Ajker Patrika

চোখধাঁধানো অস্ত্রের প্রদর্শনী চীনের, চমক দেখালেন সি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১: ০৪
মনুষ্যবিহীন ড্রোনের বহর। ছবি: সিসিটিভি
মনুষ্যবিহীন ড্রোনের বহর। ছবি: সিসিটিভি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের বিরুদ্ধে জয়ের ৮০তম বার্ষিকী উদ্‌যাপনে চীন ঐতিহাসিক তিয়েনআনমেন স্কয়ারে এক বিশাল কুচকাওয়াজের আয়োজন করেছিল। এই কুচকাওয়াজে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন।

এই কুচকাওয়াজে চীনা প্রেসিডেন্ট শান্তির বার্তা নিয়ে নিয়মভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থার কথা বলেন। তবে একই সঙ্গে চীন এই কুচকাওয়াজে সামরিক ও কৌশলগত সক্ষমতার অনেকটাই তুলে ধরেছে।

আজ বুধবার তিয়েনআনমেন স্কয়ারে যে সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়েছিল, তাতে প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হয়েছে নতুন ধরনের তরল জ্বালানিচালিত আন্তমহাদেশীয় কৌশলগত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) ডিএফ-৫ সি।

চীনা সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসকে এক বিশেষজ্ঞ জানান, এ ক্ষেপণাস্ত্রের আনুমানিক পাল্লা ২০ হাজার কিলোমিটারের বেশি। প্রতিপক্ষের আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করার সক্ষমতা ও নিখুঁত লক্ষ্যভেদের দিক থেকে এর বিশেষ সুবিধা রয়েছে।

চীনের ২০ হাজার কিলোমিটার পাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ছবি: সিসিটিভি
চীনের ২০ হাজার কিলোমিটার পাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ছবি: সিসিটিভি

কুচকাওয়াজে বিভিন্ন ধরনের মনুষ্যবিহীন স্থলযানও প্রদর্শিত হয়েছে। সামরিক বিশ্লেষকেরা বলেছেন, প্রদর্শিত মনুষ্যবিহীন স্থলযানগুলো ভবিষ্যতের যুদ্ধক্ষেত্রে কীভাবে মনুষ্যবিহীন প্রযুক্তি দলগত যুদ্ধ ইউনিটকে শক্তিশালী করতে পারে, তারই চিত্র তুলে ধরেছে। বিশেষ যুদ্ধক্ষেত্রের পরিবেশে এগুলোর বিশেষ সুবিধা রয়েছে। বিশেষ করে জটিল অভিযান যেমন উভচর নৌ-অবতরণ কিংবা নগরযুদ্ধে মানববিহীন স্থলযান অত্যন্ত কার্যকরভাবে সহায়তা দিতে পারে।

স্থলভিত্তিক মনুষ্যবিহীন যুদ্ধাস্ত্রের প্রদর্শনীতে ছিল গোয়েন্দাগিরি ও হামলা চালানোর যান, মাইন অপসারণ ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ সরঞ্জাম এবং সহায়তাকারী যান। দূর নিয়ন্ত্রণ, স্বয়ংক্রিয় চলাচল এবং নমনীয় বিন্যাসের কারণে এগুলোর বিশেষ সুবিধা রয়েছে; যা মানুষ-যন্ত্র সমন্বিত স্থলযুদ্ধে এক নতুন অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়।

চীনা সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন ধরনে মনুষ্যবিহীন সামরিক যান ও রোবট নেকড়ে। ছবি: সিসিটিভি
চীনা সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন ধরনে মনুষ্যবিহীন সামরিক যান ও রোবট নেকড়ে। ছবি: সিসিটিভি

এ ছাড়া এই কুচকাওয়াজে নানা ধরনের ড্রোনবিধ্বংসী সরঞ্জামও প্রদর্শন করা হয়। চীনা সামরিক বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, ড্রোনবিধ্বংসী সরঞ্জামের তিনটি শাখাকে পদ্ধতিগতভাবে গড়ে তোলা এবং সেগুলোর সমন্বিত প্রয়োগ ড্রোনবিধ্বংসী অভিযানে দক্ষতা অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। কুচকাওয়াজে ডিরেক্টেড এনার্জি প্রযুক্তিনির্ভর ড্রোনবিধ্বংসী অস্ত্রের এই প্রদর্শন প্রমাণ করে, চীনের নতুন অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তি এখন বিশ্বের অগ্রভাগে।

ড্রোন বিধ্বংসী লেজার অস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত
ড্রোন বিধ্বংসী লেজার অস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত

কুচকাওয়াজে প্রদর্শিত অ্যান্টি-ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্র ও কামান ব্যবস্থা, উচ্চশক্তির লেজার অস্ত্র এবং উচ্চক্ষমতার মাইক্রোওয়েভ অস্ত্রকে বিশেষজ্ঞরা শক্তিশালী এক ‘আইরন ট্রায়াড’ বা ‘লৌহ ত্রিভুজ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এগুলো ড্রোনকে ‘সফট কিল’ তথা নিষ্ক্রিয় করার পাশাপাশি ‘হার্ড ডেস্ট্রয়’ বা ধ্বংসও করতে সক্ষম।

চীনের মাইক্রোওয়েভ অস্ত্র। ছবি: সিসিটিভি
চীনের মাইক্রোওয়েভ অস্ত্র। ছবি: সিসিটিভি

এর বাইরে ছয় ধরনের আকাশ প্রতিরক্ষা ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে গঠিত একধরনের সমন্বিত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও প্রদর্শিত হয়েছে। এক সামরিক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, বহুমুখী ও বহুস্তরীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা অস্ত্রগুলোকে সংগঠিত ব্যবস্থায় প্রথমবারের মতো প্রদর্শন করা চীনের জন্য বড় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত। এর মানে হলো—চীন এখন বিশ্বের কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি, যার কাছে সম্পূর্ণ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা রয়েছে, যা কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চীনের এইচকিউ-২৯ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত
চীনের এইচকিউ-২৯ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত

তিয়েনআনমেন স্কয়ারে চীন এইচকিউ-১১, এইচকিউ-২০, এইচকিউ-২২ এ, এইচকিউ-৯ সি, এইচকিউ-১৯ এবং এইচকিউ-২৯—এই ছয় ধরনের অ্যান্টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রথমবারের মতো প্রদর্শন করেছে। এগুলো দীর্ঘ, মাঝারি ও স্বল্প পাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষা দিতে সক্ষম।

আজ জাপানের বিরুদ্ধে চীনের যুদ্ধ জয়ের ৮০তম বার্ষিকী উদ্‌যাপনের সামরিক প্যারেডে প্রথমবারের মতো চার ধরনের নতুন ওয়াই জে সিরিজের জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শিত হয়। সামরিক বিশেষজ্ঞরা গ্লোবাল টাইমসকে জানান, চার ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে তিনটি হাইপারসনিক। ওয়াইজে-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র এবং হাইপারসনিক ওয়াইজে-১৯, ওয়াইজে-১৭ ও ওয়াইজে-২০ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রণতরি থেকে পরিচালিত যুদ্ধবিমান, যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিনসহ একাধিক প্ল্যাটফর্মে বহনযোগ্য।

ওয়াইজে-২০ হাইপারসনিক জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। ছবি: সিসিটিভি
ওয়াইজে-২০ হাইপারসনিক জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। ছবি: সিসিটিভি

প্যারেডে একাধিক সম্পূর্ণ নতুন ধরনের মনুষ্যবিহীন আকাশযান আত্মপ্রকাশ করেছে। সামরিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রদর্শিত কিছু মনুষ্যবিহীন আকাশযান শুধু নতুন রূপের নয়, বরং নতুন ধারণাকে অবলম্বন করে তৈরি করা হয়েছে। এগুলো বর্তমান আকাশ যুদ্ধের পরিস্থিতিকে পাল্টে দিতে পারে এবং ভবিষ্যতের আকাশ যুদ্ধকে গভীরভাবে পরিবর্তন করতে সক্ষম।

এলওয়াই-১ লেজার অস্ত্র। ছবি: সিসিটিভি
এলওয়াই-১ লেজার অস্ত্র। ছবি: সিসিটিভি

চীনের পিপলস আর্মির যুদ্ধজাহাজগুলোর বিভিন্ন ধরনের আক্রমণ মোকাবিলার সক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য প্যারেডে চার প্রকার যুদ্ধজাহাজভিত্তিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা প্রদর্শিত হয়। এক সামরিক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, এবার প্রদর্শিত চার প্রকার যুদ্ধজাহাজভিত্তিক আকাশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এগুলো একত্রে ব্যবহার করলে দূর, মাঝারি ও স্বল্প পরিসরের আকাশ প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।

চীনের পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার একাংশ। ছবি: সিনহুয়া
চীনের পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার একাংশ। ছবি: সিনহুয়া

পর্যবেক্ষণ করা চার ধরনের যুদ্ধজাহাজভিত্তিক আকাশ প্রতিরক্ষা অস্ত্র হলো এইচএইচকিউ-৯ সি, এইচকিউ-১৬ সি, একটি স্বল্পপাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এবং এলওয়াই-১ লেজার অস্ত্র। এগুলো একত্রে এক বহুমাত্রিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গঠন করে।

চীন এই সামরিক প্যারেডে প্রথমবারের মতো স্থল, সমুদ্র ও আকাশভিত্তিক কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র ব্যবস্থাও প্রদর্শন করেছে। এই ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে জিংলেই-১ আকাশভিত্তিক দীর্ঘপাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র, জুলাং-৩ সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র, ডংফেং-৬১, যা ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র এবং নতুন ধরনের ডংফেং-৩১ স্থলভিত্তিক আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র।

তথ্যসূত্র: গ্লোবাল টাইমস

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

জামায়াতের সঙ্গে জোটে আপত্তি এনসিপির ৩০ নেতার, নাহিদকে চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজা স্থিতিশীলতা বাহিনীতে যোগ দিতে প্রস্তুত পাকিস্তান, তবে আপত্তি হামাসকে নিরস্ত্র করার শর্তে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক বাহিনীতে যোগ দিতে নীতিগতভাবে সম্মতি জানিয়েছে পাকিস্তান। তবে এই বাহিনীর ম্যান্ডেটে যদি ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে নিরস্ত্র করার শর্ত থাকে, তবে পাকিস্তান তাতে অংশ নেবে না। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার এ কথা বলেছেন।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেসের ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সাফল্য পর্যালোচনা করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়াজন করা হয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে ইশাক দার বলেন, গাজা শান্তি চুক্তির আওতায় ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স’ (আইএসএফ) গঠন একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। পাকিস্তান যেকোনো আন্তর্জাতিক ফোরামে ‘পিস এনফোর্সমেন্ট’ (শান্তি বলবৎকরণ) নয়, বরং ‘পিসকিপিং’ (শান্তি রক্ষা) শব্দ ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছে।

হামাসকে নিরস্ত্র করা প্রসঙ্গে ইশাক দার স্পষ্ট করে বলেন, ‘যদি এই বাহিনীর ম্যান্ডেটে হামাসকে নিরস্ত্র করার কোনো ভূমিকা থাকে, তবে আমরা তাতে অংশ নেব না। এটি আমাদের কাজ নয়। হামাসকে নিরস্ত্র করার দায়িত্ব ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা সেখানকার স্থানীয় সরকারের।’

ইশাক দার আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের ভূমিকা শুধু শান্তি বজায় রাখায় সহায়তা করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। বলপ্রয়োগের মাধ্যমে কাউকে নিরস্ত্র করার কোনো অভিযানে পাকিস্তান তার সৈন্যদের জড়াতে চায় না।’

ইশাক দার জানান, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ নীতিগতভাবে সৈন্য পাঠানোর বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতি দিলেও, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পাকিস্তান এই বাহিনীর ‘টার্মস অব রেফারেন্স’ (টিওআর) এবং ম্যান্ডেট পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করবে।

প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনাকে সমর্থন করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি রেজল্যুশন পাস হয়। পাকিস্তানসহ ১৩টি দেশ এর পক্ষে ভোট দিলেও রাশিয়া ও চীন ভোটদানে বিরত ছিল। ওই পরিকল্পনারই একটি অন্যতম অংশ হলো এই ‘আইএসএফ’ গঠন। এখানে মূলত মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর সৈন্যদের প্রাধান্য থাকবে।

ইশাক দার জানান, ইন্দোনেশিয়া এই বাহিনীতে ২০ হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রস্তাব দিলেও তারাও হামাসকে নিরস্ত্র করার বিষয়ে পাকিস্তানের মতোই আপত্তি ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

পারমাণবিক শক্তিধর দেশ এবং অভিজ্ঞ সামরিক বাহিনীর অধিকারী হওয়ায় গাজা শান্তি মিশনে পাকিস্তানের অংশগ্রহণ ওয়াশিংটনের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে দেশের অভ্যন্তরে ধর্মীয় দলগুলোর প্রতিবাদ এবং হামাসের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি এড়াতে পাকিস্তান অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এই পথে এগোচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে ইশাক দার দাবি করেন, একসময় পাকিস্তান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ‘কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন’ বলে বিবেচিত হলেও বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় দেশটি পুনরায় বিশ্বমঞ্চে শক্তিশালী অবস্থানে ফিরে এসেছে। তিনি জানান, প্রধান বৈশ্বিক ইস্যুগুলোতে পাকিস্তানের নীতিগত ও দৃঢ় অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক মহলে ইসলামাবাদের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

জামায়াতের সঙ্গে জোটে আপত্তি এনসিপির ৩০ নেতার, নাহিদকে চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রুশ হামলায় রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
রুশ হামলায় রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের ঠিক আগে রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ভাষ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাতভর চালানো এই হামলায় প্রায় ৫০০ ড্রোন ও ৪০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এতে কিয়েভের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

জেলেনস্কি এই হামলাকে ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় চলমান শান্তি প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে রাশিয়ার ‘সরাসরি জবাব’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর এটিই তাদের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নজিরবিহীন।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শনিবার স্থানীয় সময় সকাল পর্যন্ত হামলা অব্যাহত ছিল। রাজধানী কিয়েভে প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে চলা বিমান হামলার সতর্কতা স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ২০ মিনিটে প্রত্যাহার করা হয়। ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, কিয়েভ ও আশপাশের এলাকায় অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৪৬ জন, যাদের মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে।

তবে এ বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা ইউক্রেনারগো জানায়, দেশজুড়ে জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে। ফলে রাজধানী কিয়েভে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছে।

এই হামলার প্রভাব ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডেও পড়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে দক্ষিণ-পূর্ব পোল্যান্ডের রেশজো ও লুবলিন বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে বিমানবন্দর দুটি আবার চালু করা হয়।

ট্রাম্প-জেলেনস্কি আলোচনার টেবিলে কী আছে

জেলেনস্কি বর্তমানে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টের উদ্দেশে বিমানে রয়েছেন। এক অডিও বার্তায় তিনি জানান, পথে কানাডায় থামবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপ করবেন।

এর আগে শুক্রবার কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের যৌথ প্রচেষ্টায় তৈরি হওয়া ২০ দফার শান্তি পরিকল্পনার ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে যুদ্ধ শেষে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ও ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা হবে।’

জেলেনস্কির মতে, যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে, সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘এটা নির্ভর করবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কী দিতে প্রস্তুত, কখন দিতে প্রস্তুত এবং কত দিনের জন্য।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও বলেছেন, এই শান্তি প্রক্রিয়ায় মূল চালিকাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রই। পলিটিকোকে তিনি বলেন, ‘আমার অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত তাঁর (জেলেনস্কির) কিছুই চূড়ান্ত নয়। দেখা যাক, সে কী নিয়ে আসে।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রোববারের বৈঠক ভালো হবে। তিনি আরও জানান, খুব শিগগির তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও কথা বলতে চান।

দোনেৎস্কের ভবিষ্যৎই এখন মূল প্রশ্ন

মস্কো দাবি করছে, ইউক্রেনকে দোনেৎস্কের একটি বড় ও ঘনবসতিপূর্ণ অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এই অঞ্চল রুশ বাহিনী প্রায় চার বছরের যুদ্ধেও পুরোপুরি দখল করতে পারেনি। অন্যদিকে কিয়েভ চায়, বর্তমান ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ থামানো হোক।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত এক সমঝোতার আওতায়, ইউক্রেনীয় বাহিনী দোনেৎস্কের কিছু এলাকা থেকে সরে গেলে সেখানে একটি মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের কথা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত ঠিক হয়নি।

জেলেনস্কি ইঙ্গিত দিয়েছেন, যদি চুক্তিতে বড় ধরনের আঞ্চলিক ছাড় দেওয়ার প্রশ্ন আসে, তবে তিনি তা গণভোটের মাধ্যমে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে পারেন। তবে যুদ্ধের এমন পরিস্থিতিতে গণভোট আয়োজন অসম্ভব বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ জানিয়েছেন, কিয়েভের ২০ দফা পরিকল্পনা রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার চেয়ে কিছুটা ভিন্ন, তবে শান্তি প্রক্রিয়ায় একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বা মোড় আসার বিষয়ে তিনি আশাবাদী। এখন সবার নজর রোববার ফ্লোরিডায় হতে যাওয়া ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের দিকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

জামায়াতের সঙ্গে জোটে আপত্তি এনসিপির ৩০ নেতার, নাহিদকে চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গুয়াতেমালায় বাস খাদে পড়ে নিহত অন্তত ১৫, আহত ১৯

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ধারণা করা হচ্ছে, কুয়াশা বা যান্ত্রিক ত্রুটি এ দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।  ছবি: সংগৃহীত
ধারণা করা হচ্ছে, কুয়াশা বা যান্ত্রিক ত্রুটি এ দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়াতেমালায় একটি যাত্রীবাহী বাস গভীর খাদে পড়ে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় ইন্টার-আমেরিকান হাইওয়েতে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আরও অন্তত ১৯ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র লিয়ান্দ্রো আমাদোর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ, ৩ জন নারী এবং ১টি শিশু রয়েছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাসটি গুয়াতেমালা সিটি থেকে মেক্সিকো সীমান্তবর্তী সান মার্কোস বিভাগের দিকে যাচ্ছিল। পথে টোটোনিকাপান বিভাগের ১৭২ থেকে ১৭৪ কিলোমিটারের মধ্যবর্তী এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ৭৫ মিটার (২৫০ ফুট) গভীর একটি খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনাস্থলটি ‘আলাস্কা পিক’ নামে পরিচিত। দুর্গম ভূখণ্ড এবং খাড়া ঢালের কারণে এলাকাটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

ধারণা করা হচ্ছে, কুয়াশা বা যান্ত্রিক ত্রুটি এ দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে, তবে সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি।

দেশটির ফায়ার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুর্ঘটনার কিছু ছবি শেয়ার করেছে। এতে দেখা যায়, দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বাসটি থেকে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করা হচ্ছে।

আহত ১৯ ব্যক্তিকে উদ্ধার করে কাছের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে প্রিয়জনদের খোঁজে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালগুলোতে ভিড় করছেন স্বজনেরা।

উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের শুরুতেই গুয়াতেমালা সিটির বাইরে একটি বাস খাদে পড়ে ৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। বছরের শেষ দিকে এসে আবারও একই ধরনের বড় দুর্ঘটনায় দেশটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

জামায়াতের সঙ্গে জোটে আপত্তি এনসিপির ৩০ নেতার, নাহিদকে চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোমালিল্যান্ডকে ইসরায়েলের স্বীকৃতি—‘রাষ্ট্রীয় আগ্রাসন’ আখ্যা দিয়ে প্রতাহারের দাবি সোমালিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৫০
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম’ রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম’ রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিয়ার বিচ্ছিন্ন অঞ্চল সোমালিল্যান্ডকে একটি ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম’ রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সোমালিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আবদিরহমান মোহাম্মদ আবদুল্লাহি (সিরো) এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি যৌথ ঘোষণাপত্রে সই করেন।

তবে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে ‘রাষ্ট্রীয় আগ্রাসন’ হিসেবে অভিহিত করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সোমালিয়া সরকার। মোগাদিশুর দাবি, এটি সোমালিয়ার সার্বভৌমত্বের ওপর নগ্ন হামলা এবং এর পেছনে ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে উচ্ছেদ করে সোমালিল্যান্ডে পাঠানোর গোপন পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সঙ্গে তারা সোমালিল্যান্ডকে দেওয়া ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম’ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই ঐতিহাসিক মাইলফলককে ‘আব্রাহাম চুক্তি’র অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এর মাধ্যমে দুই দেশ পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে একে অপরের রাজধানীতে দূতাবাস ও রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করবে। কৃষি, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইসরায়েল সোমালিল্যান্ডকে সরাসরি সহায়তা দেবে।

সোমালিয়ার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলি ওমর আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ইসরায়েলের এই ধৃষ্টতা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। এটি আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন।

সোমালিয়ার অভিযোগ, ইসরায়েল গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে সোমালিল্যান্ডে পুনর্বাসিত করার জন্য এই স্বীকৃতির চাল চেলেছে। ফিলিস্তিন সরকারও এই আশঙ্কায় সংহতি প্রকাশ করে একে একটি ‘বিপজ্জনক সীমা’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

সোমালিয়া সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, সোমালিল্যান্ড তাদের ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এর অখণ্ডতা রক্ষায় তারা যেকোনো কূটনৈতিক ও আইনি পদক্ষেপ নেবে।

ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তে বিশ্ব রাজনীতিতেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়া সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ইস্যুতে নেতানিয়াহু থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছেন। তিনি নিউইয়র্ক পোস্টকে বলেছেন, ‘আমি এখনই এই পথে হাঁটব না।’

এদিকে আফ্রিকান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহামুদ আলি ইউসুফ সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দেওয়ার যেকোনো উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, এতে বিপজ্জনক নজির তৈরি হবে, যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে। আফ্রিকান ইউনিয়ন ১৯৬৪ সালের একটি নীতির কথা উল্লেখ করে, যেখানে স্বাধীনতার সময় উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সীমান্ত অক্ষুণ্ন রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

আরব লিগের মহাসচিব আহমেদ আবুল গেইতও ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি একে একটি আরব ও আফ্রিকান রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের ওপর উসকানিমূলক আক্রমণ বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, এটি আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মধ্যেও শুক্রবার হারগেইসার রাস্তায় হাজারো মানুষ নেমে আসে উদ্‌যাপনে। অনেকের কাছে এটি ছিল ৩০ বছরের কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতার অবসান। দেশটির জাতীয় জাদুঘরে ইসরায়েলের পতাকা টানানো হয় এবং বাসিন্দারা এই স্বীকৃতিকে স্বাগত জানান।

ঐতিহাসিকভাবে সোমালিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কে টানাপোড়েন আছে। এর পেছনে রয়েছে সোমালিয়ার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইথিওপিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। স্নায়ুযুদ্ধের সময় ইসরায়েল ইথিওপিয়াকে সামরিক প্রশিক্ষণ, গোয়েন্দা সহায়তা ও অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। অন্যদিকে আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে জোটবদ্ধ সোমালিয়া ১৯৭৭ সালের ওগাডেন যুদ্ধে পরাজিত হয়, যা পরবর্তী কয়েক দশকের গৃহবিবাদকে উসকে দেয়।

১৯৯১ সালে তৎকালীন নেতা মোহাম্মদ সিয়াদ বারের শাসনামলে নিপীড়নের পর সোমালিল্যান্ড স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও সোমালিয়া কখনোই অঞ্চলটিকে স্বীকৃতি দেয়নি। জাতিসংঘের কোনো সদস্যরাষ্ট্রও অঞ্চলটিকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে সোমালিল্যান্ড নিজেদের আলাদা মুদ্রা, পতাকা ও সংসদ গঠন করেছে।

হর্ন অব আফ্রিকা অঞ্চলে বাবেল মান্দেব প্রণালির কাছে কৌশলগত অবস্থানের কারণে এই অঞ্চল ভূরাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েলের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যারেন হাসকেল জানান, হুথির প্রভাব নিয়ে যৌথ উদ্বেগের বিষয়ে সোমালিয়া সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল। তবে সোমালিয়ার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলি ওমর এই দাবি অস্বীকার করে বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই এবং ইসরায়েলি নীতির বিষয়ে সোমালিয়ার অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

জামায়াতের সঙ্গে জোটে আপত্তি এনসিপির ৩০ নেতার, নাহিদকে চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত