
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গেলে সাধারণত ওজন ও উচ্চতা মাপা হয়। এর মাধ্যমে বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই হিসাব করে ওজন ‘স্বাভাবিক’ কি না তা জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে এই পদ্ধতি ওজন বা স্বাস্থ্যের সম্পূর্ণ চিত্র তুলে ধরতে পারে না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এখানে শুধু ওজন ও উচ্চতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এভাবে মানুষের সুস্থতার সঠিক মূল্যায়ন সম্ভব হয় না। এ জন্য বিশ্বের অনেক দেশে ‘বডি রাউন্ডনেস ইনডেক্স’ বা বিআরআই পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
ভর ও উচ্চতা অনুযায়ী একজন মানুষের ওজন কত হওয়া উচিত, তার একটি মান হলো বিএমআই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মান সঠিক নয়, তেমন অর্থবহও নয়।
এর পরও বিএমআই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় গভীরভাবে যুক্ত হয়ে গেছে। বিএমআই আদর্শ মানের চেয়ে কেউ খুব কম বা বেশি নম্বর পেলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সেবা যেমন: ওষুধ বা সার্জারির মতো বিভিন্ন চিকিৎসা স্থগিত করা হয়।
এখন স্থূলতা মাপার একটি নতুন সূত্র এসেছে। বিএমআইয়ের বদলে বিআরআই বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। নতুন এক গবেষণায় ৩০ হাজারেরও বেশি মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের বিআরআই এবং মৃত্যুর ঝুঁকির মধ্যে সম্পর্ক পাওয়া গেছে।
তবে এই পদ্ধতি এখন বিপুলভাবে ব্যবহার হচ্ছে না।
বিএমআই–এর পদ্ধতি সমস্যা কী
বিএমআই হিসাব করার জন্য প্রথমে ওজন কিলোগ্রামে মেপে সেই ওজন উচ্চতার (মিটার) বর্গ দিয়ে ভাগ করা হয়। এটি দ্রুত এবং সহজে পরিমাপ করা যায় এবং এর উদ্দেশ্য হলো শরীরের আকার ও ওজনের অনুপাতের ভিত্তিতে কারও স্বাস্থ্যঝুঁকি চিহ্নিত করা।
এই সূত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত সংখ্যা দিয়ে কোনো ব্যক্তির ওজনকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়—
তবে এই মান ত্রুটিপূর্ণ বলে সমালোচিত হচ্ছে। বিশেষ করে আপনার শরীর যদি ১৯ শতকের ইউরোপীয় পুরুষের মতো না হয়। কারণ বিএমআইয়ের মান নির্ধারণে উনিশ শতকের এক ইউরোপীয় ব্যক্তির দেহের ওজন ও উচ্চতার অনুপাতকে আদর্শ ধরে নেওয়া হয়েছিল।
যেহেতু এটি শরীরের মোট ওজনের ওপর ভিত্তি করে হিসাব করা হয়, তাই এতে চর্বি বাদে শুধু পেশির ভরকে আমলে নেওয়া হয় না। ফলে এই পদ্ধতিতে একজন সুঠামদেহী ক্রীড়াবিদও ‘অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিভুক্ত হতে পারেন।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য ও স্থূলতার বিশেষজ্ঞ নিক ফুলার বলেন, ‘এই খাতের বিশেষজ্ঞরা ‘বিএমআইয়ের নির্ভুলতা নিয়ে চিন্তিত এবং আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার একক স্বাস্থ্যসূচক হিসেবে এর ব্যবহারের প্রতি জোর দেওয়া নিয়েও তাঁরা উদ্বিগ্ন।’
বিআরআই কী
বডি রাউন্ডনেস ইনডেক্স বা বিআরআই বিএমআইয়ের মতো একটি অনুপাত। এটিও একটি সূত্র দিয়ে হিসাব করা হয়। তবে সূত্রটি বিএমআইয়ের চেয়ে একটু জটিল। সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতিতে একজন মানুষের উচ্চতা ও কোমরের বেড় বা পরিধির মাপ নেওয়া হয়।
বিআরআই পরিমাপের সূত্রটি হলো:

বিআরআইয়ের মান ১ থেকে ১৬। সুডৌল চেহারার মানুষের ক্ষেত্রে এই মান বেশি হতে পারে। সাধারণত সুস্থ স্বাভাবিক নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে বিআরআইয়ের মান হয় যথাক্রমে ৫.১৬ (২.২৪ কম-বেশি হতে পারে) ও ৪.৬৪ (১.৮৮ কম-বেশি হতে পারে)।
বিশেষজ্ঞ ডা. ফুলার বলেন, শরীরে চর্বির পরিমাণ আরও সঠিকভাবে নির্দেশ করতে পারে কোমরের পরিধির মাপ। অনেক বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে পেটের চারপাশে জমে থাকা চর্বি। বিশেষ করে যখন তা কোমর, পা বা নিতম্বের চারপাশে জমে থাকে। এর কারণ হলো, পেটের আশপাশে জমে থাকা চর্বি দেহের অভ্যন্তরীণ চর্বির পরিমাণের একটি নিদর্শন।
ডা. ফুলার আরও বলেন, এই চর্বি দেহের জন্য বিপজ্জনক। এই ধরনের চর্বি পেটের গভীরে লুকিয়ে প্রত্যঙ্গগুলোকে (পরিপাকতন্ত্র) ঘিরে থাকে এবং এগুলোর কাজে বাধা দেয়।
রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান কলেজ অব জেনারেল প্র্যাকটিশনার্সের চিকিৎসক, ডায়েটিশিয়ান (পথ্য বিশারদ) এবং স্থূলতা বিশেষজ্ঞ টেরি–লিন সাউথ বলেন, বিএমআইয়ের চেয়ে কোমরের পরিধির মাপ অভ্যন্তরীণ চর্বি সম্পর্কে অনেক বেশি সঠিক ধারণা দেয়।
বিআরআই কি বিএমআইয়ের চেয়ে ভালো বিকল্প?
বিআরআইয়ের মান কোমরের পরিধির ওপর নির্ভর করে। বিষয়টি এই পদ্ধতির যেমন শক্তিশালী দিক তেমনি প্রধান দুর্বলতাও। কারণ বিআরআইয়ের ফলাফল নির্ভুলভাবে পাওয়ার জন্য সঠিক ও নির্ভরযোগ্য পদ্ধতিতে কোমরের পরিধির মাপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কোমরের পরিধি সঠিকভাবে মাপতে পারাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন ডা. ফুলার।
এ ছাড়া কোমরের পরিধি মাপার কৌশল চিকিৎসক ভেদে ভিন্ন হতে পারে। আবার যারা বাড়িতে বিআরআই মাপার চেষ্টা করেন তাঁদের ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
বিশেষজ্ঞ টেরি-লিন সাউথ বলেন, দশজন মানুষকে একই কোমরের পরিধি মাপতে দিলে তাদের মধ্যে ১০ সেন্টিমিটারের পার্থক্য দেখা যাবে!
এর কারণ হলো, কোমরের কোন স্থানের পরিধি মাপতে হয় এটি অনেকে জানেন না।
বিএমআই–এর একটি নির্দিষ্ট আদর্শ মান রয়েছে। ফলে প্রাপ্ত ফলাফল সহজেই তুলনা করা যায়। তাই এর বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলে সূত্রটি জানলে যে কেউ ঘরে বসে এটি মাপতে পারেন। তাই বিএমআরকে এখনই প্রতিস্থাপন করা সম্ভব না। বিআরআই নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে।
অনেক ধরনের শরীরের গঠনের ক্ষেত্রে বিআরআই সঠিক ফলাফল দিতে পারলেও, অন্যের হাতে কোমরের পরিধি মাপা কিছু মানুষের কাছে অস্বস্তিকর বা হস্তক্ষেপমূলক মনে হতে পারে। বিশেষ করে যারা শরীরের ওজনের কারণে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন এমন ব্যক্তি এ বিষয়ে বেশি সংবেদনশীল হয়ে থাকেন।
এ ছাড়া ঘরে বা টেলিফোনে দূর চিকিৎসার মাধ্যমে কোমরের পরিধি সঠিকভাবে মাপা সম্ভব নয়। তাই যেসব অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়বহুল বা সহজলভ্য নয় সেসব এলাকার মানুষের জন্য এই পদ্ধতি উপযুক্ত নয়, যেমন: প্রান্তিক এবং দূরবর্তী কমিউনিটিগুলো, যাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর সামর্থ্য নেই।
এই কারণে বিআরআই অনেক স্বাস্থ্যসেবায় গৃহীত হয় না।
যদিও বিএমআর একটি আদর্শ মাপ হলেও বিএমআইকে ভিত্তি করে তৈরি হওয়া একটি পুরো স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পুনর্গঠন করা বড় একটি চ্যালেঞ্জ।
চিকিৎসকদের এখনো বিএমএআই ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকে রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান কলেজ অব জিপি। তবে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করেন ডা. সাউথ।
তিনি আরও বলেন, বিএমআইকে এখনো একটি টুল হিসেবে ব্যবহার হয়, তবে এটি একটি স্ক্রিনিং টুল (পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি) কোনো ডায়াগনস্টিক টুল (রোগ নির্ণয় পদ্ধতি) নয়।
একজন মানুষের স্বাস্থ্য মূল্যায়ন করার জন্য শুধু বিএআই বা বিএমআর কোনো পরিমাপ যথেষ্ট নয়। এর সঙ্গে কোমরের পরিধি, রক্তচাপ, রক্ত পরীক্ষার ফলাফল এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি যেমন: হৃদ্রোগ বা ডায়াবেটিসের ঝুঁকির বিষয়গুলোও বিবেচনা করা প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গেলে সাধারণত ওজন ও উচ্চতা মাপা হয়। এর মাধ্যমে বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই হিসাব করে ওজন ‘স্বাভাবিক’ কি না তা জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে এই পদ্ধতি ওজন বা স্বাস্থ্যের সম্পূর্ণ চিত্র তুলে ধরতে পারে না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এখানে শুধু ওজন ও উচ্চতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এভাবে মানুষের সুস্থতার সঠিক মূল্যায়ন সম্ভব হয় না। এ জন্য বিশ্বের অনেক দেশে ‘বডি রাউন্ডনেস ইনডেক্স’ বা বিআরআই পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
ভর ও উচ্চতা অনুযায়ী একজন মানুষের ওজন কত হওয়া উচিত, তার একটি মান হলো বিএমআই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মান সঠিক নয়, তেমন অর্থবহও নয়।
এর পরও বিএমআই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় গভীরভাবে যুক্ত হয়ে গেছে। বিএমআই আদর্শ মানের চেয়ে কেউ খুব কম বা বেশি নম্বর পেলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সেবা যেমন: ওষুধ বা সার্জারির মতো বিভিন্ন চিকিৎসা স্থগিত করা হয়।
এখন স্থূলতা মাপার একটি নতুন সূত্র এসেছে। বিএমআইয়ের বদলে বিআরআই বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। নতুন এক গবেষণায় ৩০ হাজারেরও বেশি মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের বিআরআই এবং মৃত্যুর ঝুঁকির মধ্যে সম্পর্ক পাওয়া গেছে।
তবে এই পদ্ধতি এখন বিপুলভাবে ব্যবহার হচ্ছে না।
বিএমআই–এর পদ্ধতি সমস্যা কী
বিএমআই হিসাব করার জন্য প্রথমে ওজন কিলোগ্রামে মেপে সেই ওজন উচ্চতার (মিটার) বর্গ দিয়ে ভাগ করা হয়। এটি দ্রুত এবং সহজে পরিমাপ করা যায় এবং এর উদ্দেশ্য হলো শরীরের আকার ও ওজনের অনুপাতের ভিত্তিতে কারও স্বাস্থ্যঝুঁকি চিহ্নিত করা।
এই সূত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত সংখ্যা দিয়ে কোনো ব্যক্তির ওজনকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়—
তবে এই মান ত্রুটিপূর্ণ বলে সমালোচিত হচ্ছে। বিশেষ করে আপনার শরীর যদি ১৯ শতকের ইউরোপীয় পুরুষের মতো না হয়। কারণ বিএমআইয়ের মান নির্ধারণে উনিশ শতকের এক ইউরোপীয় ব্যক্তির দেহের ওজন ও উচ্চতার অনুপাতকে আদর্শ ধরে নেওয়া হয়েছিল।
যেহেতু এটি শরীরের মোট ওজনের ওপর ভিত্তি করে হিসাব করা হয়, তাই এতে চর্বি বাদে শুধু পেশির ভরকে আমলে নেওয়া হয় না। ফলে এই পদ্ধতিতে একজন সুঠামদেহী ক্রীড়াবিদও ‘অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিভুক্ত হতে পারেন।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য ও স্থূলতার বিশেষজ্ঞ নিক ফুলার বলেন, ‘এই খাতের বিশেষজ্ঞরা ‘বিএমআইয়ের নির্ভুলতা নিয়ে চিন্তিত এবং আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার একক স্বাস্থ্যসূচক হিসেবে এর ব্যবহারের প্রতি জোর দেওয়া নিয়েও তাঁরা উদ্বিগ্ন।’
বিআরআই কী
বডি রাউন্ডনেস ইনডেক্স বা বিআরআই বিএমআইয়ের মতো একটি অনুপাত। এটিও একটি সূত্র দিয়ে হিসাব করা হয়। তবে সূত্রটি বিএমআইয়ের চেয়ে একটু জটিল। সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতিতে একজন মানুষের উচ্চতা ও কোমরের বেড় বা পরিধির মাপ নেওয়া হয়।
বিআরআই পরিমাপের সূত্রটি হলো:

বিআরআইয়ের মান ১ থেকে ১৬। সুডৌল চেহারার মানুষের ক্ষেত্রে এই মান বেশি হতে পারে। সাধারণত সুস্থ স্বাভাবিক নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে বিআরআইয়ের মান হয় যথাক্রমে ৫.১৬ (২.২৪ কম-বেশি হতে পারে) ও ৪.৬৪ (১.৮৮ কম-বেশি হতে পারে)।
বিশেষজ্ঞ ডা. ফুলার বলেন, শরীরে চর্বির পরিমাণ আরও সঠিকভাবে নির্দেশ করতে পারে কোমরের পরিধির মাপ। অনেক বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে পেটের চারপাশে জমে থাকা চর্বি। বিশেষ করে যখন তা কোমর, পা বা নিতম্বের চারপাশে জমে থাকে। এর কারণ হলো, পেটের আশপাশে জমে থাকা চর্বি দেহের অভ্যন্তরীণ চর্বির পরিমাণের একটি নিদর্শন।
ডা. ফুলার আরও বলেন, এই চর্বি দেহের জন্য বিপজ্জনক। এই ধরনের চর্বি পেটের গভীরে লুকিয়ে প্রত্যঙ্গগুলোকে (পরিপাকতন্ত্র) ঘিরে থাকে এবং এগুলোর কাজে বাধা দেয়।
রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান কলেজ অব জেনারেল প্র্যাকটিশনার্সের চিকিৎসক, ডায়েটিশিয়ান (পথ্য বিশারদ) এবং স্থূলতা বিশেষজ্ঞ টেরি–লিন সাউথ বলেন, বিএমআইয়ের চেয়ে কোমরের পরিধির মাপ অভ্যন্তরীণ চর্বি সম্পর্কে অনেক বেশি সঠিক ধারণা দেয়।
বিআরআই কি বিএমআইয়ের চেয়ে ভালো বিকল্প?
বিআরআইয়ের মান কোমরের পরিধির ওপর নির্ভর করে। বিষয়টি এই পদ্ধতির যেমন শক্তিশালী দিক তেমনি প্রধান দুর্বলতাও। কারণ বিআরআইয়ের ফলাফল নির্ভুলভাবে পাওয়ার জন্য সঠিক ও নির্ভরযোগ্য পদ্ধতিতে কোমরের পরিধির মাপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কোমরের পরিধি সঠিকভাবে মাপতে পারাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন ডা. ফুলার।
এ ছাড়া কোমরের পরিধি মাপার কৌশল চিকিৎসক ভেদে ভিন্ন হতে পারে। আবার যারা বাড়িতে বিআরআই মাপার চেষ্টা করেন তাঁদের ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
বিশেষজ্ঞ টেরি-লিন সাউথ বলেন, দশজন মানুষকে একই কোমরের পরিধি মাপতে দিলে তাদের মধ্যে ১০ সেন্টিমিটারের পার্থক্য দেখা যাবে!
এর কারণ হলো, কোমরের কোন স্থানের পরিধি মাপতে হয় এটি অনেকে জানেন না।
বিএমআই–এর একটি নির্দিষ্ট আদর্শ মান রয়েছে। ফলে প্রাপ্ত ফলাফল সহজেই তুলনা করা যায়। তাই এর বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলে সূত্রটি জানলে যে কেউ ঘরে বসে এটি মাপতে পারেন। তাই বিএমআরকে এখনই প্রতিস্থাপন করা সম্ভব না। বিআরআই নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে।
অনেক ধরনের শরীরের গঠনের ক্ষেত্রে বিআরআই সঠিক ফলাফল দিতে পারলেও, অন্যের হাতে কোমরের পরিধি মাপা কিছু মানুষের কাছে অস্বস্তিকর বা হস্তক্ষেপমূলক মনে হতে পারে। বিশেষ করে যারা শরীরের ওজনের কারণে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন এমন ব্যক্তি এ বিষয়ে বেশি সংবেদনশীল হয়ে থাকেন।
এ ছাড়া ঘরে বা টেলিফোনে দূর চিকিৎসার মাধ্যমে কোমরের পরিধি সঠিকভাবে মাপা সম্ভব নয়। তাই যেসব অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়বহুল বা সহজলভ্য নয় সেসব এলাকার মানুষের জন্য এই পদ্ধতি উপযুক্ত নয়, যেমন: প্রান্তিক এবং দূরবর্তী কমিউনিটিগুলো, যাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর সামর্থ্য নেই।
এই কারণে বিআরআই অনেক স্বাস্থ্যসেবায় গৃহীত হয় না।
যদিও বিএমআর একটি আদর্শ মাপ হলেও বিএমআইকে ভিত্তি করে তৈরি হওয়া একটি পুরো স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পুনর্গঠন করা বড় একটি চ্যালেঞ্জ।
চিকিৎসকদের এখনো বিএমএআই ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকে রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান কলেজ অব জিপি। তবে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করেন ডা. সাউথ।
তিনি আরও বলেন, বিএমআইকে এখনো একটি টুল হিসেবে ব্যবহার হয়, তবে এটি একটি স্ক্রিনিং টুল (পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি) কোনো ডায়াগনস্টিক টুল (রোগ নির্ণয় পদ্ধতি) নয়।
একজন মানুষের স্বাস্থ্য মূল্যায়ন করার জন্য শুধু বিএআই বা বিএমআর কোনো পরিমাপ যথেষ্ট নয়। এর সঙ্গে কোমরের পরিধি, রক্তচাপ, রক্ত পরীক্ষার ফলাফল এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি যেমন: হৃদ্রোগ বা ডায়াবেটিসের ঝুঁকির বিষয়গুলোও বিবেচনা করা প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গেলে সাধারণত ওজন ও উচ্চতা মাপা হয়। এর মাধ্যমে বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই হিসাব করে ওজন ‘স্বাভাবিক’ কি না তা জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে এই পদ্ধতি ওজন বা স্বাস্থ্যের সম্পূর্ণ চিত্র তুলে ধরতে পারে না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এখানে শুধু ওজন ও উচ্চতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এভাবে মানুষের সুস্থতার সঠিক মূল্যায়ন সম্ভব হয় না। এ জন্য বিশ্বের অনেক দেশে ‘বডি রাউন্ডনেস ইনডেক্স’ বা বিআরআই পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
ভর ও উচ্চতা অনুযায়ী একজন মানুষের ওজন কত হওয়া উচিত, তার একটি মান হলো বিএমআই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মান সঠিক নয়, তেমন অর্থবহও নয়।
এর পরও বিএমআই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় গভীরভাবে যুক্ত হয়ে গেছে। বিএমআই আদর্শ মানের চেয়ে কেউ খুব কম বা বেশি নম্বর পেলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সেবা যেমন: ওষুধ বা সার্জারির মতো বিভিন্ন চিকিৎসা স্থগিত করা হয়।
এখন স্থূলতা মাপার একটি নতুন সূত্র এসেছে। বিএমআইয়ের বদলে বিআরআই বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। নতুন এক গবেষণায় ৩০ হাজারেরও বেশি মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের বিআরআই এবং মৃত্যুর ঝুঁকির মধ্যে সম্পর্ক পাওয়া গেছে।
তবে এই পদ্ধতি এখন বিপুলভাবে ব্যবহার হচ্ছে না।
বিএমআই–এর পদ্ধতি সমস্যা কী
বিএমআই হিসাব করার জন্য প্রথমে ওজন কিলোগ্রামে মেপে সেই ওজন উচ্চতার (মিটার) বর্গ দিয়ে ভাগ করা হয়। এটি দ্রুত এবং সহজে পরিমাপ করা যায় এবং এর উদ্দেশ্য হলো শরীরের আকার ও ওজনের অনুপাতের ভিত্তিতে কারও স্বাস্থ্যঝুঁকি চিহ্নিত করা।
এই সূত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত সংখ্যা দিয়ে কোনো ব্যক্তির ওজনকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়—
তবে এই মান ত্রুটিপূর্ণ বলে সমালোচিত হচ্ছে। বিশেষ করে আপনার শরীর যদি ১৯ শতকের ইউরোপীয় পুরুষের মতো না হয়। কারণ বিএমআইয়ের মান নির্ধারণে উনিশ শতকের এক ইউরোপীয় ব্যক্তির দেহের ওজন ও উচ্চতার অনুপাতকে আদর্শ ধরে নেওয়া হয়েছিল।
যেহেতু এটি শরীরের মোট ওজনের ওপর ভিত্তি করে হিসাব করা হয়, তাই এতে চর্বি বাদে শুধু পেশির ভরকে আমলে নেওয়া হয় না। ফলে এই পদ্ধতিতে একজন সুঠামদেহী ক্রীড়াবিদও ‘অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিভুক্ত হতে পারেন।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য ও স্থূলতার বিশেষজ্ঞ নিক ফুলার বলেন, ‘এই খাতের বিশেষজ্ঞরা ‘বিএমআইয়ের নির্ভুলতা নিয়ে চিন্তিত এবং আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার একক স্বাস্থ্যসূচক হিসেবে এর ব্যবহারের প্রতি জোর দেওয়া নিয়েও তাঁরা উদ্বিগ্ন।’
বিআরআই কী
বডি রাউন্ডনেস ইনডেক্স বা বিআরআই বিএমআইয়ের মতো একটি অনুপাত। এটিও একটি সূত্র দিয়ে হিসাব করা হয়। তবে সূত্রটি বিএমআইয়ের চেয়ে একটু জটিল। সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতিতে একজন মানুষের উচ্চতা ও কোমরের বেড় বা পরিধির মাপ নেওয়া হয়।
বিআরআই পরিমাপের সূত্রটি হলো:

বিআরআইয়ের মান ১ থেকে ১৬। সুডৌল চেহারার মানুষের ক্ষেত্রে এই মান বেশি হতে পারে। সাধারণত সুস্থ স্বাভাবিক নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে বিআরআইয়ের মান হয় যথাক্রমে ৫.১৬ (২.২৪ কম-বেশি হতে পারে) ও ৪.৬৪ (১.৮৮ কম-বেশি হতে পারে)।
বিশেষজ্ঞ ডা. ফুলার বলেন, শরীরে চর্বির পরিমাণ আরও সঠিকভাবে নির্দেশ করতে পারে কোমরের পরিধির মাপ। অনেক বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে পেটের চারপাশে জমে থাকা চর্বি। বিশেষ করে যখন তা কোমর, পা বা নিতম্বের চারপাশে জমে থাকে। এর কারণ হলো, পেটের আশপাশে জমে থাকা চর্বি দেহের অভ্যন্তরীণ চর্বির পরিমাণের একটি নিদর্শন।
ডা. ফুলার আরও বলেন, এই চর্বি দেহের জন্য বিপজ্জনক। এই ধরনের চর্বি পেটের গভীরে লুকিয়ে প্রত্যঙ্গগুলোকে (পরিপাকতন্ত্র) ঘিরে থাকে এবং এগুলোর কাজে বাধা দেয়।
রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান কলেজ অব জেনারেল প্র্যাকটিশনার্সের চিকিৎসক, ডায়েটিশিয়ান (পথ্য বিশারদ) এবং স্থূলতা বিশেষজ্ঞ টেরি–লিন সাউথ বলেন, বিএমআইয়ের চেয়ে কোমরের পরিধির মাপ অভ্যন্তরীণ চর্বি সম্পর্কে অনেক বেশি সঠিক ধারণা দেয়।
বিআরআই কি বিএমআইয়ের চেয়ে ভালো বিকল্প?
বিআরআইয়ের মান কোমরের পরিধির ওপর নির্ভর করে। বিষয়টি এই পদ্ধতির যেমন শক্তিশালী দিক তেমনি প্রধান দুর্বলতাও। কারণ বিআরআইয়ের ফলাফল নির্ভুলভাবে পাওয়ার জন্য সঠিক ও নির্ভরযোগ্য পদ্ধতিতে কোমরের পরিধির মাপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কোমরের পরিধি সঠিকভাবে মাপতে পারাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন ডা. ফুলার।
এ ছাড়া কোমরের পরিধি মাপার কৌশল চিকিৎসক ভেদে ভিন্ন হতে পারে। আবার যারা বাড়িতে বিআরআই মাপার চেষ্টা করেন তাঁদের ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
বিশেষজ্ঞ টেরি-লিন সাউথ বলেন, দশজন মানুষকে একই কোমরের পরিধি মাপতে দিলে তাদের মধ্যে ১০ সেন্টিমিটারের পার্থক্য দেখা যাবে!
এর কারণ হলো, কোমরের কোন স্থানের পরিধি মাপতে হয় এটি অনেকে জানেন না।
বিএমআই–এর একটি নির্দিষ্ট আদর্শ মান রয়েছে। ফলে প্রাপ্ত ফলাফল সহজেই তুলনা করা যায়। তাই এর বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলে সূত্রটি জানলে যে কেউ ঘরে বসে এটি মাপতে পারেন। তাই বিএমআরকে এখনই প্রতিস্থাপন করা সম্ভব না। বিআরআই নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে।
অনেক ধরনের শরীরের গঠনের ক্ষেত্রে বিআরআই সঠিক ফলাফল দিতে পারলেও, অন্যের হাতে কোমরের পরিধি মাপা কিছু মানুষের কাছে অস্বস্তিকর বা হস্তক্ষেপমূলক মনে হতে পারে। বিশেষ করে যারা শরীরের ওজনের কারণে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন এমন ব্যক্তি এ বিষয়ে বেশি সংবেদনশীল হয়ে থাকেন।
এ ছাড়া ঘরে বা টেলিফোনে দূর চিকিৎসার মাধ্যমে কোমরের পরিধি সঠিকভাবে মাপা সম্ভব নয়। তাই যেসব অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়বহুল বা সহজলভ্য নয় সেসব এলাকার মানুষের জন্য এই পদ্ধতি উপযুক্ত নয়, যেমন: প্রান্তিক এবং দূরবর্তী কমিউনিটিগুলো, যাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর সামর্থ্য নেই।
এই কারণে বিআরআই অনেক স্বাস্থ্যসেবায় গৃহীত হয় না।
যদিও বিএমআর একটি আদর্শ মাপ হলেও বিএমআইকে ভিত্তি করে তৈরি হওয়া একটি পুরো স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পুনর্গঠন করা বড় একটি চ্যালেঞ্জ।
চিকিৎসকদের এখনো বিএমএআই ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকে রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান কলেজ অব জিপি। তবে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করেন ডা. সাউথ।
তিনি আরও বলেন, বিএমআইকে এখনো একটি টুল হিসেবে ব্যবহার হয়, তবে এটি একটি স্ক্রিনিং টুল (পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি) কোনো ডায়াগনস্টিক টুল (রোগ নির্ণয় পদ্ধতি) নয়।
একজন মানুষের স্বাস্থ্য মূল্যায়ন করার জন্য শুধু বিএআই বা বিএমআর কোনো পরিমাপ যথেষ্ট নয়। এর সঙ্গে কোমরের পরিধি, রক্তচাপ, রক্ত পরীক্ষার ফলাফল এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি যেমন: হৃদ্রোগ বা ডায়াবেটিসের ঝুঁকির বিষয়গুলোও বিবেচনা করা প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গেলে সাধারণত ওজন ও উচ্চতা মাপা হয়। এর মাধ্যমে বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই হিসাব করে ওজন ‘স্বাভাবিক’ কি না তা জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে এই পদ্ধতি ওজন বা স্বাস্থ্যের সম্পূর্ণ চিত্র তুলে ধরতে পারে না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এখানে শুধু ওজন ও উচ্চতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এভাবে মানুষের সুস্থতার সঠিক মূল্যায়ন সম্ভব হয় না। এ জন্য বিশ্বের অনেক দেশে ‘বডি রাউন্ডনেস ইনডেক্স’ বা বিআরআই পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
ভর ও উচ্চতা অনুযায়ী একজন মানুষের ওজন কত হওয়া উচিত, তার একটি মান হলো বিএমআই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মান সঠিক নয়, তেমন অর্থবহও নয়।
এর পরও বিএমআই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় গভীরভাবে যুক্ত হয়ে গেছে। বিএমআই আদর্শ মানের চেয়ে কেউ খুব কম বা বেশি নম্বর পেলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সেবা যেমন: ওষুধ বা সার্জারির মতো বিভিন্ন চিকিৎসা স্থগিত করা হয়।
এখন স্থূলতা মাপার একটি নতুন সূত্র এসেছে। বিএমআইয়ের বদলে বিআরআই বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। নতুন এক গবেষণায় ৩০ হাজারেরও বেশি মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের বিআরআই এবং মৃত্যুর ঝুঁকির মধ্যে সম্পর্ক পাওয়া গেছে।
তবে এই পদ্ধতি এখন বিপুলভাবে ব্যবহার হচ্ছে না।
বিএমআই–এর পদ্ধতি সমস্যা কী
বিএমআই হিসাব করার জন্য প্রথমে ওজন কিলোগ্রামে মেপে সেই ওজন উচ্চতার (মিটার) বর্গ দিয়ে ভাগ করা হয়। এটি দ্রুত এবং সহজে পরিমাপ করা যায় এবং এর উদ্দেশ্য হলো শরীরের আকার ও ওজনের অনুপাতের ভিত্তিতে কারও স্বাস্থ্যঝুঁকি চিহ্নিত করা।
এই সূত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত সংখ্যা দিয়ে কোনো ব্যক্তির ওজনকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়—
তবে এই মান ত্রুটিপূর্ণ বলে সমালোচিত হচ্ছে। বিশেষ করে আপনার শরীর যদি ১৯ শতকের ইউরোপীয় পুরুষের মতো না হয়। কারণ বিএমআইয়ের মান নির্ধারণে উনিশ শতকের এক ইউরোপীয় ব্যক্তির দেহের ওজন ও উচ্চতার অনুপাতকে আদর্শ ধরে নেওয়া হয়েছিল।
যেহেতু এটি শরীরের মোট ওজনের ওপর ভিত্তি করে হিসাব করা হয়, তাই এতে চর্বি বাদে শুধু পেশির ভরকে আমলে নেওয়া হয় না। ফলে এই পদ্ধতিতে একজন সুঠামদেহী ক্রীড়াবিদও ‘অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিভুক্ত হতে পারেন।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য ও স্থূলতার বিশেষজ্ঞ নিক ফুলার বলেন, ‘এই খাতের বিশেষজ্ঞরা ‘বিএমআইয়ের নির্ভুলতা নিয়ে চিন্তিত এবং আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার একক স্বাস্থ্যসূচক হিসেবে এর ব্যবহারের প্রতি জোর দেওয়া নিয়েও তাঁরা উদ্বিগ্ন।’
বিআরআই কী
বডি রাউন্ডনেস ইনডেক্স বা বিআরআই বিএমআইয়ের মতো একটি অনুপাত। এটিও একটি সূত্র দিয়ে হিসাব করা হয়। তবে সূত্রটি বিএমআইয়ের চেয়ে একটু জটিল। সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতিতে একজন মানুষের উচ্চতা ও কোমরের বেড় বা পরিধির মাপ নেওয়া হয়।
বিআরআই পরিমাপের সূত্রটি হলো:

বিআরআইয়ের মান ১ থেকে ১৬। সুডৌল চেহারার মানুষের ক্ষেত্রে এই মান বেশি হতে পারে। সাধারণত সুস্থ স্বাভাবিক নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে বিআরআইয়ের মান হয় যথাক্রমে ৫.১৬ (২.২৪ কম-বেশি হতে পারে) ও ৪.৬৪ (১.৮৮ কম-বেশি হতে পারে)।
বিশেষজ্ঞ ডা. ফুলার বলেন, শরীরে চর্বির পরিমাণ আরও সঠিকভাবে নির্দেশ করতে পারে কোমরের পরিধির মাপ। অনেক বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে পেটের চারপাশে জমে থাকা চর্বি। বিশেষ করে যখন তা কোমর, পা বা নিতম্বের চারপাশে জমে থাকে। এর কারণ হলো, পেটের আশপাশে জমে থাকা চর্বি দেহের অভ্যন্তরীণ চর্বির পরিমাণের একটি নিদর্শন।
ডা. ফুলার আরও বলেন, এই চর্বি দেহের জন্য বিপজ্জনক। এই ধরনের চর্বি পেটের গভীরে লুকিয়ে প্রত্যঙ্গগুলোকে (পরিপাকতন্ত্র) ঘিরে থাকে এবং এগুলোর কাজে বাধা দেয়।
রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান কলেজ অব জেনারেল প্র্যাকটিশনার্সের চিকিৎসক, ডায়েটিশিয়ান (পথ্য বিশারদ) এবং স্থূলতা বিশেষজ্ঞ টেরি–লিন সাউথ বলেন, বিএমআইয়ের চেয়ে কোমরের পরিধির মাপ অভ্যন্তরীণ চর্বি সম্পর্কে অনেক বেশি সঠিক ধারণা দেয়।
বিআরআই কি বিএমআইয়ের চেয়ে ভালো বিকল্প?
বিআরআইয়ের মান কোমরের পরিধির ওপর নির্ভর করে। বিষয়টি এই পদ্ধতির যেমন শক্তিশালী দিক তেমনি প্রধান দুর্বলতাও। কারণ বিআরআইয়ের ফলাফল নির্ভুলভাবে পাওয়ার জন্য সঠিক ও নির্ভরযোগ্য পদ্ধতিতে কোমরের পরিধির মাপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কোমরের পরিধি সঠিকভাবে মাপতে পারাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন ডা. ফুলার।
এ ছাড়া কোমরের পরিধি মাপার কৌশল চিকিৎসক ভেদে ভিন্ন হতে পারে। আবার যারা বাড়িতে বিআরআই মাপার চেষ্টা করেন তাঁদের ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
বিশেষজ্ঞ টেরি-লিন সাউথ বলেন, দশজন মানুষকে একই কোমরের পরিধি মাপতে দিলে তাদের মধ্যে ১০ সেন্টিমিটারের পার্থক্য দেখা যাবে!
এর কারণ হলো, কোমরের কোন স্থানের পরিধি মাপতে হয় এটি অনেকে জানেন না।
বিএমআই–এর একটি নির্দিষ্ট আদর্শ মান রয়েছে। ফলে প্রাপ্ত ফলাফল সহজেই তুলনা করা যায়। তাই এর বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলে সূত্রটি জানলে যে কেউ ঘরে বসে এটি মাপতে পারেন। তাই বিএমআরকে এখনই প্রতিস্থাপন করা সম্ভব না। বিআরআই নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে।
অনেক ধরনের শরীরের গঠনের ক্ষেত্রে বিআরআই সঠিক ফলাফল দিতে পারলেও, অন্যের হাতে কোমরের পরিধি মাপা কিছু মানুষের কাছে অস্বস্তিকর বা হস্তক্ষেপমূলক মনে হতে পারে। বিশেষ করে যারা শরীরের ওজনের কারণে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন এমন ব্যক্তি এ বিষয়ে বেশি সংবেদনশীল হয়ে থাকেন।
এ ছাড়া ঘরে বা টেলিফোনে দূর চিকিৎসার মাধ্যমে কোমরের পরিধি সঠিকভাবে মাপা সম্ভব নয়। তাই যেসব অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়বহুল বা সহজলভ্য নয় সেসব এলাকার মানুষের জন্য এই পদ্ধতি উপযুক্ত নয়, যেমন: প্রান্তিক এবং দূরবর্তী কমিউনিটিগুলো, যাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর সামর্থ্য নেই।
এই কারণে বিআরআই অনেক স্বাস্থ্যসেবায় গৃহীত হয় না।
যদিও বিএমআর একটি আদর্শ মাপ হলেও বিএমআইকে ভিত্তি করে তৈরি হওয়া একটি পুরো স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পুনর্গঠন করা বড় একটি চ্যালেঞ্জ।
চিকিৎসকদের এখনো বিএমএআই ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকে রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান কলেজ অব জিপি। তবে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করেন ডা. সাউথ।
তিনি আরও বলেন, বিএমআইকে এখনো একটি টুল হিসেবে ব্যবহার হয়, তবে এটি একটি স্ক্রিনিং টুল (পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি) কোনো ডায়াগনস্টিক টুল (রোগ নির্ণয় পদ্ধতি) নয়।
একজন মানুষের স্বাস্থ্য মূল্যায়ন করার জন্য শুধু বিএআই বা বিএমআর কোনো পরিমাপ যথেষ্ট নয়। এর সঙ্গে কোমরের পরিধি, রক্তচাপ, রক্ত পরীক্ষার ফলাফল এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি যেমন: হৃদ্রোগ বা ডায়াবেটিসের ঝুঁকির বিষয়গুলোও বিবেচনা করা প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
১ ঘণ্টা আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
২ ঘণ্টা আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
৩ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
৩ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।
উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।
উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।
উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।
উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।
উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।
উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

বিএমআই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় গভীরভাবে যুক্ত হয়ে গেছে। বিএমআই আদর্শ মানের চেয়ে কেউ খুব কম বা বেশি নম্বর পেলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সেবা যেমন: ওষুধ বা সার্জারির মতো বিভিন্ন চিকিৎসা স্থগিত করা হয়।
১৮ অক্টোবর ২০২৪
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
২ ঘণ্টা আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
৩ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
৩ ঘণ্টা আগেআলমগীর আলম

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।
২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।
৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।
৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—
উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।
২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।
৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।
৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—
উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

বিএমআই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় গভীরভাবে যুক্ত হয়ে গেছে। বিএমআই আদর্শ মানের চেয়ে কেউ খুব কম বা বেশি নম্বর পেলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সেবা যেমন: ওষুধ বা সার্জারির মতো বিভিন্ন চিকিৎসা স্থগিত করা হয়।
১৮ অক্টোবর ২০২৪
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
১ ঘণ্টা আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
৩ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
৩ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার এমন এক সমস্যা, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে অবচেতন অবস্থায় রান্নাঘরে চলে যায় এবং খাবার খেতে শুরু করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তার এই ঘটনা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র স্মৃতি থাকে না। সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতি রাতেই এমনটা করে। এক রাতে একাধিকবারও ঘুমের ঘোরে খাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।
খাদ্যাভ্যাসের বিচিত্র রূপ
এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়ার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত ঘুমের ঘোরে খাওয়ার সময় তিন ধরনের ঘটনা ঘটে।
উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া: আক্রান্ত হওয়া মানুষ সাধারণত ক্যান্ডি, চিপস অথবা কেকের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে।
অস্বাভাবিক সংমিশ্রণের খাবার খাওয়া: অনেক সময় তারা অত্যন্ত অদ্ভুত ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের সংমিশ্রণ তৈরি করে। যেমন সিগারেটে মাখন মাখিয়ে খাওয়া কিংবা অন্য কোনো অখাদ্য বস্তু খাওয়া।
দ্রুততম সময়ে খাবার খাওয়া: বিছানা থেকে রান্নাঘর হয়ে পুনরায় বিছানায় ফিরে আসার পুরো প্রক্রিয়াটি মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ হতে পারে। ফলে তারা খুব দ্রুত খাবার খেয়ে ফেলে।
ঝুঁকি ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব
এসআরইডির প্রভাব কেবল ঘুমের ব্যাঘাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি দীর্ঘ মেয়াদে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এসব প্রভাবের মধ্যে আছে—
কেন এমন হয়
এসআরইডির নির্দিষ্ট কোনো একক কারণ না থাকলেও বেশ কিছু বিষয় লক্ষণীয়। যেমন—
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: বিষণ্নতা বা ঘুমের সমস্যার জন্য ব্যবহৃত কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের প্রভাবে এটি হতে পারে।
অন্যান্য রোগ: রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম বা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো সমস্যা এর পেছনে থাকতে পারে।
জীবনযাত্রা: অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম এবং অ্যালকোহল অথবা মাদক ত্যাগের পরবর্তী সময়ে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা
এই রহস্যময় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা জরুরি। এর প্রতিকারে যা করা যেতে পারে—
সূত্র: সিএনএন হেলথ, এএসএসএম

ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার এমন এক সমস্যা, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে অবচেতন অবস্থায় রান্নাঘরে চলে যায় এবং খাবার খেতে শুরু করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তার এই ঘটনা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র স্মৃতি থাকে না। সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতি রাতেই এমনটা করে। এক রাতে একাধিকবারও ঘুমের ঘোরে খাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।
খাদ্যাভ্যাসের বিচিত্র রূপ
এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়ার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত ঘুমের ঘোরে খাওয়ার সময় তিন ধরনের ঘটনা ঘটে।
উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া: আক্রান্ত হওয়া মানুষ সাধারণত ক্যান্ডি, চিপস অথবা কেকের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে।
অস্বাভাবিক সংমিশ্রণের খাবার খাওয়া: অনেক সময় তারা অত্যন্ত অদ্ভুত ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের সংমিশ্রণ তৈরি করে। যেমন সিগারেটে মাখন মাখিয়ে খাওয়া কিংবা অন্য কোনো অখাদ্য বস্তু খাওয়া।
দ্রুততম সময়ে খাবার খাওয়া: বিছানা থেকে রান্নাঘর হয়ে পুনরায় বিছানায় ফিরে আসার পুরো প্রক্রিয়াটি মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ হতে পারে। ফলে তারা খুব দ্রুত খাবার খেয়ে ফেলে।
ঝুঁকি ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব
এসআরইডির প্রভাব কেবল ঘুমের ব্যাঘাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি দীর্ঘ মেয়াদে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এসব প্রভাবের মধ্যে আছে—
কেন এমন হয়
এসআরইডির নির্দিষ্ট কোনো একক কারণ না থাকলেও বেশ কিছু বিষয় লক্ষণীয়। যেমন—
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: বিষণ্নতা বা ঘুমের সমস্যার জন্য ব্যবহৃত কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের প্রভাবে এটি হতে পারে।
অন্যান্য রোগ: রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম বা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো সমস্যা এর পেছনে থাকতে পারে।
জীবনযাত্রা: অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম এবং অ্যালকোহল অথবা মাদক ত্যাগের পরবর্তী সময়ে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা
এই রহস্যময় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা জরুরি। এর প্রতিকারে যা করা যেতে পারে—
সূত্র: সিএনএন হেলথ, এএসএসএম

বিএমআই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় গভীরভাবে যুক্ত হয়ে গেছে। বিএমআই আদর্শ মানের চেয়ে কেউ খুব কম বা বেশি নম্বর পেলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সেবা যেমন: ওষুধ বা সার্জারির মতো বিভিন্ন চিকিৎসা স্থগিত করা হয়।
১৮ অক্টোবর ২০২৪
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
১ ঘণ্টা আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
২ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
৩ ঘণ্টা আগেডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী

দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়। কাশি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার পেছনে নির্দিষ্ট এবং চিকিৎসাযোগ্য ছয়টি কারণ থাকে।
কফ ভ্যারিয়েন্ট অ্যাজমা
অ্যাজমার একটি বিশেষ ধরন এটি। এতে সাধারণ অ্যাজমার মতো শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ বা সাঁ সাঁ শব্দ না-ও থাকতে পারে; বরং অবিরাম শুকনো কাশিই এর প্রধান এবং অন্যতম উপসর্গ হয়ে দেখা দেয়। এই ধরনের কাশি সাধারণত রাতে বেশি হয় এবং ধুলাবালি, ঠান্ডা বাতাস, ঘরবাড়ির অ্যালার্জেন, এমনকি ঋতু পরিবর্তনের সময় শীতের শুরুতেও উপসর্গ তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
উপসর্গ বারবার দেখা দিলে চিকিৎসক শ্বাসক্রিয়া পরীক্ষার মাধ্যমে কারণ নির্ণয় করতে পারেন। স্পাইরোমেট্রি ফুসফুসের ক্ষমতা এবং বায়ুপ্রবাহ পরিমাপ করে, যা হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজের (সিওপিডি) মতো অবস্থা নির্ণয় করতে সাহায্য করতে পারে। প্রয়োজন হলে রোগ নিয়ন্ত্রণে উপযোগী ইনহেলার সাময়িক ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে এ রোগ শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণ করা গেলে দীর্ঘ মেয়াদে জটিলতার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
পোস্টন্যাসাল ড্রিপ
নাক কিংবা সাইনাসে অতিরিক্ত মিউকাস তৈরি হলে তা ধীরে ধীরে গলার পেছন দিকে গড়িয়ে যায়। এই মিউকাস গলার সংবেদনশীল নার্ভগুলো উত্তেজিত করে। ফলে শুকনো ও বিরক্তিকর কাশি হয়। শোয়ার সময় মিউকাস গলায় জমে বলে এটি রাত ও ভোরে বেশি হয়। তবে ঘুম থেকে ওঠার পরও কাশি দেখা যায়। অ্যালার্জিজনিত হাঁচি-সর্দি, সাইনোসাইটিস, নাকের হাড় বাঁকা হওয়ার সমস্যা, নাক বন্ধ বা ধুলাবালিতে সংবেদনশীলতা যাঁদের আছে, তাঁদের এই সমস্যা বেশি হয়। দীর্ঘস্থায়ী শুকনো কাশির অন্যতম প্রচলিত উৎস এই পোস্টন্যাসাল ড্রিপ।
জিইআরডি
পাকস্থলীর অ্যাসিড ওপরের দিকে উঠে এলে টক ঢেকুর, বুকজ্বালা, গলায় জ্বালাপোড়া এবং সঙ্গে ধারাবাহিক কাশি দেখা দিতে পারে। মসলাদার খাবার, ভাজাপোড়া, চকলেট, কফি, টক খাবার—এসব জিইআরডি বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান বা অতিরিক্ত খাবার খাওয়াও ঝুঁকির মাত্রা বাড়ায়। জিইআরডি নিয়ন্ত্রণে আনলে অনেক ক্ষেত্রে কাশি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
ভাইরাল সংক্রমণের পর দীর্ঘস্থায়ী কাশি
অনেক সময় সর্দি-জ্বরের উপসর্গ সেরে গেলেও শ্বাসনালি কিছুদিন অতি সংবেদনশীল থাকে। এর ফলে কাশি স্থায়ী হতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের সময় এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। সাধারণত বিশেষ চিকিৎসা ছাড়াই ধীরে ধীরে এর উপসর্গ কমে আসে। হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা এবং আদা, লেবু, মধু, লবঙ্গ বা দারুচিনিযুক্ত গরম চা উপসর্গ কমাতে সহায়তা করে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত এসিই ইনহিবিটর শ্রেণির ওষুধ অনেক রোগীর ক্ষেত্রে শুকনো কাশির কারণ হতে পারে। নিয়মিত কাশির কারণ খুঁজেনা পেলে ওষুধের ইতিহাস পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনে চিকিৎসক বিকল্প ওষুধ বেছে নেন।
ধূমপান
দীর্ঘদিন ধূমপান, বিশেষত প্রতিদিন ২০টি সিগারেট বা ২০ বছর অথবা তার বেশি সময় ধরে ধূমপান ক্রনিক ব্রংকাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এতে বছরের বিভিন্ন সময়ে ক্রনিক কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি গুরুতর অবস্থায় রূপ নিতে পারে। ধূমপান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণের মূল উপায়।
দীর্ঘস্থায়ী বা অবিরাম কাশি সব সময় গুরুতর রোগের লক্ষণ না হলেও উপেক্ষা করা উচিত নয়। উপসর্গ যদি কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে কারণ নির্ণয় করার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
সহকারী অধ্যাপক (ইএনটি), সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়। কাশি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার পেছনে নির্দিষ্ট এবং চিকিৎসাযোগ্য ছয়টি কারণ থাকে।
কফ ভ্যারিয়েন্ট অ্যাজমা
অ্যাজমার একটি বিশেষ ধরন এটি। এতে সাধারণ অ্যাজমার মতো শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ বা সাঁ সাঁ শব্দ না-ও থাকতে পারে; বরং অবিরাম শুকনো কাশিই এর প্রধান এবং অন্যতম উপসর্গ হয়ে দেখা দেয়। এই ধরনের কাশি সাধারণত রাতে বেশি হয় এবং ধুলাবালি, ঠান্ডা বাতাস, ঘরবাড়ির অ্যালার্জেন, এমনকি ঋতু পরিবর্তনের সময় শীতের শুরুতেও উপসর্গ তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
উপসর্গ বারবার দেখা দিলে চিকিৎসক শ্বাসক্রিয়া পরীক্ষার মাধ্যমে কারণ নির্ণয় করতে পারেন। স্পাইরোমেট্রি ফুসফুসের ক্ষমতা এবং বায়ুপ্রবাহ পরিমাপ করে, যা হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজের (সিওপিডি) মতো অবস্থা নির্ণয় করতে সাহায্য করতে পারে। প্রয়োজন হলে রোগ নিয়ন্ত্রণে উপযোগী ইনহেলার সাময়িক ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে এ রোগ শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণ করা গেলে দীর্ঘ মেয়াদে জটিলতার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
পোস্টন্যাসাল ড্রিপ
নাক কিংবা সাইনাসে অতিরিক্ত মিউকাস তৈরি হলে তা ধীরে ধীরে গলার পেছন দিকে গড়িয়ে যায়। এই মিউকাস গলার সংবেদনশীল নার্ভগুলো উত্তেজিত করে। ফলে শুকনো ও বিরক্তিকর কাশি হয়। শোয়ার সময় মিউকাস গলায় জমে বলে এটি রাত ও ভোরে বেশি হয়। তবে ঘুম থেকে ওঠার পরও কাশি দেখা যায়। অ্যালার্জিজনিত হাঁচি-সর্দি, সাইনোসাইটিস, নাকের হাড় বাঁকা হওয়ার সমস্যা, নাক বন্ধ বা ধুলাবালিতে সংবেদনশীলতা যাঁদের আছে, তাঁদের এই সমস্যা বেশি হয়। দীর্ঘস্থায়ী শুকনো কাশির অন্যতম প্রচলিত উৎস এই পোস্টন্যাসাল ড্রিপ।
জিইআরডি
পাকস্থলীর অ্যাসিড ওপরের দিকে উঠে এলে টক ঢেকুর, বুকজ্বালা, গলায় জ্বালাপোড়া এবং সঙ্গে ধারাবাহিক কাশি দেখা দিতে পারে। মসলাদার খাবার, ভাজাপোড়া, চকলেট, কফি, টক খাবার—এসব জিইআরডি বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান বা অতিরিক্ত খাবার খাওয়াও ঝুঁকির মাত্রা বাড়ায়। জিইআরডি নিয়ন্ত্রণে আনলে অনেক ক্ষেত্রে কাশি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
ভাইরাল সংক্রমণের পর দীর্ঘস্থায়ী কাশি
অনেক সময় সর্দি-জ্বরের উপসর্গ সেরে গেলেও শ্বাসনালি কিছুদিন অতি সংবেদনশীল থাকে। এর ফলে কাশি স্থায়ী হতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের সময় এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। সাধারণত বিশেষ চিকিৎসা ছাড়াই ধীরে ধীরে এর উপসর্গ কমে আসে। হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা এবং আদা, লেবু, মধু, লবঙ্গ বা দারুচিনিযুক্ত গরম চা উপসর্গ কমাতে সহায়তা করে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত এসিই ইনহিবিটর শ্রেণির ওষুধ অনেক রোগীর ক্ষেত্রে শুকনো কাশির কারণ হতে পারে। নিয়মিত কাশির কারণ খুঁজেনা পেলে ওষুধের ইতিহাস পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনে চিকিৎসক বিকল্প ওষুধ বেছে নেন।
ধূমপান
দীর্ঘদিন ধূমপান, বিশেষত প্রতিদিন ২০টি সিগারেট বা ২০ বছর অথবা তার বেশি সময় ধরে ধূমপান ক্রনিক ব্রংকাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এতে বছরের বিভিন্ন সময়ে ক্রনিক কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি গুরুতর অবস্থায় রূপ নিতে পারে। ধূমপান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণের মূল উপায়।
দীর্ঘস্থায়ী বা অবিরাম কাশি সব সময় গুরুতর রোগের লক্ষণ না হলেও উপেক্ষা করা উচিত নয়। উপসর্গ যদি কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে কারণ নির্ণয় করার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
সহকারী অধ্যাপক (ইএনটি), সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

বিএমআই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় গভীরভাবে যুক্ত হয়ে গেছে। বিএমআই আদর্শ মানের চেয়ে কেউ খুব কম বা বেশি নম্বর পেলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সেবা যেমন: ওষুধ বা সার্জারির মতো বিভিন্ন চিকিৎসা স্থগিত করা হয়।
১৮ অক্টোবর ২০২৪
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
১ ঘণ্টা আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
২ ঘণ্টা আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
৩ ঘণ্টা আগে