
সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের কারাগারে বন্দী ছিল লাখো মানুষ। সম্প্রতি বিদ্রোহীরা দামেস্ক দখল করার পর বাশার আল-আসাদ পালিয়ে চলে যান রাশিয়ায়। তাঁর পতনের পরপরই বিভিন্ন কারাগার থেকে হাজারো মানুষকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্ত হয়ে অনেকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কাছে যেভাবে নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন, তাতে মনে হয়েছে—এ যেন আরেক আয়নাঘর।
মুক্তি পাওয়াদের একজন হলেন হালা নামক এক নারী। যিনি এখনো ভয়ে তাঁর আসল নাম প্রকাশ করেননি। হালা কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, ২০১৯ সালে তাঁকে হামার একটি চেকপয়েন্ট থেকে আটক করা হয়। তাঁকে ‘সন্ত্রাসবাদের’ অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। সে সময় হাজার হাজার সরকারবিরোধীদের ওপর এই অভিযোগ আরোপ করা হয়েছে। এরপর তাঁকে আলেপ্পোতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই তিনি বিভিন্ন কারাগারে বন্দী ছিলেন।
হালা তাঁর কারাবন্দী জীবনের নির্মম স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমাকে আমার নাম ধরে ডাকা হতো না, স্রেফ নম্বর দিয়ে ডাকা হতো। তাই আমার নাম ছিল ১১০০।’ হালা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে, এটি (বাশারের পতন) সত্যি এবং আমরা কোনো আলোর মুখ দেখতে পাব।’
আসাদ বিরোধী আন্দোলনকারী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে হালা বললেন, ‘আমাদের আনন্দ ছিল সীমাহীন, আমরা উলু ধ্বনি দিচ্ছিলাম, চিৎকার করলাম।’ মুক্তিদাতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে হালা বলেন, ‘ইচ্ছা করছিল, তাদের যদি আলিঙ্গন করে চুমু খেতে পারতাম! পরিবারের কাছে পৌঁছানোর পর আনন্দ আরও বেড়ে গেল। এটা যেন আমার নতুন জন্ম।’
আলেপ্পোর যে কারাগার থেকে হালাকে মুক্তি দেয় এইচটিএস, সেটি বাশার আল-আসাদের সরকারের পরিচালিত কয়েকটি কারাগারের একটি মাত্র। মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুযায়ী, হালাসহ আল-আসাদের কারাগারে অন্তত ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৪ জন বন্দী ছিলেন।
সিরিয়ার কারাগারগুলো ছিল বাশার আল-আসাদের রেজিমকে টিকিয়ে রাখার অন্যতম মূল স্তম্ভ। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, ২০১৩ সালে সিরিয়া থেকে গোপনে বের করে আনা অনেক দেখিয়েছিল যে, সিরিয়ার সরকারি আটক কেন্দ্রে ব্যাপক নির্যাতন, অনাহার, প্রহার এবং রোগের ব্যাপক প্রমাণ আছে। একে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
হালা তাঁর কারাবন্দী জীবনের স্মৃতি থেকে জানান, তাঁরই সঙ্গে বন্দী ছিলেন এক কিশোরী। যিনি বাশার আল-আসাদ বাহিনীর নির্যাতনের কারণে মাত্র ১৬ বছর বয়সেই মারা যান। হালা বলেন, ওই তরুণীকে তার বিয়ের মাত্র দুই মাস পরে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পুলিশের অভিযোগ ছিল, ওই তরুণী, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী, এক বৃদ্ধা এবং দুজন চিকিৎসক বিপ্লবীদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছিল।
বাশার আল-আসাদের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া আরেক বন্দী ৪৯ বছর বয়সী সাফি আল-ইয়াসিন। তিনিও আলেপ্পোর কারাগার থেকেই মুক্তি পেয়েছেন। সাফি বলেন, ‘এটা যেন আমার জন্মদিনের মতো ছিল, যেন আমার জীবনের প্রথম দিন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’
সাফি আল-ইয়াসিন বলেন, গত ২৯ নভেম্বরের আগে কারাগারের কাছাকাছি গোলাগুলির শব্দ শুনে তারা সতর্ক হয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘তারপর হঠাৎ শান্তি নেমে এল এবং আমরা বিজয়ী বিদ্রোহীদের গানের শব্দ শুনতে পেলাম। প্রায় ৫ হাজার বন্দী ছিল। আমরা জানালা-দরজা ভাঙতে শুরু করি বেরোনোর জন্য। এমনকি কারাগারের কর্মকর্তা ও প্রহরীরা সাধারণ পোশাকে আমাদের সঙ্গে বেরিয়ে যায়, যাতে বিদ্রোহীরা ধরতে না পারে।’
সাফি আল-ইয়াসিন বন্দী হওয়ার আগে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার উপকূলীয় শহর বানিয়াসে নৌকা তৈরির কাজ করতেন। তিনি বলেন, ২০১১ সালে সিরিয়ার বিপ্লবের সময়কার এক বিক্ষোভে অংশগ্রহণের অভিযোগে ৩১ বছর সাজা হয়েছিল তাঁর। এরই মধ্যে তিনি সেই সাজার অর্ধেক পার করে ফেলেছেন। বিগত ১৪ বছর ধরে তিনি সিরিয়ার বিস্তৃত কারাগার নেটওয়ার্কের বিভিন্ন স্থানে ‘তীব্র শারীরিক নির্যাতন এবং বছরের পর বছর মানসিক যন্ত্রণার’ শিকার হয়েছেন।
সাফি বিভিন্ন কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল এবং প্রত্যেক কারাগারে আলাদা আলাদা পদ্ধতিতে নির্যাতন চালিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তিনি সাইদিনায়ার কুখ্যাত কারাগারে এক বছর কাটিয়েছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০১৭ সালে এই কারাগারকে ‘মানব কসাইখানা’ বলে আখ্যায়িত করেছিল। এরপর তাঁকে সুইদা এবং পরে আলেপ্পোতে স্থানান্তর করা হয়।
সাইদিনায়ার কারাগারে যে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলেও উল্লেখ করে সাফি আল-ইয়াসিন। তিনি বলেন, ‘আমার দেখা দৃশ্যগুলো মৃত্যুর পরও আমার স্মৃতি থেকে মুছে যাবে না।’ এ সময় তিনি জানান, তাঁর সামনেই এক বৃদ্ধকে নির্যাতন করে সারা শরীর রক্তাক্ত করে ফেলা হয়েছিল। সেই বৃদ্ধ নির্যাতনের ধকল সইতে না পেরে অবশেষে মারা যান।
আল-আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের শাসনের জাঁতাকল থেকে সিরিয়া মুক্তি পাওয়ার পর কারাগার থেকে মুক্তি পান মাহের। তিনি ভয়ে এখনো নিজের পুরো নাম প্রকাশ করতে চান না। ২০১৭ সালে ‘সন্ত্রাসে অর্থায়নের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। এরপর বিনা বিচারে তাঁকে ৭ বছর বন্দী করে রাখা হয়। মাহের বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, কর্তৃপক্ষ যেন আমাকে ভুলে গেছে। যেন আমি মানুষ নই, কেবলই একটি সংখ্যা।’
কারাগারের নির্মম ও ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে মাহের বলেন, ‘প্রতিটি মিনিট যেন মৃত্যুর কাছাকাছি ছিল, নির্যাতনের যে তীব্রতা ও নির্মম পদ্ধতি ছিল তা কোনো পশুও সহ্য করতে পারত না।’ মাহের জানান, তাঁর বন্দীদশায় এর চেয়েও ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হলো, তিনি যখন দামেস্কের কুখ্যাত মেজ্জেহ কারাগারে এক আত্মীয়ের দেখা পান।
মেহের বলেন, ‘কারাগারের বাইরে হঠাৎ একটি বাস এল এবং কয়েকজন বন্দীকে ঠেলে আমার সেলে পাঠান হলো। তাদের মধ্যে একজনকে আমার ভগ্নিপতির মতো দেখাচ্ছিল। আমি প্রথমে দ্বিধায় ছিলাম এবং ভাবছিলাম, এটা তো আয়মান (মাহেরের ভগ্নিপতি) হতে পারে না, সে তো পা হারায়নি!’
মাহের তাঁর সন্দেহ ঘোচাতে সেই বন্দীর কাছে যান এবং দেখতে পান, তাঁর ভগ্নিপতি কেবল পা হারাননি, পাশাপাশি মানসিক ভারসাম্যও হারিয়েছেন। মাহের মূলত একটি ট্যাটু দেখে তাঁর ভগ্নিপতিকে চিনতে পারেন।
মাহেরকে যেসব কারাগারে রাখা হয়েছিল মেজ্জেহ ছিল তার মধ্যে একটি। বছরের পর বছর বিনা বিচারে বন্দী থেকে নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর এক সময় তিনি ভাবতে শুরু করেন, তিনি কখনোই আর কারাগার থেকে বের হতে পারবেন না।
তবে দেরি হলেও মাহের, হালা এবং সাফির জীবনে ভালো কিছু ঘটেছে। তাঁরা মুক্তি পেয়েছেন আল-আসাদ পরিবারের বন্দীশালা থেকে এবং একেবারে অপ্রত্যাশিতভাবেই। মাহের বলেন, ‘কারাগারের কাছাকাছি গোলাগুলির শব্দ শুনে আমরা সবাই আল্লাহু আকবার স্লোগান দিতে শুরু করি। আমরা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেবে।’
মাহের বলেন, ‘আমরা দরজা ভেঙে কারাগার থেকে বেরিয়ে এলাম, বিপ্লবীদের আলিঙ্গন করলাম, সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতায় সিজদাহ করলাম এবং নিরাপদে আমার বোনের বাড়িতে পৌঁছালাম। তিনি তাঁর পরিবার নিয়ে ইদলিবে থাকেন।’
আল-জাজিরা থেকে অনূদিত
আরও পড়ুন:

সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের কারাগারে বন্দী ছিল লাখো মানুষ। সম্প্রতি বিদ্রোহীরা দামেস্ক দখল করার পর বাশার আল-আসাদ পালিয়ে চলে যান রাশিয়ায়। তাঁর পতনের পরপরই বিভিন্ন কারাগার থেকে হাজারো মানুষকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্ত হয়ে অনেকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কাছে যেভাবে নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন, তাতে মনে হয়েছে—এ যেন আরেক আয়নাঘর।
মুক্তি পাওয়াদের একজন হলেন হালা নামক এক নারী। যিনি এখনো ভয়ে তাঁর আসল নাম প্রকাশ করেননি। হালা কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, ২০১৯ সালে তাঁকে হামার একটি চেকপয়েন্ট থেকে আটক করা হয়। তাঁকে ‘সন্ত্রাসবাদের’ অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। সে সময় হাজার হাজার সরকারবিরোধীদের ওপর এই অভিযোগ আরোপ করা হয়েছে। এরপর তাঁকে আলেপ্পোতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই তিনি বিভিন্ন কারাগারে বন্দী ছিলেন।
হালা তাঁর কারাবন্দী জীবনের নির্মম স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমাকে আমার নাম ধরে ডাকা হতো না, স্রেফ নম্বর দিয়ে ডাকা হতো। তাই আমার নাম ছিল ১১০০।’ হালা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে, এটি (বাশারের পতন) সত্যি এবং আমরা কোনো আলোর মুখ দেখতে পাব।’
আসাদ বিরোধী আন্দোলনকারী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে হালা বললেন, ‘আমাদের আনন্দ ছিল সীমাহীন, আমরা উলু ধ্বনি দিচ্ছিলাম, চিৎকার করলাম।’ মুক্তিদাতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে হালা বলেন, ‘ইচ্ছা করছিল, তাদের যদি আলিঙ্গন করে চুমু খেতে পারতাম! পরিবারের কাছে পৌঁছানোর পর আনন্দ আরও বেড়ে গেল। এটা যেন আমার নতুন জন্ম।’
আলেপ্পোর যে কারাগার থেকে হালাকে মুক্তি দেয় এইচটিএস, সেটি বাশার আল-আসাদের সরকারের পরিচালিত কয়েকটি কারাগারের একটি মাত্র। মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুযায়ী, হালাসহ আল-আসাদের কারাগারে অন্তত ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৪ জন বন্দী ছিলেন।
সিরিয়ার কারাগারগুলো ছিল বাশার আল-আসাদের রেজিমকে টিকিয়ে রাখার অন্যতম মূল স্তম্ভ। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, ২০১৩ সালে সিরিয়া থেকে গোপনে বের করে আনা অনেক দেখিয়েছিল যে, সিরিয়ার সরকারি আটক কেন্দ্রে ব্যাপক নির্যাতন, অনাহার, প্রহার এবং রোগের ব্যাপক প্রমাণ আছে। একে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
হালা তাঁর কারাবন্দী জীবনের স্মৃতি থেকে জানান, তাঁরই সঙ্গে বন্দী ছিলেন এক কিশোরী। যিনি বাশার আল-আসাদ বাহিনীর নির্যাতনের কারণে মাত্র ১৬ বছর বয়সেই মারা যান। হালা বলেন, ওই তরুণীকে তার বিয়ের মাত্র দুই মাস পরে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পুলিশের অভিযোগ ছিল, ওই তরুণী, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী, এক বৃদ্ধা এবং দুজন চিকিৎসক বিপ্লবীদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছিল।
বাশার আল-আসাদের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া আরেক বন্দী ৪৯ বছর বয়সী সাফি আল-ইয়াসিন। তিনিও আলেপ্পোর কারাগার থেকেই মুক্তি পেয়েছেন। সাফি বলেন, ‘এটা যেন আমার জন্মদিনের মতো ছিল, যেন আমার জীবনের প্রথম দিন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’
সাফি আল-ইয়াসিন বলেন, গত ২৯ নভেম্বরের আগে কারাগারের কাছাকাছি গোলাগুলির শব্দ শুনে তারা সতর্ক হয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘তারপর হঠাৎ শান্তি নেমে এল এবং আমরা বিজয়ী বিদ্রোহীদের গানের শব্দ শুনতে পেলাম। প্রায় ৫ হাজার বন্দী ছিল। আমরা জানালা-দরজা ভাঙতে শুরু করি বেরোনোর জন্য। এমনকি কারাগারের কর্মকর্তা ও প্রহরীরা সাধারণ পোশাকে আমাদের সঙ্গে বেরিয়ে যায়, যাতে বিদ্রোহীরা ধরতে না পারে।’
সাফি আল-ইয়াসিন বন্দী হওয়ার আগে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার উপকূলীয় শহর বানিয়াসে নৌকা তৈরির কাজ করতেন। তিনি বলেন, ২০১১ সালে সিরিয়ার বিপ্লবের সময়কার এক বিক্ষোভে অংশগ্রহণের অভিযোগে ৩১ বছর সাজা হয়েছিল তাঁর। এরই মধ্যে তিনি সেই সাজার অর্ধেক পার করে ফেলেছেন। বিগত ১৪ বছর ধরে তিনি সিরিয়ার বিস্তৃত কারাগার নেটওয়ার্কের বিভিন্ন স্থানে ‘তীব্র শারীরিক নির্যাতন এবং বছরের পর বছর মানসিক যন্ত্রণার’ শিকার হয়েছেন।
সাফি বিভিন্ন কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল এবং প্রত্যেক কারাগারে আলাদা আলাদা পদ্ধতিতে নির্যাতন চালিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তিনি সাইদিনায়ার কুখ্যাত কারাগারে এক বছর কাটিয়েছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০১৭ সালে এই কারাগারকে ‘মানব কসাইখানা’ বলে আখ্যায়িত করেছিল। এরপর তাঁকে সুইদা এবং পরে আলেপ্পোতে স্থানান্তর করা হয়।
সাইদিনায়ার কারাগারে যে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলেও উল্লেখ করে সাফি আল-ইয়াসিন। তিনি বলেন, ‘আমার দেখা দৃশ্যগুলো মৃত্যুর পরও আমার স্মৃতি থেকে মুছে যাবে না।’ এ সময় তিনি জানান, তাঁর সামনেই এক বৃদ্ধকে নির্যাতন করে সারা শরীর রক্তাক্ত করে ফেলা হয়েছিল। সেই বৃদ্ধ নির্যাতনের ধকল সইতে না পেরে অবশেষে মারা যান।
আল-আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের শাসনের জাঁতাকল থেকে সিরিয়া মুক্তি পাওয়ার পর কারাগার থেকে মুক্তি পান মাহের। তিনি ভয়ে এখনো নিজের পুরো নাম প্রকাশ করতে চান না। ২০১৭ সালে ‘সন্ত্রাসে অর্থায়নের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। এরপর বিনা বিচারে তাঁকে ৭ বছর বন্দী করে রাখা হয়। মাহের বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, কর্তৃপক্ষ যেন আমাকে ভুলে গেছে। যেন আমি মানুষ নই, কেবলই একটি সংখ্যা।’
কারাগারের নির্মম ও ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে মাহের বলেন, ‘প্রতিটি মিনিট যেন মৃত্যুর কাছাকাছি ছিল, নির্যাতনের যে তীব্রতা ও নির্মম পদ্ধতি ছিল তা কোনো পশুও সহ্য করতে পারত না।’ মাহের জানান, তাঁর বন্দীদশায় এর চেয়েও ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হলো, তিনি যখন দামেস্কের কুখ্যাত মেজ্জেহ কারাগারে এক আত্মীয়ের দেখা পান।
মেহের বলেন, ‘কারাগারের বাইরে হঠাৎ একটি বাস এল এবং কয়েকজন বন্দীকে ঠেলে আমার সেলে পাঠান হলো। তাদের মধ্যে একজনকে আমার ভগ্নিপতির মতো দেখাচ্ছিল। আমি প্রথমে দ্বিধায় ছিলাম এবং ভাবছিলাম, এটা তো আয়মান (মাহেরের ভগ্নিপতি) হতে পারে না, সে তো পা হারায়নি!’
মাহের তাঁর সন্দেহ ঘোচাতে সেই বন্দীর কাছে যান এবং দেখতে পান, তাঁর ভগ্নিপতি কেবল পা হারাননি, পাশাপাশি মানসিক ভারসাম্যও হারিয়েছেন। মাহের মূলত একটি ট্যাটু দেখে তাঁর ভগ্নিপতিকে চিনতে পারেন।
মাহেরকে যেসব কারাগারে রাখা হয়েছিল মেজ্জেহ ছিল তার মধ্যে একটি। বছরের পর বছর বিনা বিচারে বন্দী থেকে নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর এক সময় তিনি ভাবতে শুরু করেন, তিনি কখনোই আর কারাগার থেকে বের হতে পারবেন না।
তবে দেরি হলেও মাহের, হালা এবং সাফির জীবনে ভালো কিছু ঘটেছে। তাঁরা মুক্তি পেয়েছেন আল-আসাদ পরিবারের বন্দীশালা থেকে এবং একেবারে অপ্রত্যাশিতভাবেই। মাহের বলেন, ‘কারাগারের কাছাকাছি গোলাগুলির শব্দ শুনে আমরা সবাই আল্লাহু আকবার স্লোগান দিতে শুরু করি। আমরা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেবে।’
মাহের বলেন, ‘আমরা দরজা ভেঙে কারাগার থেকে বেরিয়ে এলাম, বিপ্লবীদের আলিঙ্গন করলাম, সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতায় সিজদাহ করলাম এবং নিরাপদে আমার বোনের বাড়িতে পৌঁছালাম। তিনি তাঁর পরিবার নিয়ে ইদলিবে থাকেন।’
আল-জাজিরা থেকে অনূদিত
আরও পড়ুন:

সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের কারাগারে বন্দী ছিল লাখো মানুষ। সম্প্রতি বিদ্রোহীরা দামেস্ক দখল করার পর বাশার আল-আসাদ পালিয়ে চলে যান রাশিয়ায়। তাঁর পতনের পরপরই বিভিন্ন কারাগার থেকে হাজারো মানুষকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্ত হয়ে অনেকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কাছে যেভাবে নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন, তাতে মনে হয়েছে—এ যেন আরেক আয়নাঘর।
মুক্তি পাওয়াদের একজন হলেন হালা নামক এক নারী। যিনি এখনো ভয়ে তাঁর আসল নাম প্রকাশ করেননি। হালা কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, ২০১৯ সালে তাঁকে হামার একটি চেকপয়েন্ট থেকে আটক করা হয়। তাঁকে ‘সন্ত্রাসবাদের’ অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। সে সময় হাজার হাজার সরকারবিরোধীদের ওপর এই অভিযোগ আরোপ করা হয়েছে। এরপর তাঁকে আলেপ্পোতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই তিনি বিভিন্ন কারাগারে বন্দী ছিলেন।
হালা তাঁর কারাবন্দী জীবনের নির্মম স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমাকে আমার নাম ধরে ডাকা হতো না, স্রেফ নম্বর দিয়ে ডাকা হতো। তাই আমার নাম ছিল ১১০০।’ হালা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে, এটি (বাশারের পতন) সত্যি এবং আমরা কোনো আলোর মুখ দেখতে পাব।’
আসাদ বিরোধী আন্দোলনকারী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে হালা বললেন, ‘আমাদের আনন্দ ছিল সীমাহীন, আমরা উলু ধ্বনি দিচ্ছিলাম, চিৎকার করলাম।’ মুক্তিদাতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে হালা বলেন, ‘ইচ্ছা করছিল, তাদের যদি আলিঙ্গন করে চুমু খেতে পারতাম! পরিবারের কাছে পৌঁছানোর পর আনন্দ আরও বেড়ে গেল। এটা যেন আমার নতুন জন্ম।’
আলেপ্পোর যে কারাগার থেকে হালাকে মুক্তি দেয় এইচটিএস, সেটি বাশার আল-আসাদের সরকারের পরিচালিত কয়েকটি কারাগারের একটি মাত্র। মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুযায়ী, হালাসহ আল-আসাদের কারাগারে অন্তত ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৪ জন বন্দী ছিলেন।
সিরিয়ার কারাগারগুলো ছিল বাশার আল-আসাদের রেজিমকে টিকিয়ে রাখার অন্যতম মূল স্তম্ভ। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, ২০১৩ সালে সিরিয়া থেকে গোপনে বের করে আনা অনেক দেখিয়েছিল যে, সিরিয়ার সরকারি আটক কেন্দ্রে ব্যাপক নির্যাতন, অনাহার, প্রহার এবং রোগের ব্যাপক প্রমাণ আছে। একে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
হালা তাঁর কারাবন্দী জীবনের স্মৃতি থেকে জানান, তাঁরই সঙ্গে বন্দী ছিলেন এক কিশোরী। যিনি বাশার আল-আসাদ বাহিনীর নির্যাতনের কারণে মাত্র ১৬ বছর বয়সেই মারা যান। হালা বলেন, ওই তরুণীকে তার বিয়ের মাত্র দুই মাস পরে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পুলিশের অভিযোগ ছিল, ওই তরুণী, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী, এক বৃদ্ধা এবং দুজন চিকিৎসক বিপ্লবীদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছিল।
বাশার আল-আসাদের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া আরেক বন্দী ৪৯ বছর বয়সী সাফি আল-ইয়াসিন। তিনিও আলেপ্পোর কারাগার থেকেই মুক্তি পেয়েছেন। সাফি বলেন, ‘এটা যেন আমার জন্মদিনের মতো ছিল, যেন আমার জীবনের প্রথম দিন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’
সাফি আল-ইয়াসিন বলেন, গত ২৯ নভেম্বরের আগে কারাগারের কাছাকাছি গোলাগুলির শব্দ শুনে তারা সতর্ক হয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘তারপর হঠাৎ শান্তি নেমে এল এবং আমরা বিজয়ী বিদ্রোহীদের গানের শব্দ শুনতে পেলাম। প্রায় ৫ হাজার বন্দী ছিল। আমরা জানালা-দরজা ভাঙতে শুরু করি বেরোনোর জন্য। এমনকি কারাগারের কর্মকর্তা ও প্রহরীরা সাধারণ পোশাকে আমাদের সঙ্গে বেরিয়ে যায়, যাতে বিদ্রোহীরা ধরতে না পারে।’
সাফি আল-ইয়াসিন বন্দী হওয়ার আগে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার উপকূলীয় শহর বানিয়াসে নৌকা তৈরির কাজ করতেন। তিনি বলেন, ২০১১ সালে সিরিয়ার বিপ্লবের সময়কার এক বিক্ষোভে অংশগ্রহণের অভিযোগে ৩১ বছর সাজা হয়েছিল তাঁর। এরই মধ্যে তিনি সেই সাজার অর্ধেক পার করে ফেলেছেন। বিগত ১৪ বছর ধরে তিনি সিরিয়ার বিস্তৃত কারাগার নেটওয়ার্কের বিভিন্ন স্থানে ‘তীব্র শারীরিক নির্যাতন এবং বছরের পর বছর মানসিক যন্ত্রণার’ শিকার হয়েছেন।
সাফি বিভিন্ন কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল এবং প্রত্যেক কারাগারে আলাদা আলাদা পদ্ধতিতে নির্যাতন চালিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তিনি সাইদিনায়ার কুখ্যাত কারাগারে এক বছর কাটিয়েছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০১৭ সালে এই কারাগারকে ‘মানব কসাইখানা’ বলে আখ্যায়িত করেছিল। এরপর তাঁকে সুইদা এবং পরে আলেপ্পোতে স্থানান্তর করা হয়।
সাইদিনায়ার কারাগারে যে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলেও উল্লেখ করে সাফি আল-ইয়াসিন। তিনি বলেন, ‘আমার দেখা দৃশ্যগুলো মৃত্যুর পরও আমার স্মৃতি থেকে মুছে যাবে না।’ এ সময় তিনি জানান, তাঁর সামনেই এক বৃদ্ধকে নির্যাতন করে সারা শরীর রক্তাক্ত করে ফেলা হয়েছিল। সেই বৃদ্ধ নির্যাতনের ধকল সইতে না পেরে অবশেষে মারা যান।
আল-আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের শাসনের জাঁতাকল থেকে সিরিয়া মুক্তি পাওয়ার পর কারাগার থেকে মুক্তি পান মাহের। তিনি ভয়ে এখনো নিজের পুরো নাম প্রকাশ করতে চান না। ২০১৭ সালে ‘সন্ত্রাসে অর্থায়নের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। এরপর বিনা বিচারে তাঁকে ৭ বছর বন্দী করে রাখা হয়। মাহের বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, কর্তৃপক্ষ যেন আমাকে ভুলে গেছে। যেন আমি মানুষ নই, কেবলই একটি সংখ্যা।’
কারাগারের নির্মম ও ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে মাহের বলেন, ‘প্রতিটি মিনিট যেন মৃত্যুর কাছাকাছি ছিল, নির্যাতনের যে তীব্রতা ও নির্মম পদ্ধতি ছিল তা কোনো পশুও সহ্য করতে পারত না।’ মাহের জানান, তাঁর বন্দীদশায় এর চেয়েও ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হলো, তিনি যখন দামেস্কের কুখ্যাত মেজ্জেহ কারাগারে এক আত্মীয়ের দেখা পান।
মেহের বলেন, ‘কারাগারের বাইরে হঠাৎ একটি বাস এল এবং কয়েকজন বন্দীকে ঠেলে আমার সেলে পাঠান হলো। তাদের মধ্যে একজনকে আমার ভগ্নিপতির মতো দেখাচ্ছিল। আমি প্রথমে দ্বিধায় ছিলাম এবং ভাবছিলাম, এটা তো আয়মান (মাহেরের ভগ্নিপতি) হতে পারে না, সে তো পা হারায়নি!’
মাহের তাঁর সন্দেহ ঘোচাতে সেই বন্দীর কাছে যান এবং দেখতে পান, তাঁর ভগ্নিপতি কেবল পা হারাননি, পাশাপাশি মানসিক ভারসাম্যও হারিয়েছেন। মাহের মূলত একটি ট্যাটু দেখে তাঁর ভগ্নিপতিকে চিনতে পারেন।
মাহেরকে যেসব কারাগারে রাখা হয়েছিল মেজ্জেহ ছিল তার মধ্যে একটি। বছরের পর বছর বিনা বিচারে বন্দী থেকে নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর এক সময় তিনি ভাবতে শুরু করেন, তিনি কখনোই আর কারাগার থেকে বের হতে পারবেন না।
তবে দেরি হলেও মাহের, হালা এবং সাফির জীবনে ভালো কিছু ঘটেছে। তাঁরা মুক্তি পেয়েছেন আল-আসাদ পরিবারের বন্দীশালা থেকে এবং একেবারে অপ্রত্যাশিতভাবেই। মাহের বলেন, ‘কারাগারের কাছাকাছি গোলাগুলির শব্দ শুনে আমরা সবাই আল্লাহু আকবার স্লোগান দিতে শুরু করি। আমরা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেবে।’
মাহের বলেন, ‘আমরা দরজা ভেঙে কারাগার থেকে বেরিয়ে এলাম, বিপ্লবীদের আলিঙ্গন করলাম, সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতায় সিজদাহ করলাম এবং নিরাপদে আমার বোনের বাড়িতে পৌঁছালাম। তিনি তাঁর পরিবার নিয়ে ইদলিবে থাকেন।’
আল-জাজিরা থেকে অনূদিত
আরও পড়ুন:

সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের কারাগারে বন্দী ছিল লাখো মানুষ। সম্প্রতি বিদ্রোহীরা দামেস্ক দখল করার পর বাশার আল-আসাদ পালিয়ে চলে যান রাশিয়ায়। তাঁর পতনের পরপরই বিভিন্ন কারাগার থেকে হাজারো মানুষকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্ত হয়ে অনেকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কাছে যেভাবে নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন, তাতে মনে হয়েছে—এ যেন আরেক আয়নাঘর।
মুক্তি পাওয়াদের একজন হলেন হালা নামক এক নারী। যিনি এখনো ভয়ে তাঁর আসল নাম প্রকাশ করেননি। হালা কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, ২০১৯ সালে তাঁকে হামার একটি চেকপয়েন্ট থেকে আটক করা হয়। তাঁকে ‘সন্ত্রাসবাদের’ অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। সে সময় হাজার হাজার সরকারবিরোধীদের ওপর এই অভিযোগ আরোপ করা হয়েছে। এরপর তাঁকে আলেপ্পোতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই তিনি বিভিন্ন কারাগারে বন্দী ছিলেন।
হালা তাঁর কারাবন্দী জীবনের নির্মম স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমাকে আমার নাম ধরে ডাকা হতো না, স্রেফ নম্বর দিয়ে ডাকা হতো। তাই আমার নাম ছিল ১১০০।’ হালা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে, এটি (বাশারের পতন) সত্যি এবং আমরা কোনো আলোর মুখ দেখতে পাব।’
আসাদ বিরোধী আন্দোলনকারী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে হালা বললেন, ‘আমাদের আনন্দ ছিল সীমাহীন, আমরা উলু ধ্বনি দিচ্ছিলাম, চিৎকার করলাম।’ মুক্তিদাতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে হালা বলেন, ‘ইচ্ছা করছিল, তাদের যদি আলিঙ্গন করে চুমু খেতে পারতাম! পরিবারের কাছে পৌঁছানোর পর আনন্দ আরও বেড়ে গেল। এটা যেন আমার নতুন জন্ম।’
আলেপ্পোর যে কারাগার থেকে হালাকে মুক্তি দেয় এইচটিএস, সেটি বাশার আল-আসাদের সরকারের পরিচালিত কয়েকটি কারাগারের একটি মাত্র। মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুযায়ী, হালাসহ আল-আসাদের কারাগারে অন্তত ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৪ জন বন্দী ছিলেন।
সিরিয়ার কারাগারগুলো ছিল বাশার আল-আসাদের রেজিমকে টিকিয়ে রাখার অন্যতম মূল স্তম্ভ। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, ২০১৩ সালে সিরিয়া থেকে গোপনে বের করে আনা অনেক দেখিয়েছিল যে, সিরিয়ার সরকারি আটক কেন্দ্রে ব্যাপক নির্যাতন, অনাহার, প্রহার এবং রোগের ব্যাপক প্রমাণ আছে। একে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
হালা তাঁর কারাবন্দী জীবনের স্মৃতি থেকে জানান, তাঁরই সঙ্গে বন্দী ছিলেন এক কিশোরী। যিনি বাশার আল-আসাদ বাহিনীর নির্যাতনের কারণে মাত্র ১৬ বছর বয়সেই মারা যান। হালা বলেন, ওই তরুণীকে তার বিয়ের মাত্র দুই মাস পরে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পুলিশের অভিযোগ ছিল, ওই তরুণী, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী, এক বৃদ্ধা এবং দুজন চিকিৎসক বিপ্লবীদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছিল।
বাশার আল-আসাদের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া আরেক বন্দী ৪৯ বছর বয়সী সাফি আল-ইয়াসিন। তিনিও আলেপ্পোর কারাগার থেকেই মুক্তি পেয়েছেন। সাফি বলেন, ‘এটা যেন আমার জন্মদিনের মতো ছিল, যেন আমার জীবনের প্রথম দিন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’
সাফি আল-ইয়াসিন বলেন, গত ২৯ নভেম্বরের আগে কারাগারের কাছাকাছি গোলাগুলির শব্দ শুনে তারা সতর্ক হয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘তারপর হঠাৎ শান্তি নেমে এল এবং আমরা বিজয়ী বিদ্রোহীদের গানের শব্দ শুনতে পেলাম। প্রায় ৫ হাজার বন্দী ছিল। আমরা জানালা-দরজা ভাঙতে শুরু করি বেরোনোর জন্য। এমনকি কারাগারের কর্মকর্তা ও প্রহরীরা সাধারণ পোশাকে আমাদের সঙ্গে বেরিয়ে যায়, যাতে বিদ্রোহীরা ধরতে না পারে।’
সাফি আল-ইয়াসিন বন্দী হওয়ার আগে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার উপকূলীয় শহর বানিয়াসে নৌকা তৈরির কাজ করতেন। তিনি বলেন, ২০১১ সালে সিরিয়ার বিপ্লবের সময়কার এক বিক্ষোভে অংশগ্রহণের অভিযোগে ৩১ বছর সাজা হয়েছিল তাঁর। এরই মধ্যে তিনি সেই সাজার অর্ধেক পার করে ফেলেছেন। বিগত ১৪ বছর ধরে তিনি সিরিয়ার বিস্তৃত কারাগার নেটওয়ার্কের বিভিন্ন স্থানে ‘তীব্র শারীরিক নির্যাতন এবং বছরের পর বছর মানসিক যন্ত্রণার’ শিকার হয়েছেন।
সাফি বিভিন্ন কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল এবং প্রত্যেক কারাগারে আলাদা আলাদা পদ্ধতিতে নির্যাতন চালিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তিনি সাইদিনায়ার কুখ্যাত কারাগারে এক বছর কাটিয়েছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০১৭ সালে এই কারাগারকে ‘মানব কসাইখানা’ বলে আখ্যায়িত করেছিল। এরপর তাঁকে সুইদা এবং পরে আলেপ্পোতে স্থানান্তর করা হয়।
সাইদিনায়ার কারাগারে যে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলেও উল্লেখ করে সাফি আল-ইয়াসিন। তিনি বলেন, ‘আমার দেখা দৃশ্যগুলো মৃত্যুর পরও আমার স্মৃতি থেকে মুছে যাবে না।’ এ সময় তিনি জানান, তাঁর সামনেই এক বৃদ্ধকে নির্যাতন করে সারা শরীর রক্তাক্ত করে ফেলা হয়েছিল। সেই বৃদ্ধ নির্যাতনের ধকল সইতে না পেরে অবশেষে মারা যান।
আল-আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের শাসনের জাঁতাকল থেকে সিরিয়া মুক্তি পাওয়ার পর কারাগার থেকে মুক্তি পান মাহের। তিনি ভয়ে এখনো নিজের পুরো নাম প্রকাশ করতে চান না। ২০১৭ সালে ‘সন্ত্রাসে অর্থায়নের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। এরপর বিনা বিচারে তাঁকে ৭ বছর বন্দী করে রাখা হয়। মাহের বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, কর্তৃপক্ষ যেন আমাকে ভুলে গেছে। যেন আমি মানুষ নই, কেবলই একটি সংখ্যা।’
কারাগারের নির্মম ও ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে মাহের বলেন, ‘প্রতিটি মিনিট যেন মৃত্যুর কাছাকাছি ছিল, নির্যাতনের যে তীব্রতা ও নির্মম পদ্ধতি ছিল তা কোনো পশুও সহ্য করতে পারত না।’ মাহের জানান, তাঁর বন্দীদশায় এর চেয়েও ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হলো, তিনি যখন দামেস্কের কুখ্যাত মেজ্জেহ কারাগারে এক আত্মীয়ের দেখা পান।
মেহের বলেন, ‘কারাগারের বাইরে হঠাৎ একটি বাস এল এবং কয়েকজন বন্দীকে ঠেলে আমার সেলে পাঠান হলো। তাদের মধ্যে একজনকে আমার ভগ্নিপতির মতো দেখাচ্ছিল। আমি প্রথমে দ্বিধায় ছিলাম এবং ভাবছিলাম, এটা তো আয়মান (মাহেরের ভগ্নিপতি) হতে পারে না, সে তো পা হারায়নি!’
মাহের তাঁর সন্দেহ ঘোচাতে সেই বন্দীর কাছে যান এবং দেখতে পান, তাঁর ভগ্নিপতি কেবল পা হারাননি, পাশাপাশি মানসিক ভারসাম্যও হারিয়েছেন। মাহের মূলত একটি ট্যাটু দেখে তাঁর ভগ্নিপতিকে চিনতে পারেন।
মাহেরকে যেসব কারাগারে রাখা হয়েছিল মেজ্জেহ ছিল তার মধ্যে একটি। বছরের পর বছর বিনা বিচারে বন্দী থেকে নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর এক সময় তিনি ভাবতে শুরু করেন, তিনি কখনোই আর কারাগার থেকে বের হতে পারবেন না।
তবে দেরি হলেও মাহের, হালা এবং সাফির জীবনে ভালো কিছু ঘটেছে। তাঁরা মুক্তি পেয়েছেন আল-আসাদ পরিবারের বন্দীশালা থেকে এবং একেবারে অপ্রত্যাশিতভাবেই। মাহের বলেন, ‘কারাগারের কাছাকাছি গোলাগুলির শব্দ শুনে আমরা সবাই আল্লাহু আকবার স্লোগান দিতে শুরু করি। আমরা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেবে।’
মাহের বলেন, ‘আমরা দরজা ভেঙে কারাগার থেকে বেরিয়ে এলাম, বিপ্লবীদের আলিঙ্গন করলাম, সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতায় সিজদাহ করলাম এবং নিরাপদে আমার বোনের বাড়িতে পৌঁছালাম। তিনি তাঁর পরিবার নিয়ে ইদলিবে থাকেন।’
আল-জাজিরা থেকে অনূদিত
আরও পড়ুন:

ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
১২ ঘণ্টা আগে
১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়।
১ দিন আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
২ দিন আগে
তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে সৌদি আরব ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালায়। এই হামলার লক্ষ্য ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত–সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ‘সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল’ (এসটিসি)।
সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের দাবি—হাদরামাউতের বন্দরনগরী মুকাল্লায় এসটিসির জন্য অস্ত্র ও সাঁজোয়া যান নামানো হচ্ছিল, যা তাদের ‘সীমারেখা’ অতিক্রমের সমান। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজগুলোর ট্র্যাকিং সিস্টেম বন্ধ ছিল এবং এসব অস্ত্র তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করছিল।
অন্যদিকে, এসটিসি এই হামলা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, হামলায় হাদরামাউতে মোতায়েন এসটিসির অভিজাত ইউনিটগুলোকে লক্ষ্য করা হয়েছে। যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, রাতের আঁধারে হামলা চালানো হয়েছে যাতে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি না হয়।
এই সংঘর্ষ সৌদি আরব ও ইউএইর মধ্যে বাড়তে থাকা মতবিরোধকে প্রকাশ্যে এনেছে। হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন একসঙ্গে লড়াই করলেও, ইয়েমেনের ভেতরে দুই দেশ ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে আসছে। সৌদি আরবের অভিযোগ, এসটিসিকে আমিরাতের সমর্থন ইয়েমেন ও পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। রিয়াদ একে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবেও উল্লেখ করেছে।
এই উত্তেজনার মধ্যেই ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের প্রেসিডেনশিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিলের প্রধান রাশাদ আল-আলিমি আরব আমিরাতের সঙ্গে যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল করেন এবং দেশটি থেকে আমিরাতের সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি সাময়িক সময়ের জন্য আকাশ ও নৌ অবরোধও ঘোষণা করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ ইয়েমেনে এসটিসির দ্রুত সম্প্রসারণ দেশটিকে কার্যত বিভক্ত করার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। দক্ষিণে গুরুত্বপূর্ণ তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল ও বন্দর, আর উত্তরে রাজধানী সানাসহ হুতিদের শক্ত ঘাঁটি—এই বাস্তবতায় ইয়েমেন আবারও এক গভীর ও বহুমাত্রিক সংকটের দিকে এগোচ্ছে।

ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে সৌদি আরব ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালায়। এই হামলার লক্ষ্য ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত–সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ‘সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল’ (এসটিসি)।
সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের দাবি—হাদরামাউতের বন্দরনগরী মুকাল্লায় এসটিসির জন্য অস্ত্র ও সাঁজোয়া যান নামানো হচ্ছিল, যা তাদের ‘সীমারেখা’ অতিক্রমের সমান। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজগুলোর ট্র্যাকিং সিস্টেম বন্ধ ছিল এবং এসব অস্ত্র তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করছিল।
অন্যদিকে, এসটিসি এই হামলা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, হামলায় হাদরামাউতে মোতায়েন এসটিসির অভিজাত ইউনিটগুলোকে লক্ষ্য করা হয়েছে। যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, রাতের আঁধারে হামলা চালানো হয়েছে যাতে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি না হয়।
এই সংঘর্ষ সৌদি আরব ও ইউএইর মধ্যে বাড়তে থাকা মতবিরোধকে প্রকাশ্যে এনেছে। হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন একসঙ্গে লড়াই করলেও, ইয়েমেনের ভেতরে দুই দেশ ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে আসছে। সৌদি আরবের অভিযোগ, এসটিসিকে আমিরাতের সমর্থন ইয়েমেন ও পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। রিয়াদ একে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবেও উল্লেখ করেছে।
এই উত্তেজনার মধ্যেই ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের প্রেসিডেনশিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিলের প্রধান রাশাদ আল-আলিমি আরব আমিরাতের সঙ্গে যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল করেন এবং দেশটি থেকে আমিরাতের সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি সাময়িক সময়ের জন্য আকাশ ও নৌ অবরোধও ঘোষণা করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ ইয়েমেনে এসটিসির দ্রুত সম্প্রসারণ দেশটিকে কার্যত বিভক্ত করার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। দক্ষিণে গুরুত্বপূর্ণ তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল ও বন্দর, আর উত্তরে রাজধানী সানাসহ হুতিদের শক্ত ঘাঁটি—এই বাস্তবতায় ইয়েমেন আবারও এক গভীর ও বহুমাত্রিক সংকটের দিকে এগোচ্ছে।

আলেপ্পোর যে কারাগার থেকে হালাকে মুক্তি দেয় এইচটিএস, সেটি বাশার আল-আসাদের সরকারের পরিচালিত কয়েকটি কারাগারের একটি মাত্র। মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুযায়ী, হালাসহ আল-আসাদের কারাগারে অন্তত ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৪ জন বন্দী ছিলেন
০৯ ডিসেম্বর ২০২৪
১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়।
১ দিন আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
২ দিন আগে
তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়। ল্যান্ডলাইন ফোনে ১ হাজার ৫৫ জন আমেরিকানের সঙ্গে কথা বলে জানতে চাওয়া হয়—দূর ভবিষ্যৎ ‘২০২৫ সাল’ কেমন হবে বলে তাঁরা মনে করেন।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, ২০২৫ সাল নিয়ে সে সময় মার্কিনরা যে ভবিষ্যদ্বাণীগুলো করেছিল, সেগুলো সংরক্ষিত আছে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রোপার সেন্টারের জরিপ আর্কাইভে। ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসে এখন দেখা যাচ্ছে—সেই সব অনুমানের কোনোটা মিলেছে, আর কোনোটা মেলেনি।
এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেই সময়ের অনেক পূর্বাভাসই ছিল বিস্ময়করভাবে সঠিক। অধিকাংশ আমেরিকান তখনই ধারণা করেছিলেন, আগামী ২৭ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে একজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন, সমকামী বিবাহ বৈধ ও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে এবং একটি ‘মারাত্মক নতুন রোগ’ বিশ্বকে নাড়িয়ে দেবে। বাস্তবে বারাক ওবামার প্রেসিডেন্ট হওয়া, সমকামী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি এবং করোনা মহামারি সেই অনুমানগুলোকে সত্য প্রমাণ করেছে।
একইভাবে অনেকেই সেই সময় সঠিকভাবে ধারণা করেছিলেন, সাধারণ মানুষের জন্য মহাকাশ ভ্রমণ খুব সাধারণ বিষয় হয়ে উঠবে না এবং ভিনগ্রহের প্রাণীর সঙ্গে মানুষের সরাসরি যোগাযোগ ঘটবে না।
তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনি। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেছিলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একজন নারী প্রেসিডেন্ট পাবে—যা এখনো ঘটেনি। অর্ধেকের বেশি মানুষ আশা করেছিলেন ক্যানসারের নিরাময় আবিষ্কৃত হবে এবং ৬১ শতাংশ মনে করেছিলেন মানুষ নিয়মিতভাবে ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচবে। বাস্তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে অগ্রগতি হলেও এসব প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ হয়নি।
জরিপে দেশের সামগ্রিক দিকনির্দেশনা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। সেখানে ফুটে উঠেছিল প্রবল হতাশা। ৭০ শতাংশ মনে করেছিলেন ধনীদের জীবনমান উন্নত হবে, কিন্তু মধ্যবিত্তদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভক্ত মতামত ছিল। দরিদ্রদের জীবন আরও কঠিন হবে—এমনটাই ভাবতেন বেশির ভাগ। প্রায় ৮০ শতাংশ ধারণা করেছিলেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কমবে, আর ৫৭ শতাংশ মনে করেছিলেন ব্যক্তিগত স্বাধীনতাও হ্রাস পাবে। অপরাধ বৃদ্ধি, পরিবেশের অবনতি এবং নৈতিক মূল্যবোধের পতনের আশঙ্কাও ছিল প্রবল। ৭১ শতাংশ মত দিয়েছিলেন, সন্তানকে ভালো মানুষ হিসেবে বড় করা আরও কঠিন হবে।
তবে কিছু আশাবাদী দিকও ছিল। অধিকাংশ আমেরিকান বিশ্বাস করতেন, জাতিগত সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং চিকিৎসাসেবা আরও সহজলভ্য হবে—যদিও তা হবে ব্যয়বহুল।
গ্যালাপ আজও জরিপ চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও এখন ল্যান্ডলাইনের ওপর নির্ভরতা কম। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে জনমতও নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। ১৯৯৮ সালে যেখানে প্রায় ৬০ শতাংশ আমেরিকান দেশের গতিপথ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন, বর্তমানে সেই হার নেমে এসেছে মাত্র ২৪ শতাংশে।

১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়। ল্যান্ডলাইন ফোনে ১ হাজার ৫৫ জন আমেরিকানের সঙ্গে কথা বলে জানতে চাওয়া হয়—দূর ভবিষ্যৎ ‘২০২৫ সাল’ কেমন হবে বলে তাঁরা মনে করেন।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, ২০২৫ সাল নিয়ে সে সময় মার্কিনরা যে ভবিষ্যদ্বাণীগুলো করেছিল, সেগুলো সংরক্ষিত আছে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রোপার সেন্টারের জরিপ আর্কাইভে। ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসে এখন দেখা যাচ্ছে—সেই সব অনুমানের কোনোটা মিলেছে, আর কোনোটা মেলেনি।
এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেই সময়ের অনেক পূর্বাভাসই ছিল বিস্ময়করভাবে সঠিক। অধিকাংশ আমেরিকান তখনই ধারণা করেছিলেন, আগামী ২৭ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে একজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন, সমকামী বিবাহ বৈধ ও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে এবং একটি ‘মারাত্মক নতুন রোগ’ বিশ্বকে নাড়িয়ে দেবে। বাস্তবে বারাক ওবামার প্রেসিডেন্ট হওয়া, সমকামী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি এবং করোনা মহামারি সেই অনুমানগুলোকে সত্য প্রমাণ করেছে।
একইভাবে অনেকেই সেই সময় সঠিকভাবে ধারণা করেছিলেন, সাধারণ মানুষের জন্য মহাকাশ ভ্রমণ খুব সাধারণ বিষয় হয়ে উঠবে না এবং ভিনগ্রহের প্রাণীর সঙ্গে মানুষের সরাসরি যোগাযোগ ঘটবে না।
তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনি। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেছিলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একজন নারী প্রেসিডেন্ট পাবে—যা এখনো ঘটেনি। অর্ধেকের বেশি মানুষ আশা করেছিলেন ক্যানসারের নিরাময় আবিষ্কৃত হবে এবং ৬১ শতাংশ মনে করেছিলেন মানুষ নিয়মিতভাবে ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচবে। বাস্তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে অগ্রগতি হলেও এসব প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ হয়নি।
জরিপে দেশের সামগ্রিক দিকনির্দেশনা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। সেখানে ফুটে উঠেছিল প্রবল হতাশা। ৭০ শতাংশ মনে করেছিলেন ধনীদের জীবনমান উন্নত হবে, কিন্তু মধ্যবিত্তদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভক্ত মতামত ছিল। দরিদ্রদের জীবন আরও কঠিন হবে—এমনটাই ভাবতেন বেশির ভাগ। প্রায় ৮০ শতাংশ ধারণা করেছিলেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কমবে, আর ৫৭ শতাংশ মনে করেছিলেন ব্যক্তিগত স্বাধীনতাও হ্রাস পাবে। অপরাধ বৃদ্ধি, পরিবেশের অবনতি এবং নৈতিক মূল্যবোধের পতনের আশঙ্কাও ছিল প্রবল। ৭১ শতাংশ মত দিয়েছিলেন, সন্তানকে ভালো মানুষ হিসেবে বড় করা আরও কঠিন হবে।
তবে কিছু আশাবাদী দিকও ছিল। অধিকাংশ আমেরিকান বিশ্বাস করতেন, জাতিগত সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং চিকিৎসাসেবা আরও সহজলভ্য হবে—যদিও তা হবে ব্যয়বহুল।
গ্যালাপ আজও জরিপ চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও এখন ল্যান্ডলাইনের ওপর নির্ভরতা কম। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে জনমতও নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। ১৯৯৮ সালে যেখানে প্রায় ৬০ শতাংশ আমেরিকান দেশের গতিপথ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন, বর্তমানে সেই হার নেমে এসেছে মাত্র ২৪ শতাংশে।

আলেপ্পোর যে কারাগার থেকে হালাকে মুক্তি দেয় এইচটিএস, সেটি বাশার আল-আসাদের সরকারের পরিচালিত কয়েকটি কারাগারের একটি মাত্র। মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুযায়ী, হালাসহ আল-আসাদের কারাগারে অন্তত ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৪ জন বন্দী ছিলেন
০৯ ডিসেম্বর ২০২৪
ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
১২ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
২ দিন আগে
তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই হামলার কারণে চলমান শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার অবস্থানের ‘পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনা’ করা হতে পারে। তবে মস্কো এখনই আলোচনা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে না।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন সের্গেই লাভরভের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ৯১টি দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। রুশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সবকটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে এতে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।
লাভরভ হুমকি দিয়ে বলেন, ইউক্রেনের এমন হঠকারী কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে। রুশ সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে পাল্টা হামলার জন্য লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে ফেলেছে। তবে হামলার সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন নোভগোরোদের ওই বাসভবনে ছিলেন কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
ফ্লোরিডায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে ইউরোপে ফেরার পথে জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আবারও ভয়ংকর সব মিথ্যা বিবৃতি দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক অগ্রগতির সাফল্য নষ্ট করতেই এমন নাটক সাজানো হচ্ছে। তারা মূলত কিয়েভের সরকারি ভবনগুলোতে বড় ধরনের হামলার ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য এই অজুহাত দিচ্ছে।’
জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রায় ৯০ শতাংশ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, যা রাশিয়াকে বিচলিত করে তুলেছে।
এদিকে ক্রেমলিন বলছে, আজ প্রেসিডেন্ট পুতিন টেলিফোনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই ড্রোন হামলার বিষয়টি জানিয়েছেন। পুতিন ট্রাম্পকে বলেছেন, এই হামলার পর রাশিয়া তাদের শান্তি আলোচনার শর্তগুলো পুনরায় খতিয়ে দেখবে।
রুশ গণমাধ্যমগুলো ক্রেমলিনের সহকারী ইউরি উশাকভের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই খবর শুনে ট্রাম্প ‘বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ’ হয়েছেন। তবে হোয়াইট হাউস থেকে এই ফোনালাপকে কেবল ‘ইতিবাচক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই হামলার কারণে চলমান শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার অবস্থানের ‘পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনা’ করা হতে পারে। তবে মস্কো এখনই আলোচনা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে না।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন সের্গেই লাভরভের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ৯১টি দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। রুশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সবকটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে এতে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।
লাভরভ হুমকি দিয়ে বলেন, ইউক্রেনের এমন হঠকারী কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে। রুশ সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে পাল্টা হামলার জন্য লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে ফেলেছে। তবে হামলার সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন নোভগোরোদের ওই বাসভবনে ছিলেন কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
ফ্লোরিডায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে ইউরোপে ফেরার পথে জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আবারও ভয়ংকর সব মিথ্যা বিবৃতি দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক অগ্রগতির সাফল্য নষ্ট করতেই এমন নাটক সাজানো হচ্ছে। তারা মূলত কিয়েভের সরকারি ভবনগুলোতে বড় ধরনের হামলার ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য এই অজুহাত দিচ্ছে।’
জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রায় ৯০ শতাংশ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, যা রাশিয়াকে বিচলিত করে তুলেছে।
এদিকে ক্রেমলিন বলছে, আজ প্রেসিডেন্ট পুতিন টেলিফোনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই ড্রোন হামলার বিষয়টি জানিয়েছেন। পুতিন ট্রাম্পকে বলেছেন, এই হামলার পর রাশিয়া তাদের শান্তি আলোচনার শর্তগুলো পুনরায় খতিয়ে দেখবে।
রুশ গণমাধ্যমগুলো ক্রেমলিনের সহকারী ইউরি উশাকভের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই খবর শুনে ট্রাম্প ‘বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ’ হয়েছেন। তবে হোয়াইট হাউস থেকে এই ফোনালাপকে কেবল ‘ইতিবাচক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

আলেপ্পোর যে কারাগার থেকে হালাকে মুক্তি দেয় এইচটিএস, সেটি বাশার আল-আসাদের সরকারের পরিচালিত কয়েকটি কারাগারের একটি মাত্র। মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুযায়ী, হালাসহ আল-আসাদের কারাগারে অন্তত ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৪ জন বন্দী ছিলেন
০৯ ডিসেম্বর ২০২৪
ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
১২ ঘণ্টা আগে
১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়।
১ দিন আগে
তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি এখন পর্যন্ত তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে চীনের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক সামরিক প্রদর্শন।
চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে—মহড়ায় স্থল ও সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুর ওপর সিমুলেটেড হামলা, পাশাপাশি তাইওয়ানের প্রধান বন্দরগুলো অবরোধ করার অনুশীলন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করতে বা চাপের মুখে ফেলতে এই ধরনের অবরোধ ব্যবহৃত হতে পারে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকেরা। সরাসরি গোলাবর্ষণের মহড়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলবে এবং আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার তাইওয়ানের আরও কাছাকাছি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।
এই মহড়ার ফলে বেসামরিক বিমান ও নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন তাদের ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে এবং তাইওয়ানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিকল্প আকাশপথ ব্যবহারের প্রস্তুতি নিয়েছে। চীনা সামরিক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই মহড়া ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী শক্তি’ ও ‘বিদেশি হস্তক্ষেপের’ বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি তাইওয়ানের কাছে ১১.১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্যাকেজ। এতে রয়েছে ৮২টি হিমার্স রকেট লঞ্চার, ৪২০টি দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র, স্বচালিত হাউইটজার, উন্নত ড্রোন ব্যবস্থা ও অ্যান্টি-আর্মার অস্ত্র। বেইজিং এই অস্ত্রচুক্তিকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এতে তাইওয়ান একটি ‘বারুদের স্তূপে’ পরিণত হচ্ছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মহড়া চলাকালে তাদের দ্বীপভূমির চারপাশে ৮৯টি চীনা সামরিক বিমান, ১৪টি নৌজাহাজ ও ১৪টি কোস্ট গার্ড জাহাজ শনাক্ত করা হয়েছে। কিছু চীনা জাহাজ তাইওয়ানের উপকূলের খুব কাছাকাছি অবস্থানে এসে চোখ রাঙাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে তাইওয়ান।
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, মহড়ার মূল লক্ষ্য তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর—উত্তরের কিলুং ও দক্ষিণের কাওশিয়ুং বন্ধ করে দেওয়ার সক্ষমতা পরীক্ষা। চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করলেও তাইওয়ান বলছে, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার শুধু সেখানকার জনগণেরই আছে।

তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি এখন পর্যন্ত তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে চীনের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক সামরিক প্রদর্শন।
চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে—মহড়ায় স্থল ও সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুর ওপর সিমুলেটেড হামলা, পাশাপাশি তাইওয়ানের প্রধান বন্দরগুলো অবরোধ করার অনুশীলন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করতে বা চাপের মুখে ফেলতে এই ধরনের অবরোধ ব্যবহৃত হতে পারে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকেরা। সরাসরি গোলাবর্ষণের মহড়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলবে এবং আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার তাইওয়ানের আরও কাছাকাছি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।
এই মহড়ার ফলে বেসামরিক বিমান ও নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন তাদের ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে এবং তাইওয়ানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিকল্প আকাশপথ ব্যবহারের প্রস্তুতি নিয়েছে। চীনা সামরিক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই মহড়া ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী শক্তি’ ও ‘বিদেশি হস্তক্ষেপের’ বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি তাইওয়ানের কাছে ১১.১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্যাকেজ। এতে রয়েছে ৮২টি হিমার্স রকেট লঞ্চার, ৪২০টি দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র, স্বচালিত হাউইটজার, উন্নত ড্রোন ব্যবস্থা ও অ্যান্টি-আর্মার অস্ত্র। বেইজিং এই অস্ত্রচুক্তিকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এতে তাইওয়ান একটি ‘বারুদের স্তূপে’ পরিণত হচ্ছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মহড়া চলাকালে তাদের দ্বীপভূমির চারপাশে ৮৯টি চীনা সামরিক বিমান, ১৪টি নৌজাহাজ ও ১৪টি কোস্ট গার্ড জাহাজ শনাক্ত করা হয়েছে। কিছু চীনা জাহাজ তাইওয়ানের উপকূলের খুব কাছাকাছি অবস্থানে এসে চোখ রাঙাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে তাইওয়ান।
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, মহড়ার মূল লক্ষ্য তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর—উত্তরের কিলুং ও দক্ষিণের কাওশিয়ুং বন্ধ করে দেওয়ার সক্ষমতা পরীক্ষা। চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করলেও তাইওয়ান বলছে, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার শুধু সেখানকার জনগণেরই আছে।

আলেপ্পোর যে কারাগার থেকে হালাকে মুক্তি দেয় এইচটিএস, সেটি বাশার আল-আসাদের সরকারের পরিচালিত কয়েকটি কারাগারের একটি মাত্র। মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুযায়ী, হালাসহ আল-আসাদের কারাগারে অন্তত ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৪ জন বন্দী ছিলেন
০৯ ডিসেম্বর ২০২৪
ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
১২ ঘণ্টা আগে
১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়।
১ দিন আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
২ দিন আগে