Ajker Patrika

দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন /ইরানি স্লিপার সেলের নাশকতার শঙ্কায় ট্রাম্প প্রশাসন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইরান ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে যে অপমান সহ্য করেছে, সেটা তারা এত সহজে ভুলবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন ইরানের ‘স্লিপার সেলের’ হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে। গত রোববার ভোরে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালানোর পর এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।

স্লিপার সেল বলতে বোঝানো হয়, প্রতিপক্ষ দেশের ভেতরে গোপনে থাকা গুপ্তচর বা সন্ত্রাসীদের। যারা সাধারণ নাগরিকের ভেতর মিশে থাকে এবং নির্দিষ্ট সময় বা নির্দেশ পেলে সক্রিয় হয়। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কিছুটা কমে এলেও যুক্তরাষ্ট্র এখনো সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ট্রাম্পের আগের প্রশাসনগুলো সীমান্ত নিরাপত্তায় শিথিলতা দেখানোর সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইরান অনেক ‘স্লিপার সেল’ সদস্য যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকিয়েছে। এরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে সমাজে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে, বিভিন্ন অপরাধী চক্র বা ইরানি কমিউনিটির সঙ্গে যোগসূত্র গড়ে তোলে। এরপর তারা গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে হামলা, বিশৃঙ্খলা তৈরি কিংবা অন্যান্য সহিংস কাজ চালানোর সুযোগ খোঁজে।

মঙ্গলবার ন্যাটো সম্মেলনে যাওয়ার পথে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিযোগ করেন, তাঁর পূর্বসূরি জো বাইডেন অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছেন, ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ট্রাম্প বলেন, ‘বাইডেন প্রচুর সুপার সেল ঢুকতে দিয়েছে। অনেক ইরানি ঢুকেছে। তবে আমরা আশা করি, শিগগিরই তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ‘সুপার সেল’ বলতে তিনি মূলত ‘স্লিপার সেলের’ কথাই বোঝাতে চেয়েছেন।

নিউইয়র্ক পোস্টের হাতে আসা এক সরকারি নথি অনুযায়ী, বাইডেনের প্রেসিডেন্সির সময় ১ হাজার ৫০০—এর বেশি ইরানি নাগরিককে অবৈধভাবে সীমান্ত পার হওয়ার সময় ধরা হয়। তাদের অর্ধেককেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে।

এটা কেবল সরকারের জানা সংখ্যা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাইডেন প্রশাসনের সময় যারা সীমান্তে ধরা পড়েনি এমন মানুষের সংখ্যা সরকারি হিসাবে উল্লেখ করা সংখ্যার চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি। নিউইয়র্কের সাবেক হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কর্মকর্তা মাইকেল বালবোনি বলেন, ‘আমি যদি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে কোনো গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা হতাম এবং দেখতাম এভাবে সহজে লোকজন সীমান্ত পার হতে পারছে, তাহলে অবশ্যই সেখানে আমার গুপ্তচর পাঠাতাম।’

বালবোনি জানান, সাধারণত এ ধরনের গুপ্তচরেরা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ইরানি অধ্যুষিত এলাকায় গিয়ে মিশে যায়, চাকরি নেয় এবং তাদের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থায় তথ্য পাঠায়। তিনি আরও বলেন, ‘এরপরই আসে “গো সিগন্যাল”, অর্থাৎ হামলা বা নাশকতার নির্দেশ।’

যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারলে এই গুপ্তচররা অপরাধী চক্রের লোকজনকেও কাজে লাগায়। এদের মধ্যে অনেকেই সরাসরি তেহরানের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, কেবল টাকার বিনিময়ে কাজ করে। গত বছর মার্কিন বিচার বিভাগ অভিযোগ আনে, ইরানি নাগরিক ফারহাদ শাকেরি তেহরানের নির্দেশে ট্রাম্পকে হত্যার পরিকল্পনা করছিলেন। ২০২০ সালে ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবেই এই পরিকল্পনা করা হয়।

শাকেরি তাঁর জেল জীবনের অপরাধী নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে নিউইয়র্কের দুই অপরাধী কার্লাইল ‘পপ’ রিভেরা ও জনাথন লোডহোল্টকে ভাড়াটে খুনি হিসেবে নিয়োগের চেষ্টা করেন। ওই দুজনকে ব্রুকলিনে কোনো এক ব্যক্তিকে অপহরণ বা হত্যার বিনিময়ে ১ লাখ ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

২০১১ সালে ইরানি-মার্কিন নাগরিক মনসুর আরবাবসিয়ার বিরুদ্ধে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের ক্যাফে মিলানোতে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে বোমা হামলায় হত্যার চেষ্টা করেন। এ জন্য তিনি ১৫ লাখ ডলার ঘুষ দিতে প্রস্তুত ছিলেন এবং বলেন, হামলায় যদি নিরীহ লোকজনও মারা যায়, তাতে তার কিছু আসে-যায় না। তিনি বলেছিলেন, ‘আমার বসেরা ওই লোকটাকে শেষ করতে বলেছে। ওর সঙ্গে যদি আরও ১০০ জন মরে, তো মরুক।’

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ইরানি বংশোদ্ভূত অনেকেই হয়তো এখনো তেহরান সরকারের প্রতি আনুগত্য বোধ করেন। আবার অনেকের পরিবার ইরানে থাকায়, তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বা ব্ল্যাকমেল করে কাজে লাগানো হতে পারে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলা ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভও বিপথগামী তরুণদের সংগ্রহের সহজ মাধ্যম হতে পারে বলে মনে করেন মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের সাবেক কর্মকর্তা ও আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক মাইকেল রুবিন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যখন আত্মঘৃণা আর আমেরিকা বিরোধিতা ফ্যাশনে পরিণত হয়, তখন সেটা গুপ্তচর বা সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্য নিয়োগের আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে।’

রোববার যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ ইরানি হ্যাকারদের হামলার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে। এরা কারও ব্যক্তিগত বা গোপন তথ্য হাতিয়ে নিয়ে ব্ল্যাকমেলের মাধ্যমে ইরানপন্থী কাজে বাধ্য করতে পারে। কোথায়, কখন, কীভাবে এই ‘স্লিপার সেল’ হামলা চালাতে পারে, তা স্পষ্ট নয়। তবে অতীতের নজির থেকে দেখা যায়, ইরান সাধারণত মার্কিন উসকানির পাল্টা জবাব দেয়।

২০২০ সালে ট্রাম্পের নির্দেশে কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার পর, ইরান ট্রাম্প ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ১৪টি ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা ফেলেছে। এর পাল্টা জবাবে ইরানও ১৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটির দিকে। তবে সেটাকে বেশির ভাগই ‘মৃদু’ প্রতিক্রিয়া বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা, যা বড় কোনো যুদ্ধ উসকে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়।

রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশ্লেষক থমাস ওয়ারিক বলেন, ‘ইরানের প্রতিশোধের নিজস্ব এক অদ্ভুত ধারাবাহিকতা রয়েছে। আমি হলে, যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তিত হতাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইরান অতীতে অপরাধী গ্যাং ব্যবহার করে হত্যা বা নাশকতার চেষ্টা করেছে। ভবিষ্যতেও তারা একই কাজ করতে পারে।’

ইরান জানে, তারা সামরিক শক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারবে না। তাই তারা বিকল্প কৌশলে এগোচ্ছে, যেটা বেশ ভয়াবহ হতে পারে। ইউক্রেনের ‘অপারেশন স্পাইডার ওয়েব’—এর উদাহরণ দেন অনেকেই, যেখানে ড্রোন ব্যবহার করে রাশিয়ার ভেতরে ঢুকে তারা দেশটির এক-তৃতীয়াংশ বোমারু বিমান ধ্বংস করেছে।

রুবিন বলেন, ‘আমেরিকানরা বোকার মতো নিজেকে অরক্ষিত ভাবছে। তারা বুঝছে না, শত্রুরা আমাদের ভেতর ঢুকে পড়ছে। পরবর্তী যুদ্ধ শুরু হবে না কোনো আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বা পার্ল হারবার ধরনের হামলা দিয়ে। শুরু হবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেই স্লিপার সেলদের ড্রোন হামলা বা গুপ্তহত্যা দিয়ে।’

ইরানি স্লিপার সেলরা যদি যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালায়, তাহলে সেটি ট্রাম্প প্রশাসনের নিরাপত্তা দক্ষতার বড় পরীক্ষা হবে। কারণ ট্রাম্পের নতুন মন্ত্রিসভা গোয়েন্দা সংস্থা ও নিরাপত্তা বিভাগগুলোতে বড় ধরনের রদবদল করেছে। তবে অনেকে আশা করছেন, ট্রাম্পের প্রকাশ্য বক্তব্য স্লিপার সেলগুলোর মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করবে, আর তারা কোনো ভুল করলে, যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ধরতে পারবে।

এখনো কেউ নিশ্চিত নয়, ইরানি স্লিপার সেল কতটা গভীরভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে পড়েছে। তবে অনেকেই মনে করছেন, এটি নিঃসন্দেহে বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি। আর গত সপ্তাহান্তে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যে ১৫ টন বোমা পড়েছে, সেটি হয়তো তাদের ঘুম ভাঙানোর জন্য যথেষ্ট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসরায়েলের সঙ্গে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে প্রতিরক্ষা জোট শক্তিশালী করছে গ্রিস ও সাইপ্রাস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২২ ডিসেম্বর জেরুজালেমে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস ও সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডোলিডেসের শীর্ষ বৈঠকে এই জোটের ভিত্তি স্থাপিত হয়। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
২২ ডিসেম্বর জেরুজালেমে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস ও সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডোলিডেসের শীর্ষ বৈঠকে এই জোটের ভিত্তি স্থাপিত হয়। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নিজেদের সামরিক ও কৌশলগত অবস্থান আরও সুসংহত করতে ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথ বিমান ও নৌ মহড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রিস ও সাইপ্রাস। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) গ্রিসের সামরিক কর্মকর্তা ও নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৬ সাল থেকে এই তিন দেশ আরও নিবিড় প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় লিপ্ত হবে। এ বিষয়টিকে লোহিতসাগর ও পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় একটি শক্তিশালী আঞ্চলিক বলয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এর আগে গত সপ্তাহে সাইপ্রাসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিন দেশের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা ২০২৬ সালের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ সামরিক সহযোগিতা কর্মসূচি স্বাক্ষর করেন। এরপর জেরুজালেমে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস এবং সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডোলিডেসের শীর্ষ বৈঠকে এই জোটের ভিত্তি স্থাপিত হয়।

জোটে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী দিনে ইসরায়েল পরিচালিত ‘নোবেল দিনা’ (Noble Dina) নামক নৌ মহড়ায় বড় আকারে যোগ দেবে গ্রিস ও সাইপ্রাস। এসব মহড়ায় ইসরায়েল তাদের আধুনিক সামরিক প্রযুক্তি ও যুদ্ধকৌশল গ্রিস ও সাইপ্রাসের কাছে তুলে ধরবে। বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা ও ড্রোন মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য বিনিময় করা হবে।

এমনও গুঞ্জন রয়েছে, এই তিন দেশ মিলে প্রায় ২ হাজার ৫০০ সদস্যের একটি যৌথ ‘র‍্যাপিড রেসপন্স ফোর্স’ গঠনের পরিকল্পনা করছে, যা ভূমধ্যসাগরের গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ও অবকাঠামো রক্ষা করবে।

এদিকে গ্রিস তুরস্কের সঙ্গে আকাশপথ ও সমুদ্রসীমা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের প্রেক্ষাপটে বিশাল এক প্রতিরক্ষা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’-এর আদলে গ্রিস ৩.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি বহুমুখী আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলছে। এর মাধ্যমে ড্রোন ও ব্যালিস্টিক মিসাইল ঠেকানো সম্ভব হবে।

চলতি মাসেই গ্রিসের পার্লামেন্ট ইসরায়েলের এলবিট সিস্টেমস থেকে ৩৬টি ‘পালস’ রকেট আর্টিলারি সিস্টেম কেনার অনুমোদন দিয়েছে, যার মূল্য প্রায় ৭৫০ মিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া গ্রিস তাদের পুরোনো রুশ নির্মিত এস-৩০০ ও টর-এম১ মিসাইল সিস্টেম বদলে ইসরায়েলি প্রযুক্তিতে সজ্জিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

তবে ইসরায়েলের সঙ্গে এই গভীর সামরিক সখ্যতা নিয়ে সাইপ্রাসের প্রধান বিরোধী দল (কমিউনিস্ট একেইএল) উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, ফিলিস্তিন ইস্যু ও আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া সাইপ্রাসের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে।

অনেকেই মনে করছেন, এই জোট শুধু সামরিক নয়, বরং ভূমধ্যসাগরের বিশাল গ্যাসক্ষেত্রগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখার এক ভূরাজনৈতিক কৌশল। তুরস্ক এই জোটকে তাদের স্বার্থের পরিপন্থী হিসেবে সতর্ক করেছে, যার ফলে ভবিষ্যতের দিনগুলোতে এই অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইঙ্গিত দেখলেন ৪০ যুদ্ধ কভার করা বিবিসি সাংবাদিক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৩১
ছবি: বিবিসি
ছবি: বিবিসি

বিশ্বজুড়ে চার দশকের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ ও সংঘাত কভার করা বিবিসির সাংবাদিক জন সিম্পসন বলেছেন, তাঁর দীর্ঘ পেশাগত জীবনে ২০২৫ সালের মতো উদ্বেগজনক বছর তিনি আর দেখেননি। ১৯৬০-এর দশক থেকে শুরু করে স্নায়ুযুদ্ধের চূড়ান্ত সময় ও এর পতন—সবই তিনি দেখেছেন। কিন্তু তাঁর মতে, চলতি বছরটি শুধু একাধিক বড় যুদ্ধের কারণে নয়, বরং এর ভূরাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ইতিহাসে আলাদা হয়ে উঠেছে।

ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে, সে বিষয়ে আগেই সতর্ক করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। প্রায় ৬০ বছর ধরে যুদ্ধ পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা থেকে সিম্পসনও মনে করেন—এই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো আশঙ্কা করছে, পশ্চিমা বিশ্বের যোগাযোগব্যবস্থা সচল রাখা সমুদ্রতলের কেবলগুলো কেটে দিতে পারে রাশিয়া। একই সঙ্গে ন্যাটো দেশগুলোর প্রতিরক্ষাব্যবস্থার ওপর রুশ ড্রোন নজরদারি ও সাইবার হামলার অভিযোগও উঠেছে।

পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিদেশে আশ্রয় নেওয়া ভিন্নমতাবলম্বীদের হত্যাচেষ্টা চালাচ্ছে। ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যের সলসবেরিতে সাবেক রুশ গোয়েন্দা সের্গেই স্ক্রিপালের ওপর বিষপ্রয়োগের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, এই হামলার অনুমোদন রাশিয়ার সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনই এই হত্যাচেষ্টার অনুমোদন দিয়েছিলেন।

২০২৫ সালে বিশ্ব তিনটি বড় যুদ্ধে বিপর্যস্ত। এর মধ্যে জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, শুধু ইউক্রেনে প্রায় ১৪ হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। আর ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের পাল্টা অভিযানে এখন পর্যন্ত ৭০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে, সুদানে দুই সামরিক গোষ্ঠীর গৃহযুদ্ধে গত দুই বছরে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে এবং ঘরছাড়া হয়েছে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করলেও সিম্পসনের মতে, এই যুদ্ধের স্থায়ী সমাধান এখনো হয়নি। তবে তিনি মনে করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের গুরুত্ব অন্য সব সংঘাতের চেয়েও আলাদা। কারণ এটি সরাসরি বৈশ্বিক শান্তি ও শক্তির ভারসাম্যকে চ্যালেঞ্জ করছে।

সিম্পসনের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ কমে যাওয়া এবং ‘একঘরে’ নীতির দিকে ঝুঁকে পড়ার সুযোগ নিচ্ছে রাশিয়া। ২০২৬ সালে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। একই সঙ্গে চীন-তাইওয়ান প্রশ্নেও উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সব মিলিয়ে জন সিম্পসনের মতে, ভবিষ্যতের তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়তো সরাসরি পারমাণবিক অস্ত্রের সংঘর্ষ হবে না; বরং কূটনৈতিক চাপ, সামরিক চালচিত্র ও ক্ষমতার লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে বিশ্বকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—যার পরিণতি হবে আরও ভয়াবহ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাম্প-জেলেনস্কির বৈঠকে যুদ্ধ বন্ধে অগ্রগতি হলেও দনবাস ইস্যু এখনো অমীমাংসিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত দুই ঘণ্টার এই বৈঠকে শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে বলে দুই নেতাই দাবি করেছেন। তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, পূর্ব ইউক্রেনের দনবাসের নিয়ন্ত্রণ এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির মতো কিছু ‘জটিল ইস্যু’ এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

বৈঠকের পর আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) জেলেনস্কি জানান, শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ১৫ বছরের নিরাপত্তা গ্যারান্টির প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, নিরাপত্তা-সংক্রান্ত বিষয়ে ঐকমত্য প্রায় ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে।

জেলেনস্কি বলেছেন, খসড়া নথিতে যুক্তরাষ্ট্র ১৫ বছরের মেয়াদে নিরাপত্তা গ্যারান্টির প্রস্তাব দিয়েছে। তবে ইউক্রেন এই মেয়াদ ৩০ থেকে ৫০ বছর করার দাবি জানাচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে রাশিয়ার আক্রমণ স্থায়ীভাবে ঠেকানো যায়। এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউরোপীয় দেশগুলোকেও এই নিরাপত্তা প্রচেষ্টায় বড় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

তবে বর্তমানে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দনবাস (দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক) অঞ্চল। রাশিয়া এই পুরো অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ চায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ইস্যুটিকে ‘অমীমাংসিত’ বললেও দাবি করেছেন, তাঁরা সমস্যা সমাধানের খুব কাছাকাছি আছেন।

জেলেনস্কি প্রস্তাব দিয়েছেন, যেকোনো শান্তি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার আগে ইউক্রেনে একটি গণভোট হওয়া উচিত। আর এই ভোটের জন্য কমপক্ষে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। তবে ক্রেমলিন এই ধরনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।

এদিকে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ এক ঘণ্টা টেলিফোনে কথা বলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুতিন ও ট্রাম্প একমত হয়েছেন, ইউক্রেন ও ইউরোপের প্রস্তাবিত অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শুধু সংঘাতকেই দীর্ঘায়িত করবে।

পুতিন দাবি করেছেন, ইউক্রেনকে দনবাস, ঝাপোরিঝিয়া ও খেরসন থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে হবে এবং ন্যাটোতে যোগদানের আশা ত্যাগ করতে হবে।

জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি ‘ত্রিপক্ষীয় আলোচনার’ ইঙ্গিত দিয়েছেন। আগামী জানুয়ারি মাসে হোয়াইট হাউসে ইউরোপীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদল এবং মার্কিন প্রতিনিধিদের মধ্যে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে আলোচনার মধ্যেও ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে পাল্টাপাল্টি ড্রোন হামলা অব্যাহত রয়েছে। রোববার রাতে রাশিয়া ইউক্রেনের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ২৫টি ড্রোন হামলা চালায়, যার মধ্যে ২১টি ভূপাতিত করার দাবি করেছে কিয়েভ। অন্যদিকে রাশিয়া ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে ৮৯টি ইউক্রেনীয় ইউএভি প্রতিহত করার কথা জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ১৩ জনের মৃত্যু, আহত শতাধিক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৯
মেক্সিকোর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়াহাকা রাজ্যে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। ছবি: বিবিসি
মেক্সিকোর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়াহাকা রাজ্যে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। ছবি: বিবিসি

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে অন্তত ১৩ জন নিহত ও ১০০ জন আহত হয়েছেন। দেশটির নৌবাহিনীর বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়াহাকা রাজ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নৌবাহিনী জানিয়েছে, মেক্সিকো উপসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যবর্তী রুটে চলাচল করে ওই ট্রেন। ট্রেনটিতে ২৪১ জন যাত্রী ও ৯ জন ক্রু ছিলেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৬ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, নিজান্দা শহরের কাছে একটি বাঁক ঘোরার সময় ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়।

ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন মেক্সিকোর অ্যাটর্নি জেনারেল।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম বলেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি আরও জানান, নেভির সেক্রেটারিসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছেন।

দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, উদ্ধারকর্মীরা লাইনচ্যুত ট্রেন থেকে যাত্রীদের নামতে সহায়তা করছেন। ট্রেনটি রেললাইন থেকে ছিটকে পড়ে আংশিকভাবে একটি খাদের পাশে কাত হয়ে যায়।

নৌবাহিনী জানিয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরের বন্দর সালিনা ক্রুজকে উপসাগরীয় উপকূলের কোয়াটজাকোয়ালকোসের সঙ্গে যুক্ত করা ‘ইন্টারওশেনিক’ (Interoceanic) ট্রেনটিতে দুটি লোকোমোটিভ ও চারটি যাত্রীবাহী বগি ছিল। মেক্সিকোর নৌবাহিনী দেশটির রেলওয়ে নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে।

ওয়াহাকা রাজ্যের গভর্নর সলোমোন জারা ক্রুজ এক বিবৃতিতে দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় রাজ্য সরকার ফেডারেল সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে।

আঞ্চলিক অর্থনীতি চাঙা করতে সাবেক প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদরের উদ্যোগে দুই বছর আগে ইন্টারওশেনিক রেলসংযোগটি উদ্বোধন করা হয়েছিল।

আটলান্টিক মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যবর্তী দূরত্ব কমিয়ে আনতে তেহুয়ান্তেপেক ইস্থমাস এলাকাজুড়ে রেল যোগাযোগ আধুনিকায়নের লক্ষ্যে অঞ্চলটিকে একটি কৌশলগত বাণিজ্য করিডোরে রূপ দিতে চেয়েছে মেক্সিকো সরকার। এর অংশ হিসেবে বন্দর, রেলপথ ও শিল্প অবকাঠামো সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এই রেল পরিষেবাটি দক্ষিণ মেক্সিকোতে যাত্রী ও পণ্যবাহী রেল যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি বড় অংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত