Ajker Patrika

আজকের তারাবি-৪: দাম্পত্য কলহের সমাধান ও হারাম খাদ্যের তালিকা

রায়হান রাশেদ
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৫, ১৪: ২২
আজকের তারাবি-৪: দাম্পত্য কলহের সমাধান ও হারাম খাদ্যের তালিকা

আজ খতমে তারাবিহতে পবিত্র কোরআনের পঞ্চম পারার দ্বিতীয়ার্ধ এবং পুরো ষষ্ঠ পারা; মোট দেড় পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা নিসা ৮৮ থেকে সুরা মায়িদা ৮২ নম্বর আয়াত পর্যন্ত—এই অংশে মুনাফিকদের কূটচাল, মানুষ হত্যা, জিহাদ, ইসা (আ.)-কে হত্যার ষড়যন্ত্র, কুফর ও শিরকসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো—

যুদ্ধের ময়দানেও নামাজে ছাড় নেই
প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের জন্য দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। নামাজ মুমিনের সৌভাগ্যের সোপান, শ্রেষ্ঠত্বের কারণ। খোদার দরবারে প্রিয় হওয়ার মাধ্যম। ফরজ নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা আবশ্যক। বড় কোনো সমস্যা ছাড়া জামাত ছাড়া নিষেধ। যারা জামাতে নামাজ পড়ে না, নবী (সা.) তাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। আল্লাহ বলেন, ‘এবং (হে নবী) আপনি যখন তাদের মধ্যে উপস্থিত থাকেন ও তাদের নামাজ পড়ান, তখন (শত্রুর সঙ্গে মোকাবিলার সময় তার নিয়ম এই যে) মুসলিমদের একটি দল আপনার সঙ্গে দাঁড়াবে এবং নিজেদের অস্ত্র সঙ্গে রাখবে। অতঃপর তারা যখন সিজদা করে নেবে, তখন তারা তোমাদের পেছনে চলে যাবে এবং অন্য দল, যারা এখনো নামাজ পড়েনি, সামনে এসে যাবে এবং তারা আপনার সঙ্গে নামাজ পড়বে। তারাও নিজেদের আত্মরক্ষার উপকরণ ও অস্ত্র সঙ্গে রাখবে।’ (সুরা নিসা: ১০২) 

চিন্তা করুন, যুদ্ধের ভয়ালতম ঘনঘটায় আল্লাহ নামাজে ছাড় দেননি। অনিশ্চিত মুহূর্তেও আল্লাহ বলেননি, নামাজ ছেড়ে দাও। নামাজ তো দূরের কথা; জামাত পর্যন্ত ছাড়তে বলেননি। তাহলে কি নামাজ ছাড়ার কথা চিন্তা করা যায়! 

দাম্পত্য সম্পর্কে সমঝোতা ও বিচ্ছেদ
 ১২৭ থেকে ১৩০ নম্বর আয়াতে মানুষের দাম্পত্য জীবনের নানা জটিল বিষয়ের সমাধান দেওয়া হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হলো প্রীতি ও ভালোবাসার। অনেক স্বপ্ন বুনে তারা সংসার করে। একসঙ্গে থাকে। তবু কখনো কখনো নানা জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। ঝগড়া-বিবাদ হয়। সংসার টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে। 

দাম্পত্যজীবন বিষিয়ে উঠলে, স্বামী যদি স্ত্রীর সঙ্গে মন্দ আচরণ করে, স্ত্রীকে যদি অধিকার বঞ্চিত করে, তবে প্রথমে স্বামী-স্ত্রী পরস্পর সমঝোতা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করতে চেষ্টা করবে। প্রয়োজন হলে উভয় পক্ষ পারিবারিকভাবেও তা মীমাংসা করে নিতে পারবে। 

পবিত্র কোরআনে বলে দেওয়া হয়েছে, ‘যদি কোনো নারী তার স্বামী থেকে রূঢ়তা কিংবা উপেক্ষার আশঙ্কা করে, তবে তারা পরস্পর আপস করে নিলে তাদের কোনো গুনাহ নেই, বস্তুত আপস করাই উত্তম।’ (সুরা নিসা: ১২৮) 

তবে আপস করার সুযোগ না থাকলে অবশ্যই বিচ্ছেদ করার অধিকার স্ত্রীর রয়েছে। ইসলাম কখনো নারীকে স্বামীর জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে যাওয়ার পরামর্শ দেয় না। বরং এ ক্ষেত্রে ইসলাম তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানোর অনুমোদন দেয়। বরং ইসলাম মনে করে, স্বামীর অত্যাচার সহ্য করে সংসার টিকিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই। 

হালাল-হারামের সুরা—সুরা মায়িদা
সুরা মায়িদা মদিনায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ১২০। পবিত্র কোরআনের পঞ্চম সুরা এটি। মায়িদা অর্থ দস্তরখান। সুরাটিতে দস্তরখান সম্পর্কিত একটি ঘটনা থাকায় এর নামকরণ করা হয়েছে মায়িদা। শরিয়তের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিধিবিধান এ সুরার মাধ্যমে প্রবর্তন করা হয়েছে। এ সুরায় যা হালাল-হারাম করা হয়েছে, চিরকাল সেটি হালাল-হারাম থাকবে। (তাফসিরে রুহুল মাআনি) 

হারাম খাদ্যের তালিকা
সুরা মায়েদায় আল্লাহ তাআলা হারাম খাদ্যের বিবরণ দিয়েছেন। পৃথিবীতে হারামের তুলনায় হালালের সংখ্যা অনেক বেশি। মানুষ যা কিছু খেতে পারবে না,৩ নম্বর আয়াতে তার একটা তালিকা দেওয়া হয়েছে। যথা—
 ১. মৃত প্রাণী
 ২. (প্রবাহিত) রক্ত
 ৩. শূকরের মাংস 
৪. আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে বলি দেওয়া পশু
 ৫. যে প্রাণী গলা টিপে বা শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে
 ৬. আঘাতে নিহত প্রাণী
 ৭. উঁচু স্থান থেকে পড়ে মৃত
 ৮. সংঘর্ষে মৃত
 ৯. যে পশুকে হিংস্র জন্তু খেয়েছে। তবে এসব প্রাণী জীবিত জবাই করতে পারলে খাওয়া যাবে। 
১০. মূর্তিপূজার বেদির ওপর বলি দেওয়া প্রাণী
 ১১. জুয়ার তির দিয়ে ভাগ্য নির্ণয় করা খাদ্য। আরবে তৎকালীন একটি রীতি। 

মানুষ হত্যা অমার্জনীয় অপরাধ
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ মানুষ। মানুষকে কেন্দ্র করেই পৃথিবীর সৃষ্টি। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা প্রকল্পে ইসলাম বলেছে, মানুষের ওপর চড়াও হওয়া হারাম। মানুষ হত্যা নিষিদ্ধ। মানুষকে গালি দেওয়াও পাপ। আল্লাহ বলেন, ‘এ কারণেই বনি ইসরাইলদের এই বিধান দিলাম যে, নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের কারণ ছাড়া যদি কেউ কাউকে হত্যা করে, সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করল। যদি কেউ একটি প্রাণ রক্ষা করে, সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।’ (সুরা মায়েদা: ৩২) 

আজকের তারাবি: যে ১৪ নারীকে বিয়ে করা হারাম

কাউকে মৃত্যু থেকে মুক্তি দেওয়া সমগ্র মানবসমাজকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষার শামিল। কোরআন এ আয়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বাস্তবতার প্রতি ইঙ্গিত করেছে। তা হলো, মানুষের সমাজ হলো পরিপূর্ণ একটি দেহের মতো। সমাজের প্রতিটি মানুষ হলো সেই দেহের একেকটি অঙ্গ। এই সমাজের একটি অঙ্গের কোনো রকমের ক্ষতি হয় তার প্রভাব অপর অঙ্গের ওপর সুস্পষ্ট হয়ে যায়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রকৃত মুসলমান সে, যার হাতে সকল মুসলমান নিরাপদ থাকে।’ (বুখারি: ৯) 

এ ছাড়া মুসলমানদের পারস্পরিক সম্পর্ক, মানুষের অধঃপতনের কারণ, বন্ধুত্বের নীতিমালা, সমাজসংস্কারের নানা দিক, ইহুদিরা যে কারণে অভিশপ্ত, হিজরতসহ ইত্যাদি বিষয় পবিত্র কোরআনের এ অংশে আলোচিত হয়েছে। 

লেখক: ইসলাম বিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যেসব দোয়ায় রয়েছে পরকালীন মুক্তি ও অসামান্য সওয়াব

ইসলাম ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পরকালীন সফলতার জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করা জরুরি। তবে ইবাদতের ক্ষেত্রে ইসলাম আমাদের বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ-সরল। দ্বীন নিয়ে যে কড়াকড়ি করে, দ্বীন তার ওপর বিজয়ী হয় (অর্থাৎ সে ক্লান্ত হয়ে আমল ছেড়ে দেয়)। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন করো এবং তার নিকটবর্তী থাকো। আশান্বিত থাকো এবং সকাল-সন্ধ্যায় ও রাতের শেষাংশে (ইবাদতের মাধ্যমে) আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো।’ (সহিহ বুখারি: ৩৮)

রাসুলুল্লাহ (সা.) সকাল-সন্ধ্যায় মহান রবের কাছে কল্যাণ কামনার বিশেষ কিছু দোয়া শিখিয়েছেন। এমন একটি জিকির আছে, যা নিয়মিত করলে কিয়ামতের দিন সওয়াবের দিক থেকে কেউ তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে না। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে জেগে উঠে ১০০ বার বলবে—‘সুবহানাল্লাহিল আজিম, ওয়া বিহামদিহি’ এবং সন্ধ্যায়ও অনুরূপ বলে, তাহলে সৃষ্টিজগতের কেউই (কিয়ামতের দিন) তার মতো মর্যাদা ও সওয়াব অর্জনে সক্ষম হবে না।’ (সুনান আবু দাউদ: ৫০৯১)

দৈন্য, অলসতা ও কবরের আজাব থেকে সুরক্ষা পেতে রাসুল (সা.) একটি বিশেষ দোয়া পাঠ করতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস অনুযায়ী দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বুখলি, ওয়াল কাসালি, ওয়া-আরদালিল উমুরি, ওয়া-আজাবিল কাবরি, ওয়া-ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কৃপণতা, অলসতা, বয়সের নিকৃষ্টতম সময় (বার্ধক্যের দৈন্য), কবরের আজাব এবং জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই।’ (সহিহ মুসলিম: ৬৬২৯)

প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততার মাঝে সকাল ও সন্ধ্যায় এই ছোট ছোট আমল আমাদের আত্মিক প্রশান্তি দেওয়ার পাশাপাশি পরকালে বিশাল সাফল্যের পথ সুগম করতে পারে। আল্লাহ আমাদের নবীজি (সা.)-এর শেখানো এই দোয়া ও জিকিরগুলোর ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৪ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৬ মিনিট
ফজর০৫: ১৭ মিনিট০৬: ৩৭ মিনিট
জোহর১১: ৫৯ মিনিট০৩: ৪২ মিনিট
আসর০৩: ৪৩ মিনিট০৫: ১৮ মিনিট
মাগরিব০৫: ২০ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
এশা০৬: ৩৯ মিনিট০৫: ১৬ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যে তিন শ্রেণির নামাজির জন্য রয়েছে দুর্ভোগ

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নামাজ বা সালাত অন্যতম প্রধান ফরজ ইবাদত। পবিত্র কোরআনের ৮২টি স্থানে নামাজের কথা উল্লেখ করে এর অপরিসীম গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যখন তোমরা সালাত (নামাজ) পূর্ণ করবে, তখন দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিশ্চিন্ত হবে, তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয়ই সালাত মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ।’ (সুরা নিসা: ১০৩)

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসেও বারবার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ওয়াক্তমতো নামাজ আদায়ের ওপর। এমনকি আল্লাহর কাছেও এটি অত্যন্ত প্রিয় একটি আমল। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, আমি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কোন আমল আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, ‘যথাসময়ে সালাত আদায় করা।’ আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, ‘পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার।’ আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ‘এরপর কোনটি?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহর পথে লড়াই করা’। (সহিহ্ বুখারি: ৫০২)

নামাজ পড়া সত্ত্বেও তিন শ্রেণির নামাজির জন্য পরকালে রয়েছে ভয়াবহ শাস্তির হুঁশিয়ারি। এই তিন শ্রেণি হলো: ১. যারা লোক দেখানোর জন্য নামাজ আদায় করে। ২. যারা নামাজে চরম অমনোযোগী। ৩. যারা নামাজে চুরি করে, অর্থাৎ রুকু-সিজদা ঠিকমতো আদায় করে না।

পবিত্র কোরআনে প্রথম দুই শ্রেণির কথা উল্লেখ করে আল্লাহ বলেন, ‘অতএব সেই নামাজ আদায়কারীদের জন্য দুর্ভোগ, যারা নিজেদের নামাজে অমনোযোগী এবং যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে।’ (সুরা মাউন: ৪-৬)

অন্যদিকে, তৃতীয় শ্রেণির নামাজি তথা নামাজ চোরদের সম্পর্কে আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘চোরদের মধ্যে সবচেয়ে বড় চোর হলো ওই ব্যক্তি, যে নামাজে চুরি করে।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, নামাজে চুরি কীভাবে হয়?’ জবাবে নবীজি (সা.) বললেন, ‘নামাজে চুরি হলো রুকু-সিজদা পূর্ণ না করা (ঠিকমতো আদায় না করা)।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ্: ৮৮৫)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ০৯ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৩ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৬ মিনিট
ফজর০৫: ১৭ মিনিট০৬: ৩৭ মিনিট
জোহর১১: ৫৯ মিনিট০৩: ৪১ মিনিট
আসর০৩: ৪২ মিনিট০৫: ১৭ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৯ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
এশা০৬: ৩৯ মিনিট০৫: ১৬ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত