Ajker Patrika

রমজানে আল-আকসায় নামাজ পড়তে বাধা নেই, জানাল ইসরায়েল

আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৪, ১০: ৩৬
রমজানে আল-আকসায় নামাজ পড়তে বাধা নেই, জানাল ইসরায়েল

জেরুসালেমে মুসলমানদের পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত আল-আকসা মসজিদে রমজান মাসে নামাজ পড়তে কোনো বাধা নেই। বিগত বছরগুলোর মতো এ বছরও রমজান মাসে আল-আকসা মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারবেন ফিলিস্তিনিরা। গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়। 

বার্তা সংস্থা এএফপি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ‘বিগত বছরগুলোতে রমজানের প্রথম সপ্তাহে যত মুসল্লি টেম্পল মাউন্টে তথা আল-আকসায় নামাজ পড়তেন, এ বছরও তার ব্যতিক্রম হবে না। তবে প্রতি সপ্তাহে জেরুজালেম ও টেম্পল মাউন্ট এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ 

প্রতিবছরই রমজান মাসে আল-আকসা মসজিদে নামাজ আদায় করেন লাখো মুসলমান। তবে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান ও তার জেরে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী ও সেটেলারদের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষের কারণে এ বছরের পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। 

আরবি বছরের হিসাব অনুসারে, আগামী ১০ বা ১১ মার্চ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে পবিত্র রমজান। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে এবারের রমজানে আল-আকসায় ফিলিস্তিনিদের প্রবেশের পক্ষে ছিল না ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ও কট্টর ডানপন্থী নেতা ইতামার বেন গাভির জানিয়েছিলেন, এবারের রমজানে আল-আকসায় পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের প্রবেশ করতে দেওয়া উচিত হবে না। 

বেন গাভির বলেছিলেন, ‘প্রথমত, এটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা এই ঝুঁকি নিতে পারি না। দ্বিতীয়ত, যেখানে আমাদের নারী ও শিশুরা গাজায় জিম্মি হিসেবে রয়ে গেছে, সেখানে টেম্পল মাউন্টে হামাস তা উদ্‌যাপন করবে এমনটা আমরা হতে দিতে পারি না।’ 

এই মন্তব্যের পর রমজানে আল-আকসায় নামাজ পড়তে দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছিলেন, ‘এটি কেবল মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেওয়াই নয়, বরং ইসরায়েলের নিরাপত্তার সঙ্গেও ব্যাপারটি সম্পর্কিত। পশ্চিম তীর বা আশপাশের অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়ালে তা ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দেবে।’ 

নেতানিয়াহুর দপ্তরের বিবৃতির পর পৃথক এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা বলেছে, ‘ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য রমজান একটি পবিত্র মাস। বিগত বছরগুলোর মতে এ বছরও এ মাসের পবিত্রতা অক্ষুণ্ন রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে ইসরায়েল।’ 

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে। 

নজিরবিহীন সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর যোগ দেয় পদাতিক বাহিনীও। অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩০ হাজার ৫৩৪ জন, আহত হয়েছেন আরও ৭১ হাজার ৯৮০ জন ফিলিস্তিনি। নিহত ও আহতদের মধ্যে একটি বড় অংশই নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং বেসামরিক লোকজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তাইওয়ানকে ঘিরে ধরেছে চীনের যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান ও ড্রোন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মহড়ায় সরাসরি গুলির অনুশীলনও করা হচ্ছে। ছবি: চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড
মহড়ায় সরাসরি গুলির অনুশীলনও করা হচ্ছে। ছবি: চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড

তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি এখন পর্যন্ত তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে চীনের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক সামরিক প্রদর্শন।

চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে—মহড়ায় স্থল ও সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুর ওপর সিমুলেটেড হামলা, পাশাপাশি তাইওয়ানের প্রধান বন্দরগুলো অবরোধ করার অনুশীলন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করতে বা চাপের মুখে ফেলতে এই ধরনের অবরোধ ব্যবহৃত হতে পারে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকেরা। সরাসরি গোলাবর্ষণের মহড়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলবে এবং আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার তাইওয়ানের আরও কাছাকাছি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।

এই মহড়ার ফলে বেসামরিক বিমান ও নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন তাদের ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে এবং তাইওয়ানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিকল্প আকাশপথ ব্যবহারের প্রস্তুতি নিয়েছে। চীনা সামরিক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই মহড়া ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী শক্তি’ ও ‘বিদেশি হস্তক্ষেপের’ বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি তাইওয়ানের কাছে ১১.১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্যাকেজ। এতে রয়েছে ৮২টি হিমার্স রকেট লঞ্চার, ৪২০টি দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র, স্বচালিত হাউইটজার, উন্নত ড্রোন ব্যবস্থা ও অ্যান্টি-আর্মার অস্ত্র। বেইজিং এই অস্ত্রচুক্তিকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এতে তাইওয়ান একটি ‘বারুদের স্তূপে’ পরিণত হচ্ছে।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মহড়া চলাকালে তাদের দ্বীপভূমির চারপাশে ৮৯টি চীনা সামরিক বিমান, ১৪টি নৌজাহাজ ও ১৪টি কোস্ট গার্ড জাহাজ শনাক্ত করা হয়েছে। কিছু চীনা জাহাজ তাইওয়ানের উপকূলের খুব কাছাকাছি অবস্থানে এসে চোখ রাঙাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে তাইওয়ান।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, মহড়ার মূল লক্ষ্য তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর—উত্তরের কিলুং ও দক্ষিণের কাওশিয়ুং বন্ধ করে দেওয়ার সক্ষমতা পরীক্ষা। চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করলেও তাইওয়ান বলছে, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার শুধু সেখানকার জনগণেরই আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১৭ বছরের সাজার রায় চ্যালেঞ্জ করে ইমরান খান ও বুশরা বিবির আপিল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি। ছবি: এএফপি
ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি। ছবি: এএফপি

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি বর্তমানে কারাগারে। তোশাখানা দুর্নীতির মামলায় তাঁরা দুজনই সাজা খাটছেন। এর মধ্যে ২০ ডিসেম্বর তোশাখানা দুর্নীতির নতুন মামলায় তাঁদের আরও ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত। এই রায় চ্যালেঞ্জ করে আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) পৃথক দুটি আপিল করেছেন ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি।

আপিল আবেদনে ইমরান খান ও বুশরা বিবির আইনজীবীরা দাবি করেছেন, এই সাজা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ইমরান খানকে জাতীয় রাজনীতি থেকে দূরে রাখতেই এ ‘পরিকল্পিত’ রায় দেওয়া হয়েছে। আইনজীবীরা ইমরান খান ও বুশরা বিবির পক্ষে কিছু যুক্তি উত্থাপন করেছেন।

আইনজীবীদের দাবি, ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) কোনো এফআইআর ছাড়াই ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এর মাত্র দুই দিনের মাথায় তড়িঘড়ি করে চালানো তদন্তের ভিত্তিতে এই মামলা হয়, যা স্বচ্ছ বিচারের পরিপন্থী।

আপিল আবেদনে বলা হয়েছে, তোশাখানাসংক্রান্ত এটি চতুর্থ মামলা। একই বিষয়ে বারবার মামলা করা আইনের লঙ্ঘন এবং এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে, যাতে ইমরান খানকে দীর্ঘদিন কারাগারে আটকে রাখা যায়।

আইনজীবীদের দাবি, ২০১৮ সালের তোশাখানা নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত মূল্যের ৫০ শতাংশ পরিশোধ করেই উপহারগুলো রাখা হয়েছিল। এখানে কোনো ধরনের বিশ্বাসভঙ্গ বা ‘ক্রিমিনাল ব্রিচ অব ট্রাস্ট’ ঘটেনি।

আপিলে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, পাকিস্তান পেনাল কোড অনুযায়ী ইমরান খান ও বুশরা বিবি এই উপহার নেওয়ার সময় প্রচলিত সংজ্ঞায় ‘পাবলিক সার্ভেন্ট’ ছিলেন না। বিশেষ করে, বুশরা বিবি একজন গৃহিণী হিসেবে কোনো সরকারি পদের দায়িত্বে ছিলেন না।

প্রসঙ্গত, তোশাখানা মামলাটি মূলত ২০২১ সালের মে মাসে সৌদি আরব সফরকালে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের দেওয়া একটি দামি বুলগারি জুয়েলারি সেট নিয়ে। প্রায় ৮ কোটি রুপি মূল্যের এই নেকলেস, ব্রেসলেট, আংটি ও কানের দুলের সেটটি ইমরান দম্পতি মাত্র ২৯ লাখ রুপি পরিশোধ করে নিজের কাছে রেখেছিলেন।

এই মামলায় পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এআইএ) বিশেষ আদালতের বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ তাঁদের প্রত্যেককে প্রথমে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, এরপর দুর্নীতিবিরোধী আইনের আওতায় সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ১ কোটি ৬৪ লাখ রুপি জরিমানা করেছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে সংসদীয় অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন ইমরান খান। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা করা হয়। তিনি ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী আছেন। বর্তমানে ইমরান খান ১৯ কোটি পাউন্ডের দুর্নীতির মামলায় ১৪ বছরের সাজা খাটছেন। বুশরা বিবিও একই মামলায় সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত।

ইমরানের দল পিটিআইয়ের দাবি, তোশাখানা মামলার বিচারপ্রক্রিয়া ‘ক্যাঙারু কোর্টে’র মতো রুদ্ধদ্বার কক্ষে সম্পন্ন হয়েছে। এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক যুদ্ধবন্দীকে হত্যার অভিযোগ ইউক্রেনীয় কমান্ডারের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইউক্রেনের ২২৫ তম পৃথক অ্যাসল্ট ব্যাটালিয়নের সঙ্গে কমান্ডার ওলেহ শিরিয়াইভ (মাঝে)। ছবি: দ্য টাইমস
ইউক্রেনের ২২৫ তম পৃথক অ্যাসল্ট ব্যাটালিয়নের সঙ্গে কমান্ডার ওলেহ শিরিয়াইভ (মাঝে)। ছবি: দ্য টাইমস

ইউক্রেনের অন্যতম সর্বোচ্চ সামরিক সম্মানপ্রাপ্ত এক কমান্ডার অভিযোগ করেছেন, শান্তি আলোচনার মধ্যেই রুশ বাহিনী পরিকল্পিতভাবে ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীদের হত্যা করছে। ‘হিরো অব ইউক্রেন’ খেতাবে ভূষিত মেজর ওলেহ শিরিয়াইভ বলেছেন, রুশ সেনারা নিয়মিত আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেনীয় সৈন্যদের গুলি করে হত্যা করছে এবং এটি এখন একটি পদ্ধতিগত নীতিতে পরিণত হয়েছে।

সম্মুখ সমরের অজ্ঞাত একটি অবস্থান থেকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিরিয়াইভ জানান, তারা নিয়মিত এমন রেডিও ও যোগাযোগ বার্তা ধরতে পারছেন, যেখানে রুশ সামরিক নেতৃত্ব সরাসরি আত্মসমর্পণকারী সেনাদের হত্যা করার নির্দেশ দিচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, এই প্রথা গত দেড় বছরে একটি নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ ভয়াবহভাবে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সামরিক পর্যবেক্ষকরাও। রুশ সেনা বা ইউক্রেনীয় ড্রোনে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, আত্মসমর্পণের পর নিরস্ত্র সৈন্যদের সারিবদ্ধ করে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। ১৯ নভেম্বর পোকারোভস্কের কাছে ধারণ করা একটি ড্রোন ভিডিওতে দেখা যায়, এক রুশ সৈন্য মাটিতে উপুড় হয়ে থাকা চারজন নিরস্ত্র ইউক্রেনীয়কে গুলি করে হত্যা করে এবং পালানোর চেষ্টা করা আরেকজনের দিকেও অস্ত্র তাক করে।

ইউক্রেনের প্রসিকিউশন সার্ভিস জানিয়েছে, ২০২২ সালে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অন্তত ১৪৭ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীকে হত্যা করা হয়েছে, যার মধ্যে চলতি বছরেই ১২৭ জন। ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেলের দপ্তরের যুদ্ধাপরাধ বিভাগের প্রধান ইউরি বেলাউসভ বলেন, ‘এই সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি নীতির স্পষ্ট লক্ষণ।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্যবেক্ষকেরাও মধ্য নভেম্বরের পর থেকে রুশ বাহিনীর যুদ্ধাপরাধ বৃদ্ধির তথ্য নথিভুক্ত করেছে। আন্তর্জাতিক মানবিক আইন, বিশেষ করে তৃতীয় জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী, যুদ্ধবন্দীদের হত্যা স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ।

এদিকে, যুদ্ধে সম্মুখ সমরে রুশ বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি ইউক্রেনের তুলনায় অনেক বেশি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শিরিয়াইভ। ইউক্রেনের ২২৫ তম পৃথক অ্যাসল্ট ব্যাটালিয়নের এই কমান্ডার বলেন—শান্তি আলোচনা চললেও রাশিয়া কৌশলগত সুবিধা দেখাতে তাদের হাজার হাজার সৈন্যকে সামান্য ভূমি দখলের জন্য মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। শিরিয়াইভের দাবি, যুদ্ধে ইউক্রেনের ১টি সেনার বিপরীতে রুশ বাহিনী অন্তত ১০টি সেনা হারাচ্ছে।

অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বরাবরই দাবি করে আসছেন, রুশ বাহিনী আন্তর্জাতিক আইন মেনেই যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে আচরণ করে। অন্যদিকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধেও রুশ বন্দী হত্যার অভিযোগ উঠেছে। তবে সেই সংখ্যাটি তুলনামূলকভাবে অনেক কম।

শান্তি আলোচনার অগ্রগতির কথা বললেও শিরিয়াইভ সতর্ক করে বলেন, ইউক্রেন যদি অবস্থান ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়, তাহলে রুশ আগ্রাসন ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেলেনস্কি চাইলেন ৫০, যুক্তরাষ্ট্র দিতে চায় ১৫ বছরের নিরাপত্তা গ্যারান্টি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৭
রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলেনস্কি। ছবি: এএফপি
রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলেনস্কি। ছবি: এএফপি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ১৫ বছরের জন্য ‘শক্তিশালী’ নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিতে সম্মত হয়েছে। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ২ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে ইউরোপে ফেরার পথে তিনি এ তথ্য জানান।

তবে এই গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির মধ্যেও পূর্ব ইউক্রেনের বিতর্কিত দনবাস অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি দুই নেতা। ক্রেমলিন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, দোনেৎস্ক অঞ্চলের ‘ফোর্ট্রেস বেল্ট’ বা দুর্গ শহরগুলো থেকে ইউক্রেনীয় সেো সরিয়ে না নিলে তারা কোনো চুক্তিতে আসবে না।

জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যার অন্যতম মূল অংশ হলো মার্কিন নিরাপত্তা গ্যারান্টি। ইউক্রেনীয় পার্লামেন্ট এবং মার্কিন কংগ্রেস যৌথভাবে এ প্রতিশ্রুতির পক্ষে ভোট দেবে। যুক্তরাষ্ট্র ১৫ বছরের গ্যারান্টি দিলেও জেলেনস্কি ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছেন এই মেয়াদ ৩০, ৪০ বা ৫০ বছর করার জন্য। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

জেলেনস্কি মনে করেন, কোনো শান্তিচুক্তি হলে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি হবে নিরাপত্তার সেরা রূপ। তবে ট্রাম্প সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মার্কিন কোনো শান্তিবাহিনী সেখানে মোতায়েন করা হবে না।

বৈঠকের পর ট্রাম্প দাবি করেছেন, শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রে তাঁরা প্রায় ৯৫ শতাংশ সফল। তবে বাস্তব চিত্র ভিন্ন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কিয়েভ দ্রুত চুক্তিতে না এলে আরও ভূখণ্ড হারাবে। রাশিয়া অধিকৃত জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়ার বিষয়েও কোনো মন্তব্য করেনি তারা।

এদিকে, জেলেনস্কি স্পষ্টভাবে ভূমি ছাড়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন, বর্তমান ফ্রন্টলাইন বরাবর একটি ‘অসামরিক ও মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল’ গড়ে তোলার, যেখান থেকে উভয় পক্ষ তাদের সেনা সরিয়ে নেবে। জেলেনস্কির প্রস্তাবে আরও আছে, চূড়ান্ত শান্তি পরিকল্পনাটি ইউক্রেনের জনগণের সম্মতির জন্য একটি গণভোটে পেশ করা হবে। এই গণভোট আয়োজনের জন্য অন্তত ৬০ দিনের একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন।

কিন্তু রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা কোনো অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি নয়। ট্রাম্পও ইঙ্গিত দিয়েছেন, পুতিন এই ৬০ দিনের বিরতির প্রস্তাব মেনে নিতে আগ্রহী নন।

এদিকে, জানুয়ারি মাসে ওয়াশিংটনে ইউরোপীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির পরবর্তী বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, চুক্তির ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হলেও বাকি ৫ শতাংশ ‘জটিল ইস্যু’ (দনবাস ও ভূখণ্ড) সমাধান করাই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত