Ajker Patrika

ভারতে জেন-জিদের হাত ধরে ধর্ম ও জ্যোতিষশাস্ত্রের বাজার এখন ৭ লাখ কোটি টাকা!

এনডিটিভি
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩: ৩৬
ভারতের জনপ্রিয় আধ্যাত্মিক গুরু ও ধর্মীয় বক্তা অনিরুদ্ধাচার্য মহারাজ ওরফে পুকি বাবা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ভারতের জনপ্রিয় আধ্যাত্মিক গুরু ও ধর্মীয় বক্তা অনিরুদ্ধাচার্য মহারাজ ওরফে পুকি বাবা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

সম্প্রতি এক নতুন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে ভারতে। তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে জেন-জিরা ধর্ম ও জ্যোতিষশাস্ত্রের প্রতি আবারও আগ্রহী হয়ে উঠছে। একসময় যা কুসংস্কার বলে বিবেচিত হতো, তা এখন তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি ভারতে ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক অর্থনীতিকে বিশাল আকার দিচ্ছে। এই বাজার বর্তমানে প্রায় ৭ লাখ কোটি টাকার সমান।

গুরুগাঁওভিত্তিক সংখ্যাতত্ত্ব জ্যোতিষ সংস্থা নুম্রো ভানির জ্যোতিষী সিদ্ধার্থ এস কুমার এই পরিবর্তনের সরাসরি সাক্ষী। তিনি প্রতি মাসে ১০০ জনেরও বেশি ক্লায়েন্টকে পরামর্শ দেন, যাঁদের বেশির ভাগের বয়স ২৪ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। তবে তাঁর সবচেয়ে কম বয়সী ক্লায়েন্ট মাত্র আট বছর বয়সী! তিনি জানান, এই জেন-জিদের মধ্যে থেকে অনেক কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণী সম্পর্ক বা আত্মপরিচয়-সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে আসছেন।

সিদ্ধার্থ এস কুমার একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। ২৫ বছর বয়সী এক যুবক এসেছিলেন তাঁর কাছে। যুবক তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আমি কেন এখানে? আমার জীবনের উদ্দেশ্য কী?’ সিদ্ধার্থ বলেন, ওই ছেলে যখন দেখলেন তাঁর জন্মছকে ভ্রমণ, শিক্ষা ও দর্শনের প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে, তখন তিনি আর চোখের জল আটকাতে পারেননি। তিনি ১৪ বছর বয়সী একটি মেয়ের কথাও বলেন। ওই মেয়ের অল্প দিনের মধ্যে খুবই ঘনিষ্ঠ একটি সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল। সে সিদ্ধার্থের কাছে জানতে চেয়েছিল, ‘কেন সে মানুষের প্রতি এত আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে?’

সম্পর্ক, কর্মজীবন বা জীবন নিয়ে বিভ্রান্তিতে থাকা মানুষের এমন গল্পগুলো একটি ক্রমবর্ধমান প্রবণতাকে তুলে ধরে—তরুণ ভারতীয়রা তাঁদের ভেতরের বিশৃঙ্খলা ও মানসিক বাধাগুলো বুঝতে আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝুঁকছেন। প্রায়শই এটিকে বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার একটি উপায় হিসেবে ব্যবহার করছেন। আর প্রযুক্তি, এআই ও সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে এসব বিষয়ে পরামর্শ পাওয়াও সহজ হচ্ছে দিন দিন।

নুম্রো ভানির ২০২৪ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৫১ শতাংশ তরুণ ভারতীয় প্রতিদিন জ্যোতিষ শাস্ত্রীয় অন্তর্দৃষ্টি খোঁজেন। প্রায় ৮৮ শতাংশ সপ্তাহে অন্তত একবার রাশিফল পড়ে এবং ৭৫ শতাংশ তাদের হৃদয়সংক্রান্ত ব্যাপারে জ্যোতিষশাস্ত্রের ওপর নির্ভর করে।

তবে ট্র্যাডিশনাল জ্যোতিষশাস্ত্রের বাইরে এখন ডিজিটাল জ্যোতিষশাস্ত্রের জনপ্রিয়তাও বাড়ছে। অ্যাস্ট্রো টক ও অ্যাস্ট্রো ভেদের মতো এআই প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যক্তিগত রাশিফল ও ম্যাচ-মেকিংয়ের মতো পরিষেবা দিচ্ছে। অনলাইন জ্যোতিষশাস্ত্রের বাজার ২০২৫ সালের মধ্যে বার্ষিক ১৪ শতাংশ হারে ৭৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৬ হাজার ২০০ কোটি রুপি) ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। কোভিড-১৯ মহামারি এই প্রবণতাকে আরও ত্বরান্বিত করেছে—২০২১ সালেই অনলাইনে এসব বিষয়ে পরামর্শের হার ২০-২৫ শতাংশ বেড়েছে।

এমনকি ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতেও জেন-জিদের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি সমাপ্ত কুম্ভমেলায় ৪০ কোটিরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছিলেন এবং তাঁদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল তরুণ ভারতীয়। এর মাধ্যমে ভারতের আধ্যাত্মিক অর্থনীতিও বিকশিত হচ্ছে। এটি এখন কেবল মন্দির পরিদর্শনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এতে ভার্চুয়াল পূজা, অনলাইন তীর্থযাত্রা এবং জ্যোতিষশাস্ত্রীয় পরামর্শের মতো ডিজিটাল পরিষেবাও অন্তর্ভুক্ত। ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক বাজারের মূল্য ২০২৩ সালে ৫৮ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৭ লাখ কোটি টাকা) ছিল এবং এটি বার্ষিক প্রায় ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে।

সম্প্রতি সমাপ্ত কুম্ভ মেলায় ৪০ কোটিরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছিল, তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল তরুণ ভারতীয়রা।
সম্প্রতি সমাপ্ত কুম্ভ মেলায় ৪০ কোটিরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছিল, তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল তরুণ ভারতীয়রা।

ধর্ম ও জ্যোতিষশাস্ত্র কেন আবার জনপ্রিয় হচ্ছে?

মিলেনিয়ালরা ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতা থেকে দূরে ছিলেন। তাঁরা কর্মজীবনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে, দীর্ঘ সময় কাজ করতে ও নীরবে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবিলা করতে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু জেনারেশন জেড বা জেন-জিরা উল্টো পথে হাঁটছেন—পুজোর ধূপকাঠি, রত্নপাথর, কৃতজ্ঞতার তালিকা, জ্যোতিষীয় রুটিন—সবই আজ তাঁদের পরিচয়ের অংশ এবং তাঁরা এটি গর্বের সঙ্গে করছেন।

এআইচালিত জ্যোতিষশাস্ত্রীয় অ্যাপ অ্যাস্ট্রো শিওর এআইয়ের প্রধান নির্বাহী ও সহপ্রতিষ্ঠাতা ভানিয়া মিশ্র বলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই—এটি কেবল ফিরে আসছে না, এটি সম্ভবত পরবর্তী ফোমো (FOMO-Fear Of Missing Out)। মানুষ আর জিজ্ঞাসা করবে না, আপনি সপ্তাহান্তে বাইরে গিয়েছিলেন কি না। তারা জিজ্ঞাসা করবে, আপনি আপনার কর্মফল ঠিক করেছেন কি না।’

মিশ্রের মতে, মিলেনিয়ালরা একসময় উচ্চাকাঙ্ক্ষায় আধ্যাত্মিকতাকে চাপা দিয়েছিলেন। কিন্তু জেন-জি এই ইঁদুর দৌড় থেকে বেরিয়ে এসেছেন। তাঁরা নিজেদের পথ তৈরি করছেন। তাঁদের কাছে মানসিক শান্তির অগ্রাধিকার বেশি। মিলেনিয়াল ও তাঁদের বাবা-মা পারিবারিক আঘাত নিয়ে কখনো কথা বলেননি, কিন্তু জেন-জিরা এখন এসব বিষয় নিয়ে কথা বলছেন।

জেন-জিরা ধর্ম ও জ্যোতিষশাস্ত্রের প্রতি আবারও আগ্রহী হয়ে উঠছে। ছবি: সংগৃহীত
জেন-জিরা ধর্ম ও জ্যোতিষশাস্ত্রের প্রতি আবারও আগ্রহী হয়ে উঠছে। ছবি: সংগৃহীত

মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ইউভেট ডিসাও এতে একমত। তিনি বলেন, জেন-জিরা ধর্মের ক্ষমতা ও সমস্যা বোঝেন। তাঁরা এটিকে অন্ধভাবে গ্রহণ করেন না। তাঁরা তা-ই করেন, যা তাঁদের শান্তি দেয়। তাঁর মতে, এই প্রজন্ম আধুনিক বাস্তবতার সঙ্গে মানানসই করে ভারতীয় ঐতিহ্যকে গ্রহণ করছেন।

জ্যোতিষী সিদ্ধার্থ বলেন, এই প্রজন্ম ধর্মকে নতুন করে সাজাচ্ছে—ট্র্যাডিশন মাইনাস ডগমা। তাঁরা প্রাচীন বিজ্ঞানের ডিজিটাল পুনরুত্থানের নেতৃত্ব দিচ্ছে। এমনকি মিলেনিয়ালরাও এখন এই পথে ফিরতে শুরু করেছেন। এটি কেবল ভারতেই নয়, পশ্চিমা বিশ্বও বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্রে আসক্ত হচ্ছে।

ইনস্টাগ্রাম স্ক্রল করলে বোঝা যাবে, জ্যোতিষশাস্ত্র কতটা ট্রেন্ডি হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন জ্যোতিষ মিম, রাশিচক্রভিত্তিক রিল, সেলিব্রিটিদের রাশিফল—সবই ভাইরাল। প্রেমানন্দ গোবিন্দ শরণ (ইনস্টাগ্রামে তাঁর পৌনে ৩ কোটি ফলোয়ার) বা অনিরুদ্ধাচার্য মহারাজ ওরফে পুকি বাবার (ইনস্টাগ্রামে ৩৬ লাখ ফলোয়ার) মতো আধ্যাত্মিক গুরুরাও নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে তাঁদের কর্মকাণ্ড শেয়ার করে এই আলোচনার অংশ হচ্ছেন। তাঁরা জেন-জি ও অন্যান্য তরুণ প্রজন্মকে ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতার প্রতি আরও আগ্রহী করে তুলছেন।

প্রেমানন্দ গোবিন্দ শরণ মহারাজের আশ্রমে বিরাট কোহলি ও আনুশকা শর্মা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
প্রেমানন্দ গোবিন্দ শরণ মহারাজের আশ্রমে বিরাট কোহলি ও আনুশকা শর্মা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

ভানিয়া মিশ্র বলেন, ‘বিরাট কোহলি, আনুশকা শর্মা থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক তারকা দুয়া লিপাও প্রকাশ্যে জ্যোতিষশাস্ত্রে তাঁদের বিশ্বাসের কথা বলছেন। বিষয়টি আধ্যাত্মিকতাকে আবার জনপ্রিয় করে তুলছে। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় যা আছে এবং আপনার তারকারা যা অনুসরণ করেন, তা অবশ্যই কুল, তাই না?’

সিদ্ধার্থ কুমার বলেন, আজকের তরুণেরা জ্যোতিষশাস্ত্র ও আধ্যাত্মিকতাকে তাঁদের সম্পর্ক, অর্থ, স্বাস্থ্য ও জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে গাইড করার জন্য একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। অনেকের কাছে জ্যোতিষীরাই তাঁদের প্রধান উপদেষ্টা। একসময় যা কুসংস্কার হিসেবে দেখা হতো, তা এখন জেন-জিদের সেল্ফ-কেয়ার রুটিনের অংশ। কেউ নতুন কোনো প্রকল্প শুরু করছেন চন্দ্রচক্র অনুযায়ী, কেউ আবার ঘড়ি কিনছেন জ্যোতিষ দেখে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সোমালিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আব্দিরাহমান মোহাম্মদ আব্দুল্লাহি ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: টাইমস অব ইসরায়েল
সোমালিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আব্দিরাহমান মোহাম্মদ আব্দুল্লাহি ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: টাইমস অব ইসরায়েল

সোমালিল্যান্ডকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন নজির স্থাপন করেছে ইসরায়েল। এর মধ্য দিয়ে আফ্রিকার হর্ন অঞ্চলের এই বিচ্ছিন্নতাবাদী ভূখণ্ডটি ৩০ বছরেরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো কোনো রাষ্ট্রের কূটনৈতিক স্বীকৃতি পেল।

শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দেন, ইসরায়েল ও সোমালিল্যান্ড একটি যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছে, যার মাধ্যমে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। নেতানিয়াহু একে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গড়ে ওঠা ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন। এই চুক্তির আওতায় দুই দেশ রাষ্ট্রদূত নিয়োগ ও পরস্পরের দেশে দূতাবাস খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শুক্রবার রাতে (২৬ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে আল-জাজিরা জানিয়েছে, ১৯৯১ সালে সোমালিয়া থেকে একতরফাভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও সোমালিল্যান্ড এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি।

সোমালিয়া সরকার বরাবরই সোমালিল্যান্ডের স্বাধীনতাকে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। ইসরায়েলের ঘোষণার পর সোমালিয়ার সরকার একটি জরুরি বৈঠক ডাকে। এই বৈঠক থেকে ফোনালাপে মিসর, তুরস্ক ও জিবুতির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দেশটির ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ইসরায়েলের এমন স্বীকৃতিকে জাতিসংঘ সনদের পরিপন্থী এবং ‘বিপজ্জনক নজির’ বলে আখ্যা দিয়েছে মিসর।

আল-জাজিরা জানিয়েছে, ভিডিও কলে সোমালিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আব্দিরাহমান মোহাম্মদ আব্দুল্লাহিকে (আব্দিরাহমান সিরো) অভিনন্দন জানান নেতানিয়াহু এবং তাঁকে ইসরায়েল সফরের আমন্ত্রণ জানান। সোমালিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট একে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ উল্লেখ করে আব্রাহাম অ্যাকর্ডসে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতার পর এই স্বীকৃতি সোমালিল্যান্ডের জন্য বড় সাফল্য হলেও এটি সোমালিয়ার ভেতরে নতুন বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতাকে উসকে দিতে পারে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র এখনো সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর রিপাবলিকান দলের কিছু প্রভাবশালী নেতা বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের সিদ্ধান্ত আফ্রিকার হর্ন অঞ্চলের ভূরাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাজিব রাজাকের ১৫ বছরের কারাদণ্ড, জটিল সমীকরণে মালয়েশিয়ার সরকার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক বর্তমানে অন্য একটি মামলায় জেল খাটছেন; যার মেয়াদ ২০২৮ সালে শেষ হবে। ছবি: এএফপি
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক বর্তমানে অন্য একটি মামলায় জেল খাটছেন; যার মেয়াদ ২০২৮ সালে শেষ হবে। ছবি: এএফপি

মালয়েশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থ কেলেঙ্কারি মামলায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) কুয়ালালামপুর হাইকোর্টের বিচারক কলিন লরেন্স সেকুয়েরাহ এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে তাঁকে ১১ দশমিক ৪ বিলিয়ন রিঙ্গিত (প্রায় ২৮০ কোটি মার্কিন ডলার) জরিমানা করা হয়েছে।

৭২ বছর বয়সী নাজিব রাজাককে ক্ষমতার অপব্যবহারের চারটি ও অর্থ পাচারের ২১টিসহ মোট ২৫টি অভিযোগের সব কটিতেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এই রায় মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। কারণ, নাজিবের দল ইউএমএনও বর্তমান সরকারের একটি বড় অংশীদার।

পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলা রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক সেকুয়েরাহ নাজিবের আত্মপক্ষ সমর্থনের সব যুক্তি নাকচ করে দেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক দাবি করেছিলেন, ওয়ানএমডিবির কর্মকর্তারা তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। কিন্তু বিচারক তাঁর এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এটি বিশ্বাস করা মানে কল্পনাকে রূপকথার রাজ্যে নিয়ে যাওয়া। ব্রিটিশ শিক্ষায় শিক্ষিত এবং একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সন্তান হিসেবে নাজিব মোটেও কোনো ‘অবুঝ গ্রাম্য লোক’ নন, তিনি অত্যন্ত বুদ্ধিমান।

বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন, নাজিবের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো কোনো ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বিষয় নয়, বরং ‘কঠিন ও অকাট্য’ দালিলিক প্রমাণ বলছে তিনি নিজের ক্ষমতার চরম অপব্যবহার করেছেন।

আদালত নাজিবকে ১১ দশমিক ৪ বিলিয়ন রিঙ্গিত জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এই জরিমানা পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাঁকে অতিরিক্ত আরও ১০ বছরের জেল খাটতে হতে পারে।

আদালত ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য প্রতিটি অভিযোগে ১৫ বছর এবং অর্থ পাচারের জন্য পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন। তবে সব সাজার মেয়াদ একই সঙ্গে কার্যকর হবে, ফলে তাঁকে মোট ১৫ বছর জেল খাটতে হবে।

এদিকে নাজিব বর্তমানে অন্য একটি মামলায় জেল খাটছেন যার মেয়াদ ২০২৮ সালে শেষ হবে। নতুন এই সাজা সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে কার্যকর হবে।

তবে এই রায়ের ফলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে অস্থিরতা বাড়তে পারে। কারণ, নাজিবের দল ইউএমএনও বর্তমান সরকারের একটি বড় অংশীদার। ফলে দুর্নীতিবিরোধী ভাবমূর্তি নিয়ে ক্ষমতায় আসা আনোয়ার ইব্রাহিমের জন্য এটি একটি রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

২০২২ সালের নভেম্বরে মালয়েশিয়ায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে কোনো দল বা জোটই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন নিশ্চিত করতে না পারায়, শেষমেশ আনোয়ার ইব্রাহিমের দল পাকাতান হারাপান (পিএইচ) জোট সরকার গঠন করে। এর মধ্যে পিএইচর ৮২টি, ইউনাইটেড মালয়জ ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (ইউএমএনও) ২৬টি ও বারিসান ন্যাসিওনালের (বিএন) চারটি আসন নিয়ে এই জোট সরকার গঠিত হয়।

জেলখানায় থাকলেও দলের ওপর নাজিবের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। এই রায়ের পর দলের ভেতর থেকে আনোয়ার ইব্রাহিমের ওপর চাপ সৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদি কোনো কারণে ইউএমএনও বর্তমান জোট সরকার থেকে সরে যায়, তবে বিপাকে পড়বেন আনোয়ার ইব্রাহিম।

নাজিবের প্রধান আইনজীবী মুহাম্মদ শাফি আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আগামী সোমবার আপিল করবেন।

রায়ের পর এক বিবৃতিতে নাজিব রাজাক দেশবাসীকে শান্ত ও ধৈর্যশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই লড়াই দায়িত্ব এড়ানোর জন্য নয়, বরং ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য।’ তবে এই দণ্ডাদেশের ফলে নাজিবের রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের পথ কার্যত বন্ধ হয়ে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বারহাদ বা ওয়ানএমডিবি হলো মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রমালিকানাধীন একটি কৌশলগত উন্নয়ন সংস্থা। মূলত অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এটি তৈরি হয়েছিল, কিন্তু পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকসহ সংশ্লিষ্টরা আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন।

২০১৫ সালে ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারির ঘটনাটি প্রথম সামনে আসে, যা ২০১৮ সালের নির্বাচনে নাজিব রাজাকের দলের দীর্ঘ ছয় দশকের শাসনের অবসান ঘটায়। এর আগে ২০২০ সালে অন্য একটি মামলায় নাজিবকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, যা পরে কমিয়ে ছয় বছর করা হয়। সাত বছর ধরে চলা এই দীর্ঘ আইনিপ্রক্রিয়ায় নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিয়ে ফের উদ্বেগ জানাল ভারত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: এএনআই
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: এএনআই

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও ময়মনসিংহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ফের তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের ময়মনসিংহে ২৭ বছর বয়সী হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার কথা উল্লেখ করে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশে এক হিন্দু যুবককে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আশা করি, এই জঘন্য অপরাধের হোতাদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’

রণধীর জানান, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর ক্রমাগত সহিংসতা ও বৈরী আচরণকে ভারত সরকার একটি ‘গভীর উদ্বেগের বিষয়’ হিসেবে দেখছে। ভারত নিয়মিত এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণও করছে।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে দিল্লির অবস্থান পুনরায় পরিষ্কার করে মুখপাত্র বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে ভারতের অবস্থান শুরু থেকেই স্পষ্ট ও সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে চাই এবং আমরা সেখানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পক্ষে।’

ভারত বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় বলেও মন্তব্য করেন রণধীর জয়সওয়াল।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ভালুকার জামিরদিয়া এলাকার পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড কারখানায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দেয় স্থানীয় উত্তেজিত জনতা। পরে তাঁর মরদেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রাত আড়াইটার দিকে অর্ধপোড়া মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।

গত শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫০-১৬০ জনকে আসামি করে ভালুকা থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নামাজরত ফিলিস্তিনির ওপর গাড়ি চালিয়ে দিলেন ইসরায়েলি সেনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

ইসরায়েল অধিকৃত গাজার পশ্চিম তীরে নামাজরত ফিলিস্তিনি ব্যক্তির ওপর বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে দিয়েছেন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর (আইডিএফ) এক সেনা। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) এই রোমহর্ষক ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে।

আইডিএফ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অভিযুক্ত সেনাকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে বলে জানা গেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, পিঠে রাইফেল ঝোলানো এক ব্যক্তি সিভিল পোশাকে একটি এটিভি চালিয়ে এসে নামাজরত ফিলিস্তিনি ব্যক্তিকে সজোরে ধাক্কা দেন। এতে ওই ব্যক্তি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর ওই সেনাসদস্য চিৎকার করে তাঁকে ওই এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার ওই ফিলিস্তিনিকে ঘটনার পর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে তিনি বাড়িতে থাকলেও তাঁর দুই পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর বাবা মাজিদি আবু মোখো। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ভিডিওতে দেখা না গেলেও ওই সেনা তাঁর ছেলের চোখে ‘পিপার স্প্রে’ বা মরিচের গুঁড়ো ছিটিয়ে দিয়েছিলেন।

মাজিদি আবু মোখো ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানান, আক্রমণকারী ব্যক্তি ওই এলাকার একজন কট্টরপন্থী ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী। তিনি গ্রামের কাছে একটি অবৈধ চৌকি স্থাপন করেছেন। অন্য বসতি স্থাপনকারীদের নিয়ে তিনি এখানে গবাদিপশু চরাতে আসেন, রাস্তা অবরোধ করেন এবং গ্রামবাসীদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেন।

আইডিএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি একজন রিজার্ভ সেনা ছিলেন। ঘটনার পরপরই তাঁকে সামরিক দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার ও শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তাঁর কাছে থাকা সরকারি অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সেনাকে গতকাল রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় এবং বর্তমানে তিনি পাঁচ দিনের জন্য গৃহবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। এর আগে ওই ব্যক্তি গ্রামে গুলিবর্ষণ করেছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালটি গাজার পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের (বসতি স্থাপনকারী) হামলার ক্ষেত্রে রেকর্ড সৃষ্টিকারী ‘সহিংস বছর’।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৫১ জন অপহৃত হয়। এর জবাবে ইসরায়েলের টানা দুই বছরের যুদ্ধে গাজায় এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত