Ajker Patrika

কোরবানির গোশত বণ্টনে সামাজিক অসংগতি

মুফতি শাব্বির আহমদ
কোরবানির মাংস। ছবি: সংগৃহীত
কোরবানির মাংস। ছবি: সংগৃহীত

মুসলমানদের কোনো উৎসবই নিছক উৎসব নয়—ইবাদতও বটে। বরং ইবাদতের দিকটাই এখানে প্রবল। ঈদুল আজহায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো কোরবানি। আরবি কোরবানি শব্দটি কুরবানুন শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ—আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের চেষ্টা করা।

কোরবানিতে যেমন আল্লাহর নৈকট্য লাভ হয়, তেমনি এর আরেক উপকার হলো—কোরবানির গোশত নিজে খেতে পারা ও অন্যকে উপহার দেওয়ার সুযোগ।

গোশত বণ্টনের শরয়ি বিধান
কোরবানির গোশত এক-তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনকে এবং এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া উত্তম। এটি বাধ্যতামূলক কোনো আমল নয় বরং মোস্তাহাব। যদি কেউ পুরো গোশত নিজে রেখে দেয়, তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২২৪, ফাতাওয়া আলমগিরি: ৫/৩০০)

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা খাও এবং অভাবগ্রস্ত দরিদ্র লোকদের খাওয়াও। (সুরা হজ: ২৮)

নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা খাও, জমা করে রাখো এবং দান-খয়রাত করো।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৫৬৯, সহিহ্ মুসলিম: ১৯৭২, সুনানে নাসায়ি: ৪৪২৬, মুআত্তা মালিক: ২১৩৫)

এভাবেই কোরবানির গোশত নিজে খাওয়া এবং অন্যকে খাওয়ানোর উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। এটি মুসলিম সমাজের ঐতিহ্য। এ যেন আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাকে আতিথেয়তা। কোরবানির দিনগুলোতে সকল মুসলিম আল্লাহর মেহমান। বান্দা শুধু গরিব-দুঃখীদের ঘরে ঘরে গোশত পৌঁছে দেয় আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে। এটা বান্দার পক্ষ থেকে কোনো করুণা নয়।

সামাজিক অসংগতি

কোরবানির ঈদের দিন দুপুর থেকে আমাদের সমাজে একটি দৃশ্য সকলের চোখে পড়ে। তা হলো কোরবানিদাতার বাড়ির দরজায় কিছু মানুষ গোশতের জন্য ভিড় করে। যাদের কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য নেই।

কোরবানি আদ্যোপান্ত একটি ইবাদত। আর ইবাদতের সঙ্গে এই দৃশ্যটি অসংগতিপূর্ণ। ইবাদতের মধ্যে বিনয় নম্রতা থাকা অপরিহার্য। তবেই এটা আল্লাহর কাছে গ্রহণীয় হয়। সামাজিক এই দৃশ্যটি বিনয়ের বিপরীত এবং অহমিকার বহিঃপ্রকাশ। লোকজন আমার বাড়ির সামনে ছুটে আসছে। আমি গোশত বিলাচ্ছি। এতে নিজের অহংবোধ স্বাভাবিকভাবে জেগে ওঠে, আমিত্ব জেগে উঠে, মনের পশু সজাগ হয়। ইবাদত করতে গিয়ে যদি ইবাদতের মূল মহিমাই ক্ষুণ্ন হয়—তাহলে ইবাদতের বাকি থাকল কী!

এ যেন ইবাদতের পরিবর্তে ভিক্ষাবৃত্তি প্রতিষ্ঠা। যে ভিক্ষাবৃত্তি ইসলাম জায়েজ রাখেনি, পছন্দ করেনি—সাময়িকভাবে আমরাই সে ভিক্ষাবৃত্তিকে প্রতিষ্ঠা করি। কোনো মুসলমান এমনটি করতে পারে না এবং এই চিত্র পছন্দ করতে পারে না।

রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ মোমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তা পছন্দ করবে যা নিজের জন্য করে। (সহিহ্ বুখারি: ১৩, সহিহ্ মুসলিম: ৪৫)

কোনো মুসলমান নিজের জন্য ভিক্ষাবৃত্তি পছন্দ করে না—তাহলে সে তার অন্য ভাই-বোনের জন্য এই ভিক্ষাবৃত্তি কীভাবে পছন্দ করে! ইবাদত হচ্ছে পুণ্য, মহত্ত্ব আর ভিক্ষা হচ্ছে অনুচিত।

কোরবানির গোশত অন্যকে খাওয়ানো যখন ইবাদত, তখন সেই ইবাদতে ভিক্ষার কলঙ্ক কেন যুক্ত হবে! কোরবানি হচ্ছে হজরত ইবরাহিম (আ.) এর সুন্নত। মহান নবীর মহান সুন্নত কেন ভিক্ষাবৃত্তির কালিতে মলিন হবে!

ইবাদতের মূল প্রাণ হচ্ছে তাকওয়া ও আল্লাহ ভীতি। কোরবানির মাধ্যমে তাকওয়া ভীতি জেগে উঠুক। নিজের আমিত্ব ও অহংবোধ চিরতরে কোরবানি হয়ে যাক।

পবিত্র কোরআনে এসেছে, আল্লাহর কাছে তোমাদের পশুর গোশত, রক্ত কিছুই পৌঁছায় না—তাঁর কাছে পৌঁছে শুধু তোমাদের তাকওয়া ও আল্লাহ ভীতি। (সুরা হজ: ৩৭)

কোরবানির মূল সার্থকতা হলো, নিজের আমিত্বকে ত্যাগ করে আল্লাহর সামনে নিজেকে পেশ করা। সুতরাং নিজের আমিত্বকে কোরবানি করার একটি বড় সুযোগ হচ্ছে ঈদুল আজহা।

কোরবানির গোশত নিয়ে আমি যদি মুসলিম ভাইবোনদের দুয়ার দুয়ারে ঘুরে বেড়াতে পারি—সেটা আমার আমিত্ব অহমিকা দূর করার কার্যকরী ওষুধ হবে এবং এটি হবে আমার বিনয় নম্রতার পরিচয়। এটি গরিব মিসকিনের প্রতি ভ্রাতৃত্ব মমত্ববোধ। এতে আল্লাহ পাক সন্তুষ্ট হন। কোরবানি যখন ইবাদত, তখন গোশত বণ্টনও আল্লাহর সন্তুষ্টি মোতাবেক হওয়াই বাঞ্ছনীয়।

আমাদের করণীয়
কোরবানির আগেই আমরা নিজ নিজ এলাকার একটি তালিকা তৈরি করে রাখব—কারা কোরবানি দিতে সক্ষম নয়? তারপর কোরবানির দিন সে তালিকা অনুযায়ী সবার ঘরে ঘরে আমরাই কোরবানির গোশত পৌঁছে দেব।

প্রত্যেক মহল্লার কোরবানিদাতারা এই চিন্তা চেতনায় লালন করলে একটি প্রকৃত ইসলামি সমাজ, এবং সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের চোখ জুড়ানো দৃশ্য ফুটে উঠবে—যা কোরবানির দিনকে করবে আনন্দ ভাগাভাগির দিন। আল্লাহর নৈকট্য হাসিলে নিজেকে সঁপে দিয়ে ইবাদতের মহিমায় ভাস্বর হওয়ার দিন।

একটি সতর্কতা

১. মানতের কোরবানির গোশত মানতকারী ও তার পরিবার খেতে পারবে না; বরং তার পুরোটাই দান করে দিতে হবে এবং যারা জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত শুধু তাদেরই দেওয়া যাবে, ধনীদের দেওয়া যাবে না। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/১৯৫, রদ্দুল মুহতার: ৩/৭৩৭)

২. কিছু সমাজে প্রচলিত আছে সকল কোরবানিদাতাদের থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ গোশত সংগ্রহ করে তা সমাজের প্রতিটি ঘরে বণ্টন করা হয়। এ ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময় কোরবানিদাতা চক্ষুলজ্জার ভয়ে কিংবা সামাজিক চাপে পড়েই গোশত দিতে বাধ্য হন।

একই সঙ্গে এ ক্ষেত্রে ধনী, গরিব এমনকি স্বয়ং কোরবানিদাতাও ওই গোশতের ভাগ পায়। কিন্তু সমাজে অনেকের কোরবানি মানতের থাকে, যা গরিবদের অধিকার। তাই এ পদ্ধতি জায়েজ নেই।

তবে যদি মানতের না হয়, কুরবানিদাতা স্বেচ্ছায় এখানে গোশত দেন এবং তা শুধু গরিবদের মাঝেই বিতরণ করা হয়—তাহলে তা জায়েজ হবে। (দারুল উলুম দেওবন্দের ওয়েবসাইট, ফতোয়া নং: ১৫৩৮৩১)

লেখক: শিক্ষক, প্রাবন্ধিক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শুরু হচ্ছে পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট সিজন-২ কোরআন প্রতিযোগিতা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে কোরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতা পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট সিজন-২ আয়োজনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়েছে। ‘টি কে গ্রুপ’-এর উদ্যোগে এই ‘ইসলামিক রিয়্যালিটি শো’টি দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে টি কে গ্রুপের বিজনেস ডিরেক্টর মোহাম্মদ মোফাচ্ছেল হক দেশবরেণ্য ইসলামি চিন্তাবিদ, আলেম ও শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মেধাবী কিশোর-কিশোরী হাফেজদের জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরা এবং তাদের মূল্যায়ন করার উদ্দেশ্যে পুষ্টি পবিত্র কোরআন চর্চার যে যাত্রা শুরু করেছে, তা অব্যাহত থাকবে। আমাদের বিশ্বাস, দ্বিতীয় এই আসরে পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট আরও জনপ্রিয়তা অর্জন করবে।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, টি কে গ্রুপের বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে ইসলামের খেদমতে এই আয়োজন সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

অনুষ্ঠানে টি কে গ্রুপের পরিচালক (এইচআর) আলমাস রাইসুল গনিও বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কারি এবং ‘পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট’-এর প্রধান বিচারক শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারী। তিনি বলেন, ‘কিশোর ও তরুণ প্রজন্মকে পবিত্র কোরআনের প্রতি অনুরাগী করতে এই আয়োজন প্রশংসার দাবিদার। সমাজে ইসলামি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় টি কে গ্রুপের এই উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।’

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খুদে প্রতিভাবান হাফেজগণ প্রাথমিক অডিশন রাউন্ডে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। অভিজ্ঞ বিচারক এবং আলেমগণের বিবেচনায় সেরা প্রতিযোগীরা মূল পর্বে অংশগ্রহণ করবে। রিজিওনাল অডিশনে অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীরা পুষ্টির পক্ষ থেকে আকর্ষণীয় উপহার পাবে।

২২ ডিসেম্বর থেকে দেশব্যাপী অডিশন পর্ব শুরু হবে। চূড়ান্ত পর্ব পবিত্র রমজান মাসজুড়ে প্রতিদিন বিকেল ৫টা হতে মাগরিবের আজানের আগে দেশের অন্যতম চ্যানেল ‘নাইন’-এ প্রচারিত হবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে বিজয়ীরা পাবেন লক্ষাধিক টাকাসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় পুরস্কার।

সংবাদ সম্মেলনে টি কে গ্রুপের বিভিন্ন ইউনিটের হেড অব সেলস, হেড অব বিজনেসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রবীণ সুফি পীর জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি আর নেই

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রখ্যাত সুফি সাধক, নকশবন্দি তরিকার প্রভাবশালী পীর ও ইসলামিক স্কলার শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ইন্তেকাল করেছেন।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের লাহোরে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

তাঁর ইন্তেকালের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁরই খলিফা মাওলানা মাসুমুল হক। একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের গণমাধ্যম ম্যাসেজ টিভির পরিচালক আবদুল মতিন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ ঝং জেলায় মাহদুল ফাকির আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি তাজকিয়া, ইসলাহে নফস ও সুফি শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য মুরিদ ও অনুসারী রয়েছেন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাওয়াতি সফর করেছেন। দারুল উলুম দেওবন্দসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি প্রতিষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর বয়ান ও নসিহত ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

শায়খ জুলফিকার আহমদ একজন প্রথিতযশা লেখকও ছিলেন। ফিকহ, আত্মশুদ্ধি, পারিবারিক জীবন এবং নারীদের ইসলামি ভূমিকা বিষয়ে রচিত তাঁর বহু গ্রন্থ মুসলিম সমাজে বিশেষভাবে সমাদৃত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে যে আমল

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৪
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে। মহানবী (সা.) সদকার এমন কিছু অসামান্য ফজিলত বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের জীবনে এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।

সদকার এক অন্যতম ফজিলত হলো, এটি আল্লাহর ক্রোধ প্রশমিত করে। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘দান-সদকা আল্লাহর ক্রোধ কমায় এবং মানুষকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে।’ (জামে তিরমিজি)

মানুষ জীবনে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় নানা পাপ করে আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়, ফলে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হয়। এমতাবস্থায় আল্লাহর রাগ কমানোর জন্য এবং তাঁর সন্তুষ্টি ফিরে পাওয়ার জন্য সদকা এক ফলপ্রসূ আমল। সদকার বরকতে আল্লাহ সেই রাগ দূর করে দেন। এ ছাড়া, এই হাদিসের মাধ্যমে জানা যায়, সদকার কারণে আল্লাহ তাআলা দানশীল ব্যক্তিকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করেন এবং তাকে ইমানের সঙ্গে মৃত্যু দান করেন।

দান-সদকা যে শুধু পরকালে সওয়াব বৃদ্ধি করে তা নয়; বরং এর বরকতে আল্লাহ দুনিয়ার সম্পদও বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। এক হাদিসে আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু জর (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, সদকা কী?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘কয়েক গুণ। (অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যে পরিমাণ আল্লাহর জন্য দান করবে, তার কয়েক গুণ বেশি সওয়াব সে পাবে)। আর আল্লাহ তাআলা বিপুল ভান্ডারের অধিকারী।’ (মুসনাদে আহমাদ)

অনেক হাদিসবিশারদ এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, সদকার বরকতে আল্লাহ দুনিয়ায়ও সম্পদ বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। আর পরকালে যে প্রতিদান সে পাবে, তা হবে এর চেয়েও বহুগুণ বেশি। বাস্তবেও দেখা যায়, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে দান করেন, তাঁর সম্পদ অদ্ভুতভাবে বেড়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১১ মিনিট
ফজর০৫: ১২ মিনিট০৬: ৩১ মিনিট
জোহর১১: ৫৪ মিনিট০৩: ৩৭ মিনিট
আসর০৩: ৩৮ মিনিট০৫: ১২ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৪ মিনিট০৬: ৩৩ মিনিট
এশা০৬: ৩৪ মিনিট০৫: ১১ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত