Ajker Patrika

‘মাইক্রোসফটের সবার হাতে ফিলিস্তিনিদের রক্ত’, প্রতিবাদী সেই দুই কর্মীকে বরখাস্ত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৪: ১৬
প্রতিবাদ জানান মাইক্রোসফটের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ইবতিহাল আবুসাদ। ছবি: সংগৃহীত
প্রতিবাদ জানান মাইক্রোসফটের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ইবতিহাল আবুসাদ। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। এই ইসরায়েলের সামরিক খাতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাইক্রোসফটে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি। এ নিয়ে কর্মীদের তোপের মুখে পড়েছে মার্কিন টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট। প্রতিষ্ঠানটির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের সামনে নজিরবিহীন প্রতিবাদ জানিয়েছেন দুই কর্মী—ইবতিহাল আবুসাদ এবং বানিয়া আগারওয়াল।

গত শুক্রবার (৪ মার্চ) প্রতিষ্ঠানটির ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে ওয়াশিংটনে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিল গেটসসহ প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ও বর্তমান উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। টেক জায়ান্টটির তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির চ্যাটবট কো-পাইলটের নানা ফিচার দর্শক–অতিথিদের সামনে উপস্থাপন করছিলেন প্রতিষ্ঠানটির এআই বিভাগের সিইও মুস্তাফা সুলেমান। এমন সময় তাঁকে থামিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ইস্যুতে প্রতিষ্ঠানটির অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেন ইবতিহাল আবুসাদ নামের এক কর্মী। ইবতিহাল মাইক্রোসফটের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।

মঞ্চের দিকে এগোতে এগোতে গলা উঁচিয়ে তিনি বলেন, ‘মুস্তাফা, তোমার লজ্জা হওয়া উচিত। দাবি করছ যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে তোমরা মানবজাতির কল্যাণের জন্য ব্যবহার করো। কিন্তু সাধারণ মানুষকে মারতে, ইসরায়েলের অস্ত্রকে আরও উন্নত করতে, তেল আবিবকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরবরাহ করো তোমরা। ৫০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে, আর তোমরা সেই কাজকে উৎসাহিত করছ, সহযোগিতা করছ!’

এ সময় কৌশলী অবস্থান নেন মাইক্রোসফট এআই বিভাগের সিইও মুস্তাফা। তিনি বলেন, ‘তোমার প্রতিবাদের জন্য ধন্যবাদ। আমি শুনছি তোমার প্রতিবাদের কথা।’

তাঁকে থামিয়ে দিয়ে ইবতিহাল মঞ্চে ফিলিস্তিনের প্রতীক কিফায়া ছুড়ে দেন। চিৎকার করে বলেন, ‘আমাদের এলাকায় গণহত্যা চালাতে এআইয়ের ব্যবহার বন্ধ করো, মুস্তাফা। তোমাদের সবার হাতে রক্ত লেগে আছে। মাইক্রোসফটের সব কর্মীর হাতে রক্ত লেগে আছে।’

পরে সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও বার্তায় ইবতিহাল বলেন, ‘যখন ফিলিস্তিনে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, তখন আমরা এমন আড়ম্বর আনন্দ উদ্‌যাপন করতে পারি না। যারা মানুষকে হত্যার জন্য আগ্রাসনকারীদের প্রযুক্তি সরবরাহ করে, তাদের ভয় পাই না আমি। গাজা গণহত্যায় মাইক্রোসফটের জড়িত থাকা আমাকে খুব পীড়া দেয়। আমি মাইক্রোসফটের জন্য যে কোড তৈরি করছি, তা হয়তো গাজার শিশুদের হত্যায় ব্যবহৃত হচ্ছে, যা আমাকে মানসিকভাবে প্রচণ্ড পীড়া দেয়।’

৫০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানের আরেক অংশে যখন মঞ্চে বসে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস, সাবেক সিইও স্টিভ বালমার এবং বর্তমান সিইও সত্য নাদেলা, তখন প্রতিবাদ জানান প্রতিষ্ঠানটির আরেক কর্মী বানিয়া আগারওয়াল। চিৎকার করে তিনি বলেন, ‘তোমাদের ধিক্কার। তোমরা ভণ্ড।’ এরপর চাকরিও ছেড়ে দেন বানিয়া।

ওই ঘটনার পর শুক্রবারই এক বিবৃতিতে মাইক্রোসফট বলে, ‘আমরা বাক্‌স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। আমরা কারও মত প্রকাশে বাধা হতে চাই না। কিন্তু তা যদি ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ হয়, তাহলে আপনাদের আমরা অন্যত্র যাওয়ার অনুরোধ করছি। আমাদের ব্যবসায়িক নীতিমালার মান বজায় রাখতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

প্রতিবাদ জানানো দুই কর্মীর ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানতে চাওয়া হলে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য দিতে রাজি হয়নি মাইক্রোসফট। তবে, ইবতিহাল বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, প্রতিবাদ জানানোর পর থেকে মাইক্রোসফটের অ্যাকাউন্টে তিনি আর প্রবেশ করতে পারছেন না।

তবে পরে কর্মীদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি সংগঠন বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছে, প্রতিবাদকারী দুই কর্মীকে বরখাস্ত করেছে মাইক্রোসফট।

গতকাল সোমবার বরখাস্তের চিঠিতে মাইক্রোসফট একজন কর্মীকে ‘বহু প্রত্যাশিত এই অনুষ্ঠানে সুনাম ক্ষুণ্ন করা এবং চরম ব্যাঘাত সৃষ্টির উদ্দেশ্যে’ অসদাচরণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। মাইক্রোসফট জানিয়েছে, অপর কর্মী ইতিমধ্যেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে সোমবার কোম্পানির পক্ষ থেকে তাঁকে নির্ধারিত সময়ের পাঁচ দিন আগেই চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে, কিছু চুক্তির প্রতিবাদ করায় একটি অভ্যন্তরীণ বৈঠক থেকে পাঁচ কর্মীকে বের করে দেয় মাইক্রোসফট।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে গাজা ও লেবাননে বোমা হামলার লক্ষ্য নির্ধারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে মাইক্রোসফট—চলতি বছর শুরুর দিকে মার্কিন বার্তা সংস্থা এপির অনুসন্ধানে উঠে আসে বিস্ফোরক এই তথ্য। শুধু মাইক্রোসফটই নয়, ওপেনএআইয়ের বেশ কিছু প্রযুক্তিও ব্যবহার করে নেতানিয়াহু প্রশাসন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পশ্চিম তীরে এক বছরে ১৫০০ বাড়ি ভেঙেছে ইসরায়েল, ভাঙবে আরও ২৫টি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও নূর শামস ক্যাম্পে উচ্ছেদ অভিযান চালায় ইসরায়েল। সে সময় উচ্ছেদের শিকার একটি পরিবারের সদস্যরা বের হয়ে যাচ্ছেন বাড়ি থেকে। ছবি: এএফপি
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও নূর শামস ক্যাম্পে উচ্ছেদ অভিযান চালায় ইসরায়েল। সে সময় উচ্ছেদের শিকার একটি পরিবারের সদস্যরা বের হয়ে যাচ্ছেন বাড়ি থেকে। ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর অবৈধ কার্যক্রম কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। দখলদার বাহিনী বিগত এক বছরে অঞ্চলটিতে ১ হাজার ৫০০টি বাড়ি ভেঙে দিয়েছে। এ সপ্তাহে আরও ২৫টি বাড়ি ভাঙার পরিকল্পনা করছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এ সপ্তাহে অধিকৃত পশ্চিম তীরের নূর শামস শরণার্থীশিবিরে ২৫টি আবাসিক ভবন ভেঙে দেবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। নূর শামস তুলকারেম গভর্নরেটের অন্তর্ভুক্ত। এই অঞ্চলের গভর্নর আবদুল্লাহ কামিল গতকাল সোমবার এএফপিকে জানান, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কো–অর্ডিনেটর অব গভর্নমেন্ট একটিভিটিজ ইন দ্য টেরিটরিজ–সিওজিএটি তাঁকে এই পরিকল্পিত ধ্বংসের বিষয়ে অবহিত করেছে।

নূর শামসের কাছেই অবস্থিত তুলকারেম ক্যাম্পের কমিটির প্রধান ফয়সাল সালামা বলেন, এই ধ্বংসের নির্দেশে প্রায় ১০০টি পরিবারের ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইসরায়েল গত জানুয়ারিতে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ‘অপারেশন আয়রন ওয়াল’ শুরু করে। তাদের দাবি—এই অভিযান উত্তর পশ্চিম তীরের শরণার্থীশিবিরগুলোতে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য পরিচালিত হচ্ছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েল গণহত্যার যুদ্ধে যে ধরনের কৌশল ব্যবহার করেছিল, পশ্চিম তীরজুড়ে ভূখণ্ড দখল ও নিয়ন্ত্রণের জন্য একই ধরনের অনেক কৌশল ব্যবহার করছে।

রামাল্লা থেকে আল–জাজিরার নূর ওদেহ বলেন, ‘এটি এক বৃহত্তর অভিযানের অংশ যা প্রায় এক বছর ধরে চলছে। এই অভিযানে তিনটি শরণার্থীশিবিরকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে এবং গত এক বছরে সব মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ৫০০টি বাড়ি হয় ধ্বংস করা হয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৩২ হাজার ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে।’

ফিলিস্তিনি এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এ ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ ফিলিস্তিনিদের ‘খাঁচায় পুরে ফেলার’ এবং পশ্চিম তীরের মানচিত্রে পরিবর্তন আনার একটি প্রচেষ্টা। সোমবার নূর শামসের কয়েক ডজন বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা তাদের ক্যাম্পে ফিরে যাওয়ার পথে বাধা দেওয়া ইসরায়েলি সামরিক সাঁজোয়া যানের সামনে একটি বিক্ষোভ করে। তারা ধ্বংসের আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় এবং তাদের বাড়িতে ফেরার অধিকার দাবি করে।

ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি জাতীয় কাউন্সিলের প্রধান রুহি ফাত্তুহ বলেছেন, ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্ত ‘জাতিগত নির্মূল এবং অবিরাম জোরপূর্বক স্থানচ্যুতির’ অংশ। ব্রাউন ইউনিভার্সিটির হলোকাস্ট এবং গণহত্যা অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ওমের বারতোভ বলেছেন, ইসরায়েল দখলকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি জনসংখ্যাকে ‘মানবেতর’ করে তুলছে।

তিনি বলেন, ‘এটি এক ধরনের সামাজিক মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা ১৯৩০-এর দশকে জার্মানিতে ইহুদি জনসংখ্যার ক্ষেত্রে যা ঘটেছিল। অর্থাৎ, আপনার (ফিলিস্তিনি জনগণ, ইসরায়েলি ইহুদি জনগণ এবং অন্য পক্ষের মানুষের সঙ্গে ক্রমবর্ধমানভাবে কোনো যোগাযোগই রাখতে পারছে না এবং তারা যেন অস্তিত্বহীন, সেভাবে আছে, সেভাবেই যেন থাকবে।

শিবিরের বাসিন্দা আয়েশা দামার চার তলা পারিবারিক বাড়িও ভেঙে দেওয়া হবে। এই বাড়িতে প্রায় ৩০ জন লোক থাকত। তিনি এএফপিকে বলেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে তিনি নিজেকে একা অনুভব করছেন। তিনি বলেন, ‘যেদিন এটা ঘটে (ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়), সেদিন কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি বা আমাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেনি।’

শিবিরের আরেক বাসিন্দা সিহাম হামায়েদ বলেন, ‘আমার ভাইদের সবগুলো বাড়িঘর ধ্বংস করা হবে। আর আমার সবাই এরই মধ্যে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছি।’ পশ্চিম তীরের অন্যান্য শরণার্থীশিবিরের মতো নূর শামসও ১৯৪৮ সালের নাকবার পর প্রতিষ্ঠিত হয়। সে সময় বর্তমান ইসরায়েলি ভূখণ্ড থেকে লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবসকে ফের ‘ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়’ বলে শুভেচ্ছা মোদির

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৫৮
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবসকে আবারও ভারতের ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ বলে দাবি করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ মঙ্গলবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা পোস্টে তিনি এই দাবি করেন। এমনকি টুইটে বাংলাদেশের নামও নেননি মোদি।

নরেন্দ্র মোদি ইংরেজিতে দেওয়া টুইটের বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘বিজয় দিবসে আমরা সেই সাহসী সৈন্যদের স্মরণ করি, যাঁদের সাহস ও আত্মত্যাগ ১৯৭১ সালে ভারতের এক ঐতিহাসিক বিজয় নিশ্চিত করেছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাঁদের দৃঢ় সংকল্প এবং নিঃস্বার্থ সেবা আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছিল এবং আমাদের ইতিহাসে গর্বের একটি মুহূর্ত খোদাই করে রেখেছে। এই দিন তাঁদের বীরত্বকে স্যালুট জানায় এবং তাঁদের অতুলনীয় চেতনার কথা মনে করিয়ে দেয়। তাঁদের বীরত্ব ভারতের প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।’

অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও মোদি একই ধরনের কাজ করেছেন। ২০২৪ সালেও বিজয় দিবসে তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের বিজয় বলে দাবি করেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আজ, বিজয় দিবসে আমরা সেই সাহসী সৈনিকদের সাহস ও আত্মত্যাগকে সম্মান জানাই, যাঁরা ১৯৭১ সালে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়ে অবদান রেখেছিলেন। তাঁদের নিঃস্বার্থ নিষ্ঠা এবং অটল সংকল্প আমাদের দেশকে সুরক্ষিত করেছে এবং আমাদের গৌরব বৃদ্ধি করেছে। দিনটি তাঁদের অসামান্য বীরত্ব এবং অবিচল আত্মার প্রতি একটি শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাঁদের আত্মত্যাগ চিরকাল প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে এবং আমাদের জাতির ইতিহাসে গভীরভাবে অমর হয়ে থাকবে।’

ঐতিহাসিক দলিল বলে, ভারত ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যৌথ বাহিনী হিসেবে যোগ দেয়। ইন্সট্রুমেন্ট অব সারেন্ডার বা আত্মসমর্পণের দলিলেও পাকিস্তানি বাহিনী ‘ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ বাহিনীর’ কাছেই আত্মসমর্পণ করেছে। অথচ এর আগের প্রায় ৯ মাস পুরো মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা।

বাংলাদেশের জনগণের ওপর ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনীর অতর্কিত বর্বরোচিত হামলার মধ্য দিয়ে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। যুদ্ধ পরিচালনার জন্য গঠিত ১১টি সেক্টরের কমান্ডারও ছিলেন তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে বিদ্রোহ করে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা কর্মকর্তারা। এ ছাড়া ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস বা ইপিআর এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা, যাঁরা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন। এ ছাড়া পুরো মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে লাখ লাখ বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। যেখানে কয়েক দিনের যুদ্ধে ভারতীয় সেনাদের প্রাণহানির সংখ্যা খুবই নগণ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি যেকোনো সময়ের চেয়ে কাছাকাছি: ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে একটি চুক্তির সম্ভাবনা ‘আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে খুব কাছাকাছি’ এসে গেছে। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার মার্কিন ও ইউরোপীয় নেতারা জার্মানির বার্লিনে এই বিষয়ে আলোচনা করে বিদ্যমান দূরত্ব দূর করার চেষ্টা করেছেন। তবে কয়েকজন কর্মকর্তা বলেছেন, আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে এখনো উল্লেখযোগ্য মতপার্থক্য রয়ে গেছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প সোমবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের বলেন—তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ন্যাটোর নেতাদের সঙ্গে ‘খুব দীর্ঘ এবং খুব ভালো আলোচনা’ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ইউরোপীয় নেতাদের কাছ থেকে দারুণ সমর্থন পাচ্ছি। তারাও এটি (যুদ্ধ) শেষ করতে চান।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমরা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট (ভ্লাদিমির) পুতিনের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা বলেছি এবং আমার মনে হয়—আমরা এখন আগের চেয়ে, যেকোনো সময়ের চেয়ে, কাছাকাছি আছি এবং আমরা কী করতে পারি তা দেখব।’ এর আগে, জেলেনস্কি বলেছিলেন—মার্কিন এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা কঠিন হলেও ফলপ্রসূ ছিল।

বার্লিনে দুই দিন ধরে চলা এই উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে দেন স্টিভ উইটকফ। এতে অংশ নেন ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার, জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতারা অংশ নেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের অন্যতম এই ভয়াবহ সংঘাতের অবসানের জন্য কিয়েভের ওপর ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে মস্কোর কাছে ছাড় দেওয়ার জন্য ক্রমবর্ধমান চাপ বাড়ার মধ্যেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনার পর এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় নেতারা বলেন, তারা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ‘শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ প্রদানের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত ইউরোপ-নেতৃত্বাধীন একটি ‘বহুজাতিক বাহিনী’ও অন্তর্ভুক্ত।

তারা বলেন, এই বাহিনীর কাজের মধ্যে ‘ইউক্রেনের অভ্যন্তরে কাজ করা’ এবং ইউক্রেনের বাহিনী পুনর্গঠনে সহায়তা, এর আকাশ সুরক্ষিত করা এবং নিরাপদ সমুদ্রকে সমর্থন করা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তারা বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনীর শান্তিকালীন সদস্য সংখ্যা ৮ লাখে থাকা উচিত। রয়টার্সকে দুই মার্কিন কর্মকর্তা এই প্রস্তাবিত সুরক্ষাগুলোকে ‘আর্টিকেল ৫-এর মতো’ বলে আখ্যা দিয়েছেন, যা ন্যাটোর আর্টিকেল ৫-এর পারস্পরিক প্রতিরক্ষা প্রতিশ্রুতির একটি ইঙ্গিত।

ইউক্রেন এর আগে ইঙ্গিত দিয়েছিল, দৃঢ় পশ্চিমা নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিনিময়ে তারা ন্যাটো জোটে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে প্রস্তুত। বার্লিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জেলেনস্কি বলেন, সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির অধীনে আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কিয়েভের জন্য দেওয়া নিরাপত্তা নিশ্চয়তাগুলোর একটি স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। তিনি যোগ করেন, যেকোনো নিশ্চয়তার মধ্যে কার্যকর যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা এমন নিশ্চয়তাগুলোর কী রূপ হতে পারে সে সম্পর্কে সতর্ক ছিলেন। ইউক্রেন ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের সমর্থনযুক্ত নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পেয়েছিল, কিন্তু সেগুলি ২০১৪ এবং ২০২২ সালে রাশিয়ার আক্রমণ থামাতে পারেনি।

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্ৎস বলেছেন, বার্লিন আলোচনায় ওয়াশিংটন ‘উল্লেখযোগ্য’ নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিয়েছে। জেলেনস্কির সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ‘আইনি ও বস্তুগত নিশ্চয়তার দিক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখানে বার্লিনে যা টেবিলে রেখেছে, তা সত্যিই উল্লেখযোগ্য।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন একটি সত্যিকারের শান্তি প্রক্রিয়ার সুযোগ রয়েছে।’ তবে যোগ করেন, আঞ্চলিক ব্যবস্থা এখনো একটি কেন্দ্রীয় বিষয়। তাঁর মতে, ‘আঞ্চলিক ছাড়ের বিষয়ে কেবল ইউক্রেনই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কোনো কিন্তু বা যদি নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতে ঘন কুয়াশায় ১০টি বাস–গাড়ির সংঘর্ষ, নিহত অন্তত ৪

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভারতের মথুরায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের মথুরায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের মথুরায় দিল্লি-আগ্রা এক্সপ্রেসওয়েতে ঘন কুয়াশার কারণে সাতটি বাস ও তিনটি গাড়ির সংঘর্ষের ফলে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই দুর্ঘটনায় অন্তত চারজন নিহত এবং ২৫ জন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ভোরের দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

মূলত ঘন কুয়াশার কারণে, দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ার কারণে একাধিক গাড়ির এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়, যার ফলে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মথুরার সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (এসএসপি) শ্লোক কুমার দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান প্রায় শেষের দিকে এবং অবরুদ্ধ হাইওয়ে পরিষ্কার করা ও আটকে পড়া যাত্রীদের সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, ‘আজ মঙ্গলবার সকালে মথুরায় যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে চারজন নিহত এবং ২৫ জন আহত হয়েছেন। ঘন কুয়াশার কারণে সাতটি বাস ও তিনটি গাড়ির মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা যেমন দেখতে পাচ্ছেন, এখানে এখনো কুয়াশা রয়েছে। এই দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ার কারণে ৭টি বাস এবং ৩টি ছোট গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনার ফলে গাড়িগুলোতে আগুনও ধরে যায়।’

উদ্ধার প্রচেষ্টা সম্পর্কে বলতে গিয়ে এসএসপি আরও যোগ করেন, ‘আমাদের কাছে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের দলগুলোকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান প্রায় শেষ। আমরা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারছি যে, চারজন মারা গেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ২৫ জনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাদের কেউই গুরুতরভাবে আহত নন। তারা বর্তমানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ছাড়া, আমরা এখানে উপস্থিত বাকি মানুষদের সরকারি গাড়ির মাধ্যমে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।’

যমুনা এক্সপ্রেসওয়ের এই সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মথুরার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিএম) চন্দ্র প্রকাশ সিং ঘটনাটিকে ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক’ বলে অভিহিত করেন এবং উদ্ধার তৎপরতার বিষয়ে আপডেট দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে এই সংঘর্ষের কারণ পরে তদন্ত করা হবে। তবে বর্তমান অগ্রাধিকার উদ্ধারকাজ এবং আহতরা যাতে সম্ভাব্য সেরা চিকিৎসা পান তা নিশ্চিত করা।

চন্দ্র প্রকাশ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আমরা দুর্ঘটনায় নিহত চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। তাৎক্ষণিকভাবে ১২ টিরও বেশি দমকলের ইঞ্জিন এবং ১৪ টিরও বেশি অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন করা হয়েছিল। আহতদের সিএইচসি বলদেব এবং জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা নিশ্চিত করছি, তাদের কেউই গুরুতরভাবে আহত নন এবং তারা সবাই আশঙ্কামুক্ত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জীবিত যাত্রীদের বাসযোগে ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতালে পাঠাচ্ছি। উদ্ধারকাজ মসৃণভাবে চলছে এবং পুরো সরকারি প্রক্রিয়া অবিলম্বে ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি যাতে তারা সেরা চিকিৎসা পান। আবারও বলছি, ত্রাণ কাজ চলছে। এই ঘটনাটি মর্মান্তিক।’

মথুরার যমুনা এক্সপ্রেসওয়ের এই সংঘর্ষের ঠিক একদিন আগেই সোমবার ভোরে দিল্লি-মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়েতে ঘন কুয়াশার ফলে প্রায় ২০টি গাড়ির মধ্যে এক মারাত্মক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ভোর ৫টার দিকে ঘটা এই দুর্ঘটনায় দুই পুলিশ অফিসারসহ চারজনের মৃত্যু হয় এবং আরও আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ জন গুরুতর আহত হন। ব্যাপক কুয়াশার কারণে সৃষ্ট অত্যন্ত কম দৃষ্টিসীমাকেই মূলত এই ব্যাপক সংঘর্ষের কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত