
সাম্প্রতিক সময়ে পরপর অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে রাজধানী ঢাকাসহ পুরো দেশ। কয়েক সেকেন্ডের কম্পনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সর্বত্র। এই হঠাৎ কম্পন-মুহূর্তে শিক্ষার্থীরা তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। ভূমিকম্পের প্রস্তুতি গ্রহণ এবং ভবিষ্যতে দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক খান।
আব্দুর রাজ্জাক খান

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে পরপর কয়েকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এই ধারাবাহিক ভূমিকম্পগুলোকে কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?
বাংলাদেশের আশপাশে ভূমিকম্পের প্রায় ছয়টি উৎপত্তিস্থল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি মিয়ানমার থেকে নোয়াখালী পর্যন্ত। তবে আরেকটি নোয়াখালী থেকে সিলেট পর্যন্ত; এটি হলো প্লেট বাউন্ডারি ২। সম্প্রতি হওয়া ভূমিকম্পগুলো এই প্লেট বাউন্ডারিতে হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখানে অনেক শক্তি জমা হয়ে থাকায় ভবিষ্যতে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। এ ছাড়া তৃতীয় এলাকা হলো প্লেট বাউন্ডারি ৩, যেটি সিলেট থেকে ভারতের দিকে চলে গেছে। এখানে এ পর্যন্ত দুটি ভূমিকম্প হয়েছে ৭ ও ৭.৫ মাত্রার। একটি ১৯১৮ সালে, শ্রীমঙ্গলে; আরেকটি ১৮৬৯ সালে, কাছাড় ভূমিকম্প। চতুর্থ উৎস হলো ডাউকি ফল্ট, যেখানে ১৮৯৭ সালে ৮.১ মাত্রার গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকোয়েক হয়েছে। এতে ঢাকার আহসান মঞ্জিল ও সোনামসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এ ছাড়া মধুপুর ফল্ট, যমুনা সেতুর কাছে বগুড়া ও শেরপুরে ১৮৮৫ সালে ৭.১ মাত্রার বেঙ্গল আর্থকোয়েক হয়েছিল। এ থেকে বোঝা যায়, সামনে আরও ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এর মানে কি বড় কোনো ভূমিকম্পের আভাস দিচ্ছেন?
হ্যাঁ। বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতির ইতিহাস অনুযায়ী ৭ মাত্রার ভূমিকম্প পাঁচ-ছয়বার ঘটেছে, ৮ মাত্রার দুবার। তাই ঝুঁকি সব সময় আছে। ভূমিকম্প এখন না এলেও ভবিষ্যতে আসবে এবং সে অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
ঢাকার ভবনগুলোর গুণগত মান দুর্বল হওয়ার কারন কী?
নকশা ভালো হলেও মাঠপর্যায়ে নির্মাণে অনেক সময় তা ঠিকভাবে মেনে চলা হয় না। সারা বিশ্বে সাধারণত যে ব্যক্তি নকশা করেন, তিনি নিজেই কনস্ট্রাকশনের সময় তা সুপারভাইজ করেন। কিন্তু আমাদের দেশে নকশা যিনি তৈরি করেন, তিনি প্রায়ই সুপারভিশনে অংশ নেন না। সে কারণে সুপারভিশনের অভাবে ভবনের গুণগত মান সন্তোষজনক থাকে না।
কোন ভবনে কী ধরনের দুর্বলতা দেখা দেয়? সমাধানের উপায় কী?
আমাদের ভবন মূলত দুই ধরনের। একটি ইটের ভবন, আরেকটি বিম-কলাম পদ্ধতির ভবন। ইটের দেয়াল পুরো ভবনের ভার বহন করে। অর্থাৎ, দেয়ালে কোনো ক্ষতি হলে পুরো ভবন অচল হয়ে পড়তে পারে। তাই ইটের দেয়ালে ক্র্যাক দেখামাত্র মজবুত করতে হবে। বিম-কলাম পদ্ধতির ভবনে লোড প্রথমে স্ল্যাবে আসে, তারপর বিমে এবং শেষে কলামে পৌঁছায়। কলাম যদি কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে পুরো ভবন ঝুঁকিতে পড়ে যাবে। তাই কলামকে কোনোভাবেই ক্র্যাক হতে দেওয়া যাবে না। যদি ক্র্যাক দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই সেটি দ্রুত মজবুত করতে হবে।
ভূমিকম্প হলে শিক্ষার্থীদের নিরাপদভাবে সরিয়ে নিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত?
ভূমিকম্প হলে ভয় পেয়ে হঠাৎ বের হওয়া যাবে না। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে দেয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে মাথায় হাত দিয়ে নিরাপদ অবস্থান নিতে হবে। পরবর্তী সময়ে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে বের হয়ে ফাঁকা জায়গায় নিরাপদে অবস্থান করতে হবে।
ভূমিকম্পের পরে কীভাবে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে? আমাদের দেশে ভূমিকম্প-সহনীয় ভবন নির্মাণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে কোন প্রযুক্তি বা কৌশল ব্যবহার জরুরি?
তুরস্কে ভূমিকম্পে ভবন ধসে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল। পরে উদ্ধারকাজে যে খরচ হয়েছিল, তার গড় হিসাব করে দেখা যায়, একজনকে উদ্ধারে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। তুলনামূলকভাবে আমাদের দেশে যদি একটি পাঁচ কাঠার প্লটে ১০টি ফ্ল্যাট থাকে এবং সেখানে ৫০ জন মানুষ থাকে, ভূমিকম্প-সহনীয় করার খরচ মাত্র ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ তিনজন মানুষকে উদ্ধার করার খরচের পরিবর্তে একই অর্থে পুরো ভবনকে মজবুত করা সম্ভব। আমাদের দেশে গার্মেন্টস শিল্পে ১০ বছর ধরে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করছি, সেটি ব্যবহার করলেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব।
ভূমিকম্পে উদ্ধার কার্যক্রম দ্রুত ও কার্যকর করতে ফায়ার সার্ভিস কী ধরনের প্রস্তুতি নিতে পারে? সরঞ্জাম, মহড়া এবং ভলান্টিয়ার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কী উদ্যোগ নেওয়া দরকার?
আমাদের ফায়ার সার্ভিস যথেষ্ট সক্ষম; তাদের প্রশিক্ষণ আছে এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও যথেষ্ট। তবে জরুরি বিষয় হলো ভুমিকম্প-সহনীয় ভবন তৈরি করা, নিয়মিত মহড়ার আয়োজন করা, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সহযোগী একটি ফোর্স গঠন এবং পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভলান্টিয়ার তৈরি করা। রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় দেখা গেছে, ছোটখাটো সরঞ্জাম নিয়ে ভলান্টিয়াররাই উদ্ধারকাজে বেশি সহায়তা করেছিল।
সুতরাং, আমাদের মূল মনোযোগ দেওয়া উচিত ভলান্টিয়ার তৈরির দিকে। ফায়ার সার্ভিসে আরও বেশি লোকবল প্রয়োজন। ঢাকায় প্রায় ১৮টি ফায়ার সার্ভিস কেন্দ্রকে ভিত্তি করে, যদি প্রতিটিতে ১ হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভলান্টিয়ার তৈরি করা যায়, তাহলে নিরাপত্তাব্যবস্থাকে অনেক শক্তিশালী করা সম্ভব।
ভূমিকম্প-আতঙ্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ ধরনের আতঙ্ক থেকে রক্ষা পেতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কীভাবে মানসিক প্রস্তুতি নিতে পারে এবং মহড়া আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে?
জাপান, নিউজিল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি মাসে না হলেও প্রতি দুই মাস পর একটি মহড়া হয়। আগুনের বেল বাজিয়ে দেয়, অথবা ভূমিকম্পের বেল বাজানো হয়। শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে কোথায় দাঁড়াতে হবে, কীভাবে বের হতে হবে, তা চিহ্নিত করা থাকে। অর্থাৎ হঠাৎ করে ভূমিকম্প হলে সাইকোলজিক্যাল ট্রমা হয়। এ থেকে বাঁচতে নিয়মিত মহড়া করতে হবে। সবার মাথায় ঢুকিয়ে ফেলা যে ভূমিকম্প আসতে পারে, সে অনুযায়ী প্রস্তুতি রাখতে হবে। এর বিকল্প নেই।
দেশে ভূমিকম্পে শিক্ষার্থীরা শঙ্কিত

এখনই কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন
সামিহা সিরাজী লাজ
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও গৌরবের ধারক আমাদের রাজধানী ঢাকায় সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ভূমিকম্প হয়েছে। ঢাকা শহরের পুরোনো দালান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা ও অসংখ্য বহুতল ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। ভূতত্ত্ববিদেরা জানাচ্ছেন, ৮ মাত্রার ভূমিকম্প শহরের জন্য বিপজ্জনক। রাজউক বলছে, ৬.৯ মাত্রার কম্পনে ৪০ শতাংশ ভবন ধসে প্রায় ২ লাখ মানুষ নিহত হতে পারে। নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৩০০ ভবনকে ‘রেড অ্যালার্ট’ ঘোষণা করেছে। নদীমাতৃক এই দেশে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ঢাকা পরিণত হতে পারে বিপর্যয়ের কেন্দ্রে। নিরাপদ ভবন এবং প্রস্তুতির জন্য এখনই সবার কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।

অজানা এক ভয়ের মুখোমুখি
মুজাহিদ আল রিফাত
শিক্ষার্থী, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
ঢাকার ব্যস্ত রাস্তায় হঠাৎ ভূ-কম্পন মানুষকে আতঙ্কিত করেছে। শহর ঘনবসতি, নরম মাটি, পুরোনো ও নকশাবহির্ভূত ভবন বড় বিপদের ইঙ্গিত দেয়। ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনাগুলো পর্যায়ক্রমে পরিদর্শন করা হয় না এবং উদ্ধারকারী সংস্থার সক্ষমতা বড় দুর্যোগের তুলনায় সীমিত। মানুষও মানসিকভাবে প্রস্তুত নয়; জরুরি ব্যাগ, নিরাপদ স্থান বা মহড়া নেই। আইন থাকলেও প্রয়োগ দুর্বল। বড় কোনো কম্পনে দ্রুত উদ্ধার সম্ভব হবে কি না সন্দেহজনক। তাই ঢাকা এখন অজানা এক ভয়ের মুখোমুখি, যেখানে পরবর্তী কম্পন শুধু নাড়াবে না, বরং অপ্রস্তুতির কঠিন বাস্তবতাও প্রকাশ করবে।

শহরে খোলা জায়গার অভাব
সাজিয়া রহমান ঈশি
শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও দুর্বল ভবন নির্মাণ ঢাকার ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। খোলা মাঠ ও নিরাপদ স্থান কমে যাওয়ায় জরুরি আশ্রয় নেওয়া কঠিন হচ্ছে। অধিকাংশ ভবন ভূমিকম্প সহনশীল নয় এবং সাধারণ মানুষও করণীয় জানে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উদ্ধারকারী দলের সক্ষমতা বাড়ানো, খোলা স্থান সংরক্ষণ ও বিল্ডিং কোড কার্যকর করা জরুরি। অবৈধ উচ্ছেদ ও সঠিক নগরায়ণ ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতে শক্তিশালী ভূমিকম্প দেশের জন্য অপ্রতিরোধ্য মানসিক ও আর্থিক বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে। সম্মিলিত প্রস্তুতিই একমাত্র নিরাপত্তার পথ।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে পরপর কয়েকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এই ধারাবাহিক ভূমিকম্পগুলোকে কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?
বাংলাদেশের আশপাশে ভূমিকম্পের প্রায় ছয়টি উৎপত্তিস্থল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি মিয়ানমার থেকে নোয়াখালী পর্যন্ত। তবে আরেকটি নোয়াখালী থেকে সিলেট পর্যন্ত; এটি হলো প্লেট বাউন্ডারি ২। সম্প্রতি হওয়া ভূমিকম্পগুলো এই প্লেট বাউন্ডারিতে হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখানে অনেক শক্তি জমা হয়ে থাকায় ভবিষ্যতে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। এ ছাড়া তৃতীয় এলাকা হলো প্লেট বাউন্ডারি ৩, যেটি সিলেট থেকে ভারতের দিকে চলে গেছে। এখানে এ পর্যন্ত দুটি ভূমিকম্প হয়েছে ৭ ও ৭.৫ মাত্রার। একটি ১৯১৮ সালে, শ্রীমঙ্গলে; আরেকটি ১৮৬৯ সালে, কাছাড় ভূমিকম্প। চতুর্থ উৎস হলো ডাউকি ফল্ট, যেখানে ১৮৯৭ সালে ৮.১ মাত্রার গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকোয়েক হয়েছে। এতে ঢাকার আহসান মঞ্জিল ও সোনামসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এ ছাড়া মধুপুর ফল্ট, যমুনা সেতুর কাছে বগুড়া ও শেরপুরে ১৮৮৫ সালে ৭.১ মাত্রার বেঙ্গল আর্থকোয়েক হয়েছিল। এ থেকে বোঝা যায়, সামনে আরও ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এর মানে কি বড় কোনো ভূমিকম্পের আভাস দিচ্ছেন?
হ্যাঁ। বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতির ইতিহাস অনুযায়ী ৭ মাত্রার ভূমিকম্প পাঁচ-ছয়বার ঘটেছে, ৮ মাত্রার দুবার। তাই ঝুঁকি সব সময় আছে। ভূমিকম্প এখন না এলেও ভবিষ্যতে আসবে এবং সে অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
ঢাকার ভবনগুলোর গুণগত মান দুর্বল হওয়ার কারন কী?
নকশা ভালো হলেও মাঠপর্যায়ে নির্মাণে অনেক সময় তা ঠিকভাবে মেনে চলা হয় না। সারা বিশ্বে সাধারণত যে ব্যক্তি নকশা করেন, তিনি নিজেই কনস্ট্রাকশনের সময় তা সুপারভাইজ করেন। কিন্তু আমাদের দেশে নকশা যিনি তৈরি করেন, তিনি প্রায়ই সুপারভিশনে অংশ নেন না। সে কারণে সুপারভিশনের অভাবে ভবনের গুণগত মান সন্তোষজনক থাকে না।
কোন ভবনে কী ধরনের দুর্বলতা দেখা দেয়? সমাধানের উপায় কী?
আমাদের ভবন মূলত দুই ধরনের। একটি ইটের ভবন, আরেকটি বিম-কলাম পদ্ধতির ভবন। ইটের দেয়াল পুরো ভবনের ভার বহন করে। অর্থাৎ, দেয়ালে কোনো ক্ষতি হলে পুরো ভবন অচল হয়ে পড়তে পারে। তাই ইটের দেয়ালে ক্র্যাক দেখামাত্র মজবুত করতে হবে। বিম-কলাম পদ্ধতির ভবনে লোড প্রথমে স্ল্যাবে আসে, তারপর বিমে এবং শেষে কলামে পৌঁছায়। কলাম যদি কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে পুরো ভবন ঝুঁকিতে পড়ে যাবে। তাই কলামকে কোনোভাবেই ক্র্যাক হতে দেওয়া যাবে না। যদি ক্র্যাক দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই সেটি দ্রুত মজবুত করতে হবে।
ভূমিকম্প হলে শিক্ষার্থীদের নিরাপদভাবে সরিয়ে নিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত?
ভূমিকম্প হলে ভয় পেয়ে হঠাৎ বের হওয়া যাবে না। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে দেয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে মাথায় হাত দিয়ে নিরাপদ অবস্থান নিতে হবে। পরবর্তী সময়ে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে বের হয়ে ফাঁকা জায়গায় নিরাপদে অবস্থান করতে হবে।
ভূমিকম্পের পরে কীভাবে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে? আমাদের দেশে ভূমিকম্প-সহনীয় ভবন নির্মাণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে কোন প্রযুক্তি বা কৌশল ব্যবহার জরুরি?
তুরস্কে ভূমিকম্পে ভবন ধসে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল। পরে উদ্ধারকাজে যে খরচ হয়েছিল, তার গড় হিসাব করে দেখা যায়, একজনকে উদ্ধারে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। তুলনামূলকভাবে আমাদের দেশে যদি একটি পাঁচ কাঠার প্লটে ১০টি ফ্ল্যাট থাকে এবং সেখানে ৫০ জন মানুষ থাকে, ভূমিকম্প-সহনীয় করার খরচ মাত্র ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ তিনজন মানুষকে উদ্ধার করার খরচের পরিবর্তে একই অর্থে পুরো ভবনকে মজবুত করা সম্ভব। আমাদের দেশে গার্মেন্টস শিল্পে ১০ বছর ধরে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করছি, সেটি ব্যবহার করলেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব।
ভূমিকম্পে উদ্ধার কার্যক্রম দ্রুত ও কার্যকর করতে ফায়ার সার্ভিস কী ধরনের প্রস্তুতি নিতে পারে? সরঞ্জাম, মহড়া এবং ভলান্টিয়ার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কী উদ্যোগ নেওয়া দরকার?
আমাদের ফায়ার সার্ভিস যথেষ্ট সক্ষম; তাদের প্রশিক্ষণ আছে এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও যথেষ্ট। তবে জরুরি বিষয় হলো ভুমিকম্প-সহনীয় ভবন তৈরি করা, নিয়মিত মহড়ার আয়োজন করা, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সহযোগী একটি ফোর্স গঠন এবং পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভলান্টিয়ার তৈরি করা। রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় দেখা গেছে, ছোটখাটো সরঞ্জাম নিয়ে ভলান্টিয়াররাই উদ্ধারকাজে বেশি সহায়তা করেছিল।
সুতরাং, আমাদের মূল মনোযোগ দেওয়া উচিত ভলান্টিয়ার তৈরির দিকে। ফায়ার সার্ভিসে আরও বেশি লোকবল প্রয়োজন। ঢাকায় প্রায় ১৮টি ফায়ার সার্ভিস কেন্দ্রকে ভিত্তি করে, যদি প্রতিটিতে ১ হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভলান্টিয়ার তৈরি করা যায়, তাহলে নিরাপত্তাব্যবস্থাকে অনেক শক্তিশালী করা সম্ভব।
ভূমিকম্প-আতঙ্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ ধরনের আতঙ্ক থেকে রক্ষা পেতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কীভাবে মানসিক প্রস্তুতি নিতে পারে এবং মহড়া আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে?
জাপান, নিউজিল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি মাসে না হলেও প্রতি দুই মাস পর একটি মহড়া হয়। আগুনের বেল বাজিয়ে দেয়, অথবা ভূমিকম্পের বেল বাজানো হয়। শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে কোথায় দাঁড়াতে হবে, কীভাবে বের হতে হবে, তা চিহ্নিত করা থাকে। অর্থাৎ হঠাৎ করে ভূমিকম্প হলে সাইকোলজিক্যাল ট্রমা হয়। এ থেকে বাঁচতে নিয়মিত মহড়া করতে হবে। সবার মাথায় ঢুকিয়ে ফেলা যে ভূমিকম্প আসতে পারে, সে অনুযায়ী প্রস্তুতি রাখতে হবে। এর বিকল্প নেই।
দেশে ভূমিকম্পে শিক্ষার্থীরা শঙ্কিত

এখনই কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন
সামিহা সিরাজী লাজ
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও গৌরবের ধারক আমাদের রাজধানী ঢাকায় সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ভূমিকম্প হয়েছে। ঢাকা শহরের পুরোনো দালান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা ও অসংখ্য বহুতল ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। ভূতত্ত্ববিদেরা জানাচ্ছেন, ৮ মাত্রার ভূমিকম্প শহরের জন্য বিপজ্জনক। রাজউক বলছে, ৬.৯ মাত্রার কম্পনে ৪০ শতাংশ ভবন ধসে প্রায় ২ লাখ মানুষ নিহত হতে পারে। নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৩০০ ভবনকে ‘রেড অ্যালার্ট’ ঘোষণা করেছে। নদীমাতৃক এই দেশে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ঢাকা পরিণত হতে পারে বিপর্যয়ের কেন্দ্রে। নিরাপদ ভবন এবং প্রস্তুতির জন্য এখনই সবার কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।

অজানা এক ভয়ের মুখোমুখি
মুজাহিদ আল রিফাত
শিক্ষার্থী, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
ঢাকার ব্যস্ত রাস্তায় হঠাৎ ভূ-কম্পন মানুষকে আতঙ্কিত করেছে। শহর ঘনবসতি, নরম মাটি, পুরোনো ও নকশাবহির্ভূত ভবন বড় বিপদের ইঙ্গিত দেয়। ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনাগুলো পর্যায়ক্রমে পরিদর্শন করা হয় না এবং উদ্ধারকারী সংস্থার সক্ষমতা বড় দুর্যোগের তুলনায় সীমিত। মানুষও মানসিকভাবে প্রস্তুত নয়; জরুরি ব্যাগ, নিরাপদ স্থান বা মহড়া নেই। আইন থাকলেও প্রয়োগ দুর্বল। বড় কোনো কম্পনে দ্রুত উদ্ধার সম্ভব হবে কি না সন্দেহজনক। তাই ঢাকা এখন অজানা এক ভয়ের মুখোমুখি, যেখানে পরবর্তী কম্পন শুধু নাড়াবে না, বরং অপ্রস্তুতির কঠিন বাস্তবতাও প্রকাশ করবে।

শহরে খোলা জায়গার অভাব
সাজিয়া রহমান ঈশি
শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও দুর্বল ভবন নির্মাণ ঢাকার ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। খোলা মাঠ ও নিরাপদ স্থান কমে যাওয়ায় জরুরি আশ্রয় নেওয়া কঠিন হচ্ছে। অধিকাংশ ভবন ভূমিকম্প সহনশীল নয় এবং সাধারণ মানুষও করণীয় জানে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উদ্ধারকারী দলের সক্ষমতা বাড়ানো, খোলা স্থান সংরক্ষণ ও বিল্ডিং কোড কার্যকর করা জরুরি। অবৈধ উচ্ছেদ ও সঠিক নগরায়ণ ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতে শক্তিশালী ভূমিকম্প দেশের জন্য অপ্রতিরোধ্য মানসিক ও আর্থিক বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে। সম্মিলিত প্রস্তুতিই একমাত্র নিরাপত্তার পথ।

সাম্প্রতিক সময়ে পরপর অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে রাজধানী ঢাকাসহ পুরো দেশ। কয়েক সেকেন্ডের কম্পনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সর্বত্র। এই হঠাৎ কম্পন-মুহূর্তে শিক্ষার্থীরা তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। ভূমিকম্পের প্রস্তুতি গ্রহণ এবং ভবিষ্যতে দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক খান।
আব্দুর রাজ্জাক খান

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে পরপর কয়েকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এই ধারাবাহিক ভূমিকম্পগুলোকে কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?
বাংলাদেশের আশপাশে ভূমিকম্পের প্রায় ছয়টি উৎপত্তিস্থল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি মিয়ানমার থেকে নোয়াখালী পর্যন্ত। তবে আরেকটি নোয়াখালী থেকে সিলেট পর্যন্ত; এটি হলো প্লেট বাউন্ডারি ২। সম্প্রতি হওয়া ভূমিকম্পগুলো এই প্লেট বাউন্ডারিতে হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখানে অনেক শক্তি জমা হয়ে থাকায় ভবিষ্যতে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। এ ছাড়া তৃতীয় এলাকা হলো প্লেট বাউন্ডারি ৩, যেটি সিলেট থেকে ভারতের দিকে চলে গেছে। এখানে এ পর্যন্ত দুটি ভূমিকম্প হয়েছে ৭ ও ৭.৫ মাত্রার। একটি ১৯১৮ সালে, শ্রীমঙ্গলে; আরেকটি ১৮৬৯ সালে, কাছাড় ভূমিকম্প। চতুর্থ উৎস হলো ডাউকি ফল্ট, যেখানে ১৮৯৭ সালে ৮.১ মাত্রার গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকোয়েক হয়েছে। এতে ঢাকার আহসান মঞ্জিল ও সোনামসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এ ছাড়া মধুপুর ফল্ট, যমুনা সেতুর কাছে বগুড়া ও শেরপুরে ১৮৮৫ সালে ৭.১ মাত্রার বেঙ্গল আর্থকোয়েক হয়েছিল। এ থেকে বোঝা যায়, সামনে আরও ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এর মানে কি বড় কোনো ভূমিকম্পের আভাস দিচ্ছেন?
হ্যাঁ। বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতির ইতিহাস অনুযায়ী ৭ মাত্রার ভূমিকম্প পাঁচ-ছয়বার ঘটেছে, ৮ মাত্রার দুবার। তাই ঝুঁকি সব সময় আছে। ভূমিকম্প এখন না এলেও ভবিষ্যতে আসবে এবং সে অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
ঢাকার ভবনগুলোর গুণগত মান দুর্বল হওয়ার কারন কী?
নকশা ভালো হলেও মাঠপর্যায়ে নির্মাণে অনেক সময় তা ঠিকভাবে মেনে চলা হয় না। সারা বিশ্বে সাধারণত যে ব্যক্তি নকশা করেন, তিনি নিজেই কনস্ট্রাকশনের সময় তা সুপারভাইজ করেন। কিন্তু আমাদের দেশে নকশা যিনি তৈরি করেন, তিনি প্রায়ই সুপারভিশনে অংশ নেন না। সে কারণে সুপারভিশনের অভাবে ভবনের গুণগত মান সন্তোষজনক থাকে না।
কোন ভবনে কী ধরনের দুর্বলতা দেখা দেয়? সমাধানের উপায় কী?
আমাদের ভবন মূলত দুই ধরনের। একটি ইটের ভবন, আরেকটি বিম-কলাম পদ্ধতির ভবন। ইটের দেয়াল পুরো ভবনের ভার বহন করে। অর্থাৎ, দেয়ালে কোনো ক্ষতি হলে পুরো ভবন অচল হয়ে পড়তে পারে। তাই ইটের দেয়ালে ক্র্যাক দেখামাত্র মজবুত করতে হবে। বিম-কলাম পদ্ধতির ভবনে লোড প্রথমে স্ল্যাবে আসে, তারপর বিমে এবং শেষে কলামে পৌঁছায়। কলাম যদি কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে পুরো ভবন ঝুঁকিতে পড়ে যাবে। তাই কলামকে কোনোভাবেই ক্র্যাক হতে দেওয়া যাবে না। যদি ক্র্যাক দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই সেটি দ্রুত মজবুত করতে হবে।
ভূমিকম্প হলে শিক্ষার্থীদের নিরাপদভাবে সরিয়ে নিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত?
ভূমিকম্প হলে ভয় পেয়ে হঠাৎ বের হওয়া যাবে না। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে দেয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে মাথায় হাত দিয়ে নিরাপদ অবস্থান নিতে হবে। পরবর্তী সময়ে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে বের হয়ে ফাঁকা জায়গায় নিরাপদে অবস্থান করতে হবে।
ভূমিকম্পের পরে কীভাবে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে? আমাদের দেশে ভূমিকম্প-সহনীয় ভবন নির্মাণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে কোন প্রযুক্তি বা কৌশল ব্যবহার জরুরি?
তুরস্কে ভূমিকম্পে ভবন ধসে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল। পরে উদ্ধারকাজে যে খরচ হয়েছিল, তার গড় হিসাব করে দেখা যায়, একজনকে উদ্ধারে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। তুলনামূলকভাবে আমাদের দেশে যদি একটি পাঁচ কাঠার প্লটে ১০টি ফ্ল্যাট থাকে এবং সেখানে ৫০ জন মানুষ থাকে, ভূমিকম্প-সহনীয় করার খরচ মাত্র ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ তিনজন মানুষকে উদ্ধার করার খরচের পরিবর্তে একই অর্থে পুরো ভবনকে মজবুত করা সম্ভব। আমাদের দেশে গার্মেন্টস শিল্পে ১০ বছর ধরে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করছি, সেটি ব্যবহার করলেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব।
ভূমিকম্পে উদ্ধার কার্যক্রম দ্রুত ও কার্যকর করতে ফায়ার সার্ভিস কী ধরনের প্রস্তুতি নিতে পারে? সরঞ্জাম, মহড়া এবং ভলান্টিয়ার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কী উদ্যোগ নেওয়া দরকার?
আমাদের ফায়ার সার্ভিস যথেষ্ট সক্ষম; তাদের প্রশিক্ষণ আছে এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও যথেষ্ট। তবে জরুরি বিষয় হলো ভুমিকম্প-সহনীয় ভবন তৈরি করা, নিয়মিত মহড়ার আয়োজন করা, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সহযোগী একটি ফোর্স গঠন এবং পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভলান্টিয়ার তৈরি করা। রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় দেখা গেছে, ছোটখাটো সরঞ্জাম নিয়ে ভলান্টিয়াররাই উদ্ধারকাজে বেশি সহায়তা করেছিল।
সুতরাং, আমাদের মূল মনোযোগ দেওয়া উচিত ভলান্টিয়ার তৈরির দিকে। ফায়ার সার্ভিসে আরও বেশি লোকবল প্রয়োজন। ঢাকায় প্রায় ১৮টি ফায়ার সার্ভিস কেন্দ্রকে ভিত্তি করে, যদি প্রতিটিতে ১ হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভলান্টিয়ার তৈরি করা যায়, তাহলে নিরাপত্তাব্যবস্থাকে অনেক শক্তিশালী করা সম্ভব।
ভূমিকম্প-আতঙ্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ ধরনের আতঙ্ক থেকে রক্ষা পেতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কীভাবে মানসিক প্রস্তুতি নিতে পারে এবং মহড়া আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে?
জাপান, নিউজিল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি মাসে না হলেও প্রতি দুই মাস পর একটি মহড়া হয়। আগুনের বেল বাজিয়ে দেয়, অথবা ভূমিকম্পের বেল বাজানো হয়। শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে কোথায় দাঁড়াতে হবে, কীভাবে বের হতে হবে, তা চিহ্নিত করা থাকে। অর্থাৎ হঠাৎ করে ভূমিকম্প হলে সাইকোলজিক্যাল ট্রমা হয়। এ থেকে বাঁচতে নিয়মিত মহড়া করতে হবে। সবার মাথায় ঢুকিয়ে ফেলা যে ভূমিকম্প আসতে পারে, সে অনুযায়ী প্রস্তুতি রাখতে হবে। এর বিকল্প নেই।
দেশে ভূমিকম্পে শিক্ষার্থীরা শঙ্কিত

এখনই কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন
সামিহা সিরাজী লাজ
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও গৌরবের ধারক আমাদের রাজধানী ঢাকায় সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ভূমিকম্প হয়েছে। ঢাকা শহরের পুরোনো দালান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা ও অসংখ্য বহুতল ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। ভূতত্ত্ববিদেরা জানাচ্ছেন, ৮ মাত্রার ভূমিকম্প শহরের জন্য বিপজ্জনক। রাজউক বলছে, ৬.৯ মাত্রার কম্পনে ৪০ শতাংশ ভবন ধসে প্রায় ২ লাখ মানুষ নিহত হতে পারে। নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৩০০ ভবনকে ‘রেড অ্যালার্ট’ ঘোষণা করেছে। নদীমাতৃক এই দেশে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ঢাকা পরিণত হতে পারে বিপর্যয়ের কেন্দ্রে। নিরাপদ ভবন এবং প্রস্তুতির জন্য এখনই সবার কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।

অজানা এক ভয়ের মুখোমুখি
মুজাহিদ আল রিফাত
শিক্ষার্থী, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
ঢাকার ব্যস্ত রাস্তায় হঠাৎ ভূ-কম্পন মানুষকে আতঙ্কিত করেছে। শহর ঘনবসতি, নরম মাটি, পুরোনো ও নকশাবহির্ভূত ভবন বড় বিপদের ইঙ্গিত দেয়। ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনাগুলো পর্যায়ক্রমে পরিদর্শন করা হয় না এবং উদ্ধারকারী সংস্থার সক্ষমতা বড় দুর্যোগের তুলনায় সীমিত। মানুষও মানসিকভাবে প্রস্তুত নয়; জরুরি ব্যাগ, নিরাপদ স্থান বা মহড়া নেই। আইন থাকলেও প্রয়োগ দুর্বল। বড় কোনো কম্পনে দ্রুত উদ্ধার সম্ভব হবে কি না সন্দেহজনক। তাই ঢাকা এখন অজানা এক ভয়ের মুখোমুখি, যেখানে পরবর্তী কম্পন শুধু নাড়াবে না, বরং অপ্রস্তুতির কঠিন বাস্তবতাও প্রকাশ করবে।

শহরে খোলা জায়গার অভাব
সাজিয়া রহমান ঈশি
শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও দুর্বল ভবন নির্মাণ ঢাকার ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। খোলা মাঠ ও নিরাপদ স্থান কমে যাওয়ায় জরুরি আশ্রয় নেওয়া কঠিন হচ্ছে। অধিকাংশ ভবন ভূমিকম্প সহনশীল নয় এবং সাধারণ মানুষও করণীয় জানে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উদ্ধারকারী দলের সক্ষমতা বাড়ানো, খোলা স্থান সংরক্ষণ ও বিল্ডিং কোড কার্যকর করা জরুরি। অবৈধ উচ্ছেদ ও সঠিক নগরায়ণ ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতে শক্তিশালী ভূমিকম্প দেশের জন্য অপ্রতিরোধ্য মানসিক ও আর্থিক বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে। সম্মিলিত প্রস্তুতিই একমাত্র নিরাপত্তার পথ।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে পরপর কয়েকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এই ধারাবাহিক ভূমিকম্পগুলোকে কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?
বাংলাদেশের আশপাশে ভূমিকম্পের প্রায় ছয়টি উৎপত্তিস্থল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি মিয়ানমার থেকে নোয়াখালী পর্যন্ত। তবে আরেকটি নোয়াখালী থেকে সিলেট পর্যন্ত; এটি হলো প্লেট বাউন্ডারি ২। সম্প্রতি হওয়া ভূমিকম্পগুলো এই প্লেট বাউন্ডারিতে হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখানে অনেক শক্তি জমা হয়ে থাকায় ভবিষ্যতে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। এ ছাড়া তৃতীয় এলাকা হলো প্লেট বাউন্ডারি ৩, যেটি সিলেট থেকে ভারতের দিকে চলে গেছে। এখানে এ পর্যন্ত দুটি ভূমিকম্প হয়েছে ৭ ও ৭.৫ মাত্রার। একটি ১৯১৮ সালে, শ্রীমঙ্গলে; আরেকটি ১৮৬৯ সালে, কাছাড় ভূমিকম্প। চতুর্থ উৎস হলো ডাউকি ফল্ট, যেখানে ১৮৯৭ সালে ৮.১ মাত্রার গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকোয়েক হয়েছে। এতে ঢাকার আহসান মঞ্জিল ও সোনামসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এ ছাড়া মধুপুর ফল্ট, যমুনা সেতুর কাছে বগুড়া ও শেরপুরে ১৮৮৫ সালে ৭.১ মাত্রার বেঙ্গল আর্থকোয়েক হয়েছিল। এ থেকে বোঝা যায়, সামনে আরও ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এর মানে কি বড় কোনো ভূমিকম্পের আভাস দিচ্ছেন?
হ্যাঁ। বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতির ইতিহাস অনুযায়ী ৭ মাত্রার ভূমিকম্প পাঁচ-ছয়বার ঘটেছে, ৮ মাত্রার দুবার। তাই ঝুঁকি সব সময় আছে। ভূমিকম্প এখন না এলেও ভবিষ্যতে আসবে এবং সে অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
ঢাকার ভবনগুলোর গুণগত মান দুর্বল হওয়ার কারন কী?
নকশা ভালো হলেও মাঠপর্যায়ে নির্মাণে অনেক সময় তা ঠিকভাবে মেনে চলা হয় না। সারা বিশ্বে সাধারণত যে ব্যক্তি নকশা করেন, তিনি নিজেই কনস্ট্রাকশনের সময় তা সুপারভাইজ করেন। কিন্তু আমাদের দেশে নকশা যিনি তৈরি করেন, তিনি প্রায়ই সুপারভিশনে অংশ নেন না। সে কারণে সুপারভিশনের অভাবে ভবনের গুণগত মান সন্তোষজনক থাকে না।
কোন ভবনে কী ধরনের দুর্বলতা দেখা দেয়? সমাধানের উপায় কী?
আমাদের ভবন মূলত দুই ধরনের। একটি ইটের ভবন, আরেকটি বিম-কলাম পদ্ধতির ভবন। ইটের দেয়াল পুরো ভবনের ভার বহন করে। অর্থাৎ, দেয়ালে কোনো ক্ষতি হলে পুরো ভবন অচল হয়ে পড়তে পারে। তাই ইটের দেয়ালে ক্র্যাক দেখামাত্র মজবুত করতে হবে। বিম-কলাম পদ্ধতির ভবনে লোড প্রথমে স্ল্যাবে আসে, তারপর বিমে এবং শেষে কলামে পৌঁছায়। কলাম যদি কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে পুরো ভবন ঝুঁকিতে পড়ে যাবে। তাই কলামকে কোনোভাবেই ক্র্যাক হতে দেওয়া যাবে না। যদি ক্র্যাক দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই সেটি দ্রুত মজবুত করতে হবে।
ভূমিকম্প হলে শিক্ষার্থীদের নিরাপদভাবে সরিয়ে নিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত?
ভূমিকম্প হলে ভয় পেয়ে হঠাৎ বের হওয়া যাবে না। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে দেয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে মাথায় হাত দিয়ে নিরাপদ অবস্থান নিতে হবে। পরবর্তী সময়ে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে বের হয়ে ফাঁকা জায়গায় নিরাপদে অবস্থান করতে হবে।
ভূমিকম্পের পরে কীভাবে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে? আমাদের দেশে ভূমিকম্প-সহনীয় ভবন নির্মাণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে কোন প্রযুক্তি বা কৌশল ব্যবহার জরুরি?
তুরস্কে ভূমিকম্পে ভবন ধসে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল। পরে উদ্ধারকাজে যে খরচ হয়েছিল, তার গড় হিসাব করে দেখা যায়, একজনকে উদ্ধারে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। তুলনামূলকভাবে আমাদের দেশে যদি একটি পাঁচ কাঠার প্লটে ১০টি ফ্ল্যাট থাকে এবং সেখানে ৫০ জন মানুষ থাকে, ভূমিকম্প-সহনীয় করার খরচ মাত্র ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ তিনজন মানুষকে উদ্ধার করার খরচের পরিবর্তে একই অর্থে পুরো ভবনকে মজবুত করা সম্ভব। আমাদের দেশে গার্মেন্টস শিল্পে ১০ বছর ধরে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করছি, সেটি ব্যবহার করলেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব।
ভূমিকম্পে উদ্ধার কার্যক্রম দ্রুত ও কার্যকর করতে ফায়ার সার্ভিস কী ধরনের প্রস্তুতি নিতে পারে? সরঞ্জাম, মহড়া এবং ভলান্টিয়ার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কী উদ্যোগ নেওয়া দরকার?
আমাদের ফায়ার সার্ভিস যথেষ্ট সক্ষম; তাদের প্রশিক্ষণ আছে এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও যথেষ্ট। তবে জরুরি বিষয় হলো ভুমিকম্প-সহনীয় ভবন তৈরি করা, নিয়মিত মহড়ার আয়োজন করা, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সহযোগী একটি ফোর্স গঠন এবং পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভলান্টিয়ার তৈরি করা। রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় দেখা গেছে, ছোটখাটো সরঞ্জাম নিয়ে ভলান্টিয়াররাই উদ্ধারকাজে বেশি সহায়তা করেছিল।
সুতরাং, আমাদের মূল মনোযোগ দেওয়া উচিত ভলান্টিয়ার তৈরির দিকে। ফায়ার সার্ভিসে আরও বেশি লোকবল প্রয়োজন। ঢাকায় প্রায় ১৮টি ফায়ার সার্ভিস কেন্দ্রকে ভিত্তি করে, যদি প্রতিটিতে ১ হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভলান্টিয়ার তৈরি করা যায়, তাহলে নিরাপত্তাব্যবস্থাকে অনেক শক্তিশালী করা সম্ভব।
ভূমিকম্প-আতঙ্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ ধরনের আতঙ্ক থেকে রক্ষা পেতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কীভাবে মানসিক প্রস্তুতি নিতে পারে এবং মহড়া আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে?
জাপান, নিউজিল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি মাসে না হলেও প্রতি দুই মাস পর একটি মহড়া হয়। আগুনের বেল বাজিয়ে দেয়, অথবা ভূমিকম্পের বেল বাজানো হয়। শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে কোথায় দাঁড়াতে হবে, কীভাবে বের হতে হবে, তা চিহ্নিত করা থাকে। অর্থাৎ হঠাৎ করে ভূমিকম্প হলে সাইকোলজিক্যাল ট্রমা হয়। এ থেকে বাঁচতে নিয়মিত মহড়া করতে হবে। সবার মাথায় ঢুকিয়ে ফেলা যে ভূমিকম্প আসতে পারে, সে অনুযায়ী প্রস্তুতি রাখতে হবে। এর বিকল্প নেই।
দেশে ভূমিকম্পে শিক্ষার্থীরা শঙ্কিত

এখনই কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন
সামিহা সিরাজী লাজ
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও গৌরবের ধারক আমাদের রাজধানী ঢাকায় সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ভূমিকম্প হয়েছে। ঢাকা শহরের পুরোনো দালান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা ও অসংখ্য বহুতল ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। ভূতত্ত্ববিদেরা জানাচ্ছেন, ৮ মাত্রার ভূমিকম্প শহরের জন্য বিপজ্জনক। রাজউক বলছে, ৬.৯ মাত্রার কম্পনে ৪০ শতাংশ ভবন ধসে প্রায় ২ লাখ মানুষ নিহত হতে পারে। নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৩০০ ভবনকে ‘রেড অ্যালার্ট’ ঘোষণা করেছে। নদীমাতৃক এই দেশে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ঢাকা পরিণত হতে পারে বিপর্যয়ের কেন্দ্রে। নিরাপদ ভবন এবং প্রস্তুতির জন্য এখনই সবার কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।

অজানা এক ভয়ের মুখোমুখি
মুজাহিদ আল রিফাত
শিক্ষার্থী, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
ঢাকার ব্যস্ত রাস্তায় হঠাৎ ভূ-কম্পন মানুষকে আতঙ্কিত করেছে। শহর ঘনবসতি, নরম মাটি, পুরোনো ও নকশাবহির্ভূত ভবন বড় বিপদের ইঙ্গিত দেয়। ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনাগুলো পর্যায়ক্রমে পরিদর্শন করা হয় না এবং উদ্ধারকারী সংস্থার সক্ষমতা বড় দুর্যোগের তুলনায় সীমিত। মানুষও মানসিকভাবে প্রস্তুত নয়; জরুরি ব্যাগ, নিরাপদ স্থান বা মহড়া নেই। আইন থাকলেও প্রয়োগ দুর্বল। বড় কোনো কম্পনে দ্রুত উদ্ধার সম্ভব হবে কি না সন্দেহজনক। তাই ঢাকা এখন অজানা এক ভয়ের মুখোমুখি, যেখানে পরবর্তী কম্পন শুধু নাড়াবে না, বরং অপ্রস্তুতির কঠিন বাস্তবতাও প্রকাশ করবে।

শহরে খোলা জায়গার অভাব
সাজিয়া রহমান ঈশি
শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও দুর্বল ভবন নির্মাণ ঢাকার ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। খোলা মাঠ ও নিরাপদ স্থান কমে যাওয়ায় জরুরি আশ্রয় নেওয়া কঠিন হচ্ছে। অধিকাংশ ভবন ভূমিকম্প সহনশীল নয় এবং সাধারণ মানুষও করণীয় জানে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উদ্ধারকারী দলের সক্ষমতা বাড়ানো, খোলা স্থান সংরক্ষণ ও বিল্ডিং কোড কার্যকর করা জরুরি। অবৈধ উচ্ছেদ ও সঠিক নগরায়ণ ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতে শক্তিশালী ভূমিকম্প দেশের জন্য অপ্রতিরোধ্য মানসিক ও আর্থিক বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে। সম্মিলিত প্রস্তুতিই একমাত্র নিরাপত্তার পথ।

তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা...
১০ ঘণ্টা আগে
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
১ দিন আগে
ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে আগ্রহীদের শুধু আর্থিক জ্ঞানই নয়, প্রয়োজনীয় ইংরেজি জানাও জরুরি। নিয়মিত ব্যবহৃত ইংরেজি জানা থাকলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। গ্রাহকদেরও কিছু সাধারণ ব্যাংকিং ইংরেজি জানা থাকলে সুবিধা হয়।
১ দিন আগে
চীনের সিকিউইউ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন।
১ দিন আগেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা ও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন অভিভাবকেরা। এ ছাড়া মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জামালপুর সদর, শেরপুরের শ্রীবরদী, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ, পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যালয়ের তালা ভেঙে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়ার পরও কোনো কাজ না হওয়ায় গতকাল শিক্ষকনেতা মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, খাইরুন নাহার লিপিসহ একাধিক শিক্ষককে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ও আন্দোলনের গতিপথ ঠিক করতে বৈঠকে বসেছেন শিক্ষকনেতারা। গতকাল রাত ৯টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাঁদের বৈঠক চলছিল।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি রাত ৯টার দিকে বলেন, ‘আমরা যাঁরা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছি, তাঁদের হয়রানি করার জন্য ঢালাওভাবে বদলি করা হচ্ছে। আমরা সার্বিক বিষয়ে বৈঠক করছি। আরও কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে।’
এদিকে চতুর্থ দিনের মতো গতকাল বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করে বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকেরা। তিন দফা দাবি আদায়ে লাগাতার কর্মবিরতির কারণে দেশের প্রায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন অভিভাবকেরা।
পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় পরীক্ষা না নেওয়ায় বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এক শিক্ষক। এ ছাড়াও অনেক জায়গায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে পরীক্ষার দায়িত্ব নিলেন অভিভাবকেরা।
বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে গতকাল পিরোজপুরের নেছারাবাদে উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে শিক্ষকেরা আন্দোলন করতে গেলে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দুই দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও তালা ঝুলিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি করার জেরে পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় এক অভিভাবকের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এক সহকারী শিক্ষক। রাজিব সরকার নামের ওই শিক্ষক বনওয়ারিনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমান জানান, যৌক্তিক দাবিতে চলমান আন্দোলনে পরীক্ষা বর্জন করেছিলেন রাজিব ও তাঁর সহকর্মীরা। অভিভাবক পরিচয়ের কিছু ব্যক্তি সেখানে গিয়ে শিক্ষকদের মারধর করেন। এতে সহকারী শিক্ষক রাজিবের মাথা ফেটে গেছে। তাঁর মাথায় চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।
এ ছাড়াও কোনো কোনো জায়গায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা তালা ভেঙে স্কুলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়েছেন। মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উপজেলার ১৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র দু-তিনটি ছাড়া কোনোটিতেই হয়নি পরীক্ষা। গতকাল সকালে সহকারী শিক্ষকেরা প্রধান শিক্ষকদের পরীক্ষা নিতে বাধা দেন এবং শিক্ষার্থীদের স্কুলের ফটক থেকে ফিরিয়ে দেন। পরে বিভিন্ন স্কুলের কক্ষে তালা মেরে তাঁরা উপজেলা চত্বরে সমাবেশে যোগ দেন। উপজেলার ষাটমা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেন অভিভাবকেরা।
একইভাবে কুষ্টিয়া শহরতলির ১৮ নম্বর লাহিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবকেরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে নিজ উদ্যোগে পরীক্ষার আয়োজন করেন। প্রশ্ন বিতরণ, খাতা সংগ্রহ, শৃঙ্খলা রক্ষা সবকিছুই সামলান তাঁরা। একপর্যায়ে অভিভাবকদের তীব্র চাপ ও বিক্ষোভের মুখে প্রায় এক ঘণ্টা পর বার্ষিক পরীক্ষা নিতে বাধ্য হন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
জামালপুর সদর উপজেলার গুয়াবাড়ীয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অনেক বিদ্যালয়ে তালা ভেঙে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন অভিভাবকেরা। কোনো কোনো জায়গায় উপজেলা প্রশাসন এ কাজে সহযোগিতা করে।
জামালপুরের গুয়াবাড়ীয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক রেনুকা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। সারা বছরের পর এই বার্ষিক পরীক্ষার অপেক্ষায় থাকি। যখন বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে, তখন সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এটা কোনো শিক্ষকের কাজ হতে পারে? তাঁদের এই কর্মবিরতি অন্য সময়ও করতে পারতেন। তাই আমরা সব অভিভাবক মিলে প্রধান শিক্ষককে নিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করেছি।’
সার্বিক বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পে-কমিশনের সুপারিশ লাগবে। সেটিও চূড়ান্ত হওয়ার পথে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের অপেক্ষা করা দরকার ছিল।’
দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন গত ৮ নভেম্বর। এই আন্দোলনে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন শিক্ষকেরা। পরদিন ৯ নভেম্বর থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি সারা দেশে সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। আন্দোলনের তৃতীয় দিন (১০ নভেম্বর) সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড নির্ধারণের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন শিক্ষকেরা।
সরকারের এই আশ্বাসের পর নভেম্বরের শেষ নাগাদ সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় নতুন করে গত ৩০ নভেম্বর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষকেরা।

তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা ও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন অভিভাবকেরা। এ ছাড়া মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জামালপুর সদর, শেরপুরের শ্রীবরদী, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ, পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যালয়ের তালা ভেঙে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়ার পরও কোনো কাজ না হওয়ায় গতকাল শিক্ষকনেতা মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, খাইরুন নাহার লিপিসহ একাধিক শিক্ষককে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ও আন্দোলনের গতিপথ ঠিক করতে বৈঠকে বসেছেন শিক্ষকনেতারা। গতকাল রাত ৯টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাঁদের বৈঠক চলছিল।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি রাত ৯টার দিকে বলেন, ‘আমরা যাঁরা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছি, তাঁদের হয়রানি করার জন্য ঢালাওভাবে বদলি করা হচ্ছে। আমরা সার্বিক বিষয়ে বৈঠক করছি। আরও কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে।’
এদিকে চতুর্থ দিনের মতো গতকাল বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করে বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকেরা। তিন দফা দাবি আদায়ে লাগাতার কর্মবিরতির কারণে দেশের প্রায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন অভিভাবকেরা।
পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় পরীক্ষা না নেওয়ায় বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এক শিক্ষক। এ ছাড়াও অনেক জায়গায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে পরীক্ষার দায়িত্ব নিলেন অভিভাবকেরা।
বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে গতকাল পিরোজপুরের নেছারাবাদে উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে শিক্ষকেরা আন্দোলন করতে গেলে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দুই দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও তালা ঝুলিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি করার জেরে পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় এক অভিভাবকের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এক সহকারী শিক্ষক। রাজিব সরকার নামের ওই শিক্ষক বনওয়ারিনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমান জানান, যৌক্তিক দাবিতে চলমান আন্দোলনে পরীক্ষা বর্জন করেছিলেন রাজিব ও তাঁর সহকর্মীরা। অভিভাবক পরিচয়ের কিছু ব্যক্তি সেখানে গিয়ে শিক্ষকদের মারধর করেন। এতে সহকারী শিক্ষক রাজিবের মাথা ফেটে গেছে। তাঁর মাথায় চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।
এ ছাড়াও কোনো কোনো জায়গায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা তালা ভেঙে স্কুলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়েছেন। মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উপজেলার ১৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র দু-তিনটি ছাড়া কোনোটিতেই হয়নি পরীক্ষা। গতকাল সকালে সহকারী শিক্ষকেরা প্রধান শিক্ষকদের পরীক্ষা নিতে বাধা দেন এবং শিক্ষার্থীদের স্কুলের ফটক থেকে ফিরিয়ে দেন। পরে বিভিন্ন স্কুলের কক্ষে তালা মেরে তাঁরা উপজেলা চত্বরে সমাবেশে যোগ দেন। উপজেলার ষাটমা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেন অভিভাবকেরা।
একইভাবে কুষ্টিয়া শহরতলির ১৮ নম্বর লাহিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবকেরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে নিজ উদ্যোগে পরীক্ষার আয়োজন করেন। প্রশ্ন বিতরণ, খাতা সংগ্রহ, শৃঙ্খলা রক্ষা সবকিছুই সামলান তাঁরা। একপর্যায়ে অভিভাবকদের তীব্র চাপ ও বিক্ষোভের মুখে প্রায় এক ঘণ্টা পর বার্ষিক পরীক্ষা নিতে বাধ্য হন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
জামালপুর সদর উপজেলার গুয়াবাড়ীয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অনেক বিদ্যালয়ে তালা ভেঙে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন অভিভাবকেরা। কোনো কোনো জায়গায় উপজেলা প্রশাসন এ কাজে সহযোগিতা করে।
জামালপুরের গুয়াবাড়ীয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক রেনুকা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। সারা বছরের পর এই বার্ষিক পরীক্ষার অপেক্ষায় থাকি। যখন বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে, তখন সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এটা কোনো শিক্ষকের কাজ হতে পারে? তাঁদের এই কর্মবিরতি অন্য সময়ও করতে পারতেন। তাই আমরা সব অভিভাবক মিলে প্রধান শিক্ষককে নিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করেছি।’
সার্বিক বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পে-কমিশনের সুপারিশ লাগবে। সেটিও চূড়ান্ত হওয়ার পথে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের অপেক্ষা করা দরকার ছিল।’
দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন গত ৮ নভেম্বর। এই আন্দোলনে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন শিক্ষকেরা। পরদিন ৯ নভেম্বর থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি সারা দেশে সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। আন্দোলনের তৃতীয় দিন (১০ নভেম্বর) সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড নির্ধারণের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন শিক্ষকেরা।
সরকারের এই আশ্বাসের পর নভেম্বরের শেষ নাগাদ সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় নতুন করে গত ৩০ নভেম্বর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষকেরা।

সাম্প্রতিক সময়ে পরপর অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে রাজধানী ঢাকাসহ পুরো দেশ। কয়েক সেকেন্ডের কম্পনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সর্বত্র। এই হঠাৎ কম্পন-মুহূর্তে শিক্ষার্থীরা তাঁদের মতামত জানিয়েছেন।
৫ দিন আগে
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
১ দিন আগে
ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে আগ্রহীদের শুধু আর্থিক জ্ঞানই নয়, প্রয়োজনীয় ইংরেজি জানাও জরুরি। নিয়মিত ব্যবহৃত ইংরেজি জানা থাকলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। গ্রাহকদেরও কিছু সাধারণ ব্যাংকিং ইংরেজি জানা থাকলে সুবিধা হয়।
১ দিন আগে
চীনের সিকিউইউ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন।
১ দিন আগেশিক্ষা ডেস্ক

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
গত রোববার (৩০ নভেম্বর) ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ‘এ-১’ (বিজ্ঞান) ইউনিটের আবেদন ফি ১ হাজার ২৫০, ‘এ-২’ (আর্কিটেকচার) ফি ১ হাজার ৪০০ এবং ‘বি’ (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) ইউনিটের আবেদন ফি ১ হাজার ২০০ টাকা।
২০২৪ অথবা ২০২৫ সালের এইচএসসি (সাধারণ বা কারিগরি) বা আলিমবা ডিপ্লোমা ইন কমার্স বা সমমান, ২০২২ অথবা ২০২৩ সালের এসএসসি (সাধারণ বা কারিগরি) বা দাখিল বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনের প্রক্রিয়া শেষে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ১৩ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা, ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা ১৪ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের আবেদন করার নিয়ম, বিস্তারিত তথ্য, আবেদন ফি এবং জমা দেওয়ার পদ্ধতি ভর্তি-সংক্রান্ত ওয়েবসাইট-এর ভর্তি নির্দেশিকায় পাওয়া যাবে।

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
গত রোববার (৩০ নভেম্বর) ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ‘এ-১’ (বিজ্ঞান) ইউনিটের আবেদন ফি ১ হাজার ২৫০, ‘এ-২’ (আর্কিটেকচার) ফি ১ হাজার ৪০০ এবং ‘বি’ (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) ইউনিটের আবেদন ফি ১ হাজার ২০০ টাকা।
২০২৪ অথবা ২০২৫ সালের এইচএসসি (সাধারণ বা কারিগরি) বা আলিমবা ডিপ্লোমা ইন কমার্স বা সমমান, ২০২২ অথবা ২০২৩ সালের এসএসসি (সাধারণ বা কারিগরি) বা দাখিল বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনের প্রক্রিয়া শেষে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ১৩ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা, ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা ১৪ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের আবেদন করার নিয়ম, বিস্তারিত তথ্য, আবেদন ফি এবং জমা দেওয়ার পদ্ধতি ভর্তি-সংক্রান্ত ওয়েবসাইট-এর ভর্তি নির্দেশিকায় পাওয়া যাবে।

সাম্প্রতিক সময়ে পরপর অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে রাজধানী ঢাকাসহ পুরো দেশ। কয়েক সেকেন্ডের কম্পনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সর্বত্র। এই হঠাৎ কম্পন-মুহূর্তে শিক্ষার্থীরা তাঁদের মতামত জানিয়েছেন।
৫ দিন আগে
তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা...
১০ ঘণ্টা আগে
ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে আগ্রহীদের শুধু আর্থিক জ্ঞানই নয়, প্রয়োজনীয় ইংরেজি জানাও জরুরি। নিয়মিত ব্যবহৃত ইংরেজি জানা থাকলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। গ্রাহকদেরও কিছু সাধারণ ব্যাংকিং ইংরেজি জানা থাকলে সুবিধা হয়।
১ দিন আগে
চীনের সিকিউইউ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন।
১ দিন আগেশিক্ষা ডেস্ক

ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে আগ্রহীদের শুধু আর্থিক জ্ঞানই নয়, প্রয়োজনীয় ইংরেজি জানাও জরুরি। নিয়মিত ব্যবহৃত ইংরেজি জানা থাকলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। গ্রাহকদেরও কিছু সাধারণ ব্যাংকিং ইংরেজি জানা থাকলে সুবিধা হয়। আজ থাকছে ব্যাংকে নিয়মিত ব্যবহৃত এমন ১০টি ইংরেজি বাক্য। চলুন শিখে নিই—

ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে আগ্রহীদের শুধু আর্থিক জ্ঞানই নয়, প্রয়োজনীয় ইংরেজি জানাও জরুরি। নিয়মিত ব্যবহৃত ইংরেজি জানা থাকলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। গ্রাহকদেরও কিছু সাধারণ ব্যাংকিং ইংরেজি জানা থাকলে সুবিধা হয়। আজ থাকছে ব্যাংকে নিয়মিত ব্যবহৃত এমন ১০টি ইংরেজি বাক্য। চলুন শিখে নিই—

সাম্প্রতিক সময়ে পরপর অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে রাজধানী ঢাকাসহ পুরো দেশ। কয়েক সেকেন্ডের কম্পনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সর্বত্র। এই হঠাৎ কম্পন-মুহূর্তে শিক্ষার্থীরা তাঁদের মতামত জানিয়েছেন।
৫ দিন আগে
তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা...
১০ ঘণ্টা আগে
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
১ দিন আগে
চীনের সিকিউইউ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন।
১ দিন আগেশিক্ষা ডেস্ক

চীনের সিকিউইউ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। বৃত্তিটি ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রযোজ্য। চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম শীর্ষ গবেষণাবান্ধব ও সমৃদ্ধ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। ১৯২৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আধুনিক ক্যাম্পাস, অত্যাধুনিক ল্যাব-সুবিধা, আন্তর্জাতিক বিনিময় কর্মসূচি এবং বৈশ্বিক মানের গবেষণা সুযোগের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বজুড়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করে।
সুযোগ-সুবিধা
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তিটি সম্পূর্ণ অর্থায়িত। বৃত্তিটিতে আবেদন করতে কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের শতভাগ টিউশন ফি মওকুফ করা হবে। ক্যাম্পাসের ভেতরে বিনা মূল্যে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এটা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বড় স্বস্তির বিষয়। জীবনযাপনের ব্যয় হিসেবে স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের ৩ হাজার আর পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সাড়ে ৩ হাজার চায়নিজ ইউয়ান দেওয়া হবে।
আবেদনের যোগ্যতা
আবেদনকারীর অবশ্যই চীনের নাগরিকত্ব থাকা যাবে না। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। একাডেমিক যোগ্যতার ক্ষেত্রে, মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করতে হলে আবেদনকারীর স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে এবং বয়স ৩৫ বছরের নিচে হতে হবে। আর পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য থাকতে হবে মাস্টার্স ডিগ্রি এবং বয়স হতে হবে সর্বোচ্চ ৪০ বছর। ভাষাগত দক্ষতার ক্ষেত্রেও নির্ধারিত মানদণ্ড রয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামের প্রয়োজন অনুযায়ী পূরণ করতে হবে।
প্রয়োজনীয় তথ্য
প্রথমে প্রয়োজন হবে ‘চায়নিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ অ্যাপলিকেশন ফরম, বিস্তারিত সিভি, নোটারাইজড করা সনদ, ট্রান্সক্রিপ্ট। সঙ্গে যুক্ত করতে হবে স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি), রিচার্জ প্রপোজাল এবং দুজন অধ্যাপকের পক্ষ থেকে রিকমেন্ডেশন লেটার। নন-ক্রিমিনাল সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ, ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণপত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
অধ্যয়নের ক্ষেত্রসমূহ
বিশ্ববিদ্যালয়টি ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের অধীনে রয়েছে মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান থেকে শুরু করে অর্থনীতি, ভাষা, সাংবাদিকতা, আইন, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞানসহ বিস্তৃত বিষয়ের সমাহার। পাশাপাশি ফ্যাকাল্টি অব দ্য বিল্ড এনভায়রনমেন্টের শিক্ষার্থীদের জন্য আর্কিটেকচার, আরবান প্ল্যানিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, পরিবেশবিজ্ঞান এবং রিয়েল এস্টেট ম্যানেজমেন্টের মতো পেশাদারি ক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে। প্রযুক্তিমুখী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সমৃদ্ধিশালী বিভিন্ন বিষয়।
আবেদন পদ্ধতি
আগ্রহী প্রার্থীরা ক্লিক করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনের শেষ সময়: আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৬।

চীনের সিকিউইউ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। বৃত্তিটি ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রযোজ্য। চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম শীর্ষ গবেষণাবান্ধব ও সমৃদ্ধ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। ১৯২৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আধুনিক ক্যাম্পাস, অত্যাধুনিক ল্যাব-সুবিধা, আন্তর্জাতিক বিনিময় কর্মসূচি এবং বৈশ্বিক মানের গবেষণা সুযোগের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বজুড়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করে।
সুযোগ-সুবিধা
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তিটি সম্পূর্ণ অর্থায়িত। বৃত্তিটিতে আবেদন করতে কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের শতভাগ টিউশন ফি মওকুফ করা হবে। ক্যাম্পাসের ভেতরে বিনা মূল্যে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এটা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বড় স্বস্তির বিষয়। জীবনযাপনের ব্যয় হিসেবে স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের ৩ হাজার আর পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সাড়ে ৩ হাজার চায়নিজ ইউয়ান দেওয়া হবে।
আবেদনের যোগ্যতা
আবেদনকারীর অবশ্যই চীনের নাগরিকত্ব থাকা যাবে না। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। একাডেমিক যোগ্যতার ক্ষেত্রে, মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করতে হলে আবেদনকারীর স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে এবং বয়স ৩৫ বছরের নিচে হতে হবে। আর পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য থাকতে হবে মাস্টার্স ডিগ্রি এবং বয়স হতে হবে সর্বোচ্চ ৪০ বছর। ভাষাগত দক্ষতার ক্ষেত্রেও নির্ধারিত মানদণ্ড রয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামের প্রয়োজন অনুযায়ী পূরণ করতে হবে।
প্রয়োজনীয় তথ্য
প্রথমে প্রয়োজন হবে ‘চায়নিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ অ্যাপলিকেশন ফরম, বিস্তারিত সিভি, নোটারাইজড করা সনদ, ট্রান্সক্রিপ্ট। সঙ্গে যুক্ত করতে হবে স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি), রিচার্জ প্রপোজাল এবং দুজন অধ্যাপকের পক্ষ থেকে রিকমেন্ডেশন লেটার। নন-ক্রিমিনাল সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ, ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণপত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
অধ্যয়নের ক্ষেত্রসমূহ
বিশ্ববিদ্যালয়টি ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের অধীনে রয়েছে মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান থেকে শুরু করে অর্থনীতি, ভাষা, সাংবাদিকতা, আইন, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞানসহ বিস্তৃত বিষয়ের সমাহার। পাশাপাশি ফ্যাকাল্টি অব দ্য বিল্ড এনভায়রনমেন্টের শিক্ষার্থীদের জন্য আর্কিটেকচার, আরবান প্ল্যানিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, পরিবেশবিজ্ঞান এবং রিয়েল এস্টেট ম্যানেজমেন্টের মতো পেশাদারি ক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে। প্রযুক্তিমুখী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সমৃদ্ধিশালী বিভিন্ন বিষয়।
আবেদন পদ্ধতি
আগ্রহী প্রার্থীরা ক্লিক করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনের শেষ সময়: আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৬।

সাম্প্রতিক সময়ে পরপর অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে রাজধানী ঢাকাসহ পুরো দেশ। কয়েক সেকেন্ডের কম্পনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সর্বত্র। এই হঠাৎ কম্পন-মুহূর্তে শিক্ষার্থীরা তাঁদের মতামত জানিয়েছেন।
৫ দিন আগে
তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা...
১০ ঘণ্টা আগে
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
১ দিন আগে
ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে আগ্রহীদের শুধু আর্থিক জ্ঞানই নয়, প্রয়োজনীয় ইংরেজি জানাও জরুরি। নিয়মিত ব্যবহৃত ইংরেজি জানা থাকলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। গ্রাহকদেরও কিছু সাধারণ ব্যাংকিং ইংরেজি জানা থাকলে সুবিধা হয়।
১ দিন আগে