Ajker Patrika

ভাঙছে ব্রিটেনে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি, আসছে নতুন সমাজতান্ত্রিক দল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২৫, ১১: ৩৪
(বাঁ থেকে) লেবার পার্টির সাবেক নেতা জেরেমি করবিন ও সদ্য পদত্যাগী লেবার এমপি জারা সুলতানা। ছবি: সংগৃহীত
(বাঁ থেকে) লেবার পার্টির সাবেক নেতা জেরেমি করবিন ও সদ্য পদত্যাগী লেবার এমপি জারা সুলতানা। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সাবেক নেতা জেরেমি করবিন এবং সদ্য পদত্যাগী লেবার এমপি জারা সুলতানা নতুন বামপন্থী দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। জারা সুলতানা নিজেই এই খবর জানিয়েছেন। এই ঘোষণা ব্রিটিশ রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ব্রিটেনের দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার লেবার পার্টি থেকে পদত্যাগের পরপরই জারা সুলতানা ঘোষণা করেন, জেরেমি করবিনের সঙ্গে তিনি এই নতুন দলের সহনেতৃত্ব দেবেন। যদিও নতুন দলটির এখনো কোনো নাম ঘোষণা করা হয়নি। জারা সুলতানা জানিয়েছেন, এতে অন্যান্য স্বতন্ত্র এমপি, প্রচারকর্মী এবং অ্যাকটিভিস্টরা যুক্ত হবেন।

পাঁচ বছর আগে জেরেমি করবিনকে লেবার পার্টি থেকে বহিষ্কার তৎকালীন লেবার নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।

এই পদক্ষেপ ব্রিটেনের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বড় বিভক্তির আশঙ্কা তৈরি করেছে। ডানপন্থীদের মধ্যে রিফর্ম ইউকে এবং কনজারভেটিভদের মধ্যকার বিভাজন ব্রিটেনের রাজনীতিতে নানা উত্থান-পতনের কারণ হয়েছে। এবার বামপন্থীদের মধ্যকার বিভাজন ব্রিটেনকে বহুদলীয় জটিল রাজনীতিতে ঠেলে দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, একটি নতুন বামপন্থী দল গঠিত হলে তারা ১০ শতাংশ ভোট পেতে পারে। এটি হলে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির জন্য হবে বড় ধাক্কা। সে ক্ষেত্রে লেবার পার্টি এবং কনজারভেটিভ উভয়ই ২০ শতাংশ ভোট নিয়ে সমানে সমান থাকতে পারে।

নতুন দলের ঘোষণা দিয়ে জারা সুলতানা বলেছেন, পরবর্তী নির্বাচন হবে ‘সমাজতন্ত্র বনাম বর্বরতার’ মধ্যে একটিকে বেছে নেওয়া। কভেন্ট্রি সাউথের এই এমপি বলেন, নতুন দল কিয়ার স্টারমার সরকারের কল্যাণমূলক ভাতা কমানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে। গত সপ্তাহে হাউস অব কমন্সে এই বিল পাস করাতে ব্যর্থ হয়েছেন স্টারমার। এ ছাড়া, গাজায় যা ঘটছে তাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করে ফিলিস্তিনের পক্ষে আরও সোচ্চার হবেন বলেও জানিয়েছেন জারা।

রাজনীতি বিশ্লেষকেরা বলছেন, জারা সুলতানার এই ঘোষণা কিয়ার স্টারমারের ওপর আরও বামপন্থী নীতি গ্রহণের জন্য চাপ তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে তিনি কল্যাণমূলক ভাতাদি কমানোর পরিকল্পনা থেকে অপমানজনকভাবে সরে আসার মাত্র কয়েক দিন পরেই এ ঘটনা ঘটল। তাঁর নিজের দলের ৪৯ জন এমপি এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন। এই বিলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সুবিধা কমানোর প্রস্তাব রয়েছে।

জারা সুলতানা ও জেরেমি করবিন আশা করছেন, লেবার পার্টির বহু সমর্থক যারা কিয়ার স্টারমারের পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন, তাঁরা তাঁদের নতুন দলে যোগ দেবেন।

এক্স-এ দেওয়া এক বার্তায় জারা সুলতানা জানিয়েছেন, ১৪ বছর পর তিনি লেবার পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘জেরেমি এবং আমি দেশজুড়ে অন্যান্য স্বতন্ত্র এমপি, প্রচারকর্মী এবং অ্যাকটিভিস্টদের সঙ্গে একটি নতুন দল গঠনে সহনেতৃত্ব দেব।’

তিনি আরও বলেন, ‘এক বছর আগে আমাকে লেবার পার্টি থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল, কারণ আমি দুই সন্তানের সুবিধা বাতিল করার পক্ষে ভোট দিয়েছিলাম এবং ৪ লাখ শিশুকে দারিদ্র্য থেকে তুলে আনতে চেয়েছিলাম। আমি আবারও তা করব। আমি পেনশনভোগীদের জন্য শীতকালীন জ্বালানি ভাতা বাতিল করার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলাম। আমি আবারও তা করব।’

জারা সুলতানা ওই পোস্টে ব্রেক্সিট আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাইজেল ফারাজের নেতৃত্বাধীন রিফর্ম ইউকেরও সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিলিয়নিয়ারদের টাকায় চলা একজন ধোঁকাবাজকে বিভিন্ন জরিপে এগিয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে, কারণ লেবার পার্টি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।’

গাজায় চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘ফারাজ থেকে স্টারমার পর্যন্ত রাজনৈতিক বলয়ের সবাই গাজায় গণহত্যা বন্ধ করার চেষ্টা করা বিবেকবান মানুষকে সন্ত্রাসী হিসেবে অপবাদ দিচ্ছে। কিন্তু সত্য স্পষ্ট—এই সরকার গণহত্যার সক্রিয় অংশীদার। ব্রিটিশ জনগণ এর বিরোধিতা করছে। আমরা আর এটা সহ্য করব না।’

অভিবাসন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের গত মাসের বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন জারা সুলতানা। কিয়ার স্টারমার বলেন, ব্রিটেন ‘বিদেশিদের দ্বীপ’ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। জারা সুলতানা বলেন, ‘আমরা বিদেশিদের দ্বীপ নই—আমরা এমন দ্বীপ, যেখানে ভোগান্তি রয়েছে। আমাদের এমন বাসস্থান এবং জীবন দরকার, যার ব্যয় আমরা বহন করতে পারি। এমন বিল নয়, যা আমরা প্রতি মাসে মুষ্টিমেয় কিছু এলিটকে দিই, যারা নগদ টাকায় ডুবে আছে। আমাদের অর্থ জনসেবায় ব্যয় করা দরকার, অনন্ত যুদ্ধে নয়।’

জারা সুলতানা আরও যোগ করেন, ‘২০২৯ সালে কোনটি বেছে নেবেন সেটি স্পষ্ট হবে—সমাজতন্ত্র বা বর্বরতা। বিলিয়নিয়ারদের জন্য ইতিমধ্যেই তিনটি দল লড়াই করছে। বাকিদের জন্য একটি দল থাকুক, সেই সময় এসেছে। আমাদের সঙ্গে যোগ দিন। এখনই সময়।’

এক্স-এর বার্তায় ‘টিম জারা’-তে যোগদানের জন্য একটি লিংকও দেওয়া হয়েছে।

জেরেমি করবিন ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত লেবার পার্টির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বর্তমানে ইজলিংটন নর্থের স্বতন্ত্র এমপি। তিনি এখনো জারা সুলতানার ঘোষণার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

তবে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে একটি খবর ছড়িয়েছে, তিনি নতুন দলে যোগ দিতে রাজি হননি। যদিও এর আগে গত বুধবার রাতে আইটিভির রবার্ট পেস্টনকে তিনি বলেছিলেন, একটি নতুন বামপন্থী দল গঠনের জন্য কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘একটি বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে এবং সেখানে একটি বিকল্প উত্থাপিত হবে, যা দারিদ্র্য, অসমতা এবং যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তির ওপর ভিত্তি করে একটি পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কাজ করবে।’

জেরেমি করবিনের ছায়া চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী জন ম্যাকডনেল অবশ্য নতুন দলে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি এক্স-এ পোস্ট করেছেন, ‘জারাকে লেবার পার্টি থেকে হারিয়ে আমি অত্যন্ত দুঃখিত। বর্তমানে লেবার পার্টি যারা চালাচ্ছেন তাঁদের নিজেদেরই জিজ্ঞাসা করা উচিত কেন একজন তরুণ, স্পষ্টভাষী, প্রতিভাবান, অত্যন্ত নিবেদিতপ্রাণ সমাজতান্ত্রিক অনুভব করেন যে তাঁর এখন লেবার পার্টিতে কোনো জায়গা নেই এবং তাঁকে দল ছাড়তে হবে।’

উল্লেখ্য, জেরেমি করবিনকে ২০২০ সালে লেবার পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয়। কারণ তাঁর নেতৃত্বে দলের মধ্যে ইহুদি-বিদ্বেষ বেড়ে যাওয়ার অভিযোগে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি সেই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

গত মাসে জারা সুলতানা প্যালেস্টাইন অ্যাকশন নামে একটি গ্রুপকে সমর্থন করে এক্স-এ ‘আমরা সবাই প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ লিখে সমালোচিত হন। এ ছাড়া, গত বুধবার রাতে হাউস অব কমন্সে সন্ত্রাসী আইনের অধীনে এই গ্রুপটিকে নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে ভোট দেন তিনি।

২০২০ সালে জারা একটি বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, যা কার্যকর হলে দলত্যাগী এমপিদের উপনির্বাচনের মুখোমুখি হতে হতো।

এদিকে গ্রিন পার্টির প্রধান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী জ্যাক পোলানস্কি নতুন দলের সঙ্গে কাজ করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। তিনি এক্স-এ পোস্ট করেছেন, ‘যারা টোরি, রিফর্ম এবং এই ব্যর্থ লেবার সরকারের মোকাবিলা করতে চায়, তারা আমার বন্ধু। বাস্তবে এটি কেমন দেখায় তা দেখার অপেক্ষায় আছি।’

লেবার পার্টির একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘মাত্র ১২ মাসে, এই লেবার সরকার মজুরি বাড়িয়েছে, অতিরিক্ত ৪০ লাখ এনএইচএস অ্যাপয়েন্টমেন্ট সরবরাহ করেছে, ৭৫০টি বিনা মূল্যে প্রাতরাশের ক্লাব খুলেছে, তিনটি বাণিজ্য চুক্তি এবং চারটি সুদের হার হ্রাস করে লাখ লাখ মানুষের বন্ধকের (মর্টগেজ) কিস্তি কমিয়েছে। কেবল লেবারই ব্রিটেনকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফিলিস্তিনপন্থী প্ল্যাকার্ড হাতে এবার লন্ডনে গ্রেপ্তার গ্রেটা থুনবার্গ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
লন্ডনে গ্রেপ্তারের মুহূর্তে গ্রেটা থুনবার্গ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
লন্ডনে গ্রেপ্তারের মুহূর্তে গ্রেটা থুনবার্গ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

লন্ডনে ফিলিস্তিনপন্থী এক বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার সময় সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে গ্রেপ্তার করেছে ব্রিটিশ পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে (২৩ ডিসেম্বর) লন্ডনের ফেনচার্চ স্ট্রিটে একটি বিমা প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’-এর প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ২২ বছর বয়সী গ্রেটা থুনবার্গ বিক্ষোভ শুরুর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তিনি মাটিতে বসে একটি প্ল্যাকার্ড ধরে ছিলেন। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল—‘আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশন বন্দীদের সমর্থন করি। আমি গণহত্যার বিরোধিতা করি।’

পুলিশ দাবি করেছে, গ্রেটা থুনবার্গের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডের বার্তাটি সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০০-এর ১৩ ধারায় নিষিদ্ধ সংগঠনের প্রতি সমর্থন প্রকাশের শামিল।

এর আগে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া আরও দুই কর্মীকে ‘অপরাধমূলক ক্ষতিসাধনের’ অভিযোগে আটক করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, তাঁরা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে অ্যাসপেন ইন্স্যুরেন্স নামের ওই ভবনের সামনের অংশে লাল রং ছিটিয়ে দেন। পুলিশ জানায়, হাতুড়ি ও লাল রং ব্যবহার করে ভবনটির ক্ষতি করা হয়েছে।

‘প্রিজনার্স ফর প্যালেস্টাইন’ নামের একটি প্রচারগোষ্ঠী জানিয়েছে, অ্যাসপেন ইন্স্যুরেন্সকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, কারণ প্রতিষ্ঠানটি ইসরায়েলি অস্ত্র প্রস্তুতকারক এলবিট সিস্টেমসের যুক্তরাজ্য শাখাকে বিমা সেবা দিচ্ছিল। সংগঠনটি আরও জানায়, প্যালেস্টাইন অ্যাকশন-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বন্দী বর্তমানে অনশন কর্মসূচিতে রয়েছেন। মোট ৮ জন বন্দী অনশন শুরু করেছিলেন। এর মধ্যে দুজন ৫২ তম দিনে পৌঁছেছেন এবং তাঁদের স্বাস্থ্যঝুঁকি আশঙ্কাজনক। গুরুতর ঝুঁকির কারণে তিনজন অনশন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রেটা থুনবার্গকে পরে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং তাঁকে আগামী মার্চ মাসে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে। তবে অধিকারকর্মীরা প্রশ্ন তুলেছেন—গত এক বছরে হাজারো মানুষ ‘আই সাপোর্ট প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করলেও, গ্রেটার ক্ষেত্রেই কেন সন্ত্রাসবিরোধী আইন প্রয়োগ করা হলো।

এদিকে অনশনরত বন্দীদের পরিবার ও সমর্থকেরা ব্রিটেনের বিচারমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সঙ্গে বৈঠকের দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, অনশন সংকট নিরসনে বৈঠক না করে সরকার নিজস্ব নীতিমালা লঙ্ঘন করছে। গ্রেটা থুনবার্গ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘যুক্তিসংগত এই দাবিগুলো মেনে নিলে বন্দীদের মুক্তির পথ তৈরি হবে। গণহত্যা থামাতে যারা নিজেদের অধিকার প্রয়োগ করছে, রাষ্ট্রের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো।’

উল্লেখ্য, এর আগে অ্যালিয়াঞ্জ ও অ্যাভিভা নামে দুটি বড় বিমা প্রতিষ্ঠান এলবিট সিস্টেমসের যুক্তরাজ্য শাখার সঙ্গে তাদের বিমা চুক্তি বাতিল করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলি অস্ত্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ইউরোপজুড়ে চাপ বাড়ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রেড স্কয়ারে কেন গায়ে আগুন দিলেন রুশ প্রতিরক্ষা কারখানার মালিক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রাশিয়ার বিখ্যাত রেড স্কয়ার। ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ার বিখ্যাত রেড স্কয়ার। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার ৭৫ বছর বয়সী বিজ্ঞানী ভ্লাদিমির আর্সেনেভ কেন মস্কোর রেড স্কয়ারে নিজের ওপর আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন, সেই বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রয়টার্স। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, দেশটির প্রতিরক্ষা খাতের তীব্র চাপেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন আর্সেনেভ।

আর্সেনেভ মূলত মস্কো-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘ভোলনা সেন্ট্রাল সায়েন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এর প্রধান। এই প্রতিষ্ঠানটি এমন সব হেলমেট রেডিও কন্ট্রোল ডিভাইস উপাদান করে, যেগুলো যুদ্ধ ক্ষেত্রে ট্যাংক ক্রুরা ব্যবহার করেন।

২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের সময় আর্সেনেভের কোম্পানিতে একের পর এক প্রতিরক্ষা আদেশ আসতে থাকে। কিন্তু সেই আদেশগুলো তাঁর কাছে বিষের মতো জটিল ও বিপজ্জনক ছিল বলে জানিয়েছেন রয়টার্সকে। তাঁকে উৎপাদন দ্রুত বাড়াতে হয়েছিল এবং আদেশ অনুযায়ী রেডিও ডিভাইস কন্ট্রোলগুলো রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত সময়সীমা এবং মূল্যে ডেলিভারি দিতে হয়েছিল। ব্যর্থতার কোনো সুযোগ ছিল না।

এদিকে ২০২৩ সালের বসন্তে আর্সেনেভের কারখানা উৎপাদনে পিছিয়ে পড়ে এবং শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। সংস্থাটি তখন দেউলিয়া হওয়ার পথে। এ অবস্থায় ২০২৪ সালে ২৬ জুলাই মস্কোর রেড স্কয়ারে যান আর্সেনেভ। ক্রেমলিনের বাইরেই সোভিয়েত রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা লেনিনের সমাধির কাছে নিজের শরীরে তিনি আগুন ধরিয়ে দেন। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় পরে তিনি কয়েক সপ্তাহ হাসপাতালে ছিলেন।

আর্সেনেভ বলেন, ‘আমাদের কাজ ঠিকঠাক চলছে, আমরা আদেশ পূরণ করছি, তারপরও কেন আমরা ডুবে যাচ্ছি। সম্ভবত সমস্যা আছে।’ শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর ক্রেমলিন ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আর্সেনেভের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

তবে ওই ঘটনায় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পের চাপ স্পষ্ট হয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত রাশিয়ায় অন্তত ৩৪ জনকে রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা আদেশে বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ১১ জনই কোম্পানির প্রধান।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন—ক্রেমলিনের নীতি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা রোস্টেকের মাধ্যমে কঠোর নিয়ন্ত্রণ, উদ্ভাবন ও আধুনিকীকরণের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। রেডিও কন্ট্রোল ডিভাইস উৎপাদনের অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল আর্সেনেভের প্রতিষ্ঠান। উৎপাদন বাড়ানোর প্রচেষ্টা এবং সরকারের সঙ্গে মূল্য নিয়ে দর-কষাকষি কোম্পানিটিকে আর্থিক সংকটে ফেলে। একপর্যায়ে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে অক্ষম এই প্রতিষ্ঠানটি মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পে চাপের উদাহরণ আরও দেখা যায় দেশটির নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভের বক্তব্যে। ২০২৩ সালের মার্চে শিল্প নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি স্তালিনের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন একটি টেলিগ্রাম পড়ে শোনান, যেখানে সময়মতো অস্ত্র সরবরাহ করতে ব্যর্থ কোম্পানিকে ‘গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে’ বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল।

চিকিৎসার মধ্যে থেকেও আর্সেনেভকে এখনো তাঁর দায়িত্ব পালন করে যেতে হচ্ছে। তবে আদালতের শুনানিতে অংশগ্রহণই এখন তাঁর দিনের প্রধান কাজ। এ ছাড়া রেড স্কয়ারের মতো সংবেদনশীল স্থানে অনুমোদনহীন প্রতিবাদ করার জন্য তাঁকে বিপুল পরিমাণ জরিমানা করা হয়েছে।

এই ঘটনাটি রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পে প্রশাসনিক চাপ, সময়সীমার বাধ্যবাধকতা, আর্থিক অস্থিতিশীলতা ও আমলাতন্ত্রের চরম বাস্তবতা তুলে ধরেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাগরিকত্বের জন্য বসবাসের শর্ত দ্বিগুণ করল জাপান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জাপানে নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে বিদেশিদের জন্য বসবাসের ন্যূনতম সময় দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, জাপানের নাগরিকত্ব পেতে হলে বিদেশিদের দেশটিতে অন্তত ১০ বছর বসবাস করতে হবে। বর্তমানে এই মেয়াদ পাঁচ বছর। একই সঙ্গে নাগরিকত্ব ও স্থায়ী বসবাসের ক্ষেত্রে ভাষা দক্ষতা এবং ভালো আচরণকে বাধ্যতামূলক শর্ত হিসেবে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, আগামী বছরের মধ্যেই জাপানের অভিবাসন নীতির বড় ধরনের সংস্কার কার্যকর হতে পারে। দেশটির ক্ষমতাসীন জোটের শরিক দল ‘নিপ্পন ইশিন’ বিদ্যমান নাগরিকত্ব নীতিকে ‘অতিরিক্ত শিথিল’ আখ্যা দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি পর্যালোচনার নির্দেশ দেন।

গত ৪ ডিসেম্বর তাকাইচির দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির এক বৈঠকে উত্থাপিত প্রস্তাবে বলা হয়েছে—নাগরিকত্ব অনুমোদন শুধু বসবাসের সময়ের ওপর নির্ভর করবে না; আবেদনকারীর আচরণ, জীবিকা নির্বাহের সক্ষমতা এবং আয়ের স্থায়িত্বও বিবেচনায় নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপক ক্ষমতা থাকবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হাতে।

এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ‘নিপ্পন ইশিন’ দলের পক্ষ থেকে বিচার মন্ত্রণালয়ে বিদ্যমান নীতির তুলনায় আরও কঠোর পদক্ষেপের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এই প্রস্তাবে বিদেশি বাসিন্দার সংখ্যা সীমিত করা এবং কিছু ক্ষেত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের সুযোগ রাখার কথাও বলা হয়। তবে আরও কট্টর অবস্থান নেয় অতি ডানপন্থী সানসেইতো পার্টি। তারা ‘কিকাজিন’ বা নাগরিকত্ব পাওয়া বিদেশিদের নির্বাচনে প্রার্থী হতে না দেওয়ার ঘোষণা দেয়। সে সময় তারা অভিযোগ করে, সরকার জাতিগত জাপানিদের চেয়ে বিদেশিদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

তবে প্রস্তাবিত নিয়মে কিছু ব্যতিক্রম রাখার কথাও বলা হয়েছে। যেমন—জাপানে বহু বছর ধরে খেলাধুলায় প্রতিনিধিত্ব করা ক্রীড়াবিদেরা ১০ বছরের শর্ত পূরণ না করলেও নাগরিকত্ব পেতে পারেন। বিচার মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ১২ হাজার ২৪৮টি নাগরিকত্ব আবেদন জমা পড়ে, যার মধ্যে ৮ হাজার ৮৬৩টি অনুমোদিত হয়।

এ ছাড়া স্থায়ী বসবাসের আবেদনকারীদের জন্য জাপানি ভাষা ও নাগরিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে। এই প্রস্তাব ঘিরে দেশটির অনলাইনে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই নীতির সমর্থকদের মতে, দীর্ঘমেয়াদি বাসিন্দাদের জন্য এসব শর্ত যুক্তিসংগত। তবে সমালোচকেরা বলছেন, শ্রম ঘাটতিতে ভোগা জাপানে অভিবাসন নিরুৎসাহিত করতে রক্ষণশীল সরকার নতুন বাধা তৈরি করছে।

আসাহি শিম্বুন জানিয়েছে, প্রস্তাবিত ‘সামাজিক অন্তর্ভুক্তি কর্মসূচির’ লক্ষ্য হলো বিদেশিদের ভাষাজ্ঞান ও মৌলিক সামাজিক ধারণা জোরদার করা, যাতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি কমে এবং বাড়তে থাকা বিদেশি-বিরোধী মনোভাব নিয়ন্ত্রণে আসে। এই উদ্যোগের আওতায় জাপানি ভাষায় দুর্বল শিশুদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগে সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে।

২০১৫ সালে জাপানে বিদেশি বাসিন্দার সংখ্যা ছিল প্রায় ২২ লাখ ৩০ হাজার। ২০২৫ সালের জুনে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩৯ লাখ ৫০ হাজারে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩ শতাংশ। এর মধ্যে প্রায় ৯ লাখ ৩০ হাজার বিদেশি স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা পেয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্তানের অভিভাবকত্ব নিয়ে আইনি লড়াইয়ে পরাজয়, দুই শিশুকে বিষ খাইয়ে বাবা-দাদির আত্মহত্যা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৫
দুই শিশুকে নিজের কাছে রাখতে না পারার যন্ত্রণা সইতে পারেননি বাবা ও দাদি। ছবি: সংগৃহীত
দুই শিশুকে নিজের কাছে রাখতে না পারার যন্ত্রণা সইতে পারেননি বাবা ও দাদি। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের কেরালা রাজ্যে সন্তানদের নিজের কাছে রাখা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর আইনি লড়াইয়ের এক মর্মান্তিক পরিণতি ঘটেছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সন্তানদের মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে দুই শিশুসন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যা করে নিজেরাও আত্মঘাতী হয়েছেন বাবা ও দাদি। কেরালার কান্নুর জেলার পায়্যানুরের রামান্থালিতে এ ঘটনা ঘটে।

তদন্তকারী কর্মকর্তাদের প্রাথমিক তথ্যের বরাত দিয়ে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত কালাধরন এবং তাঁর মা উষা দুই শিশুকে দুধের সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে খাইয়েছিলেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি দুধের বোতল এবং কীটনাশকের খালি শিশি উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সন্তানদের মৃত্যু নিশ্চিত করার পর কালাধরন ও উষা একই বিষ পান করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। গতকাল সোমবার সকালে প্রতিবেশীরা দীর্ঘক্ষণ ঘর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে পুলিশে খবর দিলে এই আত্মহত্যার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

কালাধরন এবং তাঁর স্ত্রী নয়নতারা দীর্ঘদিন ধরে দাম্পত্য কলহের জেরে আলাদা বসবাস করছিলেন। তাঁদের দুই শিশুসন্তান কালাধরন ও তাঁর মা উষার কাছেই ছিল। সন্তানদের নিজের হেফাজতে পেতে নয়নতারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালত নয়নতারার পক্ষে রায় দেন এবং সোমবারের মধ্যে সন্তানদের তাঁর কাছে হস্তান্তরের সময়সীমা বেঁধে দেন।

পুলিশ জানিয়েছে, গত রোববার রাতেই স্থানীয় থানা থেকে কালাধরনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল যাতে সোমবার সকালে কোনো ঝামেলা ছাড়াই হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়। কিন্তু সন্তানদের মায়ের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি কালাধরন ও তাঁর মা।

ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে। সেখানে সন্তানদের বিচ্ছেদ সহ্য করতে না পারা এবং আদালতের আদেশের প্রতি তাঁদের ক্ষোভ ও মানসিক যন্ত্রণার কথা উল্লেখ রয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ বর্তমানে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’র মামলা করেছে। কান্নুর জেলার পুলিশ সুপার বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত পরিকল্পিত এবং আবেগতাড়িত হত্যাকাণ্ড। আইনি নির্দেশ অমান্য করার চরম পথ বেছে নিয়েছেন তাঁরা।’

পায়্যানুর এলাকায় এ ঘটনার পর থেকে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রতিবেশীদের ভাষ্যমতে, কালাধরন সন্তানদের অত্যন্ত ভালোবাসতেন, কিন্তু সেই ভালোবাসার এমন নৃশংস রূপ কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ ঘটনা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। অনেকে বলছেন, বড়দের দ্বন্দ্বে এভাবে নিরপরাধ শিশুদের প্রাণ যাওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

পুলিশ শিশুদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে এবং পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত