাহিতদের জন্য দিনটি ‘জি হুজুর’ বলে কাটানোই নিরাপদ। সাতটি বিষাদ ও বিচ্ছেদের গান শুনুন, আর না হলে অন্তত সাতবার দীর্ঘশ্বাস ফেলুন।
কর্কট
আজ আপনার আবেগ সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়বে। তুচ্ছ কারণে চোখে পানি আসতে পারে। ব্যবসায় বড় বিনিয়োগের প্ল্যান আজ ড্রয়ারেই থাক। কারণ, আপনার বিচারবুদ্ধি আজ আবেগের বন্যায় ভাসছে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান, কিন্তু ঝগড়া করবেন না। ফেসবুক বা ইনস্টায় ইমোশনাল স্ট্যাটাস দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
সিংহ
আজ যেখানেই যাবেন, লাইমলাইট আপনার ওপর থাকবে। গ্রহ বলছে আপনি প্রচুর আত্মবিশ্বাসী। তবে অফিসে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় একটু ‘ভলিউম’ কমিয়ে রাখুন, নতুবা তারা আপনার রাজকীয় গর্জনে ভয় পেয়ে ছুটি নিয়ে নিতে পারে! বড়দের সম্মান দিন, আর ছোটদের চকলেট খাইয়ে শান্ত রাখুন।
কন্যা
পারিপার্শ্বিক অস্থিরতা আপনাকে আজ একটু খিটখিটে করে তুলতে পারে। চাইবেন সবকিছু একদম নিখুঁত হোক, কিন্তু পৃথিবীটা তো আপনার নোটবই নয়! সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরুন, সঙ্গীর ভুল ধরাটা আজকের মতো অফ রাখুন। ঘর গোছাতে গিয়ে নিজের মাথাটা বেশি অগোছালো করবেন না।
তুলা
শরীর আজ বেশ চনমনে থাকবে। অনেক দিন ধরে আটকে থাকা কাজ ঝটপট শেষ করে ফেলবেন। তবে সাবধান, সংসারের বিবাদ আজ আপনার শান্তির রাজ্যে হানা দিতে পারে। টাকাপয়সার যোগ ভালো হলেও পকেটে ফুটো যেন না হয় খেয়াল রাখুন। অহেতুক তর্কে ‘মৌনতাই শ্রেয়’।
বৃশ্চিক
আজ আপনি চার মাথার মোড়ে দাঁড়িয়ে কনফিউজড বোধ করবেন—ডানে যাব না বাঁয়ে? রিয়েল এস্টেট বা জমি-সংক্রান্ত কাজে লাভের মুখ দেখতে পারেন। প্রেমে আজ রসপিঠার মতো মিষ্টি সম্পর্ক থাকবে, যদি না আপনি পুরোনো কোনো ঝগড়া টেনে আনেন। মনের কথা শুনুন, কিন্তু গুগল ম্যাপকেও একটু বিশ্বাস করুন।
ধনু
আজ আপনার রাশিতে গ্রহের মেলা বসেছে! আজ গোল্ডেন টাইম এনজয় করবেন। সৃজনশীল কাজে ফাটিয়ে দেবেন। টাকাপয়সা আসার প্রবল যোগ, কিন্তু সেই খুশিতে সবাইকে অকাতরে খাওয়াতে গিয়ে যেন নিজেকে উপোস করতে না হয়! মাজারে একটু শিরনি দিয়ে আসুন, মাথা ঠান্ডা থাকবে।
মকর
আজ আপনাকে হাড়ভাঙা খাটুনি খাটতে হতে পারে। তবে ফল হবে মিষ্টি। টাকা একদিকে পকেটে ঢুকবে, অন্যদিকে বিদ্যুৎ গতিতে বেরিয়ে যাবে। বিদেশি কোম্পানি বা দূরপাল্লার যোগাযোগ থেকে লাভের খবর আসতে পারে। উপার্জনের খাতাটা একটু আড়াল করে রাখুন।
কুম্ভ
আজ নতুন লোকজনের সঙ্গে আলাপ হবে, যা জীবনের মানে বদলে দিতে পারে। সাধারণ কাজও আপনি অসাধারণভাবে করবেন। তবে অতিরিক্ত উৎসাহে যেন কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি না হতে হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাসটা অন্তত আজকের জন্য ট্রাই করুন।
মীন
মীন রাশির জাতকেরা আজ কল্পনার জগতে ভাসবেন। ক্যারিয়ারে বড় কিছু করার সুযোগ আসবে। তবে বাস্তবে পা রাখাটা জরুরি। আর্থিক হিসাব মেলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে পারেন। বন্ধুর সাহায্য নিলে কাজ সহজ হবে। আকাশকুসুম চিন্তা না করে হাতের কাজটা আগে শেষ করুন।

পাঁচ ব্যবসায়ীর মধ্যে আমিই ছিলাম একমাত্র সংবাদকর্মী। কুয়াকাটার উদ্দেশে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয় চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি। আগেই বলে রাখা ভালো, আমরা সফরের সূচি ঠিক করি একটু ভিন্নভাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সরাসরি কুয়াকাটায় না গিয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই
১১ জানুয়ারি ২০২৩
নগুচি বলেছিলেন, ‘টিভিতে এভারেস্টের যে সুন্দর ছবি দেখতাম, ভেবেছিলাম পাহাড়টি তেমনই হবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি চারদিকে শুধু আবর্জনা।’ সেই শুরু; নগুচি ২০০০ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে প্রায় ৯০ টন বর্জ্য সরিয়েছিলেন। কিন্তু আজ এখন সমস্যাটি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।...
১২ ঘণ্টা আগে
বইয়ের পাতার মৃদু মর্মর আর শতাব্দীর প্রাচীন প্রতিধ্বনি। এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে এই সুর যেন একই সুতোয় গাঁথা। মেলবোর্ন থেকে রিও, বিশ্বের এই পাঁচটি অনন্য গ্রন্থাগার একটি বিশেষ দর্শনকে ধারণ করে আছে। পড়া মানে কেবল তথ্যের আহরণ নয়, বরং একটি বিশেষ স্থাপত্যের আবহে নিজেকে সঁপে দেওয়া। মঠের নিস্তব্ধতা থেকে
১৮ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতি যখন শুভ্র তুষারের চাদরে নিজেকে ঢেকে নেয়, উত্তর গোলার্ধের হিমশীতল তন্দ্রা তখন জেগে ওঠে এক ক্ষণস্থায়ী বিস্ময়ে। যার নাম আইস হোটেল। বসন্তের আগমনে যারা নিভৃতে গলে মিশে যায় নদীর পানিতে, সেই বরফ প্রাসাদগুলোই এখন বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে শীতকালীন অভিযানের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। বসন্তের প্রথম ছোঁয়া
২০ ঘণ্টা আগে