Ajker Patrika

আয়তনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০ দেশ

আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯: ২৭
আয়তনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০ দেশ

জাতিসংঘের হিসাবে গোটা বিশ্বে দেশের সংখ্যা এখন ১৯৫। এর মধ্যে ১৯৩টি জাতিসংঘের সদস্য। আর এই দেশগুলোর মধ্যে কোনো কোনোটি আয়তনে একেবারেই ছোট। আবার এমনও দেশ আছে, যার পেটের মধ্যে অনায়াসে জায়গা হয়ে যাবে ছোট ৩০-৪০টি দেশের। বিশাল আয়তনের দেশগুলোর মধ্যে তাই নানা ধরনের ভূ-প্রকৃতির সমাবেশ ঘটেছে। আজ আমরা পরিচয় করিয়ে দেব আয়তনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০টি দেশের সঙ্গে। 

বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়ার আয়তন শুনলে চোখ কপালে উঠবে আপনার, সেটা ১ কোটি ৭০ লাখ ৯৮ হাজার ২৪২ বর্গকিলোমিটার। উত্তর এশিয়ার বড় একটি অংশের পাশাপাশি পূর্ব ইউরোপেও বিস্তৃত বিশাল দেশটি। রাজধানী মস্কো ইউরোপের বড় শহরগুলোর একটি। দেশটির মুদ্রা রাশিয়ান রুবল। শিল্প-সাহিত্য ও স্থাপত্যে সমৃদ্ধ ঐতিহ্য আছে রাশিয়ার।

আয়তনে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ কানাডার প্রায় দ্বিগুণ এটি। বিশ্বের রাজনীতিতে বড় প্রভাব আছে দেশটির। গোটা বিশ্বের মোটা ভূমির ১১ শতাংশ পড়েছে রাশিয়ায়। তবে প্রচণ্ড শীতল জলবায়ুর কারণে দেশটির ৬০ শতাংশ এলাকা বসবাসের অনুপযোগী। পৃথিবীতে মানুষের বসবাস আছে এমন সবচেয়ে ঠান্ডা দুই জায়গা ওয়ামিয়াকোন এবং ভেরখোইয়ান্স্কের অবস্থান রাশিয়াতেই। 

৯৯ লাখ ৮৪ হাজার ৬৭৪ বর্গকিলোমিটারের কানাডা আয়তনে বিশ্বে দ্বিতীয় এবং উত্তর আমেরিকায় প্রথম। প্রচুর তেল, প্রাকৃতিক গ্যাসসহ নানা ধরনের খনিজের উপস্থিতির কারণে বেশ ধনী এক দেশ এটি। এখানে স্বাদু পানির উৎসেরও অভাব নেই। এত বিশাল দেশ হলেও কানাডার জনসংখ্যা অনেকই কম, ৪ কোটির নিচে।

নায়াগ্রা জলপ্রপাত, ভালুক, নেকড়ে এবং ক্যুগার বা পার্বত্য সিংহে ভরপুর বিশাল সব জঙ্গলের জন্য আলাদা নাম আছে কানাডার। বিশ্বের দীর্ঘতম উপকূলরেখা কানাডার। অবিশ্বাস্য হলেও ছোট-বড় মিলিয়ে ২০ লাখ হ্রদ আছে কানাডায়। 

৯৮ লাখ ৩৩ হাজার ৫১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের তৃতীয় এবং উত্তর আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। যুক্তরাজ্য থেকে ১৭৭৬ সালে স্বাধীনতা লাভ করে বর্তমানে বিশ্বের এই অন্যতম পরাশক্তি। মরু এলাকা, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল এবং প্রচণ্ড শীতল এলাকা—সবই পাবেন বৈচিত্র্যময় এই ভূভাগে। এই বৈচিত্র্য প্রতিফলিত হয় শিল্প, সংগীত, সাহিত্য এবং উৎসবেও। দেশটির মুদ্রা ইউএস ডলার

রকি পর্বতমালা, ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্ক, ডেথ ভ্যালি, গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মতো বিখ্যাত প্রাকৃতিক বিস্ময়ের পাশাপাশি মানুষের তৈরি নানা স্থাপনার জন্যও বিখ্যাত যুক্তরাষ্ট্র। 

৯৫ লাখ ৯৬ হাজার ৯৬০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের চীনের অবস্থান বিশ্বে চতুর্থ। এদিকে বিশ্বের জনবহুল দেশের তালিকায় সম্প্রতি তাদের টপকে শীর্ষে উঠে গেছে ভারত। 

তিব্বতের মালভূমি, গোবি মরুভূমি, ইয়াংজি এবং ইয়েলো রিভারের উপত্যকার উর্বর সমভূমি এবং হিমালয়ের মতো পর্বতমালা মিলিয়ে চীন তার বৈচিত্র্যময় ভূপ্রকৃতির জন্য বিখ্যাত। বহু পুরোনো ঐতিহ্যের অধিকারী দেশটি গ্রেট ওয়াল বা চীনের প্রাচীর এবং জায়ান্ট পান্ডার জন্যও পরিচিত। অর্থনৈতিকভাবেও দেশটি শক্তিশালী। 

ব্রাজিল আয়তনের দিক থেকে বিশ্বে পঞ্চম এবং দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় দেশ। ৮৫ লাখ ১৫ হাজার ৭৭০ বর্গকিলোমিটারের দেশটি পৃথিবীর বৃহত্তম উষ্ণমণ্ডলীয় অরণ্যের জন্য বিখ্যাত। নানা জাতি-গোষ্ঠীর মানুষের বসবাসের ছাপ ফুটে ওঠে এখানকার সংগীত, নাচ, উৎসব ও সাহিত্যে। 

বিশ্ব ঐতিহ্য ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার এখানকার বড় আকর্ষণ। ব্রাজিল ফুটবল দলের ভক্ত ছড়িয়ে আছে বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বে। 

৭৭ লাখ ৪১ হাজার ২২০ বর্গকিলোমিটারের দেশটি আয়তনে বিশ্বে ষষ্ঠ। এটিই একমাত্র দেশ, যার নামে আস্ত একটি মহাদেশই আছে।

অস্ট্রেলিয়া তার স্বতন্ত্র ও বৈচিত্র্যময় ভূ-প্রকৃতির জন্য পরিচিত। অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের সংস্কৃতি, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা এবং ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে অভিবাসনের কারণে বহু সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে এখানে; যা দেশটির শিল্পকলা, রন্ধনপ্রণালি, উৎসব ও খেলাধুলায় প্রভাব ফেলেছে। ক্যাঙারুর বাসস্থান হিসেবে আলাদা নাম আছে দেশটির। তেমনি অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দলও পরিচিত বিশ্বজুড়ে। 

বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ ভারত আয়তনে আছে সাতে। ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ২৬৩ বর্গকিলোমিটারের দেশটির অবস্থান দক্ষিণ-এশিয়ায়। আকাশছোঁয়া হিমালয় পর্বতমালা, গঙ্গা নদীর ধারে উর্বর সমভূমি, পশ্চিম ঘাটের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বৃষ্টিবন এবং আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী উপকূলীয় অঞ্চল মিলিয়ে বৈচিত্র্যময় ভূ-প্রকৃতি দেশটির বড় আকর্ষণ। হাজারো বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের চিহ্ন বুকে ধারণ করা ভারত নানা জাতি-গোষ্ঠীর বসবাসের জন্য বিখ্যাত।

পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বাঘ ও এশীয় হাতির বাসস্থানও ভারতে। তেমনি গন্ডার, কৃষ্ণসার মৃগ, ঘড়িয়াল, লাল পান্ডাসহ নানা ধরনের পশু-পাখির দেখা মেলে দেশটির অরণ্যে। 

২৭ লাখ ৮০ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের আর্জেন্টিনা দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। গোটা বিশ্বে এর অবস্থান অষ্টম। ১৮১৬ সালে স্পেন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে দেশটি। মুদ্রা আর্জেন্টাইন পেসো।

সমৃদ্ধ শিল্প-সাহিত্য, স্থাপত্য, সংগীত ও রন্ধনপ্রণালির জন্য দেশটির আলাদা নাম আছে। রাজধানী বুয়েনস এইরেস ইউরোপীয় ঘরানার স্থাপত্য, থিয়েটার, জাদুঘর ও বর্ণিল নাইট লাইফের জন্য বিখ্যাত। আর্জেন্টিনাকে সারা বিশ্বে পরিচিত করতে বড় ভূমিকা রেখেছে ফুটবল এবং কিংবদন্তি দুই খেলোয়াড় দিয়াগো ম্যারাডোনা এবং লিওনেল মেসি

২৭ লাখ ২৪ হাজার ৯০০ বর্গকিলোমিটারের কাজাখস্তান আয়তনে মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম দেশ। এত বিশাল দেশ, কিন্তু জনসংখ্যা ২ কোটিরও কম। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাগ হয়ে যাওয়ার পর ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা পায় দেশটি।

চারপাশে ভূ-ভাগ দিয়ে ঘেরা দেশকে বলা হয় ল্যান্ডলকড দেশ। আর কাজাখস্তান বিশ্বের সবচেয়ে বড় ল্যান্ডলকড কান্ট্রি। বিস্তীর্ণ স্তেপস বা সমতল ঘাসসমৃদ্ধ এলাকা, মরুভূমি এবং পর্বতমালা মিলিয়ে গড়ে উঠেছে দেশটি। নানা জাতি-গোষ্ঠীর মানুষের বসবাস এখানে। এদের মধ্যে কাজাখরা ঐতিহ্যগতভাবে যাযাবর। 

প্রাকৃতিক সম্পদেও সমৃদ্ধ দেশটিতে তেল, গ্যাসসহ নানা খনিজ পদার্থের খনি রয়েছে। 

আয়তনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশের তালিকায় ১০ নম্বর স্থানটি আফ্রিকার আলজেরিয়ার। ২৩ লাখ ৮১ হাজার ৭৪০ বর্গকিলোমিটারের দেশটি ১৯৬২ সালে স্বাধীনতা লাভ করে ফ্রান্স থেকে।

আলজেরিয়ার মোট আয়তনের বিশাল একটি অংশজুড়ে বিখ্যাত সাহারা মরুভূমি। সাংস্কৃতিকভাবে আলজেরিয়ার একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। বারবার আরব ও ফরাসি ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। আর এর প্রভাব পড়েছে এখানকার স্থাপত্য, সাহিত্য, সংগীত ও খাবার-দাবারে। 

সূত্র: বিবিসি সায়েন্স ফোকাস ম্যাগাজিন, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইন্দোনেশিয়ায় নার্সিং হোমে আগুনে ১৬ জনের মৃত্যু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইন্দোনেশিয়ায় একটি নার্সিং হোমে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: সংগৃহীত
ইন্দোনেশিয়ায় একটি নার্সিং হোমে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ায় একটি নার্সিং হোমে আগুন লেগে ১৬ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার এএফপির প্রতিবেদনে স্থানীয় এক কর্মকর্তার বরাতে জানানো হয়, উত্তর সুলাওয়েসি প্রদেশের রাজধানী মানাদোর একটি নার্সিং হোমে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

শহরটির ফায়ার অ্যান্ড রেস্কিউ এজেন্সির প্রধান জিমি রোটিনসুলু জানান, নার্সিং হোমটিতে স্থানীয় সময় রোববার রাত ৮টা ৩১ মিনিটে আগুন লাগার খবর পান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং ৩ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।

জিমি জানান, ভুক্তভোগীদের অনেক দেহ তাঁদের ঘরের ভেতরেই পাওয়া গেছে। তিনি আরও যোগ করেন, সন্ধ্যায় যখন আগুন ছড়িয়ে পড়ে তখন বয়স্ক বাসিন্দাদের অনেকেই সম্ভবত তাদের নিজ নিজ ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।

কর্তৃপক্ষ ১২ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে এবং তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় সম্প্রচার মাধ্যম মেট্রো টিভি-তে প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, আগুন নার্সিং হোমটিকে পুরোপুরি গ্রাস করে নিয়েছে এবং স্থানীয়রা এক বৃদ্ধ ব্যক্তিকে সরিয়ে নিতে সাহায্য করছেন।

১৭ হাজারেরও বেশি দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় এই দ্বীপরাষ্ট্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা খুব একটা বিরল নয়। চলতি মাসেই ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় একটি সাততলা অফিস ভবনে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২২ জন নিহত হন। ২০২৩ সালে দেশটির পূর্বাঞ্চলে একটি নিকেল প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় বিস্ফোরণে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাঁজা চাষে লাইসেন্স ফি কমাল পাকিস্তান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গাঁজা চাষের লাইসেন্স ফি ৬ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করা হয়েছে। ছবি: এএফপি
গাঁজা চাষের লাইসেন্স ফি ৬ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করা হয়েছে। ছবি: এএফপি

গাঁজা চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের লাইসেন্স ফি কমানোর অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তানের সরকার। দ্য ডনের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, খাইবার পাখতুনখোয়া এলাকায় গাঁজা চাষের এই ফি কমাচ্ছে ক্যানাবিস রেগুলেটরি অথরিটি (সিআরএ)।

এছাড়া, শিল্পজাত হেম্প ও হেম্প বীজের তেলের ওপর থেকে আবগারি শুল্ক তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ফুল-স্পেকট্রাম ক্যানাবিডিওল (CBD) ও টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল (THC)-এর ওপর আবগারি শুল্ক বাড়ানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সরকারি নথি বরাতে দ্য ডন জানিয়েছে, সিআরএ গাঁজা চাষের লাইসেন্স ফি ৬ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করেছে এবং গাঁজা প্রক্রিয়াকরণের লাইসেন্স ফি ১৫ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ১০ লাখ রুপি নির্ধারণ করেছে।

এছাড়া হেম্প প্রক্রিয়াকরণের লাইসেন্স ফি ৭ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ফুল-স্পেকট্রাম ক্যানাবিডিওল ও টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনলের ওপর আবগারি শুল্ক প্রতি কেজিতে ৩ হাজার রুপি থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজার রুপি করা হয়েছে।

নথিতে আরও বলা হয়েছে, ২২ ডিসেম্বর আবগারি, কর ও মাদকদ্রব্য বিষয়ক মন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে আরও বলা হয়, ওই বৈঠকটি ৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপ-কমিটির বৈঠকের ধারাবাহিকতা ছিল, যেখানে এসব পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছিল।

নথি অনুযায়ী, সিআরএ-এর বৈঠকে খাইবার পাখতুনখোয়ার জন্য প্রস্তাবিত হেম্প মডেল কমিটির সামনে উপস্থাপন করা হয়। এ সময় আবগারি, কর ও মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সচিব এবং স্বাস্থ্য সচিব জোর দিয়ে বলেন, ব্যবসা পরিচালনাকে সহজ করা এবং বিনিয়োগকারীদের সুবিধা দিতে প্রস্তাবিত মডেলটি আরও সরল করা প্রয়োজন।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, খাইবার পাখতুনখোয়ায় স্বনামধন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পরীক্ষামূলকভাবে হেম্প চাষের লাইসেন্স দেওয়া হবে এবং এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান কৃষকদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করবে।

হেম্প চাষ ও প্রক্রিয়াকরণের লাইসেন্সের আবেদন ফরম, টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল (টিএইচসি) নমুনা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ ফরম, পর্যায়ক্রমিক পরিদর্শন ফরমসহ অন্যান্য বাধ্যতামূলক রেজিস্টার অনুমোদন করেছে সিআরএ।

শিল্প ও কৃষকদের যৌথ উদ্যোগে বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্ট (বিওআই) এবং শিল্প বিভাগ সহায়তা প্রদানের বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। কৃষকদের নিবন্ধন ব্যক্তিগত বা সমবায় কোম্পানি হিসেবে উভয় ক্ষেত্রেই ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে।

হেম্প বীজ আমদানি ও এর শংসাপত্রের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সপ্রাপ্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ওপর রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত গাঁজা চাষ ও প্রক্রিয়াকরণ আপাতত স্থগিত রাখা হবে এবং ওষুধ শিল্পের প্রয়োজনীয় গাঁজা নিয়ন্ত্রণ ও এর পণ্য ব্যবস্থাপনা পাকিস্তানের ড্রাগ রেগুলেটরি অথরিটির (ডিআরএপি) চাহিদা ও মানদণ্ডের আলোকে বিবেচনা করা হবে।

নথিতে আরও বলা হয়, ক্যানাবিস মডেল প্রণয়ন এবং ক্যানাবিস সংক্রান্ত বিধিবিধান পুনর্বিবেচনার জন্য ১৫ দিনের মধ্যে একটি উপকমিটি গঠন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে উত্তেজনা: শিখ ও হিন্দু বিক্ষোভকারীদের মধ্যে হাতাহাতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিক্ষোভকারী শিখদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে ওসমান হাদির ছবিও দেখা যায়। ছবি: এক্স
বিক্ষোভকারী শিখদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে ওসমান হাদির ছবিও দেখা যায়। ছবি: এক্স

লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে গত শনিবার একটি বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বেশ উত্তেজনা তৈরি হয়। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কথিত নির্যাতনের প্রতিবাদে আয়োজিত এই সমাবেশে স্বাধীন খালিস্তানপন্থী শিখ অধিকার কর্মী এবং একদল হিন্দু বিক্ষোভকারী মুখোমুখি হলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্রিটিশ পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আয়োজকদের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি দৈনিক ডন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আয়োজিত সমাবেশে খালিস্তান রেফারেন্ডাম অভিযানের সমন্বয়ক পরমজিৎ সিং পাম্মা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডে হরদীপ সিং নিজ্জার এবং শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি দেখা গেছে। সমাবেশের একপর্যায়ে ভারতীয় এক হিন্দু বিক্ষোভকারীর সঙ্গে পাম্মার কথা-কাটাকাটি এবং পরে হাতাহাতি শুরু হয়। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে সেখানে দায়িত্বরত মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেন এবং দুই পক্ষকে আলাদা করে দেন।

বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রবেশপথের কাছে একটি কর্ডন তৈরি করে তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যান। এ সময় তাঁরা ভারত সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দেন। বিশেষ করে হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যা এবং অন্যান্য শিখ নেতাদের খুনের পেছনে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাত রয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।

উল্লেখ্য, ভারত সরকার পরমজিৎ সিং পাম্মাকে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড টেররিস্ট’ বা অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করলেও পাম্মা ও তাঁর সমর্থকেরা এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।

গত বছরের জুনে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার খুন হওয়ার পর থেকে ভারত ও কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চরম আকার ধারণ করেছে। একইভাবে, যুক্তরাষ্ট্রে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার ষড়যন্ত্রের সঙ্গেও ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে মার্কিন বিচার বিভাগ।

লন্ডনের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সেই বৈশ্বিক উত্তেজনার ছায়া দেখা গেছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, কোনো বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি এবং পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়নি।

খালিস্তান আন্দোলনের শিকড় ১৯৪৭ সালের ভারত ভাগ এবং পাঞ্জাব বিভাজনের সময় পর্যন্ত বিস্তৃত। স্বাধীন শিখ রাষ্ট্রের দাবিতে এই আন্দোলন দশকের পর দশক ধরে চলে আসছে। এই আন্দোলন বর্তমানে বৈশ্বিক রাজনীতিতে ভারত-কানাডা এবং ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি সংবেদনশীল ইস্যু হিসেবে দাঁড়িয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসরায়েল কেন প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসরায়েলের স্বীকৃতির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে সোমালিল্যান্ড। ছবি: এএফপি
ইসরায়েলের স্বীকৃতির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে সোমালিল্যান্ড। ছবি: এএফপি

ইসরায়েল কেন সোমালিয়া থেকে স্বাধীন হতে চাওয়া সোমালিল্যান্ডকে প্রথম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিল—এই প্রশ্ন ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। আফ্রিকার হর্ন অঞ্চলের স্বঘোষিত স্বাধীন রাষ্ট্র সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে ইসরায়েল শুধু একটি কূটনৈতিক সিদ্ধান্তই নেয়নি, বরং মধ্যপ্রাচ্য ও লোহিত সাগর ঘিরে চলমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই স্বীকৃতির পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক—এই তিনটি প্রধান কারণ। সোমালিল্যান্ডের অবস্থান অত্যন্ত কৌশলগত। এটি এডেন উপসাগরের তীরে অবস্থিত এবং ইয়েমেনের খুব কাছেই, যেখানে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা সক্রিয়। চলতি বছরে হুতি ও ইসরায়েলের মধ্যে একাধিকবার হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের প্রতিবাদে হুতিরা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালায়। জবাবে ইয়েমেনের সানা ও হোদেইদায় হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় হামলা চালায় ইসরায়েল।

এই প্রেক্ষাপটে ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটের গবেষক ডেভিড মাকোভস্কি প্রশ্ন তুলেছেন—সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে কি ইসরায়েল সেখানে সামরিক সুবিধা বা গোয়েন্দা উপস্থিতির পথ খুলেছে? বিশেষ করে হুতি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলায় এটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

ইসরায়েলের গণমাধ্যম ‘চ্যানেল ১২’ জানিয়েছে, সোমালিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আব্দিরাহমান মোহাম্মদ আবদুল্লাহি গোপনে একাধিকবার ইসরায়েল সফর করেছেন। গত অক্টোবরে তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ ও মোসাদের প্রধান ডেভিড বারনিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে নেতানিয়াহু এই স্বীকৃতির ক্ষেত্রে মোসাদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।

তবে এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে সোমালিয়া ও আফ্রিকান ইউনিয়ন। মিসর ও ফিলিস্তিনসহ কয়েকটি আরব দেশও এর সমালোচনা করেছে। অতীতে গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোর করে সোমালিল্যান্ডে স্থানান্তরের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, যদিও সোমালিল্যান্ডের কর্মকর্তারা এই ধরনের কোনো যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি ইসরায়েলের জন্য অর্থনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। সোমালিল্যান্ডের বন্দরনগরী বেরবেরা ইসরায়েলকে লোহিত সাগরে প্রবেশের সুযোগ দিতে পারে। এমন হলে বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাব আল-মানদেব প্রণালির ওপর নজরদারি চালাতে পারবে ইসরায়েল। তবে সব মিলিয়ে, সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিয়ে ইসরায়েল ইতিহাস তৈরি করলেও এর পূর্ণ প্রভাব ও ফলাফল এখনো স্পষ্ট নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত